
07/07/2025
আহিল: উইল ইউ ম্যারি মি ঝুমুর?
গালে হাত দিয়ে আহিল ঝুমুতকে উদ্দেশ্য করে প্রোপোজাল দেয়,,
ঝুমুর: একি গালে হাত দিয়ে কে প্রোপোজ করে।
আহিল: না মানে আবার যদি মারো।এমনি দুই দুইটা খেয়েছি আর খাবনা প্লিজ
ঝুমুর হো হো করে হাসতে লাগে আহিলের কথা শুনে,,
ঝুমুর: আচ্ছা আমি সরি আমার ভুল হয়ে গেছে 🥺
আহিল: খুব জোরে মারো তুমি।
ঝুমুর: বললাম ত সরি এবার রিংটা পরিয়ে দিন বিয়ে কি করার ইচ্ছে আছে আদৌ?
আহিল: আরে অবশ্যই আছে কি বলো হুম।
আহিল ঝুমুরকে রিং টা পরিয়ে দেয় আর বলে,,
আহিল: এই শোনো কালকে কিন্তু আমরা বিয়েটা করে নিব আগে রেজিষ্ট্রি ফেলি তোমাকে তোমার যোগ্য সম্মান দেই তারপর সুযোগ সুবিধা বুঝে একটা গ্র্যান্ড ওয়েডিং প্ল্যান করব।
পরেরদিন,,,
সকাল হতেই আহিল গাড়ি নিয়ে ঝুমুরের কাছে আসে।ঝুমুর একটা সুন্দর লাল টুকটুকে শাড়ি পরে আহিল ঝুমুরকে দেখে বলে,,
আহিল: মাশাল্লাহ কি সুন্দর লাগছে আমার বউকে আমি ত আবার প্রেমে পরে গেলাম।
ঝুমুর: এখনো হয়নি বউ।
আহিল: এইতো একটু পরি হয়ে যাবে।
আহিল ঝুমুর কাজী অফিসে গিয়ে বিয়েটা সেরে নেয়। বিয়ে করেই আগে তারা দাদির কাছে যায় দোয়া নিতে। দাদি তাদের আজকে তার বাসায় থাকতে বলে।
রাতে,,,,
আহিল ডিনার শেষে বারান্দায় এসে সিগারেট জ্বালাতেই ঝুমুর বলে উঠে,,
ঝুমুর: একদম এসব আজেবাজে জিনিস আমার সামনে খাবেন না আমার এসবের গন্ধে বমি আসে।
আহিল: আরে আমি সবসময় খাইনা ত শুধু,,
ঝুমুর: আপনার ত দেখছি খুব দোষ আছে মদ খান সিগারেট খান।
আহিল: এহ!! আমি মদ খাইনা শুধু সেইদিনি খেয়েছিলাম নিজেকে সামনানোর জন্য কিন্তু পরে উল্টোটা হয়ে গেছে।
ঝুমুর: আর এসব খাবেন না বলে দিচ্ছি।
আহিল: বেশ খাবনা কিন্তু তার জন্য তোমাকে পেনাল্টি দিতে হবে।
ঝুমুর: পেনাল্টি মানে?
আহিল: মানে যখন যখন আমার সিগারেটের নেশা উঠবে আমি তোমাকে কিস করব আর ততক্ষণ পর্যন্ত করব যতক্ষণ না আমার নেশা মিটে যায় এই যেমন এখন আমার খুব সিগারেটের নেশা উঠে গেছে,,,
টানা ৩ মিনিট ঝুমুরের ঠোঁট রাজত্ব করতে পেরে আহিলে ঠোঁটে চওড়া হাসি ফুটে উঠে। এইদিকে ঝুমুর আহিলের এসব উথাল পাথাল কর্মকাণ্ডে পাগল হয়ে যাচ্ছে।দুইজন কিছুক্ষণ চুপ থাকে ঝুমুর আহিলের ফিটফাট বুকের উপর তার আঙুল দিয়ে খেলতে থাকে হঠাৎ কিছু একটা মনে হতেই ঝুমুর লাফিয়ে উঠে।
আহিল: কি হলো?
ঝুমুর: একটা কথা মনে হলো হুট করে।
আহিল: কি কথা?
ঝুমুর: সেইদিন যদি নিলার জায়গায় আমি না আসতাম তাহলে আপনি নিলার সাথেই এসব করতেন আর নিলাও এখন প্রেগন্যান্ট হয়ে যেত আর....
