আলোর ভুবন সাহিত্য সংসদ

আলোর ভুবন সাহিত্য সংসদ হৃদয়ের কথা গুলো বলতে চাই।প্রেমের ভাষায় নতুন শব্দের পৃথিবী গড়তে চাই।

- ইমাম আল-গাজ্জালী (রহ.) তাঁর আত্মিক সংকটের সময় বলা একটি বক্তব্য।সোর্স : গুগলকার্টেসি: Ameen’s Insight
09/08/2025

- ইমাম আল-গাজ্জালী (রহ.) তাঁর আত্মিক সংকটের সময় বলা একটি বক্তব্য।
সোর্স : গুগল
কার্টেসি: Ameen’s Insight

🟧 মা আমেনার জীবনী (২নং পর্ব)হারিস আবদুল্লাহকে নিয়ে আসার বদলে পিতার নিকট নিয়ে আসলেন ছোট ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ। বৃদ্ধ পিতা আ...
09/08/2025

🟧 মা আমেনার জীবনী (২নং পর্ব)

হারিস আবদুল্লাহকে নিয়ে আসার বদলে পিতার নিকট নিয়ে আসলেন ছোট ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ। বৃদ্ধ পিতা আবদুল মুতালিব ও বিবি আমেনা এই দুঃখজনক সংবাদ শুনে একেবারে ভেঙ্গে পড়লেন। আবদুল্লাহর এই অকাল মৃত্যুতে মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাতৃগর্ভে পিতৃহীন ও ইয়াতিম হয়ে গেলেন। বিবি আমেনার প্রসব কাল ক্রমে ঘনিয়ে আসল। এই সময় এক গভীর নিশিতে তিনি একটি অপূর্ব স্বপ্ন দেখলেন। আকাশের পূর্ণিমার চন্দ্রটি আমেনার ঘরের দিকে নামিয়া আসিতেছে। চারিদিকে আনন্দের জোয়ার বহিয়া যাইতেছে। তালে তালে ফুলগুলি দোলতেছে আর খুশবু ছড়াচ্ছে। পাখিরা সব গান ধরেছে, তরু লতা, গাছপালা, পশু পাখি, পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী, সাগর-মহাসাগর, আসমানের তারাগুলি সব সারাবিশ্ব জুড়ে আমেনাকে আওয়াজ করে ধন্যবাদ দিতেছে। ধন্য গো আমেনা বিবি, ধন্যগো তোমার আগমন ধরায়। তোমারই উদরে পয়দা নবী মোস্তফায়। তুমিই স্বার্থক নারী, তুমিই স্বার্থক জননী। আমরা সকলেই তোমাকে শ্রদ্ধার সাথে সালাম করি। প্রথম মানুষ আদম (আঃ) থেকে শুরু করে সকল নবী রাসূলগণ এই মহানবীর আগমনের অপেক্ষায় বৎসরের পর বৎসর কাটিয়ে দিয়েছেন। মূসা (আঃ)-এর তাওরাতে এই মহানবীর শরীরের গঠন, রূপ, রং, আচার-আচরণ এমনভাবে লেখা হয়েছে, যে ইহুদী আলেমই সে বর্ণনা একবার পড়েছে, সেই এই শিশুকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়েছে। যখনই কোন বিপদ আসত মহামারী দেখা দিত, এমন কি মহা প্লাবনে পড়ে নূহ (আঃ), নমরূদের অগ্নিকুণ্ডে পড়ে ইব্রাহীম (আঃ), দুরারোগ্য ব্যাধিতে পড়ে আইয়ুব (আঃ), মাছের পেটে ইউনুস (আঃ), ফেরাউনের আক্রমণে মূসা (আঃ) সকল নবী ওলী যে নামটি নিয়ে আল্লাহর দরবারে মুক্তি কামনা করেছিলেন, তিনিই আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। নাসারাগণ সে মহান শিশুকে পাওয়ার জন্য ঈসা (আঃ)-এর কাছে তার নাম জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বললেন তার নাম হচ্ছে মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আরব অনারব সবাই এখন অপেক্ষার সময় গুনছে কবে আসবেন মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ তারিখ রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার রাত্রে, কেউ বিবি আমেনার কাছে না থাকায় তিনি একটু চিন্তিত হয়ে পড়লেন। তার একটু তন্দ্রা আসল তিনি দেখলেন হঠাৎ তার গৃহখানি উজ্জ্বল আলোকময় হয়ে উঠেছে। কেউ তাকে পাখা দ্বারা বাতাস করতেছে, কেউ তার জন্য পানি আনতেছে, কেউ তাকে শরবত বানায়ে পান করাইতেছে। তাদের পরিচয় দিয়ে একজন বললেন, আমি ইব্রাহীম (আঃ)-এর স্ত্রী বিবি হাজেরা। আর একজন বললেন, আমি ফেরআউনের স্ত্রী বিবি আছিয়া, আর একজন বললেন,

আমি ঈসা (আঃ)-এর মাতা বিবি মরিয়ম। এই সব মহিয়সী পূণ্যবতী, মহিলাগণ বললেন, হে ভাগ্যবতী আমেনা। আপনার চিন্তার কোন কারণ নেই। আমরা আপনার পরিচর্যার জন্য এসেছি। ক্রমে রাতের আঁধার দূর হয়ে ভোরের আলো ফুটে উঠতেছে। চারিদিকে শুধু আনন্দের ঢেউ বয়ে যেতেছে। ফজরের সময় আমেনার ঘর খানা হঠাৎ বেহেশতী নূরে আলোকিত। চারদিক থেকে কেবল ভেসে আসছে সালামের আওয়াজ। বেহেশতী সুরে কাহারা যেন বলিতেছে।

