Muslim Day Planner

Muslim Day Planner Day Planner, Yearly Planner, Dua Planner, Note Books.

যদি প্রশ্ন করা হয় ‘জীবন আমদের কাছে এত মূল্যবান কেন ?’
উত্তরটা হয়তো একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হবে। কেউ হয়তো বলবে “জীবন তো একটাই। যতটা উপভোগ করার তা-তো এই এক জীবনেই করতে হবে। জীবনে যত স্বপ্ন আছে, সব তো এই এক জীবনেই পূরণ করতে হবে। ইত্যাদি”...
আমরা যদি একটু খেয়াল করি তাহলে দেখতে পাবো, “জীবন একটাই”—এটা এখানে মূল ফোকাস না। বরং এখানে মূল ফোকাস হলো, এই ‘এক জীবনে’ জীবনটাকে উপভোগ করা।
যদি তাই হয়, তাহল

ে অবশ্যই ভেবে দেখার দরকার আছে, আমরা যারা নিজেদেরকে মুসলিম দাবি করি, আমাদের ক্ষেত্রেও প্রশ্নটির উত্তর একইরকম হওয়ার কোনো সুযোগ আছে কি না? কারণ আমরা তো বিশ্বাস করি—‘জীবন যদিও একটাই, তবে এটাই জীবনের শেষ নয়। এর পরে আরেক জীবন আছে। আখিরাত—যেটা চিরস্থায়ী। যার কোনো শেষ নেই। এই ‘এক জীবন’ হলো সেই সীমাহীন জীবনের পরীক্ষা-পর্ব। এটা কোনো উপভোগের জায়গা নয়। বরং, ভালো বা মন্দ কাজের মাধ্যমে চিরস্থায়ী সেই আখিরাত জীবনে, নিজের ভালো বা মন্দ অবস্থান তৈরির পরীক্ষা ক্ষেত্র। আর এজন্যই ‘এই জীবন’ আমাদের কাছে এত মূল্যবান।
পরীক্ষার হলের মতোই জীবনের নির্দিষ্ট সময় নিমিষেই ফুরিয়ে যায়। জীবন সময়ের এই বিরামহীন ধাবমানতার জন্যই জীবন আমাদের কাছে পরম মূল্যবান। সময় অনন্ত, কিন্তু জীবন সীমাবদ্ধ। ‘জীবন থেকে যে সময় একবার চলে যায় তা আর ফিরে পাওয়া যায় না’—একজন মুসলিমের জীবনে সময়ানুবর্তিতার গুরুত্ব বোঝার জন্য, এই একটা সত্য বুঝতে পারাই যথেষ্ট।
কিন্তু আমরা ক’জন বুঝি আমাদের সময়গুলো আসলেই কতটা গুরুত্বপূর্ণ? সত্যিই বুঝলে, আমাদের তো উচিত ছিল কিশোরবেলার সেই পরীক্ষার দিনগুলির মতো দৈনন্দিন জীবনের রুটিন লিখে সদা চোখে পড়ার মতো জায়গায় সেঁটে রাখা। কিন্তু সবকিছু বোঝার পরেও, খুব করে চাইলেও আমরা অনেকেই হয়তো পার্থিব ব্যস্ততার চাপে রুটিন-মাফিক প্রোডাক্টিভ হয়ে চলতে পারি না। আপনার-আমার, আমাদের সবার এই ‘না পারা’-কে ‘পারা’-তে পরিণত করতে, সামনের সময়গুলো বেহিসাবে নষ্ট না করে প্রোডাক্টিটি ও সময়নিষ্ঠতার সহিত ব্যয় করার একটি সুশৃঙ্খল বন্দোবস্ত করতেই ‘মুসলিম ডে প্লানার’ টিমের পথচলা।

25/10/2025
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রথম ক্লাস। প্রথম বর্ষের নতুন ছাত্র ছাত্রীদের চোখে মুখে কৌতূহল, ঔৎসুক্য, উদ্দীপনা।  সকালের ...
19/10/2025

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রথম ক্লাস। প্রথম বর্ষের নতুন ছাত্র ছাত্রীদের চোখে মুখে কৌতূহল, ঔৎসুক্য, উদ্দীপনা। সকালের হালকা আলোয় ঝলমল করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম। অধ্যাপক ধীরে ধীরে মঞ্চে উঠলেন। তাঁর কণ্ঠ শান্ত, কিন্তু চোখে অদ্ভুত দৃঢ়তা।

অধ্যাপক: এই যে, দ্বিতীয় সারি... জোব্বা টুপি পরা। হ্যাঁ তুমি। তোমার নাম কী?

