12/09/2025
সকালের জিকির সমূহ
السَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
হিসনুস মুসলিম এ সংকলিত সকালের দোয়া যা ফজরের নামাজের পর জিকির হিসেবে আমরা করতে পারি তার একটা তালিকা দিলাম । দয়া করে যাচাই করে তারপর আপনার সকালের জিকিরের list এ রেখে দিতে পারেন । হারফ এবং বাংলা উচ্চারণ ও যথাসম্ভব কাছাকাছি অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি ।
১. দিনের সূচনা
আরবি:
اللَّهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا، وَبِكَ أَمْسَيْنَا، وَبِكَ نَحْيَا، وَبِكَ نَمُوتُ وَإِلَيْكَ النُّشُورُ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা বিকা আসবাহনা, ওয়া বিকা আমসাইনা, ওয়া বিকা নাহইয়া, ওয়া বিকা নামূতু ওয়া ইলাইকান নুশূর।
বাংলা অর্থ:
"হে আল্লাহ! আপনারই অনুগ্রহে আমরা প্রত্যুষে উপনীত হই এবং আপনারই অনুগ্রহে সন্ধ্যায় উপনীত হই। আপনারই মর্জি মতো আমরা জীবিত রয়েছি, আপনারই ইচ্ছায় আমরা মৃত্যুবরণ করবো, আর আপনারই দিকে কিয়ামত দিবসে উত্থিত হতে হবে।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ১ বার।
মূল রেফারেন্স:
সুনান আত-তিরমিযী, হাদিস নং: ৩৩৯১; সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং: ৫০৬৮। ইমাম তিরমিযী হাদিসটিকে 'হাসান সহীহ' বলেছেন এবং শাইখ আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।
২. সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দু'আ)
আরবি:
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَىٰ عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ، وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী লা ইলাহা ইল্লা আনতা, খলাক্বতানী ওয়া আনা আব্দুকা, ওয়া আনা 'আলা আহদিকা ওয়া ওয়া'দিকা মাসতাত্বা'তু। আ'ঊযুবিকা মিন শাররি মা সনা'তু, আবূউ লাকা বিনি'মাতিকা 'আলাইয়্যা, ওয়া আবূউ বিযাম্বী, ফাগফির লী, ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা আনতা।
বাংলা অর্থ:
"হে আল্লাহ! আপনি আমার রব, আপনি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন উপাস্য নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি আপনার বান্দা। আর আমি আমার সাধ্যমতো আপনার প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হতে আপনার আশ্রয় ভিক্ষা করছি, আমি আমার প্রতি আপনার নিয়ামতের স্বীকৃতি প্রদান করছি, আর আমি আমার গুনাহ স্বীকার করছি। অতএব আপনি আমাকে মাফ করে দিন, নিশ্চয় আপনি ভিন্ন আর কেউই গুনাহসমূহের মার্জনাকারী নাই।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ১ বার।
মূল রেফারেন্স:
সহীহ বুখারী, হাদিস নং: ৬৩০৬।
৩. সাক্ষ্য প্রদান
আরবি:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَصْبَحْتُ أُشْهِدُكَ وَأُشْهِدُ حَمَلَةَ عَرْشِكَ، وَمَلَائِكَتَكَ، وَجَمِيعَ خَلْقِكَ، أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنْتَ وَحْدَكَ لَا شَرِيكَ لَكَ، وَأَنَّ مُحَمَدًا عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্নী আসবাহতু উশহিদুকা ওয়া উশহিদু হামালাতা 'আরশিকা, ওয়া মালাইকাতাকা, ওয়া জামী'আ খলক্বিকা, আন্নাকা আনতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনতা ওয়াহদাকা লা শারীকা লাকা, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান 'আবদুকা ওয়া রাসূলুকা।
বাংলা অর্থ:
"হে আল্লাহ! আপনার অনুগ্রহে সকালে উপনীত হয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছি আপনার আরশ বহনকারীদের এবং আপনার সকল ফেরেশতার ও আপনার সকল সৃষ্টির। নিশ্চয় আপনি আল্লাহ, আপনি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কেহ নেই, আপনি একক, আপনার কোন শরীক নেই। আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার বান্দাহ এবং রাসূল।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ৪ বার।
মূল রেফারেন্স:
সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং: ৫০৬৯। শাইখ আলবানী হাদিসটির সনদকে হাসান বলেছেন।
