02/05/2025
আমার জেলা বরগুনার একজন খ্যাতিমান শিশু বিশেষজ্ঞ আছেন, যার চিকিৎসা দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব নিয়ে অনেক প্রশংসা শোনা যায়। তিনি বরগুনা সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও শহরের একটি বেসরকারি ডায়গনস্টিক সেন্টারে নিয়মিত রোগী দেখেন। একজন ভালো চিকিৎসক হিসেবে তার প্রতি মানুষের আস্থা ও ভরসা আছে, বিশেষ করে দূর-দূরান্ত থেকে আগত গ্রামাঞ্চলের মানুষজন তার চিকিৎসা পাওয়ার আশায় বরগুনা শহরে ছুটে আসেন।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে, সাম্প্রতিক সময়ে তার রোগী দেখার প্রক্রিয়া নিয়ে অনেকের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, তার কাছে সিরিয়াল পেতে হলে রোগীর আগে বিকাশের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাঠাতে হয়। যেসব রোগী এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে পারেন না, তাদের দেখা হয় না বা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিতে বহু গরিব, অশিক্ষিত বা প্রযুক্তিগতভাবে অদক্ষ মানুষ, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ জনগণ মারাত্মকভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
চিকিৎসা একটি মানবিক পেশা, আর একজন চিকিৎসকের কাছে রোগী আসেন আশায়, বিশ্বাসে ও নির্ভরতায়। বিশেষত শিশুদের চিকিৎসায় দেরি বা প্রতিবন্ধকতা অনেক সময় বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই এমন এক পদ্ধতি যেখানে অর্থপ্রদানের মাধ্যমকে চিকিৎসাসেবার প্রবেশদ্বার বানানো হয়, তা প্রশ্নবিদ্ধ এবং মানবিকতার সাথে সংগতিপূর্ণ নয়।
আমরা সম্মান জানাই এই চিকিৎসকের জ্ঞান ও দক্ষতাকে, কিন্তু একই সাথে অনুরোধ করি — তার সিরিয়াল পদ্ধতিকে আরও মানবিক ও সহনশীল করে তোলার। প্রযুক্তি নিশ্চয়ই কাজকে সহজ করে, তবে সেটি যেন সাধারণ মানুষের আশাভঙ্গ বা বঞ্চনার কারণ না হয়। যারা ফোনে বিকাশ পাঠাতে পারেন না, তাদের জন্যও যেন সহজ ও বিকল্প উপায়ে সিরিয়ালের ব্যবস্থা রাখা হয়।
একজন ভালো ডাক্তার কেবল চিকিৎসাতেই নয়, রোগীর প্রতি সহানুভূতিতেও বড় হন। আশা করি, তিনি নিজেই বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভেবে দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনবেন।
- এম সোলায়মান