আইন ও অধিকার

আইন ও অধিকার আমরা অধিকারের কথা বলি...

Jurisprudence: আইন চিন্তার ভিত্তি– আইন ও অধিকার“আইন মানে শুধু ধারা নয়, আইন মানে চিন্তা, যুক্তি, ও ন্যায়বোধ।”এই গভীর দৃষ্...
14/04/2025

Jurisprudence: আইন চিন্তার ভিত্তি

– আইন ও অধিকার

“আইন মানে শুধু ধারা নয়, আইন মানে চিন্তা, যুক্তি, ও ন্যায়বোধ।”
এই গভীর দৃষ্টিভঙ্গিই হচ্ছে Jurisprudence বা আইনতত্ত্ব।



Jurisprudence কী?

Jurisprudence শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘jurisprudentia’ থেকে, যার অর্থ আইনের জ্ঞান।
এটি আইন বিষয়ে একটি দার্শনিক ও তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ—যেখানে আমরা শুধুমাত্র আইনের ধারা জানি না, বরং প্রশ্ন করি:
• আইন কী?
• আইনের লক্ষ্য কী?
• কোন আইন বৈধ?
• আইন ও ন্যায়বিচারের সম্পর্ক কী?



কেন Jurisprudence শেখা জরুরি?

একজন ভবিষ্যৎ আইনজীবী, বিচারক বা নীতিনির্ধারকের জন্য Jurisprudence জানা মানে হলো আইনের আত্মা বোঝা।
এটি আমাদের শেখায়:
• আইনের জন্ম কোথা থেকে?
• আইন সমাজে কী ভূমিকা রাখে?
• আইন, নৈতিকতা ও রাজনীতির মধ্যে সম্পর্ক কী?



Jurisprudence এর প্রধান শাখাসমূহ:

১. Analytical Jurisprudence:
এই শাখাটি আইনের গঠন, কাঠামো ও ভাষাগত বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে। John Austin-এর “Command Theory” এখানে গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে তিনি বলেন—আইন হলো সার্বভৌম কর্তৃপক্ষের নির্দেশ, যা বাধ্যতামূলক এবং শাস্তি-সংবলিত। এই ধারায় মূল লক্ষ্য হলো, আইন কীভাবে কাজ করে তা ব্যাখ্যা করা, না যে আইন ন্যায়সঙ্গত কিনা।

২. Natural Law:
Natural law বা প্রাকৃতিক আইন বিশ্বাস করে, আইন মানুষের চিরন্তন ন্যায়ের ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়া উচিত। এই শাখার প্রবক্তারা যেমন Cicero, Thomas Aquinas—তারা বলেন, প্রকৃত ন্যায়ের ভিত্তিতে না গড়া আইন, আইন নয়। এই ধারাটি বলে, আইন ও নৈতিকতা একে অপরের সাথে সম্পর্কিত।

৩. Historical Jurisprudence:
এই শাখা বিশ্বাস করে যে, আইন হঠাৎ করে তৈরি হয় না, বরং এটি সমাজের ইতিহাস, সংস্কৃতি, এবং অভিজ্ঞতার ফল। আইন সমাজে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে। Friedrich Karl von Savigny এই ধারার অন্যতম প্রবক্তা, যিনি বলেন—আইন একটি জাতির আত্মার প্রকাশ।

৪. Sociological Jurisprudence:
এই শাখার মতে, আইনকে বুঝতে হলে সমাজকে বুঝতে হবে। আইন ও সমাজ একে অপরের সাথে জড়িত। Roscoe Pound বলেন, “Law is social engineering”—অর্থাৎ আইন হলো সমাজকে ভারসাম্যপূর্ণভাবে পরিচালনার একটি মাধ্যম। এই ধারায় বিচার হয় আইন মানুষের জীবনে কতটা কার্যকর তা দিয়ে।

৫. Realist Jurisprudence:
এই ধারাটি অত্যন্ত ব্যবহারিক। Realist jurists বলেন—আদালতের রায়ই বাস্তবে আইন। আইনের বইয়ের ধারার চেয়ে, বাস্তবে বিচারক কীভাবে সিদ্ধান্ত দেন—সেটাই সত্যিকারের আইন। Jerome Frank এবং Karl Llewellyn এই ধারার গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাবিদ।



