Islamic Jibon.01

Islamic Jibon.01 দুনিয়ার জীবনকে আল্লাহর সন্তুষ্টির কারণ বানাতে পারলেই আসল সফলতা অর্জন হয়!

10/06/2023
30/05/2023

হালাল পন্থায় জীবিকা উপার্জন করা

উল্লেখ্য, মানব জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ হলো জীবিকা উপার্জন করা। কারণ, মানুষকে এ ধরাধামে প্রাণে বেঁচে থাকতে হলে তার জীবিকা উপার্জন করা অপরিহার্য। এ জন্য যার হালাল রিযিকের ব্যবস্থা নাই, তার জন্য ফরয ইবাদতের পর হালাল রিযিকের জন্য চেষ্টা-তদবির করা ফরয। আল্লাহপাক এ ভূ-পৃষ্ঠে জীবিকা উপার্জনের বিভিন্ন পদ্ধতি রেখেছেন। তন্মধ্যে প্রধানত তিনটি পদ্ধতি রয়েছে। কৃষি, চাকুরী ও ব্যবসা। এর প্রত্যেকটির ব্যাপারে ইসলামী বিধান রয়েছে এবং এ সম্পর্কে ফিকাহের কিতাবে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে। জীবিকা উপার্জনের জন্য কোন পদ্ধতি কিভাবে অবলম্বন করতে হবে, কোন পন্থায় তা করলে হালাল হবে, কোন পন্থা অবলম্বন করলে হারাম বা অবৈধ হবে, এর প্রত্যেকের জন্য তার জীবিকা অর্জনের লাইনে মাসআলা জেনে নেয়া ফরয এবং এটা ইসলামের মৌলিক পাঁচ বিষয় এর একটি, যথা ঈমান, ইবাদত, হালাল রিযিক, বান্দার হক, আত্মশুদ্ধি, এর অন্যতম একটি বিষয়। কারণ, রিযিক, হারাম বলে অন্যান্য ইবাদত কবূল হয় না। ব্যবসা বাণিজ্য করে অর্থোপার্জন করলেই তা হালাল হয় না। বরং সাথে সাথে তা ইসলামী শরী‘আত অনুযায়ীও হতে হবে। শরী‘আতের বিধান লঙ্ঘন করে মানুষ যত কষ্ট করেই অর্থোপার্জন করুক না কেন, তা হারাম ও অবৈধ হবে।

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে বৈধভাবে চাকরি ব্যাবসা করে হালাল রিযিক বৃদ্ধি করে দিন।

29/05/2023

পুরুষদের কিছু বর্জনীয় অভ্যাস

১. পুরুষরা অলসতা বশত: বা কর্ম ব্যস্ততার অজুহাতে বা গাফলতির কারণে ঈমান শিক্ষা করে না এবং ফরযে আইন পরিমাণ ইলম অর্জন করে না। অথচ শরী‘আত এটা ফরয ঘোষণা করেছে এবং এ ব্যাপারে কোন হিলা বাহানা গ্রহণযোগ্য নয়। উল্লেখ্য পাঁচটি বিষয় শিক্ষা করা ফরযে আইন যথা: ঈমান, ইবাদাত, হালাল রিযিক, বান্দার হক ও আত্মশুদ্ধি; বিস্তারিত জানার জন্য “ইসলামী যিন্দেগী” নামক কিতাব দেখুন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ২২৪)

২. নিজের বিবি বাচ্চাদের দ্বীনী জরুরী তা‘লীম দেয়া থেকে উদাসীন থাকে অথচ এটাও তার উপর ফরয দায়িত্ব। (তারগীব তারহীব, পৃ.৩০৪৮)

৩. আত্মসমালোচনা না করে অপরের কাজ-কর্মের সমালোচনায় আনন্দ বোধ করে। আর এর দ্বারা যে গীবতের গুনাহ হচ্ছে সে কথা ভাবতেও চায় না। তেমনিভাবে অন্যের ব্যাপারে কু-ধারণা করে গুনাহগার হয়। (হুজরাত ;১২,জামে তিরমিযী, হা.১৯৮৮)

৪. সালামের অভ্যাস উম্মত থেকে বিদায় নিচ্ছে, যা ছিল গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত । অপর দিকে অনেকে তো সালামের উত্তরই দেয় না, আর কেউ দিলেও ঘাড় নেড়ে বা মনে মনে দেয় । অথচ উত্তর শুনিয়ে দেয়া ওয়াজিব। (শুআবুল ঈমান, হাদীস নং ৮৭৮৭)

৫. স্ত্রী থেকে নিজের হক পাওনা থেকে বেশি আদায় করে কিন্তু তার উপর স্ত্রীর যে অধিকার আছে তা আদায় করতে রাজি না। বরং অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের উপর জুলুম করে থাকে। এটা অন্যায়। ( সূরা বাকারা:২২৮)

৬. সাংসারিক কোন কাজে পরিবারের অন্য কোন সদস্যের সাথে পরামর্শ করে না। যার কারণে পারস্পরিক অন্তঃকলহ বেড়ে যায়। স্ত্রী ও বুঝমান সন্তানদের সাথে পরামর্শ করবে, তার পর যেটা ভালো বুঝে আসে, যেটার মধ্যে কল্যাণ মনে হয় সেটার ফায়সালা দিবে। (সূরা আল ইমরান ; ১৫৯)

৭. নিজের বাবা মায়ের খেদমত স্ত্রীর উপর ফরয মনে করে , অথচ বাবা- মার খেদমত ছেলের দায়িত্ব , স্ত্রীর দায়িত্ব নয়। স্ত্রীর দায়িত্ব হলো স্বামীর খেদমত করা এবং সুযোগ মত নিজ পিতা মাতার খোঁজ-খবর রাখা। (সূরা বাকারা:৮৩)

৮. অনেক বোকা পুরুষ বিবাহের পর নিজ বাবা-মা, ভাই-বোনকে পর ভাবতে শুরু করে। আর শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দেরকে আপন মনে করে। এমনটা করা মোটেও ঠিক নয়। কারণ বাবা-মা, ভাই-বোনের ভালবাসা স্বার্থহীন হয়ে থাকে, কিন্তু শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের ভালবাসা অনেক সময় এমন হয় না। তাই উভয়কুলের আত্মীয়দের তাদের প্রাপ্য হক যথাযথভাবে দেয়া কর্তব্য। (সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ৫৯৮৬)

৯. সন্তান ছেলে হওয়ার ব্যাপারে বেশি আগ্রহ থাকে, পক্ষান্তরে মেয়ে হলে স্ত্রীকে দোষারোপ করতে থাকে। অথচ ছেলে বা মেয়ে হওয়া আল্লাহর ইচ্ছা, এতে স্ত্রীর কোন দখল নেই। অপর দিকে মেয়ে সন্তানের ফযীলত অনেক বেশি, মেয়ে সন্তান লালন পালন ও দ্বীনী তা‘লীমকে বেহেশতের সনদ বলা হয়েছে। (সূরা শূরা:৪৯, সহীহ বুখারী, হা. নং ১৪১৮)

