15/10/2025
টাঙ্গাইল জেলায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে স্বর্ণের মুকুট পেয়েছিলেন মির্জাপুরের দুঃখীরাম রাজবংশী। আজ দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন বড় বড় পদমর্যাদায় কর্মরত রয়েছেন তার শতশত ছাত্র। আমরা গিয়েছিলাম তার সমাধি দেখতে নিজ গ্রামে।
তিনি ছিলেন আমাদের মির্জাপুরের গর্বিত সন্তান ❤️বাবু দুঃখীরাম রাজবংশী-ছিলেন টাংগাইলের শিক্ষাক্ষেত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। আদর্শ শিক্ষক, মানবিক মানুষ ও শিক্ষা উন্নয়নের এক নিবেদিত প্রাণ হিসেবে তিনি সর্বত্র পরিচিত ছিলেন।
১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে টাঙ্গাইলের সাটিয়াচড়া গ্রামে গোপালচন্দ্র ও রাজেশ্বরী রাজবংশীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শৈশব থেকেই তিনি মেধা ও অধ্যবসায়ের প্রতীক ছিলেন।
সাটিয়াচড়া অযোধ্যা বাবু প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা শুরু করে জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি হাইস্কুলে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন (১৯৪৫)। এরপর করটিয়ার সা'দত কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক (১৯৪৭) ও স্নাতক (১৯৪৯) সম্পন্ন করেন কৃতিত্বের সঙ্গে।
স্নাতক শেষে তিনি শিক্ষকতার মহান পেশায় নিজেকে উৎসর্গ করেন। প্রথমে মিরিকপুর গঙ্গাচরণ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, পরবর্তীতে ১৯৫১ সালের ২১ আগস্ট বরাটী নরদানা পাকিস্তান উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তাঁর নেতৃত্বে বিদ্যালয়টি একটি ছোট প্রতিষ্ঠান থেকে বিশাল পরিসরে পরিণত হয়—
শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন টাঙ্গাইল জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক (১৯৮৭), মির্জাপুর উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক (১৯৯২-৯৩) এবং স্বর্ণমুকুট সংবর্ধনা (১৯৯৬)। এছাড়া ১৯৮০ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি মির্জাপুর থানার শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং ভারতেশ্বরী হোমসের গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন।
২০০৪ সালের ২ জানুয়ারি এই প্রজ্ঞাবান শিক্ষক পৃথিবী ছেড়ে চলে যান, রেখে যান এক আলোকিত উত্তরাধিকার — শিক্ষা, সততা ও মানবতার আদর্শ।
টাঙ্গাইল, মির্জাপুর।