ছাত্র: আবদুল্লাহ, স্যার।

অধ্যাপক: ভালো। এখন তুমি আমার লেকচার রুম থেকে বেরিয়ে যাও। আমি তোমাকে আর কখনও আমার ক্লাসে দেখতে চাই না।

আবদুল্লাহ (অবাক হয়ে): স্যার? আমি কিছু ভুল করিনি... আমি বুঝতে পারছি না।

অধ্যাপক (শান্ত কিন্তু কঠিন স্বরে দরজার দিকে হাত দেখিয়ে): আমি দ্বিতীয়বার বলব না। প্লিজ। ধন্যবাদ।

ক্লাসরুমে নেমে এলো ভারী নীরবতা। কেউ কিছু বলল না। সবাই দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থায় একে অন্যের দিকে তাকাচ্ছে। আবদুল্লাহ মাথা নিচু করে চুপচাপ দরজার দিকে এগিয়ে গেল।

অধ্যাপক কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। তারপর ধীরে ধীরে সবার দিকে তাকিয়ে বললেন—

অধ্যাপক: বল তো, আইন কেন আছে? আইনের কাজ কী?

সালমা (দ্বিধাগ্রস্ত স্বরে): মানুষের অধিকার রক্ষা করতে...

অ্যালেন: সমাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে।

রূপক: যেন জনগণ সরকারের উপর ভরসা করতে পারে।

অন্তরা: জাস্টিস!

অধ্যাপক: ঠিক তাই! অন্তরা। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। কিন্তু বলো তো, আমি কি তোমাদের সহপাঠীর প্রতি এই একটু আগে অন্যায় করিনি?

সালমা: জ্বি স্যার।

অধ্যাপক: তাহলে কেউ প্রতিবাদ করলে না কেন?
কেউ আমার অন্যায় থামাতে এগিয়ে এলে না কেন?
তোমরা সবাই চুপ রইলে কেন? কেউ কিছুই বললে না কেন?

ক্লাসের ভেতর নিস্তব্ধতা আরও গভীর হলো।
কারও চোখে ভয়ের ছাপ, কারও মুখে লজ্জা।

অধ্যাপক (ধীরে, গভীর স্বরে):
তোমরা আজ যা শিখলে, তা হাজার লেকচারে শিখতে না। তোমরা কিছু বলোনি, কারণ তোমাদের এই নীরবতাই বলে দেয়—তোমরা অন্যায়ের সামনে দাঁড়াতে জানো না।

যখন ভাবো, “এটা আমার বিষয় নয়”, তখনই অন্যায় শক্তি পায়।

আমি আজ শুধু এটুকু বলতে চাই— যদি তোমরা ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সাহায্য না করো,তবে একদিন অন্যায় তোমাদের জীবনেও আসবে,আর তখন... কেউ তোমাদের পাশে দাঁড়াবে না।

অধ্যাপক নীরব হলেন।
ক্লাসরুমে শুধু বাতাসের মৃদু শব্দ।
সবাই মাথা নিচু করে বসে রইল—
যেন নিজের ভেতরের নীরবতাকে প্রথমবার শুনছে।

বিছানায় শুয়ে বই পড়ছিলাম। হঠাৎ আম্মু বইটা নিয়ে জানালা দিয়ে ছুঁড়ে বাইরে ফেলে দিলো৷ সরকারি কোয়ার্টারের দোতলা ছিমছাম বাসাটায়...
19/10/2025

বিছানায় শুয়ে বই পড়ছিলাম। হঠাৎ আম্মু বইটা নিয়ে জানালা দিয়ে ছুঁড়ে বাইরে ফেলে দিলো৷ সরকারি কোয়ার্টারের দোতলা ছিমছাম বাসাটায় থাকি তখন৷ সম্ভবত ক্লাস নাইনে পড়ি। হতভম্ব হয়ে উঠে মাথায় কি যে রোখ চেপে গেল জানিনা!

পড়ার টেবিলের বই খাতা সব টেনে নিচে ফেলে দিলাম৷ আর বললাম, পড়াশোনা করবোনা আর। তোমরা যেমন রেজাল্ট চাও তেমনই তো এনে দিলাম সবসময়! ফাইভে, এইটে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেতে হবে, ক্লাসে ফার্স্ট হতে হবে, সবইতো হচ্ছে, পড়াশোনা তো ঠিকমতই করি, তাহলে আমার বই ফেলে দেওয়া কেন!

