Sukun Publishing

  • Home
  • Sukun Publishing

Sukun Publishing শব্দে আঁকা স্বপ্ন...

আমরা কতো স্বাভাবিকভাবেই না শ্বাস নিই, হাঁটাচলা করি, কথা বলি। পছন্দের খাবারগুলো উপভোগ করি, কোনো ব্যথা ছাড়াই রাতে শান্তিত...
16/08/2025

আমরা কতো স্বাভাবিকভাবেই না শ্বাস নিই, হাঁটাচলা করি, কথা বলি। পছন্দের খাবারগুলো উপভোগ করি, কোনো ব্যথা ছাড়াই রাতে শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ি।

এই সাধারণ কাজগুলো আমাদের কাছে এতটাই স্বাভাবিক যে, এগুলোকে আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক একটি অমূল্য উপহার হিসেবে ভাবার ফুরসত পাই না।

কিন্তু একদিন হঠাৎ যখন সামান্য সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হই, কিংবা শরীরের কোথাও ব্যথা অনুভব করি, তখনই বুঝতে পারি—সুস্থতা কী বিশাল এক নিয়ামত ছিল।

আসলে, সুস্থ শরীর আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য শ্রেষ্ঠ উপহারগুলোর একটি। এটি এমন এক সম্পদ, যা দিয়ে দুনিয়ার অন্য কোনো সম্পদের তুলনা চলে না। অথচ, যে দুটি নিয়ামতের ব্যাপারে মানুষ সবচেয়ে বেশি উদাসীন, তার প্রথমটিই হলো সুস্থতা।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “দুটি নিয়ামত এমন আছে, যে ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষই ধোঁকায় পড়ে থাকে। তা হলো, সুস্থতা ও অবসর।” [১]

ইসলাম আমাদের শেখায় যে, এই শরীর কেবল আমাদের ভোগ-বিলাসের জন্য নয়। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের কাছে গচ্ছিত একটি আমানত। কিয়ামতের দিন আমাদের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কথা বলবে।

আমাদের চোখ, কান, হাত, পা—সবকিছুকে প্রশ্ন করা হবে, সেগুলোকে আমরা কোথায় এবং কীভাবে ব্যবহার করেছি। এই আমানতের সঠিক যত্ন নেওয়া, একে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বাঁচিয়ে রাখা এবং তাঁর ইবাদতের কাজে লাগানোই আমাদের দায়িত্ব।

ইসলাম শুধু আত্মিক উন্নতির কথাই বলে না, শারীরিক সুস্থতার জন্যও দিয়েছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা। পরিমিত আহার ইসলামের অন্যতম একটি শিক্ষা।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, “...তোমরা খাও এবং পান করো, কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না।” [২]

আমাদের নবী (ﷺ) শিখিয়েছেন পেটের এক-তৃতীয়াংশ খাবার, এক-তৃতীয়াংশ পানীয় এবং বাকি এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখতে। আজকের আধুনিক বিজ্ঞানও এই চৌদ্দশ’ বছর আগের নববী ফর্মুলাকে সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে।

একজন মুমিন কেন সুস্থ ও সবল থাকতে চাইবে? কেবল দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার জন্য নয়, বরং আল্লাহর ইবাদতকে আরও সুন্দরভাবে করার জন্য। একটি সুস্থ শরীর নিয়ে আপনি মনোযোগের সাথে সালাত আদায় করতে পারবেন, স্বাচ্ছন্দ্যে সিয়াম পালন করতে পারবেন, হজ্জের কষ্টসাধ্য ইবাদতগুলো সম্পন্ন করতে পারবেন এবং আল্লাহর সৃষ্টির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারবেন।

একজন শক্তিশালী মুমিন আল্লাহর কাছে দুর্বল মুমিনের চেয়ে অধিক প্রিয়। [৩]

তাই আসুন, আল্লাহর দেওয়া এই শ্রেষ্ঠ নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করি। আর শুকরিয়া আদায়ের সর্বোত্তম উপায় হলো, এই শরীরকে এমন কোনো কাজে ব্যবহার না করা, যা আল্লাহ অপছন্দ করেন এবং এর সঠিক যত্ন নেওয়া।

আজ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের সুস্থ-সবল দেহটার দিকে তাকিয়ে আমরা কি একবারও মন থেকে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলেছি? এই অমূল্য নিয়ামতটির যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে কি আমরা আজ থেকে একটু সচেতন হব?
রেফারেন্স:
[১] সহীহ আল-বুখারী, হাদীস: ৬৪১২
[২] সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৩১
[৩] সহীহ মুসলিম, হাদীস: ২৬৬৪
সুকুন পাবলিশিং
শব্দে আঁকা স্বপ্ন…

ক্যারিয়ারের চিন্তা, ভবিষ্যতের ভাবনা, সম্পর্কের টানাপোড়েন—হাজারো উদ্বেগ আমাদের ভেতরটাকে প্রতিনিয়ত কুরে কুরে খায়। আমরা...
15/08/2025

ক্যারিয়ারের চিন্তা, ভবিষ্যতের ভাবনা, সম্পর্কের টানাপোড়েন—হাজারো উদ্বেগ আমাদের ভেতরটাকে প্রতিনিয়ত কুরে কুরে খায়।

আমরা প্রশান্তির জন্য কত কিছুই না করি! তথাকথিত মেডিটেশন, মোটিভেশনাল স্পিচ, কিংবা দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া। কিন্তু এই প্রশান্তিগুলো বড্ড অস্থায়ী।

দুশ্চিন্তার মেঘ কাটতে না কাটতেই আবার নতুন কোনো উদ্বেগ এসে ভর করে। এর কারণটা কী, আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি?

