03/06/2024
হরে কৃষ্ণ 🙏
➡️➡️➡️ ✤Apara Ekadashi✤ 🙏🙏🙏
✸অপরা একাদশীর মাহাত্ম্য, সংকল্প ও পারণ সময়✤
─•━━⊱♦️✥♦️⊰•⊰❁*❀❁❁❀*❁⊱⊱♦️✥♦️⊰•━━•
জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী হল ‘অপরা একাদশী’ । নাগদের মধ্যে যেমন শেষ নাগ ,পক্ষীদের মধ্যে যেমন গরুড়, মানুষের মধ্যে যেমন ব্রাহ্মণ, দেবতাদের মধ্যে নারায়ণ সর্বশ্রেষ্ঠ, তেমনই সকল ব্রতের মধ্যে একাদশী ব্রতই সর্বশ্রেষ্ঠ। হাজার হাজার বছর তপস্যায় যে ফল লাভ হয় না, একমাত্র অপরা একাদশীতে রাত্রিজাগরণের ফলে তা অনায়াসেই প্রাপ্ত হওয়া যায়। নিষ্ঠাসহকারে এই একাদশী পালন করলে শ্রীহরির কৃপায় তাঁর সকল পাপ বিনষ্ট হয় এবং বিষ্ণুলোকে গতি হয়ে থাকে।
সেই সঙ্গে আমাদের জানা দরকার অপরা একাদশী মাহাত্ম্য (Significance of Apara Ekadashi), অপরা একাদশী সংকল্প, অপরা একাদশী পারণ, অপরা একাদশী ব্রত কথা।
✤✸ অপরা একাদশী ব্রত কথা ✸✤
(Apara Ekadashi Vrat Kathā)
❃ জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া ‘অপরা একাদশী’ ব্রত মাহাত্ম্য ব্রহ্মাণ্ড পুরাণে ‘যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণ সংবাদে’ বর্ণিত আছে।
❃ মহারাজ যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণকে জিজ্ঞাসা করলেন, “হে জনার্দন! জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশীর নাম কি এবং তার মাহাত্ম্যই বা কি, আমি শুনতে ইচ্ছা করি। আপনি অনুগ্রহ করে তা বর্ণনা করুন।”
❃ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মানুষের কল্যানের উদ্দেশ্যে অমৃতসম কথাগুলি যুধিষ্ঠিরকে শোনালেন, ━
✸ “হে মহারাজ! মানুষের মঙ্গলের জন্য আপনি খুব ভাল প্রশ্ন করেছেন। বহু পুণ্য প্রদানকারী, মহাপাপ বিনাশকারী, ও পুত্রদানকারী এই একাদশী ‘অপরা’ নামে খ্যাত।”
✸ “এই ব্রত পালনকারী ব্যক্তি জগতে প্রসিদ্ধি লাভ করে।”
✸ “ব্রহ্মহত্যা, গোহত্যা, ভ্রূণহত্যা, পরনিন্দা, পরস্ত্রীগমন, মিথ্যাভাষণ প্রভৃতি গুরুতর পাপ এই ব্রত পালনে নষ্ট হয়ে যায়।”
যারা মিথ্যাসাক্ষ্যদান দেয়, ওজন ও মাপকাঠিতে ছলনা করে, শাস্ত্রের মিথ্যা ব্যাখ্যা প্রদান করে, জ্যোতিষের মিথ্যা গণনা করে, চিকিৎসার নামে কুচিকিৎসা বা অর্থ হরন করে থাকে, তারা সকলেই নরকযন্ত্রণা ভোগ করে। যদি এসমস্ত ব্যক্তিরাও যদি এই ব্রত পালন করে, তবে তারা সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়।”
✸ “ক্ষত্রিয় যদি স্বধর্ম ত্যাগ করে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায়, তবে সে ঘোরতর নরকগামী হয়। কিন্তু সেও এই ব্রত পালনে মুক্ত হয়ে স্বর্গগতি লাভ করে।”
