Right Way/ সঠিক পথ

Right Way/ সঠিক পথ ইসলামের সঠিক তথ্য পৌঁছে দেয়াই এই পেজে মূল লক্ষ The story Of ''Universal Truth''

দায়িত্ব— মোটামুটি সবার জীবনের আছে। প্রাপ্ত বয়স্ক ও পরিণত বয়সে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় কিংবা পরিস্থিতির চাপে পড়ে সবারই কিছু না কিছ...
05/10/2025

দায়িত্ব—
মোটামুটি সবার জীবনের আছে। প্রাপ্ত বয়স্ক ও পরিণত বয়সে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় কিংবা পরিস্থিতির চাপে পড়ে সবারই কিছু না কিছু দায়িত্ব নিতে হয়। দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা জরুরি। দায়িত্ব পালনে যেন কোনো অবহেলা না হয় তাই দায়িত্ব পালনকারীর জবাবদিহিতার জায়গা থাকা জরুরি।
যখন কোনো ব্যক্তির জন্য জবাবদিহিতার দায়বদ্ধতা থাকবে তখন তিনি দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের অবহেলা করবেন না। যথাযথভাবে তা পালন করবেন। কারো ওপর জুলুম করবেন না।
যদি প্রত্যেক মানুষ নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সজাগ হয় এবং আখিরাতে জবাবদিহির অনুভূতি হৃদয়ে জাগরূক থাকে তাহলে সমাজের সিংহভাগ অভিযোগ ও সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
কারণ, নিশ্চয় সে জানে যে,
‘কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে, তা সে (কেয়ামতের দিন) দেখতে পাবে। আর কেউ অণু পরিমাণ মন্দকর্ম করলে, তাও সে দেখতে পাবে।’
(সূরা জিলজাল, আয়াত : ৭-৮)
জবাবদিহির অনুভূতি ও দায়িত্বজ্ঞানের তীব্রতা মুসলিম নেতাদের মধ্যে কেমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল, .........................
তা উমর ইবনুল খাত্তাব রা.-এর একটি ঘটনা থেকেই বোঝা যায়।
-- এক দিন তিনি প্রচণ্ড সূর্যতাপে সদকার উটের পরিচর্যা করছিলেন। এমন সময় বনু তামিম গোত্রের নেতা আহনাফ বিন কায়েস ইরাক থেকে একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে আসেন। যখন তারা তার নিকটবর্তী হলেন, তখন উমর রা. আহনাফকে ডেকে বললেন,
হে আহনাফ! কাপড়-চোপড় রেখে দ্রুত এসো এবং উট পরিচর্যার ব্যাপারে আমিরুল মুমিনিনকে সাহায্য করো। কেননা এগুলো সদকার উট। এর মধ্যে এতিম-মিসকিন ও বিধবাদের হক রয়েছে।
তখন একজন বলল, ‘হে আমিরুল মুমিনিন! আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন।
আপনি সদকা খাতের কোনো একজন কর্মীকে এ কাজের নির্দেশ দিলেই তো যথেষ্ট ছিল।
জবাবে উমর রা. বললেন, আমার চেয়ে ও আহনাফের চেয়ে বড় গোলাম আর কে আছে?
কেননা যে ব্যক্তি মুসলমানদের কোনো দায়িত্বে থাকে, তার ওপর ওভাবে দায়িত্ব পালন করা ওয়াজিব, যেভাবে মনিবের প্রতি একজন গোলামের দায়িত্ব পালন করা আবশ্যক।’
(তারিখু উমর লি-ইবনিল জাওজি, পৃষ্ঠা : ৮৯)...........
এজন্য দায়িত্বশীলদের নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।
এক হাদিসে হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, -----
তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল আর তোমরা প্রত্যেকেই তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। জনগণের আমীরও একজন দায়িত্বশীল সে তার প্রজাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।
একজন পুরুষ তার পরিবারস্থ লোকদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল সে তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। একজন স্ত্রীলোক তার স্বামীর ঘরের তত্ত্বাবধায়ক সে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। গোলাম তার মালিকের ধন-সম্পদের ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক এতদ্বিষিয়ে সে জিজ্ঞাসিত হবে। শোন তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল আর তোমরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।
(সহিহ বুখারি, হাদিস, ২৫৫৪)।

সূরা কাফ এর পঞ্চম আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন—  بَلۡ كَذَّبُوۡا بِالۡحَقِّ لَمَّا جَآءَهُمۡ فَهُمۡ فِیۡۤ اَمۡرٍ مَّرِیۡجٍ...
