05/07/2025
আশুরার তাৎপর্য
আশুরা ইসলামের ইতিহাসে বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
* হজরত আদম (আ.)-এর সৃষ্টি ও তাঁর তাওবা কবুল হওয়া।
* হজরত নূহ (আ.)-এর নৌকা মহাপ্লাবন শেষে জুদি পাহাড়ে নোঙর করা।
* হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর জন্ম ও নমরুদের অগ্নিকুণ্ড থেকে মুক্তি লাভ।
* হজরত মুসা (আ.) ও বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের কবল থেকে মুক্তি এবং ফেরাউন ও তার বাহিনীকে নীল নদে ডুবিয়ে মারা। এই কারণেই হজরত মুসা (আ.) এই দিনে রোজা রাখতেন।
* হজরত আইয়ুব (আ.)-এর কঠিন রোগ থেকে মুক্তি লাভ।
* সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ঘটনা হলো ৬১ হিজরিতে কারবালার প্রান্তরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদাত।
আশুরার দিনে যে আমলগুলো করা উচিত
আশুরার দিনে বেশ কিছু আমল রয়েছে, যা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ:
* রোজা রাখা: আশুরার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো রোজা রাখা। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আশুরার রোজা বিগত এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেয়। তবে ইহুদিদের সাথে সাদৃশ্য এড়ানোর জন্য রাসূলুল্লাহ (সা.) আশুরার আগের দিন (৯ মহররম) অথবা পরের দিন (১১ মহররম) সহ মোট দুটি রোজা রাখতে উৎসাহিত করেছেন। তাই আপনি ৯ ও ১০ মহররম অথবা ১০ ও ১১ মহররম রোজা রাখতে পারেন।
* দান-সদকা: গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা, পরিবারের জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা এবং দান করা উত্তম। হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি আশুরার দিনে নিজের পরিবারের উপর ব্যয় বাড়াবে, আল্লাহ তা'আলা সারা বছর তার রিজিক বাড়িয়ে দেবেন।" (বাইহাকি, শুআবুল ঈমান)
* নফল নামাজ: অতিরিক্ত নফল ইবাদত, তাহাজ্জুদ ও কুরআন তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব।
* তওবা ও ইস্তিগফার: এই দিনে বেশি বেশি আল্লাহর কাছে নিজের গুনাহের জন্য তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করা।
* জিকির: আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করা।
* অন্যান্য নেক আমল: অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া, পরস্পরের মধ্যে বিরোধ মিটিয়ে দেওয়া, দ্বীনি কাজে সময় ব্যয় করা ইত্যাদি নেক কাজ করা যেতে পারে।
মনে রাখবেন, আশুরার দিনে হালুয়া-রুটি বিতরণ বা তাজিয়া মিছিলের মতো কিছু রেওয়াজ প্রচলিত আছে, যা সরাসরি সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত নয়। তাই সুন্নাহসম্মত আমলগুলোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত।