09/11/2025
আহা! এ যে তিন রমণীর তিন প্রকার উপাখ্যান! কেহ বা নিভৃতে, কেহ বা জনসমক্ষে, আর কেহ বা কলহের তুলাদণ্ডে নিজ জীবন মাপিছেন।
প্রথমে ধরুন নওশীন-কে। স্বামী বেচারা ছয়-সাত বৎসর পূর্বে পটল তুলিয়াছেন, তাও আবার আ//ত্ম//হ//ত্যা করিয়া! শাশ্বত প্রেম-ভক্তি দেখিলে মন জুড়াইয়া যায়!
অথচ, নওশীন এখনও একাকিনী। ইচ্ছা করিলেই তো আবার সাত পাকে বাঁধা পড়িয়া নবরূপে ঘর-সংসার পাতিবার অধিকার ছিলো।
কিন্তু না! বিধবা-জীবনের ত্যাগের মহিমা প্রচার করিয়া যেন তিনি সমাজের এক নীরব আদর্শ স্থাপন করিয়াছেন।
তাহার পর শাহনাজ শিমুল আপু! ইঁহাকে চেনে না এমন লোক বিরল। রনি-ভাই সাত-আট বৎসর হইল স্বর্গে গমন করিয়াছেন। আপু কিন্তু এখনও ‘মুভ অন’ বা অগ্রসর হন নাই। তাঁহাকে যত দেখি, তত বিস্ময়ে হতবাক হই! কী দুর্জয় ব্যক্তিত্বের অধিকারিণী!
সেই সুদূর ২০১৮ সন হইতে তাঁহার গতিবিধি লক্ষ্য করিতেছি, একবারও কোনও কুৎসিত জন-কোন্দলে তাঁহাকে জড়াইতে দেখি নাই। এ যেন এক নিষ্কলুষ চরিত্র, সমাজের জন্য এক নির্মল দৃষ্টান্ত!
শেষে আসিতে হয়, বাংলাদেশের সেই নামকরা নারী-উদ্যোক্তা রুবাইত ফাতেমা তনি-র প্রসঙ্গে।
ইঁহাকে লইয়া তো প্রতি মাসেই সামাজিক মাধ্যমে এক-একটি নতুন কেলেঙ্কারি মাথা চাড়া দিয়া ওঠে।
বিশেষ করিয়া তাঁহার অনলাইন-সরাসরি কথোপকথনে (লাইভে) দর্শকের মন্তব্যের প্রতি অদ্ভুত ও কদর্য উত্তর প্রদান করিয়াই ইনি অধিক খ্যাতি ও প্রচার লাভ করিয়াছেন।
ইনি প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স বা তালাক প্রদানপূর্বক পিতার বয়স্ক এক ব্যক্তিকে বিবাহ করিয়াছিলেন। মাশাল্লাহ! বেশ তো! তাহাতেও আপত্তি নাই।
আবার সেই দ্বিতীয় স্বামী পরলোকে গমন করিলে ইনি গলা চিরিয়া সকলকে জানাইয়াছিলেন যে, তিনি তাঁহার সেই দ্বিতীয় স্বামীর স্ত্রী পরিচয়েই আমৃত্যু বাঁচিয়া থাকিতে চান। প্রেমের কী গভীরতা!
অথচ, কী আশ্চর্য! দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যু-বার্ষিকী পূর্ণ হইতে না হইতেই তিনি তৃতীয় বারের মতো বিবাহ-পিঁড়িতে বসিলেন। আলহামদুলিল্লাহ! অতি উত্তম কর্ম করিয়াছেন! কারণ বয়স তো আর ফুরায় নাই! আর নারী যতই স্বাবলম্বী হোন না কেন, এই পুরুষ-শাসিত সমাজে পুরুষের ছত্রছায়া ছাড়া চলিতে পারা তো এক প্রকার অসম্ভব ব্যাপার!
এই তিন রমণী ভিন্ন ভিন্ন পেশায় নিযুক্ত, প্রত্যেকের গল্পই ভিন্ন সুরের। কেহ নিত্যদিন সামাজিক মাধ্যমের ধিক্কার বা বিতর্কে ডুব দিয়া থাকেন, আবার কাহারও নাম শুনিলেই হৃদয়ে এক স্নিগ্ধ শ্রদ্ধার ভাব জাগিয়া ওঠে।
এই সকলই নির্ভর করে, কে কীভাবে অন্য মানুষের সহিত কথা বলিতেছেন, তাহার উপর। কথায় তো আছে— "ব্যবহারেই বংশের পরিচয়।" আপনি সারাদিন ঢোল পিটাইয়া নিজের গুণগান করিলেই কি লোকে আপনাকে সাধু বলিবে? ব্যবহার যদি অরুচিকর হয়, তবে সেই গুণ কী কাজে আসিবে?🙂
©️