Tapu Sarwar

Tapu Sarwar মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি

মহিমান্বিত গাদিরে খুম দিবস পবিত্র ১৮ই জিলহজ্জঃঐতিহাসিক 'গদীর-ই-খুম'-এর ঘটনাঃ===========================ঐতিহাসিক বিদায় হজ...
12/06/2025

মহিমান্বিত গাদিরে খুম দিবস পবিত্র ১৮ই জিলহজ্জঃ

ঐতিহাসিক 'গদীর-ই-খুম'-এর ঘটনাঃ
===========================
ঐতিহাসিক বিদায় হজ্ব সমাপন করে আমাদের আক্কা ও মাওলা হুযুর আক্রাম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মদীনা তৈয়্যবায় পুনরায় তাশরীফ নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে 'গদীর-ই-খুম' নামক স্থানে যাত্রাবিরতি করেন।এখানে হুযুর আকরাম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সাহাবা কেরামের উদ্দেশ্যে যেসব ঐতিহাসিক বরকতময় নসীহত করেছিলেন তন্মধ্যে আহলে বায়আত, বিশেষ করে, হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আন্‌হু সম্পর্কে কৃত বিশেষ নসীহত ছিলো অন্যতম।

আঁকা-হযরত সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম যখন বিদায় হজ্ব থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন তখন পথিমধ্যে 'গদীর-ই-খুমম' নামক স্থানে এসে যাত্রাবিরতি করলেন।এটা মক্কা ও মদীনা শরীফের মধ্যভাগে জোহফার আশেপাশেই অবস্থিত।এখান থেকে তিন মাইল দূরে ঐ 'গদীর' অবস্থিত।

এখানে এসে হুযুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সাহাবা কেরামের দিকে মনোনিবেশ করলেন।আর এরশাদ ফরমালেন-

الَسْتُمْ تَعْلَمُونَ أَنِّي أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ؟

(তোমরা কি জাননা যে, আমি মুসলমানদের নিকট তাদের প্রাণ অপেক্ষাও অধিক নিকটে?) অন্য এক বর্ণনানুসারে, হুযুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম, হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু'র হাত উপরের দিকে তুলে ধরে একথাটি তিন বার বলেছিলেন।

তদুত্তরে, সবাই বললেন- "হা, নিশ্চয়ই আপনি সমস্ত মুসলমানের নিকট তাদের প্রাণ অপেক্ষাও নিকটে ও প্রিয়।"

অতঃপর এরশাদ ফরমালেন, "আমি তোমাদের মধ্যে দু'টি জিনিস রেখে যাচ্ছি- তন্মধ্যে একটা অপরটা অপেক্ষা মহান। সে দু'টি হচ্ছে- ১) কোরআন করীম এবং ২) আমার আহলে বায়আত (পরিবার-পরিজন)। আমার পর ঐ দু'টি সম্পর্কে এ মর্মে সতর্ক থাকবে যে, সে দু'টির সাথে কিরূপ আচরণ করছো? সে দু'টির প্রতি তোমাদের কর্তব্য কিভাবে পালন করছো? আমি চলে যাবার পর এ দু'টির একটা অপরটা থেকে পৃথক হবে না।শেষ পর্যন্ত তোমরা 'হাওয-ই-কাওসার'-এর কিনারায় আমার সাথে সাক্ষাৎ করবে।"

অতঃপর এরশাদ ফরমালেন, "আল্লাহ তা'আলা আমার 'মাওলা' (مولى) আর আমি হলাম সমস্ত মুসলমানের মাওলা (مولى)।
اللَّهُمَّ مَنْ كُنْتُ مَوْلَاهُ فَعَلِيُّ مَوْلَاهُ.

হে আল্লাহ! আমি যার 'মাওলা' আলীও তার 'মাওলা'।

اللَّهُمَّ وَآلِ مَنْ وَالاهُ.

হে আল্লাহ্! তুমিও তাকেই ভালোবাসো, যে আলীকে ভালোবাসে।
وَعَادِ مَنْ عَادَاهُ

(এবং তাকে শত্রু হিসেবে গণ্য করো, যে তার সাথে শত্রুতা পোষণ করে।) অন্য বর্ণনায় এটাও এরশাদ হয়েছে-
وانصر من نصرَهُ وَاخْذُلْ مَنْ خَذَلَهُ

[হে আল্লাহ! তাকে সাহায্য করো, যে তাঁকে (আলীকে) সাহায্য করে। আর তাকে অপমানিত করো, যে আলীকে ছেড়ে দেয়। আর যেদিকে আলী মনোনিবেশ করে, সত্যকেও সেদিকে নিশ্চিত করো।"

এ ঘটনার পর সাহাবা কেরামের মধ্যে হযরত ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু আনহু, হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহুর সাথে সাক্ষাৎ হলে, তাঁকে মুবারকবাদ দিয়ে বললেন-

هَنِيئًا يَا ابْنَ أَبِي طَالِبٍ أَصْبَحْتَ وَأَمْسَيْتَ مَولَى كُلِّ مؤمن ومؤمنة

#অর্থাৎঃ "আবূ তালিব-তনয়কে ধন্যবাদ।আপনার সকাল ও সন্ধ্যাতো এমতাবস্থায় হচ্ছে যে, আপনি প্রত্যেক মু'মিন নরনারীর 'মাওলা'।"

এ হাদীসখানা ইমাম আহমদ হযরত বারা ইবনে আযিব এবং হযরত যায়দ ইবনে আরকাম রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণনা করেছেন; যেমন- মিশকাত শরীফে
উল্লেখ করা হয়েছে।