আহিল: এই এই এই থামো থামো তুমি কই থেকে কই চলে গেলে? হঠাৎ নিলা আসলো কই থেকে?
ঝুমুর: না এটা ত সত্যি তাইনা বলুন? আপনি ত তখন জানতেন আমি নিলা।
আহিল: এই জন্যই বলে মেয়ে মানুষের ওভারথিংকিং এর কোন সীমাপরিসীমা নেই।শোনো তুমি সুন্দর তুমি এট্যাক্টিভ তাই ত তোমাকে দেখে আমি নিজেকে সামলাতে পারিনি। আমার ত শুধু প্রতিশোধ নেওয়া দিয়ে কথা ছিল এসব ত আমি ভাবিনি কিন্তু তোমাকে দেখে তখন নিজেকে সামলানো খুব মুশকিল ছিল তুমি বলেই এতকিছু হয়েছে নাহলে কে নিলা ওরে পাত্তাই দিতাম না হুম
ঝুমুর আহিলের কথা খুশি হয় মেয়ে মানুষ ত একটু তারিফ করতেই গলে গিয়াছে 🌚
ঝুমুর: একটু ত লজ্জা করুন। আপনার লজ্জা নাই থাকতে পারে আমার লজ্জা আছে সরুন আমি দাদির কাছে যাব।
আহিল: এখন আর কথা বাড়িও না জান এসো আরেকটু আদর করি।
বলেই আহিল ঝুমুরের গলায় আর ঠোঁটের স্পর্শে মাতাল করে দেয়।আরেকটু গভীরে যাওয়ার আগেই আহিলে ফোন বেজে উঠে,,
আহিল: আরেহ ইয়ার!! এইটাইমে ফোন বাজতে হয় ধুর ধরব না।
ঝুমুর: আরে না দেখো কে ফোন করেছে যদি কোন দরকার হয়।
আহিল ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও ফোনটা ধরে।
আহিল: হ্যালো কে?
পুলিশ: হ্যালো মিস্টার আহিল আমি পুলিশের হেড কোয়াটার থেকে বলছি।একটা ইনফরমেশন আপনাকে জানিয়ে রাখি।
আহিল: বলুন।
পুলিশ:ওই মারাত্মক মাফিয়া কিন্তু বাংলাদেশেই আছে এটা শিওর।আপনি ওর আগের প্ল্যান এমন ভাবে নষ্ট করে দিয়েছেন একজন সাধারণ মানুষ হয়েও ও কিন্তু প্রতিশোধ নিবেই তাই ত আপনার সাথে আমাদের ১০ জন সিক্রেট এজেন্ট দিয়েছি আপনি বাংলাদেশে এসেছেন শুনে।আপনি সেইদিন আমাদের যা সাহায্য করেছেন এটা আমার কর্তব্য ছিল। আপনি এবং আপনার ফ্যামিলি প্লিজ একটু সাবধানে থাকবেন ও কিন্তু যখন তখন যা খুশি করতে পারে আর পরিচয় চেঞ্জ করতে সে এক্সপার্ট।
আহিল: ধন্যবাদ স্যার ইনফরমেশনটা দেওয়ার জন্য। আমি সাবধানে থাকব।
কল কেটে দিয়েই আহিল বেশ চিন্তিত হয়ে যায়। ঝুমুর আহিলের চিন্তিত চেহারা দেখে বেশ ভয় পায়।
ঝুমুর: কিছু কি হয়েছে উনি কি বলছিলেন? কিসের মাফিয়া কিসের এজেন্ট প্লিজ আমাকে বলুন আমার খুব চিন্তা হচ্ছে।
আহিল ঝুমুরকে তার এক বাহুতে জড়িয়ে নিয়ে শান্ত গলায় বলে,,
আহিল: আমি যখন বিদেশে ছিলাম তখন আমার সাথে একটা ঘটনা ঘটে যার ফলে আমি একটা মাফিয়ার নজরে পরে যাই।
ঝুমুর: কি বলছেন? আর আমি একটা কথা আপনাকে বলব অনেকবার ভেবেছি কিন্তু বলা হয়নি।আপনি ত একজন বিজনেস ম্যান তাহলে আপনার সাথে এতগুলো বডিগার্ড থাকে কেন?