03/10/2025

সূরা কাফ এর পঞ্চম আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন
— بَلۡ كَذَّبُوۡا بِالۡحَقِّ لَمَّا جَآءَهُمۡ فَهُمۡ فِیۡۤ اَمۡرٍ مَّرِیۡجٍ -
"তাদের কাছে সত্য আসার পর তারা তা অস্বীকার করেছে, কাজেই এখন তারা সংশয়ের মধ্যে পড়ে আছে।"
এখানে মারিজ শব্দের অর্থ সংশয়। এর আরেকটি অর্থ হলো disturbance. বিরক্তিকর অবস্থা, অস্থির অবস্থা, অশান্তি।
আপনি হয়তো ভাবছেন, তারা তো মন যা চায় তাই করতে পারে। তাদেরকে তো কোন বিধি-নিষেধ মানতে হয় না। আর এটা তো তাদেরকে সুখী করার কথা। তারা কেন অস্থির অবস্থায় থাকবে?
জানেন কী হয় তখন, যখন আপনার মন যা চায় তাই করতে পারেন? ডিস্টারবেন্স। অস্থিরতা। যখন আপনার সামনে অনেকগুলো চয়েস থাকে, অনেকগুলো বিকল্প থাকে—এটা ভালো জিনিস না।
ছোট্ট একটা উদাহরণ দিচ্ছি। আপনাদের অনেকের বাসায় টিভি আছে, ডিস এন্টেনার কানেকশন আছে, হয়তো কয়েকশো চ্যানেল আছে। রিমোটটা হাতে নিয়ে মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা কী করে?
একটার পর একটা চ্যানেল খালি পাল্টাতে থাকেন, আচ্ছা এখানে কিছু দেখি, না ওইখানে মনে হয় আরও ভালো কিছু হচ্ছে, কিছুক্ষণ খেলা দেখি, না একটা মুভি দেখি... না দেখি ওই চ্যানেলে কি হচ্ছে—এভাবে কয়েক ঘন্টা পার হয়ে যায়। আপনি আসলে কিছুই দেখতে পারেননি।
এর নাম মারাজ। অস্থিরতা।
কিন্তু যদি আপনার একটি goal থাকে, একটি উদ্দেশ্য থাকে—আপনি শুধু একটা বিষয় নিয়ে ফোকাসড থাকেন। এটা তখন আপনাকে প্রশান্তি দেয়। আপনাকে মানসিক পরিপূর্ণতা দেয়। শান্তি দেয়। অন্তরটাকে সন্তুষ্টিতে পূর্ণ করে তোলে।
আপনি যদি ইসলাম অনুসরণ করেন, সত্য মেনে চলেন তখন আপনার একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য আছে। দৈনিক সুনির্দিষ্ট কিছু কাজ আছে। নির্ধারিত সীমানা আছে এর বাইরে আপনি যেতে পারবেন না। আপনি তখন ফোকাসড থাকতে পারেন।
জান্নাত আমার লক্ষ্য, আমাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচতে হবে। আমাকে আমার রবের সন্তুষ্টির পথে থাকতে হবে। আমি কিয়ামতের দিন অপমানিত হতে চাই না। আমার হাতে বেশি সময় নেই, আমি যত বেশি সম্ভব ভালো কাজ করে যেতে চাই।
এভাবে আপনার মন মানসিকতা কাজকর্ম সবকিছু একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে ফোকাসড থাকে। তখন মনে একটি প্রশান্তি বিরাজ করে। অস্থিরতা থাকে না।
