19/09/2025
জ্বীনের হাজিরা শরীয়তের দৃষ্টিতে তার হুকুম কি??
জ্বীনের হাজিরা দেখানো বা আনা, কুরআন ও সহীহ হাদীসে কোথাও রাসূল ﷺ, সাহাবা (رضي الله عنهم) বা সালাফে সালেহীন কাউকে জ্বীনের হাজিরা এনে মানুষের সামনে দেখাতে বলা হয়নি।
বরং জ্বীনের উপর নির্ভরশীল হওয়া, তাদের সাহায্য নেওয়া, তাদের ডাকা বা হাজির করা—এসব বিষয় শিরক, কুফর বা অন্তত হারাম এর মধ্যে পড়ে।
📖 কুরআনের দলিল
মানুষের কিছু লোক জ্বীনদের কাছে আশ্রয় চাইত, ফলে তারা (জ্বীনরা) তাদেরকে বাড়তি ভয়ভীতি ছাড়া কিছুই দিত না। [সূরা জিন ৭২:৬]
📖 আয়াত থেকে স্পষ্ট যে, জ্বীনদের সাহায্য চাওয়া বা তাদেরকে হাজির করা নিন্দিত।
হাদীসের দলিলঃ
রাসূল ﷺ বলেছেন:
যে ব্যক্তি কোন গণক বা জ্যোতিষীর কাছে গেল এবং তার কথা বিশ্বাস করল, সে মুহাম্মদের উপর অবতীর্ণ জিনিসের সাথে কুফর করল।
[আবু দাউদ 3904, তিরমিযি 135, সহীহ ইবনে হিব্বান 889]
জ্যোতিষী, গণকরা মূলত জ্বীনের সাহায্যে খবর আনে। আর জ্বীনের হাজিরা দেখানোও একই শ্রেণির কাজ।
হাদীসে এসেছে:
যে ব্যক্তি কোন কাহিন (জ্বীন-গণক) এর কাছে গেল, তার চল্লিশ দিনের নামাজ কবুল হবে না।
[সহীহ মুসলিম 2230]
এর মানে, জ্বীনের হাজিরা বা তাদের থেকে খবর নেওয়া—সবই গুরুতর গুনাহ।
সালাফ ও আলেমদের মতামতঃ
ইমাম ইবন তাইমিয়া (রহ.) বলেছেন:
জ্বীনের সাহায্যে অসাধারণ কাজ করা—যেমন, খবর আনা, হাজিরা দেখানো—এ সব কিছু শিরকের মাধ্যম। [মাজমু' ফাতাওয়া 11/307]
শায়খ সালিহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন:
মানুষকে দেখানোর জন্য জ্বীনের হাজিরা আনা, কথা বলানো বা খবর বের করা—এটি শিরক ও কুফরী কাজ। মুসলিমকে এসব থেকে দূরে থাকতে হবে।
জ্বীনের হাজিরা শরীয়তে বৈধ নয়।
এটি শিরক, কুফর বা অন্তত হারাম—কারণ এতে জ্বীনের সাহায্য নেওয়া হয়। রাসূল ﷺ ও সাহাবাদের আমলে জ্বীন দ্বারা হাজিরা বা প্রদর্শন কখনোই করা হয়নি।
মুসলিমকে উচিত শুধুমাত্র আল্লাহর সাহায্যে কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী রুকইয়াহ করা। তাই শরীয়তের দলিল অনুযায়ী, জ্বীনের হাজিরা দেখা বা দেখানো হারাম ও গুনাহ।
কথিত আলেম নামধারী কিছু জালেম কি এ সকল হাদিস পড়েননি? নাকি তারা শুধুমাত্র কিতাব না পড়েই অটোমেটিকভাবে আলেমের সনদ গ্রহণ করেছেন?
আজকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শত শত নামধারী আলেম নামের জালেমকে দেখা যায়। তারা একে অপরের কাছ থেকে ভুল শিক্ষাগ্রহণ করে সাধারণ মানুষের ঈমান ও আমল ধ্বংস করছে।
অত্যন্ত দুঃখজনক যে, এই জালেমরা নিজেদের নামের আগে “বিশিষ্ট রাক্বি” উপাধি ব্যবহার করে প্রচার করছে। আরও ভয়াবহ বিষয় হলো, তাদের শির্ক ও কুফরমূলক কার্যকলাপকে নেক আমল হিসেবে সাধারণ মানুষের সামনে উপস্থাপন করছে।
আল্লাহ তায়ালা যেন এই জালেমদের ক্ষতি থেকে উম্মাহকে হেফাজত করেন এবং সাধারণ মানুষের ঈমান ও আমলকে সুরক্ষিত রাখেন। আমীন।
#الرقي مهدي حسن المداني