Raqi Abdul Malik

Raqi Abdul Malik রুকইয়াহ শারইয়ার মাধ্যমে বনি আদমের শরীর থেকে জীন তাড়ানো এটা অতি উত্তম একটি কাজ। আর এটা প্রত্যেক নবী-রাসুল ও নেককার লোকদের কাজ।

ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ.

06/10/2025

কু*ফরের নীরবতা আর নামধা*রী মুসলিমদের মোহ!

প্রকাশ্যে একজন মু*র*তা*দ পবিত্র কোরআন অবমাননা করলো, কিন্তু ফলাফল কী? কোনো হিন্দু নেতা, বৌদ্ধ নেতা বা অন্য কোনো ধর্মের তথাকথিত মানবতাবাদী গুরুকে কি দেখেছেন এর বিরুদ্ধে একটা শব্দ উচ্চারণ করতে? দেখেছেন ওই অপরাধী*র শাস্তি চাইতে?

দেখেননি। দেখার কথাও না।
কারণ এক ও অদ্বিতীয়, যা এক চিরন্তন সত্য: الكُفْرُ مِلَّةٌ وَاحِدَةٌ (আল-কুফরু মিল্লাতুন ওয়াহিদাহ) — সমস্ত কুফ*র এক জাতি।

এরই প্রতিধ্বনি করে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলেন:
وَالَّذِينَ كَفَرُوا بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ
"আর যারা কুফরি করেছে, তারা একে অপরের বন্ধু ও সহযোগী।" (সূরা আল-আনফাল: ৭৩)

সুতরাং, ক্ষমতার মোহে অন্ধ, সেক্যু*লার ও গণতা*ন্ত্রিক নামধা*রী মুসলিম নেতাদের বলছি—এবার তোমাদের মোহনিদ্রা ভাঙুক। তোমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যাদের দুর্গা*পূজায় শুভেচ্ছা জানাতে যাও, যাদের মন রক্ষায় তোমরা ব্যস্ত থাকো, তারা কখনোই ইসলাম ও মুসলিমদের পক্ষে থাকবে না। তোমাদের এই দালা*লি অর্থহীন।

তারা তোমাদের পবিত্র গ্রন্থের অবমাননায় নীরব থেকে প্রমাণ করে দেয়, তাদের অন্তর তোমাদের প্রতি কতটা বিদ্বে*ষে পরিপূর্ণ।

কেননা, স্বয়ং আল্লাহ্ তাঁর কিতাবে ফয়সালা করে দিয়েছেন, মুসলিমদের প্রতি সবচেয়ে তীব্র শত্রুতা পোষণ করে মুশরি*ক ও ইয়াহুদী*রা। (সূরা আল-মায়িদাহ: ৮২)

এটা আল্লাহর বাণী। এর চেয়ে বড় সত্য আর কিছু হতে পারে না। তাই তাদের চেহারাগুলো চিনে নিন, নতুবা তাদের সন্তুষ্ট করতে গিয়ে নিজের ঈমানটুকুও হারাবেন।

05/10/2025

মাদকাসক্ত ও পাগলের মুখোশে মু~রতা~দের আস্ফালন!

এক ঘৃণ্য বাস্তবতা! বাংলাদেশে যত কথিত পাগল আর মাদকাসক্ত আছে, অবমাননার জন্য তারা কেবল পবিত্র কুরআন, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ﷺ-কেই খুঁজে পায়! অন্য কোনো ধর্ম ও তাদের দেব*দেবী এবং তাদের ধর্মগ্রন্থের বিকৃত রূপ ও কুসংস্কারের দিকে তাকানোর হিতাহিত জ্ঞান, সাহস ও চেতনাও এদের জাগ্রত হয় না।

কারণটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। এরা কোনো পাগল বা নেশা*খোর নয়; এরা হলো সুযোগসন্ধানী মু*র*তা*দ। অন্তরে পুষে রাখা নিকৃষ্টতম ঘৃণা উগরে দেওয়ার জন্যই এরা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।

আর যেইমাত্র এরা ধরা পড়ে, অমনি এক ইসলাম*বিদ্বেষী *চক্র এদের 'মানসিক রোগী'র সার্টিফিকেট নিয়ে হাজির হয়। প্রকৃতপক্ষে, এরাই হলো সেই কারিগর, যারা পর্দার আড়ালে থেকে ইসলাম ও কোরআন অবমাননাকারী এই তথাকথিত পাগল ও মাদকাসক্ত নামক মু*র*তা*দের*কে তৈরি করে।

এই লেবাসধারী মু*র*তা*দ এবং পর্দার আড়ালে থাকা তাদের প্রভুদের এখনই মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার সময়। এদের বিষাক্ত শেকড় উপড়ে ফেলে এই জমিন প*বিত্র করতে হবে।

01/10/2025

যাদু শুধু বিচ্ছেদ নয়, বরং মৃত্যুও ঘটায়: আসুন অকাট্য দলিলের আলেকে বাস্তবতা উপলব্ধি করি।

যাদু বা সিহরের প্রভাব কতদূর পর্যন্ত যেতে পারে—এ নিয়ে আমাদের সমাজে অনেক বিভ্রান্তি রয়েছে। অনেকেই ভাবেন, যাদু হয়তো কেবল মানুষের মনে বিভ্রম সৃষ্টি করে বা ছোটখাটো অসুস্থতার কারণ হয়। কিন্তু যাদুর কারণে কি একজন মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে? কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতের ইমামগণ এ বিষয়ে কী বলেছেন?

আসুন, আজ আমরা পবিত্র কুরআন এবং মুসলিম উম্মাহর বরেণ্য ইমামগণের অকাট্য দলিলের মাধ্যমে এই ভয়ংকর বাস্তবতাকে অনুধাবন করি।

প্রথম দলিল: সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত ১০২ (আল্লাহর প্রত্যক্ষ ইঙ্গিত)

আল্লাহ তা'আলা যাদুর ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন:
..فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ...

"...অতঃপর তারা তাদের (হারুত ও মারুত) থেকে এমন কিছু শিখত, যা দ্বারা তারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাত..."

(সূরা আল-বাকারাহ: ১০২)

লক্ষ্য করুন:

আয়াতটিতে আল্লাহ তা'আলা যাদুর সবচেয়ে নিকৃষ্ট সামাজিক প্রভাবগুলোর একটি—অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদ ঘটানো—উল্লেখ করেছেন। এটি যাদুর একটি বাস্তব এবং শক্তিশালী প্রভাব। একবার গভীরভাবে চিন্তা করুন:

১/ আকস্মিক বিচ্ছেদের ফলে সৃষ্ট মানসিক যন্ত্রণা, তীব্র হতাশা এবং সামাজিক বিপর্যয় একজন মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে। মানসিক আঘাত থেকে শারীরিক মৃত্যু (যেমন—হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক, আত্মহত্যা) একটি প্রমাণিত বাস্তবতা।

২/ যে শয়তানি শক্তি দুটি মানুষের মধ্যকার সবচেয়ে গভীর ও পবিত্র সম্পর্ককে ছিন্ন করে দিতে পারে, সেই একই শক্তি আল্লাহর হুকুমে একজন মানুষের জীবনশক্তিকে নিঃশেষ করে দেওয়ার ক্ষমতাও রাখতে পারে। আল্লাহ এখানে বিচ্ছেদের মতো একটি চূড়ান্ত পর্যায়ের সামাজিক ক্ষতির উদাহরণ দিয়ে যাদুর সর্বোচ্চ ধ্বংসাত্মক ক্ষমতার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন।

দ্বিতীয় দলিল: ইমাম কুরতুবী (রহিমাহুল্লাহ)-এর বিশ্লেষণ (তাফসিরে কুরতুবী)

ইমাম আবু আব্দুল্লাহ আল-কুরতুবী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর বিশ্ববিখ্যাত তাফসির "আল-জামি' লি-আহকামিল কুরআন"-এ সূরা আল-বাকারাহ: ১০২ আয়াতে বর্ণিত উক্ত যাদুর প্রভাব সম্পর্কে বলেন:

"وَلَا يُنْكَرُ أَنَّ السِّحْرَ لَهُ تَأْثِيرٌ فِي الْقُلُوبِ، بِالْحُبِّ وَالْبُغْضِ وَبِإِلْقَاءِ الشُّرُورِ حَتَّى يُفَرِّقَ السَّاحِرُ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ، وَيَحُولُ بَيْنَ الْمَرْءِ وَقَلْبِهِ، وَذَلِكَ بِإِدْخَالِ الْآلَامِ وَعَظِيمِ الْأَسْقَامِ، وَكُلُّ ذَلِكَ مُدْرَكٌ بِالْمُشَاهَدَةِ وَإِنْكَارُهُ مُعَانَدَةٌ."