​সমস্যাটা হলো, আমরা ভুল জায়গায় নির্ভর করছি। আমরা নির্ভর করি আমাদের যোগ্যতার ওপর, আমাদের ব্যাংক-ব্যালেন্সের ওপর, কিংবা মানুষের দেওয়া প্রতিশ্রুতির ওপর। কিন্তু এই সবকিছুর ভিত্তিই তো বালির ঘরের মতো ঠুনকো।

আজ যে যোগ্যতা আছে, কাল তা না-ও থাকতে পারে। আজ যে সম্পদ আছে, কাল তা নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে। এই অস্থায়ী অবলম্বনগুলোর ওপর ভরসা করতে গিয়েই আমরা প্রতিনিয়ত হতাশ হই, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ি।

​অথচ, এমন এক সত্তা আছেন, যাঁর ওপর নির্ভর করলে আর কোনো দুশ্চিন্তা থাকে না। তিনিই তো আমাদের রব। যখন আমরা আমাদের সবটুকু ভার, সবটুকু উদ্বেগ তাঁর ওপর ছেড়ে দিই, তখন আমাদের অন্তর এক অদ্ভুত প্রশান্তিতে ছেয়ে যায়। এই নির্ভরতার নামই তো ‘তাওয়াক্কুল’।

তাওয়াক্কুল মানে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা নয়, বরং নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করে ফলাফলের জন্য পুরোপুরি রবের ওপর ভরসা করা।

​যখন একজন কৃষক জমিতে বীজ বপন করে, সে তো তার সবটুকু দিয়েই চেষ্টা করে। কিন্তু এরপর সে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে—এক পশলা বৃষ্টির জন্য, যা তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

মুমিনের জীবনটাও ঠিক তেমনই। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব, কিন্তু ফলাফলের জন্য তাকিয়ে থাকব কেবলই আল্লাহর রহমতের দিকে। এই বিশ্বাস যখন অন্তরে গেঁথে যায়, তখন আর কোনো ‘কী হবে’ বা ‘যদি না হয়’—এই প্রশ্নগুলো আমাদের তাড়া করে ফেরে না। তখন আমরা জানি, যা-ই হবে, ভালোর জন্যই হবে, কারণ আমার রব আমার জন্য যা নির্বাচন করবেন, তার চেয়ে উত্তম আর কিছুই হতে পারে না।

​আল্লাহর উপর এই নির্ভরতাই হলো দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনের আসল চাবিকাঠি। যে ব্যক্তি তার সবটুকু আল্লাহর হাতে সঁপে দিতে পারে, দুনিয়ার কোনো ঝড়ই তাকে আর টলাতে পারে না। তার হৃদয় তখন থাকে প্রশান্ত, কারণ সে জানে—তার রবই তার জন্য যথেষ্ট।

​কীভাবে এই তাওয়াক্কুলের গুণ অর্জন করা যায়? কীভাবে নিজের সবটুকু দিয়ে আল্লাহর ওপর নির্ভর করে এক দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন কাটানো যায়? এই সফরের প্রতিটি পদক্ষেপের দিশা পেতে পড়ুন ‘রবের মুখাপেক্ষী’ বইটি।
​.
সুকুন পাবলিশিং
শব্দে আঁকা স্বপ্ন…

খালিদ তার প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি নিয়েছিল—সালাতে যা পড়ছে, তার অর্থ অনুধাবন করা। সূরা ফাতিহার গভীরতা তাকে...
15/08/2025

খালিদ তার প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি নিয়েছিল—সালাতে যা পড়ছে, তার অর্থ অনুধাবন করা।

সূরা ফাতিহার গভীরতা তাকে এক নতুন জগতের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু জ্ঞান অর্জন করা এক জিনিস, আর সেই জ্ঞানকে বাস্তবে পরিণত করে প্রশান্তি লাভ করা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি সংগ্রাম।

কয়েকদিন কেটে গেল। খালিদ প্রতিদিন সালাতে দাঁড়ায়, সূরা ফাতিহার অর্থ মনে করার চেষ্টা করে। কখনো মনোযোগ আসে, পরক্ষণেই আবার অফিসের চিন্তা বা সংসারের ভাবনা মাথায় এসে ভর করে।

তার মনে হচ্ছিল, সে যেন এক পিচ্ছিল পথ বেয়ে উপরে ওঠার চেষ্টা করছে—একটু এগোয়, তো আবার পিছলে যায়। তার মনে প্রশ্ন জাগল, তাহলে কি শুধু অর্থ জানাই যথেষ্ট নয়? একটি শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশ কি অপরিহার্য?

এইসব চিন্তার মধ্যেই শুক্রবার এলো। জুমু'আর দিন।

খালিদ একটু আগেই মসজিদে চলে গেল। চারদিকে বহু মানুষের সমাগম, হালকা কোলাহল, খুতবার জন্য প্রস্তুতি—এই পরিবেশে মনোযোগ ধরে রাখা তার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

এক কোণায় বসে সে গত পর্বের একটি আলোচনার কথা ভাবছিল—মসজিদে অন্যদের দেখে মনোযোগ নষ্ট হয়। আজ যেন কথাটি তার নিজের ক্ষেত্রেই সত্যি হতে যাচ্ছিল।

কিন্তু সে মনকে অন্যদিকে ফেরালো। লেকচারে শোনা কথাটি মনে করল: "অন্যকে দেখে বিভ্রান্ত হয়ো না, অনুপ্রেরণা নাও।"

সে দেখল, এক বয়স্ক চাচা কত ধীরস্থিরভাবে সুন্নাত আদায় করছেন। তার পাশের এক যুবক চোখ বন্ধ করে তাসবিহ পড়ছে। এই দৃশ্যগুলো খালিদকে অবাক করল। তার মনে হলো, এই মানুষগুলো যদি এত কোলাহলের মাঝেও রবের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে, তাহলে সমস্যাটা পরিবেশের নয়, সমস্যাটা তার নিজের ভেতরে।

খুতবা শুরু হলো। ইমাম সাহেব বলছিলেন আল্লাহর প্রতি একাগ্রতা ও ভালোবাসার কথা। প্রতিটি শব্দ খালিদের হৃদয়ে গেঁথে যাচ্ছিল, কারণ সে এখন শুধু শুনছিল না, বোঝার চেষ্টা করছিল।

এরপর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। জামা'আতে সালাত শুরু হলো।

ইমাম সাহেব যখন তেলাওয়াত শুরু করলেন, "আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন", খালিদের মনে হলো, শুধু ইমাম নন, মসজিদের শত শত মুসল্লির সাথে সে-ও যেন সমস্বরে মহাবিশ্বের প্রতিপালকের প্রশংসা করছে।

যখন সে রুকুতে গেল এবং বলল, "সুবহা-না রব্বিয়াল 'আযীম" (আমার মহান রব পবিত্র), তখন প্রথমবারের মতো তার শরীরটা শুধু ঝুঁকল না, তার আত্মাটাও যেন রবের বিশালত্বের সামনে নত হয়ে গেল। সে তার নিজের অস্তিত্বের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ওজন অনুভব করল।