এসব চিৎকার করে বলে নিচে গিয়ে বইটা খুঁজে এনে আবার পড়া শুরু করলাম। আম্মু আমার আচরণে হতবাক হয়ে চুপ হয়ে গেছে। তার শান্ত- ভদ্র মেয়েটার হঠাৎ কি হয়ে গেল!

আর আমি বইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকলেও আর পড়তে পারছিনা। বুঝতে পারলাম যে বেয়াদবির চুড়ান্ত করে ফেলেছি ইতোমধ্যে। আম্মু আর কথা বলেনা, আমি এ রুমে ঐ রুমে ঘুরে ঘুরে কান্নাকাটি করি। পরবর্তীতে বড় মামা বাসায় এসে নানান নসীহাহ দেওয়ার মাধ্যমে এই পর্ব শেষ হলো।

আরেকদিন টেবিলে পড়ার বই রেখে বসে কোলের মধ্যে "আউট বই" রেখে পড়ছিলাম। এই কাজটা ঐ একদিনই করেছি। তাও ধরা খেয়ে গেলাম। অতঃপর কি হয়েছিল আর মনে নাই।

এবার স্কুলের ঘটনা।

এক শিক্ষক চলে যাওয়ার পর অন্য শিক্ষক আসার মধ্যবর্তী সময়ে বই পড়ছিলাম। এটা অবশ্য কোন অন্যায় ছিল না। স্যার ক্লাসে ঢুকলেন। সামনের বেঞ্চে বসে আছি আমি।

বইটা দাও- স্যার হাত বাড়িয়ে বললেন।

আমি চট করে বই ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলেছি।

বইটা দাও!

আমি আস্তে আস্তে মাথা নাড়ছি আর বলছি- না স্যার, প্লিজ স্যার।

প্লিজ স্যার।

তখন অনেক ভয় পেয়েছিলাম।

কিন্তু এখন বুঝতে পারছি তখন বই দিয়ে দিলে কিছুই হত না।

স্যার পুরো ক্লাসে আর কিছু পড়ালেন না।

পুরোটা ক্লাসে জীবন নিয়ে দার্শনিক আলাপ করে গেলেন।

একটা সরলরেখা এঁকে দেখালেন যে শেষ মাথায় জীবনের লক্ষ্য। তারপর চারপাশে দাগ টেনে টেনে দেখালেন এদিক ওদিকে অসংখ্য গলি ঘুপচি লুকিয়ে থাকে হারিয়ে যাওয়ার জন্য। কেউ সরল পথে চলার ক্ষেত্রে দৃঢ় না হলে গন্তব্যে পৌঁছুতে পারেনা। পুরো ক্লাসে সবাই মুখ টিপে হাসলো আর বুঝতে পারলো আজকের সব কথা রেমিনের উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে। সরল পথ বা গন্তব্য বলতে স্যার অবশ্য সিরত্বল মুস্তাক্বিম বুঝাননি, ক্যারিয়ারের চূড়া বুঝিয়েছিলেন।

বাসায় পড়াতে যে শিক্ষকগণ আসতেন উনাদের কাছে আম্মুর বিচারের প্রধানতম টপিক ছিল এই "আউট বই"।

আরো স্পেসিফিক করে বলতে গেলে " তিন গোয়েন্দা"।

আমাদের জেনারেশনের জন্য এই আউট বই নিয়ে অভিভাবক কিংবা শিক্ষকের কাছে ধরা খাওয়াটা ছিল কমন ঘটনা।

আরেকবার তিন গোয়েন্দার কোন একটা গল্পে যেন পিরামিড কিভাবে বানানো হয়েছিল সে ব্যাপারে পড়লাম। প্রথমে পিরামিডের নিচের পরিধি অনুযায়ী দেয়াল পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়। এরপর চারপাশে মাটি ফেলা হয়। তারপর সেই মাটিগুলোর উপর দাঁড়িয়ে আরেকস্তর পাথরের গাঁথুনি তোলা হয়। এভাবে পুরো প্রক্রিয়াটা চলে চূড়া পর্যন্ত। পুরোটা বানানো হয়ে গেলে এবার উপর থেকে মাটি কেটে কেটে চারপাশের মাটিগুলো সরিয়ে ফেলা হয়।

