30/07/2023
আপনি কি আজকে বিএনপির ৫ এরিয়ার কর্মসূচীর কোন একটাতে উপস্থিত ছিলেন? - ৯৮% মানুষের থেকে উত্তর আসবে 'না ছিলাম না'।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন? উত্তর আসবে ছিলাম না।
ডিবি কার্যালয়ে বাবু গয়েশ্বর রায়কে তুলে নেয়ার পর কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন? এর উত্তরও আসবে, না ছিলাম না।
যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে আপনি কিভাবে বুঝলেন বাবু গয়েশ্বর রায় এবং আমানউল্লাহ আমান সরকারের সাথে আঁতাত করেছে এবং গয়েশ্বর রায় ডিবি হারুনের আতিথেয়তা সাদরে গ্রহণ করেছেন?
মিডিয়ার প্রচার তাই তো?
এই মিডিয়া গত ১৫ বছর ধরে যা যা প্রচার করেছে সবই কি তাহলে আপনি বিশ্বাস করেন? যদি আজকের ঘটনাই আপনি বিশ্বাস করে থাকেন তাহলে বলতেই হয় আপনি বাংলাদেশের বর্তমান মিডিয়াগুলার কঠিন একজন ভক্ত।
বাবু গয়েশ্বর রায় বিএনপির একজন ত্যাগী কেন্দ্রীয় নেতা, অনেকটা কাঠখড় পেরিয়ে আজ তিনি কেন্দ্রীয় নেতা। দুই দুইবার বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য। কি কারনে আপনার মনে হলো বাবু গয়েশ্বর রায় হাসিনার মত মানব রক্তপিপাসু এক ডাইনির সাথে আঁতাত করবেন?
আজ বাবু গয়েশ্বর রায়কে কর্মীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে টেনে হিঁচড়ে রাস্তায় ফেলে ইচ্ছামতো পিটিয়েছে কয়েকজন পুলিশ। তাঁদের কেউ কেউ আবার এই প্রবীণ নেতার গায়ে বুট দিয়ে লাথিও মেরেছে। কারা মেরেছে জানেন? যারা গয়েশ্বর রায়ের ছেলের বয়সের চেয়েও ছোট। যারা এই ফ্যাসিবাদ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দলীয় কোঠায় পুলিশের চাকুরি বাগিয়ে নিয়েছে। শুধু গয়েশ্বর রায়কেই নয়, উনাকে রক্ষ্যা করতে যতজন সামনে এগিয়েছিলেন সবাইকে মেরেছে পুলিশ, কয়েকজনকে গুলিও করেছে। কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলও গয়েশ্বর রায়ের পাশেই ছিলেন, গয়েশ্বর রায়কে উনাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে বাবুল ভাই সহ সবাইকেই আজ পিটিয়ে আহত করেছে পুলিশ।
তারপরের ঘটনা, হাঁসপাতাল থেকে গয়েশ্বর রায়কে ডিবি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হল, সেখানে ডিবি হারুনের সাথে উনার বাক-বিতণ্ডাও হয়। নিজেদের পুলিশের অপকর্ম ঢাকতে ডিবি হারুন উনাকে আশ্বস্ত করেন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করবেন বলে এবং উনাকে খাবারের অনুরোধ করেন। কিন্তু আপনারা কি দেখলেন? তদন্ত, আশ্বস্ত সবকিছু বাদ দিয়ে তারা আপ্যায়নের ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করিয়ে বিএনপির কর্মীদের মনোবল ভাঙ্গার চেষ্টা করলেন।
আর সেই ফাঁদে আপনার মত বিচক্ষন মানুষও পা রাখছেন। ডিবি হারুনের বয়ান আর মিডিয়ার নগ্ন উন্মাদনা আপনিও বিশ্বাস করলেন! গত ১৫ বছরে যারা আমাদের উপর ষ্টীম রোলার চালাচ্ছে এক মুহূর্তেই তাঁদেরকে আমাদের বন্ধু বানিয়ে দিলেন! গত ১৫ বছরে যে হারুনরা আমাদের সহস্রাধিক নেতা কর্মীকে গুম ও খুন করেছে তাঁদেরকে আমাদের আত্মীয় বানিয়ে দিলেন!
সবকিছু এতই সহজ?
যা চোখে দেখা যায় তাহাই অলওয়েজ সত্য নহে। আপনি একদিকে আমাদের উপর হামলার ভিডিও দেখলেন আবার দেখলেন আমাদেরকে আপ্যায়ন করাচ্ছে, হামলার ভিডিও আপনার কাছে নিছক নাটকীয় হয়ে গেলো হারুনদের পাতানো ফাঁদের কাছে!
একদিকে স্লো পয়জনিং করে আরাফাত রহমান কোকোকে হত্যা করে অন্যদিকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে শান্তনা দিতে যাওয়ার যে নাটক হাসিনা করেছিলো সেটা হয়তো আপনি ভুলে গিয়েছেন তাই আজ হাসিনার ফল মূল পাঠানোর নাটক আপনি ধরতে পারেন নি।
গত তিন দিনে বিএনপির হাজারও নেতা কর্মীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি অফিসে নিয়ে রাখা হয়েছে, তাঁদেরকেও প্রতিবেলা খাবার দেয়া হচ্ছে! তার মানে কি তারা আঁতাত করেছে? জেলখানায় তো কয়েদীদেরও খাবার দেয়া হয়, তারাও কি আঁতাত করে? বাবু গয়েশ্বর রায়তো নিজের ইচ্ছায় ডিবি কার্যালয়ে যান নি, উনাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ঘরে বসে অনেক জ্ঞান দেয়া যায়, অনেক বক্তব্য রাখা যায়, ফেসবুকের টাইমলাইন এটা সেটা লিখে ভরিয়ে দেয়া যায় কিন্তু রাজপথে পুলিশ ও আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা এতো সোজা কথা নয়। দেশী বিদেশী হাজারও অস্ত্রের সামনে দাঁড়িয়ে খালি হাতে বজ্রকন্ঠে স্লোগান দিতে পারাটাও সাহসের ব্যাপার, সে সাহস আপনার নাই বিঁধায় আপনি আপনার ব্যর্থতা আমাদের কাঁধে ঢালছেন এক পাতানো ফাঁদে পরে।
রাজপথটা অনেক পিচ্ছিল ও কাঁটাযুক্ত, রাজপথ যদি এতই সহজ হতো তাহলে যুগ যুগ ধরে বিপ্লবীদের জীবন বিসর্জন দিতে হতো না। বিজয় আপনা আপনি ঘরে চলে আসতো। তাই অনুরোধ করি, কথায় বিশ্বাসী না হয়ে কাজে বিশ্বাসী হয়ে আমাদের সাথে রাজপথে নামুন, দেখুন রাজপথ কতটা পিচ্ছিল। রাজপথে থেকে আঁতাত করা সম্ভব হয় কিনা!!