আহিল: ওরা আসলে বডিগার্ড নয় ওরা পুলিশের এজেন্ট। পুলিশ ওদের আমার প্রটেকশনের জন্য রেখেছে কেননা ওই মাফিয়াটা এখন এখানেই আছে।
ঝুমুর: কি!!!! আমাকে সব কিছু বলুন আহিল প্লিজ।
আহিল: বলছি বলছি শোনো।এই মাফিয়া হচ্ছে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন। সারাদেশে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা আছে ওর খুব চালাক তাই পুলিশ গোয়েন্দা ওর খোজ পায়না। ও বিভিন্ন দেশ থেকে মেয়েদের তুলে আরেক দেশে বিক্রি করে দেয়।আমি যখন লন্ডনে ছিলাম তখন সে এই কাজ করছিল একটা ট্রাকে করে মেয়েদের পাচার করছিল। সেইদিন আমার কোম্পানি থেকেও একটা ট্রাক অনেক জিনিস নিয়ে বের হয়েছিল অনেক বড় অর্ডার ছিল তাই ট্রাকের পেছনে আমিও ছিলাম গাড়ি নিয়ে গোডাউনে মালপত্র ঠিক মতো রাখা হয়না কিনা দেখার জন্য। হুট করে আমার ট্রাক আর ওই ট্রাক রাস্তায় এক্সিডেন্ট করে আমি পেছনেই ছিলাম আমি জলদি গাড়ি থেকে নেমে দেখি তেমন ক্ষতি হয়নি শুধু টাচ করে গেছে আমি ওদের বললাম যে ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমি টাকা দিব কারণ দোষ আমার ড্রাইভাররের ছিল ওরা আমার সাথে কোন কথা না বলেই সোজা গাড়ি টানে।আমি খেয়াল করেছি যে ট্রাকের পেছন থেকে গো গো শব্দ আর খেয়াল করলাম যে ট্রাক থেকে চুইয়ে চুইয়ে রক্ত পরছে। আসলে এক্সিডেন্ট এর কারনে ভেতরে থাকা কয়েকজন মেয়ের চোট লেগে রক্ত পরছিল আমার খুব সন্দেহ হওয়ার আমি গাড়ি নিয়ে ওদের পিছু নেই গিয়ে দেখি এই কাহিনি আমি চুপিসারে পুলিশের কাছে কল দেই আর পুলিশ দ্রুত এসে মেয়েদের উদ্ধার করে।পরে ওই মাফিয়াটা কিভাবে যেন জেনে যায় আমি পুলিশ ডেকেছি তাই অনেকবার আমাকে এট্যাক ও করেছিল কিন্তু তেমন ক্ষতি করতে পারেনি। আমাকে এখন আরও সাবধানে থাকা লাগবে কারণ এখন আমি একা নই আমার সাথে তুমি আছো আমাদের সন্তান আছে।
ঝুমুর আহিলকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঝুমুরের চোখে ভয় স্পষ্ট। কাপাকাপা কণ্ঠে বলে,,
ঝুমুর: আমার খুব ভয় করছে আহিল আবার কোন বিপদ আসবেনা ত।
আহিল: কিছু হবেনা ভরসা রাখো আর একা কোথাও যাবেনা সব সময় বডিগার্ড সাথে রাখবে আর এখন বাইরে যাওয়ার ই দরকার নেই।
ঝুমুর: আর তুমি?
আহিল: আমাকে নিয়ে চিন্তা করোনা আমার সাথে সবসময় বডিগার্ড থাকবে ওরা খুব দক্ষ। আমি সেদিন পুলিশের এত সাহায্য করেছিলাম তাই ওরা আমার কাছে কৃতজ্ঞ আমার ক্ষতি হতে দিবেনা তুমি ভেবোনা।
আহিলের কথা ঝুমুর সাময়িক স্বস্তি পেলেও মনের মধ্যে তার ভয় কাজ করতে থাকে।ঝুমুর আহিলকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আহিলের বুকের উপর ঘুমিয়ে যায়।
আহিল: আমাকে আরও সাবধান হতে হবে তুমি জানোনা ঝুমুর ও কতটা ভয়ংকর। আমার নিজেকে নিয়ে ভয় নেই কিন্তু তোমার কোন ক্ষতি হলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবনা।
________________
কালি: ডেলিভারির কিন্তু আর ১ দিন আছে। সব কিছু রেডি তো রিদয়?