কাকতালীয়ভাবে যেদিন পড়লাম তার পরদিনই স্যার কিভাবে যেন পিরামিড কিভাবে বানানো হয়েছিল সে প্রসঙ্গে চলে গেলেন। যার কাছে বই পড়তে গিয়ে ধরা খেয়েছিলাম সে একই শিক্ষক। তিনি আমাদের স্কুলের সবচেয়ে ব্রিলিয়ান্ট ও জ্ঞানের দিক থেকে সবচেয়ে আপডেটেড শিক্ষক। সবসময় উনার হাতে একটা কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স থাকত।

পুরো ক্লাসের দিকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে বললেন, তোমাদের কারো কোন ধারণা আছে পিরামিড কিভাবে বানানো হয়েছিল?

পুরো ক্লাস চুপ।

এবার আমার দিকে তাকালেন।

তুমি কিছু ধারণা করতে পারো?

আমার ব্যাপারে স্যার একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করতেন৷

আমার হৃদপিণ্ড ততক্ষণে লাফানো শুরু করেছে।

আরে! গতকালই না পড়লাম!

কিন্তু কি সংকোচে জানিনা, আমি চুপ করে মাথা নাড়লাম। বোধহয় গল্পের বইয়ের ব্যাপার গুলো তখন গল্প হিসেবেই নিয়েছিলাম।

আমার জানা পদ্ধতিটাই স্যার ব্যাখ্যা করে বললেন এভাবে হতে পারে।

পুরো ক্লাস অবাক হয়ে স্যারের দিকে তাকিয়ে আছে। আল্লাহ! স্যার কত কিছু জানেন!

ওই বয়সে অবশ্য সব শিক্ষককে দেখলেই এমন মনে হত!

ততক্ষণে ফগ র‍্যাম্পারকটের মত আমার নিজের হাত নিজে কামড়ে খেয়ে ফেলতে মন চাচ্ছে।

কেন বললাম না!

আমার এখনো মনে হয় ওই ক্লাসে ফিরে যাই।

ফিরে গিয়ে আমি স্যারকে বলি যে এটা তো আমি গতকালই তিন গোয়েন্দায় পড়েছিলাম।

এভাবে পিরামিড থেকে আমাজন,

দক্ষিণ সাগর থেকে মরুভূমি। আমরা ঘুরে বেড়িয়েছি। কখনো ক্যানুতে ভেসে, কখনো জয়স্টিক হাতে।

আমি প্রায়ই বলি, আমার বর্তমান আমি হয়ে ওঠার পিছনে তিন গোয়েন্দার অনেক অবদান আছে।

আমাকে বই পড়া শিখিয়েছে, কত কমন সেন্স, কত ম্যানার শিখিয়েছে, কত অজানার সাথে পরিচিত করেছে।

পুরোটা জেনারেশনকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল মুগ্ধকর এক নেশা। এখন আমার ছেলে পড়ে৷ আমিও ওর পাশে এসে বসে একটু পড়তে শুরু করলে সব কাজ ভুলে পুরোটা শেষ করে উঠি।

শৈশবের ক্যানভাসে এত রঙ যিনি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সেই রকিব হাসানকে আল্লাহ মাগফিরাত দান করুক, জান্নাত দান করুক।

03/10/2025

যুদ্ধ শুরু হলে রাজনীতিবিদেরা অস্ত্র দেয়, ধনীরা রুটি দেয়, কিন্তু গরিবেরা দেয় তাদের ছেলেদের। — আর যুদ্ধ শেষ হলে রাজনীতিবিদেরা হাত মেলায়, ধনীরা রুটির দাম বাড়ায়, আর গরিবেরা খোঁজে তাদের ছেলেদের কবর। (একটি সার্বিয়ান প্রবাদ)

আমাদের দেশে- কুরআন অন্তরে ধারণ করার বিষয়টা কেবল যারা ছোটোবেলায় হিফয মাদরাসায় পড়েছে তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এতদিন। এখন ...
03/10/2025

