18/10/2022
শিশুদের সাথে আপনার দেখানো প্রতিক্রিয়াই ওদের গড়ে তুলে
একটা জরিপে উঠে এসেছে, যেসব বাবারা তাদের শিশুদের সাথে ওদের খেলা নিয়ে কথা বলেন, তাদের শিশুরা ১৮ থেকে ৬৬ বছর পর্যন্ত প্রচেষ্টা, চরিত্র, দক্ষতা, দলবদ্ধ কাজ ও আনন্দ নিয়ে বাবার করা মন্তব্যগুলো মনে করতে পারে। প্রচেষ্টা নিয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে পরিচিত মন্তব্য হলো, ‘নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করো', 'হাল ছেড়ো না কখনও’ এবং ‘এক বার না পারিলে দেখো শতবার।' এই কথাগুলো মানুষকে আমৃত্যু উৎসাহ দেয়। যে-কোনো কাজে নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করতে উদ্বুদ্ধ করে। আপনি শিশুকে যা বলেন, সেটা তাকে পরিণত হতে সাহায্য করে। একজন পরিণত মানুষ হিসেবে বাচ্চা তার শৈশবে শোনা এ কথাগুলো মনে রাখবে।
কল্পনা করুন, বাচ্চা যদি আপনার নেতিবাচক কথাগুলো মনে রাখতে পারত, তার জীবন কেমন হতো! যদি শুধু এই কথাগুলো নিয়ে তাকে বাঁচতে হতো—'ওটা অত ভালো হয়নি’, ‘তুমি কোনো কিছুই ঠিক করে করতে পারো না’, ‘তুমি যদি এ রকম হতে....!'
এইসব উক্তির স্বাভাবিক ফলাফল হলো, শিশুরা আত্মমর্যাদা ও আত্মবিশ্বাসের অভাব নিয়ে বেড়ে ওঠে। এমনকি তারা আপনার প্রতি অসন্তুষ্টও হতে পারে। এটা সংগঠিত হয়ে আপনার ও বাচ্চার সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যদি আপনি এ রকম কিছু না চান, তা হলে আপনার কথা থেকে নেতিবাচক উক্তিগুলো ছেঁটে ফেলুন। তার পরিবর্তে উৎসাহদায়ক কথা বলতে শিখুন, যেমন :
✓ আমি তোমাকে নিয়ে অনেক গর্বিত।
✓ তোমার প্রতি আমার বিশ্বাস আছে।
✓ তুমি অবশ্যই পারবে ইন শা আল্লাহ।
✓ তোমার বিবেচনাবোধে আমার আস্থা আছে।
✓ আমি জানি, তুমি এটা সামলাতে পারবে।
√ তুমি সক্ষম, তুমি তো এমন কাজ আগেও করেছ। গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ তুমি এখন করতে পারো।
✓ তুমি এটা প্রায়ই সমাধান করে ফেলেছ!
√ প্রতিদিনই তুমি উন্নতি করছ। দেখতে দেখতে তুমি অনেকটা কাজ করে ফেলেছ!
তবে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে যে, শিশুদেরকে অতিমাত্রায় প্রশংসাবাক্য শোনানো যাবে না। প্রশংসাবাক্য আর উৎসাহদায়ক কথার ভেতর পার্থক্য আছে। যেমন : আপনি তাকে এটা বলবেন না যে, তার দক্ষতা কতটা ভালো। বরং আপনি তাকে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে বলবেন। এটা তার নিজের ও নিজের সক্ষমতার ওপর আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে তুলবে।
© বই : 'সন্তান গড়ার কৌশল'