Valobashar Golpo Story Of Love ভালবাসার প্রেম কাহিনি

  • Home
  • Bangladesh
  • Dhaka
  • Valobashar Golpo Story Of Love ভালবাসার প্রেম কাহিনি

Valobashar Golpo Story Of Love ভালবাসার প্রেম কাহিনি বন্ধুরা আপনাদের জন্যে
এখানে পাবেন মনের মত গল্প।

08/09/2023

এই প্লিজ বলো লক্ষ্মীটি বল নাগো
উমহুম সে কথা বলা যায় না
বলা যায় আমাকে বলাযায় বলো?
নগো সে ভীষণ গোপন
যতই ভীষণ হোক যতই গোপন হোক আমাকে নিশ্চই বলা যায় বলোনা গো!
আচ্ছা বলছি কাউকে বলতে পারবেনা কিন্তু
না না কাউকে বলবো না
কাউকে বলবেনা তো! ঠিক ?
না বলবো না!
সত্যি বলছো ?
তিন সত্যি বলছি কাউকে বলব না সত্যি সত্যি সত্যি
কথা দিচ্ছ ?
হুম কথা দিচ্ছি প্রমিস
গা ছুয়ে বলো
এই গা ছুয়ে বলছি……
এই জাও অসভ্য কোথাকার, অমনি করে গা ছুঁতে তোমাকে কে বলেছে?
বারে তুমি তো বললে!
আমি কি তাই বলেছি
তুমি বলনি! গা মানে কি নোখ চুল যা নাপিতে কাটে?
জাও তোমাকে নিয়ে আমি আর পারিনা বড্ড অসভ্য যা মুখে আসে তাই বলো।
মোটেই তা বলিনা না, যা মুখে আসে সেটা চেপে গিয়ে অন্য যত বাজে কথা বলি। যা মুখে আসছে সেটা বলবো ? বলি!
না মশাই না সে আর বলে কাজ নেই। এবার শোনো
কথা টা হচ্ছে সোনা
সোনা নয়, বলছি শোন
শোনো বলে কোনো কথা নেই, কথাটা হচ্ছে সোনা, বলতো দেখি, সোনা
আচ্ছা বাবা আচ্ছা সোনা সোনা হোলোত
আবার বলো
সোনা
আবার
সোনা সোনা সোনা
কি সোনা কি বলছ সোনা সোনা সোনা আমার সোনামনিটা
আর একবার গা ছুয়ে প্রমিশ করছি যতবার বলবে ততবার ভালোবাসবো….
আহ্ ছারো যাই গিয়ে তোমার চা টা করে নিয়ে আসি। কেবল দুষ্ট বুদ্ধি তোমার কেবল জ্বালাতন।
চা থাকুক এই যেওনা প্লিজ শোনো
জলিয়না তো তোমার কি আর কোনো কাজ কর্ম নেই?
শোনো শোনো যেওনা একটা কথা ছিল যে আবার খুব জরুরি কথা।

সেই দম্পতি যখন পুরষের বয়স ৩৫ এবং মেয়েটির বয়স ৩০
বলেছি তো বলবনা
প্লিজ
আহ্ কেনো মিছিমিছি বিরক্ত করছো
লক্ষ্মীটি বলো প্লিজ
না বলবনা অফিসের কথা তোমাকে বলা সেফ নয়।
আরে বলোনা এই তোমার গা ছুয়ে প্রতিজ্ঞা করছি কাউকে বলব না প্রমিজ।
উফঃ এসব গা ফা ছুয়ে প্রতিজ্ঞা তোটিজ্ঞা ছারত ওসব। আমার একদম এসব ভাল্লাগেনা। যতসব গ্রাম্যতা গা ছুয়ে আবার কি! বিশ্রী।
আচ্ছা আর বলবো না কিন্তু সোনা কথাটা বলছনা কেনো?
ওহঃ অমন সোনা সোনা করোনাতো কথায় কথায় লোকজন শুনতে পাবে।
তবে কি বলবো?
কেনো আমার কি কোনো পৃতৃদত্ত নাম নেই!
প্লিজ অত রাগারাগি করোনা। তোমার কি হয়েছে বলোতো?
রাগারাগি কোথায় করলাম একটাও অপ্রিয় কথা বলবার জো নেই। অমনি ধুও তুলবে রাগারাগি করছো! থুর ছাই……..
কেনো শুধু শুধু আমাকে দূর ছাই করছো বলোতো?
আমি জানি তুমি আজকাল আমাকে একদম সইতে পারনা।
এই অমনি শুরু হয়েগেলো নাকে কান্না। দেখো কথাবার্তা গুলো এবার পরিবর্তন করে ফেলতে পারলে হয়না। বয়সতো যথেষ্ঠ হলো।
কথা আবার কি ভাবে বলবো!
নেকামি টা বাদ দিলেই হয়। যেমন আমার কথাবার্তা।
অনেক তুমি নেকা বললে আমি নেকা।
ওহঃ প্লিজ জালিয়না তো। এখন থেকে জাও তোমার কি কোনো কাজ কর্মোনেই? জাও গিয়ে নিজের কাজ করো।

এখন দম্পতির বয়স একটু বেরেছে মহিলার বয়স চল্লিশ এবং পুরুষের বয়স পইতাল্লিস।
এই শোনো শুনছো!
বলো শুনছি
একটা কথা ছিলো
বলে জাও শুনছি
ওরকম করে হবেনা একটু অঘোরে চলো
এখন উঠতে পারবো না
একটু উঠতে হবে যে
এখন ওঠা হবে না
কখন ওঠা হবে তাহলে
কাজটা শেষ হলে অপেক্ষা করো
তোমার কাজ যদি রাত্রিতেও যদি শেষ না হয়?
তবে রাত্তিরেও শোনা হবে না।
কথাটা তবে বলবনা তো বলবোনা?
বলবেনা কেন পরে বলেদিয়
পরে বললে আর কথাটা কাজে আসবেনা
ঠিক এই মুহুর্তেই বলা চায় তোমার আমার হিসাব কষার মধ্যেই?
এক্ষুনি না বললে আর বলে লাভ নেই, তার জন্য ওঘরে একবার যাওয়া দরকার।
দেখো তুমি বারবার কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করোনা একটু অ্যাডজাস্ট করার চেষ্টা কর।
সেটা তুমিও তো তুমিও একটু চেষ্টা করতে পারো
আমি সেটা সর্বদায় করছি
বাহঃ তুমি সর্বদায় অ্যাডজাস্ট করে চলো
হ্যাঁ সর্বদায় অলওয়েস
এটা সত্যি কথা বললে তুমি?
তার মানে আমি মিথ্যাবাদী
আহ্ তা বলবো কেনো তা নয় বলছি……
কথা ঘুরিও না তুমি এইতো বললে
মোটেই বলিনি
হ্যাঁ তুমি বলেছো
আমি কি তাই বলেছি? কি আশ্চর্য! বেশ করেছি বলেছি, আবার বলবো।
তোমার কি আর কোনো কাজ কর্মো নেই, জাও গিয়ে নিজের কাজ করো।

এখন সেই দম্পতির পৌড় বয়স স্বামীর পঞ্চান্ন স্ত্রীর পঞ্চাশ।
এই শোনো শুনছো? কিহলো একটু শোনো শুনছো এই যে শুনছো আরে উত্তর দিচ্ছনা কেনো?
কি ? কি হোয়েছে কি ? দেখছনা কাজ করছি।
ওহঃ ডিস্টার্ব করছি নাকি? শুনছো?
আবার কি হলো?
একটা দরকার ছিল
রুমাল ডান দিকের দেয়ালে
আহ্ রুমাল নয়
আন্ডার ওয়্যার বা দিকের দেয়ালে
ওহঃ আন্ডার ওয়্যার দিয়ে কি হবে
তবে কি চায়?
অপেক্ষা করো আমার পুজো আগে শেষ হোক
সে পুজো শেষ হতে তো দু ঘন্টা লাগবে। শুনছো শুনছো খুব জরুরি প্লিজ একটু উঠে এসো।
পুজোটা শেষ হোক আসছি।
পুজোটা অত জরুরি নয় আমি যেটা বলতে চাই সেটা খুব জরুরি আসো।
পুজো আমার কাছে জরুরি কাজ
আমার কাছে জরুরি নয়, তোমাকে শুনতেই হবে। উঠে এসো এখনি।
পূজার আসন ছেড়ে ওঠা সম্ভব নয়।
ওফঃ কি জেদ
তাহলে শুনবেনা কথাটা
আমি কি তাই বলেছি। আসন ছেড়ে এখন ওঠা যাবেনা। এখন আর জলিওনা এখান থেকে যাও। তোমার কি আর কোনো কাজকর্ম নেই।