আমাদের দেশে- কুরআন অন্তরে ধারণ করার বিষয়টা কেবল যারা ছোটোবেলায় হিফয মাদরাসায় পড়েছে তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এতদিন। এখন আলহামদুলিল্লাহ অনেক পরিবর্তন আসছে। অনেকেই বড় হওয়ার পরেও সংসার, চাকরি ইত্যাদি সামলে হিফযের দিকে আগ্রহী হচ্ছেন। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের পেইজে অনেকগুলো হিফযের গল্প প্রকাশ করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে একটি নতুন গল্প। হৃদয়ে আলোড়ন তোলার মত এক সত্য ঘটনা।
নিজের ছাত্রীর এই ঘটনা বর্ণনা করেছেন এক মিশরীয় শাইখ-

সৈকত ঘেঁষা এক নীরব শহর মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া। নীলনদের বাতাস ভেসে বেড়াচ্ছে অলিগলিতে। সেখানে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন জার্মানি থেকে আসা এক নারী—একটি মাত্র উদ্দেশ্যে, কুরআন হিফয করা।

তিনি ছিলেন শৃঙ্খলাপূর্ণ, পরিমিত, আর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে সাজাতেন কুরআনের চারপাশে। তাঁর শাইখ তাঁকে বলতেন—“তুমি যেন সময়কে বাঁধন দেওয়া এক নারী।” কখনো কোনো পাঠ বাদ দিতেন না, কখনো দায়িত্বে গাফিলতি করতেন না।

কিন্তু এক সন্ধ্যায় হঠাৎ শাইখের ফোন বেজে উঠল। অপর প্রান্তে সেই ছাত্রী। কণ্ঠ শান্ত, তবে গভীর কিছু যেন লুকানো। তিনি বিনয়ের সঙ্গে বললেন—
“শাইখ, আজকের ক্লাসটি কি আমি আগামী দিনে করতে পারি? আজ আমার দৈনিক রিভিশন সম্পূর্ণ করা হয়নি।”

শাইখ বিস্মিত হলেন। তাঁর তো কখনোই কোনো পাঠ বাদ যায়নি! তাই জিজ্ঞেস করলেন—
“কী এমন ঘটেছে যে আজ তুমি শেষ করতে পারোনি?”

ফোনের ওপাশ থেকে উত্তর এলো, স্থির অথচ হৃদয় কাঁপানো—

“আমার মেয়ে গতকাল মারা গেছে। সারাদিন আমি তার গোসল ও জানাজার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলাম।”

মুহূর্তের জন্য শাইখ নির্বাক হয়ে গেলেন। একটি কিশোরী কন্যা চলে গেছে মায়ের বুকের ভেতর থেকে, আর এই মা ফোন করেছেন পাঠ বাতিল করতে নয়—বরং সময় পরিবর্তনের অনুরোধ জানাতে। কারণ তাঁর হৃদয় কুরআনের সাথে এমনভাবে বাঁধা ছিল যে, এমন দুঃসময়েও তিনি কুরআনের দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে চাননি।

দিন কেটে গেল। একসময় সেই নারী শাইখকে বললেন—
“আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ যে আমার মেয়ের মৃত্যুকালীন সময়ে আমার হৃদয়ে কুরআনের ১৭টি জুয সংরক্ষিত ছিল। সেগুলোই আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছে। যদি সেই আয়াতগুলো আমার অন্তরে না থাকত, আমি কীভাবে ধৈর্য ধরতাম জানি না।”

সুবহানাল্লাহ! এ কাহিনি শুধু এক নারীর নয়, বরং আল্লাহর কালামের সাথে মানুষের হৃদয়ের অদৃশ্য বন্ধনের কাহিনি।
এটাই إخلاص—খাঁটি নিয়ত।
এটাই কুরআনের সাথে জীবন্ত সংযোগ।

*যারা নিজ উদ্যোগে কুরআন হিফয করতে চান তাঁরা নিচের ট্র‍্যাকারটি ব্যবহার করতে পারেন। এটা "ট্র‍্যাকিং মি" এর অংশ।

প্রোডাক্টিভিটি বা টাইম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই উঠে আসে ফজরের পর জেগে থাকার ব্যাপারটা। সকালের বারাকাহপূর...
02/10/2025

প্রোডাক্টিভিটি বা টাইম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই উঠে আসে ফজরের পর জেগে থাকার ব্যাপারটা। সকালের বারাকাহপূর্ণ, ডিস্ট্রাকশন মুক্ত সুদীর্ঘ দুই-চার ঘন্টা সময় কাজে লাগানোর বিষয়টা।