“আর এ কথা অস্বীকার করা যায় না যে, যাদুর অন্তরের উপর প্রভাব রয়েছে—(যেমন) ভালোবাসা ও ঘৃণা সৃষ্টি এবং অনিষ্ট নিক্ষেপের মাধ্যমে; এমনকি যাদুকর ব্যক্তি ও তার স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটায় এবং ব্যক্তি ও তার (নিজ) অন্তরের মধ্যে বাধা সৃষ্টি করে। আর তা হয় (শরীরে) ব্যথা-বেদনা এবং মারাত্মক রোগব্যাধি (عَظِيمِ الْأَسْقَامِ) প্রবেশ করানোর মাধ্যমে। আর এই সবকিছুই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার দ্বারা উপলব্ধি করা যায় এবং একে অস্বীকার করা হলো (সত্যের বিরুদ্ধে) হঠকারিতা।”

(তাফসিরে কুরতুবী, ২/৪৪)

দেখুন:

ক) ইমাম কুরতুবী (রহিমাহুল্লাহ) এখানে কোনো সাধারণ সর্দি-কাশির কথা বলেননি। তিনি عَظِيم الأسقام(মারাত্মক রোগ, গুরুতর অসুস্থতা) শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এমন অনেক রোগ আছে যার চূড়ান্ত পরিণতি হলো মৃত্যু, যেমন—ক্যান্সার, প্যারালাইসিস, হার্ট অকার্যকর হয়ে যাওয়া, কিডনি নষ্ট হওয়া ইত্যাদি।

খ) যদি যাদু শরীরে عَظِيمِ الْأَسْقَامِ বা "মারাত্মক রোগব্যাধি" সৃষ্টি করতে পারে, এবং সেই মারাত্মক রোগের স্বাভাবিক পরিণতি যদি মৃত্যু হয়, তবে যৌক্তিকভাবেই প্রমাণিত হয় যে, যাদুর প্রভাবে (অর্থাৎ, যাদুর মাধ্যমে সৃষ্ট রোগের কারণে) মানুষের মৃত্যু হতে পারে। এটি একটি সরল এবং অকাট্য যুক্তি।

তৃতীয় দলিল: ইমাম ইবনে কুদামাহ (রহিমাহুল্লাহ)-এর সুস্পষ্ট ঘোষণা (আল-মুগনী)

হাম্বলী মাযহাবের স্তম্ভ, ইমাম মুওয়াফফাকুদ্দীন ইবনে কুদামাহ আল-মাকদিসী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর অমর গ্রন্থ "আল-মুগনী"-তে যাদুর সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ বর্ণনা করতে গিয়ে কোনো প্রকার রাখঢাক ছাড়াই দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেছেন:

"فصل : في السحر : وهو عقد ورقى وكلام يتكلم به ، أو يكتبه ، أو يعمل شيئا في بدن المسحور أو قلبه أو عقله ، من غير مباشرة له . وله حقيقة ، فمنه ما يقتل ، وما يمرض..."

"অধ্যায়: যাদু প্রসঙ্গে: এটি হলো গিরা, মন্ত্র এবং এমন কথা যা উচ্চারণ করা হয়, বা লেখা হয়, অথবা যাদুকৃত ব্যক্তির শরীর, অন্তর বা মস্তিষ্কে কোনো কাজ করা হয়, তাকে সরাসরি স্পর্শ না করেই। আর এর বাস্তবতা রয়েছে। অতঃপর, এর মধ্যে এমন (যাদু) আছে যা হত্যা করে, এবং এমন যা অসুস্থ করে..."

তথ্যসূত্র:
ইবনে কুদামাহ আল-মাকদিসী, মুওয়াফফাকুদ্দীন (মৃ. ৬২০ হি.), আল-মুগনী, (রিয়াদ: দার 'আলাম আল-কুতুব, ৩য় সংস্করণ, ১৯৯৭), খণ্ড: ১২, পৃষ্ঠা: ২৯৯-৩০০; অধ্যায়: কিতাবুল মুরতাদ, পরিচ্ছেদ: যাদু প্রসঙ্গে।

এখানে লক্ষ্য করুন:

ইমাম ইবনে কুদামাহ (রহিমাহুল্লাহ)-এর এই বক্তব্যটি সকল বিতর্কের অবসান ঘটায়। তিনি কোনো প্রকার পরোক্ষ ইঙ্গিত বা যৌক্তিক বিশ্লেষণের আশ্রয় না নিয়ে সরাসরি বলেছেন: فمنه ما يقتل - "এর মধ্যে এমন (যাদু) আছে যা হত্যা করে।" এটি যাদুর প্রভাবে মৃত্যু ঘটার বিষয়ে আহলে সুন্নাহর অবস্থানের একটি সুস্পষ্ট ও অকাট্য দলিল।

মোটকথা:

কুরআনের আয়াত যাদুর মারাত্মক ক্ষতির দিকে ইঙ্গিত করে। ইমাম কুরতুবী (রহিমাহুল্লাহ) ব্যাখ্যা করেন যে, এই ক্ষতি "মারাত্মক রোগব্যাধি" পর্যন্ত গড়াতে পারে। আর ইমাম ইবনে কুদামাহ (রহিমাহুল্লাহ) চূড়ান্তভাবে ফয়সালা দিয়ে দেন যে, যাদুর প্রকারভেদের মধ্যেই এক প্রকার হলো "মৃত্যু ঘটানো"।

সুতরাং, এই তিনটি শক্তিশালী দলিলকে একত্রিত করলে আমরা এই সুস্পষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি যে, যাদু নিছক কোনো বিভ্রম বা সাধারণ অসুস্থতা নয়। বরং, এটি আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে এমন এক ভয়ংকর শয়তানি প্রক্রিয়া, যা মানুষের শরীরে মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করার মাধ্যমে অথবা সরাসরি তাকে মৃত্যু পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারে। আর এই বাস্তবতাকে অস্বীকার করা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতের প্রতিষ্ঠিত মতাদর্শের পরিপন্থী।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে যাদু ও যাদুকরদের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করুন। আমীন।

Send a message to learn more

28/09/2025

মারেফতি ইলমের ভিত্তি যদি শরীয়াহ না হয়, তবে তা নিরেট শয়তানি ইলম।

জাদুর কিতাব থেকে আমদানি, প্যাকেজিং হয়েছে ইসলামি। ‘আয়াতের খাদেম’ বা ‘মুয়াক্কীল’ নামক এই বিষাক্ত আকিদার জন্ম থেকে মৃত্য...
27/09/2025

জাদুর কিতাব থেকে আমদানি, প্যাকেজিং হয়েছে ইসলামি। ‘আয়াতের খাদেম’ বা ‘মুয়াক্কীল’ নামক এই বিষাক্ত আকিদার জন্ম থেকে মৃত্যু—সবকিছু আজ আপনার সামনে।

ঈমান ছিনতাইকারী ডাকাত: আলেমের লেবাসে আয়াতের ‘খাদেম’ বা ‘মুয়াক্কীল’ নামক শয়তান পূজার মুখোশ উন্মোচন!

