YouthTale

YouthTale A platform for young writers.

03/06/2017

About Us

YouthTale aims to encourage young people to engage in creative writing. We are planning to work with educational institutions, parents and young writers by doing the following:

• Arranging national poetry and creative writing competitions through institutions.

• Providing free resources to teachers to aid them in teaching young writers.

• Providing poetry and creative workshops for young writers.

• Awarding prizes to both institutions and pupils across the Bangladesh.

• Publishing books of best young writers in annual book fair.

02/06/2017

#গল্প_নীল_নয়না



"১"
আমি আমেরিকার আল্যাক্সা শহরের দ্যা ঢ্যালটন হাইওয়েতে একটা বিশাল এবাল্যাঞ্চের নিচে আটকা পরে আছি। মাথার উপরে আছে নিসান পেট্রল ২০০৮ মডেলের VTC গাড়ির ছাদ। আমার মতে পৃথিবীর সব চেয়ে শক্ত শরীরের গাড়ি হচ্ছে এই নিসান ভিটিক,তাই হয়ত আমি বেঁচে আছি। কিন্তু আমি হয়ত আরো ঘন্টাখানকে বেঁচে থাকব।
এবাল্যাঞ্চ হচ্ছে বরফের পাহাড় থেকে বরফ ধসে যাওয়া। আমার গাড়ি সহ হাইওয়ের বিশাল একটা অংশ পাহাড় থেকে বরফ ধসে বরফের নিচে আমাকে দাফন করে ফেলেছে।
-
দ্যা ঢ্যালটন হাইওয়ে হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার সব চেয়ে শীতল রাস্তার একটা। বরফের পাহাড় কেটে বানানো হয়েছে এই রাস্তা। এটাকে পৃথিবীর সব চেয়ে বিপদ জনক রাস্তার একটা ও মানা হয়। নভেম্বরে সব চেয়ে বেশি শীত পরে এখানে। প্রচন্ড বাতাসের কারণে বরফ উড়তে থাকে সম্পূর্ণ রাস্তায়,সামনের কিছুই দেখা যায় না। প্রায় অনুমানের উপর ড্রাইভ করতে হয়। হঠাৎ পাহাড় থেকে তেড়ে আসা এবাল্যাঞ্চের নিচে চাপা পরে মারা গেছে হাজারো মানুষ। আমি এই রাস্তায় আসার আগে খোঁজখবর নিয়ে এই সব কিছুই জেনেছি,কিন্তু আমাকে বারো ঘন্টার রাস্তা পারি দিয়ে পৌছতে হবে প্রায় ৬৬৬ কিলোমিটার দূরে প্রোটভে ওয়েলফিল্ডে। এই বারো ঘন্টার রাস্তা ও নভেম্বরের প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় ৫ দিন লেগে যায়। কিন্তু আমি থামিনি,আমাকে যেতেই হবে দক্ষিণের প্রোটভে ওয়েলফিল্ডে। কিন্তু কেন আমি এখানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মরণ ফাঁদে আটকা পরলাম?
-
মেক্সিকোর বর্ডার হয়ে দালালের মাধম্যে আমি আমেরিকায় ডুকে পরি। কিনে নেই প্রিয় নিসান প্রেটল গাড়ি,রওয়ানা হই আল্যাক্সা শহরের নির্জন দ্যা টলটেন হাইওয়ের দিকে। নির্জন বলার কারণ হচ্ছে এই রাস্তায় কোন বসতি নেই,তাই মানুষজন ও নেই। তবে মাঝে মাঝে ভালুক দেখা যায়।
-
শুরুতে খুব একটা ঝামেলা পোহাতে হয়নি,আবহাওয়া কিছুটা সমস্যা করলে ও আমি এগোতে থাকি বরফে ঢাকা সাদা রাস্তায়। প্রায় চারশো কিলোমিটার যাওয়ার পর আমাকে রাস্তায় আটকে দেয়া হয়। আমার গাড়ির পিছনে একের পর এক থামতে থাকে ট্রাক। আমাকে যারা আটকে দেয় ওরা কারা আমি জানিনা,পুলিশ হতে পারে,কিন্তু ওদের গায়ে পুলিশের পোষাক নেই। রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমাকে এখানে থেমে থাকলে চলবে না,আমাকে যেতেই হবে। পুলিশ আটকে জেলে পুড়ে দিলে প্রায় তিন মাস কষ্ট করে আমার এখান পর্যন্ত আসাটাই বেকার হয়ে যাবে।
