29/06/2025
“সততার পুরস্কার”
ছোট এক গ্রামে থাকত রবিন নামের এক দরিদ্র ছেলে।
তার বাবা একজন কৃষক, মা গৃহিণী।
রবিন পড়াশোনায় খুবই মনোযোগী ছিল।
তবে পরিবারে টানাপোড়েন থাকায় সবসময় স্কুলে যাওয়া সম্ভব হতো না।
একদিন সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে সে একটি মানিব্যাগ কুড়িয়ে পেল।
ব্যাগটি খুব সুন্দর, আর ভেতরে প্রচুর টাকা আর কিছু কাগজপত্র।
রবিন বুঝল এটা কারো গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।
সে কোনো লোভ না করে ব্যাগটি নিকটবর্তী দোকানে নিয়ে যায়।
দোকানদার দেখে বলল, “এটা তো মিজান স্যারের মনে হচ্ছে।”
তারা ব্যাগটি রেখে স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
কিছুক্ষণ পর মিজান স্যার এসে ব্যাগটি দেখে অবাক হয়ে যান।
তিনি বললেন, “এই ব্যাগে আমার মাসের বেতন আর অফিসের কাগজ ছিল!”
রবিন মাথা নিচু করে বলে, “স্যার, আমি রাস্তায় পেয়েছি, তাই ফেরত দিলাম।”
স্যার আবেগে রবিনকে জড়িয়ে ধরেন।
তিনি বলেন, “তুমি এমন একটা কাজ করেছো, যেটা অনেক বড় মানুষও করে না।”
এরপর স্যার জিজ্ঞাসা করেন, “তুমি কোথায় পড়ো?”
রবিন নিজের অবস্থা খুলে বলে—কীভাবে অর্থের অভাবে মাঝেমধ্যে স্কুলে যেতে পারে না।
মিজান স্যার তখন বলেন, “তোমার পড়ালেখার সব দায়িত্ব আমি নিলাম।”
রবিন বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থাকে, চোখে আনন্দ অশ্রু।
সেই দিন থেকে রবিন নিয়মিত স্কুলে যেতে থাকে।
সে খুব ভালো ফলাফল করতে শুরু করে।
গ্রামের সবাই তার প্রশংসা করতে থাকে।
বছর কয়েক পর রবিন শহরে কলেজে ভর্তি হয়।
সেখানে পড়ালেখা শেষ করে সে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হয়।
রবিন ফিরে আসে নিজের গ্রামে, শুরু করে শিশুদের শিক্ষা দেওয়া।
মিজান স্যার তখন অবসর নিয়েছেন, কিন্তু রবিন তাকে কখনও ভুলে যায় না।
প্রতিটি ক্লাসে সে ছাত্রদের শেখায়—সততা হলো মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ।
সে বলে, “সততা যদি থাকুক হৃদয়ে, ভবিষ্যৎ একদিন বদলাবেই।”
রবিন হয়ে ওঠে গ্রামের সবচেয়ে প্রিয় ও সম্মানিত ব্যক্তি।
তার জীবন প্রমাণ করে—সততার পথ কখনো বৃথা যায় না।