ইসলামের নামে সমাজে এমন কিছু ভয়াবহ আকিদা ছড়িয়ে পড়েছে, যা সরাসরি ঈমানের মূলে আঘাত হানে। সবচেয়ে দুঃখজনক এবং মারাত্মক বিষয় হলো, এই ফেতনাগুলো ছড়াচ্ছে সাধারণ মানুষ নয়, বরং কিছু নামধারী আলেম, মুফতি ও ‘হুজুর’ শ্রেণির লোক, যারা নিজেদেরকে জিন-যাদুর চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দেয়।

তাদের প্রচারিত এমনই এক বিষাক্ত আকিদা হলো—কুরআনের প্রতিটি সূরা বা আয়াতের জন্য একজন নির্দিষ্ট ‘খাদেম’, ‘রুহানি সত্তা’ বা ‘মুয়াক্কীল’ (নিযুক্ত ফেরেশতা/জিন) রয়েছে। আরও ভয়ংকর বিষয় হলো, এই লেবাসধারী ব্যক্তিরা দাবি করে যে, তারা নির্দিষ্ট সাধনার মাধ্যমে এই মুয়াক্কীলকে হাজির করতে পারে এবং তার মাধ্যমে জিন, জাদু, বদনজরের মতো অদৃশ্য সমস্যার কারণ নির্ণয় ও সমাধান করতে পারে।

আজ আমরা শরীয়তের অকাট্য দলিলের আলোকে এই শিরকি আকিদা এবং এর ধারক-বাহক আলেম নামধারী ভণ্ডদের মুখোশ উন্মোচন করব ইনশাআল্লাহ।

প্রথমেই আমাদের জানতে হবে, এই ‘মুয়াক্কীল’ বা ‘আয়াতের খাদেম’-এর ধারণাটি এলো কোত্থেকে?

এর উত্তর দ্ব্যর্থহীন: কুরআন, সহীহ হাদিস, সাহাবায়ে কেরামের আমল বা উম্মাহর নির্ভরযোগ্য ইমামদের কিতাবে এই ধারণার কোনো অস্তিত্ব নেই। এটি একটি সম্পূর্ণ নব-উদ্ভাবিত ও ভিত্তিহীন আকিদা, যার মূল উৎস হলো কুখ্যাত জাদুকর আহমাদ ইবনে আলী আল-বুনী (মৃত্যু: ৬২২ হিজরি)-এর লেখা জাদুবিদ্যার বই "শামসুল মা'আরিফ আল-কুবরা" (شمس المعارف الكبرى)। এটি মুসলিম উম্মাহর নিকট একটি কুফরি ও জাদুর কিতাব হিসেবে পরিচিত।

এই বইতেই আল-বুনী কুরআনের আয়াতকে মন্ত্র বানিয়ে কীভাবে জিন ও শয়তানকে বশ করা বা হাজির করা যায়, তার পদ্ধতি শিখিয়েছে এবং সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য এর নাম দিয়েছে ‘রুহানি খাদেম’ বা ‘মুয়াক্কীল’ সাধনা।

আসুন দেখি সে তার উক্ত কুখ্যাত জাদুর কিতাবে এ সম্পর্কে কি বলেছে? সে তার উক্ত জাদুর কিতাবে লিখেছে-

في بيان خواص سورة الفاتحة الشريفة... "ومن أراد استخدام خدامها الروحانية والعلوية والأرضية، فليصم سبعة أيام... ويقرأ الفاتحة دبر كل صلاة (عدد معين)... فإنه في آخر ليلة من الرياضة يحضر له خادمها الملك الفاضل السيد روقيائيل عليه السلام، فيعطيك ما تطلب منه من الأمور المباحة."

"সূরা ফাতিহার বিশেষ বৈশিষ্ট্য বর্ণনায়... যে ব্যক্তি এর রুহানি, আসমানি ও জমিনি খাদেমদেরকে নিজের কাজে ব্যবহার করতে চায়, সে যেন সাত দিন রোজা রাখে... এবং প্রত্যেক নামাজের পর (একটি নির্দিষ্ট সংখ্যায়) সূরা ফাতিহা পাঠ করে... সাধনার শেষ রাতে তার সামনে এই সূরার খাদেম, সম্মানিত ফেরেশতা ‘সাইয়্যেদ রুকইয়াইল আলাইহিস সালাম’ উপস্থিত হবেন। অতঃপর তুমি তার কাছে অনুমোদিত (বৈধ) বিষয়গুলোর মধ্য থেকে যা চাইবে, তিনি তোমাকে তাই দেবেন।"

📚 কিতাব: شمس المعارف الكبرى (শামসুল মা'আরিফ আল-কুবরা) লেখক: আহমাদ আল-বুনী

লক্ষ্য করুন, এখানে সুস্পষ্টভাবে আল্লাহকে বাদ দিয়ে, আল্লাহর কালামকে মন্ত্র বানিয়ে একজন ‘খাদেম’ বা ‘ফেরেশতা’কে হাজির করে তার কাছে সাহায্য চাওয়ার পদ্ধতি শেখানো হচ্ছে। এটি নির্ভেজাল জাদু এবং শিরকে আকবর।

যারা দাবি করে যে তারা ফেরেশতা বা আয়াতের খাদেম হাজির করে, তাদের এই প্রতারণার মুখোশ বহু আগেই উন্মোচন করে গেছেন শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহিমাহুল্লাহ)। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন, এরা আসলে শয়তানকেই হাজির করে।

"وكثير من هؤلاء الذين يستحضرون الجن ويستخدمونهم، يظنون أنهم يستحضرون أرواح الكواكب أو أرواح الملائكة، وإنما المستحضر لهم هو الشيطان... يتصور لهم في صورة من يعظمونه من الصالحين، ويقول أحدهم: أنا الخضر، أو أنا من أرواح المشايخ فلان وفلان... وإنما هو جني شيطان."

“আর এই লোকদের মধ্যে অনেকেই, যারা জিনদেরকে হাজির করে এবং তাদের ব্যবহার করে, তারা মনে করে যে তারা গ্রহ-নক্ষত্রের আত্মা অথবা ফেরেশতাদের আত্মাকে হাজির করছে। অথচ প্রকৃতপক্ষে তাদের জন্য শয়তানকেই হাজির করা হয়... শয়তান তাদের সামনে এমন কোনো বুজুর্গ ব্যক্তির আকৃতিতে আসে, যাকে তারা সম্মান করে। অতঃপর সে বলে, ‘আমি খিজির’ অথবা ‘আমি অমুক-তমুক শাইখের রুহ’... অথচ সে হলো একটি শয়তান জিন।”

📚 কিতাব: مجموع الفتاوى (মাজমুউল ফাতাওয়া)
খণ্ড: ১১, পৃষ্ঠা: ৩০৩

এবার আসুন জানি আলেম লেবাসধারী এই ভণ্ডদের হাকিকত ও শরীয়তের রায়—

১. কুরআনের আয়াতের জন্য ‘খাদেম’ নিযুক্ত আছে—এই বিশ্বাসই একটি ভিত্তিহীন ও ভ্রান্ত আকিদা। আল্লাহ তাঁর কালামের প্রভাব ও কার্যকারিতার জন্য কোনো মাধ্যম বা ‘খাদেম’-এর মুখাপেক্ষী নন। কুরআনের শক্তি তার নিজের মধ্যেই নিহিত, কারণ এটি আল্লাহর কালাম।

২. এই ভণ্ড আলেম নামধারীরা যখন ‘মুয়াক্কীল’-এর মাধ্যমে বলে দেয় যে, কে জাদু করেছে বা রোগীর গোপন সমস্যা কী—তখন তারা মূলত গণৎকারি বা জ্যোতিষ বিদ্যা (কাহানাত) প্রয়োগ করে, যা ইসলামে সুস্পষ্ট হারাম ও কুফরি। তাদের তথ্যের উৎস কোনো ফেরেশতা নয়, বরং জিনদের শয়তানি নেটওয়ার্ক। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, জিনেরা একটি সত্য কথা চুরি করে এনে তার বন্ধু গণকের কানে বলে এবং গণক তার সাথে একশ’রও বেশি মিথ্যা মিশিয়ে প্রচার করে (বুখারী, ৫৭৬২)। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো, কোনো জিনের কাছ থেকে এভাবে সাহায্য নেওয়াই শিরক, কারণ এর জন্য শয়তানের উদ্দেশ্যে কোনো শিরকি বা কুফরি কাজ করতে হয়।

