03/10/2025
আত্মনির্ভরতার নতুন দিগন্ত: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
শাকিল, জাবি প্রতিনিধি – পদ্মা টাইমস.কম
সন্ধ্যা নামলেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া এলাকায় ভিড় জমে ওঠে এক ব্যতিক্রমী বাজারে। সেখানে টেবিল সাজিয়ে বসে শিক্ষার্থীরা বিক্রি করছে নানান সামগ্রী— হাতে তৈরি গহনা, পোশাক, বই কিংবা ঘরে বানানো খাবার। তাদের এই ছোট ছোট উদ্যোগ যেন হয়ে উঠেছে আত্মনির্ভরতার নতুন দিগন্ত।
বর্তমান সময়ে টিউশন পাওয়া প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠেছে। অনেক শিক্ষার্থীকে পড়াশোনার পাশাপাশি জীবিকার চিন্তায় পড়তে হয়। তবে জাবির শিক্ষার্থীরা বসে না থেকে নিজেদের মেধা ও সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে এগিয়ে আসছে। এভাবে তারা যেমন আয় করছে, তেমনি গড়ে তুলছে আত্মবিশ্বাস ও স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার মানসিকতা।
ক্রেতারাও এ উদ্যোগকে দেখছেন প্রশংসার চোখে। তাদের মতে, ছাত্রজীবনেই যারা কাজের মর্যাদা বুঝে নেয়, ভবিষ্যতের পথচলায় তারাই হবে আসল সফল মানুষ।
জাহাঙ্গীরনগরের ক্যাফেটেরিয়ার ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো তাই শুধু কেনাবেচার জায়গা নয়—এগুলো হয়ে উঠেছে ছাত্রজীবনের সংগ্রাম, স্বপ্ন আর স্বাবলম্বী হওয়ার প্রতীক।
৫১তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আরিফ বলেন, “আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে সাভার বা নবীনগর যেতে হতো। কিন্তু বর্তমানে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার ফলে একদিকে যেমন আমাদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে, তেমনিভাবে আমাদের শিক্ষার্থীরা ব্যবসার মাধ্যমে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। এ ধরনের স্টলে কমসমেটিকস সামগ্রী থেকে শুরু করে হাতে বানানো নানারকম শৈল্পিক জিনিসপত্র বিক্রি করা হয়, যা জাহাঙ্গীরনগরের ঐতিহ্যকে ধারণ করে।"
এ বিষয়ে এক উদ্যোক্তা জানান, " প্রথম বর্ষে টিউশনি না পাওয়ায় পড়াশোনার খরচ চালাতে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। পরে মাথায় আসে হাতে তৈরি নানান শৈল্পিক জিনিসপত্র বিক্রির ধারণা। টিউশনের কিছু জমানো টাকা দিয়ে ছোটো আকারে ব্যবসা শুরু করি ধীরে ধীরে সবার ইতিবাচক সাড়া পেতে থাকি বিক্রির পরিমাণ ও বাড়তে থাকে। বর্তমানে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও ছুটির দিনে মিনি স্টল বসিয়ে এসব পণ্য বিক্রি করছি। এতে একদিকে যেমন পড়াশোনার খরচ মেটানো সহজ হচ্ছে, অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছি।"
উল্লেখ্য, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ছুটির দিনেও এসব উদ্যোক্তাগণ স্টল নিয়ে বসেন।