
15/08/2025
রাত তখন গভীর। বৃষ্টি থেমে গেছে, বাইরে হালকা ঠান্ডা হাওয়া বইছে। নিশি জানালা বন্ধ করে কম্বলে গুটিয়ে শুয়ে আছে। মাথার নিচে নরম বালিশ, গায়ে উষ্ণ কম্বল—সবই যেন একটুখানি স্বর্গের মতো আরাম দিচ্ছে।
কিন্তু হঠাৎ করেই— হাঁচি!… তারপর আরেকটা। নাক দিয়ে পানি পড়তে লাগল, গলা যেন ধরে আসছে, চোখ লাল হয়ে উঠল। নিশি ভাবল, “হয়তো ঠান্ডা লেগেছে… হয়তো আবহাওয়ার দোষ।”
কিন্তু সত্যি কি তাই?
নিশির অজান্তেই, তার বালিশের ভেতর, কম্বলের ভাঁজে, পর্দার তন্তুতে বাসা বেঁধে আছে এক অদৃশ্য সেনা—ডাস্ট মাইট। আট পা, ক্ষুদ্র দেহ, লোমে ঢাকা—যারা খালি চোখে দেখা যায় না। সারাদিন বালিশ, বিছানা, ফ্যানের ব্লেড, এমনকি কার্পেটের গভীরে ঘুরে বেড়ায় তারা।
সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপার? তারা কামড়ায় না, কিন্তু তাদের মৃতদেহ আর প্রতিদিন ফেলে যাওয়া ক্ষুদ্র মলকণাই আমাদের দেহে অ্যালার্জির আগুন ধরিয়ে দেয়। নিশির সেই হাঁচি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, চোখ লাল হয়ে ওঠা—সবই এই অদৃশ্য অতিথিদের কীর্তি।
বর্ষার দিনে যখন নিশি ঘরে ভেজা কাপড় শুকোয়, তখন যেন ওদের উৎসব লেগে যায়—সংখ্যা বাড়ে, আর নিশির কষ্টও।
পরের দিন, এক বন্ধু এসে নিশিকে বলল,
— "চিন্তা করো না, ওদের হারানো সম্ভব।"
তারপর নিশি বদলে ফেলল কিছু অভ্যাস—
প্রতিদিন জানালা খুলে রোদ ঢোকাতে লাগল।
বিছানার চাদর, বালিশের ওয়াড় নিয়ম করে বদলাতে লাগল।
কম্বল রোদে দিয়ে দিল।
ভেজা কাপড় ঘরে শুকোনো বন্ধ করল।
ফ্যান, পর্দা, কার্পেট পরিষ্কার করল।
ধীরে ধীরে নিশির হাঁচি থেমে গেল, শ্বাসকষ্ট কমে গেল।