অনেকেই বলে থাকেন সফলতা শুরু হয় এখানে। পুরো দুনিয়া যখন ঘুমিয়ে থাকে, সে সময়টা যে কাজে লাগাতে পারে সে-ই বাকিদের চেয়ে এগিয়ে যায়।

কিন্তু সফলতা আসলে এখানে শুরু হয় না। সফলতা শুরু হয় সকাল শুরু হওয়ারও আগে- আগের সন্ধ্যায়।

ফজরের পর জেগে থাকতে পারিনা- এটা একটা কমন অভিযোগ।

কিংবা যদিও আপনি জোর করে জেগে থাকেন এই সময়টাতে আপনার ব্রেইন যেভাবে ফাংশন করা উচিত সেভাবে ফাংশন করতে পারেনা যদি আপনি রাতে পর্যাপ্ত না ঘুমান।

তাই আপনার আজকের সকাল কেমন হবে, সকালের বারাকাহ আপনি কতটুকু অর্জন করতে পারবেন এটা নির্ভর করে আপনার গত সন্ধ্যার অ্যাক্টিভিটি কেমন ছিল তার উপর।

আপনি অর্ধ রাত পার করে ঘুমাবেন, ঘুমানোর আগে লম্বা সময় মোবাইল স্ক্রল করে চোখ আর ব্রেইনকে এত ক্লান্ত করবেন যে ক্লান্তি দূর করতে ১২-১৫ ঘন্টার লম্বা ঘুম প্রয়োজন হবে, তাহলে আপনি কিভাবে আশা করেন যে সকালে উঠে আপনি ফুল অফ রিদম থাকবেন!

ঘুম নিয়ে যত গবেষণা হয়েছে সবগুলোর কমন আউটকাম এমন ছিল যে রাত ৯/১০টা থেকে ২/৩ টা পর্যন্ত ঘুমের কোয়ালিটি টপ লেভেলে থাকে। এ সময় অল্প ঘুমিয়েও আপনার শরীর- ব্রেইন বেশি রিকভার করে। কিন্তু আপনি গভীর ঘুমের এই সময়ে ঘুমান না। রাতের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে অনেক বেলা পর্যন্ত দীর্ঘসময় ঘুমালেও এসময় কোয়ালিটি স্লিপ হয়না।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকালবেলার বারাকাহ চেয়ে দুয়া করেছেন। এই বারাকাহ পেতে চাইলে আপনাকে সুন্নাহ মেনে ইশার পরে ঘুমাতে যেতে হবে।

আপনার শারীরিক, মানসিক, আত্মিক সুস্থতা, আপনার ফিটনেস, আপনার হরমোনাল ব্যালেন্স, আপনার এইজিং প্রসেস, আপনার মুড, আপনার সারাদিনের এনার্জি ইত্যাদি সবকিছু নির্ভর করে আপনার এই সন্ধ্যার রুটিনের উপর, আপনি কখন ঘুমাতে যাচ্ছেন তার উপর।

মুসলিমদের দিন সূর্যোদয়ের সাথে শুরু হয়না৷ আগের সন্ধ্যার চন্দ্রোদয়ের সাথে শুরু হয়। একটা কোয়ালিটি স্লিপ কমপ্লিট করে উঠে, শেষ রাতে নিরিবিলি আসমানী রহমতের বারিধারায় অবগাহন শেষে চনমনে মুডে, ফুল অফ এনার্জি নিয়ে মুসলিম সকালকে স্বাগত জানায়, দিনের যাবতীয় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়।

আপনি আপনার ইবাদত, সুস্থতা, ব্যস্ততা ইত্যাদি যা কিছু নিয়েই কাজ করতে চান, আগে আপনার ঘুমের রুটিন ঠিক করুন। সারাদিন যা-ই করুন, আপনার দীর্ঘমেয়াদি সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে আপনি ঘুমানোর আগের ও পরের সময়টুকু কিভাবে কাজে লাগাচ্ছেন তার উপর।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনে কখনো হাই তুলেননি, অথচ উনি ফজরের অনেক আগে থেকে জেগে থাকতেন। এই তথ্যটা জানলে অবাক লাগেনা?

এর পিছনের সিক্রেট কি ভেবে বলুন তো?