৩. তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে, ‘মুয়াক্কীল’ নামক এক অদৃশ্য সত্তাকে ডাকে এবং তার কাছে সাহায্য চায়। এটি সরাসরি আল্লাহর আয়াত— "إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ" (আমরা কেবল আপনারই ইবাদত করি এবং কেবল আপনার কাছেই সাহায্য চাই)—এর লঙ্ঘন।

৪. জিন, জাদু, বদনজরের চিকিৎসার জন্য রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং তাঁর সাহাবাগণ আমাদের ‘রুকইয়াহ শার'ইয়্যাহ’ শিখিয়েছেন। সেখানে আল্লাহর উপর ভরসা করে সরাসরি কুরআনের আয়াত ও দোয়া পাঠ করা হয়। ‘মুয়াক্কীল’ হাজির করার এই পদ্ধতি একটি নব-উদ্ভাবিত বিদ'আত।

সারকথা:
‘আয়াতের খাদেম’ বা ‘মুয়াক্কীল’-এর আকিদা একটি বিষাক্ত গাছের মতো, যার বীজ রোপণ করা হয়েছে জাদুবিদ্যার কিতাবে। আর এর ফল হলো শিরক, কুফর ও বিদ'আত। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো, এই বিষাক্ত ফল আজ সমাজের মানুষের মুখে তুলে দিচ্ছে কিছু আলেম, মুফতি ও ‘হুজুর’ নামধারী ব্যক্তি। তারা মুসলিম নামধারী জাদুকর, শয়তানের এজেন্ট এবং ঈমান ছিনতাইকারী ডাকাত।

সকল মুসলিমদের প্রতি আমাদের আহবান—

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা!
কিছু আলেম, মুফতি বা ‘হুজুর’ নামধারী ব্যক্তিদের বাহ্যিক লেবাস, সুন্দর কথা বা কারামতের মতো অলৌকিক কর্মকাণ্ড দেখে প্রতারিত হবেন না। মনে রাখবেন, সত্যিকারের রুকইয়াহ শারইয়্যাহর ভিত্তি হলো একমাত্র আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল এবং সরাসরি কুরআন-সুন্নাহর দোয়া। যেখানে কোনো মাধ্যম, ‘মুয়াক্কীল’, ‘খাদেম’ বা জিনকে ডাকা হয়, সেটি আর যাই হোক, ইসলামের পথ নয়; সেটি সুস্পষ্ট শিরক এবং শয়তানের পথ।

সুতরাং, নিজের ঈমানকে রক্ষা করার জন্য এই সমস্ত ভণ্ড ও ঈমান-হরণকারী ব্যক্তিদের থেকে শত হাত দূরে থাকুন। তাদের কাছে যাবেন না, তাদের কথা শুনবেন না এবং অন্যকেও তাদের প্রতারণা থেকে সতর্ক করুন।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই ভয়াবহ ফেতনা এবং আলেম লেবাসধারী পথভ্রষ্টদের থেকে রক্ষা করুন। আমীন।

"আজকের পর থেকে জ্ঞান এবং অজ্ঞতার পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে যাবে। একদিকে ইমাম গাজ্জালীর প্রজ্ঞা, অন্যদিকে আধুনিক ভণ্ডামি। আপনি...
26/09/2025

"আজকের পর থেকে জ্ঞান এবং অজ্ঞতার পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে যাবে। একদিকে ইমাম গাজ্জালীর প্রজ্ঞা, অন্যদিকে আধুনিক ভণ্ডামি। আপনি কোন পক্ষে?"

ইমাম গাজ্জালী রহিমাহুল্লাহ: জিনের আছর এবং আধুনিক বিজ্ঞানমনস্কদের অজ্ঞতার আস্ফালন!

আজকের যুগে একদল ‘অতি আধুনিক’ জ্ঞানী গজিয়েছে, যাদের মূল কাজই হলো ঈমানের বিষয়গুলোকে নিয়ে মশকরা করা। জিনে ধরা বা আছরের কথা শুনলেই তারা এমনভাবে অবজ্ঞার হাসি হাসে, যেন দুনিয়ার সব জ্ঞান তাদের মাথায় এসে জমা হয়েছে। বিশেষ করে কিছু ডাক্তার আর স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবী, যাদের জ্ঞানের দৌড় কেবল ল্যাবরেটরির রিপোর্ট পর্যন্ত, তারা বুক ফুলিয়ে বলে—"এগুলো সব মধ্যযুগীয় কুসংস্কার, মানসিক রোগ ছাড়া আর কিছুই নয়।"

সবচেয়ে বড় ভণ্ডামিটা তারা করে তখন, যখন নিজেদের এই খোঁড়া যুক্তিকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য মুসলিম উম্মাহর এক মহান ইমামের নাম ব্যবহার করে। তিনি হলেন হুজ্জাতুল ইসলাম, ইমাম আবু হামিদ আল-গাজ্জালী (রহিমাহুল্লাহ)। তারা মানুষকে ধোঁকা দেয় এই বলে যে, “ইমাম গাজ্জালীর মতো এত বড় যুক্তিবাদী দার্শনিকও এসব জিনে ধরাকে বিশ্বাস করতেন না!”

আজ আমরা এই সমস্ত বুদ্ধিবৃত্তিক জালিয়াতি ও অজ্ঞতার আস্ফালনকে চিরতরে কবর দেব। কোনো বিতর্ক নয়, সোজা ইমামের আদালতে বিচার হবে। চলুন, তাঁর নিজের কলমের রায় দিয়েই আজকের এই ভণ্ডামির চূড়ান্ত ফয়সালা করে ফেলি।

ইমাম গাজ্জালী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থ ‘ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন’-এ ‘صرع’ (মৃগীরোগ বা আছর) নিয়ে যা লিখেছেন, তা প্রতিটি অক্ষর মনোযোগ দিয়ে পড়ুন:

"وأما الصرع فهو أيضاً له سببان: أحدهما يتعلق بالأطباء، وهو الذي ذكروه من أنه بخار رديء يتصاعد إلى الدماغ من بعض الأخلاط الغليظة فيسد منافذه... والثاني هو الذي يتعلق بأرباب القلوب والمكاشفات، وهو الذي نعنيه، وهو أن يكون ذلك عن استيلاء الجن الخبيث من الأرواح الخبيثة.
وهذا الثاني هو الذي كان النبي صلى الله عليه وسلم يستعيذ منه فيقول: "أعوذ بك من التردي والهدم والغرق والحرق، وأن يتخبطني الشيطان عند الموت".

“আর ‘صرع’ (মৃগী বা আছর)-এরও দুটি কারণ রয়েছে:
প্রথমটি হলো ডাক্তারদের বিষয়: যা তারা বলে থাকেন যে, শরীরের ভেতর থেকে তৈরি হওয়া কোনো দূষিত বাষ্প মস্তিষ্কে গিয়ে তার পথ বন্ধ করে দেয়...

