07/04/2024
👉সৈনিক হওয়া কোন মজার বিষয় নয় 👈
গ্রামের কোন ছেলে যখন সৈনিক হবার সপ্ন দেখে তো ওর সকাল হয় চারটায় । উঠেই গ্রামের রাস্তায় দৌড়তে থাকে , আর বয়স এই ষোলো,সতেরো বছর হয় । মুখে তখনও বাচ্ছার ভাব থেকে যায় আর ঘাড়ে থাকে বাড়ির ভার । মাধ্যমিক এর ওই ছেলে যে সৈনিক হওআর জন্যে দিন রাত এক করে দেয় ।
ওর এই এক সপ্নের জন্যে ঘরে বসে থাকা যুবতি বোন, বুড়ি মা, আর সময়ের সাথে দুর্বল হয়ে যাওআ বাবার শুধু আশাই জুড়ে থাকে না,জুড়ে থাকে এক সত্যি বাংলাদেশী হওয়ার লক্ষন ।
তোমরা যদি জানতে সৈনিক জীবন কতটা কষ্টের তাহলে তোমরা সবাই সৈনিক হতে চাইতে না,, সৈনিকরা তোমাদের মতো দেখতে সাধারণ মানুষ হলেও তারা মানুষ নামের এক একটা যন্ত্র। একটা সোনার পাতকে যেমন অলংকার করতে হলে আগুণে পুড়িয়ে হাতুড়ি পিটিয়ে গরম পানিতে ধুয়ে অনেক ঘসা মাজা করে হয়,ঠিক তেমন সাধারণ মানুষদের মধ্যে সক্ষম মানুষ গুলা বেছে নিয়ে ৫০ সপ্তাহ শারীরিক, মানুষিক ভাবে সেই সোনার মত করে সাধারণ মানুষ থেকে সৈনিকে পরিণত করতে হয়, একবারও কি ভেবে দেখেছো একটা সাধারণ মানুষের রক্ত মাংসকে সৈনিকের রক্ত মাংস করতে কি কি কষ্ট করতে হয়?? জানোনা যদি জানতে তাহলে সবাই সৈনিক হতে চাইতে না। ১৭ বছর বয়সে তোমরা যখন বন্ধু-বান্ধবীর সাথে সারাদিন আড্ডা দেও, ঠিক তোমার বয়সি ছেলে-মেয়ে গুলা ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে সামরিক প্রশিক্ষণে ব্যস্ত থাকে। রাতে ঘরে ফিরে মাকে বলো যে মা খেতে দেও, তখন তারা সাওয়ারে গিয়ে শরীরে ক্ষত বিক্ষত আংশ গুলো পরিষ্কার করে আর চোখের জ্বল ফেলে ভাবে যে মাকে কতদিন দেখা হয়নি তার মায়ের কোলে সে আবার যেতে পারবে কিনা তাও সে জানে না সেই হলো সৈনিক। তোমরা যখন বাবার টাকায় কেনা বাইকে ঘুরতে যাও নিজের পছন্দের মানুষকে নিয়ে, ঠিক তোমার বয়সি ছেলে গুলা তখন তোমার নিরাপত্তার জন্য তার প্রিয় রাইফেল নিয়ে ঘুরা ফেরা করে আর তারাই হলো সৈনিক। তুমি যখন বন্ধুদের সাথে মাঠে খেলতে যাও ঠিক তোমার বয়সি ছেলে গুলা শত্রুদের সাথে মরণ মরণ খেলা করে যেনো তোমরা নিরাপদে খেলতে পারো। তোমাদের ১টা মা কিন্তু তোমার হয়তো জানোনা যে আমাদের সৈনিকের ২টা মা ১.জন্মদাতা মা ২.জন্মভূমি মা এই ২ মাকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের মত সৈনিকদের। সৈনিকরা সব সময় সবাইকে দিতে জানে নিতে নয়, সমাজের আর ৫ট মানুষের মত তাদের জীবন বিলাস বহুল নয়, পরিবারের বাবা,মা,ভাই,বোন সকলের চাহিদা মেটাতে গিয়ে তাদের যে কত কষ্ট করতে হয় তোমরা তা জানো না, দিন শেষে শুধু তার শূন্য জীবন নিয়েই খুশি থাকে সকলের পরবর্তী চাহিদা মেটানোর জন্য। সবার মতো তাদের অসংখ্য পোশাক থাকে না ২-৩টা পোশাকেই চলে যাই বছরের পর বছর, তাদের অর্তনাদ গুলো বুঝতে পারে তার পা, কারণ একটা নয় দুটি নয় অসংখ্য ফোসকা পড়ে আছে তাদের পায়ে,ছোট বেলায় একটু কেটে গেলে বা ফোসকা পড়লে মা মলম লাগিয়ে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলতে বাবা কি করে হলো এটা?? কিন্তু মা তোমার ছেলের সারা পা জুড়েই যে আজ ফোসকা, মলম বা হাত বুলিয়ে দিতে না তোমার মুখটা একবারের জন্য দেখব তাও যে পারিনা মা,এরাই হলো সৈনিক। এই সৈনিকদের ওপর ভর করেই আজ এই দেশের মানুষ শান্তিতে বাঁচতে পারছে,শান্তিতে ঘুমাতে পারছে, তবুও তাদের মনে সৈনিকদের প্রতি কোনো ভালোবাসা সম্মান বোধ টুকু জাগ্রত হয় না, যারা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য এত কষ্ট, এত পরিশ্রম করছে তাদের মূল্য কোথায় আজ মানুষদের কাছে??