23/01/2024
হক হালালি অথেনটিক কিছু কথা:
শরীফ ও শরীফার গল্পের প্রথম দুই লাইন আগে দেখি কি লেখা আছে সেখানে।
"ছোটবেলায় সবাই আমাকে ছেলে বলতো।আমার শরীরটা ছেলেদের মতো হলেও আমি মনে মনে একজন মেয়ে।"
এই বক্তব্য তো হিজড়াদের বক্তব্য না।
মেডিকেল সায়েন্স তো হিজড়াদের নিয়ে যেই বক্তব্য দেয়,আর শরীফ শরীফার গল্প শুরুতে যেই বক্তব্য দেয়,তা আকাশ পাতাল ব্যবধান।
আমার শরীরটা ছেলেদের মতো হলেও আমি মনে মনে একজন মেয়ে।
তাহলে তার সমস্যা শরীরে না।
মনের মধ্যে।
পুরুষ বা নারী হয়ে জন্ম নেওয়ার পর মনে মনে পুরুষ হলে নিজেকে নারী ভাবা,নারী হলে মনে মনে নিজেকে পুরুষ ভাবা।
এটাকে আগে বলা হলো Gender identity disorder
এটা ছিলো একটা মানসিক রোগ।
এটার চিকিৎসা আছে।সাইকোথেরাপি দিয়ে এদের মনে মনে এক লিঙ্গের হয়ে নিজেকে অন্য লিঙ্গের ভাবা রোগটা দূর করে তাদের সুস্থ করে তোলা যেতো।
তারপর দুরভিসন্ধি থেকে Gender identity disorder কে নাম পালটে রাখা হলো Gender Dysphoria
পক্ষান্তরে মেডিকেল সায়েন্স হিজড়াদের বলছে ইন্টারসেক্স। মানে একই শরীরে পুরুষ ও মহিলার বৈশিষ্ট্য।
এদের ক্রোমোজমে সমস্যা হয়।আবার ক্রোমোজম ঠিক থাকলেও পুরুষের শরীরে নারী সেক্স অরগ্যান বা নারী শরীরে পুরুষ সেক্স অরগ্যান ডেভেলপ করায় তাদের জন্মগত ত্রুটি ও বিকাশ জনিত সমস্যাকে বলা হতো Hermaphrodite।
আমরা এদেরকে হিজড়া বলে চিনেছি।
এখন তিন ধরনের হিজড়া আছে।
True hermaphrodite এরা খুব রেয়ার।
Male pseudo hermaphrodite
এদের মেডিকেল, সার্জিক্যাল, হরমোনাল চিকিৎসা চিকিৎসার মাধ্যমে এদেরকে পুরোপুরি পুরুষ হিসেবে গড়ে তোলা যায়।
এরা বাবা হতে পারেন।সন্তান জন্ম দিতে পারেন।
Female pseudo hermaphrodite
এদের মেডিকেল, সার্জিক্যাল,হরমোনাল চিকিৎসার মাধ্যমে এদেরকে পুরোপুরি নারী হিসেবে গড়ে তোলা যায়।
এরা মা হতে পারেন।সন্তান ধারণ করতে পারেন।
হিজড়ারা নিজ ইচ্ছায় হিজড়া হতে পারেন না।
আল্লাহ তাদের এভাবে সৃষ্টি করেন।
তাদের প্রতি মানবিক আচরণ করা, চিকিৎসা নিশ্চিত করে সুস্থ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে, পরিবার,সমাজ, রাষ্টের দায়িত্ব আছে।
এদের অধিকার রাষ্ট্র ও ধর্ম সবাই স্বীকার করে।
ইসলাম ধর্মে এদের অধিকার সুরক্ষিত রাখা হয়েছে।
সৌদি ফতওয়া বোর্ড চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী এদের অপারেশন করে একটা স্পেসিফিক জেন্ডারে রুপান্তর করাকে সহীহ বলে মত দিয়েছে অনেক আগেই।
হিজড়াদের নিয়ে কারো আপত্তি নেই।
আপত্তি আছে হিজড়াদের চাঁদাবাজি,বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড নিয়ে।
হিজড়াদের মাধ্যমে সেক্সুয়াল ট্রান্সমিটেড ডিজিজ সমাজে ছড়িয়ে পরার ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার আছে।
হিজড়াদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করা নিয়ে কারো আপত্তি থাকার কথা নেই।
তাদের চিকিৎসা নিয়ে,তাদের কর্মসংস্থান নিয়ে কাজ করতে হবে রাষ্ট্রকে।
বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী ও এনজিওরা তাদের নিয়ে কাজ করে।এটা প্রশংসনীয়।
এবার ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক আলাপ।
এই কনসেপ্ট L*G*B*T এর সাথে সম্পর্কিত।
একজনের শরীর সৃষ্টিকর্তা পুরুষ হিসেবে গড়ে দুনিয়ায় পাঠালেন কিন্ত সে মনে মনে নারী ভাবা শুরু করে পুরুষ থেকে নারী হতে চায়।
এটা মানসিক রোগ হবার পরেও তাদের চিকিৎসা নিয়ে কথা না বলে তাদের প্রমোট করার দুরভিসন্ধিটা কি?