দম্পতি এখন বার্ধক্যে পৌঁছেছেন। কর্তার বয়স পৈষট্টি আর গিন্নির ষাট।

ওগো শুনছো?
বলো শুনছি…
একটা কথা ছিল
বলে জাও শুনছি
আহ্ ওরম করে হয়না একটু এঘরে এসো
এখন কি করে যায় হতে জোড়া যে
হাত কখন খালি হবে?
এই হলো বলে আসছি
আর হয়েছে তখন থেকেই শুনছি আসছি আসছি, আসবে কখন।
ওহঃ বুরু হয়ে কিযে লক্ষ্মীছাড়া স্বভাব হয়েছে বোলছিতো আসছি একটু অপেক্ষা করা যাচ্ছেনা।
বলছিলে কিন্তু আসছিলেন তো।
কি বলবে বলো
এসেছো?
হ্যাঁ এইতো
বসো এখানে একটু বসো
বসলাম
হাত টা দাও
হাত! হতে লঙ্কা বাটা
তাহলে ঐ হাতটা দাও
ও হাতেও লঙ্কা
তুমি কি ইচ্ছে করে লঙ্কা বাটা মেখে এলে?
ইচ্ছে করে কেউকি হতে লঙ্কা বাটা মাখে?
কি জানি তুমি হয়তো তাও পারো
যত বিদঘুটে কথা তোমার কেনো ডেকেছিল তাই বলো, তাড়াতাড়ি বলো হাত জ্বালা করছে।
কি বললে হাড় জ্বালা করছে, আমি ডাকলে তোমার হাড় জ্বালা করে?
আহ্ হাড় জ্বালা কে বললে। জ্বালাতন বলি কানটাও কি গেছে? চোখটা তো অনেক দিন গেছে। বলছি হাত হাত জ্বলছে, লঙ্কার বুঝেছ!
ও হার নয় হাত লঙ্কা বাটায় হাত জ্বালা করছে! ও তাই বলো আমি ভেবেছি বুঝি……
আর ভেবে কাজ নেই
বলো কেনো ডেকেছিলে
কই দেখি হাত টা দেখি কোথায় তোমার জ্বালা করছে। কি জ্বালা বুড়ো বয়সে একি বেহায়াপনা শুরু করেছ? ন্যাকামো করোনা
হ্যাগো আমরা কোন বছরে কাশ্মীরে গিয়েছিলাম?
বিয়ের পরের বছরে ২৯ সালে।
অতদিন আগে?
এই তোমার জরুরি কথা!
না ঠিক এটা নয় আমি ভাবছিলাম
আর অত ভেবে কাজ নেই আমি যায় গিয়ে তোমার ঘোলের সরবতটা করে আনি।
সরবত থাকুক বসো। দেখো কেমন মেঘ করেছে। কেমন পাহাড় পাহাড় মনে হচ্ছেনা!
নেই কাজ তো খৈই ভাজ। অফিস কাছারি সব ভুলে গিয়ে এখন শুধু আলতু ফালতু ভাবনা। কোনো তো কাজকর্ম নেই। আমি চললাম।
ওকি চলে যাচ্ছ যেওনা বসো। শুনে জাও প্লিজ শোনো……. কথা ছিলো খুব জরুরি কথা……

01/09/2023

আমাকে ডেকোনা আজ আমি আছি সেচ্ছা নির্বাসনে। শরৎ এসেছে জানি শিউলি ফুটেছে। তবু আজ আমাকে ডেকোনা। বন্ধ করেছি যত সদর দরজা। ছিন্ন করেছি সব মায়ার বন্ধন। বুকের পাঁজরে জ্বেলে ক্ষয়ীস্নু প্রদীপ একা একা বসে আছি নীল অন্ধকারে। সভ্যতার চক্রবূহে পৃষ্ট হয়ে হয়ে বহুকাল ভুলে আছি আত্মপরিচয়। অনুভব অনুভূতি পরোয়া করিনি। দিনরাত ছুটে গেছি ভুল ইশারায়।

হিসাব হিসাব শুধু হিসেবের খেলা। বড়ো জ্বালা আত্মোবিশ্বরণে আবার নতুন করে চিনে নিতে হবে পৃথিবীর ধারাপাত বর্ণপরিচয়। নতুন বন্ধুত্ব হবে ঋতুদের সাথে একটু একটু করে মুছে যাবে গ্লানি। মিথ্যা অহংবোধহীন পাগলামি। এই শরতের শুধুই আহুতি এ শরতে আত্মসমীক্ষ্মণ। দেখা আগামী শরতে কোনো এক শিউলি তলায়। চিনে নিতে ভুলোনা আমায় তখন।

কেউ কি এখন এই অবেলায় আমার দিকে বাড়িয়ে দেবে হাত। আমার স্মৃতির ঝোপ ঝাড়ে হরিণ কাঁদে অন্ধকারে। এখন আমার বুকের ভিতর শুকনো পাতা বিশের মতো রাত। দ্বিধান্বিত দাঁড়িয়ে আছি একটি সাঁকোর কাছাকাছি। চোখ ফেরাতেই দেখি সাঁকো ভাঙলো অকস্মাৎ।

গৃহ প্রবেশ করবো সুখে চৌকাঠে যায় কপাল ঠুকে। বাইরে থাকি নত ঠুকে। নেকরে গুলো দেখায় তীক্ষ্ম দাঁত। অপরাহ্নে ভালোবাসা চোক্ষে নিয়ে গহীন ভাষা। গান শোনাবো সর্বনাশা। এই কি তবে মোহন অপঘাত। কেউ কি এখন এই অবেলায়, আমার প্রতি বাড়িয়ে দেবে হাত।

তোমাকে পাবার জন্য কি করিনি আমি কি করিনি ?
নিজেকে ভুলেছি বুলেছি আমার একান্ত ভুবন। সময়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ছুটেছি সময়ের আগে, হার মানিনি। নিজের ক্ষমতা জেনে নিয়েও মেনে নিই নি ক্ষমতার দাপট। লাল বললে লাল কিংবা অন্য যেকনো রঙ, যখন যা বুঝিয়েছ তাই বুঝেছি তাই দেখেছি।

আমার প্রিয় রঙ গুলো ভুলেছি সেই কবে। কখনও মনেই করতে পারিনি। তোমাকে পাবার জন্য কি করিনি আমি কি করিনি? আমার এক গুয়েমিতে তোমার যত মন্দ লাগা ছিলো। তাই ছুরেছি সব ত্যাগ করেছি কিছু না ভেবেই। নিজের ব্যাক্তিগত ভাষা বিসর্জন দিয়েছিলাম তোমার জন্য। জানতেও পারনি।

গরম চায়ের পেয়ালাতে চুমুক দিতে তুমিই শিখিয়েছিলে। সব ফুরিয়েছি আমি সব। ছুয়ে দেখনি ফিরেও চাওনি। অবজ্ঞা ছিলো কিনা ভাবতেও চাইনি ভাবিনি। তোমাকে পাবার জন্য কি করিনি আমি। কি করিনি ?