এরপর এলো সিজদা।

যে মুহূর্তে খালিদ তার কপালটাকে জায়নামাজের শীতল জমিনে রাখল, ঠিক সেই মুহূর্তে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটল। তার চারপাশের সব কোলাহল, সব আওয়াজ মুহূর্তের জন্য থেমে গেল। তার মনে হলো, এই বিশাল পৃথিবীতে সে আর তার রব ছাড়া আর কেউ নেই।

তার মনে হলো, তার মহান রব যেন সরাসরি তার দিকে তাকিয়ে আছেন। দেখছেন তার এই অক্ষম প্রচেষ্টা, তার হৃদয়ের আকুতি। তার ভেতরের সমস্ত অহংকার, দুশ্চিন্তা আর ভয় গলে পানি হয়ে গেল। কোনো কারণ ছাড়াই তার চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল।

এ কান্না দুঃখের ছিল না, ছিল এক পরম পাওয়া আর ভালোবাসার। সে সিজদায় পড়ে রইল, আর তার মনে হতে লাগল, দুনিয়ার সমস্ত শান্তি যেন এই একটি সিজদায় এসে জমা হয়েছে।

সালাত শেষ হলো। ইমাম সাহেব সালাম ফিরালেন। কোলাহল আবার ফিরে এলো। কিন্তু খালিদের ভেতরে তখন এক গভীর নীরবতা, এক অনির্বচনীয় প্রশান্তি বা ‘সাকিনাহ’ ছেয়ে আছে। সে নীরবে বসে রইল কিছুক্ষণ।

তার মনে হলো, সে আজ শুধু একটি ফরজ ইবাদত আদায় করেনি, বরং সে তার রবের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে এসেছে। বাড়ি ফেরার পথে তার পা দুটো যেন হাওয়ায় ভাসছিল।

খালিদ আজ তার জীবনের প্রথম সত্যিকারের প্রশান্তির স্বাদ পেয়েছে। এই স্বাদ তাকে বুঝিয়ে দিয়েছে, এই পথটা কঠিন হলেও এর শেষটা অনেক বেশি সুন্দর।

খালিদ তার সেই অসাধারণ সালাতের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে। এবার আপনার পালা। আপনার জীবনের সেই বিশেষ সালাতের কথা আমাদের জানান, যা আপনার হৃদয়কে স্পর্শ করেছিল।
সুকুন পাবলিশিং
শব্দে আঁকা স্বপ্ন…

#খালিদের_সালাত #একটি_বদলে_যাওয়ার_গল্প #পর্ব_৪

ইতিহাসের কিছু বিশ্বাসঘাতকতা এতটাই গভীর ক্ষত তৈরি করে, যার রক্তক্ষরণ হাজার বছর পরেও থামে না। কারবালার প্রান্তরে যে মহাবিয়...
14/08/2025

ইতিহাসের কিছু বিশ্বাসঘাতকতা এতটাই গভীর ক্ষত তৈরি করে, যার রক্তক্ষরণ হাজার বছর পরেও থামে না।

কারবালার প্রান্তরে যে মহাবিয়োগান্তক ঘটনা ঘটেছিল, তার পেছনের পাতায় পাতায় লুকিয়ে আছে এমনই এক করুণ প্রতারণার গল্প।

​একদিকে যখন ইয়াজিদের দুঃশাসন আর অন্যায়ে মুসলিম বিশ্ব ভারাক্রান্ত, তখন কুফার আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়েছিল ইমাম হুসাইন (রা.)-এর নামে।

হাজার হাজার চিঠি, শত শত দূত আর লাখো প্রতিশ্রুতির বন্যায় তারা হুসাইন (রা.)-কে আহ্বান জানিয়েছিল, ‘হে রাসুলের নাতি, আপনি আসুন, এই জালিমের শাসন থেকে আমাদের মুক্তি দিন। আমাদের তরবারি আপনার জন্য কোষমুক্ত।’ এই আবেগঘন আহ্বানে সাড়া না দিয়ে উপায় ছিল না। তিনি তো উম্মাহর ব্যথায় ব্যথিত হবেনই, এটাই তো নবী পরিবারের আদর্শ।

​কিন্তু কুফা! সে যেন এক প্রতারণার শহর। হুসাইন (রা.) যখন তাঁর পরিবার-পরিজন নিয়ে কুফার পথে যাত্রা করলেন, তখন সেই হাজারো চিঠি আর লাখো প্রতিশ্রুতির ধারক-বাহকরা একে একে নিজেদের চেহারা পাল্টে ফেলল।

ক্ষমতার লোভ আর মৃত্যুর ভয় তাদের এতটাই অন্ধ করে দিয়েছিল যে, তারা ভুলে গিয়েছিল নিজেদের ওয়াদার কথা। যে হাতগুলো একদিন বাইয়াতের জন্য আকুল ছিল, সেই হাতগুলোই সেদিন হুসাইন (রা.)-এর বিরুদ্ধে তলোয়ার শানিত করছিল।

​এটি ছিল ইতিহাসের এক নির্মম পরিহাস। যাদের মুক্তির জন্য হুসাইন (রা.) নিজের পরিবারকে পর্যন্ত ঝুঁকির মুখে ফেলেছিলেন, তারাই সেদিন তাঁর জন্য কুফার দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, তারা যোগ দিয়েছিল শত্রুবাহিনীতে।

কারবালার প্রান্তরে ইমাম হুসাইন (রা.) যখন একা দাঁড়িয়েছিলেন, তখন তাঁর বিপরীতে দাঁড়ানো অধিকাংশ সৈন্যই ছিল সেই কুফাবাসী, যারা একদিন তাঁকে ‘আমিরুল মুমিনিন’ বলে ডাকতে চেয়েছিল। এই প্রতারণা কারবালার ট্র্যাজেডিকে আরও বেশি করুণ, আরও বেশি হৃদয়বিদারক করে তুলেছে।

​কীভাবে এই বিশ্বাসঘাতকতার জাল বোনা হয়েছিল? ক্ষমতার লোভ কীভাবে একদল মানুষকে এতটা নির্লজ্জ প্রতারকে পরিণত করেছিল? কারবালার সেই রক্তভেজা প্রান্তরের পেছনের এই করুণ কাহিনী বিস্তারিতভাবে জানতে পড়ুন ‘যেভাবে ঘটেছিল কারবালা’ বইটি।
​.
সুকুন পাবলিশিং
শব্দে আঁকা স্বপ্ন…

আমরা পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার স্বপ্ন দেখি, সমাজের বড় বড় সমস্যা নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তুলি, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ডাক দিই। ...
14/08/2025