আল্লাহ বলছেন সত্য অস্বীকারকারীরা এটা চায় না। তারা মারিজ অবস্থায় থাকে। তারা ভাবে, ফ্রি হয়ে যা ইচ্ছা তা-ই করার মাঝে শান্তি আছে। কিন্তু তারা শান্তি পায় না।
জানেন? কোন জায়গায় আমরা ফ্রি হয়েও প্রশান্তি পাব? সেটা জান্নাতে। জান্নাতে আমাদের মন যা চায় আমরা তাই করতে পারব, আর তাতে আমরা পরিপূর্ণ তৃপ্তি পাবো, পরিপূর্ণ প্রশান্তি পাবো। কারণ আল্লাহ তায়ালা জান্নাতকে ওইভাবে ডিজাইন করবেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন—وَ لَكُمۡ فِیۡهَا مَا تَشۡتَهِیۡۤ اَنۡفُسُكُمۡ وَ لَكُمۡ فِیۡهَا مَا تَدَّعُوۡنَ—
"সেখানে তোমাদের জন্য থাকবে যা তোমাদের মন চাইবে এবং সেখানে তোমাদের জন্য আরো থাকবে যা তোমরা দাবী করবে।" (৪১:৩১)
আর সূরা কাফে আল্লাহ তাআলা জান্নাতের জীবন সম্পর্কে বলেন—فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَاضِيَةٍ –
সে এমন এক জীবন অতিবাহিত করবে যেখানে প্রত্যেকটি জিনিস, একদম সবকিছু তাকে আনন্দিত করবে।
আল্লাহ জান্নাতের জীবনটাকে যে কতটা মুবালাগা সহকারে বর্ণনা করেছেন, কতটা অতিরঞ্জন সহকারে বর্ণনা করেছেন…তিনি বলেনেনি মানুষটা সুখী হবে। বরং তিনি বলেছেন--জীবনটা নিজেই তৃপ্তিকর হবে।

তিনি বলেননি, فَهُوَ رَاضِِ فِيْ عِيْشَةِ الْجَنَّةْ - ফাহুয়া রা-দিন ফিই 'ইইশাতিল জান্নাহ,
সে জান্নাতের জীবনে পরিতৃপ্ত হবে।
বরং তিনি বলেছেন, ফাহুয়া ফিই ইইশাতিন রাদিয়া। যা খুবই অদ্ভুত ধরণের اِسْتِعَارَةْ - ইস্তি’আরাহ। যা ইঙ্গিত করছে জান্নাতের প্রতিটি অংশ, জান্নাতের প্রতিটি অভিজ্ঞতা আপনাকে একেবারে সম্পূর্ণরূপে পরিতৃপ্ত করে দিবে। সম্পূর্ণরূপে সুখী করে দিবে। প্রতিবার শতভাগ তৃপ্তি এনে দিবে।
পক্ষান্তরে, দুনিয়াকে কিন্তু এভাবে ডিজাইন করা হয়নি। দুনিয়াতে আপনি মন মত চললে, আল্লাহর বিধি নিষেধের পরোয়া না করলে—অবশ্য অবশ্যই ঝামেলায় পড়বেন।
শয়তান আপনাকে প্রতারিত করে বলবে, মন যা চায় তাই কর, তুমি মজা পাবে। কিন্তু এই সামান্য মজার সাথে হাজারো রকমের ঝামেলা আপনাকে জড়িয়ে ধরবে, মানসিক অস্থিরতা তৈরি হবে, কখনোই শতভাগ তৃপ্তি পাবেন না।
তাহলে কেন ইসলামের সীমার ভিতরে থাকবেন না? শরীয়তের সীমার ভিতরে থাকুন। দুনিয়াতে প্রশান্তির জীবন যাপন করুন, আর অনন্তকালের শতভাগ তৃপ্তির জীবন, শতভাগ আনন্দের জীবন, সম্পূর্ণ মুক্ত এক জীবন আপনার অপেক্ষায় আছে।
—নোমান আলী খানের আলোচনা অবলম্বনে।

মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে মর্মন্তুদ শাস্তি এবং আ...