ছালামুন ইয়া রাসূলাল্লাহ আলাইকুম,
ছালামুন ইয়া হাবিবাল্লাহ আলাইকুম।
দরুদ ও সালাম তোমায় ইয়া রাসূলাল্লাহ।
আল্লাহর পরম বন্ধু হাবিবুল্লাহ।
দরুদ সালাম তোমায় শামছুদ্দুহা,
পূর্ণিমার চাঁদ তুমি বাদরুদ্দুজা।
দরুদ সালাম তোমায় সিরাজাম মুনিরা,
দ্বীনের উজ্জল বাতি বাশীরাওঁ ওয়া নাজিরা।
দরুদ সালাম তোমায় মদীনার ফুল
সৌন্দর্য্যে অতুল তুমি সুগন্ধির মূল।
দরুদ সালাম তোমায় আমিনার মনি,
জ্ঞানে গুণে পূর্ণতায় সম্মানের খনি।
দরুদ সালাম তোমায় মরুর দুলাল,
জ্বালিলে মরুর বুকে দ্বীনের মশাল।
দরূদ সালাম তোমায় আধাঁরের বাতি,
পথিকের পথ-দিশা ব্যথিতের সাথী।
দরুদ সালাম তোমায় বিশ্বের জ্ঞানী
সত্যজ্ঞান তত্ত্বজ্ঞানে আমরা সব ঋণী।
দরুদ সালাম তোমায় বিশ্বের সম্মান,
হেরার গুহায় পেলেন আলোর সন্ধান।
দরুদ সালাম তোমায় বিশ্বের কল্যাণ,
সত্য ভাষী নম্রভাষী অমূল্য রতন।
দরুদ সালাম তোমায় করুণার আঁধার,
পিলাবে হাশরে তুমি হাউজে কাউসার।
দরুদ সালাম তোমায় পাপীদের শাফী,
তব উছিলায় যত গোনাহগার মাফী।
দরুদ সালাম তোমায় জীবনের হাল,
অসীম সাগরে তুমি তরণীর পাল।

দরুদ সালাম তোমায় পৌঁছে নিয়ন্তর,
উম্মতের জন্য সদা কাঁন্দিছে অন্তর।
দরুদ সালাম তোমায় মোদের প্রিয়জন,
আশা আছে, ভাষা নেই কি দিব অধম।
দরুদ সালাম মোদের মণিমুক্তার হার,
দিলাম তোমায় ওগো নবী প্রীতি উপহার।

08/08/2025
🟧 মা আমেনার জীবনী এজগতের সর্বশ্রেষ্ঠ রত্ন প্রসব করে নিজকে সবার উর্ধ্বে প্রতিষ্ঠিত সেরা গৌরবে ভূষিত করেছেন যিনি তিনিই হলে...
07/08/2025

🟧 মা আমেনার জীবনী
এজগতের সর্বশ্রেষ্ঠ রত্ন প্রসব করে নিজকে সবার উর্ধ্বে প্রতিষ্ঠিত সেরা গৌরবে ভূষিত করেছেন যিনি তিনিই হলেন মা আমেনা। সারাজাহানের শ্রেষ্ঠ মানব, আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি সমস্ত মাখলুকাত সৃষ্টির উছিলা সৃষ্টিকুলের শান্তি ও রহমত, নবী রাসূলগণের মাথার মুকুট মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পবিত্র উদরে ধারণ করে বিশ্ব মানবকুলের সামনে তুলে দিয়ে যে কৃতিত্ব সাধন করেছেন, তার তুলনা নেই। এই ক্ষেত্রে বিবি আমেনার গৌরব সকল নারীর উর্ধ্বে। মক্কার কোরায়েশগণ ছিল, ইব্রাহীম (আঃ)-এর পুত্র ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশধর। তারা পিতা-পুত্র দুইজনেই পবিত্র কাবাগৃহ নির্মাণ করেছিলেন। এই গৌরবজনক কাজ যাহাদের দ্বারা হয়েছিল, আরবরা তাহাদের বংশধারার লোকগণকে ভক্তি শ্রদ্ধা করা কর্তব্য হিসাবে ধরে নিয়েছিল। মা আমেনার পিতার নাম ওয়াহাব, তিনিও কোরায়েশ বংশের লোক ছিলেন। খোযাআ কবিলা যখন কোরায়েশদের উপরে হামলা চালায়, সেই সময় তার পূর্ব পুরুষ মদীনায় গিয়ে বসবাস শুরু করেছিল। ওয়াহাবের স্ত্রী গর্ভবতী হলেন। তখন ওয়াহাব একদা স্বপ্নে দেখেন, এক দরবেশ এসে তাকে লক্ষ্য করে বলেন, ওয়াহাব! তুমি বড় ভাগ্যবান ভবিষ্যতে এমন এক মহাপুরুষ দুনিয়াতে আগমন করবেন, যিনি হবেন বিশ্বমানব কুলের জন্য রহমত স্বরূপ মুক্তিদূত। সেই মহা পুরুষেরই গর্ভধারিনী হবেন তোমার ঔরসজাত কন্যা, তার নাম রাখিও আমেনা। যথা সময়ে তাহাদের গৃহ আলো করে ফুটফুটে চন্দ্রের মত একটি কন্যা সন্তান আগমন করল স্বপ্নের নির্দেশ অনুযায়ী তার নাম রাখলেন, আমেনা। ইহার পূর্বে মক্কা মদীনায় কোন লোকই কোন দিন তাদের কন্যার নাম আমেনা রাখে নাই। এই নামটি ছিল সমগ্র আরবে সম্পূর্ণ নতুন নাম। শৈশব কাল হইতেই আমেনা শান্ত মিষ্টভাষিণীও সত্যবাদিনী। বালিকা আমেনাকে আত্মীয় পাড়া-প্রতিবেশী সকলেই স্নেহ করতো। বিবি আমেনা যখন ছয় কি সাত বৎসরের বালিকা, তখন একদা এক বান্ধবীর বাড়ী বেড়াইতে যাওয়ার পথে, একটি স্বর্ণমুদ্রা দেখে তুলে নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেলেন, উহা হাতে লওয়া আমার ঠিক হয় নাই। তবে ঐখানে রেখে দিলে হয়ত উহা মালিকের হাতে না পড়ে অন্যের হাতেও পড়ে যেতে পারে। তার চেয়ে অনুসন্ধান করে দেখা উত্তম, অতঃপর আমেনা দীনারটি হাতের মুঠায় করে তার বান্ধবীর নিকট গিয়ে বলেন, দেখতো বোন! আমি পথে এই দীনারটি পেয়েছি, এখন কিভাবে ইহার প্রকৃত মালিককে দিতে পারি? ইহা শুনে তার বান্ধবী বললো, আরে তুমি ইহা নিয়ে এত ব্যস্ত কেন, চলো আমরা উহা দিয়া কতগুলি খেলনা কিনি। আমেনা বললেন, না বোন আমি উহার মালিককে খুজে বের করে তাকে উহা ফিরায়ে দিব। এই বলে পথে বের হয়ে যেই জায়গায় দিনারটি পেয়েছেন, সেই জায়গায় দাঁড়ায়ে রহিলেন। এর মধ্যে দেখেন এক বৃদ্ধ লাঠি ভর দিয়ে এসে পথের উপরে কি যেন খুঁজতেছে। আমেনা বললেন, চাচাজী! আপনি কি খুঁজছেন? বৃদ্ধ লোকটি বললো মা, আমার একটি স্বর্ণদীনার কোনখানে যেন পড়ে গিয়েছে। তা না পেলে আমার গৃহের সবাইকে অনাহারে মরতে হবে। আমেনা বলেন দেখুন তো এই দীনারটি আপনার কিনা? এই বলে দীনারটি তার হাতে দিলেন। বৃদ্ধ বলে উঠলো, হাঁ মা, এই দীনারটিই আমার। এই বলে কেঁদে কেঁদে প্রাণ ভরে আমেনার জন্য দোয়া করলেন।