১০. যৌবনের তাড়নায় ভোগ বিলাসে মত্ত থাকে। ইসলামের হুকুম আহকাম মেনে চলে না । ইসলামী জীবন যাপন বার্ধক্যের জন্য গচ্ছিত রাখে। যেমন যুবক অবস্থায় হজ্জ ফরয হলেও তা আদায় করা বার্ধক্যের সময়ের দায়িত্ব মনে করে, অথচ এটা গুনাহের কাজ। তাছাড়া লম্বা হায়াতের গ্যারান্টি কী ? উল্লেখ্য যে, যে বছর হজ্জ ফরয হয় সে বছর হজ্জে যাওয়া ওয়াজিব, দেরি করা গুনাহ। (সূরা ইনফিতার:৬ ,ফাতাওয়ায়ে শামী, খ.৩ পৃ.৫২০)

১১. অনেক পুরুষ স্ত্রীদের অন্ধভক্ত হয়ে থাকে। কোন প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়া সবক্ষেত্রে স্ত্রীর কথাকে প্রাধান্য দিয়ে পিতা-মাতা, ভাই -বোনদের সাথে মহা ঝগড়া বাধিয়ে দেয়। এমনটা হওয়া মোটেও কাম্য নয়। বরং সব সময় স্ত্রীর অভিযোগ যাচাই করে তার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত । নচেৎ লোকদের সামনে বেকুব সাব্যস্ত হতে হয়। ( সূরায়ে হুজরাতঃ ৬ , সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ৩০৪)

১২. বিয়ের মজলিসে বেশি পরিমাণ মহরানা নির্ধারণ করা সামাজিক মর্যাদার বিষয় হিসেবে দেখা হয়। অথচ এটা মর্যাদার কোন বিষয় নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রী ও কন্যাদের সর্বোচ্চ মহর ছিল দেড়শত তোলা রুপা বা তার সমমূল্য। তাছাড়া মোটা অংকের মহর ধার্যকালে অধিকাংশ লোকের তা পরিশোধ করার নিয়ত থাকে না যা অনেক বড় গুনাহ । বিয়ের মজলিসে নগদ আদায়কৃত মহরকেই যথেষ্ট মনে করা হয়। অবশিষ্ট মহর আদায় করা সাধারনত পুরুষরা জরুরী মনে করে না। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বামী প্রথম রাত্রেই কিংবা পরে কোন অন্তরঙ্গ মুহূর্তে স্ত্রী থেকে মহর মাফ করিয়ে নেয়। অথচ পুরুষ হয়ে মেয়েলোকের কাছে পাওনা মুক্তির ভিক্ষা চাওয়া কেমন আত্মমর্যাদাবোধের পরিচায়ক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। (মাজমাউয্যাওয়ায়েদ, হা. নং ৭৫০৭)

১৩. উপার্জনের ক্ষেত্রে হালাল- হারামের তোয়াক্কা করে না। ন্যায়- অন্যায় যে পথেই পয়সা আসে সেটাই গ্রহণ করে থাকে এবং নিজের উপার্জনের মাধ্যমকেই রিযিকদাতা ভাবে। যে কারণে তা নষ্ট হলে পেরেশানির সীমা থাকে না অথচ এগুলো মাধ্যম বা রিযিক পৌঁছানোর পিয়ন মাত্র। আসল রিযিকদাতা হলেন মহান রাব্বুল আলামীন। কারো রিযিকের একটা পথ বন্ধ হলে তিনি আরো পথ খুলে দেন। (সূরা মুমিন:৫১, হুদ: ৬)

১৪. পুরুষেরা যখন কিছুটা বয়স্ক হয়ে যায়, এবং কারো উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, তখন সর্বক্ষেত্রে তার কথাকেই সত্য বলে মনে করে। বাস্তবতা যাচাই না করে তার কথামত অন্যের উপর চড়াও হয়, যা জুলুমের শামিল। এই দুর্বলতা থেকে জ্ঞানীলোকেরাও মুক্ত নয়। (সূরায়ে হুজরাতঃ ৬)

১৫. অনেকে পিতা- মাতাকে সম্মান করে না। তাদের খোঁজ-খবর রাখে না। অথচ পিতা-মাতার সন্তুষ্টি ছাড়া জান্নাতে যাওয়া যাবে না। এ জন্য পিতা-মাতার হক সমূহ সন্তানকে শিক্ষা দেওয়া জরুরী। পিতা-মাতার হায়াতে সাতটি হক এবং মৃত্যুর পরে আরো সাতটি হক রয়েছে। বিস্তারিত জানতে আ‘মালুস সুন্নাহ নামক কিতাব দ্রষ্টব্য। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৩৬৬২)

১৬. অনেক বদ মেজাযী পুরুষ সামান্য কারণে স্ত্রীকে মার-পিট করে থাকে। এমনকি রাগের মাথায় তিন তালাক দিয়ে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। এজাতীয় পুরুষরা আল্লাহর স্পষ্ট হুকুম “আর স্ত্রীর সাথে সৎভাবে জীবন যাপন কর (সূরা নিসা, আয়াত ১৯) এর উপর আমল করছে না এবং আল্লাহর দয়া ও করুণা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

১৭. অনেক ভবঘুরে স্বামীরা নিয়মিত সংসারের খোঁজ খবর রাখে না। তাদের হক আদায়ের কোন তোয়াক্কা করে না। অনেক মূর্খ মানুষ এটাকে বলে আল্লাহর উপর ভরসা করি। যা শরীআত বিরোধী কথা। এটাকে শরীআতে তাওয়াক্কুল বলা হয় না। অপর দিকে কিছু পুরুষ বিবিকে চাকুরীতে পাঠান। তাদের বিবিরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেপর্দাভাবে পয়সা রোজগার করেন। এটা খুবই গর্হিত কাজ । কারণ বাড়ির বাইরে গিয়ে এভাবে চাকুরী করা তাদের দায়িত্বও নয় এবং তা জায়িযও নেই। (সূরা নিসা: ৩৪)

১৮. অনেক ভাই, বোনদের পাওনা মীরাস আদায় করতে চায় না। অথচ বোনদের পাওনা আদায় করা ভাইদের উপর ফরয দায়িত্ব। এটা না করলে তাদের রিযিক হারাম মিশ্রিত হয়ে যায় এবং জান ও মালের বরকত নষ্ট হয়ে যায়। আরো দুঃখজনক কথা হলো, অনেক জালিম পিতাও নিজের মেয়েকে মাহরূম করতে বা কম দিতে চেষ্টা করে থাকে অথচ হাদীস অনুযায়ী এটা সরাসরি জাহান্নামে যাওয়ার রাস্তা । (সূরা বাকারা আয়াত: ১৮৮, মুসনাদে আহমদ, হা. নং ২১১৩৯)

১৯. পিতামাতার উপর সন্তানের অন্যতম হক হলো, তাদেরকে জরুরত পরিমাণ দ্বীনী ইলম শিক্ষার ব্যবস্থা করা এবং শরী‘আতের আদব কায়দা শিক্ষা দেয়া। কিন্তু অধিকাংশ পিতা-মাতা এ সম্পর্কে উদাসীন। এমনকি সন্তানরা বে-নামাযী হলে পিতামাতার কোন পেরেশানি দেখা যায় না। (সূরা তাহরীমঃ ৬, তারগীব তারহীব, হা.নং ৩০৪৮)

২০. অনেক পুরুষ স্ত্রী, সন্তানের নাজায়িয দাবী পুরা করতে কুণ্ঠাবোধ করে না। অথচ স্রষ্টার অবাধ্য হয়ে সৃষ্টির বাধ্য হওয়ার মধ্যে কোন ফায়দা নেই। বরং এতে পরকালের আযাব বৃদ্ধি করা হয়, যার মধ্যে বিবি বাচ্চারা শরীক হবে না। তবে তাদের আযাব তারা ভিন্নভাবে পাবে। (সূরা ইসরা: ২৬, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭২৫৭)

