23/09/2025
💥 সর্বকালের সেরা ভণ্ডামি ফাঁস! 💥
জিনের সাহায্যে চিকিৎসা জায়েজ? সম্প্রতি দেওয়া এই ফতোয়ার পেছনে লুকিয়ে থাকা ভয়ঙ্কর প্রতারণাটি জানেন?
নবী সুলাইমান (আঃ)-এর একটি ঘটনাকে পুঁজি করে যেভাবে আপনার ঈমান নিয়ে খেলা হচ্ছে, তা জানলে আপনি চমকে উঠবেন!
•
সুলাইমান আলাইহিস সালাম তিনি কি জিনদের 'সাহায্য' চাইতেন, নাকি 'আদেশ' করতেন? দুটোর মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য!
•
রাসূল (ﷺ) নিজে জাদুগ্রস্ত হয়েও কেন জিনের সাহায্য নেননি?
•
বর্তমান সময়ের কবিরাজদের পূজিত জিনেরা কেন শুধু চিকিৎসার ক্ষেত্রেই পারদর্শী, দালান বানাতে নয়?
সকল গোঁজামিলের দলিলভিত্তিক জবাব দিয়ে সাজানো হয়েছে আমাদের এই বিশেষ আর্টিকেল। আপনার ঈমান ও আকিদা রক্ষায় লেখাটি পড়া বাধ্যতামূলক।
#সুলাইমান (আঃ)-এর দোহাই: জিনের সাহায্যে চিকিৎসার নামে প্রচলিত ভন্ডামির দলিলভিত্তিক জবাব।
#একটি ভ্রান্তির নিরসন
ইসলামী সমাজে মাঝে মাঝেই কিছু চর্চা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, যা ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক। এমনই একটি বিষয় হলো—জিনের সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করা বা অদৃশ্য জগতের খবর জানার দাবি। সম্প্রতি কিছু আলেমও নবী সুলাইমান (আঃ)-এর ঘটনাকে খণ্ডিতভাবে উপস্থাপন করে এই চর্চাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই আমাদের এই লেখাটির উদ্দেশ্য হলো কুরআন, সুন্নাহ এবং অকাট্য যুক্তির আলোকে এই দাবির ব্যবচ্ছেদ করে এর পেছনের ভণ্ডামি ও ঈমানবিধ্বংসী দিকগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা।
#মূল দলিলের ব্যবচ্ছেদ: সুলাইমান (আঃ)-এর ঘটনার ভুল ও খণ্ডিত উপস্থাপন!
যারা জিনের সাহায্য নেওয়াকে জায়েজ বলেন, তাদের প্রধান একটি দলিল হলো নবী সুলাইমান (আঃ) জিনদের দ্বারা বিভিন্ন বৈধ কাজ করিয়ে নিতেন। কিন্তু একটু গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলেই এই দলিলের অন্তঃসারশূন্যতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
১/ মূল বিভ্রান্তি: 'আদেশ করা' আর 'সাহায্য চাওয়া' এক নয়
এই যুক্তির সবচেয়ে বড় এবং মৌলিক ভুল হলো 'কর্তৃত্বের সাথে আদেশ করা' (التسخير) এবং 'সাহায্য প্রার্থনা করা' (الاستعانة)—এই দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়কে এক করে ফেলা।
সুলাইমান (আঃ)-এর অবস্থান ছিল শাসকের: আল্লাহ তা'আলা সুলাইমান (আঃ)-কে জিন ও শয়তানদের ওপর রাজত্ব ও কর্তৃত্ব দান করেছিলেন। তিনি ছিলেন তাদের শাসক। তিনি জিনদের কাছে কোনো কিছু 'চাইতেন' না বা তাদের 'সাহায্য প্রার্থনা' করতেন না; বরং তিনি তাদের আদেশ করতেন, আর জিনেরা সেই আদেশ মানতে বাধ্য ছিল। ঠিক যেমন একজন রাজা তার প্রজাদের আদেশ করেন। এটি ছিল আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতার প্রদর্শন ও বাস্তবায়ন।
আজকের #কবিরাজের অবস্থান হলো সাহায্যপ্রার্থীর:
