04/10/2024
দেশের জনপ্রিয় শিল্পীরা দেশে থাকতে চায় না। দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে যখন কিছু টাকা-পয়সা হয়, তখন তারা বিদেশে পাড়ি জমায়। একইভাবে, সরকারি কর্মকর্তারাও সুযোগ পেলেই দেশ ছাড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকরাও উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গিয়ে আর ফেরেন না। তারা ফিরতেও চান না।
ডাক্তাররা, প্রকৌশলীরা—বিশেষ করে বুয়েটের প্রকৌশলীদের প্রায় ষাট শতাংশই দেশে থাকেন না। সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পরও অনেকেই স্থায়ীভাবে বিদেশে থেকে যান।
রাজনীতিবিদদের ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই রকম। তারা তাদের সন্তানদের দেশে না পড়িয়ে বিদেশে পাঠান। তারা নিজেরাও জানেন, বাংলাদেশ শুধুমাত্র ব্যবসার জায়গা, রাজনীতির মাধ্যমে অর্থ আয়ের মাধ্যম। কিন্তু বসবাসের জন্য নয়। কারণ দেশটাকে তারা কখনোই বসবাসের উপযোগী করে তোলার চেষ্টা করেনি।
দেশ ছাড়ার কারণ হিসেবে অনেকেই বলেন—সন্তানের ভবিষ্যতের কথা, শেষ বয়সে একটু শান্তির কথা, পরিবার-পরিজনের ভালো থাকার কথা। কেউ বলেন—সততার সাথে বাঁচতে চান, আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচতে চান, যোগ্যতার সম্মান চান, উচ্চশিক্ষার সুযোগ চান, বা ধর্মীয় রোষানল থেকে মুক্তি চান। যদি আপনার চারপাশের মানুষদের নিয়ে একটি জরিপ করেন, দেখবেন আশি শতাংশ মানুষ সুযোগ পেলে দেশ ছাড়তে চায়।
তাহলে প্রশ্ন হলো, পঞ্চাশ বছরে আমরা এমন কেমন একটি সমাজ তৈরি করলাম—যেখান থেকে সবাই পালাতে চায়? মানুষের মনে সবসময় যেন এক পালানোর উন্মত্ততা, এক দীর্ঘশ্বাস, এক নিরন্তর চেষ্টা। কেন?
এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা এবং সেই অনুযায়ী আমাদের দেশকে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের নেতাদেরই নিতে হবে। দেশকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে মানুষ আর পালানোর কথা না ভাবে, বরং এই দেশেই তাদের ভবিষ্যৎ দেখতে পায়।