
16/06/2025
ব্রিটিশরা কেন ইউনুসকে 'অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান' মানলো না : ক্ষমতার মোহে অস্তিত্বহীন সরকারের লজ্জাহীন প্রচার ও আন্তর্জাতিক মানের ধরা খাওয়ার মহাকাব্য
——
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফর এখন আর শুধু একটি রাষ্ট্রীয় ভ্রমণ নয়, বরং একটি হাস্যকর, লজ্জাজনক ও স্ববিরোধী নাটক, যেখানে তিনি নিজেই প্রযোজক, পরিচালক এবং প্রধান অভিনেতা। এই সফরের নামে যা হচ্ছে, তা হলো একটি অনির্বাচিত, অগ্রহণযোগ্য সরকারের প্রধান হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেকে বৈধতা দেওয়ার হীন চেষ্টা। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার, রাজপরিবার এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম তার এই খেলাকে মোটেও গুরুত্ব দেয়নি। বরং, তারা এই অপ্রাসঙ্গিক ও অগ্রহণযোগ্য নেতৃত্বকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তাদের অবস্থানই স্পষ্ট করেছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের মিথ্যে গল্প : প্রেস সচিবের নির্লজ্জ ধাপ্পাবাজি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের মিথ্যাচার এখন প্রকাশ্যে। তিনি দাবি করেছিলেন যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার কানাডায় অবস্থান করছেন, তাই ইউনূসের সাথে তার দেখা হবে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো, স্টারমার সেই সময় লন্ডনেই ছিলেন, ডাউনিং স্ট্রিটে বৈঠক করছিলেন, নরওয়ের প্রধানমন্ত্রীর সাথে ফোনে আলোচনা করছিলেন, সরকারি প্রকল্পে বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের ঘোষণা দিচ্ছিলেন। অর্থাৎ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছাকৃতভাবেই ইউনূসকে এড়িয়ে গেছেন। এই অবজ্ঞা বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং ইউনূসের অস্থায়ী, অগণতান্ত্রিক নেতৃত্বের প্রতি।
ব্রিটিশ রাজপরিবার ও সরকারের উপেক্ষা : বিমানবন্দরে কেউ নেই
রাষ্ট্রীয় সফরের মৌলিক প্রটোকল হলো স্বাগত জানাতে স্বাগতিক দেশের সরকারি প্রতিনিধির উপস্থিতি। কিন্তু ইউনূসকে লন্ডনের বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে ব্রিটিশ সরকার বা রাজার কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। শুধু বাংলাদেশ হাই কমিশনের কর্মীরা ছিলেন। এটি কোনো সাধারণ ভুল নয়, বরং একটি পরিকল্পিত অবহেলা। ব্রিটিশ সরকার জানিয়ে দিয়েছে, তারা ইউনূসকে বাংলাদেশের বৈধ নেতা হিসাবে স্বীকৃতি দেয় না।
গণমাধ্যমে ইউনূসের সমালোচনা : "স্টারমার কেন ইউনূসের সাথে দেখা করবেন না?"
ব্রিটিশ গণমাধ্যমে প্রকাশিত নিবন্ধে স্পষ্ট বলা হয়েছে—ইউনূসের প্রশাসন একটি অগণতান্ত্রিক, অনির্বাচিত সরকার, যা ক্ষমতা দখলের পর থেকে ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর পুনরুত্থান, গণমাধ্যমের উপর দমন-পীড়ন এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা ধ্বংস করেছে। নিবন্ধে প্রশ্ন তোলা হয়েছে : "স্টারমার কেন একজন এমন ব্যক্তির সাথে বৈঠক করবেন, যিনি বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে কর্তৃত্ববাদী শাসন জোরপূর্বক চাপিয়ে দিচ্ছেন?"
চ্যাথাম হাউজের থিয়েটার : রাষ্ট্রীয় সফর নাকি ব্যক্তিগত মার্কেটিং?
ইউনূসের পুরো সফরজুড়ে কোনো সরকারি বৈঠক হয়নি। বরং, চ্যাথাম হাউজের মতো থিঙ্ক ট্যাঙ্কে বক্তৃতা, পুরস্কার নেওয়া, এবং সেন্ট জেমস প্যালেসে রাজা চার্লসের আয়োজিত একটি সাধারণ নৈশভোজে অংশ নেওয়াই ছিল তার মূল এজেন্ডা। এই নৈশভোজ ইউনূসের জন্য বিশেষভাবে আয়োজিত হয়নি—এটি কিংস ফাউন্ডেশনের বার্ষিক ইভেন্ট, যেখানে শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন। অথচ, ইউনূসের দল এটি রাষ্ট্রীয় সফরের "সাফল্য" বলে চালাতে চেয়েছে!
ইউনূসের আসল মিশন : রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি
ইউনূসের এই সফরের লক্ষ্য কোনো রাষ্ট্রীয় কাজ নয়, বরং —
➤ নিজেকে "ডি ফ্যাক্টো" নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা :
তিনি চান বিশ্ব তাকে বাংলাদেশের বিকল্প নেতা হিসেবে দেখুক, যদিও তার কোনো জনম্যান্ডেট নেই।
➤ তারেক রহমানের সাথে গোপন ডিল :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তার বৈঠক এজেন্ডা হতে পারে—নির্বাচন পেছানো বা ক্ষমতা ভাগাভাগি।
➤ ২০২৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা ধরে রাখার প্ল্যান :
ইউনূস নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ঠেকাতে চান, যাতে তার অস্থায়ী সরকার দীর্ঘস্থায়ী হয়।
ব্রিটেনের বার্তা : ইউনূসকে পাত্তা দেওয়া হবে না
যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছে—ইউনূসের অনির্বাচিত সরকারকে তারা সমর্থন করে না। রাজা চার্লস বা প্রধানমন্ত্রী স্টারমার তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেননি। ব্রিটিশ মিডিয়া তাকে "ক্ষমতা কুক্ষিগতকারী" বলে আখ্যা দিয়েছে।
ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের বিক্ষোভ : ইউনূসের মুখোশ উন্মোচন
লন্ডনে ইউনূসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে, কারণ ডায়াসপোরা বুঝেছে—এই ব্যক্তি দেশে গণতন্ত্র হত্যা করছেন, ইসলামিস্ট গোষ্ঠীগুলোর সাথে আঁতাত করছেন, আর বিদেশে গিয়ে নিজেকে "বাংলাদেশের রক্ষাকর্তা" বলে প্রচার করছেন।
একটি অস্তিত্বহীন সরকারের অন্তিম নাটক
ইউনূসের এই সফর প্রমাণ করেছে, তার সরকারের কোনো আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নেই। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, রাজা, এমনকি তাদের কর্মকর্তারাও তাকে উপেক্ষা করেছেন। বাংলাদেশের জনগণ, রাজনৈতিক দলগুলো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই অগণতান্ত্রিক খেলার মেয়াদ শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। সময় আসছে, যখন ইউনূস ও তার দলবলকে জবাবদিহি করতে হবে তাদের সব অপকর্মের জন্য।