30/07/2025
টঙ্গীতে ম্যানহোলের ড্রেন থেকে উদ্ধার করা মহিলাটার লাশ দাফন করা হয়েছে ২৯ জুলাই রাত ১০টায়।
এই ডিভোর্সি মহিলার ফুটফুটে যমজ বাচ্চা আছে!
এতবেশী সময় ধরে পানিতে থাকায় লাশটা পচে গিয়েছিল। মহিলার পুরো শরীর ফুলে গিয়েছিল। পেট ফাঁপা হয়ে বিশাল সাইজের আকার ধারণ করেছিল।
ঠোঁট, গাল, কপাল ফুলে ছোপ ছোপ রক্ত জমাট বেঁধে ছিল। যে ব্যাগে ভরে লাশ আনা হয়েছিল সে ব্যাগ থেকেও চুপসে চুপসে রক্ত পড়ছিল।
লাশের নাক ছিল না, মাছ কিংবা পোকামাকড় হয়তো খেয়ে ফেলেছিল। লাশ থেকে উদ্ভট গন্ধ হচ্ছিল তাই গোসল করানোর সময় আতরের সাথে স্প্রেও করা হচ্ছিল যাতে গন্ধ কম হয়।
লাশটারই এ অবস্থা না জানি মহিলাটা কতটা কষ্ট পেয়ে মারা গিয়েছিল!
লাশের এ বীভৎস অবস্থা দেখে অনেকেই সামনে থেকে লাশটা দেখার সাহস পায়নি। এমনকি তার জমজ বাচ্চা দুটোকেও লাশের কাছে যেতে দেয়া হয়নি ওরা ভয় পাবে বলে।
বাচ্চাগুলো মায়ের লাশের কাছে যেতে না পেরে মা মা বলে সারাক্ষণ কাঁদছিল শুধু।
বাচ্চাগুলোর ব্যাপারে এখন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে ওরা কার কাছে থাকবে।
মহিলাটার ডিভোর্স হয়েছিল অনেকদিন আগেই। এতদিন বাচ্চাদেরকে নিয়ে আলাদা বাসায় থাকতেন তিনি।
হাসবেন্ড না থাকায় নিজেই কোম্পানিতে ছোটখাটো একটা জব নিয়েছিলেন। প্রচন্ড কষ্ট করে বড় করছিলেন বাচ্চাগুলোকে।
বাচ্চা দুটো সাধারণত এত রাত জাগে না। তারা ৮ টা বা ৯ টার দিকে মায়ের হাতে খাবার খেয়েই ঘুমিয়ে পড়তো। মা'ই আদর করে খাইয়ে দিতো, ঘুম পাড়িয়ে দিতো।
কিন্তু আজকে মা' নেই, আদর করে ঘুম পাড়িয়ে দেয়ারও কেউ নেই।
বাসার এক রুমে এখন পরিবারের লোকজন ব্যস্ত আছে মহিলার সম্পত্তি কে নিবে, ব্যবহৃত স্বর্ণগুলো কে নিবে সেসব নিয়ে। আর অন্য পাশে বসে বাচ্চা দুটো হাউমাউ করে কাঁদতেছে শুধু।
ওদের চোখে ঘুম নেই, যেন একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ওরা।
পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারলাম- সিটি কর্পোরেশন বা সরকারের দায়িত্বরত কেউ এখনো যোগাযোগ করেনি।
সিটি কর্পোরেশন গাফিলতির কারণে যেহেতু ম্যানহোলে পড়েছে তাই তাদের উচিত ছিল ক্ষমা চাওয়া এবং এই অনাথ বাচ্চা দুটোর পাশে দাঁড়ানো।
কিন্তু তারা তেমন কিছুই করেনি, লাশ ফেরত দিয়ে দায়মুক্ত হয়ে আরামসে ঘুমাচ্ছে। তাদের আর সমস্যা কি? তাদের কাছের কেউ তো আর মারা যায়নি!
ঢাকা শহরের কোন এক আলিসান বাসায় সিটি কর্পোরেশনের লোকেরা এখন আরাম করে ঘুমাচ্ছে আর অন্যদিকে রুমের এককোনায় বসে বাচ্চা দুটো মায়ের অভাবে হাউমাউ করে কাঁদতেছে!
( সিটি কর্পোরেশনের অবহেলার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করার আলোচনা করতেছি আমি। এখন বাচ্চা দুটোর জন্যে আইনি সহায়তা প্রয়োজন তাই শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন সর্বত্র)
~ Ibrahim Khalil Shawon