আস্তে আস্তে আমেনা যুবতী হলেন। আমেনা তার পিতাকে বলেন, আব্বাজান আমি যখন কোন নির্জন স্থানে যাই, তখন আওয়াজ শুনি হে আবদুল্লাহর স্ত্রী তোমাকে ধন্যবাদ। হে রাসূলের জননী, তোমাকে সালাম। হে নবীদের সরদারের জননী! তোমাকে সুসংবাদ। ইহা শুনে তার পিতা মনে করলেন, ইহা জ্বিনের আছর, তাই তিনি ওঝা-ফকির এনে ঝার ফুঁক করাইলেন, তাহাতে কোন কাজ হলো না। আবদুল মুত্তালিব আর ওয়াহাব এর মধ্যে পূর্ব হতেই পরিচয় ছিল। যদিও তাহাদের একজন মক্কা আর অন্যজন মদীনার অধিবাসী তবু তাহারা উভয়ে একই বংশীয় ছিলেন। ওয়াহাব হজ্জ উপলক্ষে মক্কায় গিয়ে আবদুল মুত্তালিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। বহুদিন পর দুই বন্ধুর সাক্ষাৎ হওয়ায় অনেক বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা হলো। ওয়াহাব বললেন, আমার কন্যা আমেনার জন্য একটা যোগ্যপাত্র পাওয়া যাইতেছে না, যে সব প্রস্তাব আসছে, উহার কোনটাই আমার মনমত হয় নাই। ইহা শুনে আবদুল মুত্তালিব বললেন, তবে তোমার কন্যাকে আমার পুত্র আবদুল্লাহর কাছেই বিবাহ দাও। ওয়াহাব এই কথা শুনে মনে করলেন, নিশ্চয়ই এই স্থানেই আমেনার বিবাহ হইবে। ইহাতে সন্দেহ নেই। কেননা আমেনা বলেছিল, আব্বা আমি যখন কোন নির্জন স্থানে যাই তখন শুনি কে যেন সবাই আমাকে বলে, হে আবদুল্লাহর স্ত্রী! আবদুল্লাহ এত সুন্দর পুরুষ ছিল, যে তাকে আরবের শ্রেষ্ঠ যুবক বলা হতো, কেননা তার কপালে নূরে মোহাম্মদী চমকাইতেছিল। তিনি যখন রাস্তায় বের হতেন তখন দেশের শ্রেষ্ঠ সুন্দরী নারীগণ তাকে দেখার জন্য নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য, মূল্যবান পোষাক অলংকার পরে রাস্তার পার্শ্বে পায়চারি করত, তিনি ফিরেও তাকাতেন না। শতাধিক শ্রেষ্ঠ রূপসী যুবতী তার সহিত বিবাহ বসতে ব্যাকুল হয়েছিল। তাহাদের আশা ব্যর্থ হওয়ায় হৃদয়ের জ্বালায় তাহারা সকলেই আত্মহত্যা করেছিল। ওয়াহাব আবদুল মুত্তালিবের প্রস্তাব আনন্দে গ্রহণ করলেন। বিবাহের তারিখ ঠিক হলো। উভয় পক্ষের অভিভাবকগণ আনন্দের সাথে পাত্র-পাত্রী নিয়ে খানায়ে কা'বায় উপস্থিত হয়ে বিবাহ অনুষ্ঠান সমাধা করলেন। আমেনা ও আবদুল্লাহ উভয়ে ছিলেন রূপবান ও রূপবতী, বুদ্ধিমান ও বুদ্ধিমতি। তাহারা উভয়ে মধুময় জীবন যাপন করে যাইতেছিলেন। বিবি আমেনা বৃদ্ধ শ্বশুড়-শাশুড়ীকে পিতামাতার ন্যায় ভক্তি শ্রদ্ধা করতেন। তাহারাও আমেনাকে কন্যার মত স্নেহ আদর করতেন। কয়েক মাস পর আমেনা অন্তঃস্বত্তা হলেন আবদুল মুত্তালিব ইহা শুনে আনন্দিত হলেন। নূরে মোহাম্মদী আবদুল্লাহর কপাল হইতে আমেনার উদরে স্থান লাভ করল। মহানবী আমেনার গর্ভে আসার সাথে সাথেই আবদুল্লাহর রূপ সৌন্দর্য্য কমে গেল। আর বিবি আমেনার রূপ সৌন্দর্য্য শতগুণে বৃদ্ধি পেল। হঠাৎ মরুভূমির বাগানগুলি তরু তাজা হয়ে তার মাঝে ফুল ফুটে উঠিল। ভূমিগুলি ঘাসে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। মেষগুলি বেশী দুধ দিতে লাগলো। ঠাণ্ডা শীতল বাতাস বহিতে লাগলো। চারিদিকে এক নতুন আনন্দের ঢেউ আমেনার চোখে ভেসে উঠলো। এক রাত্রে বিবি আমেনা স্বপ্নে দেখলেন, কে যেন তাকে বলছে- হে আমেনা! তোমার গর্ভে যে মহা মানব আশ্রয় নিয়েছেন, তিনি সারা জাহানের নবীকূল শিরমণি। আর এক রাত্রে তিনি স্বপ্নে দেখলেন, একটি বৃক্ষ ছায়ায় তিনি বসে আছেন, এমন সময় তার কোল হতে একটি নূরের ঝলক উঠে চারিদিকে ছড়াইয়া উহার আলোকে সমগ্র বিশ্বজগত আলোকিত হয়ে উঠেছে। গর্ভ অবস্থায় তিনি যখন একাকী গৃহে শায়িত থাকতেন, তখন জাগ্রত অবস্থায় তিনি হঠাৎ এইরূপ আওয়াজ শুনতেন, হে জগতের শ্রেষ্ঠ জননী, হে মহানবীর জননী! সালাম গ্রহণ করুন। বিবি আমেনার গর্ভ হওয়ার পর আল্লাহ পাক তার পবিত্র অঙ্গে এমন এক খোশবু প্রদান করেছিলেন, সব সময়ই তার অঙ্গ হতে সুঘ্রাণ বের হতো। তিনি নিজেও নিজের অঙ্গ হতে সুঘ্রাণ পেতেন। তিনি আর একদিন স্বপ্নে দেখলেন, এক বুযুর্গ পুরুষ তাকে বললেন, হে আমেনা! তোমার গর্ভে যে সন্তান অবস্থান করতেছে, তিনি হবেন রাসূল গণের সরদার, সারা দুনিয়ার রহমত স্বরূপ। ভূমিষ্ট হওয়ার পর তুমি তার নাম রাখিও মোহাম্মদ। বিবি আমেনা বলেন, আমার গর্ভ কালীন সময় আমি প্রায় প্রতি রাত্রেই এইরূপ একটা না একটা অদ্ভুত আশ্চর্য্য স্বপ্ন দেখে বুঝতে পারলাম যে, আমার সন্তানের জন্মের ফলে ভবিষ্যতে সারা দুনিয়ার একটা বিরাট পরিবর্তন হবে। বিবাহের বার মাস পরে আবদুল্লাহ ব্যবসার উপলক্ষ্যে সিরিয়া গমন করার সিদ্ধান্ত নিলেন, কেননা, আমেনার স্বপ্নগুলো শুনে তিনি মনে করলেন। যেই মহা মানব আমার ঘরে আসতেছেন, তার জন্য কিছু রোজগার করা দরকার। ঐ সময় বিবি আমেনা ছিলেন ছয় মাসের অন্তঃস্বত্তা। আবদুল্লাহ আমেনার কাছ হতে বিদায় নিয়ে সিরিয়া রওয়ানা হলেন। হায় কে জানিত যে, আবদুল্লাহ আমেনার কাছ হতে চির বিদায় হয়ে যাইতেছেন। আবদুল্লাহ কয়েকদিন ব্যবসার কাজ শেষ করে আসার সময় মদিনায় (ইয়াসরেবে) তার মামার বাড়ী উঠেছিলেন। সেখানে তিনি ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত হলেন। এই ইয়াসরেবেই ছিল তার শ্বশুড় ওয়াহাবের বাড়ী তাই তার মামা এবং শ্বশুড় তার চিকিৎসায় ত্রুটি করলেন না, ঠিক মত চিকিৎসা করালেন। তবু তিনি মক্কায় আসিবার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়লেন। এই সংবাদ শুনে আবদুল মুত্তালিব ও বিবি আমেনা চিন্তায় অস্থির হয়ে আবদুল্লাহর বড় ভাই হারিসকে মদীনায় পাঠায়ে দিলেন। কিন্তু কে জানিত যে, আবদুল্লাহ তার পিতৃ ভূমি হতে এবার চিরবিদায় নিয়ে এসেছিল। মামার গৃহেই তিনি ইন্তেকাল করেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন) সে সময় তার বয়স হয়েছিল ২৫ বৎসর।