২১. স্বামীরা স্ত্রীদের দায়িত্ব তথা সংসার সামলানোকে ছোট নজরে দেখে এবং এটা স্ত্রীর দায়িত্ব মনে করে তাই এটার কোন মূল্যায়নও করে না। এবং কখনোই স্ত্রীর রান্নাবান্নার এবং অন্যান্য ভালো কাজের শুকরিয়া আদায় ও প্রশংসা করতে চায় না। এতে স্ত্রীরা সাংসারিক কাজে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। অথচ স্বামীর সামান্য প্রশংসায় স্ত্রী হাজারো কষ্টের কাজ হাসি মুখে আঞ্জাম দিতে পারে। (জামে তিরমিযী, হাদীস নং ১৯৫৫)

২২. অনেকে বিয়ের পর স্ত্রী পক্ষ থেকে যৌতুক গ্রহণ করে। কেউ কেউ যৌতুকটাই ভিন্ন নামে ভিন্নভাবে গ্রহণ করে। অথচ চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বা কৌশল করে কারো থেকে ধন-সম্পদ হাসিল করা হারাম। (সূরা বাকারা আয়াত: ১৮৮, মুসনাদে আহমাদ, হা. নং ২১১৩৯)

২৩. পুরুষরা সাধারণত বিবাহের জন্য পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে দৈহিক সৌন্দর্য ও বিত্তবৈভবকে দ্বীনদারীর উপরে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। অথচ হাদীসে দ্বীনদারীকে সৌন্দর্য ও সম্পদের উপর অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে এবং এরই মধ্যে কামিয়াবী নিহিত আছে বলা হয়েছে। এর ব্যতিক্রম করলে সুখ শান্তি তো হয়ই না বরং দুনিয়া ও আখিরাত ধ্বংস হয়। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৫০৯০)

২৪. অনেক উচ্চ শিক্ষিত লোকেরা দ্বীনের ব্যাপারে স্বেচ্ছাচারী হয়ে থাকে, দ্বীনী কোন সমস্যায় আলেমদের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করে না। নিজের আত্মার ব্যাধির চিকিৎসার জন্য (যা ফরযে আইন) কোন বুজুর্গ লোকের সান্নিধ্যে যাওয়া প্রয়োজনীয় বা জরুরী কিছু মনে করে না। অথচ আত্মশুদ্ধি অর্জন না করার দরুন “রিয়া” বা লোক দেখান অন্তঃব্যধির কারণে, সারা জীবনের সকল ইবাদত-বন্দেগী নষ্ট হয়ে যায় । যেমন, হাদীসে পাকে যে তিন ব্যাক্তিকে সর্ব প্রথম জাহান্নামী বলা হয়েছে তারা আত্মশুদ্ধি না করানোর অপরাধে এ শাস্তির উপযুক্ত বিবেচিত হবে। (সূরা আশশামসঃ ৯, সূরা নাহলঃ ৪৩,সহীহ মুসলিম, হা. নং ৪৯২৩)

২৫. যারা কোন আল্লাহওয়ালা বুযুর্গ এর সাথে সম্পর্ক রাখে কিংবা তাবলীগে কয়েক চিল্লা সময় লাগায়, তাদের অনেকের হালাত এই যে, তারা নিজেদেরকে দ্বীনী ব্যাপারে যথেষ্ট জ্ঞানী মনে করে এবং নিজেকে অনেক কিছু মনে করে যা তাকাব্বুর এর শামিল। এমনকি কেউ কেউ অন্য আলেমদের সহীহ কথা-বার্তাও মানতে চায়না। তাদের কথা সুকৌশলে প্রত্যাখ্যান করে এবং তাদের ভুল অনুসন্ধানের চেষ্টা করে। এটা মারাত্মক অপরাধ। সঠিক কথা যেই বলুক না কেন তা গ্রহণ করা জরুরী। (সূরা নিসাঃ ৫৯, শুআবুল ঈমান, হাদীস নং ৮১৪০)

২৬. সুশীল সমাজের অনেকে গৃহ পরিচারিকাদের উপর অমানুষিক নির্যাতন করে থাকে, আর বাইরে মানবাধিকার কর্মী হিসাবে পুরষ্কার গ্রহণ করে। তাদের কথায় ও কাজে মিল না থাকায় তারা মুনাফিক সাব্যস্ত হয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৪৪৭)

২৭. অনেক নব্য শিক্ষিত লোকেরা কুরআন হাদীসের বাংলা অনুবাদ ও ব্যাখ্যা পড়ে নিজেকে ইসলামী চিন্তাবিদ মনে করে। এমনকি হাদীস ও ফিকহের অনেক বিষয়ে দ্বীনের বিশেষজ্ঞ তথা হক্কানী আলেমদের সাথে তর্কে লিপ্ত হয় । এদের ব্যাপারে হাদীসে কঠোর ধমকি এসেছে । এদের উচিত হক্কানী উলামাদের সমালোচনা ছেড়ে দিয়ে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী জীবন যাপন করা। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হা. নং ২৬০)

২৮. অনেকে দ্বীন শেখার জন্য আলেমদের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করে না। বরং বিভিন্ন ইসলামী (?) টিভি চ্যানেল বা ইন্টারনেট প্রোগ্রামকে দ্বীন শেখার মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করে। এবং এসব চ্যানেলের কতিপয় লেকচারারকে এবং কিছু উলামায়ে “ছু” কে নিজেদের ধর্মগুরু মনে করে। অথচ এই সবগুলোই গোমরাহির মাধ্যম। কিয়ামত পর্যন্ত ঈমান ও আমল হাসিলের একমাত্র পথ হক্কানী উলামায়ে কিরামের সাহচর্য। (সূরা তাওবা:১১৯, সুনানে দারেমী, হাদীস নং ৪২৭)

২৯. সাধারণ মানুষ ব্যবসা, লেন- দেন, বিবাহ, তালাক ইত্যাদির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্বে এর হুকুম আহকাম সম্পর্কে উলামাদের কাছে জিজ্ঞাসা করে না। যখন কঠিন কোন সমস্যায় নিপতিত হয়, তখন আলেমদের কাছে ছুটে আসে অথচ পূর্বেই যদি সে আলেমদের সাথে পরামর্শ করে নিত, তাহলে হয়তো এই সমস্যার সম্মুখীন হতো না। অথবা সমাধান দেয়া সহজ হতো। (সূরা নাহলঃ ৪৩)

৩০. ছেলেরা মনে করে পর্দা করা মেয়েদের দায়িত্ব। আর তাদের দায়িত্ব হলো রাস্তায় বের হয়ে মেয়েদের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকা। অথচ কুরআনে পর্দার আলোচনায় মহান রাব্বুল আলামীন আগে পুরুষদের সম্বোধন করে বলেছেন, “তোমরা তোমাদের দৃষ্টিকে নত করো। এবং কু-দৃষ্টিকে হারাম ও লানতের কাজ ঘোষণা করা হয়েছে। তাছাড়া বিবাহপূর্ব দেখা-সাক্ষাত, কথা-বার্তা, সম্পর্ক করা কুরআনে হারাম করা হয়েছে। ( সূরা নূর: ৩০)

৩১. অনেকে মনে করে তার মধ্যে কোন দোষ নেই । অথচ তাকাব্বুর, রিয়া ইত্যাদি আত্মার ব্যাধিতে সে ভয়ংকরভাবে আক্রান্ত । কিন্তু হক্কানী শাইখদের সুহবতে না যাওয়ায় সে নিজেকে ফেরেশতা ভেবে বসে আছে। (সূরা হুজুরাতঃ ১২)