আমরা পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার স্বপ্ন দেখি, সমাজের বড় বড় সমস্যা নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তুলি, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ডাক দিই।

কিন্তু অদ্ভুত এক ব্যাপার হলো, যে মানুষগুলো আমাদের সবচেয়ে কাছে, আমাদের ভালোবাসার বৃত্তে, তাদের বদলে দেওয়ার কথা আমরা তেমন করে ভাবি না।

বাইরের মানুষকে দ্বীনের কথা বলাটা যতটা সহজ মনে হয়, নিজের বাবা-মা, ভাইবোন বা জীবনসঙ্গীকে একটা ছোট্ট সুন্নাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিতে গেলেই আমাদের ভেতরটা কেমন যেন গুটিয়ে আসে।

​অথচ ইসলামের সবচেয়ে সুন্দর আর কার্যকরী দাওয়াহর শুরুটা তো নিজের ঘর থেকেই হওয়ার কথা ছিল। ঘর তো শুধু ইট-পাথরের একটি কাঠামো নয়, ঘর হলো একটা প্রজন্মের আঁতুড়ঘর। এখানেই তো আমাদের চরিত্র, আমাদের বিশ্বাস, আমাদের মূল্যবোধের প্রথম বীজ রোপিত হয়।

যে মা তার সন্তানকে কোলে নিয়ে রবের পরিচয় শুনিয়ে দেন, যে স্ত্রী তার স্বামীর জন্য জায়নামাজটা এগিয়ে দিয়ে তাকে সালাতের কথা মনে করিয়ে দেন, তিনিই তো সবচেয়ে বড় দাঈ। বাইরের পৃথিবীকে আলোকিত করার আগে নিজের ঘরটাকে ঈমানের আলোয় উজ্জ্বল করাটাই তো বুদ্ধিমানের কাজ।

​নিজের ঘরে দাওয়াহ মানে তো কাঠখোট্টা বক্তৃতা বা কড়া শাসন নয়। এটা হলো ভালোবাসার ভাষায় কথা বলা, প্রজ্ঞা আর মমতার সাথে কাছে টানা।

আপনার সুন্দর আচরণ, আপনার ক্ষমা করে দেওয়ার উদারতা, আপনার বিনয়—এগুলোই তো আপনার পরিবারের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী দাওয়াহ।

আপনার বাবা-মা হয়তো আপনার হিজাব দেখে প্রথমে অসন্তুষ্ট হতে পারেন, কিন্তু আপনার অবিচল তাকওয়া আর তাদের প্রতি আপনার অপরিসীম ভালোবাসা একদিন তাদের অন্তরকেও গলিয়ে দেবে।

এটাই তো নবিদের শেখানো পদ্ধতি—কঠোরতা দিয়ে নয়, ভালোবাসা দিয়ে হৃদয় জয় করা। ​যখন একটা ঘর আল্লাহর ভালোবাসায় রঙিন হয়ে ওঠে, তখন সেই ঘরের আলো আর চার দেয়ালের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না। তা ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবেশীর ঘরে, সমাজে, আর এভাবেই শুরু হয় সত্যিকারের পরিবর্তন।

তাই পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার বড় স্বপ্ন দেখার আগে, আসুন, আমরা আমাদের নিজেদের ঘরগুলোকে ঈমানের আলোয় সাজিয়ে তুলি। কারণ, দাওয়াহর প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঠ তো নিজের ঘর থেকেই শুরু হয়।

দাওয়াহর এ পাঠে সহায়ক হিশেবে 'নিকটজনে নারীর দাওয়াহ' বইটি হতে পারে আপনার সেরা সহায়ক। সংগ্রহ করেছেন তো?
​.
সুকুন পাবলিশিং
শব্দে আঁকা স্বপ্ন…

আমরা সবাই কমবেশি হিসাব-নিকাশে পারদর্শী। মাসের শেষে বেতনের হিসাব, ব্যবসার লাভ-লোকসানের হিসাব, কিংবা দৈনন্দিন খরচের হিসাব—...
13/08/2025

আমরা সবাই কমবেশি হিসাব-নিকাশে পারদর্শী। মাসের শেষে বেতনের হিসাব, ব্যবসার লাভ-লোকসানের হিসাব, কিংবা দৈনন্দিন খরচের হিসাব—সবকিছুই আমাদের ডায়েরি বা এক্সেল শিটে নিখুঁতভাবে লেখা থাকে। এই হিসাবগুলো আমাদের দুনিয়ার জীবনকে গোছাতে সাহায্য করে।

কিন্তু আমরা কি কখনো আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবটির কথা ভেবে দেখেছি? যে হিসাব আমাদের দুনিয়া ও আখিরাত—উভয় জীবনকে সুন্দর করতে পারে। তা হলো, দিন শেষে নিজের আমলের হিসাব।

এই আমলের হিসাব-নিকাশের আরবি পরিভাষা হলো ‘মুহাসাবা’। এর অর্থ, আত্মসমালোচনা করা বা নিজের কাজের পর্যালোচনা করা। বুদ্ধিমান ব্যবসায়ী যেমন প্রতিদিন তার বেচাকেনার হিসাব মিলিয়ে দেখে, একজন বুদ্ধিমান মুমিনও তেমনি দিন শেষে তার আমলের খাতাটা একবার খুলে দেখে। সে নিজেকে প্রশ্ন করে—আজ আমি কী ভালো কাজ করেছি, আর কী ভুল করেছি? আজকের দিনটি কি গতকালের চেয়ে উত্তম ছিল, নাকি অধম?

উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর সেই বিখ্যাত উক্তিটিই তো আমাদের জন্য সেরা পাথেয়। তিনি বলতেন, “তোমরা নিজেদের হিসাব নিজেরাই গ্রহণ করো, চূড়ান্ত হিসাব দিবসে তোমাদের হিসাব গৃহীত হওয়ার পূর্বে। আর তোমরা তোমাদের আমলগুলো মেপে নাও, চূড়ান্ত পরিমাপের দিনে তা পরিমাপ করার পূর্বে।”

এই কথাটি কতটা গভীর! আমরা যদি প্রতিদিন রাতে মাত্র পাঁচ-দশ মিনিট সময় বের করে নিজের আমলের হিসাবটা করে ফেলি, তাহলে কিয়ামতের সেই কঠিন দিনে আমাদের লজ্জিত হতে হবে না। এই মুহাসাবা আমাদের জন্য একটি আয়নার মতো কাজ করে। এই আয়না আমাদের দেখিয়ে দেয়, আমাদের ঈমানের কোথায় ধুলো জমেছে, আমাদের চরিত্রে কোথায় দাগ লেগেছে, আর কোন ভালো কাজগুলো আমাদের আরও বেশি করা উচিত।

এই হিসাব মেলানো খুব কঠিন কিছু নয়। রাতে বিছানায় শুয়ে চোখ বন্ধ করে শুধু একবার ভাবুন:

আজকের পাঁচ ওয়াক্ত সালাত কি সময়মতো, মনোযোগ দিয়ে আদায় করতে পেরেছি?