এ হাদীস শরীফ হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর চূড়ান্ত কারামত ও ফযীলতকে প্রকাশ করে। এটা দ্বারা হুযুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদেরকে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনুনুর সাথে ভালোবাসা রাখার প্রতি উৎসাহিত করেছেন। পক্ষান্তরে, তাঁর প্রতি শত্রুতা পোষণ থেকে বিরত থাকার শিক্ষাই তাতে দেয়া হয়েছে। যেমন অন্য একটা বর্ণনায় এসেছে, "হযরত আলীর সাথে শুধু ঐ ব্যক্তিই ভালোবাসা রাখবে যে মু'মিন হবে। আর তাঁর প্রতি শত্রুতা সে-ই পোষণ করতে পারে, যে মুনাফিক্ব। তাছাড়া, হাদীসের ঐ প্রেক্ষাপটও একথাই সুস্পষ্টরূপে প্রকাশ করে। এটাই হচ্ছে আহলে সুন্নাতের সর্বসম্মত অভিমত।

মান কুন্তু মওলাহু, ফাহাজা আলিউন মওলাহু।
••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
দশম হিজরীতে বিদায় হজ্ব সমাপনান্তে প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাহবিহী ওয়া বারাকা ওয়াসাল্লামা) মদীনা অভিমুখে রওনা হলেন। তাঁর সাথে ছিলেন মদীনা ও সিরিয়ার কাফেলা। কাফেলা জুহ্ফার তিন মাইলের মধ্যে অবস্থিত ‘রাবুঘ’ নামক স্থানে পৌঁছলে হযরত জিবরীল আমীন (আ.) প্রিয় নবী (দরুদ)’র কাছে নিম্নোক্ত আয়াত নিয়ে আসলেন অর্থাৎ “আপনার প্রভুর পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তা প্রচার করুন; আর যদি আপনি তা না করেন, তা হলে আপনি তাঁর রিসালতই (যেন) প্রচার করেননি এবং মহান আল্লাহ্ আপনাকে জনগণের অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করবেন।” (সূরা মায়িদাহ্ : ৬৭)

এ আয়াতের বাচনভঙ্গি থেকে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, মহান আল্লাহ্ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রিয়নবী (দরুদ)’র যিম্মায় অর্পণ করেছেন। এই আয়াত নাযিলের পর প্রিয় নবী (দরুদ) কাফেলার যাত্রা বিরতির নির্দেশ প্রদান করলেন।যাঁরা কাফেলার সম্মুখভাগে ছিলেন, তাঁদের থামানো হলো এবং যাঁরা কাফেলার পেছনে ছিলেন, তাঁরা এসে তাঁদের সাথে মিলিত হলেন। সেদিন দুপূর বেলা তীব্র গরম পড়েছিল। জনতা তাদের বহিরাবরণের একটি অংশ মাথার ওপর এবং আরেকটি অংশ পায়ের নিচে রেখেছিল। যে চাদর গাছের ওপর ছুঁড়ে দেয়া হয়েছিল, তা দিয়ে প্রিয়নবী (দরুদ)-এর জন্য একটি শামিয়ানা তৈরি করা হলো। মহানবী জামাআতে জোহরের নামায আদায় করলেন। এরপর সাহাবায়ে কিরাম (রিদ্বওয়ানিল্লাহি আলাইহিম আজমাঈন) তাঁর চারপাশে সমবেত হলে তিনি একটি উঁচু জায়গার ওপর গিয়ে দাঁড়ালেন যা উটের হাওদা দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। এর পর প্রিয়নবী (দরুদ) বলিষ্ঠ কণ্ঠে লক্ষাধিক সাহাবীর মজমায় এক ঐতিহাসিক ভাষণ দিলেন।

“মহান আল্লাহর জন্য সকল প্রশংসা। তাঁর কাছে আমরা সাহায্য প্রার্থনা করি, তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করি এবং আমাদের যাবতীয় মন্দ কাজ থেকে তাঁর কাছে আমরা আশ্রয় নিচ্ছি। তাঁর ওপর ভরসা করি। তিনি ছাড়া আর কোন পথপ্রদর্শক নেই। তিনি যাকে হিদায়াত করেন, তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও প্রেরিত পুরুষ (রাসূল)।

হে লোক সকল! অতি শীঘ্রই আমি মহান আল্লাহর আহবানে সাড়া দেব এবং তোমাদের কাছ থেকে বিদায় নেব। আমিও দায়িত্বশীল, তোমরাও দায়িত্বশীল। তোমরা আমার ব্যাপারে কী চিন্তা কর? এ সময় উপস্থিত সাহাবায়ে কিরাম (রা.) সত্যায়ন করে সাড়া দিলেন এবং বললেন : “আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি রিসালাতের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন এবং আমানত আদায় করেছেন। মহান আল্লাহ্ আপনাকে পুরস্কৃত করুন।”

প্রিয় নবী (দরুদ) বললেন : “তোমরা কি সাক্ষ্য দেবে যে, বিশ্ব-জগতের মাবুদ এক-অদ্বিতীয় এবং মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল; পরকালে বেহেশত, দোযখ এবং চিরস্থায়ী জীবনের ব্যাপারে কোন দ্বিধা ও সন্দেহ নেই?” তখন সবাই বললেন : “এসব সত্য এবং আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি।”

