Fountain Publications

Fountain Publications দীপ্ত জ্ঞানের প্রপাত...
(1)

আধুনিক ইংল্যান্ডের অভ্যুত্থান-প্রেক্ষাপট হলো, ১৪৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডের শাসনক্ষমতা নিয়ে ইয়র্ক রাজপরিবার (House of Yo...
10/08/2025

আধুনিক ইংল্যান্ডের অভ্যুত্থান-প্রেক্ষাপট হলো, ১৪৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডের শাসনক্ষমতা নিয়ে ইয়র্ক রাজপরিবার (House of York) ও ল্যাঙ্কাস্টার রাজপরিবার (House of Lancaster)-এর মধ্যে শুরু হয় এক ভয়াবহ যুদ্ধ। ইংল্যান্ডের এ গৃহযুদ্ধের নাম দেওয়া হয় ‘গোলাপের যুদ্ধ’ (Wars of the Roses)।[৪৯] এ সময়টাতে সকলেই দেশের অস্থিতিশীলতা ও অরাজকতা দূর করার চেষ্টা করতে থাকে। দীর্ঘ তিরিশ বছর পর ১৪৮৫ খ্রিষ্টাব্দে এ গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। সম্রাট সপ্তম হেনরি টিউডর (Henry Tudor) (১৪৮৫-১৫০৯ খ্রিষ্টাব্দ) শক্তিশালী কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক বিন্যাসের মাধ্যমে টিউডর রাজতন্ত্র (House of Tudor) প্রতিষ্ঠা করে। এর মাধ্যমে ইউরোপের আধুনিক যুগের শুরু থেকেই ইংল্যান্ড ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী কেন্দ্রীয় প্রশাসনের অধিকারী একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
তথ্যসূত্র :
[৪৯] ইয়র্ক রাজপরিবার সাদা গোলাপকে তাদের প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করে। অপর দিকে ল্যাঙ্কাস্টার রাজপরিবার লাল গোলাপকে তাদের প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করে। দেখুন, ড. মুহাম্মাদ ফুআদ শাকরি, উরুব্বা ফিল ‍উসুলিল হাদিসা : ৮০।
প্রকাশিতব্য বই : এশিয়া ও আফ্রিকায় ইউরোপের উপনিবেশ
Intifada Books
ফাউন্টেন পাবলিকেশন্সের পলিটিক্যাল বইয়ের উইং।
(আপডেট পেতে পেইজটি ফলো করুন)

মুক্তিযুদ্ধকে একটা দল ও পরিবার নিজেদের অপকর্মের ঢাল বানিয়েছে এর উপর কায়েম করেছে অপরাধমূলক মনোপলি। এর উপর ভর করে মানুষকে ...
09/08/2025

মুক্তিযুদ্ধকে একটা দল ও পরিবার নিজেদের অপকর্মের ঢাল বানিয়েছে এর উপর কায়েম করেছে অপরাধমূলক মনোপলি। এর উপর ভর করে মানুষকে ভাবছে প্রজা। ফলে এই প্রজন্ম এই সময়ে, নাগরিকদের অধিকার, সুযোগের সমতা, রাষ্ট্রের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্তের সুরক্ষা এবং রাষ্ট্রের মালিকানা তার প্রকৃত মালিক জনতার কাছে ফিরিয়ে দেবার প্রশ্নে প্রতিবাদী ও লড়াকু। তারাই বাংলাদেশের আত্মাকে বহন করছেন, স্বাধীকার চেতনার প্রকৃত ধারক তারাই। বিপরীতে যারা শক্তিপ্রদর্শন করছেন, রাজাকার শব্দটির সাথে তাদের আত্মীয়তা থাকতে পারে। বস্তুত তারা এই সময়ের রাজাকার।
শিক্ষার্থীরা তাজা, প্রত্যয়ী ও কাব্যিক সাহসে নিজেদের ভাষা ও তত্ত্ব বয়ান করেছে। প্রেক্ষাপটের বাস্তবতায় তারা আমাদের ঋণী করেছে বড় অর্থে। তাদের সাহস ও আত্মবিশ্বাস আমাদের পাতাঝরা জীর্ণতার কানে আরেকবার বসন্তের সম্ভাবনার গান ছড়িয়ে দিলো।
এখানে এক ধরনের 'ডেমোক্রেটিক ব্রিকোলেজ' জনতার ভাষাকে বন্দি করে রেখেছে। অসন্তোষ প্রকাশের আওয়াজ মাত্রই কণ্ঠরোধের শিকার। আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি আত্মঅবমাননায়। মহামহিম ক্ষমতার নারাজির মানেই নজরদারি, আতঙ্ক, হুলিয়া, গুলি। মহাক্ষমতাধর রাজভাষ্য, রাজপিতা ও রাজপরিবার এখানে দেবতা। পুজা দিতে হবেই। চাহিবামাত্রই তাদের হাতে তুলে দিতে হবে নিজেদের অধিকার দলনের অধিকার। নতুবা ক্রসফায়ার, আয়নাঘর, রাষ্ট্রদ্রোহের ব্লেইম। আর রাজাকার বনে যাওয়া তো একদমই ফ্রি।
এভাবেই চলছে সব। কায়েম হয়েছে কবরের শান্তি। ক্ষমতার বুটের তলায় চ্যাপ্টা হতে হতে আমাদের মেরুদণ্ড মাটির সাথে মিশে গেছে। সময়ের রক্তে বরফ জমেছে। নিষ্ঠুর উপহাসে নির্বাক এবং গ্লানির আবর্জনায় লাঞ্চিত এক বাস্তবতাকে আমরা মেনে নিয়েছি। অনবরত অপমানের বিপরীতে প্রতিকারহীন স্তব্ধতাকে আমরা পরিধান করেছি। দস্যুতা, দুর্নীতি, একচেটিয়াবাজি আর বেপরোয়া দলনের কুৎসিত খেলা আমাদের প্রাণকে প্রাণের হানিতেও নিষ্প্রাণ করে ফেলেছে।