(২নং পর্ব আসিতেছে ইনশাআল্লাহ)

আল্লাহ, আদম এবং মহম্মদ (সঃ) — এই তিনজনের দেহতত্ত্ব একটি গভীর আধ্যাত্মিক (মারফতি ও সুফি ধারার) দর্শনের বিষয়। এখানে আমরা ...
07/08/2025

আল্লাহ, আদম এবং মহম্মদ (সঃ) — এই তিনজনের দেহতত্ত্ব একটি গভীর আধ্যাত্মিক (মারফতি ও সুফি ধারার) দর্শনের বিষয়। এখানে আমরা প্রতীক ও আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যার মাধ্যমে দেহতত্ত্বের আলোকে তাদের সম্পর্ক এবং স্থান ব্যাখ্যা ।

🔷 ১. আল্লাহ ও দেহতত্ত্ব

আল্লাহ সরাসরি কোনো দেহে সীমাবদ্ধ নন, তিনি "লা শরীক লাহু", "সূবহানাহু ওয়া তাআলা" — তিনি অদৃশ্য, বর্ণনাতীত, রূপাতীত। কিন্তু দেহতত্ত্ব মতে, আল্লাহর নূর বা রুহ সব দেহে প্রবাহিত।

📜 "আল্লাহ নিজের রূহ ফুঁকেছেন" (সূরা সাদ, আয়াত ৭২)

➡️ অর্থাৎ, মানুষের দেহে আল্লাহর রূহের ঝলক আছে।

👉 দেহতত্ত্ব মতে:
দেহ হচ্ছে মসজিদ, আর আল্লাহ তার ভেতরের আলো।
আল্লাহকে বাহিরে খোঁজা নয়, অন্তর্দেহে খুঁজতে হয় — নফস, রুহ, কলব, সির, খফি, আখফা – এই সাত লতিফায়।

🔷 ২. আদম (আঃ) ও দেহতত্ত্ব

আদম (আঃ) হলেন প্রথম মানব এবং তাঁকে আল্লাহ নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন।

📜 "তোমার প্রতিপালক ফিরিশ্তাদের বলেছিলেন, আমি মাটি থেকে এক মানব সৃষ্টি করবো" (সূরা ছাদ, আয়াত ৭১)

➡️ দেহতত্ত্ব মতে:
আদমের দেহ = মানবদেহের মূলরূপ
তিনি প্রথম যে দেহ ধারণ করেন, তা হলো "আদমী রূহ", যার মাধ্যমে মানবজাতি দেহে রূহ পায়।

👉 দেহতত্ত্বে বলা হয়,
প্রত্যেক দেহে এক “আদমি সার” থাকে — যাকে “ফিতরতি আদম” বলে। যদি সেই সার জাগ্রত হয়, তাহলে মানুষ নিজের দেহের মধ্যেই “আল্লাহর জ্ঞান” উপলব্ধি করতে পারে।