৩২. যুবকদের মধ্যে মিথ্যার আশ্রয়ে বয়স কমানো, আর বৃদ্ধদের মধ্যে বয়স বাড়ানোর বেশ প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। উভয়টা ধোকা হওয়ার কারণে হারাম। (সহীহ বুখারী, হা. নং ২১৬২)

৩৩. স্ত্রী সম্ভোগ সাধারণভাবে জায়েয হলেও এ ব্যাপারে উত্তম হলো এ কাজটা ‘নিজেকে গুনাহ থেকে বাঁচানো, স্ত্রীর হক আদায় এবং নেক সন্তান লাভের নিয়তে করা ’। সেক্ষেত্রে এটা অনেক বড় ইবাদাত হিসাবে গণ্য হবে এবং আল্লাহ এধরণের লোকের সাহায্যের দায়িত্ব নেন। (জামে তিরমিযী, হা. নং ১৬৫৫)

৩৪. অনেকে শেষ জীবনে নিজের ওয়ারিশদের জন্য কোন বিশেষ সম্পদের ওসিয়্যত করে থাকে। অথচ ওয়ারিশদের জন্য ওসিয়্যত করা জায়িয নেই। আবার অনেকে হায়াতে সম্পদ বণ্টন করতে গিয়ে শরীয়ত সম্মত কারণ ছাড়া সন্তানদের মাঝে কম বেশি করে বণ্টন করে থাকে যা অনুচিত। এতে বান্দার হক নষ্ট করা হয়। হায়াতে সম্পদ বণ্টন করতে চাইলে ছেলে মেয়ে সকলকে সমান দেয়া উত্তম। (সুনানে দারা কুতনী, ৪/৩৭, ইমদাদুল আহকাম, ৪/৫৫,৫৮৬)

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হওয়ার তৌফিক দান করুন

28/05/2023

যে সকল গুনাহের উপর লা‘নত করা হয়েছে

কুরআন-হাদীসে যে সকল গুনাহের উপর লা‘নত করা হয়েছেঃ

১. যে স্ত্রী বা পুরুষ সূঁচের দ্বারা নিজ হাতে নিজের শরীর খোদায় বা অন্যের দ্বারা তা অঙ্কিত করায় তার প্রতি আল্লাহর লা‘নত। (বুখারী: হাদীস নং ৫৯৩৭, মুসলিম: হাদীস নং ২১২৪)

২. যে স্ত্রীলোক নিজ হাতে বা অন্য কারো দ্বারা অন্যের চুল নিজের চুলের সঙ্গে মিশিয়ে নিজের চুলের পরিমাণ বাড়ায় তার উপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা‘নত করেছেন। (বুখারী: হাদীস নং ৫৯৩৭, মুসলিম: হাদীস নং ২১২৪)

৩. যে ব্যক্তি নিজে সূদ খায় বা (বিনা অপরাগতায়) অন্যকে সূদ খাওয়ায়, যে সূদের দলীলে বা কারবারে স্বাক্ষী হয়, যে সূদের দলীল লেখে তাদের সকলের উপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা‘নত করেছেন। (মুসলিম: হাদীস নং ১৫৯৮)

৪. যে নিজ স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে হীলা-বাহানা করে হারামকে হালাল করার জন্য সে স্ত্রীকে অন্য কারো নিকট এই শর্তে বিবাহ দেয় যে, বিবাহের পর সহবাস করে তালাক দিতে হবে এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি এরূপ শর্ত স্বীকার করে বিবাহ করে উভয় ব্যক্তির উপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা‘নত করেছেন। (তিরমিযী শরীফ: হাদীস নং ১১২১)

৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন: যে ব্যক্তি ডিম বা রশি ইত্যাদি ক্ষুদ্র জিনিষও চুরি করে আল্লাহ তা‘আলা তার হাত কাটার হুকুম দিয়েছেন এবং আল্লাহ তা‘আলা তার উপর লা‘নত করেছেন। (বুখারী: হাদীস নং ৬৭৯৯, মুসলিম: হাদীস নং ১৬৮৭)

৬. যে মদ তৈরী করে, যার জন্য তৈরী করে, যে মদ পান করে, যে মদ পান করায়, যে মদ বিক্রি করে, যে মদ বিক্রি করে পয়সা খায়, যে মদ বহন করে আনে, যার জন্য বহন করে আনা হয়, যে মদ দান করে, তাদের সকলের উপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা‘নত করেছেন। (তিরমিযী: হাদীস নং ১২৯৮)

৭. যে পিতা-মাতাকে লা‘নত করে আল্লাহ তা‘আলা তাদের উপর লা‘নত করেন। (মুসলিম: হা: নং ১৯৭৮)

৮. যে পিতা-মাতাকে গালি দেয় বা সমালোচনা করে আল্লাহ তা‘আলা তার উপর লা‘নত করেন। (মুসনাদে আহমদ: হা: নং ২৮২০)

৯. যে ব্যক্তি তীর বা ধনুকের লক্ষ্য ঠিক করার জন্য কোন প্রাণীকে কষ্ট দিয়ে তাকে নিশানা বানায় তার উপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা‘নত করেছেন।

১০. যে পুরুষ স্ত্রীলোকের সুরত ও বেশ-ভুষা বা যে স্ত্রীলোক পুরুষের সূরত বেশ-ভুষা ধারণ করে তার উপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা‘নত করেছেন।

১১. যে এক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে প্রাণী যবাহ করে আল্লাহ তা‘আলা তার উপর লা‘নত করেছেন। (মুসলিম: হা: নং ১৭৮৯)

১২. যে ইসলাম ধর্মের বাহিরের কোন কথা ইসলাম ধর্মের ভিতরে দাখিল করে এবং যে এমন ব্যক্তির সহায়তা করে আল্লাহ তা‘আলা, ফেরেশতা এবং মানব সকলেই তার উপর অভিসম্পাত করে। (আবূ দাউদ: হা: নং ৪৫১৯)

১৩. যে ব্যক্তি কোন জীব-জন্তুর ছবি অঙ্কিত করে তার উপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা‘নত করেছেন। (বুখারী: হা: নং ২০৮৬)

১৪. যে লুত আলাইহিস সালামের কওমের পাপকার্যে অর্থাৎ সমকামিতায় লিপ্ত হয় সে অভিশপ্ত। (মুসনাদে আহমাদ: হা: নং ১৮৮০)

১৫. যে কোন জীবের সাথে কু-কর্ম করে সে অভিশপ্ত। (প্রাগুক্ত)

১৬. যে ব্যক্তি কোন জীবের মুখের উপর লোহা গরম করে দাগ দিবে অথবা তার মুখের উপর আঘাত করবে সে অভিশপ্ত। (আবূ দাউদ: হা: নং ২৫৬৪)

১৭. যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের সহিত ধোঁকাবাজী করে বা জ্ঞাতসারে কোন মুসলমানের ক্ষতি করে সে অভিশপ্ত। (তিরমিযী: হা: নং ১৯৪৬)

১৮. যে সব স্ত্রীলোক মাযারে যাবে এবং যারা মাযারে গিয়ে সিজদা করবে বা তথায় বাতি জ্বালাবে তাদের উপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা‘নত করেছেন। (তিরমিযী: হা: নং ৩২০)