- মুসা আল হাফিজ
বই : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কওমী মাদ্রাসা ও আলেম সমাজ
Intifada Books
ফাউন্টেন পাবলিকেশন্সের পলিটিক্যাল বইয়ের উইং
(আপডেট পেতে পেইজটি ফলো করুন)

ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন পত্রিকার হেডিং, যেখানে মুসলমানদেরকে ভয়ানক সহিংসরূপে তুলে ধরা হয়। আসলে বাস্তবেই কি মুসলমানরা সহিংস...
09/08/2025

ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন পত্রিকার হেডিং, যেখানে মুসলমানদেরকে ভয়ানক সহিংসরূপে তুলে ধরা হয়। আসলে বাস্তবেই কি মুসলমানরা সহিংস, নাকি এটা মিথ্যা প্রোপাগান্ডা? বাস্তবতার প্রশ্ন তখন আসবে, যখন মুসলমানদের সহিংসতায় নিহতপ্রাণের সংখ্যা পশ্চিমা সহিংসতার সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু পরিসংখ্যান কি এটা বলে? ইরাক-আফগান যুদ্ধে যতসব মানুষ নিহত হয়েছে, মুসলমানদের সহিংসতার হারের বিবেচনায় নিতান্তই কম! আমেরিকান রাজনৈতিক বিশ্লেষক জন মুলার অত্যন্ত হাস্যকরভাবে এর সাদৃশ্য টেনেছেন। তার মতে, প্রত্যেক বছর মুসলমান সন্ত্রাসীদের (!) হাতে যেসব মানুষ নিহত হয়, তার চেয়ে আমেরিকায় বাথটাবে ডুবে মৃত্যুবরণ করা মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। তারপরও মুসলমানদের সন্ত্রাস-সহিংসতা নিয়ে তাদের এত মাতামাতি, এত প্রোপাগান্ডা—এটা কি অত্যুক্তি ও বাড়াবাড়ি নয়?
মুসলমানদের ক্ষেত্রে এ সহিংসতা সম্পৃক্ত করার ফলশ্রুতিই সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ। আমেরিকার অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব তৎপরতার পেছনে এ একই প্রতিপাদ্য—সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ। তাদের ব্যয়খাতের বৃহৎ অঙ্ক এরই পেছনে খরচ হয়। তাকে নিরসনের জন্য বিভিন্ন সামরিককেন্দ্র, গবেষণাকেন্দ্র। কেন? কারণ কী? মুসলমানরাই তাদের কাছে বিশেষ গুরুত্বের?
এর উত্তর একটাই, মুসলমানরা পাশ্চাত্যের আদর্শ শত্রু। তাদের যথাযোগ্য শত্রু হওয়ার সবকিছুই মুসলমানদের কাছে আছে। মুসলমানদের আছে আদর্শিক সুদৃঢ়তা, জাতিগত স্বাতন্ত্র্য ও সামরিক দক্ষতা—যেমনটা স্যামুয়েল হান্টিংটন বলেন।
যদি বিষয়টি এরূপই হয়, তবে আমেরিকা এ শত্রু মোকাবিলা করার সবকিছুই করবে। তাতে নীতি-নৈতিকতা ও সত্য-মিথ্যার প্রভেদ থাকবে না। তাদের পদক্ষেপ হবে সামরিক, সাংস্কৃতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, নৈতিক—সকল ক্ষেত্রে। বরং এ ক্ষেত্রে তাদের উদ্দেশ্য সকল অবলম্বনকে বৈধ করবে। এখান থেকেই পাশ্চাত্য ও আমেরিকার ইসলাম-বিরোধিতার সূত্রপাত।
বই : ইসলামোফোবিয়া
Intifada Books
ফাউন্টেন পাবলিকেশন্সের পলিটিক্যাল বইয়ের উইং
(আপডেট পেতে পেইজটি ফলো করুন)

Reading Mastery সিরিজটি কাদের জন্য?◾যারা টিচার বা কোর্স ছাড়াই একা একা ইংরেজি শিখতে চান।◾কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, যাদে...
09/08/2025

Reading Mastery সিরিজটি কাদের জন্য?