আমার প্রতিদিনের বেঁচে থাকায় কেবল তুমি ছিলে। আজও আছো এই হৃদয়ের মাঝে, থেকেই যাবে যুগ যুগান্তর ধরে। আফসোস শুধু এই কথা তুমি কোনও দিন জানতে পারবে না।

রোজকার অফিস পাড়ায় আড্ডায় মত্ত যখন সবাই তখন আমি আলাদা হয়ে তোমায় ভেবেছি। সকলকে নিয়ে ভালো থাকার আনন্দ আমি পায়ে পিষে মেরেছি তোমার জন্য। সুখকে সরিয়ে রেখে তবে কার জন্য আমি একা পথ হেঁটেছি বলতে পারো। সকাল সন্ধ্যে আমি এক করেছি। অযথাই ঝগড়া জুড়ে দিয়েছি বলিনি তোমায়। জানোনি তোমায় পাবার জন্য কি করিনি আমি?!

ভিড়ের মাঝে একা থেকে থেকে এখন আমি একাই চলতে শিখেছি। আমার যা বলবার ছিলো নিজের মনেই বলেছি। ভেবেছিলাম জেনে নেবে হয়ত। একাকীত্ব অমাই গ্রাস করতে গিয়ে আজ বড়ো একা হয়ে পড়েছে। এখন কেবল নিজেকেই নিয়ে হাসি। আর ভাসি তোমায় নিয়ে। যতটা ইচ্ছে জাগে অভিমানে গা ভাসাই।

অভিমানে ঘ্রেন্না ধরেছে আমার। বলিনি তোমায়, বলিনি তোমায় ভালোবাসি। তুমি তো কখনও চাওনি
তোমায় পাবার জন্য কি করিনি আমি?

জানো আমার একটা গল্পে একটা অতিথি আছে। অতিথি লোক মনে! আহ্ শোনো না গল্পটা। সেই অতিথি টা বাসস্টপে দাড়িয়ে থাকে। আর বাস এলেই দৌড়ে গিয়ে নম্বরটা দেখে। মন খারাপের মুখ কোরে মাথা নেরে বলে। নাহ এই বসটা না!

সকাল বিকাল শীত গ্রীষ্ম একই কথা। সব বাসকে একই কথা। অতিথি টা শুধু বাসস্টপে দাড়িয়ে থাকে। জানো আমার এই গল্পে একটা বাসও আছে। সেটাই কতো লোক ওঠে নামে। যা ইচ্ছে করে হয়তো অন্য রুটের বাস।

অন্য কোনো একটা গল্পে ঠিক দেখা করিয়ে দেবো। বাস আর অতিথিটার। সেই বসে আর কেউ উঠবেনা। অতিথিটাও আর দাড়িয়ে থাকবেনা।

ছেলেটি খোরেনি মাটিতে মধুর জল। মেয়েটি কখনও পরেনি নাকচাবি। ছেলেটি তবুও গায়নি জীবনের গান। মেয়েটিকে দেখি একাকী আত্মহারা। ছেলেটির চোখে দূর্বিক্ষের দাহ। মেয়েটির মুখে কতো মায়া মৌনতা। কতো যুগ যায় কতো শতাব্দী যায় কতো যুগ ধরে কতনা সে বলিদান।

ছেলেটি খোরেনি মাটিতে মধুর জল। মেয়েটি দেখেনি কখনও বকুল ফুল। ছেলেটি তবুও প্রকৃতি প্রতিনিধি মেয়েটি আবেগে উষ্ণ বুকুল তলা।

ছেলেটি যখন যেতে চায় দক্ষিণে মেয়েটি তখন ঝর্নার গান গায়। মেয়েটির মুখে সূর্যাস্তের মায়া ছেলেটি দিনের ধাবমান রোদ্দুর। কতো কাল ধরে কতনা গোধূলি তলে ছেলেটি মেয়েটি একে অপরের দিকে চাই। কতো বিচ্ছেদ কতনা সে বলিদান। কতো যে অকাল সুভোকাল এর দিকে ধায়। ছেলেটির গায়ে বেঁধে কতো বল্লম। মেয়েটির মনে কতো মেঘ উরে যায়।

ছেলেটি যদিও আঘাতে আহত তবু। মেয়েটি আবার মেয়ে হয়ে হেসে উঠে। কতো বিদ্রোহ কতোনা সে বলিদান। পার হয় ওরা কতোনা মহামারি। ছেলেটির বুকে মেয়েটির বরা ভয়। মেয়েটির চোখে ছেলেটির ভালোবাসা। একজন ফেরৎ দানে আনে ফুল। একজন মাথে ফলায় পরিশ্রম। কতনা রাত্রি কতনা দিনের ডেরা কতোনা অশ্রু কতোনা আলিঙ্গন। ছেলেটি আবার খোড়ে মাটি খোড়ে জল। মেয়েটি আবার নাকে পরে নকচাবি। মেয়েটিকে দেখি একাকী আত্মহারা।

এ কেমন ভ্রান্তি আমার? এলে মনে হয় দূরে সরে আছো বহু দূরে। দূরত্বের পরিধি ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে আকাশ। এলে মনে হয় অন্য রকম জল হওয়া। প্রকৃতি অন্য ভূগোল বিষুব রেখারা সব অন্য অর্থবহ।

তুমি এলে মনে হয় আকাশে জলের ঘ্রাণ। হাত রাখলেই মনে স্পর্শহীন করতল রেখেছ চুলে। স্নেহ পলাতক দারুন রুক্ষ আঙুল। তাকালেই মনে হয় বিপরীত চোখে চেয়ে আছ। সমর্পণ ফিরে যাচ্ছে নগ্ন পায়ে একাকি বিষাদ ক্লান্ত। করুন ছায়ার মতো ছায়া থেকে প্রতিচ্ছায়ায়।

এলে মনে হয় তুমি কোনদিন আসতে পারনি। কুশল সুধালে মনে হয় তুমি আসোনি। পাশে বসলেও মনে হয় তুমি আসোনি। করাঘাত শুনে মনে হয় তুমি এসেছো। দুয়ার খুললেই মনে হয় তুমি আসোনি। আসবে বললে মনে হয় অগ্রিম বিপদ বার্তা। আবহাওয়া সংকেত নিম্নচাপ উত্তর পশ্চিম। এলে মনে হয় তুমি কোনদিন আসতে পারনি। চলে গেলে মনে হয় তুমি এসেছিলে! চলে গেলে মনে হয় তুমি যেনো সমস্ত ভুবনে আছো।

ভালোবাসা তুমি ভালো থেকো। চির সুখে থেকো তোমার মনের ঘরে বাসা বাধুক সুখের পাখি। আমি তো একাই ছিলাম না হয় এখনও একাই থাকি।

একটা জীবন ভাঙতে ভাঙতে অন্য জীবন গড়তে থাকি। এক জীবনের শূন্যতাকে অন্য জীবন ভাবিয়ে তোলে। একটা জীবন জবুথবু অন্য জীবন হওয়ায় দোলে। একটা জীবন যেমন তেমন আর এক জীবন সাজিয়ে রাখি।

ফুলের শরীর ছিড়তে ছিড়তে ফুলের যমজ। ফুলের কঠিন বন্দী শালায় রোদ পড়েছে, পড়ছে ছায়া। ওই যে রোদ ওই যে ছায়ায় দুইটি ফিরিং উরছে মায়ায়। একটি ফরিং ফুলের ক্লান্তি অন্য ফরিং ফুলেরি সোখ। নদীর জলে হাত রেখেছি নদী আমায় ক্ষমা করে। নারীর দেহে হাত রেখেছি নারী আমায় ক্ষমা করে। জলের স্পর্শে নারীর স্পর্শে দুই জীবন পূর্ণ্যে ভরা। একটি জীবন নিদ্রা হারা অন্য জীবন ঘুমের ঘোরে।

একটা জীবন এলোমেলো অন্য জীবন গুছিয়ে রাখি। ওই যে জীবন বহির্মুখী এই জীবিনই ঘরের টান। ফুলের শান্ত বন্দিশালায় সারাজীবন ভ্রাম্যমাণ। একটা জীবন ভাঙতে ভাঙতে আর এক জীবন গড়ছি নাকি।