অতঃপর তিনি বললেন : “হে লোকসকল! আমি দু’টি মূল্যবান জিনিস তোমাদের মাঝে রেখে যাচ্ছি। আমি দেখবো- তোমরা আমার রেখে যাওয়া এ দু’টি স্মৃতিচিহ্নের সাথে কেমন আচরণ করছ?” ঐ সময় একজন দাঁড়িয়ে উচ্চকণ্ঠে বললেন : “এ দুই মূল্যবান জিনিস কী?” প্রিয়নবী (দরুদ) বললেন : “একটি মহান আল্লাহর কিতাব (পবিত্র কুরআন), যার এক প্রান্ত মহান আল্লাহর হাতে এবং অপর প্রান্ত তোমাদের হাতে আছে এবং অপরটি আমার বংশধর (আহলে বাইত) [কোন কোন বর্ণনায় এসেছে এই দু’টি বিষয়ের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য তিনি ৩ বার করে বললেন]। মহান আল্লাহ আমাকে জানিয়েছেন, এ দুই স্মৃতিচিহ্ন কখনো পরস্পর বিচ্ছিন্ন হবে না।

হে লোকসকল! পবিত্র কোরআন ও আমার বংশধর থেকে অগ্রগামী হয়ো না এবং কার্যতঃ এতদুভয়ের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করো না; এর অন্যথা করলে তোমরা ধ্বংস হয়ে যাবে।”

এ সময় প্রিয়নবী (দরুদ) হযরত আলী (আ. ও রা.)-এর হাত ধরে এতটা উঁচু করলেন যে, তাঁদের উভয়ের বগলদেশ জনতার সামনে স্পষ্ট দেখা গেল এবং তিনি আলী (আ. ও রা.)কে উপস্থিত জনতার কাছে পরিচয় করিয়ে দিলেন। এরপর তিনি বললেন- “মুমিনদের চেয়ে তাদের নিজেদের ওপর কে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত?” তখন সবাই বললেন : “মহান আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন।” প্রিয়নবী তখন বললেন : “মহান আল্লাহ্ আমার মাওলা এবং আমি মুমিনদের মাওলা; আর আমি তাদের নিজেদের ওপর তাদের চেয়ে বেশি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত এবং সবচেয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন। সুতরাং হে লোকসকল! “আমি যার মাওলা, এই আলীও তার মাওলা।” হে আল্লাহ! যে তাঁকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে, তাকেও তুমি বন্ধুরূপে গ্রহণ করো। যে তাঁর সাথে শত্রুতা করবে, তুমিও তার সাথে শত্রুতা করো। যে তাঁকে ভালোবাসবে, তাকে তুমিও ভালোবাস। যে তাকে ঘৃণা বা অপদস্থ করবে, তাকে তুমিও ঘৃণা ও অপদস্থ করো। যে তাঁকে সাহায্য করবে, তাকে তুমিও সাহায্য করো এবং যে তাঁকে সাহায্য থেকে বিরত থাকবে, তাকে তুমিও সাহায্য থেকে বিরত থাকো এবং সে যেদিকে ঘোরে, সত্যকেও তার সাথে সেদিকে ঘুরিয়ে দাও।”

এটিই সংক্ষিপ্তাকারে ঐতিহাসিক গাদীরে খুমের পূর্ণাঙ্গ ভাষণ। যা শব্দ ও বাক্যের তারতম্য সহকারে প্রিয় রাসূলের (দরুদ) ১১০ জন সাহাবী কর্তৃক অসংখ্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। এ থেকেই প্রতীয়মান হয় যে, মুসলমানদের কাছে মওলা আলী (আ. ও রা.) গুরুত্ব ও ফজীলত কতটুকু! সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী!

"ক্বুল লা আসআলুকুম আলাইহি আজরান ইল্লাল মাওয়াদ্দাতা ফিল ক্বোরবা"

#অর্থঃ" হে রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম! বলুন, আমি আমার রেসালতের পারিশ্রমিক তোমাদের কাছে কিছুই চাইনা,শুধু আমার আহলে বায়াতের মহব্বত ব্যতিত।"

১৮ই জিলহজ্জ বিদায় হজ্জের দিনে,গাদিরে খুম নামক স্থানে সোয়া লক্ষ হাজীদের সম্মুখে দাঁড়িয়ে রাসূল পাক (সাঃ) বলেছিলেনঃ

★“আমি (রাসূল) যার মাওলা (অভিভাবক) আলীও তার মাওলা।হে খোদা যে আলীর সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখে তুমিও তার সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখ,যে আলীর সাথে শত্রুতা রাখে তুমিও তার সাথে শত্রুতা রাখ।”

#সূত্রঃ সহি মুসলিম, ২য় খণ্ড, পৃ-৩৬২, মুসনাদে ইমাম হাম্বল, ৪র্থ খণ্ড, পৃ-২৮১)

★“আমি(রাসূল) যার বন্ধু আলী ও তাঁর বন্ধু ।”

#সূত্রঃ তিরমিযি, ইফাবা, ৬ঃ৩৭১৩।

★“হে আল্লাহ! আলী যে দিকে ঘুরবে হক ও সত্যকেও তুমি সে দিকে ঘুরিয়ে দিও।”

#সূত্রঃ তিরমিযি, ইফাবা, ৬ঃ৩৭১৪।

★“হে আলী! তুমি আমার এবং আমি তোমার জন্য।”

#সূত্রঃ তিরমিযি, ইফাবা, ৬ঃ৩৭১৬

★“আলী "আমার" আমি "আলীর"।আমার পক্ষ থেকে আমি আর আলী ছাড়া আর কেউ আমার "দায়িত্ব" পালন করতে পারে না।"

হে কাবার মালিক! আমাদের কবুল করুন আমরা যেন খুব সহজেই কাবাতে যেতে পারি! সেই তাওফিক আমাদের দান করুন।
06/06/2025

হে কাবার মালিক! আমাদের কবুল করুন আমরা যেন খুব সহজেই কাবাতে যেতে পারি! সেই তাওফিক আমাদের দান করুন।

20/05/2025

বেলায়েতের যুগে আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের পথ: কাদের মাধ্যমে?