রিদয়: জ্বি বস, কালকেই আমি ফাইনাল জনকে তুলে নিব তাহলেই ১০,সব প্ল্যান রেডি।
কালি: বেশ। আব মে চালতিহু।
রিদয়: বস আপনার জবাব নেই আপনি প্রায় সব দেশের ভাষাই কত সুন্দর করে বলেন।
কালি: আমাকে সব জায়গার ভাষা জানতেই হয় কেমনা আমি ওইভাবেই ডিল করে যাতে পুলিশ কেন পুলিশের বাপ ও আমাকে খুজে না পায়।
পরেরদিন রিদয় ওত পেতে থাকে ঝুমুর কখন অফিসে আসবে সেটা দেখার জন্য আজ তাকে কাজ সারতেই হবে। রিদয় হুডি টুপি করে আহিলের অফিসের সামনে দাড়িয়ে আছে তখন একটা গাড়ি এসে দাঁড়ায়। সেই গাড়ি থেকে নামে ঝুমুর সাথে ৫ জন বডিগার্ড,,,
রিদয়: একি!! ঝুমুর না ওটা? ওর সাথে এত লোক কেন দেখে ত মনে হচ্ছে ওকে প্রটেকশন দিচ্ছে। এবার কি করব আমি কিভাবে ঝুমুরকে পাব? বস ত আমাকে শেষ করে দিবে না যাই আবার নতুন কিছু ভাবতে হবে।
বলেই রিদয় চলে যাচ্ছিল তখনি কারও সাথে সজোরে ধাক্কা খেয়ে রিদয় হোচট খায়।
প্রেমা: আরে কানা নাকি চোখে দেখেন.....না!!
রিদয় তুমি?
রিদয়: একি প্রেমা তুমি এখানে কি করছ?
প্রেমা: আগে তুমি বলো ব্যাপার কি তোমার কোথায় ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছ? আমি তোমাকে ছাড়বনা আমার সব কিছু শেষ করে দিয়ে তুমি এইভাবে পালাতে পারোনা।
রিদয়: আরে তুমি শান্ত হও আমার কথা শোনো
প্রেমা: এই বাচ্চা আর আমাকে একা রেখে গেলে কিভাবে তুমি?
রিদয়: তুমি সত্যি প্রেগন্যান্ট?
প্রেমা: ত তোমার কি মনে হয়েছে আমি মজা করেছি সিরিয়াসলি?
রিদয়: তুমি সত্যি প্রেগন্যান্ট আমি বাবা হবো?
মূহুর্তেই রিদয়ের মুখটা খুশি হয়ে যায়।
প্রেমা: তুমি খুশি হচ্ছ? মানে তুমি এই বাচ্চাটাকে মেনে নিবে?
রিদয়: কেন মেনে নিবনা তোমাকে না হয় ভালোনাই বাসলাম কিন্তু আমার বাচ্চাটাকে ত আর ফেলে দিতে পারিনা।
রিদয় প্রেমার কাছে তার বাচ্চার কথা শুনে অনেক ইমোশনাল হয়ে যায় তার মধ্যে বাবা হওয়ার বাসনা জেগে উঠে।
প্রেমা,: তাহলে চলো আমরা বিয়ে করে নেই আমি তুমি আর আমাদের সন্তান এক সাথে থাকব।
রিদয়: করব কিন্তু আমাকে আজকের দিনটা সময় দাও। আজকে আমার অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে সেইটা শেষ করতেই হবে আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি কাল আমরা বিয়ে করব।
প্রেমা: সত্যি ত? আবার পালিয়ে যাবেনা ত?
রিদয়: না, তুমি যে বাধনে আমাকে বেধে ফেললে আমি আর কোথায় যাব?
রিদয় প্রেমার থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়,রাস্তায় হাটতে হাটতে রিদয় খুব চিন্তিত হয়ে ভাবতে থাকে,,
রিদয়: প্রেমাকে বলে ত দিলাম ওকে বিয়ে করব কিন্তু প্রেমা যদি জানতে পারে আমি কত খারাপ একটা মানুষ আর আমার বাচ্চা!! ও যদি জানে কোনদিন যে ওর বাবা এত বড় একজন অপরাধী তখন কি হবে? না না আমি এই কাজ ছেড়ে দিব। সরে আসব এই পথ থেকে। নতুন করে বাচব, আজকের কাজটাই হবে আমার শেষ কাজ।
________________
বডিগার্ড : স্যার স্যার সর্বনাশ হয়ে গেছে।
আহিল: কি হয়েছে?