✳️✳️✳️✳️ ভালবাসার গল্প ✳️✳️✳️✳️💕💕💕Made for each other 💕💕💕সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছি আমি।আকাশ জুড়ে...
04/01/2021

✳️✳️✳️✳️ ভালবাসার গল্প ✳️✳️✳️✳️
💕💕💕Made for each other 💕💕💕
সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছি আমি।আকাশ জুড়ে শ্রাবণের কালো মেঘ ছেয়ে আছে।আমার সামনের দিকে চুল গুলা বেশ বড়।একটু পর পর দমকা বাতাসে আমার সামনের চুল গুলা উড়ছে।মনে হচ্ছে খুব জোড় বৃষ্টি হবে।আবার ঝড়ের আভাস বেশ ভালো মতোই টের পাচ্ছি আমি।কিছু একটা ভাবতে ইচ্ছা করছে আমার। কিন্তু মাথা একদম ফাকা ফাকা মনে হচ্ছে।

এরই মধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো।তবুও অন্যমনস্ক হয়ে

চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি আমি।আকাশে মেঘের গর্জন ক্রমেই বেড়ে চলেছে।মূহুর্তের মধ্যেই আমার সমস্ত শরীর ভিজিয়ে দিলো শ্রাবণের প্রথম বৃষ্টি।

চোখ বন্ধ করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম আমি।আমার কাঁধে হাত দিতেই আমি খানিকটা চমকে উঠে নিজেকে সামলে নিলাম।চোখ মেলে দেখি আমার সামনে পুষ্পিতা দাঁড়িয়ে।বেশ কয়েকটা প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম পুষ্পিতার দিকে।

পুস্পিতা আমার কোন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে ছাদের রেলিংটা ধরে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো।

বৃষ্টির গতি খানিকটা কমে গেলে আমি বাসার ভিতরে চলে গেলাম।আমার পিছুপিছু পুষ্পিতাও ছাদ থেকে নেমে আসলো।

ড্রয়িংরুমে পুস্পিতার লাগেজটা দেখে আমি বেশ অবাক হলাম।মাস পাঁচেক হলো আমার বাবা মারা গেছেন।উনার ব্যবসা এখন আমার বড় ভাই দেখে। ভাইয়া বিবাহিত।ভাইয়া ফ্যামিলি নিয়ে নিচ তলায় থাকে।আর আমি দোতলাতে একাই থাকি।বাবা মারা যাওয়ার কিছুদিন পর আমি বাসায় এসে উঠেছি।এই বাসার ছেলে হলেও আমার কারোর সাথে ভালো সম্পর্ক ছিলোনা।মা মারা যাওয়ার পরে একেবারেই বাসায় আসা বন্ধ করে দিয়েছিলাম।মা বেঁচে থাকাকালীনও আমি বাসায় খুব একটা আসতাম না।বড় ছেলেকে সামলাতে সামলাতে কখন যে ছোট ছেলে অনেকটা পিছিয়ে গেছে সেটা তারা খেয়ালই করেনি।আর যখন খেয়াল করেছে তখন পারিবারিক বন্ধন থেকে একেবারেই ছিটকে পরেছিলাম।পরে যখন বাবা মারা গেলো তখন ভাইয়া নিজে গিয়ে আমাকে নিজের বাসার দায়িত্ব নিতে বলে।আর ব্যবসায় থেকে যা প্রফিট আসে মাস শেষে সেইটার অর্ধেক আমার এক্যাউণ্টে জমা করে দেয়।অনার্স কম্পলিট করেছি মাস দুয়েক হলো।

বুয়া এসে রান্না আর কাপড় গুলা কেঁচে দিয়ে যায়।বই পড়া, মাঝে মাঝে কোথাও ঘুরতে যাওয়া,পরিচিত কারোর সাথে দেখা হলে ধোয়া ওঠা গরম চায়ের সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা সব মিলিয়ে এভাবেই উদ্দেশ্যহীন ভাবে চলছিলো আমার দৈনন্দিন জীবন…

২...........
বাথরুম থেকে চেঞ্জ করে ঘাড়ে টাওয়েলটা নিয়ে আমি বের হলাম।

ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে লাগেজটার দিকে তাকিয়ে মনের মধ্যে জমা হওয়া রহস্য ভেদ করার বৃথা চেষ্টা চালাচ্ছি।

পুষ্পিতা এইখানে? কিন্তু কেন??

আমি যখন আব্দুল চাচার মেসে থাকতাম মেসের সামনের বাসাটাতে পুষ্পিতার মামার বাসা ছিলো।পুস্পিতার বাবা নেই।বছর দুয়েক হলো মামার বাসায় এসে উঠেছে।বাবার পেনশন দিয়ে কোনরকমে দিন পার হয়ে গেলেও মামা নিজে থেকেই মা আর মেয়ের দায়িত্ব নেয়।

আব্দুল চাচার মেসে উঠেছি আজ চারদিন হলো।একদিন সকালে কালাম চাচার দোকানে গিয়ে বসেছিলাম।কালাম চাচার মুদির দোকান কিন্তু দুধ চা টা যা বানাই পুরাই অস্থির।এই সময়টাতে তেমন কেউ ঘুম থেকেই ওঠেনা।দোকান একেবারেই ফাঁকা। মাঝে মাঝে কেউ আসছে তাদের প্রয়োজনীয় যা লাগবে নিয়েই চলে যাচ্ছে।আমি চাচাকে এক কাপ চা দিতে আর সাথে একটা বিস্কিট দিতে বললাম।নিউজপেপারটা হাতে নিয়ে একটু উল্টে পাল্টে দেখছিলাম।তখনি একটা মেয়ের কন্ঠে শুনে নিউজপেপারটা মুখের সামনে থেকে একটু নিচু করে মেয়েটার দিকে তাকালাম।মেয়েটা আমার দিকে একবার তাকালো তারপর দোকানের বেঞ্চটাতে বসতে বসতে কালাম চাচাকে বললো আমাকে এককাপ চা দিয়েন তো।ফুল কাপ দিবেন। চাচা একটু হাসলো। তারপর আমাকে আমার চা আর বিস্কিটটা দিয়ে মেয়েটার জন্য চা বানাতে লাগলো।

আমি নিউজপেপারটা আমার বাম পাশে রেখে চায়ের মধ্যে বিস্কিট ডুবিয়ে খাচ্ছিলাম।

মেয়েটা বলে উঠলো

- এই যে মি. নিউজপেপারটা পাস করুন।
-জ্বীইই..
-বললাম নিউজ পেপারটা পাস করুন।কানে শুনেন না নাকি।
আমি নিউজ পেপারটা মেয়েটার দিকে বাড়িয়ে দিলাম নিউজ পেপারটা নিয়ে উল্টেপাল্টে দেখতে লাগলো।

তারপর কালাম চাচা কে দেখলাম চায়ের কাপের মধ্যে একটা চামচ দিয়ে ওর পাশে চায়ের কাপটা রাখতে।চায়ের কাপের মধ্যে চামচ দেয়া দেখে আমার বেশ কৌতূহল হলো।আমি নিজের চা খাওয়া বাদ দিয়ে মেয়েটার চায়ের কাপের দিকে তাকিয়ে রইলাম।

মেয়েটা চামচে একটু করে চা নিয়ে ফুঁ দিচ্ছে আর খাচ্ছে।ব্যাপারটা আমার খুব ইন্টারেস্টিং লাগলো।নিজের চা খাওয়া বাদ দিয়ে আমি বেশ মজা নিয়ে ব্যাপারটা আড় চোখে দেখছিলাম।ইতিমধ্যে মেয়েটার চা খাওয়া শেষ।কালাম চাচা কে চায়ের টাকাটা দেয়া শেষ করে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো এভাবে আড় চোখে তাকিয়ে দেখাটা কিন্ত খুব অন্যায়।এইসব বদ অভ্যাস বাদ দেয়াই শ্রেয়।কথাটা শুনে আমি খুব লজ্জা পেয়েছিলাম। কথাটা বলার পরে মেয়েটা আর এক মুহূর্ত দেরি না করে চলে গেলো..