নবুয়তের দরজা চিরতরে বন্ধ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পরে আর কোনো নবী আসবেন না। কিন্তু আল্লাহর দরজা এখনো খোলা। এখন চলছে বেলায়েতের যুগ, যেখানে সাধারণ মানুষ আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে থাকে আল্লাহর ওলি-মুর্শিদদের মাধ্যমে।

১. কুরআনের নির্দেশ: আল্লাহর ওলিদের সোহবত ধরো

﴿كُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ﴾
(সূরা তাওবা ৯:১১৯)

অর্থ: “তোমরা সত্যবাদীদের (আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের) সঙ্গ গ্রহণ করো।”

﴿أَلَا إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللَّهِ لَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ﴾
(সূরা ইউনুস ১০:৬২)

অর্থ: “নিশ্চয়ই আল্লাহর ওলিদের কোনো ভয় নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।”

আল্লাহ নিজেই বলেন—যাঁরা তাঁর ওলি, তাঁদের সান্নিধ্যে গেলে অন্তর জেগে ওঠে, ভয় ও দুঃখ দূর হয়।

২. হাদীসের ঘোষণাঃ ওলিদের সোহবত আল্লাহর পথে পৌঁছায়

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন:

“العلماء ورثة الأنبياء”
— “আলেমগণ হলেন নবীদের উত্তরসূরি।” (তিরমিজি)

আর যারা শুধু আলেম নন, বরং তাযকিয়াতে নফস (আত্মশুদ্ধি), জিকির ও রুহানিয়াতে পারদর্শী, তাদের বলা হয় মুর্শিদে কামেল—যারা মানুষের অন্তরকে আল্লাহর সাথে সংযুক্ত করেন।

৩. ইতিহাসভিত্তিক প্রমাণ: সাহাবিদের পর থেকে আউলিয়াদের সান্নিধ্যেই আত্মশুদ্ধি

নবুয়তের যুগ শেষ হওয়ার পর, সাহাবি-তাবেঈন-তাবে তাবেঈনের পর থেকে মানুষ আত্মিকভাবে দিকনির্দেশনা পেয়েছে আওলিয়া কেরামের মাধ্যমে।

কিছু উজ্জ্বল নিদর্শন:

হযরত আব্দুল কাদির জিলানী (রহ.) — ইরাকের বাগদাদে হাজারো গাফেল মানুষ তাঁর মাধ্যমে আল্লাহমুখী হন।

খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) — ভারতবর্ষে লাখো মানুষ তাঁর সোহবতে ইসলামের সৌন্দর্য দেখে আত্মশুদ্ধি অর্জন করেন।

বায়েজিদ বোস্তামী (রহ.) — যিনি নিজেকে "আল্লাহর দরজার দাস" মনে করে আত্মার দরজা খুলে দেন।

৪. বেলায়েতের যুগে ওলিদের কাজ কী?

> তারা নবী নন, ওহী পান না, শরীয়ত প্রবর্তন করেন না।
কিন্তু তারা নবুয়তের আলো বহনকারী, রাসুলের ওয়ারিস, এবং আত্মিক পথপ্রদর্শক।

তাদের মাধ্যমে:

অন্তর হয় পরিশুদ্ধ

জিকিরে হৃদয় হয় জাগ্রত

গাফেল আত্মা হয়ে ওঠে আল্লাহমুখী

উপসংহার (সংক্ষিপ্ত বক্তব্য):

আজকের এই বেলায়েতের যুগে যদি কেউ আল্লাহর নৈকট্য পেতে চায়, তাহলে সে যেন—

শরীয়তের অনুসারী হয়

আল্লাহর ওলিদের সোহবত গ্রহণ করে

মুর্শিদে কামেলের দিকনির্দেশনায় আত্মশুদ্ধির পথ ধরে

এই পথই হলো আল্লাহর দিকে পৌঁছার নিরাপদ, পরীক্ষিত ও আলোকময় রাস্তা।

14/05/2025

তাদের অধিকাংশেরই বিবেক বুদ্ধি নেই। -সূরা মায়েদাহ, ১০৩)

কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না। -সূরা আল আনআম, ৩৭)

কিন্তু তাদের অধিকাংশই মূর্খ। -
- সূরা আল আনআম, ১১১

মানুষ সম্পর্কে আল্লাহর এই অবজারবেশন সুনিশ্চিত সত্য এবং সঠিক।

আল্লাহ পাক কুরআনে রাসূল (সা:) কে উদ্দেশ্য করে বলেন,
যদি তুমি পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষের কথামতো চলো, তবে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। তারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে এবং তারা শুধু অনুমানভিত্তিক কথা বলে।

(সুরা আনআম, আয়াত নং ১১৬)

26/04/2025

সুফি তত্ত্বের কিছু শব্দের অর্থ যার ব্যাখ্যা ও সাধনা তরিকা পন্থীদের জানা জরুরি:

১। নফি- ইসবাত জিকির: না-হ্যা জপনা/কীর্তন
২। আনফাছ জিকির- শ্বাস প্রশ্বাস জপনা
৩। সুলতানুল আযকার- শ্রেষ্ঠ নাম কীর্তন (জিকির)
৪। জিকিরে খফি- নীরব জপনা
৫। ইনাবাত- আল্লাহ ভিন্ন অন্য কিছু হতে মন ফিরিয়ে সর্বদা আল্লাহর প্রতি মন নিবিষ্ট রাখা, আল্লাহর প্রতি আকৃষ্ট হওয়া, স্থলাভিষিক্ত নিয়োগ করা, প্রতিনিধি নিয়োগ করা।
৬। জহদ: প্রয়োজনের অতিরিক্ত বস্তু ও সংসারের কামনা বাসনা হতে মুক্ত হওয়া, উদ্যম, উদ্যোগ, চেষ্টা, প্রচেষ্টা, সাধনা।
৭। ওয়ারাউন: মন্দ কাজ হতে বিরত থাকা, আত্মসংযমন
৮। তাওয়াক্কুল: আল্লাহর প্রতি নির্ভরতা
৯। ক্বিনায়াত: অল্পে সন্তুষ্টি থাকা
১০। তসলিম: আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ, প্রণাম, নমস্কার,অভিনন্দন, স্বাগতম।
১১। রিদা: ভাগ্যের ভালো-মন্দের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা
১২। উরুজ-নুজুল-দাওরা: আরোহন- অবতরণ - ঘূর্ণন/ভ্রমণ (দেহের উপর থেকে নিচ চারটি স্থান রয়েছে। নিচ থেকে উপরে উঠলে উরুজ বলে, ওপর থেকে নিচে নামলে নুজুল বলে। আর ওঠা নামার ভ্রমণকে দাওরা বলে।
১৩। মাকামে সুলতানান নাসিরা:
মুক্বাম: বাড়ি,ঘর,আলয়,আশ্রম, দাঁড়ানোর স্থান৷
সুলতান: রাজা, সম্রাট
নাছিরা: সাহায্যকারী,সহযোগীতাকারী
১৪। হাক্বিকাতে কাশফুল আরওয়াহ:
হাক্বিকত: বাস্তবতা, সত্যতা,গূঢ়রহস্য
কাশফুন: প্রকাশ, বিকাচ্শ, স্বর্গীয় প্রেরণা
আরওয়াহ: রুহের বহুবচন, আত্মাসমূহ,প্রাণগুলো
১৫। তাওয়াজ্জুহু: মনোযোগ,সাবধানতা, শ্রদ্ধা, কারো দিকে ফিরে তাকানো
১৬। হাকিকতে মাকামাম মাহমুদ:
হাক্বিকত: বাস্তবতা, সত্যতা,গূঢ়রহস্য
মাকামুন: অবস্থান, বিশ্রামস্থল, বিরতির সময় দাঁড়ানোর স্থান
মাহমুদ: প্রশংশিত
প্রশংশিত স্থানকে মাকামাম মাহমুদ বলা হয়।
১৭। কাশফে কুবুর: সমাধি উন্মোচন
সমাধের পার্শ্বে সাধন করে প্রয়াত ব্যক্তির নিকট হতে প্রেমাবেশ লাভ করার সাধন।
১৮। কুন ফাইয়া কুন নামাজ: হও, হয়ে যায় নামাজ। যদি কারো আবশ্যক কোনো কঠিন কাজ উপস্থিত হয়, তখন এ সাধনটি করতে হয়। মনের বৈধ উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য নামাজ
১৯। ইসমে জাত: বীজনাম, মূল নাম, প্রকৃত নাম
২০। মুরাকাবা: ধ্যান, চিন্তা,গবেষণা, অনুসন্ধান
২১। হুশ দরদম: প্রতি নিঃশ্বাসে মনোযোগ।
২২। নজর বর কদম : প্রতি পদে লক্ষ্য
২৩। সফর দর ওয়াতন: প্রত্যেক দেশ ভ্রমণ
২৪। খাওলাত দর আঞ্জুমান: উঠাবসা, চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়া সর্ব অবস্থায় নিজে শূণ্য,রিক্ত হয়ে আল্লাহর প্রতি মনোযোগ থাকাকেই খাওলাদ ( শূণ্যত্ব) দর (মূল্য, মাত্রা,চাহিদা) আঞ্জুমান( সমিতি,সভা,বৈঠক)।
২৫। বাজ গাশত: প্রত্যাবর্তন (বাজ), গাশত(ভ্রমণ পদচারণা)
জিকিরের মাঝে মাঝে বিরতি দিয়ে গুরুর দেয়া মন্ত্র পাঠ করাকে বাজ গাশত বলে।
২৬। নিগাহ দাশত: লক্ষ্য দৃষ্টি (নিগাহ), মরুভূমি বন অরণ্য (দাশত)
যেসব কু ধারণা মনে জাগ্রত হয় তা তাড়ানোকে নিগাহ দাশত বলে।
২৭। ইয়াদ দাশত: শব্দ ও চিন্তা ব্যতীত আল্লাহকে স্মরণ করাকে অরণ্য স্মরণ বা ইয়াদ দাশত বলে। এ স্তরে নিজের অস্তিত্ব সম্পূর্ণ বিলোপ করতে হয়।
২৮। অকূফে জামানি: জ্ঞান বোধ বুদ্ধি (অকুফে), যুগ কাল সময়( জামান)
২৯। মুহাসাবা: গণনা, মিলানো।
সর্বদা আল্লাহর নাম যপনায় রত থাকাকে অকূফে জামানি বলা হয়। আবার কিছুক্ষণের শ্বাস এর গণনা শেষ করাকেও অকূফে জামানি বলা হয়। তাসাউফ তত্তে একে মুহাসাবা বলা হয়।
৩০। অকুফে কালবি, অকুফে আদাদি: মনের অলসতা প্রতিহত করাকে হৃদ্য জ্ঞান বা অকুফে কালবি বলা হয়। অন্যদিকে প্রত্যেক কাজে বেজোড় সংখ্যার প্রতি লক্ষ্য করা বা জিকিরের সময় সংখ্যার প্রতি লক্ষ্য করাকে সংখ্যা জ্ঞানকে অকুফে আদাদি বলা হয়।
আজকে এ পর্যন্তই, মালিক চাইলে আগামী পর্বে সুফি তত্ত্বের আরো অনেক শব্দের বাংলা অর্থ প্রকাশ করার চেষ্টা করব।