🔷 ৩. মহম্মদ (সঃ) ও দেহতত্ত্ব

হযরত মুহাম্মদ (সঃ) শুধুই বাহ্যিক দেহধারী ব্যক্তি নন, বরং দেহতত্ত্ব মতে, তিনি “নূরে মোহাম্মদী”।

📜 “আমি ছিলাম নবী, যখন আদম ছিলেন কাঁচা মাটিতে” — হাদিস

➡️ দেহতত্ত্ব মতে:
নূরে মোহাম্মদী হচ্ছে সেই আধ্যাত্মিক আলো, যা সমস্ত নবী, আউলিয়া, মুমিনের অন্তরে ঝলক দেয়।

👉 অর্থাৎ,
মোহাম্মদ (সঃ) হলেন সেই আধ্যাত্মিক আদর্শ, যাঁর পথ অনুসরণ করে আত্মা নিজ উৎসে ফিরে যায়।

🌀 দেহতত্ত্বে সংক্ষিপ্ত মিলনচিত্র:

দেহতত্ত্ব উপাদান আধ্যাত্মিক প্রতীক ব্যাখ্যা

দেহ (জমিন) আদম (আঃ) মাটি থেকে সৃষ্টি
রূহ (আলো) আল্লাহ আল্লাহর রূহ-নূর
নূরের পথ মোহাম্মদ (সঃ) রাসূলের পথেই নূরের বর্ণ

🎶 দেহতত্ত্বভিত্তিক কিছু পংক্তি (গান রূপে)

> আল্লাহ রূপে আলো ঝলমল, দেহের মাঝে বয়ে চলে।
আদমের দেহে সূচনা হলো, রূহের সুরে জীবন জ্বলে।
নূরের মিছিলে মোহাম্মদ নাম, পথ দেখায় অন্তর তলে।

📌 উপসংহার:

আল্লাহ হচ্ছেন সৃষ্টিকর্তা ও আলো, আদম হলেন মানবদেহের সূচনা, আর মোহাম্মদ (সঃ) হলেন সেই রূহানি নূর যার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর সন্ধান পায়। এই তত্ত্ব আমাদের শেখায়:
👉 নিজের দেহে খুঁজো আল্লাহকে, বুঝো রূহের কান্না, তাহলেই মিলবে প্রেম ও পরম সত্য।

ধৈর্যের মূর্তপ্রতীক ছিলেন আইয়ুব (আ.)। বছরের পর বছর শারীরিক ও আর্থিক কষ্টে ভুগেও মহান আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ কৃতজ্ঞ ছিলেন...
07/08/2025

ধৈর্যের মূর্তপ্রতীক ছিলেন আইয়ুব (আ.)। বছরের পর বছর শারীরিক ও আর্থিক কষ্টে ভুগেও মহান আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ কৃতজ্ঞ ছিলেন তিনি।
কোরআন থেকে শুধু এতটুকু জানা যায় যে তিনি কোনো দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে সবর করে যান এবং অবশেষে আল্লাহর কাছে দোয়া করে রোগ থেকে মুক্তি পান। এই অসুস্থতার দিনগুলোতে তাঁর সন্তান-সন্ততি, বন্ধু-বান্ধব সবাই উধাও হয়ে গিয়েছিল। এরপর আল্লাহ তাআলা তাকে সুস্থতা দান করেন। মহান আল্লাহ তাঁকে সন্তান ও সম্পদ দিয়েছিলেন, অসুস্থতার পাশাপাশি সেগুলোও ছিনিয়ে নেন।

কিন্তু তাঁর স্ত্রী ছিলেন অত্যন্ত স্বামীভক্ত। তিনি সারাক্ষণ তাঁর সেবা করতেন। এমনকি একপর্যায়ে পরিবারের খরচ মেটাতে তিনি অন্য মানুষের বাসায় কাজ করতেন। অন্যদিকে ধীরে ধীরে রোগ-ব্যাধি, দুঃখ-কষ্ট বাড়তে থাকে আইয়ুব (আ.)-এর।

বিপদ যত বাড়ে, তিনি তত বেশি আল্লাহকে ডাকতে থাকেন, যেভাবে শীত যত বাড়ে মানুষ তত বেশি শীতবস্ত্র দিয়ে নিজেকে জড়িয়ে রাখে। আল্লাহর জিকির দিয়ে তিনি তাঁর দেহ ও অন্তর তরতাজা রাখেন।
বিপদে ধৈর্য ধারণ এবং আল্লাহর পরীক্ষা হাসিমুখে বরণ করে তিনি ‘সবরকারী’ ও ‘চমৎকার বান্দা’ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর ধৈর্যের পরম পরাকাষ্ঠা দেখে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি (আল্লাহ) তাকে ধৈর্যশীল হিসেবে পেয়েছি।’ (সুরা : সাদ, আয়াত : ৪৪)

বছরের পর বছর তিনি অসুস্থ শরীর নিয়ে সন্তানহীন, সঙ্গীহীন ও সম্পদহীন হয়ে কোনো এক প্রান্তরে একান্তে অবস্থান করেন।

আর মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকেন। তাঁর দোয়ার ভাষ্য কোরআনে এভাবে এসেছে : ‘আর স্মরণ করো আইয়ুবকে, যখন সে তার রবকে ডেকেছিল, (বলেছিল) আমি তো দুঃখ-কষ্টে পড়েছি (দুঃখ-কষ্ট আমাকে স্পর্শ করেছে), আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু!’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৮৩)
দোয়ার ধরন অত্যন্ত নমনীয় ও মার্জিত; যথাযথ আদব ও শিষ্টাচারপূর্ণ। নেই অভিযোগ, নেই অনুযোগ। ‘কষ্ট আমাকে স্পর্শ করেছে’—কঠিন বিপদেও মধুময় আবেদন। আবেদনের ভেতর ভাব আছে, মর্মস্পর্শী আবেগ আছে, আছে কষ্টের কথাও। তবু কোনো আবদার নেই, চাওয়া-পাওয়া নেই। শুধু এ কথা বলে থেমে যাচ্ছেন : ‘আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’