অন্যদিকে, আজকের দিনের কবিরাজ বা জিন-হুজুরদের জিনদের ওপর কোনো ঐশ্বরিক কর্তৃত্ব নেই। তারা জিনদের আদেশ করতে পারে না। বরং তাদের সাহায্য পাওয়ার জন্য বিভিন্ন শিরকি ও কুফরি পদ্ধতির মাধ্যমে জিনদের কাছে সাহায্য চাইতে হয়, তাদের সন্তুষ্ট করতে হয় বা তাদের সাথে কোনো চুক্তিতে আবদ্ধ হতে হয়।
সুতরাং, সুলাইমান (আঃ)-এর আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতার মাধ্যমে জিনদের আদেশ করা আর একজন সাধারণ মানুষের জিনদের কাছে সাহায্য চাওয়া—এ দুটি বিষয়কে এক করে দলিল দেওয়া একটি সুস্পষ্ট প্রতারণা। একটি হলো ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখর, অন্যটি হলো শিরকের গভীর গহ্বর।
২/ এটি ছিল একটি বিশেষ মু'জিজা, সাধারণ বিধান নয়
আরও একটি সবচেয়ে বড় এবং মৌলিক কথা হলো, জিন ও শয়তানের ওপর কর্তৃত্ব ছিল আল্লাহ্র পক্ষ থেকে সুলাইমান (আঃ)-কে দেওয়া একটি বিশেষ মু'জিজা (অলৌকিক ক্ষমতা), যা অন্য কোনো মানুষের জন্য নয়।
এটি কোনো সাধারণ বিধান ছিল না যে, যে কেউ চাইলেই তা অনুসরণ করতে পারবে। স্বয়ং সুলাইমান (আঃ) আল্লাহ্র কাছে এমন এক রাজত্বের জন্য দোয়া করেছিলেন যা আর কাউকে দেওয়া হবে না।
আল্লাহ তা'আলা তাঁর এই দোয়া কুরআনে উল্লেখ করেছেন:
قَالَ رَبِّ اغْفِرْ لِي وَهَبْ لِي مُلْكًا لَّا يَنبَغِي لِأَحَدٍ مِّن بَعْدِي إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ
অর্থ: "সে বলল, ‘হে আমার রব, আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে এমন এক রাজত্ব দান করুন, যা আমার পরে আর কারো জন্য শোভা পাবে না। নিশ্চয় আপনিই মহাদাতা’।" (সূরা সোয়াদ, ৩৮:৩৫)
আল্লাহ তাঁর এই দোয়া কবুল করেছেন। এখানে "আমার পরে আর কারো জন্য শোভা পাবে না" কথাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে ক্ষমতা ও রাজত্বকে স্বয়ং একজন নবী আল্লাহ্র কাছে তাঁর জন্য খাস করে চেয়ে নিয়েছেন এবং আল্লাহ তা কবুলও করেছেন, সেই বিশেষ ক্ষমতাকে সাধারণ মানুষের জন্য একটি সাধারণ বিধান বা জায়েজ হওয়ার দলিল হিসেবে পেশ করাটা কুরআন ও নবুয়তের ধারণার সাথেই সাংঘর্ষিক। এটি একটি খণ্ডিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দলিল।
৩/ তিনি শয়তানকেও কাজে লাগাতেন: একটি আত্মঘাতী যুক্তি
যারা সুলাইমান (আঃ)-এর ঘটনাকে দলিল দেন, তারা একটি মারাত্মক বিষয় এড়িয়ে যান। তিনি শুধু ভালো জিন নয়, বরং অবাধ্য ও দুষ্ট শয়তানদেরকেও আল্লাহ্র হুকুমে কঠিন কাজে বাধ্য করতেন।
আল্লাহ তা'আলা বলেন:
وَالشَّيَاطِينَ كُلَّ بَنَّاءٍ وَغَوَّاصٍ
অর্থ: "আর সকল শয়তানকে (তার অধীন করে দিয়েছিলাম), যারা ছিল প্রাসাদ নির্মাণকারী ও ডুবুরি।" (সূরা সোয়াদ, ৩৮:৩৭)
এখন প্রশ্ন হলো, যদি সুলাইমান (আঃ)-এর কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের জন্য বৈধতার দলিল হয়, তাহলে কি এখন শয়তানের সাহায্য নিয়ে "ভালো কাজ" করাও বৈধ হয়ে যাবে? কোনো আলেম কি শয়তানের সাহায্য নিয়ে মসজিদ বানানোর ফতোয়া দেবেন? নিঃসন্দেহে না।