◾যারা টিচার বা কোর্স ছাড়াই একা একা ইংরেজি শিখতে চান।
◾কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, যাদের ইংরেজি শেখার উপযোগী পরিবেশ নেই।
◾স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, যারা ইংরেজি বই বা আর্টিকেল সহজে বুঝতে চায়।
◾পেশাজীবী, যাদের কোর্স করার সময় বা সুযোগ নেই।
◾যাদের ব্যাকরণে ভয় আছে, তারা ব্যাকরণ ছাড়াই ইংরেজি বুঝতে শিখতে চান।
◾যারা BBC, CNN, Al Jazeera-এর নিউজ সরাসরি বুঝতে চান।
◾যারা অনুবাদ ছাড়াই ইংরেজি বই, আর্টিকেল, বা কনটেন্ট পড়তে চান।
◾যারা নিজের ইংরেজি রিডিং স্কিলকে ১০ গুণ উন্নত করতে চান।
◾যারা বহুবার চেষ্টা করেও শেখেননি—এবার সত্যিকারের সফল হতে চান।
◾ক্লাস ৩-এর শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বড়দের জন্য—যেকোনো বয়সের আগ্রহীদের জন্য উপযোগী।
তাহলে আর দেরি কেন, সংগ্রহ করুন সিরিজটি।
ফাউন্টেন পাবলিকেশন্স
দীপ্ত জ্ঞানের প্রপাত

"অয়ং ভয়ং রবীন্দ্রনাথং ও অন্যান্য' বই নিয়ে Muhammad Jubayer Ahmed Juboraj ভাইয়ের অনুভূতি। বারাকাল্লাহু ফিক। #পাঠকের_অনুভূ...
08/08/2025

"অয়ং ভয়ং রবীন্দ্রনাথং ও অন্যান্য' বই নিয়ে Muhammad Jubayer Ahmed Juboraj ভাইয়ের অনুভূতি। বারাকাল্লাহু ফিক।

#পাঠকের_অনুভূতি
#বুক_রিভিউ

আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং বিভক্ত হয়ো না। আর তোমরা তোমাদের উপর আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ কর, যখন তোম...
07/08/2025

আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং বিভক্ত হয়ো না। আর তোমরা তোমাদের উপর আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ কর, যখন তোমরা পরস্পরে শত্রু ছিলে। তারপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ভালবাসার সঞ্চার করেছেন। অতঃপর তাঁর অনুগ্রহে তোমরা ভাই-ভাই হয়ে গেল। আর তোমরা ছিলে আগুনের গর্তের কিনারায়, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বয়ান করেন, যাতে তোমরা হিদায়াতপ্রাপ্ত হও।

সূরা আলে ইমরান : ১০৩।

সাধারণ আলেম সমাজ প্রতিষ্ঠার পেছনে ঠিক কতখানি মোটিভেশন কাজ করেছিল, জানি না। খুবসম্ভবত এটা কোনো মোটিভেশন থেকে হয়নি, হয়েছে ...
07/08/2025

সাধারণ আলেম সমাজ প্রতিষ্ঠার পেছনে ঠিক কতখানি মোটিভেশন কাজ করেছিল, জানি না। খুবসম্ভবত এটা কোনো মোটিভেশন থেকে হয়নি, হয়েছে একটা পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকে। ৭১-এর পর থেকে আলেম সমাজ সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার। যেন তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হচ্ছেন হুজুররা। অথচ যখনই কোনো আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তির প্রয়োজন পড়ে, তখন হুজুররাই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে এসেছেন। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধেও কিন্তু ইমাম-খতিব ও আলেম সমাজ মসজিদে মিম্বরে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। অথচ দেশে একটা ন্যারেটিভ ছিল দাড়ি-টুপি মানেই রাজাকার, তারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি। এ কারণে পতিত সরকার সব সময় হুজুরদের মাঝে একটা এলায়েন্স তৈরি করে রেখেছিল এবং রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা দমন-পীড়ন আর জুজুর ভয় দেখিয়ে নৈতিক ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রেখেছিল।
৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান থেকে শুরু করে দেশের কোনো অভ্যুত্থানেই আলেম সমাজের কোনো অবদান স্বীকৃতি পায়নি। এবারের চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানেও আলেম সমাজকে রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রণের খুব চেষ্টা চলছিল। আলেম সমাজের সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ধর্মমন্ত্রীর মাধ্যমে দফায় দফায় মিটিং করে নৈতিক ভিত্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছিল পতিত সরকার। এসব দেখে মনে হচ্ছিল আমরা আবারও রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের শিকার হচ্ছি। অতএব, আমাদের হুজুর শ্রেণির চেইন অব কমান্ডকে এবার ভাঙতে হবে। নয়তো এই জেনজি প্রজন্ম কেবল আলেম সমাজকে কটাক্ষ করার জন্য স্মরণ করবে।
১৮ জুলাই তরুণ আলেমদের একটা বিবৃতি দেওয়া হলো। তখন থেকেই মূলত, আমরা তরুণ আলেমদের নিয়ে একটা এলায়েন্স তৈরি করলাম। যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসার ফতোয়া বিভাগ থেকে সেদিন একটা ফতোয়াও জারি হলো যে, রাজাকারের সন্তানরা রাজাকার নয়, তারা রাষ্ট্রীয় সকল সুবিধাদি অন্য সব নাগরিকের মতোই উপভোগ করতে পারবে। এটা মূলত, ছিল স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দেওয়া একটি বক্তব্যর তাসলিমি জবাব। অর্থাৎ যদি শেখ হাসিনার কথার প্রেক্ষিতে আমরা রাজাকারের সন্তানও হই, তবুও আমরা রাষ্ট্রীয় সকল সুবিধাদি পাওয়ার যোগ্যতা রাখি। ফলত, তার বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য। শুনেছি এই ফতোয়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর টেবিলে এক লোক তুলে বলেছিল, আপনি যে মাদ্রাসায় প্রতি বছর যান, সে মাদ্রাসার ফতোয়া দেখেন, তারা কী লিখেছে?
যাই হোক, এরপর তো ইন্টারনেট অফ করে দেওয়া হলো। কারফিউ জারি করা হলো। তবুও আমরা ফোনে ফোনে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। যে যেখান থেকে পেরেছি, এগিয়ে এসেছি। কিন্তু যখন ক্যালেন্ডারের পাতায় নতুন জুলাইয়ের সূচনা হলো। আস্তে আস্তে আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানের দিকে যেতে থাকল, তখন আমরা অর্গানাইজলি আত্মপ্রকাশ করলাম। নয়ত বিগত গণঅভ্যুত্থানগুলোর মতো এই অভ্যুত্থান থেকেও আমাদের অবদান মুছে ফেলা হবে, এই আশঙ্কায় আমরা কর্মসূচি দিলাম "আমারও কিছু বলার আছে"। তৈরি করলাম "সাধারণ আলেম সমাজ”। অরাজনৈতিক নেতৃত্বে এই প্রথম কোনো গণঅভ্যুত্থান রচিত হলো। এই অভ্যুত্থানে দুটি সংগঠন কাজ করেছে। একটি হচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আরেকটি হচ্ছে সাধারণ আলেম সমাজ।