আল্লাহর বিরুদ্ধে কোনো নালিশ নেই, কোনো জিনিসের দাবি নেই। তাতেই খুশি হয়ে মহান আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করেন। তাঁর দোয়া কবুল করে আল্লাহ বলেন, ‘আমি তার ডাকে সাড়া দিলাম। আর তার যত দুঃখ-কষ্ট ছিল তা দূর করে দিলাম এবং তার পরিবার-পরিজন তাকে দিয়ে দিলাম। তাদের সঙ্গে তাদের মতো আরো দিলাম আমার পক্ষ থেকে রহমত এবং ইবাদতকারীদের জন্য উপদেশস্বরূপ।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৮৪)

কিভাবে দূর হলো অসুখ—সে বিষয়ে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘(আমি তাকে বললাম,) তুমি তোমার পা দিয়ে (ভূমিতে) আঘাত করো। (ফলে পানি নির্গত হলো এবং দেখা গেল যে) এটি গোসলের জন্য ঠাণ্ডা পানি ও (পানের জন্য উত্তম) পানীয়।’ (সুরা : সাদ, আয়াত : ৪২)

এটি ছিল অলৌকিক ঝরনা। ইতিপূর্বে শিশু ইসমাঈল (আ.)-এর ক্ষেত্রে এমনটা ঘটেছে। তাঁর পদাঘাতে জমজমকূপ তৈরি হয়েছিল। এটা নবীদের মুজিজা। এটা নবীদের বরকত। নবী-রাসুলদের পদতলে মহান আল্লাহ বরকত ঢেলে দেন। সেই বরকত থেকে সিক্ত হয় প্রকৃতি ও পৃথিবী। এই বরকতের পানি দিয়ে আইয়ুব (আ.) গোসল করেন। তিনি সুস্থ হয়ে যান। একে একে সম্পদ ফিরে পান এবং সন্তান লাভ করেন।

আইয়ুব আলাইহিস সালাম তাঁর প্রাকৃতিক কাজ সারতে বের হতেন। কাজ সারার পর তাঁর স্ত্রী তার হাত ধরে নিয়ে আসতেন। একদিন তিনি প্রাকৃতিক কাজ সারার পর স্ত্রীর কাছে ফিরতে দেরি করছিলেন। আগমনে দেরি দেখে স্ত্রী এগিয়ে যান। ততক্ষণে অলৌকিক ঝরনায় গোসল করে আইয়ুব (আ.) সম্পূর্ণ সুস্থ ও সুন্দর হয়ে যান। তাঁর স্ত্রী তাকে দেখে বলেন, হে মানুষ, আল্লাহ আপনার ওপর বরকত দিন, আপনি কি ওই অসুস্থ আল্লাহর নবীকে দেখেছেন? আল্লাহর শপথ, যখন তিনি সুস্থ ছিলেন তখন তিনি দেখতে আপনার মতো ছিলেন। তখন আইয়ুব (আ.) বলেন, আমিই সেই ব্যক্তি। এভাবে তিনি সুস্থ হন।

আইয়ুব (আ.)-এর দুটি উঠান ছিল। একটি গম শুকানোর, অন্যটি যব শুকানোর। মহান আল্লাহ সে দুটির ওপর দুই খণ্ড মেঘ পাঠালেন। এক খণ্ড মেঘ সে গমের উঠানে এমনভাবে স্বর্ণ ফেলল যে সেটি পূর্ণ হয়ে গেল। অন্য মেঘ খণ্ডটি সেটির ওপর এমনভাবে রৌপ্য বর্ষণ করল যে সেটাও পূর্ণ হয়ে গেল। (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ২৮৯৮, মুস্তাদরাকে হাকিম, হাদিস : ৪১১৫)

এভাবে সোনা-রুপায় দানায় তিনি প্রচুর সম্পদের মালিক হয়ে যান। হাদিসের বর্ণনা থেকে আরো জানা যায়, আল্লাহর পক্ষ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে স্বর্ণের পঙ্গপাল আইয়ুব (আ.)-এর কাছে আসে। তিনি সেগুলো সংগ্রহ করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, একবার আইয়ুব (আ.) কাপড় খুলে (অর্থাৎ বাথরুম ছাড়াই খোলা স্থানে) গোসল করছিলেন, এ অবস্থায় একঝাঁক স্বর্ণের পঙ্গপাল তাঁর ওপর পড়তে শুরু করে, তিনি সেগুলো মুঠি মুঠি তার কাপড়ে জমা করছিলেন। তখন মহান আল্লাহ তাঁকে ডাক দিয়ে বলেন, হে আইয়ুব, আমি কি তোমাকে যা দেখছ তা থেকেও বেশি দিয়ে ধনী বানাইনি? জবাবে আইয়ুব (আ.) বলেন, ‘ইয়া রাব্বি, লা গিনা বি আন বারাকাতিকা (অর্থ : হে রব, তবে আপনার দেওয়া বরকত থেকে আমি কখনো মুখাপেক্ষীহীন হবো না।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৪৯৩)

পুরো ঘটনা থেকে জানা যায়, বড় পরীক্ষায় আছে বড় পুরস্কার। সম্পদ ও সন্তান হারিয়ে কঠিন অসুস্থ হয়েও জিকির, ইবাদত ও আমল থেকে বিচ্যুত হননি আইয়ুব (আ.)। আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হননি। মার্জিত ভাষায় অভিযোগহীন, বিরামহীন তিনি দোয়া করেন। মহান আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করেন। সবরের ফল দুনিয়ায় দিয়ে দেন। সুস্থতা, সম্পদ ও সন্তান—সব কিছু ফিরিয়ে দেন। মুমিনদের জন্য এই ঘটনায় আছে বিশেষ বার্তা।

"হযরত খাজা কালু শাহ্ রহঃ এর পবিত্র মাজার শরীফ" উত্তর সলিমপুর কালু নগর সীতাকুন্ডু চট্টগ্রাম বাংলাদেশ। Hazrat Khaza Qalu S...
06/08/2025

"হযরত খাজা কালু শাহ্ রহঃ এর পবিত্র মাজার শরীফ" উত্তর সলিমপুর কালু নগর সীতাকুন্ডু চট্টগ্রাম বাংলাদেশ।
Hazrat Khaza Qalu Shah Rh. Mazar Sharif. North Salimpur Sh*ttakundu Chittagong Bangladesh.