এই শাখাগুলোর মাধ্যমে Jurisprudence আমাদের শেখায় যে, আইন শুধু কাগজে লেখা নিয়ম নয়—এটি সমাজ, ইতিহাস, ন্যায় ও বাস্তবতার সমন্বয়ে গঠিত একটি জীবন্ত কাঠামো।

আইনের দার্শনিকদের কিছু বিখ্যাত বক্তব্য:
• Jeremy Bentham: “Law is the command of the sovereign.”
• John Austin: “Law is the command backed by threat of sanction.”
• H.L.A. Hart: “Law is a system of rules, both primary and secondary.”
• Roscoe Pound: “Law is social engineering.”



বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে Jurisprudence:

বাংলাদেশে Jurisprudence বিষয়টি LLB-এর অন্যতম মৌলিক কোর্স।
আইনের বিভিন্ন শাখার ভিত্তি তৈরি হয় এই ধারণার উপর।
এটি ছাত্রদের আইনের প্রতি গভীর দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্লেষণক্ষমতা তৈরি করে।



উপসংহার:

Jurisprudence এমন একটি বিষয় যা আমাদের শুধু আইন জানায় না, বরং আইনের ‘কেন’ প্রশ্নের উত্তর দেয়।
যদি আমরা শুধুই আইন পড়ি কিন্তু চিন্তা না করি, তাহলে সেটা হবে মুখস্থ বিদ্যা।
কিন্তু Jurisprudence শেখায়—আইন কীভাবে বদলায়, কেন বদলায়, আর কে বদলায়।

তাই আইন জানতে হলে, Jurisprudence আগে বুঝতে হবে।



লিখেছেন:
আইন ও অধিকার টিম
#আইনতত্ত্ব #আইনওঅধিকার

13/04/2025

উপমহাদেশের আইন ইতিহাস: একটি পর্যালোচনা

– আইন ও অধিকার

আইন একটি জাতির সভ্যতা, সংস্কৃতি ও প্রশাসনিক কাঠামোর অন্যতম স্তম্ভ।
বাংলাদেশের বর্তমান আইন ব্যবস্থা কোনো একদিনে গড়ে ওঠেনি।
এর পেছনে রয়েছে সহস্রাব্দব্যাপী পরিবর্তন, সংস্কার, এবং বৈচিত্র্যময় শাসনের ইতিহাস।

এই লেখায় আমরা দেখব—উপমহাদেশের আইন ইতিহাস কিভাবে ধাপে ধাপে গড়ে উঠেছে, এবং তা আমাদের বর্তমান আইনি কাঠামোতে কীভাবে প্রভাব ফেলেছে।



১. প্রাচীন ভারতীয় আইন: ধর্ম ও শাস্ত্রের যুগ

উপমহাদেশে আইন ধারণার গোড়াপত্তন ঘটে ধর্মভিত্তিক সমাজ কাঠামোর মধ্য দিয়ে।

হিন্দু ধর্মশাস্ত্র এবং অর্থশাস্ত্র (কৌটিল্যর “অর্থশাস্ত্র”) ছিল তৎকালীন শাসন, দণ্ডনীতি, রাজস্ব ব্যবস্থা এবং নাগরিক আচরণের মূল ভিত্তি।

ধর্মশাস্ত্র অনুসারে আইন: পারিবারিক, বিবাহ, উত্তরাধিকার ও সম্পত্তি বিতরণে হিন্দু শাস্ত্রপ্রণালী ছিল মৌলিক।

রাজশক্তির ভূমিকা: শাসক ছিলেন সর্বোচ্চ বিচারক ও শাস্তিদাতা।



২. ইসলামি শাসন ও মোগল আমল: শরিয়াহর প্রভাব

৭১১ খ্রিস্টাব্দে সিন্ধু বিজয়ের মাধ্যমে উপমহাদেশে ইসলামি আইনের প্রবেশ ঘটে।

পরবর্তীতে দিল্লি সালতানাত ও মোগল শাসনামলে আইন ও বিচারব্যবস্থায় শরিয়াহর শক্তিশালী প্রভাব পড়ে।