৪. শারীরিক সুস্থতার জন্য
আরবি:
اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِي، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي سَمْعِي، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَصَرِي، لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنْتَ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা আ-ফিনী ফী বাদানী, আল্লাহুম্মা আ-ফিনী ফী সাম'য়ী, আল্লাহুম্মা আ-ফিনী ফী বাসরী, লা ইলাহা ইল্লা আনতা।
বাংলা অর্থ:
"হে আল্লাহ! আপনি আমার দেহের নিরাপত্তা দান করুন, আমার কর্ণের নিরাপত্তা দান করুন, আমার চক্ষুতে নিরাপত্তা প্রদান করুন। আল্লাহ, আপনি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মা'বুদ নেই।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ৩ বার।
মূল রেফারেন্স:
সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং: ৫০৯০। শাইখ আলবানী হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।
৫. সকল দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি
আরবি:
حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ
বাংলা উচ্চারণ:
হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া 'আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রব্বুল 'আরশিল 'আযীম।
বাংলা অর্থ:
"আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মা'বুদ নেই, আমি তাঁর উপর নির্ভর করি, তিনি মহান আরশের প্রতিপালক।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ৭ বার।
মূল রেফারেন্স:
সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং: ৫০৮১। হাদিসটি আবু দারদা (রাঃ) থেকে মাওকুফ সূত্রে বর্ণিত এবং এর সনদ সহীহ।
৬. সব ধরনের অনিষ্ট থেকে রক্ষা
আরবি:
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ
وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
বাংলা উচ্চারণ:
বিসমিল্লাহিল্লাযী লা ইয়াদ্বুররু মা'আসমিহী শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিস সামা-ই, ওয়া হুয়াস সামী'উল 'আলীম।
বাংলা অর্থ:
"আমি সেই আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি, যাঁর নামে শুরু করলে আকাশ ও পৃথিবীর কোন বস্তুই কোন রূপ অনিষ্ট সাধন করতে পারে না। বস্তুত তিনি হচ্ছেন সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ৩ বার।
মূল রেফারেন্স:
সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং: ৫০৮৮; সুনান আত-তিরমিযী, হাদিস নং: ৩৩৮৮। শাইখ আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।
৭. সন্তুষ্টির ঘোষণা
আরবি:
رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا، وَبِمُحَمَّدٍ ﷺ نَبِيًّا
বাংলা উচ্চারণ:
রদ্বীতু বিল্লাহি রব্বান, ওয়া বিল-ইসলামি দ্বীনান, ওয়া বিমুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা নাবিয়্যান।
বাংলা অর্থ:
"আমি আল্লাহকে রব হিসাবে, ইসলামকে দ্বীন হিসাবে এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবী রূপে পেয়ে পরিতুষ্ট।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ৩ বার।
মূল রেফারেন্স:
মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং: ১৮৯৬৭; সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং: ৫০৭২; সুনান আত-তিরমিযী, হাদিস নং: ৩৩৮৯। হাদিসটি হাসান।
৮. রহমতের আরজি
আরবি:
يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيثُ، أَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ، وَلَا تَكِلْنِي إِلَىٰ نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ
বাংলা উচ্চারণ:
ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা আসতাগীছ, আসলিহ লী শা'নী কুল্লাহূ, ওয়ালা তাকিলনী ইলা নাফসী ত্বরফাতা 'আইন।
বাংলা অর্থ:
"হে চিরঞ্জীব, হে চিরসংরক্ষক, আপনার রহমতের জন্য আমি আপনার দরবারে জানাই আমার সকাতর নিবেদন। আপনি আমার অবস্থা সংশোধন করে দিন, আপনি চোখের পলক পরিমাণ সময়ের জন্যেও আমাকে নিজের উপর ছেড়ে দিবেন না।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ১ বার।