আজ কি এমন কোনো কথা বলেছি, যা কাউকে কষ্ট দিয়েছে? কোনো গীবত বা মিথ্যা কি আমার মুখ থেকে বের হয়েছে?

বাবা-মায়ের সাথে কি ভালো ব্যবহার করেছি?

আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব কি সততার সাথে পালন করেছি?

আজ কি কোনো নতুন কিছু শিখেছি, যা আমাকে আল্লাহর আরও নিকটবর্তী করবে?

এই প্রশ্নগুলোই আমাদের জন্য এক একটি চেকলিস্ট। যখন আমরা আমাদের ভুলগুলো চিহ্নিত করতে পারব, তখন আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং আগামীকাল সেই ভুল না করার প্রতিজ্ঞা করা সহজ হয়ে যাবে। আর যখন আমাদের ভালো কাজগুলো চোখে পড়বে, তখন ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে মন চাইবে।

এই আত্মসমালোচনা আমাদের অহংকারকে চূর্ণ করে দেয়, আমাদের বিনয়ী হতে শেখায়। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আমরা কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নই। প্রতিদিনের এই ছোট্ট অভ্যাসটিই ধীরে ধীরে আমাদের আত্মশুদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আসুন, আজ রাত থেকেই আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবটি মেলানো শুরু করি। কারণ যে ব্যক্তি দুনিয়াতে নিজের হিসাব মেলাতে পারল, আখিরাতের হিসাব তার জন্য সহজ হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।
সুকুন পাবলিশিং
শব্দে আঁকা স্বপ্ন…

এই পৃথিবীতে বিনিময় ছাড়া ভালোবাসার যদি কোনো উদাহরণ থাকে, তবে তা হলো মায়ের ভালোবাসা। সন্তানের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়লে,...
13/08/2025

এই পৃথিবীতে বিনিময় ছাড়া ভালোবাসার যদি কোনো উদাহরণ থাকে, তবে তা হলো মায়ের ভালোবাসা। সন্তানের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়লে, মায়ের অন্তরটা দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

সন্তানের সামান্যতম সাফল্যে তাঁর চেয়ে বেশি খুশি আর কেউ হয় না। এই নিখাদ, স্বার্থহীন ভালোবাসার কারণেই তো একজন মা তার জীবনের সবটুকু দিয়ে সন্তানের জন্য এক নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তোলেন।

দুনিয়ার সব বিপদ থেকে সন্তানকে আগলে রাখার জন্য তিনি কত কিছুই না করেন! কিন্তু আমরা কি জানি, একজন মায়ের হাতে এমন এক ঐশ্বরিক অস্ত্র আছে, যা দুনিয়ার সব প্রতিকূলতাকে হার মানাতে পারে?

সেই অস্ত্রের নাম ‘দুয়া’। আমরা প্রায়ই ভাগ্যের দোহাই দিই। বলি, ‘তাকদিরে যা লেখা আছে, তা-ই হবে।’

কিন্তু আমরা প্রায়ই ভুলে যাই, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের শিখিয়েছেন, ‘দুয়া ছাড়া আর কিছুই তাকদিরকে বদলাতে পারে না।’

একবার ভাবুন তো, একজন মায়ের চোখের পানিভেজা দুয়া কতটা শক্তিশালী হতে পারে, যা তার সন্তানের জন্য লেখা ভাগ্যকেও বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে! যখন একজন মা গভীর রাতে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে, কিংবা নিজের অজান্তেই সন্তানের মাথায় হাত বুলিয়ে রবের কাছে বলেন, ‘হে আল্লাহ, আমার সন্তানকে তুমি দেখে রেখো’, তখন সেই কথাগুলো আসমানে পৌঁছে যায়।

এটা কোনো সাধারণ কথা নয়, এটা স্বয়ং নবিজি (ﷺ)-এর দেওয়া প্রতিশ্রুতি। তিনি বলেছেন, তিন ব্যক্তির দুয়া নিঃসন্দেহে কবুল হয়, তার মধ্যে একজন হলো সন্তানের জন্য তার পিতা-মাতার দুয়া।

এর মানে হলো, আপনার সন্তানের জন্য আপনার মুখ থেকে বের হওয়া প্রতিটি প্রার্থনাই এক-একটি অব্যর্থ তির। এই তির হয়তো আপনি দেখতে পান না, কিন্তু তা আপনার সন্তানের চারপাশের সকল অকল্যাণ আর বিপদকে প্রতিহত করার জন্য এক অদৃশ্য ঢাল তৈরি করে দেয়।

এমনকি আল্লাহর নবিরাও এই অস্ত্রের সর্বোত্তম ব্যবহার করেছেন। বৃদ্ধ বয়সে, যখন সন্তান লাভের সব দুনিয়াবি সম্ভাবনা শেষ, তখন জাকারিয়া (আ.) আল্লাহর কাছে একজন সৎ সন্তানের জন্য দুয়া করেছিলেন। তিনি জানতেন, দুনিয়ার কোনো হিসাব-নিকাশ আল্লাহর ক্ষমতার কাছে কিছুই নয়। আর আল্লাহ তাঁর সেই আকুতি ফিরিয়ে দেননি।

একজন মায়ের দুয়াও ঠিক তেমনই—সব প্রতিকূলতাকে জয় করে সন্তানের জন্য কল্যাণের দুয়ার খুলে দেয়।

সন্তানের জন্য মায়ের ভালোবাসা তো শুধু দুনিয়ার ভালো থাকা আর সফলতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই ভালোবাসার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে যখন তা দুয়ায় পরিণত হয়, যখন তা সন্তানের দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতার জন্য রবের দরবারে পেশ করা হয়। আপনার প্রতিটি দুয়াই আপনার সন্তানের ভাগ্য নতুন করে লেখার একেকটি আবেদন।