দ্বিতীয়টি হলো অন্তরওয়ালা ও আধ্যাত্মিক মানুষদের বিষয়, আর এটাই আমাদের আসল আলোচনার বিষয়। আর তা হলো, দুষ্ট আত্মাগুলোর মধ্য থেকে কোনো খবিস জিনের দখল বা আধিপত্যের কারণে এমনটা হওয়া।

এবং এই দ্বিতীয় প্রকারটিই হলো সেটা, যা থেকে আমাদের নবী সাল্লাল্লাহ্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আশ্রয় চেয়ে বলতেন: ‘(হে আল্লাহ) আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই উঁচু জায়গা থেকে পড়ে যাওয়া, (কিছু) ধসে পড়া, পানিতে ডোবা ও আগুনে পোড়া থেকে, এবং মৃত্যুকালে শয়তান যেন আমাকে আছর না করে’।”

📚 রেফারেন্স:
[ইমাম আবু হামিদ আল-গাজ্জালী, ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন, খণ্ড: ৩, অধ্যায়: কিতাবু শারহি 'আজাইবিল ক্বলব (অন্তরজগতের বিস্ময়কর বিষয়াবলীর বর্ণনা), পৃষ্ঠা: ৬৪, দারুল মিনহাজ সংস্করণ।]

এবার আসুন, ইমামের এই বক্তব্যের কষ্টিপাথরে আধুনিক কথিত বিজ্ঞানমনস্কদের ভণ্ডামির বিচার করি:

১. লক্ষ্য করুন, ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) প্রথমত শারীরিক কারণের কথাই বলেছেন। অর্থাৎ, আজকের ডাক্তাররা যেটাকে তাদের জ্ঞানের শেষ সীমানা মনে করে, ইমামের জ্ঞানের যাত্রা সেখান থেকে শুরু হয়েছিল। তিনি দেখিয়েছেন, বাস্তবতার দুটি জগৎ আছে—একটি দেহের, অন্যটি আত্মার। আজকের বস্তুবাদীরা প্রথম জগতে এসেই আটকে গেছে। তাদের এই বুদ্ধিবৃত্তিক দারিদ্র্যকে তারা ‘বিজ্ঞানমনস্কতা’ বলে চালিয়ে দেয়।

২. যারা ইমামকে ‘দার্শনিক’ বলে তাঁর ঈমানকে হালকা করতে চায়, তারা আসলে দর্শনের অর্থই বোঝে না। ইমামের দর্শন তাঁকে শিখিয়েছে যে, আল্লাহর সৃষ্টিজগত এত বিশাল যে তা কেবল পঞ্চেন্দ্রিয়ের কারাগারে বন্দী থাকতে পারে না। তাঁর যুক্তি তাঁকে ওহীর সামনে নত হতে শিখিয়েছে। আর আজকের জ্ঞানপাপীরা যুক্তি দিয়ে ওহীকে অস্বীকার করতে চায়—এটাই হলো আসল মূর্খতা।

৩. ইমাম গাজ্জালী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর বক্তব্য শেষ করেছেন এমন এক দলিল দিয়ে, যার সামনে কোনো মুসলমানের আর কথা বলার সুযোগ নেই। তিনি প্রমাণ হিসেবে এনেছেন স্বয়ং নবী (ﷺ)-এর দোয়া। যে শয়তানের আছর থেকে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) নিজে আশ্রয় চেয়েছেন, তাকে অস্বীকার করার অর্থ কী? এর অর্থ হলো, হয় আপনি রাসূল (ﷺ)-এর চেয়েও বেশি বোঝেন, নয়তো আপনি ঈমানের কিছুই বোঝেন না।

অতএব:

যারা নিজেদের আধুনিক জ্ঞানের অহংকারে ডুবে থেকে অদৃশ্য জগতকে নিয়ে উপহাস করার ধৃষ্টতা দেখাও!

জেনে রেখো! তোমরা যে জ্ঞান নিয়ে গর্ব করো, তা এক সংকীর্ণ খাঁচা ছাড়া আর কিছুই নয়। তোমরা সেই খাঁচার বন্দী, আর তোমাদের উপহাস হলো সেই বন্দীদশারই আস্ফালন। ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) হাজার বছর আগেই সেই খাঁচার দেয়াল ভেঙে বাস্তবতার বিশাল জগতকে দেখিয়ে গেছেন। তোমরা সেই দেয়ালের দিকে পিঠ ফিরে দাঁড়িয়ে আছো আর নিজেদের ছায়াকেই মহাবিশ্ব ভাবছো।

সুতরাং, জেনে রাখো—তোমাদের এই অজ্ঞতাপ্রসূত হাসি বা অবজ্ঞা, আমাদের ঈমানের পর্বতে সামান্য আঁচড়ও কাটতে পারে না। এটি কেবল তোমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক দৈন্যতাকেই উলঙ্গ করে দেয়।

#ইমাম_গাজ্জালী #জিন_আছর #ইসলামের_শক্তি #ভণ্ডামির_জবাব #কুসংস্কার_নয়_বাস্তবতা #ইসলামিক_আকিদা

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি: কল সেন্টার এক্সিকিউটিভমাসনুন লাইফ একটি সুন্নাহ্‌-ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। আমাদের প্রতিষ্ঠানে রুক...
25/09/2025

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি: কল সেন্টার এক্সিকিউটিভ

মাসনুন লাইফ একটি সুন্নাহ্‌-ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। আমাদের প্রতিষ্ঠানে রুকইয়াহ ও হিজামা সেবা গ্রহণকারী সেবাপ্রার্থীদের উন্নত ও আন্তরিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে দুজন দক্ষ কল সেন্টার এক্সিকিউটিভ (পুরুষ) পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।

প্রতিষ্ঠান: মাসনূন লাইফ
পদের নাম: কল সেন্টার এক্সিকিউটিভ
পদ সংখ্যা: ০২ জন
কর্মস্থল: নূর টাওয়ার, আফতাব নগর, বাড্ডা, ঢাকা।

আপনার কাছে আমাদের প্রত্যাশা (যোগ্যতা ও দক্ষতা):

শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম উচ্চ মাধ্যমিক (HSC) বা সমমান পাশ।

যোগাযোগ দক্ষতা: শুদ্ধ ও প্রাঞ্জল বাংলায় স্পষ্টভাবে কথা বলার পারদর্শিতা।

কারিগরি দক্ষতা: কম্পিউটার ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য, বিশেষত MS Excel এবং WordPress চালনার জ্ঞান।

ব্যক্তিগত গুণাবলী: অবশ্যই সৎ, ধৈর্যশীল এবং সেবা প্রদান করার মানসিকতা সম্পন্ন হতে হবে।

অভিজ্ঞতা: গ্রাহকসেবামূলক কাজে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

আপনার জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতি (বেতন ও সুযোগ-সুবিধা):

বেতন: মাসিক বেতন ১২,০০০ টাকা থেকে ১৫,০০০ টাকা। প্রার্থীর যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে চূড়ান্ত বেতন আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হবে ইনশাআল্লাহ।

অন্যান্য সুবিধা:

প্রতিষ্ঠান থেকে বিনামূল্যে দুপুরের স্বাস্থ্যকর খাবার।

মাসে ৪ দিন ছুটি।

প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী অন্যান্য প্রাসঙ্গিক সুবিধা।

আবেদন প্রক্রিয়া:

আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা তাদের জীবনবৃত্তান্ত (CV) এবং একটি সাম্প্রতিক ছবিসহ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখের মধ্যে আমাদের কাছে আবেদন করুন।

আবেদন পাঠানোর ঠিকানা (ইমেইল): [email protected]

আবেদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা:
১. ইমেইলের Subject লাইনে অবশ্যই "Application for Call Center Executive" কথাটি স্পষ্টভাবে লিখতে হবে।

২. আবেদনটি গ্রহণযোগ্য হতে, অনুগ্রহ করে ইমেইলের মূল অংশে (Body) নিচের দুটি প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন:

* আপনি কেন মাসনুন লাইফে কাজ করতে আগ্রহী?
* একজন বিপর্যস্ত সেবাপ্রার্থীকে ফোনে কীভাবে আশ্বস্ত করবেন?

