16/11/2023
Issue MTFE: এদেশের মানুষ অতিলোভী। এরা টাকা দিয়ে টাকা কামাতে চায়। নো কাজ। টাকা ফালাইলেই জাদুর কুপি টাকা ডাবল করে দিবে। এই মন্ত্রে বিশ্বাস করে বলে ২১ বছর আগে ডেস্টিনির রফিকুল আমিন শুরু করেছিল এমএলএম (মূলত পিরামিড স্কিম)। যুগে যুগে যত প্রতিষ্ঠিত পেশা এসেছে, প্রত্যেকটার নাম দিয়ে এই স্ক্যাম ফিরে এসেছে। ২০১০ সালে যুবক, ইউনিপেটিউ, ২০১৩ সালে ফ্রিল্যান্সিং এর নামে ডুলেন্সার, স্কাইল্যান্সার, ২০১৫ সালে ই-কমার্সের নামে ওয়ার্ল্ড মিশন ২০, ২০১৯ সালে SPC, শেষে ক্রিপ্টোকারেন্সির নাম দিয়ে এই MTFE.
আমাকে প্রথম যখন এইটার কথা একজন বলে, সে বলে এটা কানাডার কোম্পানি, ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত, দুবাই-কাতার সহ বিশ্বের অনেক দেশে আছে, অনেক সিইও আছে। তখনই আমি ইন্টারনেট ঘেটে বের করলাম MTFE অর্থ Metaverse Foreign Exchange. মেটাভার্স টার্মটা আসেই ২০২১ সালে, তাহলে কিভাবে কোম্পানি ২০১৫ সালে প্রতিষ্টা হয়? ডোমেইন রেজিস্ট্র্বশনে দেখলাম এক বাংলাদেশি লোকের নামে ২০২১ সালে রেজিস্টার হয়েছে ডোমেইন। এক কোম্পানির ডজন ডজন সিইও হয়না, এটা কমন সেন্স।
এদের মডেলটা অসাধারণ। সাধারণ মানুষকে বুঝিয়েছে এখানে AI (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) দিয়ে ট্রেডিং হয়। যেটা অবাস্তব এবং এরকম রোবটিক ট্রেডিং সাধারণ স্টক মার্কেটেও অবৈধ। সাথে তারা বুঝিয়েছে তারা ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে কাজ করে। মূলত তারা লেনদেন করে Binance এ। যাতে ট্র্যাক করা না যায়। এটাকেও তারা সাধারণ মানুষকে বুঝিয়েছে বহুত বড় কিছু হিসেবে। সাধারণ মানুষ তো নতুন এই জিনিস জেনে নিজেরা অনেক জ্ঞানী ভাবতে শুরু করে। সাথে ছয় হাজার দিলে দিলে ১ ডলার করে লাভ আসবে টাইপের লোভ তো আছেই। মানুষ হুমড়ি খেয়ে টাকা লাগিয়েছে। তাদের ভাষায় এটা ইনভেস্টমেন্ট। ১ লাখ ১০ হাজার ইনভেস্টে ৪৫ হাজার লাভ, অর্থাৎ মাসে ৪০% এবং বছরে ৪৮০% লাভ। এটা কত বড় অদ্ভুত একটা অফার নুন্যতম কমন সেন্স থাকলেই বুঝা যায়। যেখানে ব্যাংকের সর্বোচ্চ লাভ ৭% বছরে, ব্যবসায় হায়েস্ট ৩০%, সেখানে এরা দিচ্ছে ৪৮০%, কোত্থেকে দিচ্ছে? এই প্রশ্ন কেউ করলোনা, টাকার লোভেই অন্ধ।
এরা আরেকটা কাজ করেছে, যারা অনেক মানুষ ঢুকাবে এই স্ক্যামে, তাদেরকে কোম্পানির CEO বানাবে। এখন যাদের ব্যবসা সম্পর্কে আইডিয়া আছে তারা জানে এক কোম্পানিতে অনেক সিইও থাকেনা। এরা কেউ যদি ১০০ জন ঢুকাতে পারে, তাকে বলতো একটা লোকার ট্রেড লাইসেন্স নিতে। নাম হবে “এমটিএফই XYZ”. এভাবে তারা সব দায়ভার কোম্পানি থেকে সরিয়ে ঐ সিইওদের উপর তুলে দিত। এই স্ট্র্যাটেজি এমএলএম জগতে আর কেউ করেনাই।