— মুফতি রিদওয়ান হাসান
বই : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কওমী মাদ্রাসা ও আলেম সমাজ
Intifada Books
ফাউন্টেন পাবলিকেশন্সের পলিটিক্যাল বইয়ের উইং।

অথচ আমরা এখানে (পশ্চিমা দেশগুলোতে) বসে আছি আর আমাদেরই বড় বড় কর্পোরেশনগুলো উত্তর-পশ্চিম চীনে ব্যাবসা করে ব্যাপক মুনাফা লু...
07/08/2025

অথচ আমরা এখানে (পশ্চিমা দেশগুলোতে) বসে আছি আর আমাদেরই বড় বড় কর্পোরেশনগুলো উত্তর-পশ্চিম চীনে ব্যাবসা করে ব্যাপক মুনাফা লুটছে। তাদের বিশাল বিশাল কর্পোরেট বিল্ডিংগুলোর অদূরেই আবালবৃদ্ধবনিতারা পশুর মতো খোঁয়াড়ে আবদ্ধ এবং অকথ্য নির্যাতনের শিকার। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, বর্তমানে আমার প্রদেশের প্রতি দশ জন মুসলমানের মধ্যে একজন কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে বন্দি। এই হিসাব আমার নিজের অভিজ্ঞতার সাথেও মিলে যায়। আমার ক্যাম্পে সর্বমোট ২৫০০ জন বন্দি ছিল। মঙ্গলকুর আঞ্চলিক কেন্দ্রকে চীনারা বলত ঝাওসু। সেখানে প্রায় ১,৮০,০০০ লোক বাস করে। সেখানে দুটি বিশাল কারাগার এবং তিনটি কনসেনট্রেশন ক্যাম্প রয়েছে। এগুলো পরিত্যক্ত বিল্ডিং এবং আগেকার একটি পার্টি স্কুলের জায়গায় বানানো হয়েছে। যদি ধরা হয় যে, এই ক্যাম্পগুলোতেও সমসংখ্যক লোক বন্দি রয়েছে, তবে আমার কাউন্টির সমান আয়তনের ছোট জায়গাটিতেই ২০,০০০ লোককে বন্দি করে রাখা হয়েছে। আমার প্রদেশের প্রায় প্রতিটি পরিবারেরই কেউ-না-কেউ এর ভুক্তভোগী। শিনচিয়াংয়ের প্রত্যেকেই তাদের কোনো-না-কোনো আত্মীয়কে হারিয়েছে।
চীনের এসব বন্দিশিবিরের অস্তিত্ব সম্পর্কে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে। আমাদের কাছে অসংখ্য প্রত্যক্ষদর্শীর বিবৃতি রয়েছে, স্যাটেলাইট ইমেজ রয়েছে। সম্প্রতি একজন চীনা হুইসেলব্লোয়ার [২] 'চায়না ক্যাবলস' নামে একটি ডকুমেন্টস ফাঁস করে দিয়েছে। ফলস্বরূপ বহুকাল এসব কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অস্তিত্ব অস্বীকার করার পর বেইজিং অবশেষে কথিত 'ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার'-এর অস্তিত্ব স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। সিনিয়র চীনা রাজনীতিবিদরা এই কথিত 'ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার' নিয়ে নানা মনগড়া ও বানোয়াট কথা বলে যাচ্ছে। তারা বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা সিনেমা তৈরি করেছে, যেখানে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা সুন্দর মেক-আপ করেছে, তারা ভালো ভালো পোশাক পরে নাচছে, গাইছে আর হাসাহাসি করছে। তাদের লাইটের আলোয় উজ্জ্বল ও সুসজ্জিত কক্ষে পাঠদান করা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে 'ভালো মানুষ' হওয়ার শিক্ষা। পার্টির অফিশিয়াল বক্তব্য হচ্ছে, 'বিদেশী মিডিয়া তাদের বিরুদ্ধে। বিদ্বেষমূলক মিথ্যা ছড়াচ্ছে। এখানে যেসব ছাত্ররা রয়েছে, তারা স্বেচ্ছায় সেখানে। অবস্থান করছে। আর এসব ছাত্রদের বেশির ভাগকেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।'
এ ধরনের বক্তব্য আমাকে অবাক করে দেয়। কারণ, তাহলে আমার সমস্ত বন্ধু, প্রতিবেশী আর পরিচিতরা গেল কোথায়? তাদের মুক্তি দেওয়া হলে ফোনে কেন তাদের পাওয়া যায় না? আর এসব কথিত 'ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার'-গুলো বেইজিং কেন এত কঠোর নজরদারিতে রেখেছে? ছোট বাচ্চাদের স্কুল থেকে তুলে এনে কেন সেখানে রাখা হচ্ছে? কেন তাদেরকে তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে? বোর্ডিং স্কুল কেন বাবা-মায়ের স্থান দখল করবে? চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি চাইলেই এটা হয়ে যাবে? চুরাশি বছর বয়সী বৃদ্ধার জন্য এই 'রি-অ্যাডুকেশন' কী শিক্ষা বয়ে আনবে? এসব কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে তো লেখক, সফল ব্যবসায়ী, অধ্যাপকের মতো উচ্চশিক্ষিত লোকেরাও আছেন। তাদের কেন কাঁটাতারের বেড়ার ভেতরে আরও শিক্ষা নিতে হচ্ছে?