১৯. যে লোক কারো স্ত্রীকে তার স্বামীর বিরুদ্ধে উস্কানী দিয়ে খাড়া করাবে (বা চাকর-গোলামকে তার মুনিবের বিরুদ্ধে বা শাগরেদকে উস্তাদের বিরুদ্ধে) কুমন্ত্রণা দিয়ে উত্তেজিত করবে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন সে আমার দলভুক্ত নয়। (আবূ দাউদ: হা: নং ২১৭৫)

২০. যে পুরুষ তার স্ত্রীর পশ্চাতদ্বারে সহবাস করবে সে অভিশপ্ত। (আবূ দাউদ: হা: নং ২১৬২)

২১. যে স্ত্রী তার স্বামীর উপর রাগ করে স্বামী থেকে পৃথক রাত্রিযাপন করে তার উপর ফেরেশতাগণ ভোর পর্যন্ত লা‘নত করতে থাকেন। (মুসলিম হা: নং ১৪৩৬)

২২. যে ব্যক্তি পূর্ব পুরুষের বংশ ছেড়ে অন্য বংশের পরিচয় দিবে (যেমন সায়্যিদ বংশ নয় অথচ সায়্যিদ বলে পরিচয় দিবে) তার উপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা‘নত করেছেন। (তিরমিযী: হা: নং ২১৬৭)

২৩. রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দিকে (হাসি, বিদ্রূপ বা ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে) অস্ত্র দ্বারা ইশারা করে ফেরেশতাগণ তার উপর লা‘নত করেন। (তিরমিযী: হা: নং ২১৬২)

২৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যদি তোমরা কাউকে আমার সাহাবীদেরকে গালি দিতে বা সমালোচনা করতে দেখ তখন বলবে তোমাদের কু-কাজের জন্য তোমাদের উপর আল্লাহ তা‘আলার লা‘নত হোক। (তিরমিযী: হা: নং ৩৮৭৫)

২৫. আল্লাহপাক বলেন: যারা আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দিবে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে দুনিয়া এবং আখিরাতে অভিসম্পাত করেন। (সূরায়ে আহযাব: ৫৭)

২৬. যে লোক ইনসাফের রাজত্বের মধ্যে জুলুম ও অত্যাচার করে এবং শান্তির দেশের মধ্যে অশান্তি আনয়ন করে বা আত্মীয়-স্বজন ও অন্যান্যদেরকে কষ্ট দেয় আল্লাহ তা‘আলা তার উপর লা‘নত করেন। (সূরায়ে মুহাম্মদ: ২২-২৩)

২৭. যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব এবং আল্লাহর হুকুম ও আইন জানা সত্বেও তা গোপন করে রাখে আল্লাহ এবং অভিসম্পাতকারীগণ তার উপর অভিসম্পাত করে। (সূরায়ে বাকারা:১৫৯)

২৮. যে ব্যক্তি ঈমানদার সতী মহিলার উপর মিথ্যা অপবাদ লাগাবে অথচ সে এ বিষয়ে অবগতও নয়, সে দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত হবে। (সূরায়ে নূর: ২৩)

২৯. যে ব্যক্তি মুসলমান অপেক্ষা কাফেরদেরকে বেশী ভালবাসবে এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফেরদের সহযোগিতা করবে তার উপর লা‘নত। (তিরমিযী শরীফ: হা: নং)

৩০. রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যে ঘুষ খাবে, যে বিনা অপারগতায় ঘুষ দিবে, যে ঘুষের ব্যবস্থা করবে সকলের উপর আল্লাহ তা‘আলার লা‘নত। (মুসনাদে আহমাদ হা: নং ৬৫৪০)

৩১. হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ছয় প্রকার লোককে আমি লা‘নত করেছি এবং সকল নবীগণ আ. লা‘নত করেছেন। অথচ সকল নবীদের দু’আ ও বদ দু’আ কবূল হয়ে থাকে। যথা:

১. যারা বিকৃত করে কুরআনের অর্থ করবে।

২. যারা আল্লাহর সৃষ্টি তাকদীরকে অবিশ্বাস করবে।

৩. যারা আল্লাহর হারাম করা জিনিষকে হালাল করবে।

৪. যারা জোর জবরদস্তী করে নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের শক্তি অর্জন করত: দুষ্ট পাপী লোকদের শ্রেষ্ঠত্ব দান করে নেতৃত্বের আসনে বসাবে।

৫. যার আমার (রূহানী ও জিসমানী) বংশধরদের অবমাননা করবে।

৬. যারা আমার উম্মত হয়ে আমার সুন্নাত (আমার প্রবর্তিত নীতি, আমার প্রদর্শিত পথ এবং আমার প্রকৃত আদর্শ) পরিত্যাগ করে ভিন্ন আদর্শ, ভিন্ন পথ ও ভিন্ন নীতি অনুসরণ করবে। (তিরমিযী: হা: নং ২১৫৪)

৩২. রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার উপরও লা‘নত করেছেন (অর্থাৎ, আল্লাহ যাতে তাদের সাহায্য ও সহানুভূতি না করেন এ জন্য বদ দু’আ ও অভিশাপ দিয়েছেন) ও যে আল্লাহর ডাক (হাইয়্যা ‘আলাস সলাহ, হাইয়্যা ‘আলাল ফালাহ) (আসো তোমরা জীবনের স্বার্থকতার দিকে, নামাযের জামা‘আতের দিকে) শ্রবণ সত্ত্বেও আদেশ পালন করেনি। অর্থাৎ শরীয়ত সম্মত উজর না থাকার সত্ত্বেও জামা‘আতে উপস্থিত হয়নি।

৩৩. রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আল্লাহর লা‘নত তাদের উপর যারা জমিনের সীমানা বা সীমানার খুঁটি পরিবর্তন করে। (মুসলিম: হা: নং ১৯৭৮)

[হযরত থানভী রহ.-এর-জাযাউল আ’মাল নামক কিতাব থেকে সংগৃহীত]

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল সম্মানিত ভাই বোনদের এই সমস্ত লা-নত থেকে বাঁচার তাওফীক দান করুন আমীন

27/05/2023

মহিলাগণ কোন ধরনের পুরুষের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবে

মহিলাগণ নিম্নে বর্ণিত ১৪ শ্রেণীর পুরুষদের সাথে দেখা-সাক্ষাত করতে পারবে এবং তাদের সাথে বিবাহ হারাম।

(১) পিতা, দাদা, নানা ও তাদের ঊর্ধ্বতন পুরুষগণ।

(২) সহোদর ভাই, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।

(৩) শ্বশুর, আপন দাদা শ্বশুর ও নানা শ্বশুর এবং তাদের ঊর্ধ্বতন পুরুষগণ।

(৪) আপন ছেলে, ছেলের ছেলে, মেয়ের ছেলে এবং তাদের ঔরসজাত পুত্র সন্তান।

(৫) স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র।

(৬) ভাতিজা অর্থাৎ, সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাইয়ের ছেলে ও তাদের অধঃস্তন কোন ছেলে।

(৭) ভাগিনা অর্থাৎ, সহোদর, বৈমাত্রেয়, বৈপিত্রেয় বোনের ছেলে ও তাদের অধঃস্তন কোন ছেলে।

(৮) আপন চাচা অর্থাৎ বাপের সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।

(৯) আপন মামা অর্থাৎ, বাপের সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।