-
সাদা চামড়ার দুইজন লোক আমার গাড়ি থেকে কিছুটা দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছে,কিন্তু আমার দিকে আসছে না। এই সুযোগেই আমাকে ব্যারিকেড ভেঙ্গে পালাতে হবে,আর আমি তাই করলাম। কয়েক কিলোমিটার যেতেই হুরহুর করে আমার গাড়ির দিকে তেড়ে আসলো এবাল্যাঞ্চ। বরফের নিচে চাপা পরে ধীরে ধীরে শীতল হয়ে আসছে আমার সম্পূর্ণ শরীর। রক্ত জমাট বাঁধা শুরু করেছে। আর হয়ত কয়েক মিনিট বেঁচে থাকতে পারব। একসময় জ্ঞান হারালাম।
-
"২"
বাংলাদেশে সাধারণত নীল চোখের মেয়ে দেখা যায় না। আমি যখন প্রথমবার মেয়েটাকে স্কুল ড্রেস পরনে দেখেছিলাম,মনে মনে নিজের অজান্তেই বলে উঠি - ইয়া রব তোমার সৃষ্টি এত সুন্দর। মেয়েটার শারীরিক গড়ন,উচ্চতা সব কিছুই আমাদের দেশের মেয়েদের মতন,কিন্তু চোখের মণির রঙ ব্যতিক্রম। আর এই কারণেই মেয়েটাকে অদ্ভুত রকম সুন্দর লাগছে।
-
আমি থমকে দাঁড়িয়ে নিজেকে আড়াল করে নেই স্কুলের পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা বুড়ো কদম গাছটার পিছনে। মেয়েটা কুঁজো হয়ে কদম ফুল কুঁড়াচ্ছে। একফালি সোনালি চুল কপাল বেয়ে পরেছে মেয়েটা বাম চোখের উপরে। মেয়েটা মাথা নাড়িয়ে বাম হাতের তর্জনী দিয়ে সরিয়ে দিলো চুল গুলো। ক্ষণিকের জন্যে মেয়েটার চোখে চোখ পরলো আমার। আমি মনে মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আবারো বলে উঠি - হে আল্লাহ এত সুন্দর কেন বানিয়েছো? চোখ উপরে ওঠাতেই দেখি মেয়েটা সেখানে নেই। ভ্যাবাচেকা খেয়ে চোখ কচলাতে কচলাতে ভাবতে থাকি - তাহলে কি আমি কল্পনা করেছি? গাছে আঘাত করে ব্যথ্যা পেয়ে বুঝতে পারি,নাহ আমি তো ঠিক যায়গায়তেই আছি। তাহলে স্বপ্ন ও দেখিনি।
-
আজ প্রায় দশ দিন হলো মেয়েটার স্কুলের সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকি,বিকাল হলেই মন খারাপ করে ফিরে যাই। আজ মনে মনে ভেবেই এসেছি,আজকে মেয়েটার দেখা না পেলে আর কোন দিন আসব না। ধীরে ধীরে স্কুল ছুটির সময় হয়ে এসেছে,আমি একটা একটা করে সব গুলো মেয়েকে বাজপাখির নয়নে দেখতে লাগলাম। কিন্তু নাহ,আজ ও ঐ নীল চোখা মেয়েটার দেখা পেলাম না 😞। ফিরে যাব তাই ঘুরে হাটা ধরলাম,হঠাৎ পিছন থেকে মেয়েলি কণ্ঠে কেন যেন ডেকে বলছে - এই যে একটু দাঁড়ান তো। মেয়েটা প্রায় দৌড়ে এসেছে আমার দিকে,তাই হাঁপাচ্ছে আর দাঁড়িয়ে দীর্ঘশ্বাস নিচ্ছে। একজন মেয়ের যে ক্লান্ত অবস্থায় বিন্দু বিন্দু ঘামের পরশে সৌন্দর্য হাজার গুনা বেড়ে যায়,তা হয়ত আমি এই প্রথম দেখলাম। চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি মেয়েটার দিকে 😱। নীরবতা ভেঙ্গে মেয়েটা বলে উঠলো - এই যে চোখ নামান বলছি,এভাবে তাকিয়ে আমাকে খুন করবেন নাকি? আমি কিছু না বলেই চোখ নামিয়ে নিলাম। আমি কিছু না বলাতে মেয়েটা আবারো বললো - আমি বলতেই চোখ নামিয়ে ফেলতে হবে নাকি? এবার আমি কিছুটা সাহস পেয়ে চোখ তুলে মেয়েটার চোখের দিকে তাকালাম। সে মুচকি হাসির সাথে আবারো বলব - আপনার ঐ চোখে না নেশা আছে,বিশেষ করে যখন মন খারাপ করেন,তখন ঐ নেশা আমাকে আক্রমণ করে। এভাবে আর কত দিন এসে অপেক্ষা করতেন? কোন উত্তর ছিলো না আমার কাছে।