আজকের সন্ধ্যা থেকেই রুটিন ফিক্স করার কাজে লেগে যান।

আপনি যত বড় সমস্যায় থাকেন না কেন সত্যিকারের সালাত আপনাকে সব রকম পরিস্থিতিতে নিশ্চিন্ত রাখবে, জীবনের অনিশ্চয়তা থেকে টেন...
01/10/2025

আপনি যত বড় সমস্যায় থাকেন না কেন সত্যিকারের সালাত আপনাকে সব রকম পরিস্থিতিতে নিশ্চিন্ত রাখবে, জীবনের অনিশ্চয়তা থেকে টেনে তুলবেই।

আমরা অধিকাংশ মানুষই সালাতকে "পড়ব" অপশনে ফেলে রাখি

–এই কাজটা শেষ হোক, তারপর পড়ব।
–আগে গোসলটা সেরে নিই, তারপর ফরজটা পড়ে নিব।
–একটু ফ্রি হই, তখন নিশ্চিন্তে পড়ব।
–বাচ্চাকে একটু ঘুম পাড়াই, তারপর পড়ব।

আর এভাবেই “পড়ব” শব্দটা পড়েই থাকে।সালাত পড়া হয় না।

আমরা সময়ের মালিক নই, কিন্তু সময়কে আমরা সালাতের উপরে রাখি।
আমরা ভুলে যাই—
সালাত কাজের পরের কাজ নয়,
সালাত গোসলের পরের প্রস্তুতি নয়,
সালাত কখনোই "ফ্রি হয়ে পড়ার বিষয়" নয়।
সালাতই মূল কাজ, বাকিগুলো তো কেবল দুনিয়ার সাময়িক ব্যস্ততা।

তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে—আপনি সালাত অনুভব করেন না কেন?”আমরা সালাত পড়ি।হয়তো ৫ ওয়াক্তই পড়ি।
কিন্তু তবুও মনে হয় একটা খালি খালি অনুভূতি,মন পড়ে থাকে অন্য কোথাও।

দোয়া করি কিন্তু চোখ ভিজে না।
রুকু-সিজদা করি তবুও বুকটা নরম হয় না।
আল্লাহর সামনে দাঁড়ালাম, অথচ মন পড়ে থাকে আজ রিলে কি দেখলাম।

এরকম কেন হয় জানেন?
কারণ হয়তো আপনি তাড়াহুড়ো করেন।
হয়তো আয়াতের মানে জানেন না।
হয়তো শুধু রুটিনের অংশ বানিয়ে ফেলেছেন ইবাদত কে।

ভাবুন আপনি হয়তো ৬০ বছর বাঁচলেন এই পৃথিবীতে।আপনি সব কাজ ঠিক সময়ে করতে চান।ডেডলাইন ঠিক রাখতে চান।বাচ্চার খাওয়া, অফিসের মেইল, বাজারের লিস্ট,বন্ধুর কল, সোশ্যাল মিডিয়ার স্ক্রল—সব কিছুর জন্য সময় বের করেন।

মাঝে মাঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু আয়াত পোস্ট করে মনে করিয়ে দেন, আমি তো ইবাদত করছিই।

But when was the last time you felt it?Truly. Deeply. Tearfully.Like your heart was bowing before your Allah before your body ever did?

এতটুকু পড়ে আপনার মনেও খচখচ করছে না,
আমি কি আসলেই এতোটাই ব্যস্ত যে এতো বড় নিয়ামত প্রতিদিন মিস করে যাচ্ছি?

এবার একটু থামতে হবে আপনাকে। স্রষ্টার সৃষ্টি কত নিখুঁত কতটা প্রোডাক্টিভ এবার বুঝতে পারবেন।

দিনে পাঁচবার সালাত আদায় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যতদিন না মৃত্যু আমাদের আলিঙ্গন করে।
সময়গুলো হচ্ছে প্রত্যুষ,দ্বিপ্রহর, বিকেল, সন্ধ্যা ও সন্ধ্যারাত।

একটা সুনির্দিষ্ট নিয়মের অধীনে দিনটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং সে অনুযায়ী আমাদের প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধিতে সহায়তা করার দিক থেকে এ সময়গুলো অসাধারণ।

আমরা ফজরের সালাতের জন্য ভোরে ঘুম থেকে উঠি। এটা আমাদের সকালের দিকের বেশিরভাগ সময় কাজে লাগাতে সাহায্য করে।

এরপর আসে জোহরের সালাত,যখন দুপুরের খাবারের বিরতিতে যাওয়ার খুব কাছাকাছি সময় এবং কাজকর্মের কিছুটা ক্লান্তি আমাদের উপর ভর করতে শুরু করে।