আমি মেয়েটার গমন পথের দিকে খানিকক্ষণ চেয়ে থেকে চায়ের বিলটা দিয়ে মেসে ফিরে গেলাম…

৩...........
ভার্সিটিতে ক্লাস শেষ করে আমি আর রাফি একটা রেস্টুরেন্টে বসলাম।উদ্দেশ্য জমিয়ে রাফির পকেট ফাকা করা।সুযোগ পেলে রাফি নিজেও আমার পকেট ফাকা করে নেয়।কিন্তু আজ সুযোগটা আমার।খাবার অর্ডার করা শেষে আমরা চুপচাপ বসে ছিলাম।হঠাৎ করেই দেখলাম আমাদের পাশের একদম শেষের টেবিলের আগের টেবিলে যে মেয়েটা বসে ছিলো উঠে দাঁড়ালো এবং সামনে থাকা ছেলেটাকে কিকি জানি বললো।স্পষ্ট শুনতে পেলাম না।মেয়েটার চেহারাটা দেখতে পারছিলাম না।মেয়েটার সামনে থাকা ছেলেটা কেমন একটা দৃষ্টি নিয়ে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে।মুহূর্তের মধ্যেই মেয়েটা ছেলেটাকে থাপ্পড় মেরে রাগি একটা লুক নিয়ে আমাদের সামনে দিয়ে চলে গেলো।মেয়েটাকে দেখেই চিনে ফেললাম।চায়ের দোকানে দেখা সেই মেয়েটা।মেয়েটা বলার কারণ আমি তখনো তার নাম জানতাম না।পরে জেনেছি যে ওর নাম পুষ্পিতা।

বেশ কিছুদিন পরেই আবার দেখা হলো আমাদের।ও বাসা থেকে বের হচ্ছিলো আর আমিও মার্কেটে যাচ্ছিলাম।ওকে দেখে একটা সৌজন্যমূলক হাসি দিলাম।পরিবর্তে ও নিজেও হাসলো।

আমরা পাশাপাশি হাটছিলাম..

"মি. আড়চোখা আপনি??

"আমার নাম মি. আড়চোখা না।

"তাহলে নাম কি?

"প্রণব রায়হান।

"বাহ বেশ তো।আনকমন নেইম।

আমি ধন্যবাদ দিয়ে একটু জড়তা নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম

"আপনার নাম টা?

"পুষ্পিতা রহমান।

"আপনার নামটাও সুন্দর।আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো ভাবছিলাম।

এবারে পুষ্পিতা আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত তাকিয়ে দেখলো।তারপর একটু গম্ভীর ভাবে বললো-

"কি জিজ্ঞেস করবেন? আমার বয়ফ্রেন্ড আছে কিনা?

"না তো।

পুষ্পিতা মনে হয় আমার এরকম উত্তর শুনে বেশ অবাক আর আহত হলো।সুন্দরি মেয়েদের এই এক সমস্যা।আগেই নিজেকে নিয়ে আকাশ পাতাল ভেবে বসে।ওর চেহারাটা দেখে এরকমই মনে হচ্ছিলো আমার।

"তাহলে কি বলবেন?

"আসলে জানতে চাইছিলাম সেইদিন রেস্টুরেন্টে ছেলেটাকে ওইভাবে থাপ্পড় কেন মারলেন?যদিও পার্সোনাল প্রশ্ন তবুও...

"হুম পার্সোনালই বটে।

অপ্রস্তুত ভাবে হাসলো পুষ্পিতা।বুঝলাম বলতে চাচ্ছেনা।

"আরেকটা কথা জিজ্ঞেস করার ছিলো??

পুষ্পিতা একটু হেসে বললো

"আজকে রেখে দিন।আমার লেইট হয়ে যাচ্ছে।

কথাটা বলেই রিক্সা ঠিক করে চলে গেলো।আর আমি আমার কাজে চলে গেলাম...

৪...........
সপ্তাহ খানেক পরে ভোর ছয়টার দিকে পুষ্পিতার সাথে আবার দেখা হলো কালাম চাচার দোকানে।সেইদিনও একই অবস্থা। চামচে চা নিয়ে ফুঁ দিয়ে দিয়ে চা খাচ্ছে।ওর চামচ দিয়ে চা খাওয়ার দৃশ্যটা আমার এতটা ভালো লেগে যাবে বুঝতেই পারিনি।পুষ্পিতা

এর মধ্যে কালাম চাচাকে টাকা দিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।

আমি জিজ্ঞেস করলাম-

"কিছু বলবেন?

"হ্যা ওই যে সেইদিন কিছু জিজ্ঞেস করবেন বলেছিলেন?

"হ্যা আসলে..

"আপনার কাজ শেষ হলে চলুন হাটতে হাটতে কথা বলা যাক।

"চলুন….

পুস্পিতা হাটতে লাগলো এইখানকার বড় মাঠটার দিকে।আমিও পাশাপাশি হাটতে লাগলাম।পুষ্পিতা বললো-

"কি জিজ্ঞেস করবেন.??

"না মানে আসলে আমার খুব কৌতূহল হচ্ছে। আপনি ওইভাবে চামচ দিয়ে চা.... এটাই জানতে চাইছিলাম আর কি…

আমার কথা শুনে পুষ্পিতা শব্দ করে হেসে উঠলো।ওর হাসির শব্দটা শুনে বুকের মধ্যে কেমন জানি একটা লাগলো।ও হাসি থামিয়ে বললো-

"আসলে ছোট বেলায় একবার চায়ের কাপে মুখ লাগিয়ে চা খাওয়ার সময় ঠোট আর জিহ্বা পুড়ে গেছিলো।তারপর থেকে কাপে মুখ লাগিয়ে খেতে ভয় করে।এই জন্যে চামচ দিয়ে খাই।কালাম চাচার বানানো চা খুব টেস্টি।সব সময় আসিনা কালাম চাচার দোকানে।কোন মেয়ে চায়ের দোকানে বসে চা খাবে এইটা বেশ বেমানান দেখাই।তাই যখন সকালের দিকে যখন কেউ থাকেনা তখন আসি। মন খারাপ থাকলে এই চা আমার মন ভালো করার ঔষধ।

"তার মানে আজকে আপনার মন খারাপ?

ও আমার কথার জবাব দিলো না।

"সমস্যা না থাকলে শেয়ার করতে পারেন।

পুষ্পিতা আমাকে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো।হঠাতই একটা বাইক আমাদের সামনে এসে থামলো।

ছেলেটা যখন হেলমেটটা খুললো তখন ছেলেটাকেও চিনলাম।এই ছেলেটাকেই সেদিন পুষ্পিতা থাপ্পড় মেরে ছিলো।

ছেলেটা বাইকটা স্ট্যান্ড করে পুষ্পিতার সামনে দাঁড়িয়ে বললো-

"সেদিন তো আমাকে খুব বড় বড় লেকচার দিয়েছিলি।ব্রেকাপ হলো কি না হলো সকাল সকাল আরেকটা প্রেমিক নিয়ে বেড়িয়ে পরেছিস।এখন কোথায় গেলো তোর সতীত্ব?একচুয়্যালি ইউ আর দ্য ব্লাডি বি…

ছেলেটার কথা শেষ না হতেই ডান গালে জোরসে একটা থাপ্পড় পরলো। আমি ছেলেটার গালের দিকে একটু ভালো করে তাকালাম।ফর্সা গাল হাতের পাঁচ আঙুল বসে গেছে।বাপরে মেয়ের হাতে জোর কত!!