(১০) দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, উক্ত ছেলের ছেলে, দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের ছেলে ও তাদের ঔরসজাত যে কোন পুত্র সন্তান এবং দুধ সম্পর্কীয় মেয়েদের স্বামী|

(১১) দুধ সম্পর্কীয় বাপ, চাচা, মামা, দাদা, নানা ও তাদের ঊর্ধ্বতন পুরুষ।

(১২) দুধ সম্পর্কীয় ভাই, দুধ ভাইয়ের ছেলে, দুধ বোনের ছেলে এবং তাদের ঔরসজাত যে কোন পুত্র সন্তান।

(১৩) যৌন শক্তিহীন এমন বৃদ্ধ, যার মহিলাদের প্রতি কোন আকর্ষণ নেই এবং তার প্রতি মহিলাদেরও কোন আকর্ষণ নেই।

(১৪) অপ্রাপ্ত বয়স্ক এমন বালক, যার এখনও যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়নি।

উল্লেখ্য, ১৩ ও ১৪ নং বর্ণিত পুরুষদের সাথে বিবাহ জায়েয। মহিলার জন্য উপরোক্ত পুরুষগণ ব্যতীত অন্য কোন পুরুষের সাথে দেখা-সাক্ষাত করা জায়েয নেই, বরং তা সম্পূর্ণ নাজায়েয ও হারাম।

সুতরাং, মহিলাদের জন্য চাচাত ভাই, খালাত ভাই, ফুফাত ভাই, মামাত ভাই, দেবর, ভাশুর, খালু, ফুফা, চাচাত শ্বশুর, উকিল বাপ, ধর্মবাপ, ধর্মভাই, দুলাভাই, বেয়াই, ননদের জামাই ইত্যাদির সাথে দেখা-সাক্ষাত করা হারাম এবং তাদের সাথে বিবাহ শাদী জায়েয।

উল্লেখ্য,স্ত্রীর বর্তমানে বা তার ইদ্দতের সময় তার বোনকে বিবাহ করা হারাম। (সূরা-নূর-৩১,তাফসীরে মাযহারী-৬/৪৯৭-৫০২,মা‘আরিফুল কুরআন-৬/৪০১-৪০৫,হিদায়া-২/৩০৭, ফাতহুল কাদীর-২/১১৭)

26/05/2023

কবীরা গুনাহসমূহ

গুনাহে কবীরা তাওবা ছাড়া মাফ হয় না এবং একটি গুনাহই জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট, নিম্নে কিছু কবীরা গুনাহের তালিকা দেওয়া হল। যথা-

(১) শিরক করা।

(২) মা-বাপকে কষ্ট দেওয়া।

(৩) আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা।

(৪) যিনা ব্যভিচার করা।

(৫) চুরি করা।

(৬) অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা।

(৭) মিথ্যা অপবাদ লাগানো।

(৮) মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া।

(৯) না হক যাদু করা।

(১০) অঙ্গীকার ভঙ্গ করা।

(১১) আমানতের খেয়ানত করা।

(১২) গীবত করা।

(১৩) বিদ্রোহী বানানো অর্থাৎ, অধীনস্থদেরকে মালিকের বিরুদ্ধে উস্কানী দেয়া।

(১৪) নেশাযুক্ত জিনিষ পান করা।

(১৫) অবৈধ যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি করা।

(১৬) জুয়া খেলা ও লটারী ধরা।

(১৭) সূদ খাওয়া।

(১৮) ঘুষ খাওয়া।

(১৯) জোর-জুলুম করে অর্থ-সম্পদ লুটে নেয়া।

(২০) অনাথ এতিম, বিধবার মাল খাওয়া।

(২১) আল্লাহর ঘর যিয়ারতকারীদের সাথে দুর্ব্যবহার করা।

(২২) মিথ্যা কসম খাওয়া।

(২৩) কোন মুসলমানকে গালি দেয়া।

(২৪) জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা।

(২৫) ধোঁকা দেয়া।

(২৬) অহংকার করা।

(২৭) বাদ্য বাজনা সহ নাচ-গান করা।

(২৮) ডাকাতি করা, লুন্ঠন করা।

(২৯) স্বামীর নাফরমানী করা।

(৩০) জায়গা-জমির সীমানা নষ্ট করা।

(৩১) শ্রমিকের মজুরী কম দেয়া।

(৩২) মাপে কম দেয়া।

(৩৩) দ্রব্য-সামগ্রীতে ভেজাল মিশ্রিত করা।

(৩৪) খরিদ্দারকে ধোঁকা দেয়া।

(৩৫) স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে শর্তের সাথে হীলা করা।

(৩৬) নিজের অধীনস্থ মহিলাদিগকে পরপুরুষের সাথে অবাধ মেলা-মেশার সুযোগ দেয়া।

(৩৭) ঘোড় দৌড় বা রেস খেলা।

(৩৮) সিনেমা-টিভি ইত্যাদি দেখা।

(৩৯) পেশাব করে পানি না নেয়া বা পবিত্রতা অর্জন না করা।

(৪০) চোগলখুরী ও কূটনামী করা।

(৪১) গণকের কাছে যাওয়া।

(৪২) মানুষ বা জীবের ফটো তোলা, ঘরে রাখা বা টাঙ্গানো। উল্লেখ যে আজকাল অনেকে মনে করে যে, ক্যামেরা দ্বারা তোলা ছবি নিষিদ্ধ ছবির অন্তর্ভুক্ত নয়। এটি অতি মারাত্মক ভুল, কেননা হাদীস শরীফের বর্ণনা মতে কাপড়ে অংকিত ছবির কিয়ামত দিবসে কঠিন শাস্তির ব্যাপারেও ধমকি এসেছে। দেখুন: বুখারী শরীফ হা: নং ৫৯৬১। আর জানা কথা যে কাপড়ে অংকিত ছবি ও ক্যামেরার দ্বারা তোলা ছবির মধ্যে পার্থক্য করার কোন কারণ নেই। অনুরূপভাবে ভিডিওতে রেকর্ড করা ছবিও যেহেতু ছবির সকল উদ্দেশ্য খুব ভালভাবে পুরা করে কাজেই ভিডিওর ছবিও নিষিদ্ধ ছবির অন্তর্ভুক্ত।

(৪৩) পুরুষের জন্য স্বর্ণের আংটি বা যে কোন ধরনের অলংকার পরা।

(৪৪) পুরুষের জন্য রেশমী কাপড় পরা।

(৪৫) মেয়ে লোকের জন্য শরীরের রূপ ও গঠন প্রকাশ পায় এমন পোশাক পরিধান করা।

(৪৬) ঝগড়া-বিবাদে মিথ্যা মোকাদ্দমা দায়ের করা।

(৪৭) মৃত ব্যক্তির জায়িয ওসীয়ত পালন না করা।

(৪৮) কোন মুসলমানকে ধোঁকা দেওয়া।

(৪৯) গুপ্তচরবৃত্তি করা অর্থাৎ, মুসলমান সমাজ ও রাষ্ট্রের গোপন কথা অন্য সমাজ বা রাষ্ট্রের নিকট প্রকাশ করা।

(৫০) নর হয়ে নারীর এবং নারী হয়ে নরের বেশ-ভূষা অবলম্বন করা।

(৫১) টাকা বা নোট জাল করা।

(৫২) অন্তর এত শক্ত করা যে, গরীব দুঃখীর সীমাহীন কষ্ট দেখেও দরদ না লাগা।

(৫৩) ইসলামী রাষ্ট্রের সীমান্ত পাহারায় ত্রুটি করা এবং দেশের জরুরী খাদ্য বা হাতিয়ার পাচার করা।