তথ্যসূত্র :

[২] হুইসেলব্লোয়ার বলা হয় এমন ব্যক্তিকে, যিনি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানের অবৈধ, অনৈতিক, অনিরাপদ বা প্রতারণামূলক কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করেন।
বই : দ্য চিফ উইটনেস
Intifada Books
ফাউন্টেন পাবলিকেশন্সের পলিটিক্যাল বইয়ের উইং

গণতন্ত্র জনগণের শাসনএটি গণতন্ত্রের প্রাণভোমরা। গণতন্ত্রের আক্ষরিক অর্থই হচ্ছে জনগণ কর্তৃক পরিচালিত সরকার! আসলেই কি তাই? ...
07/08/2025

গণতন্ত্র জনগণের শাসন
এটি গণতন্ত্রের প্রাণভোমরা। গণতন্ত্রের আক্ষরিক অর্থই হচ্ছে জনগণ কর্তৃক পরিচালিত সরকার! আসলেই কি তাই? গণতন্ত্রে জনতা শাসক?
প্রথম সমস্যা হচ্ছে—পিপল বা জনগণ বলতে কোনো কিছুর অস্তিত্বই নেই! যা আছে, মিলিয়ন মিলিয়ন ‘ব্যক্তি’, সাথে তাদের ভিন্ন ভিন্ন মতামত ও হাজারো রকম স্বার্থ। তারা কীভাবে একত্রে শাসন করবে? পুরোপুরি অসম্ভব। একজন ডাচ কমেডিয়ান বলেছিলেন—‘গণতন্ত্র হচ্ছে জনগণের শাসন। তাই প্রতিদিন প্রত্যুষে উঠে আমি আসলে কী চাই তা জানতে সংবাদপত্র পড়তে হয়! পড়ে, আমি কী চাই তা জেনে বিমোহিত হই!’ আরেকটু খতিয়ে দেখা যাক। কেউ নিশ্চয়ই এ কথা বলবে না যে, ‘জনগণ’ মাইক্রোসফট ব্যবহার করতে চায় বা জনগণ পেপসি খেতে চায়। কেন বলবে না? কারণ কেউ এটি চায়, কেউ চায় না। রাজনৈতিক অনুরাগের ক্ষেত্রেও একই কথা।
অধিকন্তু গণতন্ত্রে ‘দ্য পিপল’ বা জনগণ সিদ্ধান্ত নেয় না; বরং জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ সিদ্ধান্ত নেয়। আরও পরিষ্কারভাবে বললে সিদ্ধান্ত নেয় সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘ভোটার’! এ ক্ষেত্রে মাইনোরিটি বা সংখ্যালঘুরা কিন্তু ‘জনগণের’ অংশ নয়। খুবই উদ্ভট ব্যাপার। সবাই কেন জনগণের অংশ নয়? যদি আপনি ওয়ালমার্টের ক্রেতা হয়ে থাকেন, তবে অবশ্যই চাইবেন না আপনাকে জোরপূর্বক অন্য সুপার শপের পণ্য গেলানো হোক। গণতন্ত্রে ঠিক এটিই ঘটে। যদি আপনি সংখ্যালঘুর কাতারে হয়ে থাকেন, নির্বাচনে পরাজিত পক্ষ হয়ে থাকেন, তবে বিজয়ী পক্ষের তালে তালে আপনাকেও নাচতে হবে।
আচ্ছা, তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম সংখ্যাগুরুরাই ‘পিপল’। বাকিরা ভাসমান কচুরিপানা। তবুও কি এ কথা খাটে যে জনগণ সিদ্ধান্ত নেয়? চলুন দেখা যাক। দুই ধরনের গণতন্ত্রের কথা কেতাবে পাওয়া যায়; প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র এবং পরোক্ষ গণতন্ত্র (বর্তমান প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র, যেখানে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সংসদে গোটা জাতির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে)। প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রে প্রতিটি সিদ্ধান্ত সব জনগণ মিলে নেয়। যেমন কোনো ইস্যুতে গণভোট হলে। পরোক্ষ গণতন্ত্রে জনগণ অপর কিছু ‘জনগণকে’ ভোট দেয় প্রতিনিধি হিসেবে। তারা জনগণের পক্ষ থেকে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেয়। পরিষ্কারভাবেই বুঝা যাচ্ছে দ্বিতীয় পদ্ধতিতে সাধারণ মানুষ প্রথম পদ্ধতির চেয়ে অনেক কম ক্ষমতা চর্চা করে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের নিয়ন্ত্রণ কম। আধুনিক গণতন্ত্র বলতে পুরোটাই পরোক্ষ গণতন্ত্র।
বই : বিয়ন্ড ডেমোক্রেসি
Intifada Books
ফাউন্টেন পাবলিকেশন্সের পলিটিক্যাল বইয়ের উইং
(আপডেট পেতে পেইজটি ফলো করুন)