বডিগার্ড : ঝুমুর ম্যামকে কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা।
আহিল এই কথা শুনে লাফ দিয়ে উঠে পরে চেয়ার থেকে।
আহিল: খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা মানে কি? আমি ত তোমাদের ভরসায় ওকে পাঠালাম।
বডিগার্ড : সরি স্যার ম্যাম আসলে ফিমেল ওয়াশরুমে গেছিল ওখানে ত আর আমরা যেতে পারনা। অনেকক্ষন হয়ে গেছে ম্যাম বের হচ্ছিলনা দেখে আমরা একজন মহিলাকে ভেতরে পাঠাই উনি এসে বসে ম্যাম নাকি নেই।
আহিল,: ঝুমুর!! আমাএ ঝুমুর কোথায় গেল?
আহিল পাগল পাগল করতে থাকে তার মাথা কাজ করছেনা জলদি সে পুলিশকে ফোন করে।
ওইদিকে,,,
রিদয়: ঝুমুর আমাকে ক্ষমা করে দাও এই কাজ না করলে আমি এইখান থেকে যেতে পারবনা। আমি যখন থেকে শুনেছি আমি বাবা হবো আমার মধ্যের খারাপ মানুষটা শেষ হয়ে গেছে আগে এসব কাজ কিছু মনে হতোনা কিন্তু এখন আমার হাত কাপছে তুমি এখানে থাকো ঘুমিয়ে একটু পর ওরা এসে তোমাকে নিয়ে যাবে।
ঝুমুর সহ বাকি ৯ জন মেয়েকে গাড়িতে তোলা হচ্ছে এমন সময় ঝুমুরের জ্ঞান ফিরে।ঝুমুর ছটফট করতে থাকে মুক্তির জন্য সে তার মুখের বাধন খুলে কোন মতো।
ঝুমুর: রিদয় ভাইয়া আপনি? আপনি এই নোংরা কাজগুলোর সাথে জড়িত? প্লিজ আমাদের ছেড়ে দিন প্লিজ।
রিদয়: আমাকে ক্ষমা করে দিও ঝুমুর আমি নিরুপায়।
রিদয় আবার ঝুমুরের মুখ বেধে দেয়।
কালি: এই জলদি কর আর সময় নেই।
লোকগুলো মেয়েদের জোড়পূর্বক গাড়িতে তোলে ঝুমুর কথা না শোনায় কালি ওকে একটা থাপ্পড় মারতে যাবে ঠিক তখনি,,,
আহিল: খরবদার যদি ওর গায়ে হাত দিস আমার থেকে খারাপ কেউ হবেনা।
কালি: আরেহ এ কাকে দেখছি আমি মাছ যে নিজে থেকেই বরসিতে এসে উঠেছে। তোকে কত খুজেছি আহিল চৌধুরী ফাইনালি তুই ধরা দিলি তাও নিজে থেকে বাহ।
আহিল: মেয়েগুলোকে ছেড়ে দে সাথে ঝুমুরকেও।
কালি: কে হয় তোর?প্রেমিকা না বউ?
আহিল: দুটোই
কালি: তাহলে ত ছাড়া যাবেনা।আগে তুই বলত তুই এখানে এলি কিভাবে?
আহিল: আমি জানতাম তুই কিছু না কিছু করবি তাই আমি ঝুমুরের চুলের মধ্যে জিপিএস স্ট্যাকার লাগিয়ে দিয়েছিলাম।
কালি: আরে সাবাস!! সেই বুদ্ধি ত? কিন্তু আফসোস এই বুদ্ধি দিয়ে কোন কাজ হবেনা।
আহিল: আমি পুলিশকে সব বলে দিয়েছি ওরা আসতেছে।
কালি: পুলিশ আসতে আসতে তোদের খেল খতম।
এই মার ওকে।
আহিল একা যতটুকু পেরেছে ওদের সামলাচ্ছে কিন্তু শেষে রিদয় কালির কথা মতো পেছন থেকে আহিলকে আঘাত করলে আহিল মাটিতে লুটিয়ে পরে।ঝুমুর সব দেখছে কিন্তু সে কিছু করতে পারছেনা কান্না করা ছাড়া।
কালি: এই ওকে বেধে রাখ পুলিশ আশা পর্যন্ত। পুলিশের সামনেই ওকে আর ওর বউকে বাজি রেখে আমাদের ভাগতে হবে নাহলে বিপদ।
রিদয় কালির কথা মতো আহিলকে একটা রুমে নিয়ে যায় আর বেধে দেয়।
আহিল: রিদয় প্লিজ আমাকে যা করার করো কিন্তু ঝুমুরকে ছেড়ে দাও ও এখন প্রেগন্যান্ট প্লিজ ওর ক্ষতি করোনা।
রিদয়: ঝুমুর প্রেগন্যান্ট?
