29/08/2025
ব্লগ ৬৯:
চীন ঘুরতে গেলে কি পড়া যাবে আর কি পড়া যাবে না, এইটা অনেকের মাথায় প্রশ্ন আসে। কেউ ভাবে, যাই হোক না কেন, চীন তো আধুনিক দেশ, সবাই সব রকমের পোশাক পরে। কিন্তু আসলে ব্যাপারটা একটু আলাদা। তুমি যদি হুট করে suit পড়ে বের হও, মানুষ সাথে সাথে চোখ কুঁচকাবে। ভাববে, এ আবার কোন জমিদারের নাতি নাকি? বড়লোকের মতো ভান করছে। ওই suit–tie তাদের কাছে বেশি ফরমাল, বেশি ধোপদুরস্ত। তারা ধরে নেবে তুমি কোনো বিজনেস ডিল করতে এসেছ বা VIP সাজছ। ঘুরতে যাওয়া মানুষের জন্য suit একেবারেই মানায় না।
আবার ধরো, তুমি যদি হঠাৎ ২০০ বছর আগের আমলের মতো জামা-কাপড় গায়ে দাও, যেমন পুরনো স্টাইল এর ছাতা সাথে টিফিন বাডি টাইপ কিছুর নকল করো, তখন মানুষ ভাববে তুমি খ্যাত। মানে, মাথায় সমস্যা আছে। ভাববে, “আরে ভাই, এখন ২০২৫ চলছে, এ আবার কোন দুনিয়ায় বাস করছে?” লোকজন তোমার দিকে তাকিয়ে হাসাহাসি করবে।
তাহলে প্রশ্ন আসে, চীনে গেলে পড়া যাবে কোন পোশাক? উত্তর সোজা। ট্র্যাডিশনাল চাইনিজ পোশাক বা আধুনিক casual পোশাক পড়ো। ট্র্যাডিশনাল বলতে cheongsam, qipao বা হানফু জাতীয় জামা-কাপড়। এগুলা পড়লে মানুষ খুশি হয়, ভাবে বিদেশি হলেও কালচারকে সম্মান করছে। চাইনিজরা নিজের ঐতিহ্য নিয়ে গর্বিত, তাই তুমি যদি তাদের পোশাক পড়ে ঘুরো, তারা হাসিমুখে তাকাবে।
আরেকটা ব্যাপার হলো, casual পোশাক পড়া সবসময় সেফ। এগুলা কারো চোখে খারাপ লাগবে না। চীনের শহরে সবাই এগুলাই পরে। তুমি মিশে যাবে সহজে, কেউ তোমাকে আলাদা ভাবে না।
তবে কিছু নিয়ম মাথায় রাখতে হবে। খুব বেশি খোলা জামা পড়ো না, কারণ কিছু জায়গায় লোকজন এখনো কনজারভেটিভ। বিশেষ করে মন্দির, পুরনো শহর বা ছোট গ্রামে গেলে একটু শালীন পোশাক পরা ভালো। আবার রঙ বাছার সময় খেয়াল রাখো। কালো-সাদা পুরোপুরি পরে যেও না, কারণ এই দুইটা রঙ চীনে অনেক সময় শোকের প্রতীক। লাল, নীল বা সবুজ জাতীয় রঙ বেশি ফ্রেন্ডলি আর শুভ ধরা হয়।
সংক্ষেপে বললে, suit পড়া যাবে না, কারণ সেটা তোমাকে বড়লোক সাজাবে। ২০০ বছরের আগের পোশাক পড়া যাবে না, কারণ সেটা তোমাকে খ্যাত বানাবে। ট্র্যাডিশনাল চাইনিজ বা casual আধুনিক পোশাক পড়াই সেরা। তুমি আরামে ঘুরবে, কেউ খারাপ চোখে দেখবে না।
চীন ঘুরতে গেলে আসল মন্ত্র হলো, নিজের পোশাক এমন হতে হবে যাতে লোকজন ভাবে তুমি তাদের সংস্কৃতিকে মান দাও, আবার নিজের আরামও বজায় থাকে। তাই smart থেকো, কিন্তু natural থেকো।