কাজি আদালত ও শরিয়াহ: মুসলিম ব্যক্তিগত আইন প্রয়োগে কাজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন।

ফতোয়া-ই-আলামগিরি: মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের নির্দেশে শরিয়াহ ভিত্তিক আইনসংকলন, যা তৎকালীন বিচার ব্যবস্থার দিকনির্দেশক ছিল।

মিশ্র বিচার ব্যবস্থা: মোগল যুগে প্রশাসনিক আইন, রাজ ফরমান ও শরিয়াহ একই সাথে চালু ছিল।



৩. ব্রিটিশ শাসন ও আধুনিক আইনের সূচনা

১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধের মাধ্যমে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের সূচনা হয়, যা পরবর্তীতে ১৯৪৭ পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়। এই সময়েই উপমহাদেশীয় আইন ব্যবস্থা একটি কাঠামোবদ্ধ ও লিখিত আইনে রূপ নেয়।

আদালতের আধুনিকীকরণ: জেলা জজ কোর্ট, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠা হয়।

লিখিত আইন প্রণয়ন: অনেকগুলো আজও প্রচলিত গুরুত্বপূর্ণ আইন তৈরি হয়—

• Penal Code 1860
• Evidence Act 1872
• Civil Procedure Code 1908
• Criminal Procedure Code 1898

ধর্মীয় পারিবারিক আইন বজায়: ব্রিটিশ সরকার মুসলিম ও হিন্দু ব্যক্তিগত আইন পরিবর্তন করেনি—এতে সমাজিক ভারসাম্য বজায় ছিল।

ব্রিটিশ আইন ব্যবস্থার প্রভাবই আমাদের আধুনিক আইনের ভিত্তি রচনা করে।



৪. পাকিস্তান পর্ব: আইন ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা ও কিছু পরিবর্তন

১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর উপমহাদেশ দ্বিখণ্ডিত হয়—বাংলাদেশ হয় পাকিস্তানের অংশ।
এই সময়েও ব্রিটিশ আইন ব্যবস্থার বেশিরভাগ অংশ বজায় থাকে।

নতুন সংবিধান: পাকিস্তান ১৯৫৬ ও ১৯৬২ সালে সংবিধান প্রণয়ন করে।

সংস্কার ও নিয়ন্ত্রণ: কিছু আইন সংস্কার করা হলেও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।



৫. স্বাধীন বাংলাদেশ: নতুন ভিত্তির সূচনা

১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকার ১৯৭২ সালে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে, যেখানে মৌলিক অধিকার, আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয়গুলো সংরক্ষিত হয়।

ব্রিটিশ আইনের ধারাবাহিকতা বজায়: Penal Code, CrPC, CPC ইত্যাদি এখনো কার্যকর রয়েছে।

সংস্কার প্রচেষ্টা: নারী অধিকার, শিশু আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা, শ্রম আইনসহ অনেক আইন আধুনিকীকরণ করা হয়েছে।

ই-জুডিশিয়াল সিস্টেম: বর্তমানে আদালত ব্যবস্থায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে।



উপসংহার:

উপমহাদেশের আইন ইতিহাস শুধু ইতিহাস নয়—
এটি একটি চলমান ধারা, যা সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্ম, এবং রাজনীতির সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।

বাংলাদেশের আইন শিক্ষার্থীদের জন্য এই ইতিহাস জানা জরুরি, কারণ এটি আইনের মূল ভিত্তি, এর ধারা, এবং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা সম্পর্কে ধারণা দেয়।

ইতিহাসকে বুঝে আইন চর্চা করলে, আমরা কেবল আইনজীবীই হবো না—হবো বিচার-সংস্কৃতির রক্ষক।



লিখেছেন: আইন ও অধিকার টিম
#আইনওঅধিকার

11/04/2025

বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা: একটি সহজ ভিন্ন চোখে দেখা বিশ্লেষণ

– আইন ও অধিকার

বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা আমাদের ন্যায়বিচার, অধিকার রক্ষা ও রাষ্ট্র পরিচালনার একটি ভিত্তি।
এই লেখায় আমরা সংক্ষেপে আলোচনা করব – বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা আসলে কী, কীভাবে কাজ করে, এবং এর মূল ভিত্তিগুলো কী কী।



আইন ব্যবস্থা কী?

