28/07/2023
আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিংয়ের কর্মশালায় সুবীর নকরেক
২০১৬ সালে ঢাকায় ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং’ বিষয়ে একটা কর্মশালা করেছিলেন সুবীর নকরেক। সেই প্রথম আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ সম্পর্কে ধারণা পান মধুপুরের এই গারো তরুণ। আস্তে আস্তে নিজের চেষ্টায় গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়ার্ডপ্রেস ও ডিজিটাল বিপণনে দক্ষ হয়ে ওঠেন। কর্মস্থল হিসেবে বেছে নেন মধুপুর বনাঞ্চলের নিজ গ্রাম গায়রা। গ্রামের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও পেশাজীবীদের ফ্রিল্যান্সিং বোঝাতে থাকেন। কোন কাজ কীভাবে করলে অর্থ আয় করা যায়, নিজের অভিজ্ঞতা থেকে সেসব সম্পর্কে ধারণা দিতে শুরু করেন। আশপাশের গ্রামগুলোয় গিয়েও বিনা মূল্যে সেমিনার ও সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ দেন। কেউ বুঝলেন, কেউ আবার হেসে উড়িয়ে দিলেন। কিন্তু হাল ছাড়লেন না সুবীর নকরেক। শেষমেশ অনেক তরুণ আগ্রহী হলেন, শিখলেন নানা রকমের কাজ। গায়রা ও আশপাশের গ্রামে এখন ৩৫০ জন ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। পাশাপাশি নিজেও ফ্রিল্যান্সিং চালিয়ে যাচ্ছেন সুবীর নকরেক। প্রথম দেড় বছরে তাঁর আয় হলো ১১ হাজার মার্কিন ডলারের মতো।
কাজগুলোকে আরও সংগঠিতভাবে করার জন্য ২০১৭ সালে সুবীর প্রতিষ্ঠা করলেন ‘নকরেক আইটি ইনস্টিটিউট’। কিন্তু ইন্টারনেটের ধীরগতি আর সংযোগ না পাওয়ায় গায়রা থেকে কাজ চালানো দুরূহ হয়ে পড়ল। দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাই নকরেক আইটি ইনস্টিটিউটের শাখা চালু করেন তিনি। এ প্রতিষ্ঠানের এখন চারটি শাখা—ময়মনসিংহের কাঁচিঝুলি, গাজীপুরের ফুলবাড়িয়া, জামালপুরের নান্দিনা এবং ঢাকার বসুন্ধরা। এগুলোয় কাজ করছেন ৪৫ জন কর্মী। দেশের বিভিন্ন স্থানে সেমিনার করেছে এ প্রতিষ্ঠান। সেমিনারের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ধারণা পেয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার তরুণ–তরুণী।
ছয় বছরের মধ্যেই সুবীর নকরেক এখন এক সফল ফ্রিল্যান্সার। গায়রা থেকে দেশ-বিদেশের বহু গ্রাহকের হয়ে আউটসোর্সিং করে যাচ্ছেন। শুধু তা-ই নয়, আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে পিছিয়ে পড়া থাকা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর তরুণদের ফ্রিল্যান্সিংয়ের নানা কাজ শিখিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত নকরেক আইটি ইনস্টিটিউট থেকে এ পর্যন্ত প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ১০ হাজার তরুণ–তরুণী। তাঁদের বেশির ভাগই ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। প্রশিক্ষণ নেওয়া গারো তরুণই আছেন ছয় হাজার। আছেন চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, সাঁওতাল, রাজবংশী, বর্মণ, কোচ, ওঁরাও, ত্রিপুরা, পাংখো, রাখাইন, খাসিয়া, হাজং, বম ও ম্রো সম্প্রদায়ের মানুষ।
সুবীর নকরেক বলেন, ‘যে জায়গাগুলোয় প্রশিক্ষণ দিই, সেগুলোর বেশির ভাগই প্রত্যন্ত গ্রাম। ফ্রিল্যান্সিং শেখার আগ্রহ থাকলেও এসব গ্রামের অনেকেরই প্রশিক্ষণ কোর্স করার জন্য প্রয়োজনীয় এক-দুই হাজার টাকাও নেই। কিংবা দেওয়াটা কষ্টকর তাদের পক্ষে। তবু যতটুকু দিতে পারে, তা নিয়েই আমরা তাদের প্রশিক্ষণ দিই।’
২০১৬ সালে ঢাকায় ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং’ বিষয়ে একটা কর্মশালা করেছিলেন সুবীর নকরেক। সেই প্রথম আউটসোর্সিং ও ফ্রি.....