তৃতীয় সালাতের(আসর) সময় হচ্ছে অপরাহ্ন। আমার কাছে এটা হচ্ছে দিনের বাকি অংশে প্রোডাক্টিভ হওয়ার জন্য একটা ফাইনাল এনার্জি বুস্টার রিমাইন্ডারের মতো।

এরপর সূর্যাস্তের সাথে সাথে মাগরিবের সালাত যা দিনের শেষে চিহ্নিত করে এবং আপনাকে বিশ্রামের জন্য প্রস্তুত করে তোলে।

সবশেষে এশার সালাত একটি পজিটিভ স্পিরিচুয়াল পরিসমাপ্তির মধ্যে দিয়ে আপনার দিন শেষ হয়।

চিন্তা করে দেখুন কতটা গভীর অন্তর্দৃষ্টির বিষয়।
সালাত আমাদের শিখায়—
প্রোডাক্টিভিটিতে সবচেয়ে বড় শক্তি হলো
সময় সচেতনতা + আত্মার সংযোগ।

আপনার জীবনের স্পিরিচুয়াল এনার্জি বুস্টার হচ্ছে সালাত।এটা সে জায়গা যেখানে সব ক্লান্তি,মন খারাপ, বিষন্নতা রেখে আসা যায়।

Don't take Salah as a burden.
Allah has gifted us Salah as a relief from burden.

Research and write-up: N.J

মারইয়াম (আলাইহাস সালাম)-এর মা তাঁর সন্তান জন্মের সময় একটা খুব সুন্দর দোয়া করেছিলেন।তিনি আশা করেছিলেন যে তার একটি ছেলে...
30/09/2025

মারইয়াম (আলাইহাস সালাম)-এর মা তাঁর সন্তান জন্মের সময় একটা খুব সুন্দর দোয়া করেছিলেন।

তিনি আশা করেছিলেন যে তার একটি ছেলে হবে, যে মসজিদে ইবাদতের জন্য সম্পূর্ণভাবে নিবেদিত থাকবে। কিন্তু যখন তাঁর কন্যা সন্তান হলো, তখন তিনি তার নাম রাখলেন মারইয়াম এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন, যেন তিনি তাঁকে ও তাঁর সন্তানদের শয়তানের হাত থেকে রক্ষা করেন।

খেয়াল করলে দেখবেন এই দোয়াটি কেবল সেই নবজাতক কন্যার জন্যই ছিল না, যিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নারী হবেন; বরং এটি তাঁর ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্যও ছিল।

আর সেই ভবিষ্যৎ বংশধর আর কেউ নন, তিনি হলেন মহান রাসূল ঈসা (আলাইহিস সালাম)!

আপনি আপনার সন্তানের জন্য কি দোয়া করেন?

30/09/2025

দিনের সবচেয়ে সুন্দর এবং স্নিগ্ধ দুইটা সময় হলো ফজরের পরের সময়টা আর মাগরিবের আগের সময়টা।

গরম যতই হোক না কেন, এই দুইটা সময়ে একটা প্রশান্তির পরিবেশ নেমে আসে। সবকিছুর ভেতর থাকে কোমলতা আর নমনীয়তা।

কিন্তু আমাদের জীবন থেকে এই ভোর আর শেষ বিকেল প্রায় হারিয়ে গেছে। দারুণ এই দুইটা সময়ের একটায় কেটে যায় ঘুমিয়ে, আরেকটায় আটকে থাকি ঢাকার ট্রাফিক জ্যামে।

আপনি শেষ কবে ফজরের পর আধাঘণ্টা কোনো মাঠে বা সবুজ-ঘেরা জায়গায় হেঁটেছেন? অথবা বিকেলটাকে মন ভরে উপভোগ করেছেন?

আধুনিক নগরজীবন আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে বটে, কিন্তু যা কেড়ে নিয়েছে, তার সংখ্যাও কি কম?

আপনার ভোরগুলো হোক সুন্দর, বিকেলগুলো হোক উপভোগ্য।

— উসামা আদনান

Address

Dhaka
1100

Opening Hours

Monday 10:00 - 19:00
Tuesday 10:00 - 19:00
Wednesday 10:00 - 19:00
Thursday 10:00 - 19:00
Saturday 10:00 - 19:00
Sunday 10:00 - 19:00

Telephone

+8801407056965

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Muslim Day Planner posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Muslim Day Planner:

Share

Category