✸ “মকররাশিতে সূর্য অবস্থানকালে মাঘ মাসে প্রয়াগ স্নানে যে ফল লাভ হয়; শিবরাত্রিতে কাশীধামে উপবাস করলে যে পুণ্য হয়; গয়াধামে বিষ্ণুপাদপদ্মে পিন্ডদানে যে ফল পাওয়া যায়; সিংহরাশিতে বৃহস্পতির অবস্থানে গৌতম নদীতে স্নানে, কুম্ভে কেদারনাথ দর্শনে, বদরিকাশ্রম যাত্রায় ও বদ্রীনারায়ণ সেবায় যে পুণ্য হয়; সূর্যগ্রহণে কুরুক্ষেত্রে স্নানে, হাতি, ঘোড়া, স্বর্ণ দানে এবং দক্ষিণাসহ যজ্ঞ সম্পাদনে যে ফল লাভ হয়, এই ব্রত পালন করলে অনায়াসে সেই ফল লাভ হয়ে থাকে।”
✸ “এই অপরা ব্রত হল পাপরূপ বৃক্ষের কুঠার স্বরূপ, পাপরূপ কাষ্ঠের দাবাগ্নির মতো, পাপরূপ অন্ধকারে সূর্যসদৃশ এবং পাপহস্তির সিংহস্বরূপ। এই ব্রত পালন না করে যে ব্যক্তি জীবন ধারণ করে জলে বুদবুদের মতো তাদের জন্ম-মৃত্যুই কেবল সার হয়।”
✸ “অপরা একাদশীতে উপবাস করে বিষ্ণুপূজা করলে সর্বপাপ মুক্ত হয়ে বিষ্ণুলোকে গতি হয়।”
✸ “এই ব্রতকাথা পাঠ ও শ্রবণ করলে সহস্র গোদানের ফল লাভ হয়।”
🌸 জয় অপরা একাদশী 🌸
🌸 জয় শ্রীরাধাকৃষ্ণ 🌸
─•━━⊱♦️✥♦️⊰•⊰❁*❀❁❁❀*❁⊱⊱♦️✥♦️⊰•━━•
✤✸ অপরা একাদশী সংকল্প ✸✤
(Apara Ekadashi Saṅkalpa)
✡ যারা আমিষ আহার করেন, তারা একাদশীর আগের দিন অর্থাৎ দশমী, একাদশী এবং দ্বাদশী এই তিন দিন নিরামিষ আহার করবেন।
✡ দশমীতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণে ফুল নিবেদন করে সঙ্কল্প করবেন, “হে ভগবান! আমাকে কৃপা করুন যাতে আগামীকাল একাদশী যেন নিষ্ঠার সাথে পালন করতে পারি।”
✡ পরদিন অর্থাৎ একাদশী তিথিতে সম্পূর্ণ দিন পালিত হবে অপরা একাদশী ━
◉ ইংরাজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী 03-জুন-2024 (সোমবার)।
◉ বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
মনে রাখবেন, একাদশীর দিন ভোরে (অর্থাৎ ব্রহ্ম মুহূর্তে) শয্যা ত্যাগ করে স্নান সেরে শুচিশুদ্ধ হয়ে শ্রীহরির মঙ্গল আরতিতে অংশগ্রহণ করতে হয়। শ্রীহরির পাদপদ্মে প্রার্থনা করতে হয়, “হে শ্রীকৃষ্ণ, আজ যেন এই মঙ্গলময়ী পবিত্র একাদশী সুন্দরভাবে পালন করতে পারি, আপনি আমাকে কৃপা করুন।” ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সম্মুখে অবশ্যই সঙ্কল্প মন্ত্র পাঠ করে সংকল্প নিতে হয়। সুতরাং এক্ষেত্রে সোমবার ভোরে সঙ্কল্প মন্ত্র পাঠ করতে হবে।
◼️ একাদশী সংকল্প মন্ত্র ◼️
❝ একাদশ্যাম্ নিরাহারঃ স্থিতা অহম্ অপরেহহনি।
ভোক্ষ্যামি পুন্ডরীকাক্ষ স্মরনম্ মে ভবাচ্যুত॥ ❞
━━┉┈┈(৩ বার)
অনুবাদ: “হে পুন্ডরীকাক্ষ! হে অচ্যূত! একাদশীর দিন উপবাস থেকে এই ব্রত পালনের উদ্দেশ্যে আমি আপনার স্মরণাপন্ন হচ্ছি।”
─•━━⊱♦️✥♦️⊰•⊰❁*❀❁❁❀*❁⊱⊱♦️✥♦️⊰•━━•
✤✸ অপরা একাদশী পারণ ✸✤
(Apara Ekadashi Pārana)