এই যুক্তিটিই প্রমাণ করে যে, তাঁর ঘটনাটি ছিল আল্লাহ্র পক্ষ থেকে একটি ব্যতিক্রমী ও বিশেষ অবস্থা, যা অন্য কারো জন্য অনুসরণীয় নয়।
৪/ মূল ঘটনায় চিকিৎসার কোনো উল্লেখই নেই
সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, যারা চিকিৎসার জন্য জিনের সাহায্য নেওয়াকে জায়েজ করতে সুলাইমান (আঃ)-এর ঘটনার দলিল দেন, তারা এমন একটি বিষয়কে প্রমাণ করতে চাইছেন যা মূল ঘটনাতেই অনুপস্থিত।
কুরআন ও হাদিসে কোথাও একটিবারের জন্যও উল্লেখ নেই যে, সুলাইমান (আঃ) জিনদের মাধ্যমে মানুষের রোগ নির্ণয় বা চিকিৎসা করতেন। বরং তিনি তাদের দিয়ে বিশাল বিশাল দালান নির্মাণ, সমুদ্রের গভীর থেকে মনি-মুক্তা আহরণ এবং অন্যান্য কঠিন কাজ করাতেন।
সুতরাং, যে কাজটি তিনি করেননি, সেই কাজের বৈধতা প্রমাণের জন্য তাঁর ঘটনাকে দলিল হিসেবে পেশ করা একটি নির্জলা মিথ্যাচার ও প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।
#আমাদের চূড়ান্ত আদর্শ: রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সুন্নাহ এ বিষয়ে কী বলে?
যেকোনো বিষয়ে হালাল-হারামের চূড়ান্ত ফয়সালা নেওয়ার জন্য আমাদের তাকাতে হবে সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর সুন্নাহর দিকে। তিনি কি এই কাজটি করেছেন, করতে বলেছেন, অথবা অনুমোদন দিয়েছেন?
১/ ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তিনি জিনকে ব্যবহার করেননি!
রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জিনদের ওপর নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা ছিল। একবার নামাজের সময় একটি দুষ্ট ইফরিত জিন তাঁকে বিরক্ত করলে তিনি তাকে ধরে ফেলেন।
তিনি বলেন:
فَأَرَدْتُ أَنْ أَرْبِطَهُ إِلَى سَارِيَةٍ مِنْ سَوَارِي الْمَسْجِدِ حَتَّى تُصْبِحُوا وَتَنْظُرُوا إِلَيْهِ أَجْمَعُونَ، فَذَكَرْتُ دَعْوَةَ أَخِي سُلَيْمَانَ "رَبِّ هَبْ لِي مُلْكًا لاَ يَنْبَغِي لأَحَدٍ مِنْ بَعْدِي" فَرَدَدْتُهُ خَاسِئًا
অর্থ: "আমি ইচ্ছা করলাম যে, তাকে মসজিদের একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখি যাতে তোমরা সকালে সকলে তাকে দেখতে পারো। কিন্তু তখন আমার ভাই সুলাইমান (আঃ)-এর দোয়া স্মরণ হলো: ‘হে আমার রব, আমাকে এমন রাজত্ব দান করুন, যা আমার পরে আর কারো জন্য শোভা পাবে না।’ তখন আমি তাকে লাঞ্ছিত অবস্থায় ছেড়ে দিলাম।" (সহীহ বুখারী, ৩৪২৩)
এই হাদিসটি একটি শক্তিশালী দলিল। রাসূল (ﷺ)-এর ক্ষমতা ছিল, কিন্তু তিনি সুলাইমান (আঃ)-এর দোয়ার প্রতি সম্মান দেখিয়ে জিনকে কোনো ব্যক্তিগত বা সামাজিক কাজে ব্যবহার করা থেকে বিরত থেকেছেন। তাঁর এই বিরত থাকাটাই (সুন্নাতে তারকিয়্যাহ) উম্মতের জন্য একটি সুস্পষ্ট নির্দেশনা যে, এই দরজাটি বন্ধ।
২/ নিজের কঠিনতম বিপদেও তিনি জিনের সাহায্য চাননি!
ইসলামের ইতিহাসে এটি প্রমাণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিজে কঠিন যাদু দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এটি ছিল তাঁর জীবনের অন্যতম বড় একটি পরীক্ষা। তখন তিনি কী করেছিলেন?
