04/10/2023
প্রশ্ন: সদগুরুকে চেনার উপায় কি? বৈষ্ণব না হলে কি শুরু হওয়া যায় না?
উত্তর : সদগুরু সর্বদা শ্রীকৃষ্ণের চিন্তা করেন, শ্রীকৃষ্ণের সেবায় নিযুক্ত থাকেন। তিনি সর্বদা কৃষ্ণকথা বলেন। কৃষ্ণভক্তি বিরুদ্ধ কোনও কথা বলেন না। তিনি জগতে শ্রীকৃষ্ণের মহিমা প্রচার করেন। তিনি পরম কৃষ্ণভক্ত। তিনি দ্বাদশ অঙ্গে তিলক পরিধান করেন। তিনি শিখাধারণ করেন; কণ্ঠে তুলসী কাঠের মালা ধারণ করেন। তিনি কৃষ্ণনাম জপ করেন, কীর্তন করেন। বন্ধ জীবের উদ্ধারের জন্য তিনি কৃষ্ণভক্তি শিক্ষা দেন। তিনি ভক্তি প্রতিকূল বিষয় গ্রহণ করেন না। আমিষ আহার, পান বিড়ি তামাক সেবন, তাস পাশা জুয়া খেলা, অবৈধ যৌন সঙ্গাদিতে তিনি কখনও জড়িত থাকেন না। এরূপ ব্যক্তিই সদগুরু। তিনি অবশ্যই গুরুপরম্পরার ধারায় আশ্রিত। একজন শুরু হন তাঁর গুরুদেবের অনুমোদনক্রমে।
বৈষ্ণব না হলে কাউকে গুরুদেব হিসাবে গ্রহণ করা কখনই উচিত নয়। আবার, দেখতে বৈষ্ণবের মতো হলেও বিধিনিষেধ যদি পালন না করে, অর্থাৎ যদি কেউ পান বিড়ি সিগারেট তামাক সেবন করে, কিংবা মাছ মাংস ডিম ইত্যাদি অখাদ্য গ্রহণ করে, কিংবা তাস জুয়া আড্ডাতে যুক্ত হয়, কিংবা অবৈধ যৌনসঙ্গে লিপ্ত হয়, তবে সে কখনই গুরু হিসাবে গণ্য হতে পারে না।
অবৈষ্ণবোপদিটেন মন্ত্রেণ নিরয়ং ব্রজেৎ।
“অবৈষ্ণবের উপদিষ্ট মন্ত্র গ্রহণ করলে নরকে গতি হবে।” (হরিভক্তিবিলাস ৪ / ১৪৪ ) কেউ যদি ভুলক্রমে অবৈষ্ণবের কাছে মন্ত্র দীক্ষা নিয়ে থাকেন, তবে তাঁর পক্ষে অবশ্যই-
পুনশ্চ বিধিনা সমাজ গ্রাহয়েদ্বৈষ্ণবাদ গুরোঃ
“যথাশাস্ত্র পুনরায় বৈষ্ণব গুরুর নিকটে মন্ত্রদীক্ষা গ্রহণ করা উচিত।” (হরিভক্তিবিলাস ৪/১৪৪)
বিষ্ণু বা কৃষ্ণমন্ত্রে যারা দীক্ষিত নয়, তাদের অবৈষ্ণব বলা হয়। শ্রীপদ্মপুরাণে লিখিত আছে-
মহাকুলো প্রসূতোঽপি সর্বযজ্ঞেষু দীক্ষিতা । সহস্র শাখাধ্যায়ী চ ন শুরুঃ স্যাদিবৈষ্ণবঃ ॥
“উচ্চ কুলে জাত, সর্ব যজ্ঞে দীক্ষিত এবং সহ শাখাধ্যায়ী ব্রাহ্মণ কেউ হতে পারেন, কিন্তু তিনি যদি অবৈষ্ণব হন, তবে তিনি গুরুপদে অভিষিক্ত হতে পারেন না।” (পদ্মপুরাণ)
শ্রীল জীব গোস্বামীপাদ উল্লেখ করেছেন—
পরমার্থতানো ব্যবহারিক গুর্বাদি পরিত্যাগেনাপি কর্তব্য ।
"ব্যবহারিক, লৌকিক এবং কুলগুরু ইত্যাদি গুরুত্রর পরিত্যাগ করে পারমার্থিক গুরুদেবের আশ্রয় গ্রহণ করা উচিত।" (ভক্তিসন্দর্ভ ২১০ সংখ্যা )
সমাজে লাখো দীক্ষিত মানুষ রয়েছেন, কিন্তু কেনো সকলের মধ্যে ভক্তি বাড়ছে না?? ভক্তি না বৃদ্ধি পাবার মেন কারণ হচ্ছে স্বদগুরুর আশ্রয় না পাওয়া।। তাই অন্তরে গভীর প্রেম জাগরণের অভাব থেকেই যাচ্ছে।। গুরুদেবের কৃপায় ভক্তি পথে যে এগোবে, সেটা হয়ে উঠে না।। কারণ সদগুরুর অভাব।।
গুরুদেবের যে পাওয়ার যে কৃপাশক্তি সেটা সদগুরুর মধ্যে বিদ্যমান থাকে।। যাকে তাকে গুরুদেব স্বীকার করলে সেই দিব্য কৃপাশক্তি টা লাভ হয়না বলেই,, যেমন সমাজ ঘুন ধরা তেমন ই থেকে যায়।।
হরিবোল।।