জান্নাতের সর্দার ইমাম আল হাসান ইবনু 'আলীর শাহাদাৎ দিবস উপলক্ষে প্রবন্ধ: 🩸কেন জান্নাতের সর্দার ইমাম হাসান ইবনু 'আলী (عَلَ...
06/08/2025

জান্নাতের সর্দার ইমাম আল হাসান ইবনু 'আলীর শাহাদাৎ দিবস উপলক্ষে প্রবন্ধ:
🩸কেন জান্নাতের সর্দার ইমাম হাসান ইবনু 'আলী (عَلَيْهِ ٱلسَّلَامُ) কে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া উমাইয়া রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকারী শাসকের জন্য জরুরী হয়ে পড়েছিল 🩸
প্রথমত: এটি জানতে ফিরে যেতে হবে হাসান - মুয়াবিয়া সুলাহ এর শর্তাবলীতে:
✍️ ইমাম ইবনু আব্দিল বার رحمه الله এ ব্যাপারে ইজমা (ঐকমত্য) বর্ণনা করেছেন যে হাসান -মুয়াবিয়া সুলাহ (সন্ধিচুক্তির) শর্তগুলি সকলের জানা ছিল:
তিনি বলেন:
ولا خلاف بين العلماء أن الحسن إنما سلم الخلافة لمعاوية حياته لا غير، ثم تكون له من بعده، وعلى ذلك انعقد بينهما ما انعقد في ذلك، ورأى الحسن ذلك خيرًا من إراقة الدماء في طلبها، وإن كان عند نفسه أحق بها
[الاستیعاب 1/387]
"বিদ্বানদের মধ্যে এ ব্যাপারে কোনো মতবিরোধ নেই যে হাসান শুধুমাত্র মুয়াবিয়ার জীবদ্দশাতেই খিলাফত হস্তান্তর করেছিলেন, এবং মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পরে এটি তাঁর (হাসানের) কাছে ফিরে আসবে- এই শর্তের ভিত্তিতে তাদের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। হাসান (উভয় পক্ষের মুসলিমদের) রক্তপাতের চেয়ে এটিকে উত্তম মনে করেছিলেন, যদিও তিনি নিজেকেই খিলাফাতের জন্য অধিকতর যোগ্য মনে করতেন।" [আল-ইস্তিয়াব, ১/৩৮৭]
মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর হাসান খলীফা হবেন এই শর্তটি কেবলমাত্র একাধিক সহীহ সনদেই প্রমাণিত শুধু তা নয়, বরং জীবনীকার এবং আলিমদের দ্বারা সর্বসম্মতভাবে গৃহীত। এ কারণেই প্রথম যুগের আলিমদের থেকে এর বিরোধী কোন বক্তব্য পাওয়া যায় না।

সমস্যা হল বয়স, ইমাম হাসান যখন সুলাহ করে খিলাফাত মুয়াবিয়াকে ছেড়ে দেন তখন তাঁর বয়স ছিল প্রায় ৩৮, মুয়াবিয়া তাঁর থেকে প্রায় ২০ বছর বড় ছিল (৫৮ বছর)। মুয়াবিয়া ২০ বছর শাসন করে, তার মৃত্যু ৭৮ বছর বয়সে হয়, সে সময় হাসান বেঁচে থাকলে বয়স হত মাত্র ৫৮ বছর।
কাজেই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় মৃত্যু হলে সন্ধির শর্ত অনুযায়ী মুয়াবিয়া কখনোই ইয়াযীদকে পরবর্তী শাসক হিসেবে নিযুক্ত করে যেতে পারত না, খিলাফাত আবার বনু হাশিমে হাসান ইবনু 'আলীর কাছে ফেরত আসত, উমাইয়া অভিশপ্ত রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আগেই তা খতম হয়ে যেত।
তাই হাসানকে বিষ প্রয়োগে সরিয়ে দেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছিল উমাইয়াদের জন্য। এর জন্য তাঁকে পরবর্তী ৭ বছরে কয়েকবার বিষ প্রয়োগ করা হয়, শেষ পর্যন্ত মারাত্মক বিষাক্ত বিষের প্রভাবে হাসান ইবনু আলী (عَلَيْهِ ٱلسَّلَامُ) ৪৫ বছর বয়সেই শাহাদাৎ বরন করেন।

🩸বিষপ্রয়োগ ছিল উমাইয়া শাসকদের দ্বারা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্মূল করার বিশেষ হাতিয়ার যা তারা তাদের রাজত্বকালের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বারবার ব্যবহার করে। এমনকি নিজ বংশের নেককার শাসক উমার ইবনু আব্দুল 'আযীয পর্যন্ত এই ক্ষমতা লিপ্সুদের বিষ প্রয়োগে নিহত হন৷ এ নিয়ে পরবর্তীতে লিখব ইন শা আল্লাহ।
✍️ উমাইর ইবনে ইসহাক থেকে বর্ণিত, যিনি বলেছেন: আমি এক ব্যক্তির সাথে হাসান ইবনু 'আলীকে দেখতে গিয়েছিলাম, তখন হাসান সেই ব্যক্তিকে বলতে শুরু করলেন: "আমাকে যা জিজ্ঞাসা করার জিজ্ঞাসা করে নাও, এর আগে যে তুমি আমাকে আর জিজ্ঞাসা করার জন্য (জীবিত) পাবে না।"
সেই ব্যক্তি বলল: "আমি আপনাকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে চাই না। আল্লাহ আপনাকে সুস্থতা দান করুন।"
হাসান তখন উঠে দাঁড়ালেন, শৌচাগারে গেলেন এবং আমাদের কাছে ফিরে এসে বললেন: "আমি (শৌচাগার থেকে বের হয়ে) তোমাদের কাছে আসিনি যতক্ষণ না আমি আমার যকৃতের একটি টুকরা (মলের সাথে) বের করেছি, যা আমি এই কাঠি দিয়ে উল্টাচ্ছিলাম। আমাকে কয়েকবার বিষ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এইবারের মতো মারাত্মক বিষ কোনটাই ছিল না।"
পরের দিন, আমরা আবার তাকে দেখতে গেলাম.. তারপর হুসাইন এসে তাঁর মাথার পাশে বসে বললেন: "হে আমার ভাই, কে তোমার সাথে এমন করেছে?"
হাসান বললেন: "তুমি কি তাকে হত্যা করতে চাও?" হুসাইন বললেন: "হ্যাঁ।"
হাসান উত্তর দিলেন: "যদি এটি তার দ্বারাই হয়ে থাকে, যাকে আমি সন্দেহ করি, তবে আল্লাহর প্রতিশোধ অত্যন্ত কঠোর।
আর যদি সে নির্দোষ হয়, তবে আমি চাই না যে একজন নির্দোষ ব্যক্তি নিহত হোক।" [মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ, হাদীস #৩৭৩৫৯, সহীহ]
عَنْ عُمَيْرِ بْنِ إِسْحَاقَ، قَالَ: دَخَلْتُ أَنَا وَرَجُلٌ عَلَى الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ نَعُودُهُ , فَجَعَلَ يَقُولُ لِذَلِكَ الرَّجُلِ: «سَلْنِي قَبْلَ أَنْ لَا تَسْأَلَنِي» , قَالَ: مَا أُرِيدُ أَنْ أَسْأَلَكَ شَيْئًا , يُعَافِيكَ اللَّهُ , قَالَ: فَقَامَ فَدَخَلَ الْكَنِيفَ ثُمَّ خَرَجَ إِلَيْنَا ثُمَّ قَالَ: «مَا خَرَجْتُ إِلَيْكُمْ حَتَّى لَفَظْتُ طَائِفَةً مِنْ كَبِدِي أُقَلِّبُهَا بِهَذَا الْعُودِ , وَلَقَدْ سُقِيتُ السُّمَّ مِرَارًا مَا شَيْءُ أَشَدُّ مِنْ هَذِهِ الْمَرَّةِ» , قَالَ: فَغَدَوْنَا عَلَيْهِ مِنَ الْغَدِ فَإِذَا هُوَ فِي السُّوقِ , قَالَ: وَجَاءَ الْحُسَيْنُ فَجَلَسَ عِنْدَ رَأْسِهِ فَقَالَ: يَا أَخِي , مَنْ صَاحِبُكَ؟ قَالَ: «تُرِيدُ قَتْلَهُ؟» قَالَ: نَعَمْ , قَالَ: «لَئِنْ كَانَ الَّذِي أَظُنُّ , لَلَّهُ أَشَدُّ نِقْمَةً , وَإِنْ كَانَ بَرِيئًا فَمَا أُحِبُّ أَنْ يُقْتَلَ بَرِيءٌ»