আমরা একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান সহকর্মীর অপেক্ষায় আছি, যিনি আমাদের সেবার যাত্রায় সঙ্গী হবেন।

সাবধান!! আমার নাম ব্যবহার করে কিছু অসাধু লোক প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে! সম্প্রতি লক্ষ্য করছি কিছু ভন্ড কবিরাজ ও অসাধু ব্যক...
24/09/2025

সাবধান!! আমার নাম ব্যবহার করে কিছু অসাধু লোক প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে!
সম্প্রতি লক্ষ্য করছি কিছু ভন্ড কবিরাজ ও অসাধু ব্যক্তি আমার নাম ব্যবহার করে ফেসবুকে বিভিন্ন নারীর সাথে যোগাযোগ করছে। তারা ধীরে ধীরে কথোপকথনের মাধ্যমে কবিরাজির দিকে নিয়ে যাচ্ছে, ঈমান নষ্ট করার চেষ্টা করছে এবং অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও ফন্দি আঁটছে।

এই পোস্টের ছবিতে তাকিয়ে দেখুন- তারা কীভাবে প্রতারণা করছে। ছবিগুলো দেখলেই বোঝা যাবে তারা কীভাবে মানুষের বিশ্বাসের সুযোগ নিচ্ছে।

আমি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছি —
আমার এই ব্লু ভেরিফাইড পেজ ছাড়া আর কোনো অফিসিয়াল পেজ নেই।
আমার একমাত্র অফিসিয়াল পেজের লিংক:
https://www.facebook.com/share/1A37uEXpML/
এবং পারসোনাল আইডি লিংক:
https://www.facebook.com/share/1EEkqQoMmL/
এছাড়া আমার আর কোন ব্যক্তিগত আইডি নেই।

আপনাদের প্রতি অনুরোধ:

আমার নামে কারও কাছ থেকে বার্তা পেলে আগে যাচাই করুন সেটি ভেরিফাইড কিনা

কোনো ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না

কাউকে কোনো টাকা পাঠাবেন না

এমন প্রতারকদের রিপোর্ট ও ব্লক করুন

এটি শুধু আমার সুনামের প্রশ্ন নয়, বরং আপনাদের ঈমান ও সম্পদের সুরক্ষার প্রশ্ন। তাই সবাইকে অনুরোধ করছি — পোস্টটি এবং ছবিগুলো অন্যদের সাথে শেয়ার করুন, যেন আর কেউ প্রতারণার শিকার না হয়।

💥 সর্বকালের সেরা ভণ্ডামি ফাঁস! 💥জিনের সাহায্যে চিকিৎসা জায়েজ? সম্প্রতি দেওয়া এই ফতোয়ার পেছনে লুকিয়ে থাকা ভয়ঙ্কর প্রতারণা...
23/09/2025

💥 সর্বকালের সেরা ভণ্ডামি ফাঁস! 💥
জিনের সাহায্যে চিকিৎসা জায়েজ? সম্প্রতি দেওয়া এই ফতোয়ার পেছনে লুকিয়ে থাকা ভয়ঙ্কর প্রতারণাটি জানেন?
নবী সুলাইমান (আঃ)-এর একটি ঘটনাকে পুঁজি করে যেভাবে আপনার ঈমান নিয়ে খেলা হচ্ছে, তা জানলে আপনি চমকে উঠবেন!

সুলাইমান আলাইহিস সালাম তিনি কি জিনদের 'সাহায্য' চাইতেন, নাকি 'আদেশ' করতেন? দুটোর মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য!

রাসূল (ﷺ) নিজে জাদুগ্রস্ত হয়েও কেন জিনের সাহায্য নেননি?

বর্তমান সময়ের কবিরাজদের পূজিত জিনেরা কেন শুধু চিকিৎসার ক্ষেত্রেই পারদর্শী, দালান বানাতে নয়?

সকল গোঁজামিলের দলিলভিত্তিক জবাব দিয়ে সাজানো হয়েছে আমাদের এই বিশেষ আর্টিকেল। আপনার ঈমান ও আকিদা রক্ষায় লেখাটি পড়া বাধ্যতামূলক।

#সুলাইমান (আঃ)-এর দোহাই: জিনের সাহায্যে চিকিৎসার নামে প্রচলিত ভন্ডামির দলিলভিত্তিক জবাব।

#একটি ভ্রান্তির নিরসন

ইসলামী সমাজে মাঝে মাঝেই কিছু চর্চা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, যা ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক। এমনই একটি বিষয় হলো—জিনের সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করা বা অদৃশ্য জগতের খবর জানার দাবি। সম্প্রতি কিছু আলেমও নবী সুলাইমান (আঃ)-এর ঘটনাকে খণ্ডিতভাবে উপস্থাপন করে এই চর্চাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই আমাদের এই লেখাটির উদ্দেশ্য হলো কুরআন, সুন্নাহ এবং অকাট্য যুক্তির আলোকে এই দাবির ব্যবচ্ছেদ করে এর পেছনের ভণ্ডামি ও ঈমানবিধ্বংসী দিকগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা।

#মূল দলিলের ব্যবচ্ছেদ: সুলাইমান (আঃ)-এর ঘটনার ভুল ও খণ্ডিত উপস্থাপন!

যারা জিনের সাহায্য নেওয়াকে জায়েজ বলেন, তাদের প্রধান একটি দলিল হলো নবী সুলাইমান (আঃ) জিনদের দ্বারা বিভিন্ন বৈধ কাজ করিয়ে নিতেন। কিন্তু একটু গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলেই এই দলিলের অন্তঃসারশূন্যতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

১/ মূল বিভ্রান্তি: 'আদেশ করা' আর 'সাহায্য চাওয়া' এক নয়

এই যুক্তির সবচেয়ে বড় এবং মৌলিক ভুল হলো 'কর্তৃত্বের সাথে আদেশ করা' (التسخير) এবং 'সাহায্য প্রার্থনা করা' (الاستعانة)—এই দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়কে এক করে ফেলা।

সুলাইমান (আঃ)-এর অবস্থান ছিল শাসকের: আল্লাহ তা'আলা সুলাইমান (আঃ)-কে জিন ও শয়তানদের ওপর রাজত্ব ও কর্তৃত্ব দান করেছিলেন। তিনি ছিলেন তাদের শাসক। তিনি জিনদের কাছে কোনো কিছু 'চাইতেন' না বা তাদের 'সাহায্য প্রার্থনা' করতেন না; বরং তিনি তাদের আদেশ করতেন, আর জিনেরা সেই আদেশ মানতে বাধ্য ছিল। ঠিক যেমন একজন রাজা তার প্রজাদের আদেশ করেন। এটি ছিল আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতার প্রদর্শন ও বাস্তবায়ন।

আজকের #কবিরাজের অবস্থান হলো সাহায্যপ্রার্থীর:

অন্যদিকে, আজকের দিনের কবিরাজ বা জিন-হুজুরদের জিনদের ওপর কোনো ঐশ্বরিক কর্তৃত্ব নেই। তারা জিনদের আদেশ করতে পারে না। বরং তাদের সাহায্য পাওয়ার জন্য বিভিন্ন শিরকি ও কুফরি পদ্ধতির মাধ্যমে জিনদের কাছে সাহায্য চাইতে হয়, তাদের সন্তুষ্ট করতে হয় বা তাদের সাথে কোনো চুক্তিতে আবদ্ধ হতে হয়।

সুতরাং, সুলাইমান (আঃ)-এর আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতার মাধ্যমে জিনদের আদেশ করা আর একজন সাধারণ মানুষের জিনদের কাছে সাহায্য চাওয়া—এ দুটি বিষয়কে এক করে দলিল দেওয়া একটি সুস্পষ্ট প্রতারণা। একটি হলো ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখর, অন্যটি হলো শিরকের গভীর গহ্বর।

২/ এটি ছিল একটি বিশেষ মু'জিজা, সাধারণ বিধান নয়

আরও একটি সবচেয়ে বড় এবং মৌলিক কথা হলো, জিন ও শয়তানের ওপর কর্তৃত্ব ছিল আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে সুলাইমান (আঃ)-কে দেওয়া একটি বিশেষ মু'জিজা (অলৌকিক ক্ষমতা), যা অন্য কোনো মানুষের জন্য নয়।

