12/09/2025
ডাকসু–জাকসু নির্বাচনে ভূমিধস পরাজয় ও মানিকগঞ্জ বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংকট নিয়ে আলোচনা :
সাম্প্রতিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে বিএনপি-ঘনিষ্ঠ সংগঠনের ভূমিধস পরাজয় দলটির গভীর সাংগঠনিক দুর্বলতা ও নেতৃত্বহীনতাকে আরও স্পষ্ট করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তৃণমূল থেকে কেন্দ্র—সব স্তরেই বিএনপি একই ধরণের সমস্যায় ভুগছে।
অন্ধ ভক্তি ও চাটুকার সংস্কৃতি
দলের ভেতরে একটি বড় অংশ নেতাদের ভুল দেখেও চুপ থাকে।
অন্য দল ভালো কিছু করলে প্রশংসা নয়, বরং ত্রুটি খোঁজা তাদের প্রধান কাজ।
মাঠের কার্যকর আন্দোলনের বদলে সামাজিক মাধ্যমে অন্ধ সমর্থনই যেন প্রধান শক্তি।
সাংগঠনিক ভঙ্গুরতা
বিএনপির কাঠামোয় কার্যকর চেইন অব কমান্ড নেই।
ত্যাগী ও সংগ্রামী কর্মীরা মূল্যায়ন পান না, সুযোগসন্ধানীরা সামনে চলে আসে।
নতুন প্রজন্মের আশা ও জনমানুষের চাহিদা ধরতে না পারা দলের দুর্বলতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
ডাকসু–জাকসু নির্বাচনের বার্তা
ডাকসু ও জাকসু উভয় নির্বাচনে বিএনপি-ঘনিষ্ঠ সংগঠনের শোচনীয় হারের মধ্য দিয়ে এই দুর্বলতা নগ্নভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এটি শুধু ছাত্রসংগঠনের নয়, পুরো দলের সাংগঠনিক ব্যর্থতার প্রতিফলন।
> এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন,
“যেখানে ইসলামী ছাত্রশিবির সাংগঠনিক শক্তি ধরে রাখতে পেরেছে, সেখানে বিএনপি-সমর্থিত সংগঠনের এই ভরাডুবি দেখাচ্ছে দলের ভেতরের শৃঙ্খলা ও নেতৃত্বের সংকট কত গভীর।”
মানিকগঞ্জে তৃণমূলের হতাশা
রাজনৈতিক মহলের মতে, কেন্দ্রীয় দুর্বলতা জেলার রাজনীতিতেও স্পষ্ট।
মানিকগঞ্জসহ নানা জেলায় দীর্ঘদিন মাঠে থাকা ত্যাগী ও জনপ্রিয় কর্মীরা উপেক্ষিত,
কিন্তু অর্থবান বা সুবিধাভোগী মহলের প্রভাবশালীরা নেতৃত্বে জায়গা পাচ্ছেন।
ফলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে দলকে আরও কোণঠাসা করতে পারে।
> স্থানীয় এক বিশ্লেষকের ভাষায়,
“যদি দল মাঠের জনপ্রিয়তা ও ত্যাগের মূল্য না দেয়, সংগঠন পুনর্গঠন কঠিন হবে। অর্থনির্ভর নেতৃত্বে আন্দোলনের শক্তি বাড়ে না, বরং কমে।”
শিবিরের শৃঙ্খলা থেকে শিক্ষা
অন্যদিকে ইসলামী ছাত্রশিবির এখনও নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি ধরে রাখতে সক্ষম।
তাদের স্পষ্ট চেইন অব কমান্ড, কর্মীবান্ধব নীতি এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও ঐক্যবদ্ধ থাকার ক্ষমতা বিএনপির জন্য বড় শিক্ষা হতে পারে।