18/10/2025
🚫 ইউরোপ গেইমের বিভীষিকাময় বাস্তবতা 🚫
এক ভাইয়ের জীবনের সত্য ঘটনা — পড়তে পড়তে চোখ ভিজে গেল।
তার যাত্রাপথ যেন এক ভয়ংকর দুঃস্বপ্নের মতো।
সবাইকে অনুরোধ করছি — দালালের প্রলোভনে পড়ে কখনো এমন ঝুঁকি নেবেন না।
জীবনের চেয়ে বড় কিছু নেই। 🙏
⸻
✈️ ইউরোপ গেইম যাত্রার শুরু
📅 ১১ অক্টোবর ২০২৪, রাত ৯টা – বাংলাদেশ এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হই।
📅 ১২ অক্টোবর, শনিবার দুপুর ১২টা – কাতারে পৌঁছালাম।
📅 বিকেল ৪টায় – তুর্কি এয়ারলাইন্সে করে তুরস্কের পথে রওনা।
📍 সন্ধ্যা ৭টা – তুরস্ক এয়ারপোর্টে পৌঁছালাম।
সেই রাতে পুরোটা সময় এয়ারপোর্টেই কাটালাম।
📅 রবিবার সকাল ৭টা – কসোভোর উদ্দেশ্যে বিমানে উঠি।
📍 দুপুর ১২টা – কসোভো পৌঁছালাম।
রবিবার পুরো দিন ও রাত কসোভোতেই ছিলাম।
⸻
🚧 ইউরোপ গেইমের ভয়ংকর অধ্যায়
📅 ১৪ অক্টোবর, সোমবার দুপুর ২টা – কসোভো থেকে সার্বিয়ার পথে রওনা হই “গেইম গাড়িতে”।
৫ ঘণ্টা পর, সন্ধ্যা ৭টায়, কসোভো-সার্বিয়া বর্ডারের কাছাকাছি নামিয়ে দেওয়া হয়।
জঙ্গলের ভেতর দিয়ে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে সার্বিয়ায় প্রবেশ করি।
সার্বিয়ায় পৌঁছে আবার গাড়িতে উঠি।
মঙ্গলবার সকালে আমাদের নামিয়ে দেওয়া হয় একটি পার্কের সামনে।
সারাদিন সেখানে বসে থেকে সন্ধ্যায় আবার রওনা হই।
রাত বারোটার দিকে সার্বিয়ার এক জঙ্গলে নামিয়ে দেওয়া হয়।
ভোর রাতে আমরা হেঁটে পৌঁছাই সার্বিয়া–হাঙ্গেরি সীমান্তে।
সেখানে থেকে পুলিশের চোখ এড়িয়ে হাঙ্গেরি বর্ডার ক্রস করি।
⸻
🏃 জীবন-মৃত্যুর দৌড়
হাঙ্গেরির জঙ্গলে পুরো দিন দৌড়ে দৌড়ে কাটাতে হয়।
প্রতিক্ষণ মনে হচ্ছিল — এই বুঝি ধরা পড়ে গেলাম।
কয়েকবার খুব অল্পের জন্য ধরা পড়া থেকে বেঁচে যাই।
সন্ধ্যার দিকে অবশেষে জঙ্গল পেরিয়ে লোকালয়ে পৌঁছাই।
সেখান থেকে গাড়িতে উঠে ৬ ঘণ্টা জার্নির পর পৌঁছে যাই
হাঙ্গেরি–অস্ট্রিয়া বর্ডারে।
📅 বুধবার রাত ১১টা – পায়ে হেঁটে অস্ট্রিয়ার বর্ডার ক্রস করি।
কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই অস্ট্রিয়া পুলিশের হাতে ধরা পড়ি।
কপাল ভালো — হাঙ্গেরি পুলিশের হাতে ধরা পড়লে দেশে রিটার্নের ঝুঁকি ছিল প্রবল।
আমরা তখন দাউদকান্দি ও তিতাস থানার ৮ জন ছিলাম।
অস্ট্রিয়ান পুলিশ আমাদের কাস্টডিতে নেয়।
এক রাত ও একদিন হেফাজতে রাখার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফিঙ্গার রেখে
গন্তব্যে যাওয়ার অনুমতি দেয়।
সেই রাতেই ট্রেনে উঠে শুক্রবার বিকেল তিনটায়
অস্ট্রিয়া–ইতালি বর্ডারের কাছে পৌঁছাই।
⸻
🇮🇹 গন্তব্যে পৌঁছানো
📅 শুক্রবার বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে
অস্ট্রিয়ার বর্ডার থেকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে
ইতালির উদ্দেশ্যে বাসে উঠি।
📅 সন্ধ্যা ৬টায় অবশেষে ইতালির মাটিতে পা রাখি।
এক মুহূর্তে মনে হলো — আমি বেঁচে ফিরেছি, এ যেন নতুন জীবন!
⸻
💔 জীবনের শিক্ষা
১৪ অক্টোবর থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত—
এই পাঁচ দিনের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল মৃত্যু আর জীবনের মাঝখানে দোদুল্যমান।
বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা ছিল মাত্র ৫%।
আল্লাহর অসীম রহমতে আজ বেঁচে আছি।
কখনও মনে হয় — এখন যেন “বোনাস লাইফ” বাঁচছি।
⸻
❗সতর্কবার্তা ❗
বন্ধুরা, জীবনকে এত সস্তা করে দিও না।
দালালের মিষ্টি কথায় প্রলুব্ধ হয়ে নিজের জীবন বাজি রেখো না।
“ইউরোপ গেইম” কোনো স্বপ্ন নয়, এটি এক বিভীষিকা।
বেঁচে ফিরলে তবেই বুঝবে — জীবনটাই আসল গন্তব্য। 🕊️