13/09/2025

মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে মর্মন্তুদ শাস্তি এবং আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না।’
(সুরা : নুর, আয়াত : ১৯)
পাপ প্রসারে যাদের দায় বেশি
-------------------------------
সমাজে অন্যায় ও অপরাধ বিস্তারে নেতৃস্থানীয় মানুষই বেশি দায়ী। কেননা মানুষ তাদের ভয় পায় এবং তারা কোনো অন্যায় করলে সেটা সমাজে বৈধতা লাভ করে।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি যখন কোনো জনপদ ধ্বংস করতে চাই তখন তার সমৃদ্ধিশালী ব্যক্তিদের সৎ কাজ করার আদেশ দিই, কিন্তু তারা সেখানে অসৎ কাজ করে। অতঃপর তার জন্য শাস্তি ন্যায়সংগত হয়ে যায় এবং আমি তা সম্পূর্ণ ধ্বংস করি।’
(সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১৬)
পাপ প্রসারের শাস্তি
----------------------------
কোরআন ও হাদিসের আলোকে সমাজে পাপ প্রসারের শাস্তিগুলো তুলে ধরা হলো—
১. পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি : সমাজে যখন পাপের প্রসার ঘটে তখন বিপর্যয় দেখা দেয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে তাদেরকে তাদের কোনো কোনো কাজের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে।
’ (সুরা : রোম, আয়াত : ৪১)
২. দুনিয়া ও আখিরাতে ভয়াবহ শাস্তি : যারা পাপ কাজ করে এবং পাপের প্রসার ঘটায়, পরকালে তারা ভয়াবহ শাস্তি ভোগ করবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে মর্মন্তুদ শাস্তি এবং আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না।’
(সুরা : নুর, আয়াত : ১৯)
৩. পতন ত্বরান্বিত হয় : পাপের প্রসার সমাজ ও জাতির পতন ত্বরান্বিত করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের অপরাধের জন্য তাদেরকে নিমজ্জিত করা হয়েছিল এবং পরে তাদের দাখিল করা হয়েছিল আগুনে, অতঃপর তারা কাউকে আল্লাহর মোকাবেলায় পায়নি সাহায্যকারী।’
(সুরা : নুহ, আয়াত : ২৫)
৪. সামগ্রিক শাস্তি দান : যখন কোনো সমাজের সর্বস্তরে পাপ বিস্তার করে, তখন আল্লাহ তাদের সমূলে ধ্বংস করেন। যেমনটি নুহ (আ.)-এর সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে ঘটেছিল। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর যখন আমার আদেশ এলো, তখন আমি জনপদকে উল্টিয়ে দিলাম এবং তাদের ওপর ক্রমাগত বর্ষণ করলাম প্রস্তর কংকর, যা তোমার প্রতিপালকের কাছে চিহ্নিত ছিল। এটা জালিমদের থেকে দূরে নয়।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ৮২-৮৩)
৫. নেককার ব্যক্তিও ধ্বংস হয় : যখন কোনো সমাজে পাপের প্রসার ঘটে, তখন নেককার মানুষও আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা পায় না। জয়নব বিনতে জাহাশ (রা.) বলেন, একবার নবী (সা.) রক্তবর্ণ চেহারা নিয়ে ঘুম থেকে জাগলেন এবং বলতে লাগলেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ! (আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই) নিকটবর্তী এক দুর্যোগে আরবরা ধ্বংস হয়ে যাবে।..জিজ্ঞাসা করা হলো, আমরা কি ধ্বংস হয়ে যাব, অথচ আমাদের মাঝে নেককার লোকও থাকবে? নবী (সা.) বললেন, হ্যাঁ, যখন পাপাচার বেড়ে যাবে।
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭০৫৯)
নেককাজ নিয়ে বিদ্রুপ করাও পাপ প্রসারের শামিল
কারো নেককাজ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করাও পাপ প্রসারের শামিল। পবিত্র কোরআনে লুত (আ.)-এর সম্প্রদায়ের অপরাধের বর্ণনা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘উত্তরে তার সম্প্রদায় শুধু বলল, লুত পরিবারকে তোমরা জনপদ থেকে বের করে দাও, তারা তো এমন লোক, যারা পবিত্র সাজতে চায়।’ (সুরা : নামল, আয়াত : ৫৬).................
গোপন পাপও শাস্তির কারণ
কেউ গোপনে কোনো পাপ করলে বা পাপের প্রসার ঘটালেও আল্লাহর শাস্তি অবধারিত হয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘বলো, নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক হারাম করেছেন প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতা আর পাপ, অসংগত বিরোধিতা এবং কোনো কিছুকে আল্লাহর শরিক করা—যার কোনো সনদ তিনি প্রেরণ করেননি এবং আল্লাহ সম্পর্কে এমন কিছু বলা, যা তোমরা জানো না।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩৩)
সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমাজ রক্ষা পায়
-----------------
সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পাপের প্রসার রোধকরত সমাজকে রক্ষা করা সম্ভব।
মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে মহান আল্লাহর নির্ধারিত সীমার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং যে সীমা লঙ্ঘন করে, তাদের দৃষ্টান্ত সেই যাত্রীদলের মতো, যারা লটারির মাধ্যমে এক নৌযানে নিজেদের স্থান নির্ধারণ করে নিল। তাদের কেউ স্থান পেল ওপরের তলায় আর কেউ নিচের তলায়।
(পানির ব্যবস্থা ছিল ওপরের তলায়) কাজেই নিচের তলার লোকেরা পানি সংগ্রহের জন্য ওপরের তলার লোকদের ডিঙিয়ে যেত। তখন নিচতলার লোকেরা বলল, ওপর তলার লোকদের কষ্ট না দিয়ে আমরা যদি নিজেদের অংশে একটি ছিদ্র করে নিই (তবে ভালো হয়)। এ অবস্থায় তারা যদি এদের আপন মর্জির ওপর ছেড়ে দেয় তাহলে সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে। আর যদি তারা এদের হাত ধরে রাখে (বিরত রাখে) তবে তারা এবং সবাই রক্ষা পাবে।’
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৪৯৩)
আল্লাহ সবাইকে সমাজে পাপ কাজ রোধে ভূমিকা রাখার তাওফিক দিন। আমিন।

সকালের জিকির সমূহ السَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُبِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِহিসনুস মুসলি...