প্রথম আন্দোলনে তো নেমেছিলাম ২০১৩ সালের ৫ই মে। শাপলা চত্বরের গণহত্যাকে যদি আওয়ামী ন্যারেটিভ সেসময় রঙ মেখে শুয়ে থাকা না বল...
06/08/2025

প্রথম আন্দোলনে তো নেমেছিলাম ২০১৩ সালের ৫ই মে। শাপলা চত্বরের গণহত্যাকে যদি আওয়ামী ন্যারেটিভ সেসময় রঙ মেখে শুয়ে থাকা না বলতে পারত, তাহলে হয়তো ২০২৪-এর গণহত্যা ঘটত না। যাইহোক, চব্বিশের এই গণঅভ্যুত্থানে প্রথম স্বশরীরে নেমেছিলাম ১৯ জুলাই। যদিও জুলাইয়ের শুরু থেকে এই আন্দোলনের ন্যায্যতা ছিল স্পষ্ট। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কারের প্রেক্ষিতে এই আন্দোলনের সূচনা। আমি তখনও কোটা সংস্কারের পক্ষে ছিলাম। যদিও একজন কওমী ব্যাকগ্রাউন্ড হওয়ায় সরকারি চাকরিতে আমরা খুব একটা প্রাসঙ্গিক না। তার উপর আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, তবুও আমার মনে হয়েছে দেশে মেধার অল্টারনেটিভ কখনো কোটা হতে পারে না।
১৯ জুলাই প্রথম স্বশরীরে অংশ নেওয়ার কারণ হলো, জুমার নামাজরত মুসল্লিদের পুলিশের টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ। এটা এতটা আহত করেছিল যে, নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি। এর আগে ১৬ জুলাই রংপুরের আবু সাঈদের নির্মম হত্যার দৃশ্য এরপর ১৮ জুলাই থেকে সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে কারফিউ জারি করে এবং রাত হলে ব্লকরেইড দিয়ে চলে গণগ্রেফতার। এভাবে সরকারের প্রতিটা জনবিরোধী সিদ্ধান্ত জনগণকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে এই জুলাই আন্দোলনের টাইমলাইনকে তিনভাগে ভাগ করেছি, আমি শুধু আমারটা বলছি, জুলাইয়ের শুরু থেকে আন্দোলন যখন ধীরে ধীরে তীব্র হতে থাকে, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা মৌন সমর্থন দিয়ে গেছে। আমি যাত্রাবাড়ী বড় মাদ্রাসার গেটের সামনে দেখেছি ছাত্ররা পানি ভরে ভরে বোতলজাত করে রাখছিল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জন্য। যাত্রাবাড়ীতে এটা চলে ১৯ জুলাই পর্যন্ত। ১৯ জুলাইয়ের পর থেকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা কিছুটা ছদ্মবেশে নামতে শুরু করে এবং মাদ্রাসাগুলোতে সেটা মোমের আগুনের মতো এক মাদ্রাসা থেকে আরেক মাদ্রাসায় ছড়িয়ে যেতে শুরু করে। এটা চলে প্রায় জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত। কিন্তু জুলাই কি শেষ হয়েছিল? ক্যালেন্ডারের পাতায় জুলাই শেষ হলেও সেটা যখন নতুন জুলাইয়ের ইতিহাস রচিত করে, তখন থেকেই প্রতিধ্বনিত হয় স্বৈরাচারের পতন।