আইন ব্যবস্থা বলতে বোঝায়—একটি রাষ্ট্রে আইন প্রণয়ন, প্রয়োগ ও বিচার করার কাঠামো।
বাংলাদেশে এই আইন ব্যবস্থা গঠিত হয়েছে মূলত:
• ব্রিটিশ উপনিবেশিক আইনের ধারায়,
• বর্তমান সংবিধান দ্বারা পরিচালিত,
• এবং ধর্ম ও রীতিনীতির প্রভাব যুক্ত একটি মিশ্র কাঠামো হিসেবে।



বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থার ধরন: মিশ্র আইন ব্যবস্থা (Mixed Legal System)

বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা একক নয়। এটি মূলত তিনটি প্রধান ধারা নিয়ে গঠিত:
1. কমন ল (Common Law): আদালতের রায় ও পূর্ববর্তী নজিরের ভিত্তিতে গঠিত আইন
2. স্ট্যাচুটরি ল (Statutory Law): সংসদে গৃহীত ও লিখিত আইন
3. ব্যক্তিগত ধর্মীয় আইন (Personal Law): মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান ইত্যাদি ধর্ম অনুযায়ী পারিবারিক ও ব্যক্তিগত আইন



বাংলাদেশে আইনের উৎসসমূহ

বাংলাদেশের আইনি কাঠামো গঠিত হয়েছে পাঁচটি মূল উৎস থেকে:
1. সংবিধান: দেশের সর্বোচ্চ আইন
2. সংসদের আইন (Statutes): সংসদে পাসকৃত বিভিন্ন আইন
3. আদালতের নজির (Precedents): উচ্চ আদালতের পূর্ববর্তী রায়
4. ধর্মভিত্তিক আইন: পারিবারিক বিষয়ে ইসলামিক, হিন্দু বা অন্যান্য ধর্মীয় বিধান
5. প্রথা ও রীতিনীতি: আদিবাসী ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের রীতিনীতির ভিত্তিতে কিছু আইন



আদালত কাঠামো (Court System of Bangladesh)

বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত:

১. নিম্ন আদালত (Lower Judiciary):
• ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট: ফৌজদারি মামলা পরিচালনা করে
• সিভিল কোর্ট (জজ কোর্ট): দেওয়ানি মামলা পরিচালনা করে

২. উচ্চ আদালত (Higher Judiciary):
• হাইকোর্ট বিভাগ: সংবিধান, মৌলিক অধিকার ও আপিল শুনানি
• আপিল বিভাগ: দেশের সর্বোচ্চ আদালত

এই দুটি বিভাগ মিলে গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।



আইন পেশার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার:
• বিচারক: BJS (Bangladesh Judicial Service) পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত
• আইনজীবী (Advocate): বার কাউন্সিল থেকে তালিকাভুক্ত
• সরকারি কৌঁসুলি (Public Prosecutor): রাষ্ট্রের পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী



আইন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য
• আইনের শাসন (Rule of Law): সকল নাগরিক আইনের চোখে সমান
• উন্মুক্ত বিচার: জনগণের সামনে বিচার কার্যক্রম
• ন্যায়বিচারের অধিকার: প্রত্যেক নাগরিকের নিজেকে রক্ষার অধিকার
• বিচার বিভাগের স্বাধীনতা: রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত

চ্যালেঞ্জ

১. মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্ব
২. দুর্নীতি ও প্রভাব
৩. আইনি সচেতনতার অভাব

সম্ভাবনা

১. ডিজিটাল কোর্ট ব্যবস্থা
২. বিচার বিভাগের শক্তিশালীকরণ
৩. আইন শিক্ষার প্রসার ও গণসচেতনতা

উপসংহার:

বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা একটি প্রগতিশীল কাঠামো।
যদিও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন সংস্কার, ডিজিটালাইজেশন ও সচেতনতা আইন ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর এবং মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলছে।

আমরা যদি সবাই আইনকে জানি, মানি ও ব্যবহার করি—তবে আইনের প্রকৃত শক্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।

আইন ও অধিকার টিম

#আইনওঅধিকার

#বাংলাদেশেরআইনব্যবস্থা



10/04/2025

আইন বলতে আসলে আমরা কি বুঝি?