12/09/2025

সকালের জিকির সমূহ
السَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
হিসনুস মুসলিম এ সংকলিত সকালের দোয়া যা ফজরের নামাজের পর জিকির হিসেবে আমরা করতে পারি তার একটা তালিকা দিলাম । দয়া করে যাচাই করে তারপর আপনার সকালের জিকিরের list এ রেখে দিতে পারেন । হারফ এবং বাংলা উচ্চারণ ও যথাসম্ভব কাছাকাছি অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি ।
১. দিনের সূচনা
আরবি:
اللَّهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا، وَبِكَ أَمْسَيْنَا، وَبِكَ نَحْيَا، وَبِكَ نَمُوتُ وَإِلَيْكَ النُّشُورُ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা বিকা আসবাহনা, ওয়া বিকা আমসাইনা, ওয়া বিকা নাহইয়া, ওয়া বিকা নামূতু ওয়া ইলাইকান নুশূর।
বাংলা অর্থ:
"হে আল্লাহ! আপনারই অনুগ্রহে আমরা প্রত্যুষে উপনীত হই এবং আপনারই অনুগ্রহে সন্ধ্যায় উপনীত হই। আপনারই মর্জি মতো আমরা জীবিত রয়েছি, আপনারই ইচ্ছায় আমরা মৃত্যুবরণ করবো, আর আপনারই দিকে কিয়ামত দিবসে উত্থিত হতে হবে।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ১ বার।
মূল রেফারেন্স:
সুনান আত-তিরমিযী, হাদিস নং: ৩৩৯১; সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং: ৫০৬৮। ইমাম তিরমিযী হাদিসটিকে 'হাসান সহীহ' বলেছেন এবং শাইখ আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।
২. সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দু'আ)
আরবি:
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَىٰ عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ، وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী লা ইলাহা ইল্লা আনতা, খলাক্বতানী ওয়া আনা আব্দুকা, ওয়া আনা 'আলা আহদিকা ওয়া ওয়া'দিকা মাসতাত্বা'তু। আ'ঊযুবিকা মিন শাররি মা সনা'তু, আবূউ লাকা বিনি'মাতিকা 'আলাইয়্যা, ওয়া আবূউ বিযাম্বী, ফাগফির লী, ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা আনতা।
বাংলা অর্থ:
"হে আল্লাহ! আপনি আমার রব, আপনি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন উপাস্য নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি আপনার বান্দা। আর আমি আমার সাধ্যমতো আপনার প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হতে আপনার আশ্রয় ভিক্ষা করছি, আমি আমার প্রতি আপনার নিয়ামতের স্বীকৃতি প্রদান করছি, আর আমি আমার গুনাহ স্বীকার করছি। অতএব আপনি আমাকে মাফ করে দিন, নিশ্চয় আপনি ভিন্ন আর কেউই গুনাহসমূহের মার্জনাকারী নাই।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ১ বার।
মূল রেফারেন্স:
সহীহ বুখারী, হাদিস নং: ৬৩০৬।
৩. সাক্ষ্য প্রদান
আরবি:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَصْبَحْتُ أُشْهِدُكَ وَأُشْهِدُ حَمَلَةَ عَرْشِكَ، وَمَلَائِكَتَكَ، وَجَمِيعَ خَلْقِكَ، أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنْتَ وَحْدَكَ لَا شَرِيكَ لَكَ، وَأَنَّ مُحَمَدًا عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্নী আসবাহতু উশহিদুকা ওয়া উশহিদু হামালাতা 'আরশিকা, ওয়া মালাইকাতাকা, ওয়া জামী'আ খলক্বিকা, আন্নাকা আনতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনতা ওয়াহদাকা লা শারীকা লাকা, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান 'আবদুকা ওয়া রাসূলুকা।
বাংলা অর্থ:
"হে আল্লাহ! আপনার অনুগ্রহে সকালে উপনীত হয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছি আপনার আরশ বহনকারীদের এবং আপনার সকল ফেরেশতার ও আপনার সকল সৃষ্টির। নিশ্চয় আপনি আল্লাহ, আপনি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কেহ নেই, আপনি একক, আপনার কোন শরীক নেই। আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার বান্দাহ এবং রাসূল।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ৪ বার।
মূল রেফারেন্স:
সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং: ৫০৬৯। শাইখ আলবানী হাদিসটির সনদকে হাসান বলেছেন।