তাঁর তো এমন অনেক মুসলমান ও অনুগত সাহাবী জিন ছিলেন, যাদের ব্যাপারে তিনি নিশ্চিতভাবে জানতেন যে তারা ভালো এবং বিশ্বস্ত। তিনি কি তাদের কাউকে ডেকে বলেছিলেন, "দেখো তো, কে আমার উপর যাদু করেছে?" বা "এই যাদুর প্রভাব নষ্ট করে দাও"?
না, কখনই না। একটি দুর্বল বর্ণনাতেও এমন কিছু পাওয়া যায় না। তিনি কেবল আল্লাহ্র উপর পরিপূর্ণ তাওয়াক্কুল করেছেন, অবিরাম দোয়া করেছেন এবং আল্লাহ্র পক্ষ থেকে ওহীর (সূরা ফালাক ও নাস) মাধ্যমে আরোগ্য লাভ করেছেন।
অতএব: যদি কোনো বিশ্বস্ত জিনের সাহায্য নেওয়া সামান্যতমও জায়েজ হতো, তবে তিনি নিজের সবচেয়ে কঠিন বিপদের মুহূর্তে সেই পথ অবলম্বন করে উম্মতের জন্য একটি উদাহরণ রেখে যেতেন। তিনি তা করেননি, আর তাঁর এই না করাটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় দলিল ও অনুসরণীয় সুন্নাহ।
#ভণ্ডামির স্বরূপ উন্মোচন: যৌক্তিক ভ্রান্তি ও গোঁজামিল
শরীয়তের দলিলের পাশাপাশি সাধারণ যুক্তি দিয়েও এই হারাম চর্চার অসারতা প্রমাণ করা যায়।
১/ একটি কুযুক্তি: ডাক্তার আর জিন কি এক?
অনেকে যুক্তি দেন, "মানুষ ডাক্তারের সাহায্য নিতে পারলে, জিনের সাহায্য নিতে সমস্যা কোথায়?" এটি একটি অত্যন্ত দুর্বল ও ভ্রান্ত তুলনা। কেন?
কারণ: ডাক্তার একজন দৃশ্যমান মানুষ। আমরা তার সার্টিফিকেট, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, সুনাম এবং চরিত্র সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে যাচাই করতে পারি। তার চিকিৎসা পদ্ধতি বিজ্ঞানসম্মত কিনা তাও পর্যবেক্ষণ করা যায়।
কিন্তু: জিন অদৃশ্য। সে কি মুসলমান নাকি কাফের, ভালো নাকি খারাপ, সত্যবাদী নাকি প্রতারক—তা নিশ্চিতভাবে জানার কোনো উপায় মানুষের নেই। তার দেওয়া তথ্যকে ওহী হিসেবে মেনে নেওয়া বা তার কথাকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করা ছাড়া আর কোনো পথ থাকে না।
সুতরাং, একজন যাচাইযোগ্য মানুষের সাহায্য আর এক অদৃশ্য ও রহস্যময় সত্তার সাহায্যের তুলনা করাটা একটি সুস্পষ্ট গোঁজামিল।
#ভণ্ডদের দ্বিচারিতা: কেন শুধু চিকিৎসার ক্ষেত্রেই জিনেরা পারদর্শী?
একটি বিষয় লক্ষ্য করলে ভণ্ডামি স্পষ্ট হয়ে যায়। কথিত জিন-হুজুর ও কবিরাজরা দাবি করেন, তাদের জিনেরা রোগ নির্ণয় করতে পারে, যা মানুষের জন্য প্রায় অসম্ভব।
কিন্তু সুলাইমান (আঃ)-এর জিনেরা তো দালান বানাতো, সাগর থেকে মুক্তা আনতো। আজকের জিনেরা কেন তাদের হুজুরদের জন্য একটি বিল্ডিং বানিয়ে দেয় না? কেন তারা মাটি খুঁড়ে সোনা এনে দেয় না বা তাদের মনিবের জন্য ডুব দিয়ে মুক্তা নিয়ে আসে না?