26/04/2025

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে উপলব্ধি করা যায় বন্ধুত্ব চিরস্থায়ী নয় – জীবনের পথে অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধুও সময়ের সঙ্গে দূরে সরে যায়।
নিজের সঙ্গে সম্পর্কই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ – আত্মসম্মান ও মানসিক শান্তি বিশ্বের সব সম্পর্কের চেয়ে মূল্যবান।
কেউ পরিশ্রম দেখে না, সবাই শুধু ফলাফল দেখে – সফল হলে প্রশংসা, ব্যর্থ হলে সমালোচনা। তাই নিজের জন্যই পরিশ্রম করুন।
হৃদয়ভঙ্গ ও ব্যর্থতা জীবনেরই অংশ – এগুলো এড়ানো নয়, বরং শেখার সুযোগ হিসেবে দেখাই শ্রেয়।
বাড়ির মতো আপন কোনো জায়গা নেই – দুনিয়ার যেখানেই যান, মানসিক শান্তির ঠিকানা একটাই—নিজের ঘর।
পরিবার ও অর্থই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ – বন্ধু, গ্ল্যামার বা সামাজিক মর্যাদা ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু পরিবার ও অর্থ দীর্ঘমেয়াদে আপনাকে আগলে রাখে।
বই-ই সত্যিকার বন্ধু – বই কখনো প্রতারণা করে না, বরং জ্ঞানের আলো দিয়ে পথ দেখায়।
শারীরিক ব্যায়াম চাপ কমায় – শুধু ফিটনেসের জন্য নয়, মানসিক প্রশান্তির জন্যও ব্যায়াম জরুরি।
অনুশোচনা ও কান্নায় সময় নষ্ট নয় – যা হয়ে গেছে, তা আর ফিরে আসবে না। সামনে এগোনোর দিকেই নজর দিন।
আজ যা চাইছেন, কাল হয়তো তার মূল্যই থাকবে না – মানুষের চাহিদা বদলায়, তাই আবেগের বশে সিদ্ধান্ত না নেওয়াই ভালো।
আপনার সিদ্ধান্তই জীবন গড়ে দেয়, ভাগ্য নয় – ভাগ্য নির্ধারিত নয়, বরং আপনার সিদ্ধান্তই ভবিষ্যৎ তৈরি করে।
শৈশবই জীবনের সেরা সময় – দায়িত্বহীন, নির্মল আনন্দের সেই দিনগুলো আর কখনোই ফিরে আসে না।

একদম ছোটোবেলা থেকে নবীজির সান্নিধ্য পাওয়া একমাত্র সাহাবি মওলা আলি রা.। মক্কায় তখন খরা। তার উপর আবু তালিবের ব্যাবসায় নেমে...
27/03/2025

একদম ছোটোবেলা থেকে নবীজির সান্নিধ্য পাওয়া একমাত্র সাহাবি মওলা আলি রা.। মক্কায় তখন খরা। তার উপর আবু তালিবের ব্যাবসায় নেমেছে ধস। পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। নবীজির ভান্ডার তখন যথেষ্ট সমৃদ্ধ। মা খাদিজার সম্পদের মালিক তিনি। যাবতীয় ব্যাবসার দেখাশোনা তাঁর দায়িত্বে। আবু তালিবের কাছে গেলেন। চাচাজি, আপনি তো আমার ভার নিয়েছিলেন, তার কিছুটা শোধ করার সুযোগ দিন। আলিকে আমি নিয়ে যাচ্ছি, জাফর আপনার কাছেই থাকল।

সেই থেকে মওলা আলি নবীজির কাছে। সকল কাজে সাথে সাথে থাকতেন। যতটুক পারা যায় অতটুকুতে হাত লাগাতেন। অবশ্য নবীজির সাথে মওলা আলির রসায়ন শুরু হয়েছে জন্মের পর থেকেই। কাবা অভ্যন্তরে জন্ম নেবার পর যতক্ষণ তাঁকে নবীজি কোলে তুলেননি, ততক্ষণ চোখ খুলেননি। যতক্ষণ নবীজি কোলে তুলেননি, ততক্ষণ কান্না থামাননি। নবীজি কোলে নেওয়ার সাথে সাথে চোখ খুলে ভুবনজয়ী হাসি দিলেন। নবীজি বলে উঠলেন, কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু। আল্লাহ তাঁর চেহারা মহিমাময় করে দিন। নবীজি জানতেন, শিশুর মর্যাদা হবে সুউচ্চ। তাই নাম রাখলেন— আলি।

নবীজি হেরায় গেলেন। মওলা আলিও ছুটে যেতেন। মাঝে মাঝে লাগাতার কয়েকদিন থেকে যেতেন। বয়স কম, এসব বোঝার কথা না, কিন্তু হেরার জ্যোতি তিনি পেয়েছেন সরাসরি নবীজির সাথে থেকেই।

হেরা থেকে নবীজি ফিরলেন। মা খাদিজাকে নিয়ে নামাজে দাঁড়ালেন। আলি দেখলেন, প্রশ্ন করলেন— এটা কী? নবীজি বললেন, এটা নামাজ। আমি চাই তুমিও আমাদের সাথে শরিক হও। মওলা আলি শরিক হয়ে গেলেন। ঘর ছেড়ে নবীজির সাথে মাঝে মাঝে পাহাড়ের উপত্যকায় চলে যেতেন। সেখানে নিরালায় পড়তেন। কেউ জানতো না।