মূল রেফারেন্স:
হাদিসটি আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। শাইখ আলবানী 'সিলসিলা সহীহা' (২২৭) গ্রন্থে হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।
৯. দিনের বরকতের কামনা
আরবি:
أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَ هَٰذَا الْيَوْمِ: فَتْحَهُ، وَنَصْرَهُ، وَنُورَهُ، وَبَرَكَتَهُ، وَهُدَاهُ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا فِيهِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهُ
বাংলা উচ্চারণ:
আসবাহনা ওয়া আসবাহাল মুলকু লিল্লাহি রব্বিল 'আলামীন। আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা খাইরা হাযাল ইয়াউমি: ফাতহাহূ, ওয়া নাসরাহূ, ওয়া নূরাহূ, ওয়া বারাকাতাহূ, ওয়া হুদাহূ। ওয়া আ'ঊযুবিকা মিন শাররি মা ফীহি ওয়া শাররি মা বা'দাহূ।
বাংলা অর্থ:
"সকল জগতের প্রতিপালক আল্লাহর অনুগ্রহে আমরা এবং সকল জগত প্রাতে উপনীত হলাম। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কামনা করি এই দিনের কল্যাণ, বিজয় ও আপনার সাহায্য, নূর ও বরকত এবং হেদায়াত। আর এই দিনের এবং এই দিনের পরের অকল্যাণ থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ১ বার।
মূল রেফারেন্স:
এটি একটি দীর্ঘ হাদিসের অংশ যা সহীহ মুসলিমে (হাদিস নং: ২৭২৩) বর্ণিত আছে, তবে এই নির্দিষ্ট পাঠটি অন্যান্য হাদিস গ্রন্থ থেকেও সংকলিত।
১০. তাওহীদ ও প্রশংসার ঘোষণা
আরবি:
لَا إِلَٰهَ إِلَّا اللَّهُ، وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
বাংলা উচ্চারণ:
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া 'আলা কুল্লি শাই'ইন ক্বাদীর।
বাংলা অর্থ:
"আল্লাহ ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য কোন ইলাহ নেই, তিনি একক। তাঁর কোন অংশীদার নেই, রাজত্ব তাঁরই জন্য। সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনি সকল বিষয়ের উপর সর্বশক্তিমান।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
কোন কোন রেয়াতে সকালে ১০০ বার বলা হয়েছে । তবে বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন । আলেমদের কাছ থেকে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন ।
মূল রেফারেন্স:
সহীহ বুখারী, হাদিস নং: ৩২৯৩, ৬৪০৩; সহীহ মুসলিম, হাদিস নং: ২৬৯১।
১১. ইসলামের ফিৎরাতের উপর অবিচল থাকা
আরবি:
أَصْبَحْنَا عَلَىٰ فِطْرَةِ الْإِسْلَامِ، وَعَلَىٰ كَلِمَةِ الْإِخْلَاصِ، وَعَلَىٰ دِينِ نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ ﷺ، وَعَلَىٰ مِلَّةِ أَبِينَا إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا مُسْلِمًا وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ
বাংলা উচ্চারণ:
আসবাহনা 'আলা ফিতরাতিল ইসলামি, ওয়া 'আলা কালিমাতিল ইখলাস, ওয়া 'আলা দ্বীনি নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদিন ﷺ, ওয়া 'আলা মিল্লাতি আবীনা ইবরাহীমা হানীফাম মুসলিমাও ওয়ামা কানা মিনাল মুশরিকীন।
বাংলা অর্থ:
"(আল্লাহর অনুগ্রহে) আমরা প্রত্যুষে উপনীত হয়েছি ইসলামের ফিৎরাতের উপর, ইখলাসের কালিমার উপর, আমাদের নবী মুহাম্মাদ ﷺ এর দ্বীনের মিল্লাতের উপর, যিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলিম এবং মুশরিকদের দলভুক্ত ছিলেন না।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ১ বার।
মূল রেফারেন্স:
মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং: ১৫৩৬০। শাইখ আলবানী 'সিলসিলা সহীহা' (২৯৮৯) গ্রন্থে হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।
বিশুদ্ধ হাদিস অনুসারে, কুরআনের নির্দিষ্ট কিছু আয়াত ও সূরা রয়েছে যা সকালে যিকির (আল্লাহর স্মরণ) হিসেবে পাঠ করার জন্য নির্ধারিত। কুরআন থেকে সকালে পাঠ করার জন্য নির্ধারিত যিকিরগুলো হলো নবী মুহাম্মদ (ﷺ)-এর সুন্নাহর
একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নিচে এর মূল পাঠগুলো উল্লেখ করা হলো:
১. আয়াতুল কুরসি (সূরা আল-বাকারার ২৫৫ নং আয়াত)
এটি সূরা আল-বাকারার ২৫৫ নং আয়াত এবং কুরআনের অন্যতম শক্তিশালী আয়াত হিসেবে বিবেচিত। সকালে এটি পাঠ করলে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুরক্ষা পাওয়া যায়।
আরবি পাঠ:
اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
বাংলা অনুবাদ:
আল্লাহ, তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী। তাঁকে তন্দ্রা বা নিদ্রা স্পর্শ করে না। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সবই তাঁর। কে আছে যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করতে পারে? তাদের সামনে ও পেছনে যা কিছু আছে, তা তিনি জানেন। তিনি যা ইচ্ছা করেন, তা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ত করতে পারে না। তাঁর কুরসি (সিংহাসন) আকাশ ও পৃথিবীকে পরিবেষ্টন করে আছে। আর এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ এবং সর্বমহান।
হাদিস: বর্ণিত আছে যে, "যে ব্যক্তি সকালে এটি পাঠ করবে, সে সন্ধ্যা পর্যন্ত জ্বিন থেকে সুরক্ষিত থাকবে।"
রেফারেন্স: আল-হাকিম ১/৫৬২; শাইখ আলবানী হাদিসটিকে সহীহ আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব গ্রন্থে (হাদিস নং ৬৫৫) সহীহ বলেছেন।
২. তিন কুল (সূরা আল-ইখলাস, আল-ফালাক, আন-নাস)
কুরআনের এই শেষ তিনটি সূরা সকাল ও সন্ধ্যার যিকিরের একটি মূল ভিত্তি, যা সার্বিক সুরক্ষা প্রদান করে।
* সূরা আল-ইখলাস (১১২)
* সূরা আল-ফালাক (১১৩)
* সূরা আন-নাস (১১৪)
হাদিস: আব্দুল্লাহ ইবনে খুবাইব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে বলেছেন, "তুমি যদি সকাল ও সন্ধ্যায় তিনবার ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ (সূরা ইখলাস) এবং মু‘আওවිযাতাইন (সূরা ফালাক ও নাস) পাঠ করো, তবে তা তোমাকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট হবে।"
রেফারেন্স: জামে' আত-তিরমিজি ৩৫৭৫, সুনানে আবু দাউদ ৫০৮২। শাইখ আলবানী হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।
৩. সূরা আল-বাকারার শেষ দুই আয়াত
যদিও হাদিসে বিশেষভাবে রাতে এই আয়াতগুলো পাঠ করার ফজিলত উল্লেখ করা হয়েছে, অনেক আলেম এর ব্যাপক উপকারিতার কারণে এটিকে প্রতিরক্ষামূলক যিকিরের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাতে পাঠ করার মাধ্যমে যে সুরক্ষা পাওয়া যায়, তা সকাল পর্যন্ত প্রসারিত হয় বলে মনে করা হয়।
আরবি পাঠ (আয়াত ২৮৫-২৮৬):
آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ ۚ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْ رُسُلِهِ ۚ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا ۖ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ. لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۚ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ ۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ ۖ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا ۚ أَنتَ مَوْلَانَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
হাদিস: নবী (ﷺ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি রাতে সূরা আল-বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করবে, তা তার জন্য যথেষ্ট হবে।"
রেফারেন্স: সহীহ আল-বুখারী ৫০০৯, সহীহ মুসলিম ৮০৭।
আপনার সকালের রুটিনে কুরআনের এই নির্দিষ্ট অংশগুলো অন্তর্ভুক্ত করা সরাসরি সুন্নাহর অনুসরণ এবং আল্লাহর স্মরণ ও সুরক্ষার মাধ্যমে দিন শুরু করার একটি শক্তিশালী উপায়।
Note - উচ্চারণ সম্পূর্ণ সহি না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । সম্মানিত পাঠকদের হাদিস সমূহের রেফারেন্স পুনরায় নিশ্চিত করার বিনীত অনুরোধ রইলো সাথে যদি কোন ত্রুটি খুজে পান মেহেরবানী করে comment এ জানাবেন, সংশোধন করে ফেলবো إِنْ شَاءَ ٱللَّٰهُ । الله سبحان الله تالا আমাদের আমল সহজ এবং মন্জুর করে নিন । আমিন !
جَزَاكَ ٱللَّٰهُ خَيْرًا