আহিল: হ্যা ওকে যেতে দাও আমি তোমার পায়ে পরছি
রিদয়: অনেক পাপ করে ফেলেছি জীবনে আজকে না হয় তোমাদের মুক্ত করে কিছুটা পাপ কমাই তুমি এখানে থাকো আমি ঝুমুরকে আনছি।
রিদয় কালির চোখ ফাকি দিয়ে আহিল আর ঝুমুরকে ওখান থেকে বের করে দেয়। ঝুমুর আর আহিল কিছুটা দূরে গেলেই পুলিশের দেখা পায় ওরা পুলিশ নিয়ে বাকি মেয়েদের উদ্ধার করতে কালিদের ডেরায় যায় গিয়ে দেখে রিদয়ের রক্তাক্ত দেহটা মাটিতে লুটিয়ে আছে।
ঝুমুর: রিদয় ভাইয়া!!
আহিল: রিদয় তোমার এমন অবস্থা কে করল।
রিদয়: আমি যা করেছি তার শাস্তি হয়তো এটাই আমার জীবন!! কালি বুঝে গেছিল আমি তোমাদের বের করে দিয়েছি তাই ও আমাকে গুলি করে এখান থেকে পালায়। আমার কাছে হয়তো বেশি সময় নেই আহিল তোমার কাছে আমার একটা অনুরোধ আছে প্লিজ তুমি এটা রেখো।
আহিল: হ্যাঁ রাখব বলো।
রিদয়: প্রেমা আমার হবু স্ত্রী ও এখন প্রেগন্যান্ট কাল আমাদের বিয়ের কথা ছিল আমি ওকে প্রমিস করেছি যে কাল আমি ওকে বিয়ে করব কিন্তু আমি হয়তো আর....আহ,,,আর সেই কথা রাখতে পারব না তুমি প্লিজ ওদের একটু দেখো।
ঝুমুর: রিদয় ভাইয়া আপনার কিছু হবেনা এক্ষুনি এম্বুলেন্স চলে আসবে।
রিদয়: আমার হাতে আর সেই সময় নেই ঝুমুর আমি যে পাপ করেছি তাতে এই শাস্তি আমার জন্য কিছুই নয়। আমার প্রেমাকে দেখো আর,,,আ,,,,,
আহিল; রিদয়!! রিদয়
পুলিশ : উনি আর নেই মিস্টার আহিল প্লিজ আপনারা নিজেদের সামলান।
রিদয়ের লাশ দাফন করার আগে প্রেমাকে খবর দেওয়া হয় প্রেমা উন্মাদের মতো ছুটতে ছুটতে আসে। এসে রিদয়ের ডেড বডি দেখে প্রেমা মাটিতে ধপ করে বসে পরে। চোখ থেকে আর অশ্রুর স্রোত বয়ে চলে,,
প্রেমা: তুমি ত আমাকে কথা দিলে রিদয় তুমি আসবে। আমরা ৩ জন এক সাথে থাকব তাহলে এখন কেন তুমি আমাকে একা করে আবার পালিয়ে গেলে কেন?
প্রেমা রিদয়ের লাশের উপর ঝাপিয়ে পরে,,,প্রেমা জানেনা তার এত কষ্ট কেন হচ্ছে তার বুক ফেটে যাচ্ছে প্রেমা ত এত কষ্ট পাওয়ার মেয়ে নয় তবু তার কান্না আজ বাধ মানছে না।
ঝুমুর প্রেমাকে সামলে কোন মতো দূরে নিয়ে এলে রিদয়ের দাফন কার্য সম্পন্ন হয়।
[ বিপদ যতই আসুক না কেন আহিল ঠিক তার ভালোবাসা দিয়ে ঝুমুরকে আগলে রাখবে। অটুট থাকুক আহিল- ঝুমুরের জুটি ]
আর কিভাবে অটুট থাকে তা জানতে হলে রিয়াক্ট কমেন্ট করে সাথেই থাকুন আপনাদের একটি রিয়াক্ট কমেন্ট আমাদের লিখতে উৎসাহিত করে 🎀
#চলবে
গল্প : রোম্যাঞ্চ_বাই_মিস্টেক [রিদয়ের করুন পরিণতি
পর্ব:৭
লেখিকা: শারমিন_আক্তার_ঐশী
© By Sakib KN Topician