19/02/2025
"কিপটে শ্বশুর ও চালাক জামাই"
রফিক সাহেব গ্রামের নামকরা কিপটে মানুষ। এক টাকার জায়গায় আধা টাকা খরচ করতেই তার জান বেরিয়ে যায়। মেয়ে রুনার বিয়ে দিয়েছে শহরের এক অফিস কর্মী মুকুলের সঙ্গে। জামাই প্রথমবার শ্বশুরবাড়ি এলো।
বউ-শ্বশুর সবাই মিলে খুব খাতির করল, কিন্তু রফিক সাহেব মনে মনে হিসাব কষছেন— জামাইকে খাওয়াতে গিয়ে যেন বেশি খরচ না হয়ে যায়!
রাতে খাবার টেবিলে বসতেই রফিক সাহেব কাশতে কাশতে বললেন,
— জামাই, আমাদের গ্রামে একটা নিয়ম আছে। কেউ বেশি খেলে লজ্জার ব্যাপার। সবাই কম খায়, বুঝলে?
মুকুল মুচকি হেসে বলল,
— জ্বি আব্বা, খুব ভালো নিয়ম!
খাবার দেওয়া হলো। পাতে দুই টুকরো মাংস, অল্প একটু ভাত। মুকুল কিছু না বলে হাসিমুখে খাওয়া শুরু করল।
খাওয়া শেষে রফিক সাহেব খুশি হয়ে বললেন,
— বাহ! তুমি তো খুব ভালো জামাই, কম খেয়ে গ্রামকে সম্মান জানালে!
মুকুল মাথা নাড়ল,
— হ্যাঁ আব্বা, আমি তো শ্বশুরবাড়ির নিয়ম মেনে চলি!
পরদিন সকালে নাশতার সময় দেখা গেল, মুকুল এক কাপ চা আর শুকনো রুটি নিয়ে সন্তুষ্ট।
রফিক সাহেব আনন্দে আত্মহারা! এমন জামাই পেয়ে তো তিনি ধন্য!
কিন্তু ঝামেলা বাধল দুপুরে।
মুকুল খাওয়া শেষে বলল,
— আব্বা, আমি এবার শহরে ফিরে যাব।
— আরে! এত তাড়াতাড়ি কেন?
— আসলে আব্বা, আমি তো নিয়ম মেনে চলতে চাই। আমাদের শহরেও একটা নিয়ম আছে।
— কী নিয়ম?
— আমাদের নিয়ম হলো, যেখান থেকে যেমন খাবার পাওয়া যায়, সেখানে বেশি দিন থাকা যায় না!
শুনেই রফিক সাহেব হাঁ! এ তো নিজের ফাঁদে নিজেই পড়লেন! জামাই যদি এখন চলে যায়, তাহলে তো গ্রামের লোকজন বলবে, "কিপটে রফিক সাহেব ভালো খেতে দেয়নি, তাই জামাই পালিয়ে গেছে!"
তিনি তাড়াতাড়ি বললেন,
— আরে না না! তুমি থাকো, আজ রাতে খাসির মাংস রান্না করব!
মুকুল কৌশলে হেসে বলল,
— আব্বা, তাহলে তো নিয়ম ভাঙা হবে!
— থাক সে নিয়ম, তুমি থাকো!
সেদিন রাতে বাড়িভর্তি খাবার, খাসির মাংস, পোলাও, দই, মিষ্টি— সবই হাজির! মুকুল আয়েশ করে খেলো, আর মনে মনে বলল, "যতই কিপটে হোক, চালাক জামাইয়ের কাছে হার মানতেই হলো!
লেখা RBH Ayeub