ছেলেটা চড় খেয়ে ফুঁসতে ফুঁসতে বাইক নিয়ে চলে গেলো…

আর পুষ্পিতা হাটতে হাটতে মাঠের পাশে যে পুকুরটা আছে সেইখানে গিয়ে দুহাত বুকের সাথে জড়ো করে দাঁড়ালো। আমি কি মনে করে করে ওর পিছুপিছু গেলাম।এটা বুঝতে পারলাম ছেলেটা পুষ্পিতার বয়ফ্রেন্ড ছিলো। এখন আর নেই.. আমি পুষ্পিতার পাশে গিয়ে দাঁড়াতেই বললো-

"একটা ছেলের ভাবনা চিন্তা ভাবনা এতটা খারাপ কিভাবে হয়।তিনবছরের রিলেশনশিপ ছিলো আমাদের।সেদিন রেস্টুরেন্টে ইনিয়েবিনিয়ে আমাকে ওর সাথে রুমডেটে যেতে বলে নয়তো সম্পর্ক রাখবেনা বলে জানিয়ে দেয়।নিজের শারীরিক চাহিদা মেটানোর জন্য তাহলে আমার পিছনে কেন তিনটা বছর নষ্ট করলো।প্রস্টিটিউট এর কাছে গেলেই পারতো।আমার ফ্রেন্ডরা বার বার বলেছিলো ওকে বিশ্বাস না করতে কিন্তু আমি সব সময় ওকে ডিফেন্ড করেছি।আর ও আমার বিশ্বাসের এই মূল্য দিলো...

" ওর মুখে এরকম কথা শুনার পরেই কেন জানিনা আমার রাগ উঠতে লাগলো ছেলেটার উপরে।ওকে পুকুরপাড়ে রেখেই আমি চলে আসলাম… আচ্ছা আমার কেন রাগ হচ্ছে? ছেলেটা ওকে ঠকিয়েছে সেইজন্য নাকি মেয়েটার কান্না আমার সহ্য হচ্ছেনা এইজন্য?

জানিনা আমি.... মেসে গিয়ে শুয়ে পরলাম।কিন্তু শুধু পুষ্পিতার কথাই মনে হচ্ছে।ও কান্না করছে ভেবেই মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে আমার।জানিনা কেন এমন হচ্ছে। এমনটা আমার সাথে কখনো হয়নি।সারাদিনে এমনকি রাতেও পুস্পিতা নিয়ে ভেবেছি।ওইভাবে আমার পুকুরপাড় থেকে চলে আসা উচিৎ হয়নি।নিজের মধ্যেই কেমন একটা গিলটি ফিল হচ্ছে….

৫...........
সারারাত ঘুমাইতে পারিনি।শুধু বিছানায় গড়াগড়ি আর গান শুনে কাটিয়ে দিয়েছি।খুব সকাল বেলা হাটতে হাটতে কালাম চাচার দোকানের পাশে মাচাটায় বসলাম।কালাম চাচা এখনো দোকান খুলেনি।কিছুক্ষণ বাদে পুস্পিতাকেও দেখলাম এইদিকেই আসছে।চোখ দুইটা লাল হয়ে আছে। মনে হয় সারারাত কান্না করেছে।পুষ্পিতা আমার সামনে এসে দাঁড়ালো...

"আসলে..

এইটুকু বলেই চুল গুলা কানের একপাশে গুঁজে দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলো।আমি বললাম

"স্যরি..

"জ্বীইই?

"আই এম স্যরি। আসলে আপনাকে কালকে ওইভাবে রেখে আসাটা উচিৎ হয়নি।

পুষ্পিতা খানিকটা হাসার চেষ্টা করলো।তারপর বললো-

"আমি তো ভেবেছিলাম আপনাকে স্যরি বলবো।আমার জন্য আপনাকে ওকয়ার্ড একটা সিচ্যুয়েশানে পরতে হলো।

"সমস্যা নেই।মনের কথা চেপে রাখতে নেই।শেয়ার করলে মন হাল্কা হয়।ও কেবল হাসলো।এইবারের হাসিটা একদম অন্যরকম। হাসিটা দেখেই আবার বুকের মধ্যে কেমন জানি করে উঠলো...

" রাত্রির সাথে ছয়মাস রিলেশন ছিলো।কখনো ওর হাসি দেখে এরকম মনে হয়নি।ওর সাথে থাকলে কেমন জানি দম বন্ধ হয়ে আসতো।আমাকে ওর গোলাম বানিয়ে রেখেছিলো।উঠতে বললে উঠতে হবে বসতে বললে বসতে হবে।নিজের কোন স্বাধীনতাই ছিলো না।পরে যখন ওর সাথে একেবারেই থাকতে পারলাম না তখন ব্রেকাপ করে নেই।ব্রেকাপের পর আমি খুব হ্যাপি ছিলাম।আই থিংক ও নিজেও এই রিলেশনশিপে হ্যাপি ছিলোনা।তাই দুইদিক থেকে কেউই আর যোগাযোগের চেষ্টা করিনি।"

পুষ্পিতা বললো

"কি মি. কই হারাইলেন? কালাম চাচা দোকান খুলেছে। আপনি কি যাবেন?

"হ্যা চলেন..

পুষ্পিতা চামচ দিয়ে চা খাচ্ছিলো আর আমি আড় চোখে দেখছি।

"এভাবে আড় চোখে দেখার কিছু নাই।আমি ওর কথায় আবারো কেবল লজ্জা পেলাম।মেয়েটা বুঝে কিভাবে যে কেউ ওকে আড় চোখে দেখছে? অদ্ভুত তো!!

এরপর একদিন নাম্বার নিয়েছিলাম।ওর হাসিটা অনেক সুন্দর।ও ফোনের অপাশ থেকে শব্দ করে হাসলে আমি এপাশ থেকে অনুভব করতাম।আস্তে আস্তে একটা ভালো আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয় আমাদের।আপনি থেকে তুমি।তবে আমাদের মধ্যে রিলেশনটা ফ্রেন্ডশিপ নাকি অন্যকিছু বুঝতে পারিনা।ও কখনো বুঝতে দেয়নি।আমি ওর জন্য কিছু একটা ফিল করি।কিন্তু কখনো জানানো হয়নি।ইচ্ছা করে জানাইনি।একটা ছেলে যদি কোন মেয়ের বিশ্বাস ভাঙে অন্য আরেকটা ছেলের বিশ্বাস অর্জন করতে অনেকটা সময় লাগে…

"একসময় বুঝতে পারলাম ওর উপরে খুব নির্ভরশীল হয়ে পরছি।ওকে ছাড়া আমার কোন কিছু ঠিক মত হচ্ছেনা।দিনে একবার কথা না হলে মনের মধ্যে কেমন একটা ছটফটানি অনুভব করতাম।তাই ইচ্ছা করে মেস চেঞ্জ করে যোগাযোগ কমিয়ে দিলাম।নিজেকে অন্য কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করতে লাগলাম।ও মাঝেমাঝে ফোন দিয়ে খোঁজখবর নিতো।কিন্তু আমি ফোন দিতাম না।তারপর বাবা মারা গেলো।মেইস ছেড়ে চলে আসলাম।মাস খানেক পার হওয়ার পর পুষ্পিতার মধ্যে একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম।নিয়মিত আমার সাথে কথা বলে।মাঝে মাঝে দেখাও করতে বলে।লক্ষ্য করলাম আমি আবারো ওর উপরে ডিপেন্ডেবল হয়ে পরছি..

৬...........
পুষ্পিতা চেঞ্জ করে আমার সামনে দাড়ালো।ভেজা চুলে ওকে বেশ অন্যরকম লাগছে।ওকে এই অবস্থায় বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠলো।বাইরে আবারো সজোরে বৃষ্টি আরম্ভ হয়েছে।আশ্চর্যের বিষয় হলো কারেন্ট এখনো যায়নি।আমি নিজেকে সামলে নিয়ে ওকে বললাম-

"দাঁড়িয়ে কেন আছো? বসো..

পুষ্পিতা আমার পাশে বসতে বসতে বললো

"প্রণব আসলে…

"বলো..

"তোমাকে অনেক বার ফোনে ট্রাই করেছি।তোমাকে ফোনে পাচ্ছিলাম না।আমি কিছুদিন তোমার এইখানে থাকলে তোমার কোন সমস্যা হবে?

