25/06/2025
তারিখ ঃ ২৫ জুন ২০২৫
নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিম্নোক্ত বাণী দিয়েছেন ঃ
বাণী
“জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতনের শিকারদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবসটি পালিত হয় ২৬ জুন। এই দিবসটি নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সমর্থনে এবং নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পালিত হয়। আমি এই আন্তর্জাতিক দিবসে বাংলাদেশসহ সারাবিশে^র নিপীড়িত-নির্যাতিত মজলুম ব্যক্তি, জাতি, গোষ্ঠী, বর্ণ ও ভাষাগত সম্প্রদায়ের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা। আবহমানকাল ধরে দেশে দেশে মানুষ অত্যাচারী শাসক, বর্বর একনায়ক এবং একদলীয় শাসকের দ্বারা দমণ-পীড়ণের শিকার হয়ে আসছে। বিশ^জুড়ে রক্তপিপাসু স্বৈরশাসকরা বিশ^শান্তি, নিরাপত্তা, গণতন্ত্র, মানবমুক্তি ও প্রগতির আদর্শকে ভয়ানক নিষ্ঠুরতায় ভুলুন্ঠিত করেছে। আজও দুনিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ভাষা, বর্ণ, জাতি ও সম্প্রদায় নিয়ে চলছে হিংসা ও সংঘাতের রক্তক্ষরণ। বেআইনী ক্ষমতাবানরা অনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য সমাজে চালাচ্ছে রক্তারক্তি ও হানাহানি। রাষ্ট্রের অমানবিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মানুষ নানাভাবে দমণ-পীড়নের শিকার হচ্ছে। বিশ^ যান্ত্রিক সভ্যতায় এগিয়ে গেলেও মানবিক সভ্যতা বেশিদুর এগুতে পারেনি। গত বছর জুলাই-আগষ্টের গণঅভ্যুত্থানে তৎকালীন ফ্যাসিষ্ট সরকারের বিভৎস দমণ নীতির কারণে অসংখ্য প্রাণ ঝরে গেছে এবং হাজার হাজার ছাত্র-জনতা পঙ্গুত্ববরণ করেছে। বিগত নিষ্ঠুর ও কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী সরকারের উৎপীড়ণের বিকট রুপ দেখে সারাবিশ^ হতভম্ব হয়েছে। এছাড়াও ১৬ বছর ধরে তাদের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কারণে গুম, কথিত বন্দুকযুদ্ধে হত্যা, শারীরিক নির্যাতনে মৃত্যুর শিকার হয়েছে অসংখ্য মানুষ। ফ্যাসিষ্ট সরকারের জনগণের নিকট কোন জবাবদিহিতা ছিল না, সকল প্রতিষ্ঠানকে হাতের মুঠোয় নিয়ে একদলীয় দুঃশাসনের জগদ্দল পাথর জনগণের বুকের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। গণমাধ্যমকে হুমকি, ভয় ও নির্যাতন চালিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নির্মমভাবে মাটিচাপা দেয়া হয়েছিল। আর বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মীদের ওপর চালানো হয়েছে বেপরোয়া জুলুম-নির্যাতন। সারাদেশের মানুষ যেন ভয়াবহ নৈরাজ্যের অন্ধকারে বাস করেছে।
জুলুম-নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় গণতন্ত্রের সর্বশেষ চিহ্নকে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী মুছে ফেলেছিল। ‘গণতন্ত্রের মা’ বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অসত্য বানোয়াট মামলায় আক্রোশমূলকভাবে ফরমায়েশী রায়ে সাজা দিয়ে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। তাঁকে নানাভাবে হয়রানী ও নির্যাতন করা হয়। কারাবন্দী অসুস্থ দেশনেত্রীকে সুচিকিৎসা না দিয়ে তাঁর জীবনকে সংকটাপন্ন করে তোলা হয়। রাষ্ট্রীয় নিপীড়ণের এ ধরণের দৃষ্টান্ত সহজেই খুঁজে পাওয়া যায় না।
আমি নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জতিক দিবসে সুষ্পষ্টভাবে বলতে চাই, রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের প্রতিকার প্রাপ্তি এবং ন্যায্য ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের একটি ন্যায়সংগত অধিকার বাস্তবায়নের জন্য সর্বোচ্চ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক। আমি গণতন্ত্রকামী সংগ্রামী জনগণকে যুথবদ্ধভাবে সকল নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানাচ্ছি। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু বন্ধ করতে হবে।
বিদ্যমান দায়হীনতা ও দায়িত্বশীলদের কর্তব্যে অবহেলা বন্ধ করতে হবে।
আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”
বার্তা প্রেরক
(এ্যাড. মোঃ তাইফুল ইসলাম টিপু)
সহ-দফতর সম্পাদক
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।