কীভাবে এই ভালোবাসাকে সর্বোত্তম দুয়ায় রূপান্তরিত করা যায়? মাতৃত্বের এই বিশেষ সময়গুলোতে কীভাবে রবের আরও নিকটবর্তী হওয়া যায়? এই আধ্যাত্মিক সফরের প্রতিটি পদক্ষেপের দিশা পেতে পড়ুন ‘মা হওয়ার দিনগুলোতে’ বইটি।
সুকুন পাবলিশিং
শব্দে আঁকা স্বপ্ন…

যে ফুলের খুশবুতে দো-জাহান মাতোয়ারা!🌺
12/08/2025

যে ফুলের খুশবুতে দো-জাহান মাতোয়ারা!🌺

আমাদের বাহিরটা নিয়ে সচেতনতার কোনো কমতি নেই। পরিপাটি পোশাক, মার্জিত হাসি, সুন্দর কথা—সবকিছুতেই আমরা নিখুঁত থাকার চেষ্টা ক...
12/08/2025

আমাদের বাহিরটা নিয়ে সচেতনতার কোনো কমতি নেই। পরিপাটি পোশাক, মার্জিত হাসি, সুন্দর কথা—সবকিছুতেই আমরা নিখুঁত থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু আমাদের ভেতরের জগৎটার কী অবস্থা? যে অন্তরটা আমাদের অস্তিত্বের কেন্দ্র, সেই অন্তরের সুস্থতা নিয়ে কি আমরা ততটাই ভাবি?

আমরা প্রায়ই ভুলে যাই, দেয়াল সাজানোর আগে ঘরের ভিত্তিটা মজবুত করতে হয়। রবের সাথে সম্পর্কটাও ঠিক তেমনই। বাহ্যিক আমলের ইমারত গড়ার আগে অন্তরের ভিত্তিটাকে পরিশুদ্ধ আর সুস্থ করে নেওয়াটা সবচেয়ে জরুরি।

অন্তরের সুস্থতা মানে শুধু বড় বড় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা নয়। এর মানে হলো, অন্তরকে সেইসব সূক্ষ্ম রোগ থেকে মুক্ত করা, যা আমাদের অজান্তেই ভেতরটাকে खोखला করে দেয়। হিংসা, অহংকার, রিয়া (লোকদেখানো ইবাদত), দুনিয়ার প্রতি অতিরিক্ত মোহ—এই রোগগুলো আমাদের আত্মাকে ধীরে ধীরে অসুস্থ করে তোলে।

একটা অসুস্থ অন্তর নিয়ে সিজদায় লুটিয়ে পড়লেও সেই সিজদার মিষ্টতা অনুভব করা যায় না। একটা অসুস্থ হৃদয় নিয়ে কুরআন তিলাওয়াত করলেও তার আলো ভেতরে প্রবেশ করে না।

আমাদের পূর্বসূরিরা এই রহস্যটা জানতেন। তাঁরা বাহ্যিক আমলের চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিতেন অন্তরের পরিশুদ্ধির ওপর। তাঁরা বুঝতেন, আল্লাহ আমাদের বাহ্যিক রূপ বা আমলের সংখ্যার দিকে তাকান না, তিনি তাকান আমাদের অন্তরের দিকে। যে অন্তর আল্লাহর জন্য, যে অন্তরে কোনো কালিমা নেই, সেই অন্তরই তো রবের নৈকট্য লাভের প্রথম চাবিকাঠি। এই সুস্থ অন্তরই হলো ‘ক্বলবে সলিম’, যা নিয়ে আমরা রবের সামনে দাঁড়াতে চাই।

যখন অন্তরটা সুস্থ হতে শুরু করে, তখন ইবাদতের স্বাদই বদলে যায়। তখন সালাত আর বোঝা মনে হয় না, বরং মনে হয় রবের সাথে একান্তে কথা বলার এক দারুণ সুযোগ। তখন দুয়া আর শুধু চাওয়া-পাওয়ার তালিকা থাকে না, হয়ে ওঠে হৃদয়ের আকুতি। অন্তরের এই সুস্থতাই হলো রবের নৈকট্য লাভের প্রথম ধাপ। যে এই ধাপটা পার হতে পারে, তার জন্য বাকি পথটা আল্লাহ সহজ করে দেন।

কীভাবে এই অন্তরের রোগগুলো চেনা যায়? কীভাবে হিংসা, অহংকার আর দুনিয়ার মোহ থেকে নিজের আত্মাকে বাঁচিয়ে রাখা যায়? এই আত্মিক সুস্থতা অর্জনের পথেই বা কীভাবে হাঁটা যায়? এই সফরের প্রতিটি পদক্ষেপের দিশা পেতে পড়ুন ‘রবের সাথে সম্পর্ক’ বইটি।

বইটি আপনাকে শেখাবে, কীভাবে আপনার অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে রবের সবচেয়ে প্রিয় বান্দাদের একজন হয়ে উঠতে পারবেন, ইন শা আল্লাহ।
সুকুন পাবলিশিং
শব্দে আঁকা স্বপ্ন…

আমরা সবাই তো ভুল করি। ভুলের পর আমাদের অনুশোচনাও হয়। আমরা ভাবি, ‘ইশ! যদি আরেকটা সুযোগ পেতাম, তাহলে আর এমনটা করতাম না।’ দু...
11/08/2025

আমরা সবাই তো ভুল করি। ভুলের পর আমাদের অনুশোচনাও হয়। আমরা ভাবি, ‘ইশ! যদি আরেকটা সুযোগ পেতাম, তাহলে আর এমনটা করতাম না।’

দুনিয়ার জীবনে এই ‘দ্বিতীয় সুযোগ’ পাওয়ার আশাটা সবসময়ই থাকে। কিন্তু এমন এক জীবনের কথা কি আমরা ভাবি, যেখানে ভুলের কোনো ক্ষমা নেই, অনুশোচনার কোনো মূল্য নেই, আর দ্বিতীয় কোনো সুযোগের কোনো সম্ভাবনাই নেই?