🩸মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল্লাহ আল হাদ্বরামী বর্ননা করেন, মুহাম্মাদ ইবন আবদুল্লাহ ইবন নুমায়ির আমাদের কাছে বলেছেন, তিনি বলেছেন: ইয়াহিয়া ইবন আবি বুকায়ির আমাদের কাছে বর্ননা করেন, তিনি বলেছেন: শু'বাহ আমাদের কাছে বলেছেন, আবু বকর ইবন হাফস থেকে যে, সা'দ (বিন আবী ওয়াক্কাস) ও আল হাসান ইবন আলী رضي الله عنهما উভয়েই মুয়াবিয়ার সময়ে (শাসন কালে) মৃত্যুবরন করেন এবং তারা (বর্ননাকারী রাবী ও সে সময়ের মানুষেরা) মনে করতেন যে মুয়াবিয়া তাঁদেরকে বিষ দিয়েছে।" [আল মু'জামুল কাবীর, ইমাম আত ত্ববারানী, হাদীস #২৬৯৪, তাহকীকঃ ইমাম আয যাহাবীর মতে সহীহ, এ হাদীসের রিজাল সিক্বাহ]
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْحَضْرَمِيُّ، قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ نُمَيْرٍ، ثنا يَحْيَى بْنُ أَبِي بُكَيْرٍ، ثنا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَفْصٍ أَنَّ سَعْدًا وَالْحَسَنَ بْنَ عَلِيٍّ مَاتَا فِي زَمَنِ مُعَاوِيَةَ، فَيَرَوْنَ أَنَّهُ سَمَّهُ
[الطبراني - المعجم الكبير - باب الحاء - بقية أخبار الحسن بن علي]

ঐতিহাসিকদের মতে, ইমাম হাসানের স্ত্রী, জা'দা বিনতে আশ'আছ স্বর্ন ও ক্ষমতা (আমীরে মুয়াবিয়ার পুত্র পরবর্তী ক্রাউন প্রিন্স ইয়াযীদের সাথে বিয়ের প্রতিশ্রুতির লোভে) হাসানকে বিষ প্রয়োগ করে। কিন্তু পরবর্তীতে মুয়াবিয়া তাকে ইয়াযীদের সাথে বিয়ে দেয়নি, কেননা যে নিজের স্বামী জান্নাতের সর্দারকে বিষ দিতে পারে সে পরবর্তীতেও আরও কোন প্রলোভনে পড়ে ইয়াযীদকে বিষ দিবে না - সেই ভয়ে।

(ইমাম হাসানের শাহাদাতের পর মুয়াবিয়ার সজোরে তাকবীর বলে আনন্দ প্রকাশ তারীখের প্রাচীন কিতাবগুলিতে ও ইমাম হাসানের মৃত্যুতে "ইন্না লিল্লাহ" পড়া সাহাবীকে হাসানের মৃত্যু কি মুসীবত মনে করেন বলে জিজ্ঞাসা করা, এবং হাসানকে জ্বলন্ত কয়লা যা আল্লাহ নিভিয়ে দিয়েছেন বলা ব্যক্তিকে পুরষ্কার প্রদানের সহীহ হাদীস সুনান আবী দাউদ হাদীস #৪১৩১ ও মুসনাদ আহমাদ হাদীস #১৭১৮৯ এ বর্নিত আছে। ফেসবুকে লেখার কলেবর বৃদ্ধির আশংকায় অনুবাদ দেওয়া হলো না। ইনশা আল্লাহ পরবর্তীতে এসব বিস্তারিত লিখব)

অজস্র সলাত ও সালাম বর্ষিত হোক প্রিয় নবীজি ও তাঁর আহলুল বাইতের উপর, জান্নাতের দুই সর্দার ইমাম হাসান ও হুসাইনের উপর।
যারা ইমাম হাসানকে বিষপ্রয়োগ করে, বা তাতে জড়িত ছিল, বা এতে কোনভাবে আনন্দ লাভ করেছিল তাদের উপর বেশুমার লানত বর্ষিত হোক)।

কার্টেসি: ✍️ শু'আইব ইসহাক
[ঈষৎ পরিমার্জিত]

Address

Sakhipur
Dhaka

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when আলোর ভুবন সাহিত্য সংসদ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share