-
এরপর থেকে আমি প্রতিদিনই আসতাম,সে ও আসত। মাঝে মাঝে সে স্কুল ফাঁকি দিয়ে ও আসত। অনেক দুষ্টুমি করত,পাকা পাকা কথা বলতো। আমি ও টুকটাক কথা বলতাম,কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই চুপচাপ তার দিকে তাকিয়ে থেকে তাকে দেখতাম,আর ভাবতাম এত সুন্দর কেন বানিয়েছো হে রব। আমি মেয়েটার হাত স্পর্শ করতে ও ভয় পেতাম,ভয় হত যদি স্বপ্নের মত নিমিষেই হারিয়ে যায় সব কিছু। ধীরে ধীরে আমার অবস্থা এমন হয়েছে যে,কাছে আসলে ভয় লাগে,আর দূরে গেলে হৃদয় জ্বলে। আমি ওকে মায়া বলেই ডাকতাম। ওর নাম জানার ইচ্ছে ও কখনো হয়নি। সে নিজে ও কখনো বলেনি,ওর নাকি মায়া ডাক শুনতেই ভাল লাগত।
-
একদিন বসে আছি একটা পাবলিক পার্কের বেঞ্চে। পাশেই একটা পিচ্চি মেয়েকে একজন ভদ্রলোক কাঁধে নিয়ে নাঁচতেছেন। কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা আরো একটা ১৫-১৬ বছরের মেয়ে রশি হাতে নিয়ে এসে সেই ভদ্র লোককে বললো - বাবা চলো রশি নিয়ে খেলব। রশির দুই প্রান্তে ভাগ হয়ে গেছে পুরো পরিবার,এক প্রান্তে দুই মেয়ে ও বাবা অন্য প্রান্তে দুই ছেলে ও মা। খেলায় বাবা ও মেয়েরা জিতেছে,তাই মায়ের ব্যাগ থেকে পয়সা বের করে আইস্ক্রিম খাবে সবাই।
-
ওরা আইস্ক্রিমের দোকানের দিকে যেতেই আমি মায়ার চোখের দিকে তাকালাম। মায়ার চোখ দুটু ভিজে উঠেছে - এই প্রথমবার আমি মায়াকে কাঁদতে দেখেছি। মায়া ফুঁফিয়ে উঠে মুখ গুঁজে দিয়েছে আমার বুকে। এই অনুভূতি আমি বলে বুঝাতে পারব না। আমার বুক ধরফর করছিলো। আমি মায়ার মাথাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরি আমার বুকের সাথে।
-
মায়া সেদিন আমাকে বলেছিলো সে আধা বাংলাদেশি আর আধা আমেরিকান। মায়ার মা স্টাডি করতে গিয়েছিলেন আমেরিকায়,সেখানেই এক শেতাঙ্গের সাথে প্রেম হয়। মায়ার আসল নাম হচ্ছে মায়ামি ফ্লেচার। বাবার নাম সাইমন ফ্লেচার। বাবা ও মায়ের নামের অনুকরণেই মায়ার নাম করণ করা হয়। কিন্তু বাবার নামের টাইটেলটা বাংলাদেশে ব্যবহার করেন না মায়ার মা। কোন একটা অজানা কারণে বাবা মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। মা চলে আসেন ছোট্ট মায়াকে নিয়ে নিজের দেশে। বাবার কথা শুধু এতটুকুই জানিয়েছেন মায়ার মা মায়াকে।
-
আমি শুধু ভেবেই অবাক হয়েছি,আমার ধারণাকৃত নামের সাথে মায়ার অরিজিনাল নামের এত মিল হলো কিভাবে! সেদিন আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করি,যেভাবেই হুক আমি মায়াকে মায়ার বাবার সাথে মিলাবো।
-
"৩"
জ্ঞান ফেরার পর বুঝতে পারি আমি একটা বেডে শুয়ে আছি। হাতে স্যালাইনের সুই গুজে দেয়া হয়েছে। নির্জন এই এক রুমের হস্পিটালে কোন দ্বিতীয় রোগি নেই। হয়ত দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগিকেই এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। একজন বিশালদেহী আমেরিকান বুড়ো এক লোক বসে আছেন আমার সামনের চেয়ারে। এই লোককেই আমি দেখেছিলাম ব্যারিকেডের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে। এতক্ষণ তিনিই মনযোগ দিয়ে শুনছিলেন আমার এখানে আসার কারণ। আমার ডান হাতে জুসের গ্লাস ধরিয়ে দিয়ে বললেন - বাকিটা বলো,এই পাগলামী কি শুধু মাত্র একটা মেয়ের জন্যেই?
