23/07/2025
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খন্দকার টোলা এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক খেরুয়া মসজিদ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো:
📜 ইতিহাস ও নির্মাণ
মসজিদটি ১৫৮২ সালে নির্মিত হয়, নির্মাতা ছিলেন মোগল সেনাপতি মির্জা মুরাদ খান কাকশাল, যার নাম মসজিদের প্রাচীরের শিলালিপিতে খোদাই করা আছে ।
তবে স্থানীয় একজন খাদেম আব্দুস সামাদ ফকির-এর নামও ছড়িয়ে আছে, যদিও শিলালিপি ভিত্তিক প্রথম নামটিকেই সঠিক ধরে নেওয়া হয়ে থাকে ।
🏛️ স্থাপত্য ও বৈশিষ্ট্য
মিশ্র স্থাপত্য: সুলতানি ও প্রাচীন মোগল যুগের আর্কিটেকচারের মিলিত উদ্ভাস ।
মসজিদের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭.২৭ মিটার, প্রস্থ ৭.৪২ মিটার, এবং দেয়াল প্রায় ১.৮১ মিটার দাঁতালো ।
তার ছাদে তিনটি সমমাপের আধা গোলাকৃতি গম্বুজ (প্রতি গম্বুজ ব্যাস ~৩.৭১ মিটার) ।
চার কোণে প্রাচীর থেকে সামান্য এগিয়ে চারটি ছোট মিনার অবস্থিত ।
পূর্ব দিকে তিনটি খিলান দরজা, উত্তর ও দক্ষিণে এক করে দরজা; পশ্চিমে তিনটি অলংকার-সজ্জিত মেহরাব ।
ইটের খোদাইকাজে ফুল-পাতা ও ভঙ্গুর প্যানেলের নান্দনিকতা, আর একে ঘিরে সবুজ প্রাকৃতিক প্রাঙ্গণ ।
🌳 পরিবেশ ও রক্ষণাবেক্ষণ
মসজিদটি প্রায় ৫৯ শতক (১৪৭০ মি²) আয়তনের প্লটে অবস্থিত, যা লোহার রেলিং দিয়ে বেষ্টিত ।
মসজিদ চত্বর ঘিরে আছে তাল, নারকেল, আম ও কদমসহ বিভিন্ন গাছপালা, যা সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে ।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষিত এবং ২০০০ সালে এক পর্যায়ে হালকা সংস্কার করা হয়েছিল ।
🙏 ব্যবহার ও প্রসঙ্গ
এখানে প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ ও শুক্রবার জুমা আদায় করা হয়, প্রায় ৯০ জন মুসল্লি একসঙ্গে নামাজে অংশ নিতে পারে ।
এক পাশে ওযুখানা ও খাদেম আব্দুস সামাদের কবর রয়েছে ।
📍 অবস্থান ও যাতায়াত
ঢাকা থেকে দূরত্ব ≈১৬৬ কিমি, বগুড়া জেলা শহর থেকে ≈২৮ কিমি, আর শেরপুর উপজেলা সদর থেকে মাত্র ≈১ কিমি ।
শেরপুর থেকে রিকশা/ভ্যান/সিএনজিচালিত যান পাওয়া যায় সহজেই ।
📝 সারসংক্ষেপ
বিষয় বিস্তারিত
নাম খেরুয়া মসজিদ
অবস্থান শেরপুর, বগুড়া (খন্দকার টোলা)
নির্মাণ ১৫৮২
নির্মাতা মির্জা মুরাদ খান কাকশাল
আর্কিটেকচারের ধরন সুলতানি-মোগল মিশ্র
মুখ্য বৈশিষ্ট্য ৩ গম্বুজ, ৪ মিনার, ইট-খোদাকাজ, ৫৯ শতক প্লট
ব্যবহার নিয়মিত নামাজ ও জুমা
মনোপনায়ন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর দ্বারা সুরক্ষিত
খাস করে ১৫ শতকের স্থাপত্য, স্থানীয় ব্যবহার ও ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে, এই মসজিদটি শুধু ধর্মীয় স্থানই নয়, এক প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও বটে। বগুড়া, বিশেষ করে শেরপুরে ঘোরা-ফিরা করেন—তবে খেরুয়া মসজিদ একটি অবশ্যই দেখার মতো স্থান।