নবীজি প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দিবেন। নিকটাত্মীয়দের দাওয়াত দিতে গেলেন। বলে গেলেন— আলি, খাবারের এন্তেজাম করো। তিনি করলেন। খাবার বণ্টনের দায়িত্বও তাঁর। অল্প খাবার চল্লিশ জন মিলে ভরপেট খেলো। নবীজির মোজেজা, প্রকাশ হয়েছে মওলা আলির হাত দিয়ে। নবীজি সবাইকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন। কেউ কিছু বলার আগে তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। যদিও তিনি ছিলেন সবার ছোটো। বললেন, আর কেউ আপনার পাশে না দাঁড়ালেও আমি দৃঢ়ভাবে আপনার পাশে আছি।

বস্তুুত তিনি পাশে ছিলেন। মক্কার কাফেররা যখন নবীজিকে পাথর মারতে বখাটে লেলিয়ে দিয়েছে, তখন মওলা আলি ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তাদের সামনে। সার্বক্ষণিক তাঁকে ছায়ার মতো অনুসরণ করতেন। বিপদের আশঙ্কা দেখলে দাঁড়িয়ে যেতেন সামনে। দ্রুত গিয়ে খবর দিতেন অন্যদের।

হিজরতের আদেশ এসেছে। নবীজি চলে যাবেন। বিছানায় শুইয়ে দিলেন মওলা আলিকে। আলি, আমার চাদর গায়ে শুয়ে পড়ো। আলি শুয়ে পড়লেন। কোনো কথা নাই, দরকষাকষি নাই। তাঁর উপর হামলা হতে পারে, কাফেররা নবীকে না পেয়ে তাঁর উপর চড়াও হতে পারে— চিন্তাও নাই!

এভাবে একদম ছোটো থেকে নবীজির হাত ধরে বড়ো হয়েছেন তিনি। আপন সন্তানের মতো করেই। তাঁর সমান সান্নিধ্য, সঙ্গ, অভিভাবকত্ব পায়নি আর কেউ। হিজরতের পরেও এ ধারা ছিল অটুট। সমগ্র আনসার-মুহাজিরদের ডেকে নবীজির ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করবেন। শুরু করলেন মওলা আলির হাত ধরে। বললেন, এই হলো আমার ভাই। তোমরা আজ থেকে এমনই পরস্পর ভাই-ভাই হয়ে যাও।

হিজরতের দ্বিতীয় বছর। মা ফাতেমা বিয়ের উপযুক্ত। চতুর্দিক থেকে সম্বন্ধ আসতে শুরু করেছে। নবীজি সবাইকে ফিরিয়ে দিলেন। বিয়ে দিলেন মওলা আলির সাথে। মওলা আলির দেওয়ার মতো মোহরানা ছিল না। যুদ্ধের হাতিয়ার লোহার বর্ম বিক্রি করে মোহরানা দিলেন। নবীজি মা ফাতেমাকে ডেকে বললেন, “আমি আমার পরিবারের সবচেয়ে প্রিয় পাত্রের সাথে তোমাকে বিয়ে দিচ্ছি।” মসজিদে নববীতে আকদ হলো। স্বয়ং নবীজিই পড়ালেন। উপহার দিলেন বেশ কটি। খাট, তোশক, কম্বল, চাদর, পানির মশক, জাঁতা... মওলা আলিকে বললেন, ওয়ালিমা করাও। কিন্তু তাঁর তো টাকা নাই। কীভাবে করায়? সাদ বিন মুয়াজ রা. মেষের ব্যবস্থা করলেন। কয়েকজন সাহাবি মিলে ভুট্টা আনলেন। ওয়ালিমা কম্প্লিট। তাঁদের ফুলসজ্জার রাতে নবীজি পাত্রে পানি নিয়ে অজু করলেন, বাকি পানি ঢেলে দিলেন মওলা আলির উপর। দোয়া করলেন— হে আল্লাহ, আপনি তাঁদের ভেতর-বাহির বরকতে ভরপুর করে দিন। তাঁদের সন্তান-সন্ততিতেও বরকত দিন।

বদর যুদ্ধের আগের ঘটনা। সাহাবিদের নিয়ে মদিনার পশ্চিমাঞ্চলে অভিযানে গেলেন নবীজি। যাত্রাবিরতির এক ফাঁকে ক্লান্ত মওলা আলি শুয়ে পড়লেন মাটিতে। অল্পতেই ঘুম। নবীজি এলেন তাঁর কাছে। কিছুক্ষণ চেয়ে থাকলেন মায়ার নজরে। তারপর ডাক দিলেন, ওহে মাটির বাপ! চোখ কচলাতে কচলাতে উঠে পড়লেন তিনি। সলজ্জ ভঙ্গিতে বললেন, লাব্বাইক ইয়া রসুলাল্লাহ। “পৃথিবীতে সবচেয়ে হতভাগা দুজন ব্যক্তি পরিচয় জানতে চাও? একজন সালেহ আ. এর উটের হত্যাকারী, অপরজন তোমার হত্যাকারী!

আয়াত এলো— “বলুন, আমার দাওয়াতের বিনিময়ে তোমাদের নিকট আমার পরিবারের ভালোবাসা ছাড়া আর কিছু চাই না।” সাহাবিরা আরজ করলেন, ইয়া রসুলাল্লাহ, আপনার পরিবারভুক্ত কারা? নবীজি জবাব দিলেন, “আলি, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন।” ফাতেমা আপন কন্যা, জগত-অতুল, জান্নাতি নারীদের সর্দার। কিন্তু নবীজি প্রথমে উচ্চারণ করলেন মওলা আলির নাম!