৪. শারীরিক সুস্থতার জন্য
আরবি:
اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِي، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي سَمْعِي، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَصَرِي، لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنْتَ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা আ-ফিনী ফী বাদানী, আল্লাহুম্মা আ-ফিনী ফী সাম'য়ী, আল্লাহুম্মা আ-ফিনী ফী বাসরী, লা ইলাহা ইল্লা আনতা।
বাংলা অর্থ:
"হে আল্লাহ! আপনি আমার দেহের নিরাপত্তা দান করুন, আমার কর্ণের নিরাপত্তা দান করুন, আমার চক্ষুতে নিরাপত্তা প্রদান করুন। আল্লাহ, আপনি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মা'বুদ নেই।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ৩ বার।
মূল রেফারেন্স:
সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং: ৫০৯০। শাইখ আলবানী হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।
৫. সকল দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি
আরবি:
حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ
বাংলা উচ্চারণ:
হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া 'আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রব্বুল 'আরশিল 'আযীম।
বাংলা অর্থ:
"আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মা'বুদ নেই, আমি তাঁর উপর নির্ভর করি, তিনি মহান আরশের প্রতিপালক।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ৭ বার।
মূল রেফারেন্স:
সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং: ৫০৮১। হাদিসটি আবু দারদা (রাঃ) থেকে মাওকুফ সূত্রে বর্ণিত এবং এর সনদ সহীহ।
৬. সব ধরনের অনিষ্ট থেকে রক্ষা
আরবি:
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ
وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
বাংলা উচ্চারণ:
বিসমিল্লাহিল্লাযী লা ইয়াদ্বুররু মা'আসমিহী শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিস সামা-ই, ওয়া হুয়াস সামী'উল 'আলীম।
বাংলা অর্থ:
"আমি সেই আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি, যাঁর নামে শুরু করলে আকাশ ও পৃথিবীর কোন বস্তুই কোন রূপ অনিষ্ট সাধন করতে পারে না। বস্তুত তিনি হচ্ছেন সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ৩ বার।
মূল রেফারেন্স:
সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং: ৫০৮৮; সুনান আত-তিরমিযী, হাদিস নং: ৩৩৮৮। শাইখ আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।
৭. সন্তুষ্টির ঘোষণা
আরবি:
رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا، وَبِمُحَمَّدٍ ﷺ نَبِيًّا
বাংলা উচ্চারণ:
রদ্বীতু বিল্লাহি রব্বান, ওয়া বিল-ইসলামি দ্বীনান, ওয়া বিমুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা নাবিয়্যান।
বাংলা অর্থ:
"আমি আল্লাহকে রব হিসাবে, ইসলামকে দ্বীন হিসাবে এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবী রূপে পেয়ে পরিতুষ্ট।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ৩ বার।
মূল রেফারেন্স:
মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং: ১৮৯৬৭; সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং: ৫০৭২; সুনান আত-তিরমিযী, হাদিস নং: ৩৩৮৯। হাদিসটি হাসান।
৮. রহমতের আরজি
আরবি:
يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيثُ، أَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ، وَلَا تَكِلْنِي إِلَىٰ نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ
বাংলা উচ্চারণ:
ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা আসতাগীছ, আসলিহ লী শা'নী কুল্লাহূ, ওয়ালা তাকিলনী ইলা নাফসী ত্বরফাতা 'আইন।
বাংলা অর্থ:
"হে চিরঞ্জীব, হে চিরসংরক্ষক, আপনার রহমতের জন্য আমি আপনার দরবারে জানাই আমার সকাতর নিবেদন। আপনি আমার অবস্থা সংশোধন করে দিন, আপনি চোখের পলক পরিমাণ সময়ের জন্যেও আমাকে নিজের উপর ছেড়ে দিবেন না।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ১ বার।
