18/06/2023
দিন দিন যত বড় হইতেসি, ততই বুঝতেসি, আমার বাপ মায়ের স্ট্রিক্টনেস, শাসন আর নিষেধ আমার জন্য কতটা ব্লেসিংস ছিলো।
বিশ্বাস করেন, এই যে একটা করে ঘটনা ঘটে, আর আমি মনে মনে বলি, থ্যাংকিউ আব্বু। থ্যাংকিউ আম্মু।
ফ্রেন্ডদের সাথে ট্যুরে যাইতে চাইলে আম্মু বলতো, বড় হয়ে যাস। এখন না।
কলেজে উঠে সবাই স্বাধীনতা পায়। আমিও পাইসিলাম। তবে সেটা ছিলো লিমিটেড স্বাধীনতা।আড্ডা হোক বা খেলা হোক বা অনুষ্ঠান হোক, সন্ধ্যার মধ্যে বাসায় ফেরার একটা অলিখিত নিয়ম থাকতোই।
সেকেন্ড ইয়ারে এসে আটটা পর্যন্ত বাইরে থাকার অনুমতি পাইসিলাম, তবে সেটা সপ্তাহের তিন দিন।কোচিং এর জন্য।
স্কুল কলেজে আব্বুর এই শাসন আমারে পুরোপুরি আব্বু বিদ্বেষী করে তুলেছিলো। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, পৃথিবীর সবাইকে ক্ষমা করলেও আমি আমার আব্বুকে কখনও ক্ষমা করবো না।
অথচ আজকে আইসা দেখি,চলার পথের আলোটুকুই শুধু আমি চিনতাম, আর আব্বু আম্মু চিনত চোরাবালিগুলো। তাই আমার ছিলো সাহস নামের এক বোকামি। আর আমার মা বাবার ছিলো সাবধানতা নামের একটা প্রটেক্টিভনেস।
আব্বু আম্মুর এই প্রটেক্টিভনেসকে আমি ভাবতাম অহেতুক ভয়। আর আমার বোকামিরে আমি ভাবতাম সাহস। উনাদের ভয় দেখে আমি কতই না হাসছি আর বলছি, এরা কি পাগল? এতো ভয় পায় কেন?
আজ বড় হয়ে দেখি, পাগল উনারা ছিলেন না। পাগল ছিলাম আমি। আগুনে ঝাপ দিতে যাওয়া একটা ছেলেরে তারা তাদের শাসন দিয়ে বাচাইয়া দিসে। আজ, তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা আর শ্রদ্ধা ছাড়া আর কিছু নাই।
যারা যারা এখনও ছোট আছেন, বাবা মা ট্যুরে যাইতে দেয় না, সন্ধ্যার পর বাইরে থাকতে দেয় না, ফোন টিপতে দেয় না বলে পাহাড় পরিমাণ অভিমান আর ক্ষোভের সাগর লুকাইয়া রাখসেন, আপনারা আরেকটু ওয়েট করেন প্লিজ!!
আরেকটু বড় হোন। দুনিয়াটা আরেকটু দেখেন। মানুষগুলোরে আরেকটু চেনেন। দেখবেন, মা বাবাদের বলা অনেক কথাই আপনি ধীরে ধীরে বুঝতে শিখে গেছেন। মা বাবারা কখনোই মিথ্যা বলে না, জাস্ট আমাদের ঐ সত্যটা বোঝার জন্য একটু ওয়েট করা লাগে।
একটা জিনিস মাথায় রাইখেন, স্ট্রিক্ট মা বাবা হইতেসে মেডিসিনের মতো। খাইতে তিতা, বিরক্তিকর এবং প্যারাদায়ক, বাট দিনশেষে এই প্যারাদায়ক জিনিসটাই আমাদের জীবনকে আশেপাশের হাজারটা প্যারা থেকে মুক্ত রাখে।
লিখেছেন Sadiqur Rahman Khan
©