অপরা একাদশীর ঠিক পরদিন অর্থাৎ 04-জুন-2024 (মঙ্গলবার) সকালে পারণ সম্পন্ন করতে হবে নিচে উল্লেখিত ঠিক পারন মুহূর্তের মধ্যে ━
❏ পশ্চিমবঙ্গ : সকাল 04:49 – 09:19
❏ বাংলাদেশ : সকাল 05:10 – 09:41
অর্থাৎ একাদশী ব্রত পালন করে পরের দিন ভোরে স্নান সেরে পারন সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশস্য ভগবানকে ভোগ নিবেদন করে তিনবার ভক্তিসহকারে পারন মন্ত্র পাঠ করে একাদশীর ফল ভগবানের সম্মুখে ভক্তিসহকারে অবশ্যই অর্পণ করতে হয়, এরপর সেই অনুকল্প প্রসাদ গ্রহণ করে পারণ অর্থাৎ একাদশী ব্রত ভঙ্গ করতে হয়, নচেৎ পূর্ণ একাদশীর ফল লাভ থেকে বঞ্চিত থেকে যেতে হয়।
◼️ একাদশী পারন মন্ত্র ◼️
❝ ওঁ অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব।
প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব॥ ❞
━━┉┈┈(৩ বার)
অনুবাদ: “হে কেশব! আমি অজ্ঞানরূপ অন্ধকারে নিমজ্জিত আছি। হে নাথ! এই ব্রত দ্বারা আমার প্রতি প্রসন্ন হয়ে আমাকে জ্ঞানচক্ষু প্রদান করুন।”
একাদশী ব্রত পালনের প্রকৃত উদ্দেশ্য কেবল উপবাস করা নয়, নিরন্তর শ্রীভগবানের স্মরণ, মনন ও শ্রবন কীর্ত্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করতে হয়। শ্রীল প্রভুপাদ ভক্তদের এই দিন পঁচিশ মালা বা যতেষ্ট সময় পেলে আরও বেশী জপকরার নির্দেশ দিয়েছেন। একাদশী পালনের সময় পরনিন্দা, পরিচর্চা, মিথ্যা ভাষন, ক্রোধ, দুরাচারী, স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
─•━━⊱♦️✥♦️⊰•⊰❁*❀❁❁❀*❁⊱⊱♦️✥♦️⊰•━━•
সেই সঙ্গে জেনে রাখা উচিত কেন আমরা একাদশী ব্রত পালন করব? তাই আমাদের জেনে রাখা উচিত একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য।
─•━━⊱♦️✥♦️⊰•⊰❁*❀❁❁❀*❁⊱⊱♦️✥♦️⊰•━━•
✤✸ একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য ✸✤
◉একাদশী করলে যে কেবল মাত্র নিজের জীবন এর সদগতি হয় তা নয়, একাদশী ব্যক্তির প্রয়াত পিতা মাতা নিজ কর্ম দোষে নরকবাসী হন, তবে সেই পুত্রই পিতা মাতাকে নরকের থেকে উদ্ধার করতে পারবে।
◉একাদশীতে অন্ন ভোজন করলে ব্যক্তি যেমন নরকবাসী হয়, তেমনই অন্যকে অন্নভোজন করালেও নরকবাসী হয়। কাজেই একাদশী ব্রত পালন করা আমাদের সকলের কর্তব্য।
◉ ১টি খাদ্য শস্যের মধ্যে চার ধরনের পাপ থাকে। পাপ গুলো হল ──
১। মাতৃ হত্যার পাপ।
২। পিতৃ হত্যার পাপ।
৩। ব্রহ্ম হত্যার পাপ।
৪। গুরু হত্যার পাপ।
আমরা মাত্র একটি দানা নয় প্রতি গ্রাসে হাজার হাজার দানা ভক্ষণ করি। সুতরাং ভেবে দেখতে হবে, যে পাপ কাজ আদৌ করিনি সেই পাপ কাজের ভাগীদার আমাদেরকে হতে হবে।
◉ বিভিন্ন পুরানে একাদশী মহাব্রত সম্পর্কে কি বলা হয়েছে?