এদের জন্মগত ত্রুটি নেই।
ক্রোমোজমে ডিফেক্ট নেই।পুরুষ শরীরে মেয়েলি কোন টিস্যুর উপস্থিতি নেই।হরমোনাল ইমব্যালেন্স নেই।
কোন সমস্যা ই নেই।
সমস্যা এক জায়গায় তা মনের মধ্য।
চিকিৎসায় সেটা শোধরানো যায়।
এবার বাস্তবে ফিরে আসি।
কিছুদিন আগে NSU তে ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যালে বক্তব্য দেওয়া নিয়ে যেই ট্রান্সজেন্ডারকে নিয়ে তুমুল বিতর্ক উঠলো।
সে নিজেকে নিয়ে কি বলছে?
I have a p***s and I'm woman
খুব ভালো কথা।
তিনি পেনিসওয়ালা আপা।এই আপা এখন জীবন সঙ্গী,প্রেমিকা,স্ত্রী হিসেবে কাকে বাছাই করবেন?
নিশ্চয়ই পেনিসওয়ালা আপা কে নয়।সেটা তো তবে লেসবিয়ান হয়ে যাচ্ছে ব্যাপারটা।
তিনি তো এখন পেনিসওয়ালা আপা।নিজেকে তিনি নারী দাবী করেন।
সুতরাং তার দরকার একজন পুরুষ সঙ্গী।
পুরুষ সঙ্গী ও পেনিসওয়ালা আপা মিলে যা ভাব ভালোবাসা বিনিময় হবে তা কি সমকামিতা নয়?
তাহলে সেই পেনিসওয়ালা আপার পুরুষ হয়ে নারী সাজার প্রকারান্তরে তারা হোমোসেক্সুয়ালিটি প্রমোট করবেন না?
এই পেনিসওয়ালা আপা কি চাইলে মা হতে পারবেন?
তাহলে তাদের বংশবৃদ্ধি কিভাবে ঘটবে?
সমাজকে তারা কি বার্তা দিতে চান পুরুষ থেকে নারী সেজে।
ট্রান্সজেন্ডারদের মধ্যে যারা অপারেশন করে, হরমোন থেরাপি নিয়ে Assign S*x চেঞ্জ করে বিপরীত সেক্সের হয়ে যান, তাদের বলে Transsexual।
এরা তো আর চাইলেও আগের সেক্সে ফিরতে পারবেন না।
সমাজ ও সভ্যতা বিনষ্টকারী এই ক্যান্সার এখনই রুখে দিতে সচেতন ভাবে প্রতিবাদ করতে হবে সবাইকে।
এদের উদ্দেশ্য ভালো না।
এদের মিষ্টি কথার আড়ালে বদমায়েশি লুকায়িত।
এবার দেখুন শরীফার গল্পটা হিজড়াদের নিয়ে হলে ভুল ডেফিনেশন দিয়ে সেটা শুরু কেন।
তারপর নিচের ছবি দুটোতে শিক্ষক সহায়িকাতে পড়ে দেখুন ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে আলাপ আছে কিনা?
দেশের সাধারণ মানুষ শরীফার গল্পের দুই লাইন পড়েই এই চালাকিটা ধরে ফেললো যে, হিজড়াদের নিয়ে বয়ানের আড়ালে এটা ট্রান্সজেন্ডার মতবাদকে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠা করে রংধনুওয়ালাদের স্বীকৃতি দেওয়ার একটা অপচেষ্টা।
L*G*B*T তে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার অপপ্রয়াসের একটা কৌশল হিসেবে এই গল্প গাঁথা হয়েছে ক্লাস সেভেন এর বইয়ে।
ট্রান্সজেন্ডার আর হিজড়া এক নয়।
হিজড়াদের প্রতি মানবিক হউন।
তাদের চিকিৎসা নিয়ে কথা বলুন।তাদের সুস্থ জীবন ও পারিবারিক জীবন ফিরিয়ে দিয়ে তাদের মেইনস্ট্রিম জীবনধারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করুন।সাধুবাদ জানাবো।
কিন্ত হিজড়াদের প্রতি মেকি সহানুভূতি দেখিয়ে ট্রান্সজেন্ডার এর মতো জাতি বিধ্বংসী মতবাদ প্রতিষ্ঠা করে সমকামিতার প্রচার ও প্রসার ঘটিয়ে জাতির ভাগ্যে কাওমে লুতের মতো আজাব ডেকে আনার অপচেষ্টাকে যেকোনো ধর্মপ্রাণ নাগরিক মেনে নিবেনা,নিতে পারেন না।
আপনারা সুশীলরা তাদেরকে ধর্মান্ধ বলে গালি দিলেও তারা তা মানবেনা কোনভাবেই।
-ডা: আহমেদ জোবায়ের।