-- হ্যাঁ
- কিন্তু কেন? তোমাকে কেন যেতে হবে প্রোটভে ওয়েলফিল্ডে?
-- আমি মায়ার মায়ের কাছেই জানতে পারি সাইমন ফ্লেচার সম্পর্কে। উনি প্রথমে বলতে রাজি হন নি। কিন্তু আমি ও মায়া অনেক অনুনয় বিনয় করার পরেই উনি আমাদের সাইমন ফ্লেচারের একটা ছবি দেখান,এবং তখনকার উনার অবস্থান সম্পর্কে আমাদের জানান। আমি মায়া ও তার মায়ের অলক্ষে ছবিটা পকেটে পুড়ে নেই। আমেরিকায় ডুকেই উনার আগের কর্ম ক্ষেত্র থেকে জানতে পারি সাইমন প্রোটভে ওয়েলফিল্ডে কাজ করেন বর্তমানে। আমি সাইমনকে খোঁজে বের করে উনার মেয়ের কাছে ফিরিয়ে নিতে চাই। এবং আমাকে এটা করতেই হবে।
-- আমাকে ছবিটা দেখাও তো বাচ্চা।
-
ছবিটা হাতে নিয়েই বুড়ো লোকটার চোখে মুখে এক অদ্ভুত হাসি খেলে গেলো। উনি চেয়ার থেকে উঠে বাইরে চলে গেলেন। আমি কিছুই বুঝিনি এই হাসির রহস্য।
-
"৪"
আমি যাচ্চি তোমার বাবার খোঁজে,চিরকুটটা হাতে পেয়ে চমকে উঠে মায়া। মায়া জানে এই কাজ প্রায় অসাধ্যসাধন। বেশ কয়েকদিন মাইয়ুফকে খুঁজে বেড়ায় মায়া। যত দিন যায় মায়ার অস্থিরতা বাড়তে থাকে। মাইয়ুফকে ছাড়া মায়ার পৃথিবীটা শুন্য মনে হয়। দিন দিন অসুস্থ হয়ে পরে। এদিকে মায়ার মা ও চিন্তিত। একমাত্র মেয়ের এই অবস্থা হলে উনি কি করে বাঁচবেন।
-
চোখ বন্ধ করে মদ্যপ সাইমনের স্মৃতিতে ডুবে যান। এই মদের কারণেই প্রতিদিন সাইমনের সাথে ঝগড়া হত উনার। শেষ রক্ষা আর হয়নি,যে সাইমন পাগলের মত ভালবাসত উনাকে,সে সব ভুলে একদিন গায়ে ও হাত উঠিয়ে ফেলে। সেদিন চোখ থেকে গাল বেয়ে ঝরেছিলো অশ্রু। কিন্তু আজকে মেয়েকে বাঁচাতে হবে।
-
বন্ধ ড্রয়ার খুলে বের করেন মায়ামির পাসপোর্ট। মায়াকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরেন পরম মমতায়।
-
"শেষাংশ"
আমি বিছানায় শুয়ে ভাবছি শরীরটা একটু সুস্থ হলেই চলে যাব এখান থেকে। মধ্যরাত,তাছাড়া বাইরে তুফান হচ্ছে। সকালের অপেক্ষায় আছি। একসময় ঘুম এসে ভীড় জমালো আমার চোখে।
-
সকালে চোখ খুলতেই দেখি আমার সামনে চেয়ারে বসে আছে মায়া!! ভাবলাম স্বপ্ন দেখছি,তাই আবারো চোখ বন্ধ করলাম। কিন্তু না,আবারো চোখ খোলার আগেই মায়া ঝাঁপিয়ে পরেছে আমার বুকের উপরে। আমার চোখে মুখে কপালে চুমু খাচ্ছে পাগলীর মত। আমি ও ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।
-
মায়া পাগলীর মত বলতে লাগলো - ভাগ্যিস বাবা এখানেই রোড মেইন্টেনেস এর কাজে বদলি হয়েছেন। না হয় হয়ত তোমাকে খুঁজতে খুঁজতেই আমি বুড়ি হয়ে যেতাম। লাভ ইউ পাগল আমার। আমি মায়ার নীল চোখর মধ্যে যে ভালবাসা আবেগ আর পাগলামো দেখছি,তা আমার পাগলামীর চাইতে ও হাজার গুন বেশি।
-
বিঃদ্রঃ দ্যা ঢ্যালটন হাইয়েতে প্রায় ৪ শ কিলোমিটার দূরে এবাল্যাঞ্চ ঠেকাতে কাজ করে একদল রোড মেইন্টেনেস কর্মি। এরাই এই রোডকে এবাল্যাঞ্চের হাত থেকে রক্ষা করে রোড খোলা রাখে। কখনো এরা আগেই বম্বিংয়ের মাধ্যমে এবাল্যাঞ্চ ঘটিয়ে দুই ঘন্টার মধ্যেই রোড থেকে বরফ সরায়।
-
একটুকরো ভালবাসার সাহায্য কখনো হয়ত অদৃশ্য কেউ ও করে থাকেন।