—মুফতি রিদওয়ান হাসান
বই : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কওমী মাদ্রাসা ও আলেম সমাজ
Intifada Books
ফাউন্টেন পাবলিকেশন্সের পলিটিক্যাল বইয়ের উইং।

সিনিয়র সরকারি চাকুরিজীবী হিসেবে পূর্ব-তুর্কিস্তানের দুঃস্বপ্নময় বন্দিশিবিরের অনেক লোমহর্ষক দৃশ্য আমি দেখেছি। কিন্তু পার্...
06/08/2025

সিনিয়র সরকারি চাকুরিজীবী হিসেবে পূর্ব-তুর্কিস্তানের দুঃস্বপ্নময় বন্দিশিবিরের অনেক লোমহর্ষক দৃশ্য আমি দেখেছি। কিন্তু পার্টির লোকদের ভয়ে আমাকে মুখ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। এর কোনো ব্যত্যয় হলে মৃত্যুই ছিল অবধারিত পরিণতি। আক্ষরিক অর্থেই আমাকে একপ্রকার নিজের মৃত্যুপরোয়ানায় স্বাক্ষর করতে হয়েছিল। এত সব বাধা সত্ত্বেও আমি শেষপর্যন্ত বিশ্বের সর্ববৃহৎ উন্মুক্ত কারাগার থেকে পালিয়ে সুইডেনে পৌঁছাতে সক্ষম হই।
যেহেতু আমাকে একটি কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তাই বন্দিদের থেকে আমার পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল। আমার এই অবস্থানের সুবাদে আমি সিস্টেমের ভেতরের কার্যকলাপকে প্রত্যক্ষ করতে পারি। এটা মূলত নিখুঁতভাবে পরিচালিত একটি কয়েদব্যবস্থা, যা বেইজিংয়ের প্রত্যক্ষ নির্দেশনা অনুসারে পরিচালিত হয়। সেখানে কেবল নিয়মতান্ত্রিক নির্যাতন, অপমান ও মগজধোলাই করা হয় না; বরং এর উদ্দেশ্য হলো একটি সম্পূর্ণ জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করে ফেলা।
বই : দ্য চিফ উইটনেস
Intifada Books
ফাউন্টেন পাবলিকেশন্সের পলিটিক্যাল বইয়ের উইং
ছবি : সংগৃহীত

ধরুন, আপনি চান না আপনার টাকা তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নে ব্যয় হোক, কিংবা আফগানিস্তান যুদ্ধে। ফলে আপনি এমন একটি দলকে ভোট দিলেন,...
06/08/2025