এটি কোনো সাধারণ বিধান ছিল না যে, যে কেউ চাইলেই তা অনুসরণ করতে পারবে। স্বয়ং সুলাইমান (আঃ) আল্লাহ্‌র কাছে এমন এক রাজত্বের জন্য দোয়া করেছিলেন যা আর কাউকে দেওয়া হবে না।

আল্লাহ তা'আলা তাঁর এই দোয়া কুরআনে উল্লেখ করেছেন:

قَالَ رَبِّ اغْفِرْ لِي وَهَبْ لِي مُلْكًا لَّا يَنبَغِي لِأَحَدٍ مِّن بَعْدِي إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ

অর্থ: "সে বলল, ‘হে আমার রব, আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে এমন এক রাজত্ব দান করুন, যা আমার পরে আর কারো জন্য শোভা পাবে না। নিশ্চয় আপনিই মহাদাতা’।" (সূরা সোয়াদ, ৩৮:৩৫)

আল্লাহ তাঁর এই দোয়া কবুল করেছেন। এখানে "আমার পরে আর কারো জন্য শোভা পাবে না" কথাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে ক্ষমতা ও রাজত্বকে স্বয়ং একজন নবী আল্লাহ্‌র কাছে তাঁর জন্য খাস করে চেয়ে নিয়েছেন এবং আল্লাহ তা কবুলও করেছেন, সেই বিশেষ ক্ষমতাকে সাধারণ মানুষের জন্য একটি সাধারণ বিধান বা জায়েজ হওয়ার দলিল হিসেবে পেশ করাটা কুরআন ও নবুয়তের ধারণার সাথেই সাংঘর্ষিক। এটি একটি খণ্ডিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দলিল।

৩/ তিনি শয়তানকেও কাজে লাগাতেন: একটি আত্মঘাতী যুক্তি

যারা সুলাইমান (আঃ)-এর ঘটনাকে দলিল দেন, তারা একটি মারাত্মক বিষয় এড়িয়ে যান। তিনি শুধু ভালো জিন নয়, বরং অবাধ্য ও দুষ্ট শয়তানদেরকেও আল্লাহ্‌র হুকুমে কঠিন কাজে বাধ্য করতেন।

আল্লাহ তা'আলা বলেন:

وَالشَّيَاطِينَ كُلَّ بَنَّاءٍ وَغَوَّاصٍ

অর্থ: "আর সকল শয়তানকে (তার অধীন করে দিয়েছিলাম), যারা ছিল প্রাসাদ নির্মাণকারী ও ডুবুরি।" (সূরা সোয়াদ, ৩৮:৩৭)

এখন প্রশ্ন হলো, যদি সুলাইমান (আঃ)-এর কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের জন্য বৈধতার দলিল হয়, তাহলে কি এখন শয়তানের সাহায্য নিয়ে "ভালো কাজ" করাও বৈধ হয়ে যাবে? কোনো আলেম কি শয়তানের সাহায্য নিয়ে মসজিদ বানানোর ফতোয়া দেবেন? নিঃসন্দেহে না।

এই যুক্তিটিই প্রমাণ করে যে, তাঁর ঘটনাটি ছিল আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে একটি ব্যতিক্রমী ও বিশেষ অবস্থা, যা অন্য কারো জন্য অনুসরণীয় নয়।

৪/ মূল ঘটনায় চিকিৎসার কোনো উল্লেখই নেই

সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, যারা চিকিৎসার জন্য জিনের সাহায্য নেওয়াকে জায়েজ করতে সুলাইমান (আঃ)-এর ঘটনার দলিল দেন, তারা এমন একটি বিষয়কে প্রমাণ করতে চাইছেন যা মূল ঘটনাতেই অনুপস্থিত।

কুরআন ও হাদিসে কোথাও একটিবারের জন্যও উল্লেখ নেই যে, সুলাইমান (আঃ) জিনদের মাধ্যমে মানুষের রোগ নির্ণয় বা চিকিৎসা করতেন। বরং তিনি তাদের দিয়ে বিশাল বিশাল দালান নির্মাণ, সমুদ্রের গভীর থেকে মনি-মুক্তা আহরণ এবং অন্যান্য কঠিন কাজ করাতেন।

সুতরাং, যে কাজটি তিনি করেননি, সেই কাজের বৈধতা প্রমাণের জন্য তাঁর ঘটনাকে দলিল হিসেবে পেশ করা একটি নির্জলা মিথ্যাচার ও প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।

#আমাদের চূড়ান্ত আদর্শ: রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সুন্নাহ এ বিষয়ে কী বলে?

যেকোনো বিষয়ে হালাল-হারামের চূড়ান্ত ফয়সালা নেওয়ার জন্য আমাদের তাকাতে হবে সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর সুন্নাহর দিকে। তিনি কি এই কাজটি করেছেন, করতে বলেছেন, অথবা অনুমোদন দিয়েছেন?

১/ ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তিনি জিনকে ব্যবহার করেননি!

রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জিনদের ওপর নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা ছিল। একবার নামাজের সময় একটি দুষ্ট ইফরিত জিন তাঁকে বিরক্ত করলে তিনি তাকে ধরে ফেলেন।

তিনি বলেন:

فَأَرَدْتُ أَنْ أَرْبِطَهُ إِلَى سَارِيَةٍ مِنْ سَوَارِي الْمَسْجِدِ حَتَّى تُصْبِحُوا وَتَنْظُرُوا إِلَيْهِ أَجْمَعُونَ، فَذَكَرْتُ دَعْوَةَ أَخِي سُلَيْمَانَ ‏"‏رَبِّ هَبْ لِي مُلْكًا لاَ يَنْبَغِي لأَحَدٍ مِنْ بَعْدِي‏"‏ فَرَدَدْتُهُ خَاسِئًا

অর্থ: "আমি ইচ্ছা করলাম যে, তাকে মসজিদের একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখি যাতে তোমরা সকালে সকলে তাকে দেখতে পারো। কিন্তু তখন আমার ভাই সুলাইমান (আঃ)-এর দোয়া স্মরণ হলো: ‘হে আমার রব, আমাকে এমন রাজত্ব দান করুন, যা আমার পরে আর কারো জন্য শোভা পাবে না।’ তখন আমি তাকে লাঞ্ছিত অবস্থায় ছেড়ে দিলাম।" (সহীহ বুখারী, ৩৪২৩)

এই হাদিসটি একটি শক্তিশালী দলিল। রাসূল (ﷺ)-এর ক্ষমতা ছিল, কিন্তু তিনি সুলাইমান (আঃ)-এর দোয়ার প্রতি সম্মান দেখিয়ে জিনকে কোনো ব্যক্তিগত বা সামাজিক কাজে ব্যবহার করা থেকে বিরত থেকেছেন। তাঁর এই বিরত থাকাটাই (সুন্নাতে তারকিয়্যাহ) উম্মতের জন্য একটি সুস্পষ্ট নির্দেশনা যে, এই দরজাটি বন্ধ।

২/ নিজের কঠিনতম বিপদেও তিনি জিনের সাহায্য চাননি!

ইসলামের ইতিহাসে এটি প্রমাণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিজে কঠিন যাদু দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এটি ছিল তাঁর জীবনের অন্যতম বড় একটি পরীক্ষা। তখন তিনি কী করেছিলেন?

তাঁর তো এমন অনেক মুসলমান ও অনুগত সাহাবী জিন ছিলেন, যাদের ব্যাপারে তিনি নিশ্চিতভাবে জানতেন যে তারা ভালো এবং বিশ্বস্ত। তিনি কি তাদের কাউকে ডেকে বলেছিলেন, "দেখো তো, কে আমার উপর যাদু করেছে?" বা "এই যাদুর প্রভাব নষ্ট করে দাও"?