এইসব দৃশ্যমান ও বৈধ কাজে তারা অক্ষম, কিন্তু অদৃশ্য ও যাচাই করার সুযোগ নেই এমন চিকিৎসার ক্ষেত্রেই তাদের সব ক্ষমতা! এর কারণ হলো, এখানে তাদের প্রতারণা ধরার কোনো সুযোগ নেই। এই দ্বিচারিতাই প্রমাণ করে যে, "ডাল মে কুচ কালা হ্যায়"।
#শিরকের গোপন ফাঁদ এবং ইসলামের সুস্পষ্ট সমাধান
১/ এটি শিরকের একটি গোপন দরজা
জিনের সাহায্য নেওয়ার বিষয়টি কেবল জায়েজ বা নাজায়েজের মাস'আলা নয়, এটি সরাসরি ঈমান ও আকিদার সাথে জড়িত। জিনকে বশ করার জন্য বা তার সাহায্য পাওয়ার জন্য কবিরাজদের প্রায়ই আল্লাহ্র সাথে শিরক করতে হয়। যেমন: জিনের নামে পশু জবাই করা, নাপাক স্থানে কুরআনের আয়াত লেখা, অশ্লীল ও ফাহেশা কাজের মত কবিরা গুনাহের মধ্যে লিপ্ত হওয়া যেমন: জিনা করা। এবং নিষিদ্ধ মন্ত্র পাঠ করা ইত্যাদি। এই কাজগুলো একজন মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়।
২/ ইস্তিদরাজ (শয়তানি সফলতা): অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, "তাহলে কিছু কবিরাজের কথা ফলে যায় কীভাবে?" ইসলামী পরিভাষায় একে 'ইস্তিদরাজ' বলা হয়। অর্থাৎ, আল্লাহ তা'আলা কোনো পাপী বা পথভ্রষ্ট ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে কিছু সফলতা দেন, যাতে সে তার গোমরাহিতে আরও গভীরে ডুবে যায় এবং তার বিরুদ্ধে আল্লাহ্র প্রমাণ চূড়ান্ত হয়। জিনদের দেওয়া কিছু আংশিক সত্য তথ্য এই ইস্তিদরাজের অংশ, যা দেখে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হয়।
৩/ ইসলামের পরিপূর্ণ সমাধান: #রুকইয়াহ শারইয়াহ
ইসলাম আমাদের কোনো সমস্যার ক্ষেত্রেই সমাধানহীন রাখেনি। যাদু, বদনজর বা জিন সংক্রান্ত সমস্যার জন্য ইসলাম আমাদের "রুকইয়াহ শারইয়াহ"-এর বিধান দিয়েছে, যা সরাসরি কুরআন ও হাদিস থেকে নেওয়া দোয়া ও পদ্ধতির মাধ্যমে করা হয়। যেখানে আল্লাহ নিজেই একটি পবিত্র, শক্তিশালী ও নিরাপদ সমাধান দিয়েছেন, সেখানে জিনের মতো একটি অদৃশ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ সত্তার কাছে সাহায্য চাওয়ার প্রয়োজন কেন হবে?
#শেষ ও চূড়ান্ত কথা হিসেবে যা বলতে চাই:
উপরের বিস্তারিত আলোচনা থেকে এটি অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয় যে:
১. সুলাইমান (আঃ)-এর ঘটনা একটি বিশেষ মু'জিজা, যা সাধারণ মানুষের জন্য দলিল নয় এবং এতে জিনের সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা বৈধ হওয়ার কোনো প্রমাণও নেই।
২. আমাদের নবী (ﷺ) নিজে বিপদে পড়ে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও জিনের সাহায্য নেননি, আর এটাই আমাদের জন্য একমাত্র অনুসরণীয় পথ।
৩. চিকিৎসার নামে জিনের সাহায্য চাওয়ার দাবিটি প্রতারণামূলক, ঝুঁকিপূর্ণ এবং হারাম, কুফর ও শিরকের সাথে জড়িত।
সুতরাং, চিকিৎসার জন্য জিনের সাহায্য নেওয়া ইসলামে সম্পূর্ণরূপে হারাম ও নিষিদ্ধ।
অসুস্থ হলে আমাদের করণীয় হলো: ধৈর্যধারণ করা, আল্লাহ্র কাছে দোয়া করা, অভিজ্ঞ রাকীর নিকট থেকে রুকইয়াহ শারইয়াহ এর মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণের পাশাপাশি প্রয়োজনে সৎ ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডাক্তারের পরামর্শ ও তার নিকট থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করা। এটাই নিরাপদ, বরকতময় এবং একমাত্র সঠিক পথ।