28/02/2023

মৌলিক অধিকার কি? মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হলে কি করা উচিত?

যখন কতিপয় মানবাধিকারকে কোন দেশের সংবিধানে লিপিবদ্ধ করা হয় এবং সাংবিধানিক নিশ্চয়তা দ্বারা সংরক্ষণ করা হয় তখন এ সকল অধিকারকে মৌলিক অধিকার বলা হয়।

আরো সংক্ষেপে বলা যায়, মানুষের যে সকল অধিকার গুলো আইনি ভাবে স্বীকৃত এবং উক্ত অধিকার গুলো ভঙ্গ হলে রাষ্ট্র প্রতিকার দিতে বাধ্য থাকে, তাকে মৌলিক অধিকার বলে।

মৌলিক অধিকারের রক্ষাকবচ হলো সংবিধান। বিচার বিভাগের মাধ্যমে মৌলিক অধিকারের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে মৌলিক অধিকার সবার জন্য সমান ভাবে প্রযোজ্য।

১৭৮৯ সালের 'ফরাসি ডিক্লারেশন অফ রাইটস অফ ম্যান এন্ড সিটিজেন এবং ১৭৯১ সালে মার্কিন সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত 'বিল অফ রাইটস' লিখিত সংবিধান সহ বেশির ভাগ গণতান্ত্রিক দেশে সংবিধানে মৌলিক অধিকারের জন্য একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বাংলাদেশের সংবিধানে মৌলিক অধিকার:

সংবিধান হলো একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থার সর্বোচ্চ দলিল। বিশ্বের প্রতিটি দেশের সংবিধানেই মৌলিক অধিকার সমূহ লিখিত রয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানের তৃতীয় ভাগে ২৭ থেকে ৪৪ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত মোট ১৮টি মৌলিক অধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ সংবিধান কর্তৃক নির্ধারিত মৌলিক অধিকার সমূহ নিম্নে দেওয়া হলো:

*আইনের দৃষ্টিতে সমতা (২৭ অনুচ্ছেদ)
* বৈষম্য করা যাবে না(২৮ অনুচ্ছেদ)
* সরকারী নিয়োগ লাভে সুযোগের সমতা(২৯ অনুচ্ছেদ)
* বিদেশী খেতাব প্রভৃতি গ্রহণ নিষিদ্ধকরণ(৩০ অনুচ্ছেদ)
* আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার(৩১ অনুচ্ছেদ)
* জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার(৩২ অনুচ্ছেদ)
* গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ(৩৩ অনুচ্ছেদ)
* জবরদস্তিমূলক শ্রম নিষিদ্ধ(৩৪ অনুচ্ছেদ)
* বিচার ও দন্ড সম্পর্কে রক্ষণ(৩৫ অনুচ্ছেদ)
* চলাফেরার স্বাধীনতা(৩৭ অনুচ্ছেদ)
* সমিতি বা সংগঠনের স্বাধীনতা(৩৮ অনুচ্ছেদ)
* চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা (৩৯ অনুচ্ছেদ)
* পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা (৪০ অনুচ্ছেদ )
* ধর্মীয় স্বাধীনতা (৪১ অনুচ্ছেদ)
* সম্পত্তির স্বাধীনতা (৪২ অনুচ্ছেদ)
* গৃহ ও যোগাযোগের স্বাধীনতা(৪৩ অনুচ্ছেদ)
* মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ(৪৪ অনুচ্ছেদ)

মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হলে করণীয়:

বাংলাদেশ সংবিধানের ২৬ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মৌলিক অধিকারের অসামঞ্জস্যপূর্ণ কোন আইন প্রণয়ন করা যাবে না। যদি কোন কারণে মৌলিক অধিকার থেকে কেউ বঞ্চিত হয়, তাহলে এ ক্ষেত্রে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগে রিট আবেদন করতে পারেন।

#আইন বিষয়ক কলাম লেখক

লিটন হোসেন

ই-মেইল: litonhosen318518@gmail.