মওলা আলির বীরত্ব! কে না জানে। খায়বারের বীরত্ব ঘটা করে প্রচার হয়। কিন্তু মওলা আলির বীরত্ব ছিল প্রতি যুদ্ধেই অতুলনীয়। নবীজির জীবদ্দশায় প্রায় যুদ্ধেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বদর থেকে শুরু করে উহুদ, খন্দক, বনু কোরায়জা, বনু নাজির, খায়বার, মক্কা-বিজয়, হুনাইন সবটাতে ছিলেন সেনাপতির ভূমিকায়। ‘ফাতহুম মুবিন’ হিসেবে খ্যাত মহা-বিজয় হুদায়বিয়ার সন্ধির লেখকও তিনি।

জ্ঞানগরিমায় মওলা আলির ধারেকাছে ছিল না আর কেউ। আরবি ক্লাসিক সাহিত্যজ্ঞান ছিল তাঁর দখলে। কুরআন, হাদিসের গভীরে তাঁর মতো কেউ প্রবেশ করতে পারেনি। মওলা আলির কাব্যখ্যাতি এখনো বিশ্বজোড়া। অল্প কথায় অতলান্ত সমুদ্রের গভীরে নিয়ে যান। নবীজি তাই বলেছেন, আমি জ্ঞানের শহর, আলি তার প্রবেশপথ।

ইনসাফ ছিল মওলা আলির শিরায় শিরায় প্রবাহিত। নবীজির ঘোষিত পৃথিবীর সবচেয়ে হতভাগ্য ব্যক্তির একজন আবদুর রহমান ইবনে মুলজিম মওলা আলিকে নামাজরত অবস্থায় ছুরিকাঘাত করল। মওলা আলি বিছানায়। অন্তিম মুহূর্তে ইমাম হাসানকে উপদেশ দিচ্ছেন— বাবারে, যে আমাকে আঘাত করেছে তাকে পারলে ক্ষমা করে দিয়ো। আর যদি প্রতিশোধ নিতে চাও তবে মনে রেখো, সে তোমার পিতাকে কেবল একটাই আঘাত করেছিল। অতএব, তাকে একটার বেশি আঘাত যেন না করো!

বিদায় হজ শেষে ফেরার পথে তাই নবীজি ঘোষণা দিয়েছিলেন— আমি যার মওলা, আলিও তার মওলা। হে আল্লাহ, যে আলিকে মোহাব্বত করে আপনিও তাকে মোহাব্বত করুন। যে আলির সাথে শত্রুতা রাখে, আপনিও তার সাথে শত্রুতা রাখুন।

24/03/2025

বাংলাদেশ ইজরাইল সিরিয়া, এই তিনটি ভূখন্ড আল্লাহর প্রতিশ্রুত
খিলাফত ব্যবস্থার ক্ষেত্র।

কোরআন বলে, যে জনপদে আল্লাহর প্রেরিত বার্তা বাহকরা আসতেন, সেখানকার জনগণ সমাজের কর্তা ব্যাক্তিরা থাকতো বেখবর, কিন্তু তারা নিজেদের অনেক বুদ্ধিমান এবং চালাক মনে করতো। আবার কিছু জনপদ নিজেদের খুব শক্তিশালী মনে করতো, আবার অনেক জনপদ নিজেদের মধ্যে আভিজাত্য এবং ক্ষমতার লড়াইয়ে লিপ্ত থাকতো।

শেখ হাসিনার পতন খিলাফতের এক ধাপ অতিক্রম, আর ইন্ডিয়ার পতন খিলাফতের চুড়ান্ত ধাপ অতিক্রম। ঘটনা পরষ্পরা সেদিকেই এগুচ্ছে।

এ জন্যেই আমি নিশ্চিতভাবে বলি শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন সম্ভব নয়, এখানে আল্লাহর পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন হবে। আওয়ামীলীগের ভাইয়েরা আওয়ামী লীগ ছেড়ে খিলাফতের দিকে প্রত্যাবর্তন করেন, এতে আল্লাহর ক্ষমা এবং পুরষ্কারে ভুষিত হবেন।

14/02/2025
08/02/2025

চলুন একটু ইস্তেগফার পাঠ করি..

আস্তাগফিরুল্লাহ হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু ওয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলাওয়ালা কুয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহিল আলিয়্যিল আযিম

আস্তাগফিরুল্লাহ হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু ওয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহিল আলিয়্যিল আযিম

সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ!

সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম!
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম!
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম!
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম!

আস্তাগফিরুল্লাহ ইন্নালাহা গাফুরুর রাহিম!
আস্তাগফিরুল্লাহ ইন্নালাহা গাফুরুর রাহিম!
আস্তাগফিরুল্লাহ ইন্নালাহা গাফুরুর রাহিম!
রাব্বানা যালামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়াতারহামনা লানা কুনান্না মিনাল খাসিরীন

রব্বানা যালামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়াতারহামনা লানা কুনান্না মিনাল খাসিরীন

সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আযিম!
সুবহানআল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আযিম সুবহনাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আযিম!

ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু, বিরাহমাতিকা আস্তাগীস
ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু, বিরাহমাতিকা আস্তাগীস
ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু, বিরাহমাতিকা আস্তাগীস

হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি'আমাল ওয়াকিল!
হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি'আমাল ওয়াকিল!
হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি'আমাল ওয়াকিল!!

রব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাছানা ওয়া ফিল আখিরাতি হাছানা ওয়া কিনা আজাবান্নার

ইয়া আল্লাহ, ইয়া রহমানু, ইয়া রাহিমু, ইয়া জাব্বারু,ইয়া বাসিতু,ইয়া ওয়াদুদু,ইয়া যুল যালালি ওয়াল ইকরাম,ইয়া আরহামার রহিম।

পড়া শেষ হলে বলি আলহামদুলিল্লাহ 🌸

Address

Dhaka
1212

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Tapu Sarwar posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Tapu Sarwar:

Share

নারায়ণগঞ্জ জার্নাল

কথা বলে দেশ ও গণমানুষের