06/09/2025
বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার পাশাপাশি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে আজ শনিবার দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এক আন্তর্জাতিক সেমিনার। জুলাই বিপ্লবে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতের পক্ষ থেকে গত এক বছর ধরে বাংলাদেশবিরোধী যেসব মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ও বয়ান তুলে ধরা হয়েছে সেমিনারেও সেসব স্থান পাবে। দিল্লি ও ঢাকার একাধিক কূটনৈতিক সূত্র আমার দেশকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
রাজনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা দিল্লির এ অপতৎপরতাকে বাংলাদেশবিরোধী প্রোপাগান্ডা আখ্যা দিয়ে বলছেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে পতিত আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পথ খুঁজছে ভারত। দিল্লি বারবার ঢাকাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়বে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সব রাজনৈতিক দলের ঐক্য জরুরি।
জানা যায়, ওই সেমিনারের শিরোনাম ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক : নতুন ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব’। এটি আয়োজন করছে দিল্লিভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাংক ‘গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডিফেন্স নিউজ’। সেমিনারে ভারতের সামরিক বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন থিঙ্ক ট্যাংকে কর্মরত সামরিক-বেসামরিক আমলাদের পাশাপাশি চারজন বাংলাদেশি ‘রিসোর্স পারসনও’ অংশ নিচ্ছেন, যা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। সেমিনারে আমন্ত্রিত বাংলাদেশি রিসোর্স পারসনদের মধ্যে রয়েছেনÑসিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ বদরুল আহসান, লেখক এবং শিক্ষাবিদ ড. আবুল হাসনাত মিল্টন, জুলাই বিপ্লবের পর পালিয়ে যাওয়া মরক্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশিদ এবং ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। তারা সবাই বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিশেষ সুবিধাভোগী এবং ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে সুপরিচিত।
দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশি এই চার রিসোর্স পারসন ভারতের ‘ডিপ স্টেট’-এর সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। ডিপ স্টেটের নীতিনির্ধারকরা চাচ্ছেন বাংলাদেশিদের দিয়েই বাংলাদেশবিরোধী বয়ান তুলে ধরতে।
গত এক বছর ভারত তার বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতায় নিজেদের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, বুদ্ধিজীবী, মিডিয়াসহ অন্যান্য রিসোর্স ব্যবহার করেছে। তবে এই প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে তারা বাংলাদেশি রিসোর্স ব্যবহার করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থান, সংখ্যালঘু নির্যাতন, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য দৃঢ় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের প্রয়োজনীয়তার মতো বিষয়গুলোর ওপর আলোচনা করবেন এই চার বাংলাদেশি।