02/06/2017

#গল্প_শাড়ী

-এই নিয়ে এক শার্ট পরে কয়দিন আসছো আমার সাথে দেখা করতে?কারণ কি?
-আমার অন্য কোন শার্ট নেই আর।
- ফাজলামি করো আমার সাথে? তুমি যে সুন্দর সুন্দর টি শার্ট পরে পিক দাও ফেসবুকে; তোমার বান্ধবীরা লাইকে দেয় সেগুলো আসে কোথা থেকে?
-আমার রুমমেটের।
-অসহ্য। আধঘণ্টা ধরে বসে আছি। দেরি করে আসলা কেন?

-ত্রিশ টাকা রিকশা ভাড়া বাচিয়ে হেটে আসলাম।
-কেন?
-ত্রিশ টাকা দিয়ে রাতের মিল খাবো।
-দুপুরে খাবা কি?
-তুমি খাওয়াবা।
-উফ! গত সাত দিন ধরে ফোন দাও না আমাকে। একটা খোঁজ নাও না। কারন কি?
-মোবাইলে ব্যালেন্স নেই।
-তা পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াও কেন?
-তুমি ব্যালেন্স পাঠিয়ে দিবে তাই।
-সবই যখন আমি করব তুমি করবা কি?
-তোমার একটা গতি করব।
-ফাজিল একটা। আমার গতি করতে হবে না।
-আচ্ছা।
-কি আচ্ছা? কি আচ্ছা? সব সময় ফাজলামো করো কেন? হু?
-এমনি।
-তোমাকে বলছিলাম না যে একটা সিভি রেডি করতে?
-কিসের?
-বিয়ের জন্য যে পাঠাতে হয় সেটা। আমার জন্য কতগুলো জমা পড়ছে জানো? তুমি পাঠালে সেখান থেকে শুধু তোমারটা সিলেক্ট করব, ঝামেলা শেষ।
-আমার সময় নেই এত। ওসব করতে পারব না।
-কেন? কি কর তুমি সারাদিন?
-কছিম মামার সাথে লুডু খেলি।
-কছিম মামা কে?
-আমাদের বাসার সামনে যে রিকশার গ্যারেজ, ওটা দেখাশোনা করেন।
-মাফ চাই বাপ! সিরিয়াস হও একটু।
-আচ্ছা! সিরিয়াস এবার। বলো।
-সারাদিন অনলানে কি করো তুমি? আমাকে তো একবারও নক দাও না। কার সাথে কি করছ ইদানীং?
-অই তো নাবিলাকে পটাই।
-নাবিলা কে?
-আমাদের বাড়িওয়ালার মেয়ে।
-কেন পটাও?
-ওয়াইফাইয়ের পাসওয়ার্ডের জন্য।
-অই! তুমি মানুষ হবা না?
-আমি কি এখন তবে?
-জানি না। আমার বিয়ের কথা হচ্ছে তুমি জানো?
-ভাল তো। কতদিন দাওয়াত খাই না।
-মানে কি?
-তোমার বিয়ের দাওয়াত খাব।
-তুমি কি এভোয়েড করতে চাচ্ছ আমাকে?
-হু।
-কারণ কি?
-নাবিলা রাজি হয়েছে।
-তুমি কি বলছ এসব?
-সত্যি বলছি।
-আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। তুমি কি বলছ? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।
-নাবিলার সাথে দুদিন হলো আমার রিলেশন।
-কি!
-হু।
রেস্টুরেন্টে একগাদা লোকের মধ্যে রূপা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না শুরু করলো। আমি ভেবেছিলাম হাতের কাছে যা থাকবে তাই ছুড়ে মারবে আমাকে। যাকগে, আমার কপাল ভালো।
কিন্তু রূপা এমনভাবে কাঁদছে!
সব লোক তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। আমি ভয়ে ভয়ে রূপার দিকে একটা প্যাকেট এগিয়ে দিয়ে বললাম খোলো এটা। ভেবেছিলাম ও ছুড়ে ফেলে দিবে।
না! লক্ষ্ণী মেয়ে ছুড়ে ফেলেনি।
-কি এটা?
- খুলেই দেখো।
-খুলব না। তুই যা আমার সামনে থেকে। বদমাশ।
-আহা! খুলেই দেখো না?
-খুলব না। দূর হ আমার সামনে থেকে।
আমি ভাবতেও পারিনি রূপা এতটা রিয়্যাক্ট করবে।সব লোক তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে, তামাশা দেখছে।
অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে পড়ে গেলাম। ধ্যাত!
-রূপা খোলো তো।
-কি?( ফিকুরে ফিকুরে কান্নারত অবস্থায়)
-প্যাকেট
রূপা খুলছে অবশেষে।
-এ তো শাড়ি!
-হু, তোমার জন্য।
-মানে কি?
-কি যেন কথা ছিল?
-কথা ছিল তোমার চাকুরীটা হলে আমাকে একটা লাল শাড়ি কিনে দিবে।
-হ্যাঁ, সেটাই তো দিলাম।
-তুমি!! ফাজিল। তুমি সব সময় আমার সাথে এমন করো কেন?
রূপার চোখেমুখে এবার আনন্দের ঝিলিক। সত্যিই এ যেন আষাঢ়ের আকাশ! এই বৃষ্টি। আবার এই রোদ!
বুঝা যায় না কিছু। আমি রূপাকে বললাম, রূপা উইল ইউ ম্যারি মি?
রূপা ভীষণ লজ্জা মেয়ে মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো।
কমদামি রেস্টুরেন্ট হলেও যারা খেতে এসেছিলো তাদের মধ্যে কে যেন হাততালি দিলো। বাদবাকিও তাল মেলালো পরক্ষণেই। সত্যিই দিন দিন আমরা কালচারড হচ্ছি।.
বিভ্রান্ত বাউণ্ডুলে।

