08/04/2025
বয়কটের ধরণ ও স্ট্র্যাটিজি:
বয়কট একটা সামষ্টিক কাজ। বয়কটের সাফল্য অনেকাংশেই নির্ভর করে এর সাথে কতো মানুষ সক্রিয়ভাবে যুক্ত হচ্ছে তার ওপর। আর বাস্তবতা হল- কোন কাজ, তথ্য বা প্রক্রিয়া যতো জটিল হতে থাকে, সাধারণ মানুষকে সেটা বোঝানো এবং এতে সম্পৃক্ত করা ততোই কঠিন হয়ে যায়।
ঈমানী বা আদর্শিকভাবে চালিত মানুষ কোন ইস্যুতে যেভাবে রেসপন্ড করে, ম্যাস পিপল স্বাভাবিকভাবেই সেভাবে করবে না। বিশেষ করে আজকের সমাজে, যেখানে ভোগবাদ জীবনের প্রায় অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাড়িয়েছে।
সহজ করে বলি--
আপনার কর্মসূচী যদি পাবলিকের কাছে অনেক কিছু ডিমান্ড করে, তাহলে সেটার ফেইল করার সম্ভাবনা বেশি।
আপনার কর্মসূচীর সফলতা যদি নির্ভর করে পাবলিককে অনেক বেশি তথ্য দেয়া এবং তারা সেগুলো প্রসেস করার ওপর, পাবলিক অনেক বেশি ‘স্যাক্রিফাইস’ করার ওপর, তাহলে সেটার ফেইল করার সম্ভাবনা বেশি।
এটা সাধারণ অবস্থা, তবে ব্যতিক্রম থাকতে পারে।
এগুলো সমাজ ও জীবনের বাস্তবতা যা যেকোন পাবলিক মেসেজিং, কর্মসূচী এবং জনগণের প্রতি আহ্বানের ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হয়।
তার মানে এই না যে আপনি আদর্শে ছাড় দেবেন, নিজেকে বা আপনার আদর্শকে জনগণের অনুগামী বানাবেন। এর অর্থ হল, আপনি যদি জনগণকে মোবালাইয করতে চান, তাহলে তার বুঝ এবং তার অবস্থা অনুযায়ী কথা সাজাতে হবে এবং তাকে কাজ দিতে হবে।
হাইলি ডেডিকেইটেড আদর্শিক কোরের জন্য ঠিক করা কাজ আর মেসেজিং-এর সাথে পাবলিকের জন্য ঠিক করা মেসেজিং এর কাজের পার্থক্য থাকবে। এটাই কাম্য, এটাই স্বাভাবিক।
এ ব্যাপারে সারা বিশ্বজুড়ে ইস্র… এর বিরুদ্ধে বয়কট আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া বিডি-এস আন্দোলনের সাইটে বলা কিছু কথার সারমর্ম তুলে ধরছি---
বয়কট কোন আদর্শিক বা আকীদাহর বিষয় না। এটি কার্যকর সংহতির মাধ্যমে আন্দোলনের একটি কৌশল। বয়কট আন্দোলন সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয়, যখন সেটার ফোকাস হয় অল্প কিছু পণ্য এবং কোম্পানি।
বিভিন্ন পণ্য এলেমেলোভাবে বয়কট করার চেয়ে, সবাই মিলে অল্প কিছু পণ্য ও কোম্পানি বয়কট করা বেটার। (ছবি দ্রষ্টব্য)
বর্তমান গ্লোবাল ইকোনমির বাস্তবতা হল এমন হাজারো কোম্পানি আছে যারা কোন না কোন ভাবে ইস্র… এর সাথে যুক্ত। এবং কোন না কোন মাত্রায় তাদের অবৈধ কর্মকান্ড ও অপরাধের সহযোগী।
তবে আমরা যদি আন্দোলনকে সফল করতে চাই, তাহলে বয়কট কর্মসূচী এমন হতে হবে যা সহজে বোধগম্য, যার ব্যাপক গ্রহনযোগ্যতা আছে, এবং যেখানে সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি। আমাদের অবশ্যই স্ট্র্যাটিজিকভাবে চিন্তা করতে হবে।
আমরা বৈশ্বিকভাবে ইস্র… এর সাথে যুক্ত সব কোম্পানি থেকেই ডাইভেস্টমেন্টের কথা বলি। কিন্তু বয়কটের ক্ষেত্রে আমরা অল্প কিছু হাতেগোণা কোম্পানি ও পণ্যের ওপর স্ট্র্যাটিজিকভাবে ফোকাস করি।
এখানে জনগণের অবস্থা মাথায় রাখতে হয়। তাছাড়া প্রেক্ষাপট বা কন্টেক্সটেরও একটা গুরুত্ব আছে। আমরা অ্যাক্টিভিস্টদের তাদের নিজ নিজ কনটেক্সট অনুযায়ী বয়কটের তালিকা ঠিক করতে উৎসাহিত করি।
একটা উদাহরণ দেখা যাক – ইন্টেল কোম্পানি অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে ইস্র…-কে সহায়তা করে। কিন্তু বর্তমানে আমরা ইনটেলকে বয়কটের জন্য টার্গেট করছি না, কারণ মাইক্রোচিপের মার্কেটে ইন্টেলের প্রায় একচেটিয়া আধিপত্য।
ফলে ভোক্তাদের পক্ষে ইন্টেলকে বয়কট করা অত্যন্ত কঠিন। সাধারণ মানুষ, চাইলেও টানা ইন্টেলকে বয়কট করতে পারবে না।
~Asif Adnan