(৫৪) রাস্তা-ঘাটে বা ছায়াদার ফলদার বৃক্ষের নীচে পায়খানা করা।

(৫৫) ঘরবাড়ী, আঙ্গিনা, আসবাবপত্র, থালা-বাসন, কাপড়-চোপর নোংরা রাখা এবং ভ্রান্ত ধ্যান-ধারনায় মন-মস্তিস্ক গান্ধা করে রাখা।

(৫৬) হায়িয বা নিফাস অবস্থায় স্ত্রী সম্ভোগ করা।

(৫৭) যাকাত না দেয়া।

(৫৮) ইচ্ছা করে কোন নামায কাযা করা।

(৫৯) রমযানের কোন রোযা ইচ্ছা করে ভেঙ্গে ফেলা বা না রাখা।

(৬০) জনগণের কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও জীবিকা নির্বাহোপযোগী খাদ্য-দ্রব্য গুদামজাত করা।

(৬১) ষাঁড় দ্বারা গাভীর এবং পাঠার দ্বারা ছাগীর পাল দিতে না দেওয়া।

(৬২) পাড়া-প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া।

(৬৩) সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ভিক্ষাবৃত্তি করা।

(৬৪) পেশাদার ভিক্ষুককে ভিক্ষা দেয়া।

(৬৫) জনগণ যাকে চায়না সে ব্যক্তির বাদশাহী বা নেতৃত্ব করা।

(৬৬) নিজের দোষ না দেখে পরের দোষ দেখা।

(৬৭) বদগুমানী বা কারো প্রতি খারাপ ধারনা রাখা।

(৬৮) ইলমে দীনকে তুচ্ছ মনে করে অর্জন না করা।

(৬৯) বিনা জরুরতে জনসম্মুখে সতর খোলা।

(৭০) মেহমানের খাতিরে আদর যত্ন ও অভ্যর্থনা না করা।

(৭১) ছেলেদের সঙ্গে কুকর্ম বা সমকাম করা।

(৭২) আমানতের যোগ্য সৎকর্মীকে নিযুক্ত বা নির্বাচন না করে স্বজন প্রীতি করা।

(৭৩) নিজে ইচ্ছা করে বা দাবী করে জোরপূর্বক কোন পদ গ্রহণ করা।

(৭৪) ইসলামী রাষ্ট্রের বিদ্রোহী হওয়া।

(৭৫) নিজের পরিবার-পরিজনের খবর না নিয়ে তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতের কষ্টে ফেলা।

(৭৬) খতনা না করা।

(৭৭) অসৎ কাজ দেখে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বাধা না দেয়া।

(৭৮)অন্যায়ের সমর্থন করা।

(৭৯) আত্মহত্যা করা।

(৮০) ফরয গোসলে অনর্থক দেরী করা।

(৮১) পেশাব-পায়খানা করে ঢিলা-কুলুখ বা পানি ব্যবহার না করা।

(৮২) নাভীর নীচের পশম, বগলের পশম, নখ বর্ধিত করে রাখা।

(৮৩) উস্তাদ ও পীরের সঙ্গে বেয়াদবী করা, এবং আলেম ও হাফেজদের অমর্যাদা করা।

(৮৪) শুকরের গোশত খাওয়া।

(৮৫) হস্ত মৈথুন করা।

(৮৬)তামাশা দেখার জন্য ষাঁড়, কবুতর বা মোরগ ইত্যাদি লড়াইয়ের আয়োজন করা।

(৮৭) কুরআন শরীফ পড়ে ভুলে যাওয়া।

(৮৮) কোন জীবন্ত ও জানদার জীবকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ,মারা।

(৮৯) আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হওয়া।

(৯০) আল্লাহর আযাব হতে নির্ভীক হওয়া।

(৯১) হালাল জানোয়ারকে গাইরুল্লাহর নামে যবেহ করা বা ভিন্ন উপায়ে মেরে খাওয়া।

(৯২) অপচয় বা অপব্যয় করা।

(৯৩) বখিলী কানজূসী করা।

(৯৪) রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ইসলামী আইন প্রবর্তন না করা।

(৯৫) ইসলামের নিয়মানুসারে আইন-কানুন জারী হওয়া সত্ত্বেও কোন আইন অমান্য করা বা রাষ্ট্রদ্রোহিতা করা।

(৯৬) ডাকাতি, লুটতরাজ, পকেটমারী করা।

(৯৭) তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের সহিত ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে কাউকে ডাকা, যেমন- হে জোলা, বান্দীর বাচ্চা ইত্যাদি।

(৯৮) বিনা অনুমতিতে কারো বাড়ীতে বা ঘরে বা খাস কামরায় প্রবেশ করা।

(৯৯) মানুষের কষ্ট হয় এমন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখে খুশী হওয়া।

(১০০) সুরত-শেকেলের কারণে বা গরীব হওয়ার কারণে কোন মুসলমানকে টিটকারী করা।

(১০১) বিদআত কাজ করা বা জারি করা।

(১০২) দুনিয়া হাসিলের জন্য ইলমে দীন শিক্ষা দেয়া।

(১০৩) ইলম গোপন করা।

(১০৪) জাল হাদীস বর্ণনা করা।

(১০৫) গুনাহের কাজে মান্নত করা।

(১০৬) প্রজাদের অধিকার খর্ব করা, জনগণের হক আদায় না করা।

(১০৭) অবৈধ ট্যাক্স উসূল করা।

(১০৮) বিনা ঠেকায় ঋণ করে ঋণী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা।

(১০৯) দুমুখো স্বভাব ইখতিয়ার করা।

(১১০) মহিলাদের খুশবু লাগিয়ে বাহিরে বের হওয়া।

(১১১) বিজাতিদের অনুকরণ করা।

(১১২) গোঁফ বড় করে রাখা।

(১১৩) অন্যের চুল ব্যবহার করা।

(১১৪) যথার্থ কারণ ছাড়া কাউকে অভিশাপ দেয়া।

(১১৫) অহেতুক কুকুর প্রতিপালন করা।

(১১৬) মাতম ও শোক প্রকাশ করা।

(১১৭) একাধিক স্ত্রীদের মধ্যে সমতা রক্ষা না করা।

(১১৮) সাহাবায়ে কেরামকে মন্দ বলা বা সমালোচনা করা।

(১১৯) হক্কানী উলামায়ে কেরামের সাথে বিদ্বেষভাব পোষণ করা।

(১২০) বিনা দাওয়াতে মেহমান হয়ে আহার করা।

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে কবিরা ও সগিরা গুনাহ মাফ করে দাও

25/05/2023

জিজ্ঞাসাঃ

গোসল করার পূর্বে আমরা যে উযু করি, গোসল করার পরে নামায পড়ার জন্য আবার নতুন উযু করতে হবে কি-না? প্রমাণসহ জানালে উপকৃত হব।