02/06/2017

#গল্প_হলেও_সত্যি

১৯৭৪ সালের কথা ।ব্রুকলিন, নিউ ইয়র্ক । কুখ্যাত বস্তিতে বাস করে ১৩ বছরের কিশোর মাইকেল । বর্ণবৈষম্য থেকে আমেরিকা পুরোপুরি বের হতে পারেনি তখনো , চাকুরী পাওয়া দুষ্কর কালোদের জন্য । তার উপরে চার ভাইবোন, সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হয় মাইকেলের বাবাকে ।
মাইকেল নিজেও তার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত, পড়াশোনা ভালো লাগে না একদম। সময় পেলেই তাই মাইকেল টিলার উপরে গিয়ে আনমনে সূর্যাস্ত দেখে, সূর্য ডোবার সময় কেমন যেন নীরব হয়ে যায় শহরটা, ভালো লাগে তার ।
একদিন মাইকেলের বাবা তাকে একটা পুরনো টিশার্ট দিলেন । বললেন, ‘ সর্বোচ্চ কতো দাম হতে পারে এটার ?’
মাইকেল অনেক ভেবেচিন্তে উত্তর দিলো – ‘ সর্বোচ্চ এক ডলার’
মাইকেলের বাবা তার কনিষ্ঠ পুত্রকে তখন একটা কাজ দিলেন – ‘ চেষ্টা করো, কিভাবে এই টিশার্টটি দুই ডলারে বিক্রি করা যায়। আমার আর তোমার মা’র পক্ষে সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাচ্ছে খুব। অনেক সাহায্য হবে এই দুই ডলার পেলে।‘
মাইকেল বসে বসে ভাবতে লাগলো । তারপর মাইকেল পুরনো টিশার্টটিকে ধুয়ে পরিষ্কার করলো, রোদে শুকালো । বাসায় ইস্ত্রি নেই, পুরনো কাপড়ের স্তুপে চাপা দিয়ে সমান করলো টিশার্টটা । তারপর, ছয় ঘন্টা ধরে চেষ্টার পর, মাইকেল টিশার্টটা বিক্রি করতে পারলো পাতাল রেলের এক যাত্রীর কাছে , দুই ডলারে।
‘রেখে দাও‘ – সহাস্যে বললেন মাইকেলের বাবা । ‘ওটা তোমার উপার্জন ।‘
পরদিন সকালে মাইকেলের বাবা তাকে আর একটি পুরনো টিশার্ট এনে দিলেন । বললেন, ‘ এটা বিশ ডলারে বিক্রি করতে পারবে ? ‘
মাইকেল হেসে ফেললো এবার – ‘ অসম্ভব, কে কিনবে বিশ ডলারে এই শার্ট ?’
বাবা বললেন , ‘ সম্ভব, চেষ্টা করে দেখো তুমি ।‘
মাইকেল চিন্তায় বসলো কিভাবে এই ময়লা শার্টকে বিশ ডলারে বিক্রি করা যায় । আগেরবারের মতই সে শার্ট পরিষ্কার করলো, ইস্ত্রি করলো । তারপর তার মাথায় চমৎকার একটা বুদ্ধি আসলো ।
মাইকেলের এক বন্ধু চমৎকার ছবি আঁকতো । মাইকেল আগের দুই ডলার দিয়ে রং আর তুলি কিনে, সেটা দিয়ে টিশার্টে বন্ধুকে দিয়ে মিকি মাউস একেঁ ফেললো । তারপর টিশার্ট নিয়ে ব্রুকলিনের ধনী শিশুদের এক কিন্ডারগার্টেনে বিক্রির চেষ্টা ।
প্রায় সারাদিন চেষ্টার পর, এক অবস্থাসম্পন্ন শিশুর খুব পছন্দ হয়ে গেল টিশার্টটা । সে তার বাবার কাছে জিদ ধরলো সেটা কেনার জন্য । ভদ্রলোক বিশ ডলার দিয়ে শুধু কিনলেনই না, মাইকেলকে পাঁচ ডলার বখশিশও দিলেন।
‘২৫ ডলার !!’ – মাইকেলের পরিবারের পুরো সপ্তাহের উপার্জন !!
তারপরদিন সকালে মাইকেলের বাবা মাইকেলকে আর একটা পুরনো টিশার্ট এনে দিলেন । বললেন, ‘ এবার চেষ্টা করো, ২০০ ডলারে এই টিশার্ট বিক্রি করার ।‘
মাইকেল কিন্তু এবার হাসলোনা । বরং টিশার্ট নিয়ে চিন্তা করতে বসলো কিভাবে এটাকে ২০০ ডলারে বিক্রি করা যায় ।
আমেরিকায় তখন ‘চার্লিস এন্জেলস্’ মুভি জনপ্রিয়তার তুঙ্গে । মুভির বিখ্যাত অভিনেত্রি ফারাহ্ ফওলার সিনেমার প্রোমোশনের কাজে আসলেন নিউইয়র্কে । প্রেস কনফারেন্স শেষে জনস্রোত সামলে অভিনেত্রি যখন গ্রীণরুমে পৌছালেন, দেখলেন, সেখানে ১৩ বছর বয়সের একটি ফুটফুটে কালো কিশোর একটি টিশার্ট নিয়ে দাড়িয়ে ।
‘ম্যা’ম, আমি আপনার একজন অন্ধভক্ত । আপনি কি আমাকে দয়াকরে একটি অটোগ্রাফ দেবেন, আমার এই টিশার্টে ?’
হেসে ফেললেন অভিনেত্রী, এমন সুন্দর শিশুকে না করার প্রশ্নই ওঠে না ।
এর একসপ্তাহ পরে, ব্রুকলিনের নিলামঘরে দেখা গেল এক কালো কিশোরকে । সে মিস ফারাহ্ ফাওলারের নিজের হাতে অটোগ্রাফ দেয়া একটা টিশার্ট নিলাম করতে এসেছে ।
নিলামশেষে টিশার্টটি ১২৫০ ডলার দিয়ে কিনে নিলেন এক ব্যবসায়ী ।
সেদিন রাতে বাবার পাশে ঘুমাবার সময় মাইকেলের বাবা বললেন, ‘ মাইকেল, এই টিশার্ট বিক্রি থেকে তুমি কি শিখলে ?’
মাইকেল গম্ভীর হয়ে উত্তর দেয়, "Where there's a will, there's a way."
মাথা নাড়লেন মাইকেলের বাবা । ‘দেখ, ছেলে, তুমি যা বলেছ, তা সত্যি । কিন্তু আমি তোমাকে শুধু এটাই শেখাতে চেয়েছিলাম যে, সামান্য পুরনো টিশার্টও অনেক টাকায় বিক্রি হতে পারে, যদি তুমি চাও । ঈশ্বর আমাদের জন্ম দিয়েছেন এই বস্তিতে, এই অভাবের সংসারে, তার মানে এই নয়, এখানে আমাদের সারা জীবন কাটাতে হবে । নিজের চেষ্টায়, পরিশ্রমে একদিন আমরাও পারি সফল হতে । হতাশ হলে চলবেনা তোমার, মাইকেল ; বরং জীবনকে ভিন্নভাবে দেখতে শেখো।‘
এই ঘটনার বিশবছর পরে ফোর্বস ম্যাগাজিন, বিশ্বের সর্বোচ্চ উপার্জনকারী খেলোয়াড়টির একটি সাক্ষাৎকার নেয় । ভদ্রলোক বাস্কেটবলের জীবন্ত কিংবদন্তী, যার বাৎসরিক আয় ৪০ মিলিয়নের বেশি, নাইকিসহ হাজার হাজার ব্রান্ডে যার নাম। তিনি বিশ্বের প্রথম বিলিওনিয়ার খেলোয়াড় , বিশ্বের তৃতীয় সবোর্চ্চ আফ্রিকান–আমেরিকান ধনকুবের । সাক্ষাৎকারে তাকে তার সাফল্যের রহস্য জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি আবারও বলেন, "Where there's a will, there's a way."
ভদ্রলোকের নাম মাইকেল জর্ডান ।