মূল রেফারেন্স:
হাদিসটি আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। শাইখ আলবানী 'সিলসিলা সহীহা' (২২৭) গ্রন্থে হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।
৯. দিনের বরকতের কামনা
আরবি:
أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَ هَٰذَا الْيَوْمِ: فَتْحَهُ، وَنَصْرَهُ، وَنُورَهُ، وَبَرَكَتَهُ، وَهُدَاهُ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا فِيهِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهُ
বাংলা উচ্চারণ:
আসবাহনা ওয়া আসবাহাল মুলকু লিল্লাহি রব্বিল 'আলামীন। আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা খাইরা হাযাল ইয়াউমি: ফাতহাহূ, ওয়া নাসরাহূ, ওয়া নূরাহূ, ওয়া বারাকাতাহূ, ওয়া হুদাহূ। ওয়া আ'ঊযুবিকা মিন শাররি মা ফীহি ওয়া শাররি মা বা'দাহূ।
বাংলা অর্থ:
"সকল জগতের প্রতিপালক আল্লাহর অনুগ্রহে আমরা এবং সকল জগত প্রাতে উপনীত হলাম। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কামনা করি এই দিনের কল্যাণ, বিজয় ও আপনার সাহায্য, নূর ও বরকত এবং হেদায়াত। আর এই দিনের এবং এই দিনের পরের অকল্যাণ থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ১ বার।
মূল রেফারেন্স:
এটি একটি দীর্ঘ হাদিসের অংশ যা সহীহ মুসলিমে (হাদিস নং: ২৭২৩) বর্ণিত আছে, তবে এই নির্দিষ্ট পাঠটি অন্যান্য হাদিস গ্রন্থ থেকেও সংকলিত।
১০. তাওহীদ ও প্রশংসার ঘোষণা
আরবি:
لَا إِلَٰهَ إِلَّا اللَّهُ، وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
বাংলা উচ্চারণ:
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া 'আলা কুল্লি শাই'ইন ক্বাদীর।
বাংলা অর্থ:
"আল্লাহ ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য কোন ইলাহ নেই, তিনি একক। তাঁর কোন অংশীদার নেই, রাজত্ব তাঁরই জন্য। সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনি সকল বিষয়ের উপর সর্বশক্তিমান।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
কোন কোন রেয়াতে সকালে ১০০ বার বলা হয়েছে । তবে বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন । আলেমদের কাছ থেকে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন ।
মূল রেফারেন্স:
সহীহ বুখারী, হাদিস নং: ৩২৯৩, ৬৪০৩; সহীহ মুসলিম, হাদিস নং: ২৬৯১।
১১. ইসলামের ফিৎরাতের উপর অবিচল থাকা
আরবি:
أَصْبَحْنَا عَلَىٰ فِطْرَةِ الْإِسْلَامِ، وَعَلَىٰ كَلِمَةِ الْإِخْلَاصِ، وَعَلَىٰ دِينِ نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ ﷺ، وَعَلَىٰ مِلَّةِ أَبِينَا إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا مُسْلِمًا وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ
বাংলা উচ্চারণ:
আসবাহনা 'আলা ফিতরাতিল ইসলামি, ওয়া 'আলা কালিমাতিল ইখলাস, ওয়া 'আলা দ্বীনি নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদিন ﷺ, ওয়া 'আলা মিল্লাতি আবীনা ইবরাহীমা হানীফাম মুসলিমাও ওয়ামা কানা মিনাল মুশরিকীন।
বাংলা অর্থ:
"(আল্লাহর অনুগ্রহে) আমরা প্রত্যুষে উপনীত হয়েছি ইসলামের ফিৎরাতের উপর, ইখলাসের কালিমার উপর, আমাদের নবী মুহাম্মাদ ﷺ এর দ্বীনের মিল্লাতের উপর, যিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলিম এবং মুশরিকদের দলভুক্ত ছিলেন না।"
পড়ার সময় ও সংখ্যা:
সকালে ১ বার।
মূল রেফারেন্স:
মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং: ১৫৩৬০। শাইখ আলবানী 'সিলসিলা সহীহা' (২৯৮৯) গ্রন্থে হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।
বিশুদ্ধ হাদিস অনুসারে, কুরআনের নির্দিষ্ট কিছু আয়াত ও সূরা রয়েছে যা সকালে যিকির (আল্লাহর স্মরণ) হিসেবে পাঠ করার জন্য নির্ধারিত। কুরআন থেকে সকালে পাঠ করার জন্য নির্ধারিত যিকিরগুলো হলো নবী মুহাম্মদ (ﷺ)-এর সুন্নাহর
একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নিচে এর মূল পাঠগুলো উল্লেখ করা হলো:
১. আয়াতুল কুরসি (সূরা আল-বাকারার ২৫৫ নং আয়াত)