সেই জীবনের নামই তো জাহান্নাম—চরম অনুশোচনা আর চিরস্থায়ী পরিণতির এক ভয়ংকর ঠিকানা।

একবার কল্পনা করুন তো সেই দৃশ্যটা! যখন একজন ব্যক্তিকে টেনেহিঁচড়ে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে, তখন তার বুকের ভেতরটা কেমন তোলপাড় করবে? দুনিয়ার তুচ্ছ দৌলত, ক্ষণিকের অহংকার আর গাফিলতিতে কাটানো মুহূর্তগুলো তখন তার চোখের সামনে সিনেমার মতো ভাসতে থাকবে।

সে চিৎকার করে বলবে, ‘হে রব, আমাকে শুধু আরেকটা সুযোগ দাও! আমি ফিরে গিয়ে ভালো কাজ করব।’

কিন্তু তার এই আর্তনাদ শোনার মতো আর কেউ থাকবে না। তার জন্য অপেক্ষা করবে এমন এক আগুন, যার তীব্রতা দুনিয়ার আগুনের চেয়ে সত্তর গুণ বেশি।

জাহান্নাম তো শুধু আগুনের শাস্তি নয়, এটা হলো চরম মানসিক যন্ত্রণার এক অন্তহীন দরিয়া। সেখানকার অধিবাসীরা একে অপরকে দেখে আফসোস করবে। তাদের চামড়াগুলো যখন পুড়ে গলে যাবে, তখন আবার নতুন চামড়া সৃষ্টি করা হবে, যাতে তারা আজাবের স্বাদ অবিরামভাবে পেতে থাকে। তাদের খাবার হবে যাক্কুম নামক কাঁটাযুক্ত বৃক্ষ, আর পানীয় হবে ফুটন্ত পানি, যা তাদের নাড়িভুঁড়ি ছিন্নভিন্ন করে দেবে।

এর চেয়েও ভয়ংকর হলো, এই শাস্তি কখনো শেষ হবে না।

সবচেয়ে বড় অনুশোচনাটা কী হবে, জানেন? যখন জান্নাতিরা দূর থেকে জাহান্নামিদের দেখে বলবে, ‘আমরা তো আমাদের রবের ওয়াদাকে সত্য পেয়েছি, তোমরা কি তোমাদের রবের ওয়াদাকে সত্য পেয়েছ?’

তখন জাহান্নামিদের উত্তর দেওয়ার মতো কোনো ভাষা থাকবে না। লজ্জায়, অপমানে, আর অনন্ত আফসোসে তাদের মাথা নত হয়ে যাবে। তারা বুঝতে পারবে, দুনিয়ার সামান্য কিছুদিনের বিনিময়ে তারা কী অমূল্য সম্পদ হারিয়েছে।

এই চিরস্থায়ী অনুশোচনা আর ভয়ংকর পরিণতির হাত থেকে বাঁচার পথ কী? সেই পথের দিশা তো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদের দিয়েই দিয়েছেন।

জাহান্নামের সেই ভয়ংকর রূপ, তার অধিবাসীদের করুণ পরিণতি আর তা থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও গভীরভাবে জানতে পড়ুন ‘জাহান্নাম যেমন হবে’ বইটি। বইটি আপনার অন্তরকে আল্লাহর ভয়ে প্রকম্পিত করবে এবং আপনাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করবে, ইন শা আল্লাহ।
সুকুন পাবলিশিং
শব্দে আঁকা স্বপ্ন…

এই অতি-সংযুক্ত পৃথিবীতেও আমরা মাঝে মাঝে বড্ড একা হয়ে যাই। চারপাশের শত শত মানুষের ভিড়ে, সোশ্যাল মিডিয়ার হাজারো বন্ধুর ...
11/08/2025

এই অতি-সংযুক্ত পৃথিবীতেও আমরা মাঝে মাঝে বড্ড একা হয়ে যাই। চারপাশের শত শত মানুষের ভিড়ে, সোশ্যাল মিডিয়ার হাজারো বন্ধুর লিস্টে কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের চেনা গ্রুপগুলোতেও নিজেকে বড্ড একা মনে হয়।

এমন অনেক কথা থাকে, যা কাউকে বলা যায় না। এমন অনেক কষ্ট থাকে, যা কাউকে বোঝানো যায় না। এই একাকীত্বের অনুভূতিটা খুব তীব্র, খুব যন্ত্রণার। কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি, এই যে আমাদের একাকীত্ব, আমরা কি আসলেই একা?

একজন মুমিন হিসেবে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় সান্ত্বনার বিষয় হলো—আমরা কখনোই, এক মুহূর্তের জন্যও একা থাকি না। আমাদের সাথে সবসময় এমন একজন আছেন, যিনি আমাদের সব কথা শোনেন, সব কষ্ট বোঝেন, এমনকি আমাদের না বলা কথাগুলোও জানেন। তিনি আমাদের রব, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা।

কুরআন আমাদের এই পরম সত্যটিই মনে করিয়ে দেয়। আল্লাহ বলেন: “...তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, তিনি তোমাদের সাথেই আছেন। আর তোমরা যা কিছু করো, আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।” [১]

সুবহানাল্লাহ! আপনি আপনার ঘরের কোণে একা বসে থাকুন, কিংবা গভীর রাতে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকুন—তিনি আপনার সাথেই আছেন। তিনি দেখছেন। এই ‘দেখাটা’ কোনো সিসিটিভি ক্যামেরার মতো ভীতিকর নজরদারি নয়; বরং এটি একজন পরম যত্নশীল অভিভাবকের স্নেহময় দৃষ্টি। যে দৃষ্টিতে লুকিয়ে আছে মায়া আর সুরক্ষা।

তিনি দেখছেন আপনার ভেতরের যুদ্ধগুলো, আপনার চেষ্টারত সংগ্রাম, আপনার নীরবে ঝরে পড়া অশ্রু।

আমাদের একাকীত্বের মুহূর্তগুলো আসলে আল্লাহর সাথে একান্ত আলাপের (মুনাজাতের) সেরা সুযোগ। যখন মনে হয়, পৃথিবীতে আপনার কথা শোনার মতো কেউ নেই, তখন জানবেন, আপনার সবচেয়ে বড় শ্রোতা আপনার কথা শোনার জন্য অপেক্ষা করছেন।

নবী ইয়াকুব (আ.) যখন তাঁর পুত্র ইউসুফ (আ.)-কে হারিয়ে শোকে কাতর, তখন তিনি তাঁর সকল কষ্ট আর অভিযোগ কার কাছে করেছিলেন? তিনি বলেছিলেন, “আমি আমার দুঃখ ও অস্থিরতার অভিযোগ কেবল আল্লাহর কাছেই করছি।” [২]

আল্লাহ আমাদের কতটা কাছে আছেন, তা বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন: “আর আমি তার ঘাড়ের শাহরগের চেয়েও বেশি নিকটবর্তী।” [৩]

