27/08/2025
#সাবধান ゚
গতকাল হঠাৎ দেখি রাতে মোবাইলে একটা OTP নাম্বার এসেছে, কোনো একটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড যেটা আমি ব্যবহার করি সেটা থেকে। একটু অবাক হলাম কারন আমি অনলাইনে পারচেজ করার জন্য কোনো OTP চাই নাই। ইনবক্স চেক করে দেখলাম সকালেও এই রকম একটা ম্যাসেজ এসেছিলো।
তারাতারি ঐ ব্যাংক যেখানে এক সময়ে চাকরি করতাম সেখানে ফোন দিয়ে জানতে পারলাম কেউ বা কারা আমার কার্ড নাম্বার ব্যাবহার করতে চাইছে সেই ব্যাংকে এপস ক্রিয়েট করার মাধ্যমে কিন্তু এপস দিয়ে আমার আই ডি খুলতে পারে নাই। তারা বললো, চাইলে আমি সাময়িক ভাবে কার্ড ব্লক করতে পারি এবং কল সেন্টার এনসিউর করলো, আমি যদি OTP শেয়ার না করি তবে কার্ড ব্লক না করলেও রিস্ক নাই।
আজ সকালে কল সেন্টার নাম্বারের মতো নাম্বার থেকে ফোন এলো। এক মহিলা সেই ব্যাংকের কল সেন্টারের কর্মী পরিচয় দিয়ে বললো, আমার কার্ড টা ব্লক করতে হবে কারন হ্যাকার রা আমার কার্ড হ্যাক করতে চাইছে। আমি শংকিত হয়ে পরলাম। আমাকে বললো, স্যার ব্লক করতে হলে আপনার ই-মেইল নাম্বার এবং ন্যাশেনাল আই ডি কার্ড নাম্বার লাগবে কারন আমার কার্ডে নাকি এই গুলো আপডেট নাই। কার্ড টা আমি প্রায় ১৬ বছর ধরে ব্যবহার করছি। তাই তার কথায় বিশ্বাস করে, NID কার্ড নাম্বার আর e-mail নাম্বার শেয়ার করার আগ মূহুর্তে মনে পরলো, আরে আমি তো নিয়মিত ঐ ব্যাংকের থেকে e-mail পাই অর্থাৎ আমার email আপডেট আছে।
মহিলাকে বললাম, আমার e-mail আপডেট আছে। আর NID নাম্বার আমি ব্যাংক খুললে সরাসরি দিয়ে আসবো। মহিলা ভয় দেখালো, কার্ড ব্লক না করলে আমি বিপদে পরবো। আমি বললাম, থ্যাংকস আমি NID শেয়ার করবো না। মহিলা এক রকম হতাশ হয়ে ফোন ছেড়ে দিলো। আমি বুঝলাম, তারা আমার email এবং NID দিয়ে সেই ব্যাংকের এপ্সে লগ ইন করে ট্রানজেকশন করতে চাইছে।
কিছুক্ষণ পরে, আরেক নাম্বার থেকে ফোন এলো। ট্রু কলারে ভেসে এলো, হ্যাকার। ফোনটা রিসিভ করলাম। এক পুরুষ কন্ঠ নিজেকে ঐ ব্যাংকের কর্মী পরিচয় দিয়ে, নিজের নাম বললো রায়হান এবং বললো, আমি যদি কার্ড ব্লক না করি তবে সেই ব্যাংক কোনো ভাবেই দায়বদ্ধ থাকবে না এবং e-mail ও NID নাম্বার শেয়ার না করলে কার্ড ব্লক করা যাবে না। জিজ্ঞেস করলাম, NID কেনো লাগবে? উত্তরে বললো, কার্ডে NID আপডেট নাই এবং e-mail লাগবে কারন আমার email এ একটা নাম্বার আসবে যেটা তাদের সাথে শেয়ার করতে হবে যা দিয়ে তারা সার্ভারে আমার NID আপডেট করে দিবে।
যেহেতু, ট্রু কলার আগে থেকেই তার পরিচয় দিয়ে দিয়েছে তাই ভাবলাম, দেখি ফ্রডরা আর কি কি করতে পারে। আমি বললাম, সরি আমার email মনে নাই এবং NID সাথে নাই। তখন, সে বললো, স্যার সমস্যা নাই। আপনাকে Whatsapp এ একটা ম্যাসেজ দিচ্ছি। ওখানে একটা লিংক আছে, ওতে ক্লিক করবেন। এর পরে, আপনার মোবাইলের ক্যামেরার ঠিক নিচে একটা Arrow চিহ্ন আসবে, ওতে ক্লিক করলে আমরা মোবাইল কোম্পানি থেকে যাবতীয় ইনফরমেশন নিয়ে নিবো।
বুঝলাম, ভয়াবহ আপডেটেড হ্যাকারের পাল্লায় পরেছি যারা এখন আমার মোবাইলটা হ্যাক করতে চায়। আমি বললাম, ভাই আমি বাটন ফোন ব্যবহার করি। এই বার দেখলাম, বেশ ক্ষেপে গিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বললো, বাটন ফোন ব্যবহার করলে কেনো আমি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করি। আমায় ক্রেডিট কার্ড দেওয়া ব্যাংকের ভুল হয়েছে।
আমি বললাম, রায়হান সাহেব আপনি ব্যাংকের কর্মী হয়ে এই ধরনের কথা বলতে পারেন না। ব্যাটা, আরো উত্তেজিত হয়ে বললো, আমি যেনো আজকের মধ্যেই স্মার্ট ফোন কিনি এবং আমার কার্ডে সমস্যা হলে ব্যাংক দায়ী থাকবে না।
আমি বললাম, ভাই আপনার নাম ট্রু কলারে ফ্রড কেনো আসে? কি যেনো বাজে একটা কথা বলে, ফোনটা কেটে দিলো। আফসোস, তাকে প্রতি উত্তর দিতে পারলাম না। নাম্বার দুটো হচ্ছে, 09638-886096 এবং 01331404063
আমি ব্যাংকার হয়েও তাদের কথায় প্রায় কনভিন্স হয়ে গিয়েছিলাম। সুতরাং, সবাই সাবধানে থাকবেন এবং পারলে আমার পোস্ট শেয়ার করবেন যাতে কেউ ভুক্তভোগী না হয়।
©