১। সকল পুরাণে মুনিদের এই নিশ্চিত মত যে, একাদশীতে উপবাস করলে সকল পাপ হইতে মুক্ত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। ──(ব্রহ্মবৈবর্ত্তপুরাণ)
২। একদা শ্রী যমরাজ ব্রাহ্মনকে বলেছেন, “হে ব্রাহ্মণ! যাদের পুত্র ও পৌত্র একাদশী ব্রত করে আমি শাসন কর্তা যম হয়েও বিশেষরূপে তাদের নিকট ভীত হই। যারা একাদশী ব্রত পরায়ন সেই মহাত্মারা বল পূর্বক স্বীয় শত পুরুষ উদ্ধার করেন।” ──(পদ্মপুরাণ)
৩। একাদশীতে উপবাস, ইহাই সার, ইহাই তত্ত, ইহাই সত্য, ইহাই ব্রত, ইহাই সম্যক প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ। ──(ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ)
৪। যে মানুষ একাদশীর দিন শস্যদানা গ্রহণ করে সে তার পিতা, মাতা, ভাই এবং গুরু হত্যাকারী এবং সে যদি বৈকুন্ঠ লোকে উন্নীত হয় তবুও তার অধঃপতন হয়।
৫। একাদশীর দিন বিষ্ণুর জন্য সবকিছু রন্ধন করা হয় এমনকি অন্ন এবং ডাল ও কিন্তু শাস্ত্রের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, বৈষ্ণবদের বিষ্ণুর প্রসাদ গ্রহণ করা উচিৎ নয়। সেই প্রসাদ পরের দিন গ্রহণ করার জন্য রেখে দেওয়া যেতে পারে। একাদশীর দিন কোন রকম শস্যদানা এমনকি অন্ন তা যদি বিষ্ণুর প্রসাদও হয় তবুও তা গ্রহণ করতে কঠোর ভাবে নিষেধ করা হয়েছে।
৬। বিধবা না হলে শাস্ত্র অনুসারে একাদশী ব্রত পালন করার প্রথা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু প্রবর্তন করে ছিলেন। ──(শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত আদিলীলা (১৫/৮-১০)
৭। অনেকের ধারনা পুরী ধামে শ্রীজগন্নাথ দেবের প্রসাদ ভক্ষন দোষাবহ নহে। এই ধারনার বশবর্তী হইয়া পুরীতে অনেকেই নিঃসঙ্কোচে অন্ন গ্রহণ করেন, ইহা সম্পূর্ণ শাস্ত্র বিরুদ্ধ বিচার।
৮। বিধাবা নারী এবং মতিগণ (তেজস্বী) যদি একাদশী ব্রত না করে তাহলে প্রণয় কাল পর্যন্ত তাদের অন্ধকারময় নরকে পচে মরতে হয়। ──(শারদীয় পুরাণ)
৯। হে রাজন! যতদিন আয়ু থাকবে ততদিন একাদশী উপবাস থাকবে। ──(অগ্নিপুরাণ)
১০। বিধবা রমণী একাদশীতে আহার করলে, তার সর্বপ্রকার সুকৃতি নষ্ট হয় এবং দিনদিন তার ভ্রণহত্যা পাপের অপরাধ হয়। ──(কাত্যায়ন সংহিতা)
১১। যিনি একাদশী ব্রত পরিত্যাগ করে অন্য ব্রতের উপাসনা করেন, তার হাতের মহা মূল্যবান রত্ন পরিত্যাগ করে লোহা যাচনা করা হয়। ──(তত্ত্বসাগর)
১২। দেবাদিদেব শিব দূর্গা দেবী কে বলেছেন হে মহাদেবী যারা হরি বাসরে (একাদশীতে) ভোজন করে যমদূতগণ যমালয়ে নিয়ে তাদের অগ্নিবর্ন তীক্ষ লৌহাস্ত্র তাদের মুখে নিক্ষেপ করে। ──(স্কন্দপুরাণ)
