15/09/2025
অভিমান ভাঙানোর রাত
(সম্পূর্ণ সংস্করণ)
১. ভুল বোঝাবুঝি
দিনটা ছিল সাধারণ, কিন্তু দুপুরে হঠাৎ ভুল বোঝাবুঝি থেকে ঝগড়া।
মেহজাবিন ভেবেছিল রোদ্দুর অন্য কাউকে সময় দিচ্ছে। ফোনে রাগে বলেছিল—
👉 “তুমি যদি আমাকে ভালোবাসতে, তাহলে আমার জন্যও সময় পেতে।”
রোদ্দুর চুপ করে যায়। সেই চুপ করাটাই অভিমানকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
ফোন কেটে দেয় মেহজাবিন।
২. বৃষ্টির রাতে অপেক্ষা
রাত নামতেই বৃষ্টি শুরু হয়। আকাশ যেন ঝরে পড়ছিল, ঠিক মেহজাবিনের বুকের মতো।
হঠাৎ ফোনে মেসেজ—
👉 “আমি নিচে দাঁড়িয়ে আছি। তুমি না এলে যাব না।”
জানালায় দাঁড়িয়ে মেহজাবিন দেখে—হ্যাঁ, রোদ্দুর ভিজে দাঁড়িয়ে আছে। শার্ট ভিজে শরীরের সঙ্গে লেপ্টে গেছে। ঠান্ডায় কাঁপছে, কিন্তু চোখে জেদ—“আমি না দেখা পর্যন্ত ফিরব না।”
অভিমানী মনটা নরম হয়ে আসে। অবশেষে দরজা খোলে।
৩. প্রথম ছোঁয়া
ভেতরে ঢুকেই রোদ্দুর কিছু বলে না। শুধু ভিজে শরীর থেকে জল ঝরছে, আর চোখে গভীর দৃষ্টি।
মেহজাবিন জেদ করে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
👉 “এভাবে কষ্ট দিয়েছো, আমি কথা বলব না।”
রোদ্দুর ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে তার হাতটা ধরে ফেলে। হাত ঠান্ডা, কিন্তু সেই ছোঁয়া যেন আগুনের মতো উষ্ণ।
👉 “তুমি ছাড়া আমি কিছুই নই।”
মেহজাবিনের চোখ ভিজে ওঠে। ঠোঁট কাঁপতে থাকে, তবুও চুপ করে থাকে।
৪. রাগ ভাঙার চুম্বন
হঠাৎ রোদ্দুর তার চিবুক আলতো করে তুলে ধরে। চোখে চোখ।
👉 “তুমি আমার উপর যতই রাগ করো, তোমার চোখেই আমি আশ্রয় খুঁজি।”
ধীরে ধীরে ঠোঁট ছুঁয়ে যায় ঠোঁটে। প্রথমে কাঁপা কাঁপা, অভিমানে ভরা। তারপর গভীর হয়ে ওঠে।
মেহজাবিন প্রথমে সরতে চায়, কিন্তু তারপর নিজেই আরও কাছে সরে আসে।
৫. হাতের ছোঁয়া, শরীরের ভাষা
চুমুর ভেতরেই রোদ্দুরের হাত তার কাঁধ ছুঁয়ে গলা বেয়ে নেমে আসে। মেহজাবিন কেঁপে ওঠে, চোখ বুজে ফেলে।
তার হাতও অজান্তেই রোদ্দুরের বুকে রাখে। বুকের ধুকপুকানি স্পষ্ট শোনা যায়।
বাইরে বজ্রপাত হয়, ঘর ভেতর আলোর ঝলকানি, আর ভেতরে নিঃশ্বাসে উষ্ণ ঝড়।
৬. আরও কাছে, আরও গভীর
রোদ্দুর তাকে বুকের ভেতর জড়িয়ে ধরে। তার ভেজা চুলে হাত বোলায়।
👉 “তুমি যদি অভিমান করো, আমি বারবার এসে ভাঙব। হাজারবার।”
মেহজাবিন ফিসফিস করে বলে—
👉 “আজ আমার সব অভিমান ভাঙো… আমি আর শক্ত থাকতে পারছি না।”
তাদের হাত একে অপরের শরীর খুঁজে বেড়ায়। প্রতিটা ছোঁয়ায় জমে থাকা রাগ, কষ্ট, অভিমান গলে গিয়ে জায়গা নেয় ভালোবাসার উষ্ণতায়।
৭. রাতের আলিঙ্গন
ধীরে ধীরে তারা সোফায় বসে যায়। মেহজাবিন মাথা রাখে রোদ্দুরের কাঁধে।
রোদ্দুর তার কপালে চুমু খায়, আঙুলে আঙুল জড়িয়ে রাখে।
সেই মুহূর্তে দু’জনেই বুঝে যায়—সব ঝগড়া, সব রাগ কেবল ভালোবাসার গভীরতা বাড়ানোর জন্যই ছিল।
বাইরে বৃষ্টি থামেনি। কিন্তু ঘরের ভেতরে তারা দু’জনেই ভিজছে—ভালোবাসার আবেশে, অভিমান ভাঙার উষ্ণতায়, ঘনিষ্ঠতার অদ্ভুত মায়ায়।
---
শেষ কথা
সেই রাতটা হয়ে রইল তাদের জীবনের মোড় ঘোরানো রাত।
অভিমান ভেঙে তারা যেন আরও নতুন করে একে অপরকে পেল।
আর দু’জনের বুকের ভেতরে সেই প্রতিশ্রুতি—
👉 “যাই হোক, আমরা আর কখনও একে অপরকে হারাব না।”