না, কখনই না। একটি দুর্বল বর্ণনাতেও এমন কিছু পাওয়া যায় না। তিনি কেবল আল্লাহ্‌র উপর পরিপূর্ণ তাওয়াক্কুল করেছেন, অবিরাম দোয়া করেছেন এবং আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে ওহীর (সূরা ফালাক ও নাস) মাধ্যমে আরোগ্য লাভ করেছেন।

অতএব: যদি কোনো বিশ্বস্ত জিনের সাহায্য নেওয়া সামান্যতমও জায়েজ হতো, তবে তিনি নিজের সবচেয়ে কঠিন বিপদের মুহূর্তে সেই পথ অবলম্বন করে উম্মতের জন্য একটি উদাহরণ রেখে যেতেন। তিনি তা করেননি, আর তাঁর এই না করাটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় দলিল ও অনুসরণীয় সুন্নাহ।

#ভণ্ডামির স্বরূপ উন্মোচন: যৌক্তিক ভ্রান্তি ও গোঁজামিল

শরীয়তের দলিলের পাশাপাশি সাধারণ যুক্তি দিয়েও এই হারাম চর্চার অসারতা প্রমাণ করা যায়।

১/ একটি কুযুক্তি: ডাক্তার আর জিন কি এক?

অনেকে যুক্তি দেন, "মানুষ ডাক্তারের সাহায্য নিতে পারলে, জিনের সাহায্য নিতে সমস্যা কোথায়?" এটি একটি অত্যন্ত দুর্বল ও ভ্রান্ত তুলনা। কেন?

কারণ: ডাক্তার একজন দৃশ্যমান মানুষ। আমরা তার সার্টিফিকেট, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, সুনাম এবং চরিত্র সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে যাচাই করতে পারি। তার চিকিৎসা পদ্ধতি বিজ্ঞানসম্মত কিনা তাও পর্যবেক্ষণ করা যায়।

কিন্তু: জিন অদৃশ্য। সে কি মুসলমান নাকি কাফের, ভালো নাকি খারাপ, সত্যবাদী নাকি প্রতারক—তা নিশ্চিতভাবে জানার কোনো উপায় মানুষের নেই। তার দেওয়া তথ্যকে ওহী হিসেবে মেনে নেওয়া বা তার কথাকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করা ছাড়া আর কোনো পথ থাকে না।

সুতরাং, একজন যাচাইযোগ্য মানুষের সাহায্য আর এক অদৃশ্য ও রহস্যময় সত্তার সাহায্যের তুলনা করাটা একটি সুস্পষ্ট গোঁজামিল।

#ভণ্ডদের দ্বিচারিতা: কেন শুধু চিকিৎসার ক্ষেত্রেই জিনেরা পারদর্শী?

একটি বিষয় লক্ষ্য করলে ভণ্ডামি স্পষ্ট হয়ে যায়। কথিত জিন-হুজুর ও কবিরাজরা দাবি করেন, তাদের জিনেরা রোগ নির্ণয় করতে পারে, যা মানুষের জন্য প্রায় অসম্ভব।

কিন্তু সুলাইমান (আঃ)-এর জিনেরা তো দালান বানাতো, সাগর থেকে মুক্তা আনতো। আজকের জিনেরা কেন তাদের হুজুরদের জন্য একটি বিল্ডিং বানিয়ে দেয় না? কেন তারা মাটি খুঁড়ে সোনা এনে দেয় না বা তাদের মনিবের জন্য ডুব দিয়ে মুক্তা নিয়ে আসে না?

এইসব দৃশ্যমান ও বৈধ কাজে তারা অক্ষম, কিন্তু অদৃশ্য ও যাচাই করার সুযোগ নেই এমন চিকিৎসার ক্ষেত্রেই তাদের সব ক্ষমতা! এর কারণ হলো, এখানে তাদের প্রতারণা ধরার কোনো সুযোগ নেই। এই দ্বিচারিতাই প্রমাণ করে যে, "ডাল মে কুচ কালা হ্যায়"।

#শিরকের গোপন ফাঁদ এবং ইসলামের সুস্পষ্ট সমাধান

১/ এটি শিরকের একটি গোপন দরজা

জিনের সাহায্য নেওয়ার বিষয়টি কেবল জায়েজ বা নাজায়েজের মাস'আলা নয়, এটি সরাসরি ঈমান ও আকিদার সাথে জড়িত। জিনকে বশ করার জন্য বা তার সাহায্য পাওয়ার জন্য কবিরাজদের প্রায়ই আল্লাহ্‌র সাথে শিরক করতে হয়। যেমন: জিনের নামে পশু জবাই করা, নাপাক স্থানে কুরআনের আয়াত লেখা, অশ্লীল ও ফাহেশা কাজের মত কবিরা গুনাহের মধ্যে লিপ্ত হওয়া যেমন: জিনা করা। এবং নিষিদ্ধ মন্ত্র পাঠ করা ইত্যাদি। এই কাজগুলো একজন মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়।

২/ ইস্তিদরাজ (শয়তানি সফলতা): অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, "তাহলে কিছু কবিরাজের কথা ফলে যায় কীভাবে?" ইসলামী পরিভাষায় একে 'ইস্তিদরাজ' বলা হয়। অর্থাৎ, আল্লাহ তা'আলা কোনো পাপী বা পথভ্রষ্ট ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে কিছু সফলতা দেন, যাতে সে তার গোমরাহিতে আরও গভীরে ডুবে যায় এবং তার বিরুদ্ধে আল্লাহ্‌র প্রমাণ চূড়ান্ত হয়। জিনদের দেওয়া কিছু আংশিক সত্য তথ্য এই ইস্তিদরাজের অংশ, যা দেখে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হয়।

৩/ ইসলামের পরিপূর্ণ সমাধান: #রুকইয়াহ শারইয়াহ

ইসলাম আমাদের কোনো সমস্যার ক্ষেত্রেই সমাধানহীন রাখেনি। যাদু, বদনজর বা জিন সংক্রান্ত সমস্যার জন্য ইসলাম আমাদের "রুকইয়াহ শারইয়াহ"-এর বিধান দিয়েছে, যা সরাসরি কুরআন ও হাদিস থেকে নেওয়া দোয়া ও পদ্ধতির মাধ্যমে করা হয়। যেখানে আল্লাহ নিজেই একটি পবিত্র, শক্তিশালী ও নিরাপদ সমাধান দিয়েছেন, সেখানে জিনের মতো একটি অদৃশ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ সত্তার কাছে সাহায্য চাওয়ার প্রয়োজন কেন হবে?

#শেষ ও চূড়ান্ত কথা হিসেবে যা বলতে চাই:

উপরের বিস্তারিত আলোচনা থেকে এটি অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয় যে:

১. সুলাইমান (আঃ)-এর ঘটনা একটি বিশেষ মু'জিজা, যা সাধারণ মানুষের জন্য দলিল নয় এবং এতে জিনের সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা বৈধ হওয়ার কোনো প্রমাণও নেই।

২. আমাদের নবী (ﷺ) নিজে বিপদে পড়ে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও জিনের সাহায্য নেননি, আর এটাই আমাদের জন্য একমাত্র অনুসরণীয় পথ।

৩. চিকিৎসার নামে জিনের সাহায্য চাওয়ার দাবিটি প্রতারণামূলক, ঝুঁকিপূর্ণ এবং হারাম, কুফর ও শিরকের সাথে জড়িত।

সুতরাং, চিকিৎসার জন্য জিনের সাহায্য নেওয়া ইসলামে সম্পূর্ণরূপে হারাম ও নিষিদ্ধ।

অসুস্থ হলে আমাদের করণীয় হলো: ধৈর্যধারণ করা, আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করা, অভিজ্ঞ রাকীর নিকট থেকে রুকইয়াহ শারইয়াহ এর মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণের পাশাপাশি প্রয়োজনে সৎ ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডাক্তারের পরামর্শ ও তার নিকট থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করা। এটাই নিরাপদ, বরকতময় এবং একমাত্র সঠিক পথ।

Address

Noor Tower, House. 29/31, Road-01, Block-D, Sector-2, Aftabnagar, Badda
Dhaka
1212

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Raqi Abdul Malik posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Raqi Abdul Malik:

Share