15/05/2025
স্বামী: এক নারীর জীবনের শ্রেষ্ঠ আশ্রয় ও ভালোবাসার ঠিকানা:
একজন স্ত্রী তার জীবনে অনেক কিছুই পায়—ভালোবাসা, পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সামাজিক অবস্থান, আত্মীয়স্বজন—কিন্তু যেই মানুষটির প্রতি তার সবচেয়ে গভীর দায়িত্ববোধ, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থাকা উচিত, তিনি হলেন তার স্বামী। একজন স্ত্রীর জীবনে স্বামী শুধু একজন জীবনসঙ্গী নন, বরং তিনি একজন অভিভাবক, একজন আশ্রয়দাতা, একজন সহযাত্রী এবং একজন পরম নির্ভরতার প্রতীক।
আমি যা-ই হই, সমাজ যেভাবেই ব্যাখ্যা করুক, আমার কাছে আমার স্বামীর অবস্থান সবচেয়ে উঁচুতে। তিনি যেমনই হন, যেমন অবস্থানেই থাকুন না কেন, তিনি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ মানুষ। আমার চিন্তা, আমার আবেগ, আমার ভালো লাগা, সবকিছু ঘিরেই তাকে নিয়ে। তার হাসি আমার শান্তি, তার কষ্ট আমার অস্থিরতা। আমার পরিবারের অন্য কারো প্রতি এমন অনুভূতি জন্মায় না—এটা অন্যায় মনে করি না, বরং এটিই প্রকৃত ভালোবাসা।
আমি মনে করি, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক এমন এক বন্ধন যেখানে বাইরের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগই নেই। আমরা হয়তো ঝগড়া করি, ভুল বোঝাবুঝি হয়, অভিমান জমে—কিন্তু এগুলো একজন স্বামীর সাথেই মানায়। অন্য কারো সাথে এসব অনুভবের জায়গাই নেই। আর এই ছোট ছোট ভুল বোঝাবুঝিগুলোই আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করে।
বর্তমান সমাজে ‘স্বাধীনতা’ শব্দটার বিকৃতি ঘটেছে। নারীর স্বাধীনতা মানেই যেন হয়ে গেছে স্বামীকে পাশ কাটিয়ে চলা, ব্যক্তিগত সবকিছু গোপন রাখা। কিন্তু আমার কাছে আমার স্বামীই আমার সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা। আমি চাই, সে আমার সব জানুক, বুঝুক—আমার সোশাল মিডিয়ার পাসওয়ার্ড হোক তার জানা, আমার চলাফেরা হোক তার দৃষ্টির আওতায়। সে আমাকে শুধু ভালোবাসবে না, সঠিক পথে রাখার দায়িত্বও নেবে। একজন স্বামীকে আমি শুধু জীবনসঙ্গী হিসেবে দেখি না, দেখি একজন অভিভাবক ও রক্ষক হিসেবেও।
কিছু মানুষ হয়তো বলবেন, “তুমি নিজের মত প্রকাশ করতে পারো না, তোমার নিজস্বতা নেই।” কিন্তু আমি বলি, আমার নিজস্বতা আমার স্বামীর মাঝেই খুঁজে পেয়েছি। আমি চাই না, আমার স্বামীর ভালোবাসা ও সুরক্ষার বাইরে গিয়ে তথাকথিত “ইনডিপেনডেন্ট নারী” হয়ে উঠি। আমার কাছে আত্মমর্যাদা মানে স্বামীর প্রতি দায়বদ্ধতা, বিশ্বস্ততা ও শ্রদ্ধা।
হ্যাঁ, আমরা লাভ ম্যারেজ করেছি। তাই বলে এই ভালোবাসা শুধু প্রেম থেকেই জন্ম নেয়নি, এটা এসেছে দায়িত্ব, সময় ও পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস থেকে। আমি শপথ করে বলি, আমার যদি কারো সাথে জোর করে বা শত্রু সাথেও বিয়ে হতো, তবুও আমি আমার স্বামীর প্রতি এই একই রকম দায়িত্ব ও শ্রদ্ধাবোধ রাখতাম। কারণ, বিয়ের পর একজন স্বামীই হয়ে ওঠেন স্ত্রীর সবচেয়ে কাছের মানুষ।
একজন ভালো স্বামী পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। আর একজন স্ত্রী যদি তার স্বামীকে যথাযথভাবে ভালোবাসে, সম্মান করে, তবে সেই সংসারে পরকীয়া, অবিশ্বাস, দুঃখ—এগুলো ঢুকতেই পারে না। সংসার হয়ে ওঠে স্বর্গের এক খণ্ড, যেখানে দুজন মানুষ একে অপরকে আঁকড়ে ধরে জীবন কাটিয়ে দেয় ভালোবাসায়, বিশ্বাসে, একসাথে পথ চলার অঙ্গীকারে।
আল্লাহ্ যেন প্রতিটি নারীর অন্তরে এমন ভালোবাসা ও বোধের আলো জ্বেলে দেন।
জীবন তখনই সুন্দর হয়, যখন পাশে থাকা মানুষটি হয় আপন প্রাণের চেয়েও আপন।
🌹👑🌹