আমাদের জীবনের মূল চালিকাশক্তি যে রগ, আল্লাহ তার চেয়েও কাছে। তাহলে একাকীত্ব কোথায়? তিনি তো আমাদের অস্তিত্বের চেয়েও বেশি নিকটে, এই উপলব্ধিকেই বলে ‘মুরাকাবা’—আল্লাহর উপস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকা। এই সচেতনতা আমাদের পাপ থেকে বাঁচায়, কারণ আমরা জানি, নির্জনেও তিনি আমাদের দেখছেন। আবার এই সচেতনতাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি জোগায়, কারণ আমরা জানি, সবচেয়ে কঠিন সময়েও তিনি আমাদের হাত ধরে আছেন।

তাই পরেরবার যখন আপনার নিজেকে একা মনে হবে, যখন চারপাশের পৃথিবীটা খুব অচেনা লাগবে, তখন কিছুক্ষণের জন্য চোখ বন্ধ করুন। গভীর একটা শ্বাস নিন আর শুধু বলুন, ‘ইয়া আল্লাহ, আমি জানি আপনি আমাকে দেখছেন। আপনি আমার কষ্ট বুঝছেন।’

দেখবেন, আপনার একাকীত্বের পুরো পৃথিবীটাই বদলে গেছে। আপনার শূন্য ঘরটাই তখন হয়ে উঠেছে আল্লাহর সাথে কথোপকথনের সেরা মঞ্চ, আর আপনার সেরা সঙ্গী হিসেবে আপনি আল্লাহকেই খুঁজে পেয়েছেন।
রেফারেন্স:
[১] সূরা আল-হাদীদ, আয়াত: ৪
[২] সূরা ইউসুফ, আয়াত: ৮৬
[৩] সূরা ক্বাফ, আয়াত: ১৬
সুকুন পাবলিশিং
শব্দে আঁকা স্বপ্ন…

আমাদের একেকটি দিন কীভাবে শুরু হয়, আর কীভাবে শেষ হয়, তার কি কোনো হিসাব রাখি আমরা? অ্যালার্মের ক্রিংক্রিং শব্দে ঘুম ভাঙা, ...
11/08/2025

আমাদের একেকটি দিন কীভাবে শুরু হয়, আর কীভাবে শেষ হয়, তার কি কোনো হিসাব রাখি আমরা?

অ্যালার্মের ক্রিংক্রিং শব্দে ঘুম ভাঙা, তারপর তাড়াহুড়ো করে অফিসের জন্য ছোটা, দিনভর ব্যস্ততা আর রাত নামলে রাজ্যের ক্লান্তি নিয়ে বিছানায় এলিয়ে পড়া—এই তো আমাদের জীবনের গতানুগতিক রুটিন।

এই রুটিনের প্রতিটি পরতে দুনিয়ার হাজারো রঙের ছড়াছড়ি, কিন্তু সেখানে কি রবের জন্য কোনো রং বরাদ্দ থাকে? অথচ একজন মুমিনের দিন তো এমন হওয়ার কথা ছিল না। তার প্রতিটি দিন হওয়ার কথা ছিল ইবাদতের রঙে রাঙানো।

ইবাদতের রঙে রাঙানো একটি দিন শুরু হয় ফজরের আযানের সাথে, দুনিয়ার ঘুমকে উপেক্ষা করে রবের সামনে দাঁড়ানোর মাধ্যমে। সেই দিনের শুরুটা হয় সিজদায় লুটিয়ে পড়ে আল্লাহর কাছে নিজেকে সঁপে দেওয়ার মাধ্যমে। এরপর সারাটা দিন আর দশটা সাধারণ দিনের মতো থাকে না। তখন তার প্রতিটি কাজ, প্রতিটি মুহূর্তই ইবাদতে পরিণত হয়।

এমন বান্দাদের কেউ যখন পরিবারের জন্য খাবার তৈরি করে, তখন তার নিয়ত থাকে আল্লাহর বান্দাদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার। যখন তিনি কর্মক্ষেত্রে সততার সাথে কাজ করে, তখন তার উদ্দেশ্য থাকে আল্লাহর দেওয়া আমানত রক্ষা করার।

এই দিনগুলোতে আনন্দের মুহূর্তগুলো পরিণত হয় শুকরিয়ায়, আর কষ্টের মুহূর্তগুলো পরিণত হয় সবরে। বিপদ এলে সে ভেঙে পড়ে না, কারণ সে জানে তার রব তার সাথেই আছেন। সাফল্য এলে সে অহংকারী হয় না, কারণ সে জানে এই সফলতা তাঁরই দান। তার প্রতিটি নিঃশ্বাস, প্রতিটি কথোপকথন, প্রতিটি লেনদেন—সবকিছুই তখন আল্লাহর স্মরণের রঙে রঙিন হয়ে ওঠে। সে তখন দুনিয়ার মাঝে থেকেও দুনিয়ার ঊর্ধ্বে বাস করে।

এই জীবনের স্বাদই অন্যরকম। এখানে কোনো লোকদেখানো ইবাদত নেই। তবে রবের সাথে এক গভীর, ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে। এখানে কোনো অস্থিরতা নেই, আছে শুধু প্রশান্তি। কারণ যে ব্যক্তি তার পুরোটা দিনকে আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করে দেয়, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা তার হৃদয়ে এমন এক প্রশান্তি ঢেলে দেন, যা দুনিয়ার আর কোনো কিছুতেই পাওয়া সম্ভব নয়।

তার দিনটা তখন আর ক্লান্তিকর রুটিন থাকে না, হয়ে ওঠে রবের সাথে ভালোবাসার এক সুন্দর সফর।

কীভাবে আমাদের সাদামাটা দিনগুলোকে ইবাদতের রঙে রাঙিয়ে তোলা যায়? কীভাবে প্রতিটি মুহূর্তকে আল্লাহর স্মরণে জীবন্ত রাখা যায়? এই সুন্দর সফরের পথের দিশা জানতে পড়ুন ‘আল্লাহর রঙে রাঙি’ বইটি। বইটি আপনাকে শেখাবে, কীভাবে আপনার প্রতিটি সাধারণ দিনকেও অসাধারণ ইবাদতে পরিণত করা যায়।
সুকুন পাবলিশিং
শব্দে আঁকা স্বপ্ন…

Address

66, Paridas Road, Banglabazar

1100

Opening Hours

Monday 10:00 - 19:00
Tuesday 10:00 - 19:00
Wednesday 10:00 - 19:00
Thursday 10:00 - 19:00
Saturday 10:00 - 19:00
Sunday 10:00 - 19:00

Telephone

+8801819887755

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Sukun Publishing posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Sukun Publishing:

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Opening Hours
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share