"না আমার আবার কি সমস্যা হবে।এইখানে কয়েকটা রুম ফাকাই থাকে।তুমি যেকোনো একটাতে থাকতে পারো।

"আসলে আমি মামার বাসা থেকে চলে এসেছি। যতদিন না কোন চাকুরী পাচ্ছি ততদিন তোমার বাসায়…

"হুম বুঝলাম।কিন্তু হঠাৎ বাসা কেন ছাড়তে হলো আপনাকে ম্যাডাম?

"আসলে মামা বিয়ে ঠিক করেছে।আমাদের কয়টা বছর দেখলো কি না দেখলো আমার লাইফের ডিসিশনস নিতে শুরু করে দিলো।তাও আমাকে না জানিয়েই… আর আমিও চেনা নাই জানা নাই ওরকম ছেলেকে কিভাবে বিয়ে করবো?আমার পক্ষে এটা সম্ভব না।

"আচ্ছা আচ্ছা বুঝলাম..

এমন সময় কারেন্ট চলে গেলো..রাত হয়ে গেছে

বাসায় ক্যান্ডেল ও নেই।আর ফোনের ব্যাটারিও ডেড..বাইরে তো বৃষ্টি হচ্ছে।এখন কি করবো?পুস্পিতা আমার শার্টের হাতাটা শক্ত করে ধরলো।আবারো আমার বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠলো।বুঝলাম ওর খুব ভয় করছে।আমি ওকে বললাম-

"ভয় পেয়ো না।কারেন্ট একটু পরেই চলে আসবে।

"হুম…

কিছুক্ষণ পরে কারেন্ট আসলো।আমি পুষ্পিতা কে ওর রুমে দিয়ে আসলাম।রাতে ঘুম থেকে উঠেছিলাম একবার দেখলাম ওর রুমের লাইটটা জ্বলছে।মনে হয় লাইট না জ্বালিয়ে ঘুমাইতে পারেনা বা অন্য কোন কাজ করছে।

পরের দিন দুপুর বেলা টেস্ট ম্যাচ দেখছিলাম।দরজা খোলাই ছিলো।ভাবিকে আসলো হাতে প্লেট দিয়ে ঢেঁকে আমার জন্য কিছু একটা এনেছে।ভালো কিছু রান্না করলেই আমাকে বাসায় ডাকে নয়তো বাসায় এসে দিয়ে যায়।আমি কিছু বলার আগেই ভাবি বললো-

"কি ছোট সাহেব কি খবর??ভাবিকে ভুলে গেছো নাকি?দেখা করো না বেশ কয়েকদিন হলো।

"আরে কি যে বলো। তোমাকে ভুললে চলে?আজকে কি রান্না করেছো??

"ভূনা খিচুড়ি..

"বাহ বেশ জমবে তাহলে দুপুরের খাবারটা।

"কি ব্যাপার বলো তো। তোমার বাসার সব কিছু এমন গুছানো লাগছে।

ব্যাপার আমিও বুঝতেছিনা ভাবি।

এমন সময় পুষ্পিতা ওর রুম থেকে বের হয়ে আসলো।ভাবি পুস্পিতাকে দেখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো-

" বিয়ে করেছো একবার জানানোর প্রয়োজন মনে করলেনা? তোমার ভাইয়াকে না হোক আমাকে তো একবার জানাইতে পারতে।

"আরে ছিঃ ছিঃ ভাবী তোমাদের না জানিয়ে আমি কিভাবে বিয়ে করবো বলো?

"তাহলে মেয়েটা কে??

কথাটা শোনার পরে আমি পুষ্পিতার দিকে তাকাইলাম।পুষ্পিতা বসতে বললো

"আমার নাম পুষ্পিতা।আমি আসলে প্রণবের ফ্রেন্ড।

ভাবী বললো-

"আমি প্রণবের ভাবী..

দুইজনের পরিচয় শেষেই গল্পের ঝুড়ি নিয়ে বসলো।আমি শুধু একবার ভাবীর মুখের দিকে তাকাই একবার পুষ্পিতার মুখের দিকে তাকাই।

ভাবী চলে গেলে পুষ্পিতা বললো

"তোমার ভাবীটা কিন্তু খুব ভালো আর অনেক মিশুক।

"হ্যা। মিশুক যে বুঝতেই পারছিলাম তোমাদের দেখে...

"প্রণব আমার রুমের লাইটটা জ্বলছেনা।একটু দেখবে?আমি লাইট না জ্বালিয়ে রাতে ঘুমাইতে পারিনা।

"আচ্ছা চলো দেখি…

৭...........
"কয়েকটা দিন বেশ ভালোই কাটলো।ওর হাসিটা আমাকে এতটা কেন মুগ্ধ করে আমি জানিনা। বিকালে আকাশের অবস্থা ভালো না দেখে ভাবলাম ওর সাথে আড্ডা দেই।ওর রুমের দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম।দেখলাম আমার সাদা শার্টটা আইরন করছে। এই সময় যদি শাড়ি পরতো।আর শাড়ির আঁচল কোমরে পেঁচানো থাকতো তাহলে একদম আমার বউ বউ লাগতো।আমি একটু কাশি দিয়ে ওর পেছনে গিয়ে দাঁড়ালাম।

"পুষ্পিতা এই শার্টের বাটন তো ছেড়া। এইটা তুমি আইরন কেন করছো?

"চোখে ঠিকমতো দেখো না নাকি?

"হ্যা দেখি তো…

"চোখে ঠিকমতো দেখলে তো এটাও দেখতে শার্টের বাটন লাগানো।

"বাহ বেশ তো।কিন্তু সুঁচসুতা কই পেলে?এই বাসায় তো এসব কিছুই নেই।

"ভাবীর কাছ থেকে এনেছি।

"ভালোই…

আমি বাসা থেকে বের হচ্ছিলাম দেখি ভাবি সিঁড়ি দিয়ে উপরে আসছে..

"কি খবর ছোট সাহেব?

"ভালো ভাবি।

"শুধু ভালো?

"হুম..

"মেয়েটা কিন্তু সংসারী..

"কোন মেয়ে বলো তো??পুস্প?

"হ্যা।ভালোই মানাবে তোমাদের।সময় থাকতে বলে দাও নয়তো অন্য কেউ নিয়ে চলে যাবে।তখন আফসোস করবে।

"আরে ধুরর ভাবী কি যে বলো না..

" কি যে না।যা বললাম ঠিকই বললাম।কোথায় যাচ্ছো তুমি?

"বড় মাঠে।

"আচ্ছা তাড়াতাড়ি ফিরো..

অর্ধেক রাস্তা যেতে না যেতেই বৃষ্টিতে ভিজে চুপসে গেলাম।ভিজতে ভিজতে বাসায় ফিরতে লাগলাম।ফেরার সময় ভাবীর বলা কথাটা নিয়ে বেশ ভাবলাম।ভাবতেই মেজাজটা সকালের মত আবারও খারাপ হয়ে গেলো।

সকালের দিকে ঘুম থেকে উঠে ব্যাল্কনিতে দাঁড়িয়েছিলাম।নিচে তাকিয়ে দেখি পুষ্পিতা একটা ছেলের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।বিষয়টা আমি কেন জানিনা মানতে পারছিলাম না।এই জন্য মেজাজ খানিকটা খারাপ ছিলো সকালে।

বাসায় ফিরে দেখি পুষ্পিতা টিভি দেখছে।চেঞ্জ করে মাথা মুছতে মুছতে টিভির রুমে গেলাম।আমাকে দেখে পুষ্পিতা উঠে দাঁড়ালো।আমার সামনে এসে বললো-

"এইভাবে কেউ মাথা মুছে??

"কেন?

আমার হাত থেকে টাওয়েলটা নিয়ে আমার মাথা মুছে দিতে লাগলো।আবারো আমার বুকের বাম পাশটাতে মোচড় দিয়ে উঠলো।অন্যরকম একটা অনুভূতি অনুভব করতে লাগলাম যতটা সময় পুষ্পিতা আমার মাথা মুছে দিচ্ছিলো।

"প্রণব আমার জবটা হয়ে গেছে।

কথাটা শোনার পরে মুখে গুড নিউজ বললেও এটা ভেবে মনটা একটু খারাপ হলো।তাহলে কি ও চলে যাবে?