এটি সূরা আল-বাকারার ২৫৫ নং আয়াত এবং কুরআনের অন্যতম শক্তিশালী আয়াত হিসেবে বিবেচিত। সকালে এটি পাঠ করলে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুরক্ষা পাওয়া যায়।
আরবি পাঠ:
اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
বাংলা অনুবাদ:
আল্লাহ, তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী। তাঁকে তন্দ্রা বা নিদ্রা স্পর্শ করে না। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সবই তাঁর। কে আছে যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করতে পারে? তাদের সামনে ও পেছনে যা কিছু আছে, তা তিনি জানেন। তিনি যা ইচ্ছা করেন, তা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ত করতে পারে না। তাঁর কুরসি (সিংহাসন) আকাশ ও পৃথিবীকে পরিবেষ্টন করে আছে। আর এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ এবং সর্বমহান।
হাদিস: বর্ণিত আছে যে, "যে ব্যক্তি সকালে এটি পাঠ করবে, সে সন্ধ্যা পর্যন্ত জ্বিন থেকে সুরক্ষিত থাকবে।"
রেফারেন্স: আল-হাকিম ১/৫৬২; শাইখ আলবানী হাদিসটিকে সহীহ আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব গ্রন্থে (হাদিস নং ৬৫৫) সহীহ বলেছেন।
২. তিন কুল (সূরা আল-ইখলাস, আল-ফালাক, আন-নাস)
কুরআনের এই শেষ তিনটি সূরা সকাল ও সন্ধ্যার যিকিরের একটি মূল ভিত্তি, যা সার্বিক সুরক্ষা প্রদান করে।
* সূরা আল-ইখলাস (১১২)
* সূরা আল-ফালাক (১১৩)
* সূরা আন-নাস (১১৪)
হাদিস: আব্দুল্লাহ ইবনে খুবাইব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে বলেছেন, "তুমি যদি সকাল ও সন্ধ্যায় তিনবার ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ (সূরা ইখলাস) এবং মু‘আওවිযাতাইন (সূরা ফালাক ও নাস) পাঠ করো, তবে তা তোমাকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট হবে।"
রেফারেন্স: জামে' আত-তিরমিজি ৩৫৭৫, সুনানে আবু দাউদ ৫০৮২। শাইখ আলবানী হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।
৩. সূরা আল-বাকারার শেষ দুই আয়াত
যদিও হাদিসে বিশেষভাবে রাতে এই আয়াতগুলো পাঠ করার ফজিলত উল্লেখ করা হয়েছে, অনেক আলেম এর ব্যাপক উপকারিতার কারণে এটিকে প্রতিরক্ষামূলক যিকিরের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাতে পাঠ করার মাধ্যমে যে সুরক্ষা পাওয়া যায়, তা সকাল পর্যন্ত প্রসারিত হয় বলে মনে করা হয়।
আরবি পাঠ (আয়াত ২৮৫-২৮৬):
آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ ۚ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْ رُسُلِهِ ۚ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا ۖ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ. لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۚ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ ۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ ۖ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا ۚ أَنتَ مَوْلَانَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
হাদিস: নবী (ﷺ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি রাতে সূরা আল-বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করবে, তা তার জন্য যথেষ্ট হবে।"
রেফারেন্স: সহীহ আল-বুখারী ৫০০৯, সহীহ মুসলিম ৮০৭।
আপনার সকালের রুটিনে কুরআনের এই নির্দিষ্ট অংশগুলো অন্তর্ভুক্ত করা সরাসরি সুন্নাহর অনুসরণ এবং আল্লাহর স্মরণ ও সুরক্ষার মাধ্যমে দিন শুরু করার একটি শক্তিশালী উপায়।
Note - উচ্চারণ সম্পূর্ণ সহি না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । সম্মানিত পাঠকদের হাদিস সমূহের রেফারেন্স পুনরায় নিশ্চিত করার বিনীত অনুরোধ রইলো সাথে যদি কোন ত্রুটি খুজে পান মেহেরবানী করে comment এ জানাবেন, সংশোধন করে ফেলবো إِنْ شَاءَ ٱللَّٰهُ । الله سبحان الله تالا আমাদের আমল সহজ এবং মন্জুর করে নিন । আমিন !
جَزَاكَ ٱللَّٰهُ خَيْرًا

Address

Dhaka

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Right Way/ সঠিক পথ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share