22/07/2025
শিশুকে📱মোবাইল ছাড়া খাওয়ানোর দারুন কিছু টিপস।
অনেকেই বলেন মোবাইল ছাড়া খাওয়ানো চ্যালেঞ্জিং।।
কিন্তু আমি বলছি এটা ভু*ল, কিছু সৃজনশীল ও ব্রেইন-ফ্রেন্ডলি পদ্ধতিতে খাওয়ানো গেলে শিশু শুধু খাবে না, তার ইন্টেলিজেন্স, কল্পনা শক্তি, ফাইন মোটর স্কিল, এবং ফোকাস-এরও উন্নতি হবে। একি সাথে মোবাইলের ভ*য়ানক থাকা থেকে রক্ষা পাবে।
নীচে এমন কিছু কার্যকরী ও আনন্দদায়ক উপায় দেওয়া হলো যা শিশুকে খাওয়ানোর সময় মোবাইল ছাড়াই ব্যস্ত রাখবে 💁♀️
🎨 ১. জল দিয়ে খেলা (Water Play)
শিশুকে ছোট একটা বাটিতে জল দিন আর সাথে ছোট কাপ, চামচ, বোতল ক্যাপ দিন।
সে এগুলো দিয়ে ঢালা, মিশানো ইত্যাদি করতে থাকবে।
এতে শিশুর হাত-চোখের সমন্বয় ও কল্পনাশক্তি বাড়ে।
এই সময় আপনি একে একে খাবার তুলে দিন।
📚 ২. ছবিওয়ালা বই/ শব্দকরা বই বা ফ্ল্যাস কার্ড রিডার (Picture Books / Sensory Books)
বড় বড় ছবি ও রঙিন পৃষ্ঠা আছে এমন বই দিন। শব্দযুক্ত বই দিন, বা ফ্ল্যাস কার্ড রিডার দিন।
সে যখন বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাবে বা কিছু খুঁজবে বা শব্দ করা বই বা কার্ড রিডার পড়বে, আপনি তার মুখে খাবার তুলে দিতে পারেন।
এতে ভাষা শেখার আগ্রহ ও ফোকাস বাড়ে ও মেধায় ভালো ভাবে শব্দগুলো গেঁথে যাবে, যা তার শব্দ ভান্ডার বাড়াবে।
🧠 ৩. ইন্টেলিজেন্স টয় / ব্রেইন টয়
যেমন: বাটিতে বল ঢোকানো, পাজল পিস ফিট করানো, রঙ চেনার খেলনা
শিশুকে খেলনায় ব্যস্ত রেখে খাওয়াতে থাকুন।
এতে মস্তিষ্কের problem-solving ও attention span বাড়ে।
🍎 ৪. ফল ধোয়া / সবজি ধোয়া খেলা
তার সামনে একটু ফল দিন ও একটা বাটিতে পানি।
বলুন এগুলো সে নিজে ধুয়ে দেবে (বাস্তবে আপনি খাওয়াচ্ছেন)।
এতে সে দায়িত্বশীলতা শেখে আর আনন্দেও থাকে। সানায়ার সবচেয়ে পছন্দের কাজ।
🧂 ৫. জল + লবণ মিশানো (Mini Experiment)
বাটিতে পানি দিন, পাশে সামান্য লবণ বা রঙ।
সে এগুলো মিশিয়ে খেলবে।
এটা একটা মাইক্রো এক্সপেরিমেন্ট হয়ে যাবে ও বিজ্ঞান শেখার বীজ বুনবে। সানায়ার এই এক্সপেরিমেন্ট প্রতিদিন চলে।
🧱 ৬. লেগো বা স্ট্যাকিং ব্লক
খেলনার ব্লক দিয়ে টাওয়ার বানাতে দিন।
আপনি প্রতিটা ব্লক রাখার সময় ১ চামচ করে খাবার দিন।
এতে খাওয়া “খেলার অংশ” হয়ে যায়।
🎶 ৭. গান বা রাইম গাওয়া সময়
ছোট ছোট রাইম যেমন: “ক তে কলা, খ তে খাই”, “Twinkle twinkle” ইত্যাদি গাইতে গাইতে খাওয়াতে পারেন। মাঝে মাঝে একটু স্পিকারে ছড়া গান দিয়ে নিতে পারেন।
শিশু শব্দ শুনে আনন্দ পায়, আর খাওয়াও সহজ হয়।
👩👧 ৮. একসাথে খাওয়া খেলা (Feeding Doll/Stuffed Toy)
ওর পাশে একটা পুতুল বসিয়ে দেখান আপনি পুতুলকেও খাওয়াচ্ছেন। বলবেন "বেবি খায় আমার বেবিটাও খায়"।
শিশু খেলতে খেলতেই খেয়ে নেয়।
কিছু বাড়তি পরামর্শ 💁♀️:
চাপে না ফেলে খাওয়ান। আনন্দের পরিবেশ রাখলে শিশু খাওয়ায় আগ্রহী হয়। জোড়াজুড়ি বা ধমকে খাওয়াবেন না। খাওয়ার সময় টা যেন ভ*য়ানক না হয়।
খাবার রঙিন ও আকর্ষণীয় করে দিন (ফল/সবজি দিয়ে মুখ বানানো, স্টার আকৃতি কাটা ইত্যাদি)।
আকর্ষনীয় প্লেট ব্যাবহার করুন। খুব কাজে দেয়।
সময়মতো খাওয়ান, ক্ষুধা লাগলে খেতে ইচ্ছা বেশি থাকে। ২-৩ঘন্টা গ্যাপ দিয়ে খাওয়াবেন।
সানায়াকে ছোটবেলা থেকে এই কাজগুলো করেই খাওয়াচ্ছি, আর মাঝে মাঝে নিজ হাতে খায়, আমার কিন্তু কোনোরকম মোবাইল বা স্ক্রীন দিতে হয়নি। নিজে একটু ধৈর্য্য ও পরিশ্রম দিন। " পরিশ্রমের ফল সৃষ্টিকর্তা মিঠা দেয়", তাই ধৈর্য্য হাড়াবেন না। আপনাদর কাজে লাগবে ভেবেই টিপস গুলো শেয়ার করা।
বিদ্র: বাচ্চাকে নিজ হাতে খাবার ব্যাপারে বেশি মনোযোগী হবেন, ৬মাস+ থেকেই লেড উইনিং শুরু করবেন আস্তে আস্তে, খাবার সময় খাবারে যেন মনোযোগ রাখে সেই চেষ্টা করবেন।আর টিপসগুলো যখন সে একদমি নিজে খেতে চাইবেনা তখন কাজে লাগাবেন, অন্তত মেবাইলের ভ*য়াল থাবা থেকে সন্তান নিরাপদ থাকুক।
সবার জন্য ভালোবাসা অফুরন্ত 🥰🥰🥰