"তোমার প্রব্লেম না থাকলে আর একমাস থাকতে হবে।প্রথম মাসে স্যালারি পেলেই বাসা নিবো।

"আচ্ছা..

পুষ্পিতা যখন চলে যাচ্ছিলো মাথা মুছে দিয়ে আমি ওর হাতটা টেনে ধরলাম

ও দাঁড়িয়ে একবার হাতের দিকে তাকাচ্ছে আর একবার আমার মুখের দিকে তাকাচ্ছে।

"তোমাকে কিছু বলার ছিলো।কথা গুলা আমি আজকে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে ভাবলাম।

"হ্যা বলো।

"আসলে..

"কি

" ভাবী বলছিলো তুমি যদি আমার বউ হইলে আমাদের বেশ মানাইতো।

"ও এই কথা?ভাবী আমাকেও বলছিলো সেইদিন।

"আসলে আ.. আমি বলতে চাচ্ছিলাম যে..

"হ্যা বলো…

"আসলে আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই।

"বুঝলাম তো যে কিছু বলতে চাও।তা কি বলতে চাও না বললে বুঝি কিভাবে?

"আ… আমি চাই যে..

"কি.. কি চাও তুমি??

"আ..আমি চা..চাই যে তো… তোমাকে..

"আ.. আমাকে কি??তোতলাচ্ছো কেন?

"আসলে আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই..

"কেন??

"তোমাকে খুব ভালো লাগে।তোমাকে হাসতে দেখলে অন্যরকম একটা অনুভূতি মনের মধ্যে তোলপাড় শুরু করে দেই। এই অনুভূতির নাম আমি জানিনা।কিন্তু তখন মনে হয় তুমি শুধু আমার।তোমাকে আমি আমার করে চাই।তুমি জানো অন্য কাউকে তোমার সাথে দেখলে আমার সহ্য হয়না।

"হিহিহি ব্যাস এতটুকুই?

"হাসছো কেন তুমি?

এতে হাসার কি আছে হু...

"আচ্ছা আর হাসবো না।তুমি তো দেখি ঠিক মতো প্রপোজ ও করতে পারো না।

"মনে যা আসছে তাই তো বললাম..

"হুম বুঝলাম।হাতটা ছাড়ো।

আমি হাতটা ছেড়ে দিয়ে বললাম-

"স্যরি আসলে.. তুমি এখন বলো।আমার জন্য কিছু ফিল করো না??

"হুম করি তো।

"কি ফিল করো?

"এটাই যে তোমার শার্টের বাটন লাগানোর রাইটটা শুধু আমার।তোমার আমার দিকে তাকানো দেখলেই আমি বুঝতে পারি যে তুমি আমার জন্য কি অনুভব করো।

কেউ যখন কাউকে মন থেকে ভালোবাসে তখন তার চোখের ভাষা পড়ারও ক্ষমতা রাখে।বুঝলে বোকারাম?

"তাই না?

"হুম..

"তাহলে ভাইয়া ভাবি কে কাজী ডেকে বিয়েটা দিয়ে দিতে বলি??

পুষ্পিতা লজ্জা পেলো।এই প্রথম আমি ওকে লজ্জা পেতে দেখলাম।ওর লজ্জামিশ্রিত মুখটা দেখে বুকের মধ্যে আবারও সেই অনুভূতি নাড়া দিয়ে উঠলো..

৮...........
আজকে সন্ধ্যায় আমাদের বিয়েটা হলো।বিয়েতে পুষ্পিতার মা উপস্থিত ছিলো।ওর মামা আসেন নি।খুব টায়ার্ড লাগছে।পুষ্পিতা ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে ওর গহনা গুলা খুলছে।আর আমার দিকে তাকিয়ে একটু পর পর মুচকি মুচকি হাসছে।ওর হাসি দেখে আমি ওর পিছনে গিয়ে দাঁড়ালাম।আমাকে দেখে পুষ্পিতা উঠে দাঁড়ালো।আমি পুষ্পিতার কাধে হাত দিয়ে ড্রেসিংটেবিলের আয়নাতে ওকে দেখছি।বউ সাজে শাড়ী পরে ওকে সত্যিই অন্যরকম লাগছে।

"এইভাবে কি দেখো?

"তোমাকে না একদম বউ বউ লাগছে।

"আজব তো!!তুমি এত বোকা আগে জানলে তোমাকে বিয়েই করতাম না।

"এহহ তুমি বিয়ে না করলো অন্য কেউ করতো।আমাকে দেখতে অনেক কিউট লাগে বুঝছো?কিন্তু তুমি আমাকে বোকা কেন বললে?

পুস্পিতা আমাকে ধাক্কা দিতে দিতে বললো-

"ওলে আমার কিউত জামাইটা লে।বোকার মত কথা বললে বোকা তো বলবোই।সরো তো।ঘুমাবো।খুব টায়ার্ড লাগছে।

আমি সরে দাঁড়ালাম। পুষ্পিতা খাটের একপাশে গিয়ে শুয়ে পরলো।আমি খাটের একপাশে বসতে বসতে বললাম

"পুস্প…

"বলো

"সত্যিই ঘুমাবে?

"হ্যা

"রুমের লাইট অন করে ঘুমাবে?

"হ্যা..

"কেন??আজকে আমি থাকতে কিসের ভয়??আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাইলেই পারো।তাহলে তো আর ভয় লাগবেনা।

"তুমিই তো সব থেকে বড় ভয়…

"কি বলো!আমি?কিভাবে?

"হুম তুমিই।যদি ডাকাতি করো।সো লাইট অফ হবেনা।

"তুমি এত বোকা জানলে আমিও তোমাকে কখনোই বিয়ে করতাম না...

"কিহহ!!কি বললে তুমি?

পুস্পিতা এবারে আমার দিকে পাশ ফিরে তাকালো।

"আমি বোকা??

"হ্যা।না হলে তুমিই বলো নিজের জিনিস কেউ ডাকাতি করে??

"পাঁজি ছেলে।শুয়ে পরো।সারাদিন অনেক ধকল গেছে।

৯...........
"আমি পুষ্পিতার পাশে শুয়ে পরলাম।কিন্তু লাইটের আলোতে ঘুমাতে পারছিলাম না।একটু পর পর এপাশ অপাশ করছিলাম।উঁকি দিয়ে দেখছিলাম পুষ্পিতা ঘুমিয়ে গেছে কিনা।

একটু পরে দেখলাম পুস্পিতা লাইটটা অফ করে দিলো।তারপর আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো-

"আমাকে ভালোবাসো তার মানে এই না যে তোমাকে একাই কষ্ট করতে হবে।লাইটের আলোর জন্য ঘুমাইতে পারছো না এইটা আমাকে বললেই পারতে।পাগল একটা।

আমি ওর কপালে একটা চুমু খেলাম…

পুষ্পিতা আমার টি-শার্টটা টেনে ধরে আমার বুকের মধ্যে মুখ লুকালো।আমি বেশ অনুমান করতে পারছি আমার বউয়ের লজ্জামিশ্রিত মুখটা কেমন হয়েছে!

মনে মনে বললাম "এই মেয়েটাই আমার জীবনসঙ্গী হিসাবে একদম পার্ফেক্ট।উই আর মেইড ফর ইচ আদার।কিভাবে জানি সব কিছু বুঝে যায়।

আজ থেকে সারাজীবন ওকে আগলে রাখার দায়িত্ব শুধু আমার।এই মেয়েটাকে কখনোই কষ্ট দেয়া যাবেনা।কখনোই না"….

Address

Dhaka, Kafrul
Dhaka
1206

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Valobashar Golpo Story Of Love ভালবাসার প্রেম কাহিনি posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Valobashar Golpo Story Of Love ভালবাসার প্রেম কাহিনি:

Share

Category