02/06/2017

#গল্প

নিহিন যে আমার এখানে আসছে এটা জানলাম বাড়িওয়ালার কাছ থেকে।
অফিস থেকে বাসায় ফিরে সিড়ি দিয়ে দোতলায় ওঠার সময় বাড়িওয়ালার সাথে দেখা। তখনি উনি বললেন,
-বাবা,বৌমা সেই কখন আসছে!
আমি বাড়িওয়ালার কথা শুনে একটু অবাকই হলাম, নিহিনের আমার কাছে আসার কোন কথাই ছিল না, আর আসবেই যখন একটা ফোন করে আসতে পারত তাহলে আমি একটু আগেই অফিস থেকে বের হতাম।কোন কাজ ছিলনা এমনিতেই বসে ছিলাম।
প্রতিদিন গেট চাবি দিয়ে খুলতে হয়,আজ তেমন হল না কারণ ঘরের ভেতর নিহিন আছে। বাসার একটা এক্সট্রা চাবি ওর কাছে সব সময় থাকে কারণ বাড়িটা যতটা আমার ততটা ওর ও।ও প্রায় প্রায় বাসায় আসত বাট সেটা ফোন করে আসত এভাবে হুট হাট করে নয়।কোন সমস্যা হয়েছে কিনা বোঝা যাচ্ছেনা।
ওর সাথে কথা বলার আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
গেটের বাহির থেকে দুবার নিহিনের নাম ধরে ডাক দিতেই গেট খুলে গেল।নিহিন গেট খুলে দরজার এক পাশে দাড়াঁল,আমি প্রথমে ওর দিকে তাকালাম।কোমড়ে শাড়ি গুজানো মনে হয় ঘর পরিষ্কার করছিলো। আমি ঘরে ঢুকে চার পাশে একবার চোখ বুলালাম ঘর পুরো পরিষ্কার দেখেই ভাল লাগছে।মনেই হচ্ছেনা এটা আমার বাসা। ঘরের প্রতি অনেক শ্রম দিয়েছে নিহিন দেখেই বোঝা যাচ্ছে। সোফার পাশে নিহিনের ব্রিফকেস ও চোখে পরল ।ও কি পার্মানেন্টলি চলে আসল নাকি আমার কাছে?
আসলেও মন্দ হবেনা।
সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে বসতেই নিহিন বলল,
-রোজার মাসে তো অফিস দ্রুত ছূটি হয় তোমার এত দেরী কেন?
-একটু কাজ ছিল,
-ইফতার করছ?
-হ্যাঁ,তুমি?
নিহিন আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়েই বলল,
-আমি অনেক ক্ষন ধরে অপেক্ষা করছি,
-সরি,একটা ফোন করলেই পারতা,
-না,ভাবলাম জরুরী কাজে আছো হয়ত।
-উম,,হঠাৎ?
-কেন? আসা যাবেনা?
-না তা বলিনি,রোজার মাস,খাওয়া দাওয়ার প্রবলেম,
-রোজা রাখো?
-হ্যাঁ,
-সেহরীতে কি খাও?
আমি জবাব দিলাম না,সেহরীতে রুটি কলা খাই।গত দিন এটাই খাইছি।তাই এটা বলার মত কিছু না।অবশ্য বললে লাভ ও হইতে পারে,আমার কষ্ট দেখে নিহিনের মায়া জন্মাতে পারে আর ও এখানেই থাকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
-কি হল বলো?
-বাদ দাও এটা, খাওয়া দাওয়া করছ রাতে?
-নাহ,তোমার জন্য ছিলাম,
-চল,বাহিরে গিয়ে কিছু খেয়ে আসি,
-লাগবেনা,বাসা থেকে খাবার আনছি।
-আম্মা পাঠাইছে?
-আম্মা পাঠাবে কেন? আমি আনছি,
-আচ্ছা,ধন্যবাদ।
নিহিনের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে আটমাস এর মত, এই আট মাসে ও আমার সাথে থেকেছে হাতে গুনা কয়েক দিন।ওর ভার্সিটি আমার এখান থেকে একটু দূরে হয়।তাই ও ওর মায়ের বাসাতেই থাকে।অবশ্য এবছর ওর ফাইনাল ইয়ার চলছে তারপর আমার এখানেই আসবে।
