13/05/2025
বড়োলোক তার গাড়ি উল্টা পথে চালালে ট্রাফিক আইনে মামলা হয়। কিন্তু গরিব ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দিয়ে ট্রাফিক আইন ভে'ঙে চালালে সেটা ভে'ঙে ফেলতে হবে। মামলা বা জরিমানায় রাষ্ট্র ক্ষান্ত হবে না।
কিন্তু অটোরিকশা বিক্রির সময় সরকার ঠিকই ভ্যাট নিতে জানে। এখানে মোটর আছে, এর সঙ্গে বিভিন্ন পার্টস আছে, যেমন হর্ন, ব্রেক সিস্টেম এগুলো বিদেশ থেকে আমদানি হয়। ৫০ পার্সেন্টের উপর শুল্ক সরকার তখন ঠিক নিতে পারে।
ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি দিয়ে এইভাবে ভাঙা হচ্ছে। অথচ এর বাজার মূল্য আছে। যে টাকায় সরকার কর্মকর্তাদের আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স কিনে দেয়, তারচে' কম দাম হতে পারে এর, কিন্তু এই চার সন্তানের পিতার জন্য এটা বাঁচা কিম্বা মরে যাওয়ার সমান।
এই যে রিকশাচালক বলছে, এইটাই কি স্বাধীন বাংলাদেশ? এই যে বার বার স্বাধীনতা কথাটায় সে জোর দিচ্ছে, সে ভেবেছিল নয়া বন্দোবস্তে স্বৈরাচারী রাষ্ট্রের আচরণ থেকে সে মুক্ত হতে পেরেছে।
এই অটো চালক, এই রিকশা চালকের রক্তে জুলাই হয়েছে। কোনও আমলা রক্ত দেয় নাই। পক্ষে দাঁড়ায় নাই। কিন্তু এই রাষ্ট্রযন্ত্র নি'পী'ড়কই রয়ে গেছে।
অটো না চললে একদম দেশে তা ঢুকতেই দিবেন না, উৎপাদন বন্ধ করবেন, আমদানি করতে দিবেন না। আইন ভাঙলে জেল জরিমানা করবেন, কিন্তু ধ্বং'স কেন করতে হবে?
অটোর সমস্যা আমরা বুঝি, আমি নিজে ভুক্তভোগী ও বিরক্ত। কিন্তু এটা কি সমাধান? এত সমস্যা উৎপাদন নিষিদ্ধ করুন। চালালে জরিমানা করুন, জরিমানার পরিমাণ আয়ের চে' বেশি হলে কেউ কেন চালানোর সাহস করবে?
আকবর আলী খান তাঁর বইয়ে আসানসোলের এসডিওর পাঞ্জাবি ব্যবসায়ীর সাথে এক অভিজ্ঞতাকে উদ্ধৃত করে বলেছিলেন, এই দুর্ভাগা দেশে তিন কিসিমের কর্মকর্তা আছে। আছেন সজ্জন যাঁরা ঘুষ খান না, যেমন আপনি। আছে বদলোক যারা ঘুষ খায় এবং আছে শুয়োরের বাচ্চারা যারা ঘুষ নেয় অথচ ঘুষ নিয়েও কাজ করে না।
একটা রাষ্ট্র কখন শু'য়ো'রের বাচ্চাদের রাষ্ট্র হয় বুঝবেন যখন তারা ট্যাক্স নেয়, বানানোর অনুমতি দেয়, চালানোর অনুমতি দিয়ে আবার তা ভাঙে। ষোল আনা নেয়, কিন্তু গরিবের পেট বুঝে না।
আমরা কি শু'য়ো'রের বাচ্চাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে কখনোই বেরোতে পারব না?