১৩। যে মানুষ একাদশীর দিন শস্যদানা গ্রহণ করে সে তার পিতা, মাতা, ভাই এবং গুরু হত্যাকারী এবং সে যদি বৈকুন্ঠলোকেও উন্নীত হয় তবুও তার অধঃপতন হয়। ──(স্কন্দপুরাণ)
তাহলে কেন আমরা জেনে শুনে পাপ কর্ম করছি? যেসকল ভক্তবৃন্দরা একাদশী মহাব্রত পালন না করে যে পাপ করছেন তা থেকে বিরত থাকুন। তারা সহ সকল ভক্তবৃন্দরাই একসাথে একাদশী মহাব্রত পালন করি এবং আমাদের এই দুর্লভ মানব জীবনকে স্বার্থক করি।
─•━━⊱♦️✥♦️⊰•⊰❁*❀❁❁❀*❁⊱⊱♦️✥♦️⊰•━━•
✤✸ অপরা একাদশী মাহাত্ম্য ✸✤
(Significance of Apara Ekadashi)
ব্রতশ্রেষ্ঠ একাদশী শ্রীহরির অত্যন্ত প্রিয়। কৃষ্ণভর্তি লাভই শ্রী একাদশী ব্রতের মুখ্য ফল। তবে আনুষাঙ্গিকরূপে স্বর্গ, ঐশ্বর্যাদি অনিত্য ফল লাভ হয়ে থাকে।
🕉️ ১) অপরা একাদশী বহু পুণ্য প্রদানকারী, মহাপাপ বিনাশকারী, ও পুত্রদানকারী।
🕉️ ২) অপরা একাদশী ব্রত পালনকারী ব্যক্তি জগতে প্রসিদ্ধি লাভ করে।
🕉️ ৩) ব্রহ্মহত্যা, গোহত্যা, ভ্রূণহত্যা, পরনিন্দা, পরস্ত্রীগমন, মিথ্যাভাষণ প্রভৃতি গুরুতর পাপ এই ব্রত পালনে নষ্ট হয়ে যায়।
🕉️ ৪) যারা মিথ্যাসাক্ষ্যদান দেয়, ওজন ও মাপকাঠিতে ছলনা করে, শাস্ত্রের মিথ্যা ব্যাখ্যা প্রদান করে, জ্যোতিষের মিথ্যা গণনা করে, চিকিৎসার নামে কুচিকিৎসা বা অর্থ হরন করে থাকে, তারা সকলেই নরকযন্ত্রণা ভোগ করে। যদি এসমস্ত ব্যক্তিরাও যদি এই ব্রত পালন করে, তবে তারা সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়।
🕉️ ৫) ক্ষত্রিয় যদি স্বধর্ম ত্যাগ করে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায়, তবে সে ঘোরতর নরকগামী হয়। কিন্তু সেও এই ব্রত পালনে মুক্ত হয়ে স্বর্গগতি লাভ করে।
🕉️ ৬) মকররাশিতে সূর্য অবস্থানকালে মাঘ মাসে প্রয়াগ স্নানে যে ফল লাভ হয়; শিবরাত্রিতে কাশীধামে উপবাস করলে যে পুণ্য হয়; গয়াধামে বিষ্ণুপাদপদ্মে পিন্ডদানে যে ফল পাওয়া যায়; সিংহরাশিতে বৃহস্পতির অবস্থানে গৌতম নদীতে স্নানে, কুম্ভে কেদারনাথ দর্শনে, বদরিকাশ্রম যাত্রায় ও বদ্রীনারায়ণ সেবায় যে পুণ্য হয়; সূর্যগ্রহণে কুরুক্ষেত্রে স্নানে, হাতি, ঘোড়া, স্বর্ণ দানে এবং দক্ষিণাসহ যজ্ঞ সম্পাদনে যে ফল লাভ হয়, এই ব্রত পালন করলে অনায়াসে সেই ফল লাভ হয়ে থাকে।
🕉️ ৭) এই অপরা ব্রত হল পাপরূপ বৃক্ষের কুঠার স্বরূপ, পাপরূপ কাষ্ঠের দাবাগ্নির মতো, পাপরূপ অন্ধকারে সূর্যসদৃশ এবং পাপহস্তির সিংহস্বরূপ। এই ব্রত পালন না করে যে ব্যক্তি জীবন ধারণ করে জলে বুদবুদের মতো তাদের জন্ম-মৃত্যুই কেবল সার হয়।
🕉️ ৮) অপরা একাদশীতে উপবাস করে বিষ্ণুপূজা করলে সর্বপাপ মুক্ত হয়ে বিষ্ণুলোকে গতি হয়।
🕉️ ৯) এই ব্রতকাথা পাঠ ও শ্রবণ করলে সহস্র গোদানের ফল লাভ হয়।
─•━━⊱♦️✥♦️⊰•⊰❁*❀❁❁❀*❁⊱⊱♦️✥♦️⊰•━━