নিহিন খাবার এনেছে প্রচুর।মনে হয় সেহরীর সহ। খাওয়ার সময় নিহিন বলতে লাগল ও নিজে রান্না করে এনেছে আমার জন্য। কোন কোন আইটেম আমার ভাল লাগবে সেটা বেশি করে খাওয়াতে লাগল পুরো বউ বউ ভাব চলে এসেছে নিহিনের মধ্য।
খাওয়া শেষে নিহিন কে আরো একটা ধন্যবাদ দিলাম। বহুদিন পর ভাল কিছু খাওয়া হল। শ্বশুর বাড়িও যাইনা প্রায় মাস খানেক। ইচ্ছা ছিল ঈদের পর যাব।যেহেতু নিহিন এসেই গেছে সেহেতু আর গিয়ে কি লাভ?
নিহিনের রান্নার হাত ভালই,তাই শ্বশুর বাড়ি না গেলেও চলবে।
খাওয়া দাওয়া শেষে নিহিন বলে উঠল,
-ভাবছি,রোজায় তোমার এখানেই থাকব,
-তোমার পড়াশুনা,,
-সারাজীবন তো পড়লাম।
-হুম,
-তোমার খাওয়া দাওয়ার হয়ত খুব কষ্ট হয়,
-তা একটু,
-বাড়িওয়ালারা রোজা রাখেনা?
-না,রাখতে পারেনা,
-ওহ,তুমি কি বিরক্ত হচ্ছ আমি এসেছি তাই,
-আজব কি বলো,বিরক্ত হব কেন? আমি তো সব সময় চাইতাম তুমি এখানে আসো।
-কখনো বলোনি তো?
-এইতো আজ বললাম,
নিহিন আমার কথা শুনে অদ্ভুত ভাবে তাকাল। হয়ত ও আমার কথা বিশ্বাস করতে পারছেনা। আসলে এ বিষয় টা নিয়ে আমাদের দুজনের কখনো কথা হয়না। নিহিন কে আমি যথেষ্ট স্বাধীনতা দিয়ে রেখেছি। আমি চাইনা কখনো আমার প্রতি ও বিরক্ত হোক।আর কোন এক কারণে আমরা হয়ত উদাসীন,এ ব্যাপার টা চোখে পরার মত। তবুও আমি নিহিনের বিষয় সব সময় গুরুত্ত্ব দিয়ে দেখি।
নিহিন আবার বলল,
-দেখো,সত্যি করে বলো,ব্যাপার কি?
-কিসের ব্যাপার?
-ইদানিং তুমি অনেক চেঞ্জ?
-যেমন?
-আগে রোজ রোজ ফোন করতা, এখন দুই দিনে এক আতবার,
-আরে তেমন কিছুনা,ব্যাস্ত,,
আমার কথা শুনে আবার নিহিন কেমন করে যেন তাকাল।চেঞ্জের ব্যাপারে আমি এক মত না।আমি ওকে প্রতিদিনই একবার করে ফোন দেই তবুও নিহিন কেন এই অভিযোগ আনলো কিছুতেই বুঝলাম না।নিহিন কি বলতে চায় সেটাও বুঝতে পারছিনা।ফোনেও যে ও খুব কথা বলত তা না।খোঁজ খবর নেওয়ার মত কথা হত আরকি এর বেশি না।
কিছুক্ষন বাদে নিহিন আবার বলল,
-কারো কি প্রেমে পরছ তুমি?
নিহিনের কথা শুনে আমি হেসে ফেললাম। নিহিনের হঠাৎ কি হল বোঝা যাচ্ছেন।এমন প্রশ্ন করার মানে কি?
আমি হাসি থামিয়ে উত্তর দিলাম,
-রোজার মাস, কি বলো এসব?
-সত্যি বলতেছি !
-আচ্ছা, এখন থেকে রোজ ফোন দিব,
-না লাগবেনা।আমি এখন থেকে এখানেই থাকব,,
-তোমার পড়ালেখা?
-এখান থেকেই পড়ব,আর পরীক্ষা দিব।
-আচ্ছা,যেমন তুমি চাও।
-তুমি চাইলে চলে যাব?
-আজব আমি কেন চাইব? আমি চাই তুমি থাকো,
-সত্যি তো?
-হ্যাঁ,সত্যি তো,
আমি একটু অবাক হলেও মনে মনে ঠিকই খুশি হলাম ।তবে বুঝলাম না নিহিনের এত সন্দেহ কোথায় থেকে এল?
তবে যা হয়েছে ভালই তো,খারাপ কোথায়? সবাই তো চায় নিজের গল্পের হ্যাপি এন্ডিং হোক সেটা যেভাবেই হোক না কেন?
আমি ও চাই।
সেটা যখন এত সহজেই হচ্ছে তবে তা মেনে নেওয়াই উত্তম।
-নাহিদ পারভেজ নয়ন

Address

Gulshan/1
Dhaka
1212

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when YouthTale posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category