14/02/2023

আমাদের কেন আইন জানা দরকার?

আইন শাস্ত্রের একটি বহুল আলোচিত প্রবাদ হচ্ছে- Ignorance of law is no excuse. যার অর্থ হচ্ছে আইনের অজ্ঞতা ক্ষমার অযোগ্য।

আরো সহজ ভাবে বলা যায়, আইন সম্পর্কে কোন জ্ঞান না থাকলেও আইন অমান্য করলে আপনাকে শাস্তি পেতে হবে।

এখন কথা হচ্ছে আইন আমরা কেন জানব সে সম্পর্কে আলোচনা করার আগে 'আইন' কি সে বিষয়ে আমাদের যথার্থ ধারণা থাকা দরকার।

সহজ কথায় বলা যায়, মানুষকে সুষ্ঠু, স্বাধীন এবং সুশৃংখলভাবে পরিচালনার জন্য যে নিয়ম-কানুন তৈরি করা হয় তাকে আইন বলে।

অন্য ভাবে বলা যায়, আইন বলতে সমাজ স্বীকৃত ও রাষ্ট্র কর্তৃক অনুমোদিত নিয়ম-কানুনকে বোঝায় যা মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। আইনের মাধ্যমে ব্যক্তির সাথে ব্যক্তি, ব্যক্তির সাথে রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের সম্পর্ক নির্ধারণ করা হয়।

*আইন জানার মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিক নিজেদের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠে।

*মূলত পৃথিবীর প্রত্যেক রাষ্ট্রে শাসক গোষ্ঠী আইন দিয়ে জনসাধারনকে শোষণ করে থাকে। আইন জানার মাধ্যমে আমরা শাসকগোষ্ঠীর যে কোন অনিয়ম, অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করতে পারি।

*আইন বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে আমরা কোন কাজটা করতে পারবো আর কোন কাজটা করতে পারবো না সেই বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারি।

*মানুষের জীবনের নিরাপত্তা, সুখ-শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আইনের প্রয়োজন। তাই একজন মানুষের আইন সম্পর্কে জ্ঞান থাকা অবশ্যই জরুরি।

*আমাদের অধিকার অর্জনের আগে অধিকার কীভাবে আদায় করা যায় সে সম্পর্কে জানা উচিত। আইন বিষয়ক জ্ঞান আমাদের সেই পথটা খুব সহজ করে দেয়।

*আপনি আইন সম্পর্কে জানলে কখনোই ঠকবেন না বা প্রতারিত হবেন না।

* রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনের বিধি-বিধান জানার মাধ্যমে মানুষের জীবনকে উপভোগ করা সহজ হয়ে যায়।

*আইন ব্যতীত অপরাধ দমন সম্ভব নয়। এজন্য আইন সম্পর্কে জ্ঞান না থাকলে রাষ্ট্রে কখনোই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায় না। প্রকৃতপক্ষে, আইনের অজ্ঞতা শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে এক বিরাট প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

সর্বোপরি একটা কথা বলতে পারি, আমাদের আইন জানা প্রয়োজন স্বাধীন ভাবে মত প্রকাশের জন্য, নিজেদের দাবি-দাওয়া, অধিকার আদায়ে সচেতনতার জন্য, হয়রানি, জুলুম ও নির্যাতনের যাঁতাকল থেকে যথার্থ প্রতিকার পাওয়ার জন্য এবং আমাদের নাগরিক ক্ষমতা যাচাই ও তা প্রয়োগ করার জন্য।

#আইন বিষয়ক কলাম লেখক

লিটন হোসেন

ই-মেইল: [email protected]

22/01/2023

FIR কি - এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

#আইন #অধিকার #জেনারেলডায়রি #আইন #অধিকার #জেনারেলডায়রি

20/12/2022

আইন ও অধিকার এর পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
16/12/2022

আইন ও অধিকার এর পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।

Address

Dhaka

Telephone

+8801793667478

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when আইন ও অধিকার posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to আইন ও অধিকার:

Share

Category