জবাবঃ

গোসল করার পূর্বে উযু করা হোক বা না হোক, গোসল করার পরে নামায পড়ার জন্য আবার নতুন করে উযু করতে হবে না। গোসলের পূর্বের উযু বা শুধু গোসল দ্বারা নামায হয়ে যাবে। কেননা গোসলের মধ্যে উযুর অঙ্গ ধৌত হয়ে যায়। এ কারণে গোসলের পরে আবার নামাযের জন্য উযু করলে অপব্যয় হওয়ার কারণে মাকরূহ হবে। তবে উযু থাকা অবস্থায় আবার উযু করতে চাইলে, সেখানে মাসআলা হল- প্রথম উযু দ্বারা এমন কোন ইবাদত করবে যা উযু ব্যতীত করা যায় না। যেমন কমপক্ষে দু’রাকাআত নামায পড়া। অবশ্য যদি কেউ পবিত্রতার নিয়্যত ব্যতীত গোসল করে এবং পূর্বে উযু না করে তাহলে সে ক্ষেত্রে উযুর সওয়াব প্রাপ্তির জন্য পুনঃ উযু করা মুস্তাহাব। [প্রমাণঃ আহসানুল ফাতাওয়া ২:৯, আপকে মাসাইল আওর উনকা হল, ২:২৭, রদ্দুল মুহতার ১:১১৯]

لو تكرر الوضوء في مجلس واحد مرارا لم يستحب بل يكره لما فيه من الاسراف . (رد المحتار:1/191

الوضوء إذا لم يؤد به عمل مما هو المقصود من شرعيته كالصلوات وسجدة التلاوة ومس المصحف ينبغي ان لايشرع تكراره قربة لكونه غير مقصود لذاته فيكون اسرافا محضا. (رد الحتار:1/119

23/05/2023

মুনাজাতের গুরুত্ব ও ফযীলত

باسمه تعالي

মুমিন বান্দার জীবনে দু‘আ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। দুনিয়া ও আখিরাতে সকল আশা আকাংখা পূরণ হওয়া, সব ধরণের কল্যাণ ও মঙ্গল লাভ করা এবং সর্বপ্রকার বালা-মুসীবত ও অকল্যাণ-অমঙ্গল থেকে নিরাপদ থাকার একটি অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে দু‘আ। বান্দা যখন আল্লাহকে ডাকে, আল্লাহর কাছে দু‘আ করে আল্লাহ তার ডাকে সাড়া দেন। তার দু‘আ কবুল করেন। তার প্রতি সন্তুষ্ট হন। তার গুনাহ ক্ষমা করেন। তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে-

اُدْعُوْنـِيْ اَسْتَجِبْ لَكُمْ اِنَّ الَّذِيْنَ يَسْتَكْبِرُوْنَ عَنْ عِبَادَتِيْ سَيَدْخُلُوْنَ جَهَنَّمَ دَاخِرِيْنَ.

অর্থ: তোমরা আমার কাছে দু‘আ করো, আমি তোমাদের দু‘আ কবুল করব। যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকবে (অর্থাৎ, আমার কাছে দু‘আ করার ব্যাপারে অহংকার করবে) তারা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। (সূরা মু’মিন, আয়াত: ৬০)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে-

وَاِذَا سَاَلَكَ عِبَادِيْ عَنِّيْ فَاِنِّيْ قَرِيْبٌ اُجِيْبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيْبُوْا لِيْ وَلْيُؤْمِنُوْا بِيْ لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُوْنَ .

অর্থ: যখন আপনার কাছে আমার বান্দারা আমার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে তখন তাদেরকে বলুন নিশ্চয় আমি তাদের নিকটে আছি। দু‘আকারী যখন আমার কাছে দু‘আ করে তখন আমি তার দু‘আ কবুল করি,সুতরাং তারাও (আমার বান্দারাও)যেন আমার কথায় সাড়া দেয়। (আমার আদেশ-নিষেধ মেনে নেয়)আমার প্রতি ঈমান রাখে,তাহলে তারা সঠিক পথ প্রাপ্ত হবে। (সূরা বাকারা, আয়াত:১৮৬)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

اَلدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ

অর্থ: দু‘আই হচ্ছে ইবাদত। (তিরমিযী, হাদীস:২৯৬৯)

তিনি আরো বলেন-

اَلدُّعَاءُ مُخُّ الْعِبَادَةِ

দু‘আ হচ্ছে ইবাদতের মগজ। (তিরমিযী, হাদীস:৩৩৭১)

তিনি আরো বলেন-

لَيْسَ شَيْءٌ اَكْرَمَ عَلَى اللهِ تَعَالٰى مِنَ الدُّعَاءِ

অর্থ: আল্লাহর নিকট দু‘আর চেয়ে অধিক প্রিয় ও মর্যাদাপূর্ণ কোনো জিনিস নেই। (তিরমিযী, হাদীস:৩৩৭০)

তিনি আরো ইরশাদ করেন-

مَنْ لَمْ يَسْاَلِ اللهَ يَغْضَبْ عَلَيْهِ

অর্থ: যে আল্লাহর কাছে চায়না আল্লাহ তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন। (তিরমিযী, হাদীস:৩৩৭৩)

তিনি আরো বলেন,

اَلدُّعَاءُ سِلاَحُ الْمُؤْمِنِ وَعِمَادُ الدِّيْنِ وَنُوْرُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ

অর্থ: দু‘আ মুমিনের অস্ত্র, দীনের স্তম্ভ, আসমান ও যমীনের নূর। (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস:১৮১২)

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন,

اِنَّ الرَّجُلَ لَيُحْرَمُ الرِّزْقَ بِالذَّنْبِ يُصِيْبُهُ وَلَا يَرُدُّ الْقَدَرَ اِلَّا الدُّعَاءُ وَلَا يَزِيْدُ فِي الْعُمُرِ اِلَّا الْبِرُّ.

অর্থ: নিশ্চয় মানুষ রিযিক থেকে বঞ্চিত হয় তার কৃত গুনাহের কারণে, দু‘আই কেবলমাত্র তাকদীরকে পরিবর্তন করতে পারে আর নেক কাজই একমাত্র হায়াত বৃদ্ধি করতে পারে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস: ২২৩৮৬)

প্রিয় পাঠক! উপরোক্ত আয়াত ও হাদীসের দ্বারা আমরা দু‘আর গুরুত্ব ও ফজীলত বুঝতে পেরেছি। এখন আমরা দু‘আর সুন্নাত তরীকা এবং দু‘আ কবুলের জন্য সহায়ক আমল সমূহের বর্ণনা পরবর্তী সময়ে করব। ইনশাআল্লাহ

23/05/2023

৩৩. চল্লিশা করা বিদ‘আত এবং হিন্দুয়ানী প্রথা

হযরতওয়ালা মুফতী সাহেব হুজুর দামাত বারাকাতুহুম বলেন, মৃত্যুর ৪০ দিন পর চল্লিশা, কুলখানীর ব্যবস্থা করা বিদ‘আত। যা হিন্দুদের শ্রাদ্ধ পালন থেকেও অদ্ভুত। হিন্দুরা মৃত্যুর ৪০ দিন পর শ্রাদ্ধ খাওয়ায়। এর দেখাদেখি মুসলমানরা চল্লিশা খাওয়ায়। হিন্দুদের অনুসরন করে। এসকল হারাম কাজ থেকে বিরত থাকা অত্যান্ত জরুরী। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে বলেছেন,

يآايها الذين آمنوا ادخلوا فى السلم كافة

“হে! ঈমানদারগণ তোমরা পরিপূর্ণরুপে ইসলামে প্রবেশ কর।” আর পরিপূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশের জন্য এ-জাতিয় গর্হিত কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে।

শাইখুল হাদীস মুফতী মনসূরুল হক দা.বা.
জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা

Address

Mahanganj, Netrokona
Dhaka
2446

Telephone

+8801957164017

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Islamic Jibon.01 posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Islamic Jibon.01:

Share