ধরুন, আপনি চান না আপনার টাকা তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নে ব্যয় হোক, কিংবা আফগানিস্তান যুদ্ধে। ফলে আপনি এমন একটি দলকে ভোট দিলেন, যারা এগুলোর বিরোধী। কিন্তু সেই একই দল রিটায়রমেন্টের বয়স বৃদ্ধির পক্ষে, আপনি আবার এর বিপক্ষে। সবচেয়ে নিকৃষ্ট পরিস্থিতি হচ্ছে যখন আপনার ভোটপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা দল তাদের প্রদত্ত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে। অবশ্য তারা এতে সিদ্ধহস্ত, প্রায়শই করে থাকে। সে ক্ষেত্রে আপনি কী করতে পারেন? হয়তো অতি উন্নত দেশে আপনি আদালতে মামলা করতে পারবেন, কিন্তু এই ঝামেলায় কেউ জড়াতে ইচ্ছুক না। একমাত্র উপায় হচ্ছে পাঁচ বছর অপেক্ষা করা। ভিন্নদলকে ভোট দেওয়া। এবং তারপর? একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির অপেক্ষা করা!
ভোট হচ্ছে স্বাধীনতা ক্ষুণ্নকরণের বিনিময়ে প্রাপ্ত ক্ষমতাচর্চার বিভ্রম। টম এবং জন দাঁড়িয়ে আছে ব্যালট বাক্সের সামনে। সেখানে দাঁড়িয়ে ভোটের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি নির্ধারণের খোয়াব দেখছে। অতি ক্ষুদ্র পরিসরে যদিও তা সত্য। কিন্তু তার চেয়েও বড় সত্য হচ্ছে একই সময়ে ৯৯.৯৯৯৯% ভোটার দেশ তো দেশ, খোদ টম আর জনের জীবনধারা নির্ধারণ করে দিচ্ছে। নিজের জীবনের গতিপথ নির্ধারণের ক্ষমতাই যখন তাদের নেই, তাদের জীবন অন্যরা গড়ে দিচ্ছে, সে ক্ষেত্রে তারা খোয়াব দেখছে অন্যদের জীবনকেও 'প্রভাবিত' করার! সব ভোটার একই প্রতারণার শিকার। তারা যদি নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরা নিত, তবে এর চেয়ে ঢের বেশি স্বাধীনতা ভোগ করত। উদাহরণত—বেতন পাওয়ার পরপরই নানা ট্যাক্সের ফাঁদে অর্ধেক টাকা সরকারের হাতে গচ্চা দেওয়ার পরিবর্তে যদি নিজের টাকা কোথায় ব্যয় করবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাদের হাতে থাকত।
আরেকটি উদাহরণ দেখা যাক। আমাদের গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বাচ্চাদের শিক্ষাব্যবস্থার ওপর মানুষের নিয়ন্ত্রণ অতি ক্ষীণ। যদি তারা শিক্ষাব্যবস্থা পরিবর্তন করতে চায় তবে শুধু ব্যালট বাক্সে কাজ হবে না, তাদের ভিন্নপথ ধরতে হবে। হয়তো লবিস্ট গ্রুপের শরণাপন্ন হতে হবে, মহামহিম রাজনীতিবিদদের সমীপে আর্জি দাখিল করতে হবে, কিংবা সরকারি ভবনের সামনে গিয়ে মিছিল-মিটিং-প্রতিবাদ করতে হবে। আমাদের দেশে অভিভাবকদের বহু সংস্থা আছে, তারা আমাদের শিক্ষানীতি প্রভাবিত করতে চাচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে বহু শ্রমব্যয়ের পর ফলাফল প্রায় শূন্য। যদি রাষ্ট্রপ্রভু শিক্ষাব্যবস্থায় বাগড়া না দিত, তবে কাজটা কিন্তু অনেক সহজ ছিল। শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজের নিতে পারত। ব্যক্তিগত এবং যৌথ; দুভাবেই।
শাসক দল ক্রমাগত জনগণকে ভোট দিতে উৎসাহিত করে। ভাবখানা এমন যে ভোটের মাধ্যমে তারা সরকারগঠন এবং সরকারের নীতি নির্ধারণে খুব আহামরি প্রভাব ফেলতে সক্ষম। আসল কথা হচ্ছে জনগণের ভোট, ভোটপ্রদানের উচ্চ হার রাজনীতিবিদদের হাতে স্ট্যাম্প তুলে দেবে, জনগণকে শাসন করার নৈতিক ও বৈধ অধিকার দেবে। স্বার্থ রাজনীতিবিদদের, জনগণের না। অনেকের বিশ্বাস নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা জনগণের নৈতিক দায়িত্ব। কখনো এমনও বলার চেষ্টা করা হয় যে যদি আপনি ভোট না দেন, তবে পাবলিক ডিবেটে আপনার মত প্রকাশের অধিকার নেই, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েও উচ্চবাধ্য করার সুযোগ নেই। যেহেতু আপনি ব্যালট বাক্সে ভোট দেননি, আপনার মতামত গোনায় আসবে না।
এই মতের প্রবক্তারা হয়তো দেখতে অক্ষম যে এখন এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালাদের বিক্রিত 'ভোটের মাধ্যমে প্রভাববিস্তারের' কল্পিত গপ্পো খাচ্ছে না। এরা স্টকহোম সিন্ড্রোমে আক্রান্ত। তারা তাদের বন্দিকারীদের প্রেমে মন্ড। এটা বুঝতেও পারছে না যে রাজনীতিবিদ আর প্রশাসকদের ক্ষমতার জন্য সে নিজের স্বাধীনতা জলাঞ্জলি দিচ্ছে। [১]
তথ্যসূত্র :
[১] স্টকহোম সিন্ড্রোম একটি সাইকোলোজিক্যাল অবস্থান যেখানে বন্দি বন্দিকারীর প্রতি অনুরাগ অনুভব করে। তার এজেন্ডা নিজের এজেন্ডা বলে মনে করে। ১৯৭৩ সালে সুইডেনের স্টকহোমে এক ব্যাংক ডাকাতির সময় ডাকাতদল চারজন বন্দিকে ছয়দিন ধরে ব্যাংকের ভল্টে বন্দি করে রাখে। এসময় বন্দিদের সাথে ডাকাতদের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। বন্দিনীদের একজন ফোনে সুইডিশ প্রধানমন্ত্রীকে বলে যে সে ডাকাতদের বিশ্বাস করে, কিন্তু পুলিশকে করে না। পুলিশি অভিযানে সে নিহত হওয়ার আশঙ্কা করছে। এ থেকেই স্টকহোম সিন্ড্রোমের উৎপত্তি।— অনুবাদক

এনসাইক্লোপিডিয়া অব ব্রিটনিকা দ্রষ্টব্য।

https://www.britannica.com/science/Stockholmsyndrome
বই : বিয়ন্ড ডেমোক্রেসি
Intifada Books
ফাউন্টেন পাবলিকেশন্সের পলিটিক্যাল বইয়ের উইং
(আপডেট পেতে পেইজটি ফলো করুন)

Address

Banglabazaar Dhaka
Dhaka
1100

Opening Hours

Monday 09:00 - 21:00
Tuesday 09:00 - 21:00
Wednesday 09:00 - 21:00
Thursday 09:00 - 21:00
Friday 09:00 - 21:00
Saturday 09:00 - 21:00
Sunday 09:00 - 21:00

Telephone

+8801768864428

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Fountain Publications posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Fountain Publications:

Share

Category