21/07/2025
নব্বই দশকের অচল বিমান কেন আকাশে?
এই বিমানটি নব্বই দশকের প্রযুক্তিতে তৈরি—প্রায় তিন দশক পুরোনো। বলতে গেলে, আন্তর্জাতিক বাজারে এটি অনেক আগেই অচল হয়ে গেছে। অথচ ২০১৩ সালে বাংলাদেশ এই অচল বিমানটি চীনের কাছ থেকে কেনে, একটি বিতর্কিত চুক্তির মাধ্যমে। এটিই ছিলো চীনের শেষ রপ্তানি—শেষ কাস্টমার বাংলাদেশ। চিন্তা করুন, একটা দেশ কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত হলে এমন পুরোনো, ব্যবহারের অযোগ্য যুদ্ধবিমান কিনে।
তবুও মূল প্রশ্নটা এখানে নয়। এই দুর্ঘটনা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হয়েছে, নাকি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে—তা এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে যান্ত্রিক ত্রুটির সম্ভাবনাও অস্বীকার করা যায় না, কারণ দীর্ঘদিনের পুরনো ও রক্ষণাবেক্ষণহীন একটি বিমান উড়ালে এমন দুর্ঘটনা হতেই পারে।
তবে প্রশ্নটা বড়, গভীরতর—এইসব বিমান আকাশে উড়ানো হলো কেন?
ইস্যু তৈরি করার জন্য? জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর জন্য?
বিশ্বাস করুন আর না করুন, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের যে প্রভাব বলয়, তাতে সবচেয়ে বেশি ঘাপটি মেরে আছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে। ভারতের ছায়া থেকে বেরোতে না পারার কারণে বাংলাদেশ আজ পর্যন্ত চতুর্থ প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার জেট কিনতে পারেনি। এমনকি একটি কার্যকর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও গড়ে তুলতে পারেনি।
প্রশ্ন তুলতে হবে—কেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে এইভাবে পঙ্গু করে রাখা হয়েছে?
কাদের স্বার্থে?
কে এই দালালরা যারা ভারতের পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশের আকাশকে অনিরাপদ করে রেখেছে?
হাসিনা পতনের পরও এদের কেউ বিচারের মুখোমুখি হয়নি। আজো কেন এই জাতি প্রশ্ন করে না, কেন বাংলাদেশ এখনো আধুনিক যুদ্ধবিমান কিংবা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে পারছে না?
একটা জাতি যদি লাশ দেখেই শুধু আবেগে ভেসে যায়, কিন্তু মূল সমস্যার গোড়ায় হাত না দেয়—তাহলে সেই জাতির লাশের সারি একদিন হয়তো অসীম হবে।
জাতির কাছে প্রশ্ন রেখে যেতে চাই:
• যদি শত্রু রাষ্ট্র এক রাতেই ঢাকার আকাশে মিসাইল ছুড়ে দেয়, আমরা কী প্রতিরোধ করতে পারবো?
• আকাশ প্রতিরক্ষা নিয়ে কেউ কেন কথা বলছে না?
• কেন আজও বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিরব?
এটা শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়। এটা একটি জাতীয় ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।
যদি আজ প্রশ্ন না ওঠে, কাল হয়তো আর প্রশ্ন করার মতো কেউ থাকবে না।
-মুহাম্মদ জুবায়ের