02/12/2024
মুজিবনগর সাব রেজিস্ট্রারদের কাছে দুর্নীতি যেন শিল্পকলা !
‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সেজে চাকরি নেওয়ার পর এখন কোটি কোটি টাকার মালিক’
সাব্বির হোসেন: মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সাব রেজিস্ট্রাররা সীমাহীন অণিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। তারা আইনের অপব্যাখ্যা দিয়ে ব্যক্তি নামে খাস জমি নিবন্ধন, শ্রেণী পরিবর্তন করে ও ভূয়া খাজনা খারিজ নিয়ে জমি নিবন্ধন করছেন। এতে একদিকে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে জনগন নানাভাবে হয়রানীর শিকার হচ্ছে।
মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে ২০০৯ সালে ১৯০ জনকে সাব-রেজিস্ট্রার পদে আত্তীকরণ করা হয়েছিল উচ্চ আদালতের নির্দেশে। তাদের মধ্যে ১৯৬৮, ১৯৬৭, ১৯৬৬, ১৯৬৫ সালে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরাও ছিলেন যাদের বয়স মুক্তিযুদ্ধের সময় মাত্র ৩ বছর থেকে ৬ বছর ছিল। জালিয়াতির মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া নিয়ে তখন নিবন্ধন দফতরসহ আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। কারণ মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল। ওই সরকারের কর্মচারী হতে হলে তাদের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হওয়া বাঞ্ছনীয়। সে ক্ষেত্রে তাদের জন্মসাল হওয়া দরকার ১৯৫২ অথবা তার পূর্বে। কিন্তু নিয়োগ পাওয়াদের সবারই জন্ম তারিখ ছিল ১৯৫৩ সালের পরে। এর মধ্যে ১৩৮ জনের বয়সই ছিল ১০ বছরের নিচে। আর ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ সালে জন্ম তারিখ আছে এমন সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৫ জন। মূলত ৬৪ সালের পর যাদের জন্ম দেখানো হয়েছিল তারাই এখন কর্মরত রয়েছেন এবং সরকারী সিদ্ধান্ত অনুসারে তাদের চাকরির বয়স এক বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে মধ্য বয়সে সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে চাকরি পাওয়ার পর বেশির ভাগ কর্মকর্তাই রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার লক্ষ্যে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ আছে। অনেকের তেমন কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকার পরও ভুয়া শিক্ষাগত সনদ দেখিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার হয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এবং বেশি বয়সে যোগদান করায় তাদের চাকরি যেহেতু অল্প কয়েক বছরের জন্য তাই তারা এ অল্প সময়ের মধ্যেই প্রচুর অর্থ সম্পদ বানিয়ে নিচ্ছেন। অনেকেই টাকার বিনিময়ে ব্যক্তির নামে খাস জমি নিবন্ধন, শ্রেণি পরিবর্তন করে ও ভুয়া খাজনা খারিজ নিয়ে জমি নিবন্ধন করছেন। মুজিবনগর সরকারের কর্মচারীর ভুয়া পরিচয়ে চাকরি নেওয়া এবং দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগে ২০১২ সালে ৩৯ জনকে বরখাস্ত করেছিল মন্ত্রণালয়। তবে উচ্চ আদালতে গিয়ে তাদের অনেকেই আবার চাকরি ফিরে পান। দুর্নীতি ও জালিয়াতির দায়ে বরখাস্ত হলেও উচ্চ আদালতে গিয়ে চাকরি ফিরে পাওয়াদের মধ্যে একজন রংপুর সদরের সাব-রেজিস্ট্রার রামজীবন কুণ্ডু। তার জন্ম ১৯৬৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৬ বছরেরও কম। এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। সাবেক কর্মস্থল ডিমলায় কর্মরত অবস্থায় জালিয়াতির মাধ্যমে জমি রেজিস্ট্রি করে কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে যান রামজীবন । রামজীবন ২০১৯–এর ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২১–এর ডিসেম্বর পর্যন্ত ডিমলার সাবরেজিস্ট্রার ছিলেন। ২০২০ সালে ৮ হাজার ৬০০ এবং ২০২১ সালে ৯ হাজার ১০০টি দলিল সম্পাদন হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, রামজীবনের আগে উপজেলায় বছরে গড়ে ছয় থেকে সাড়ে ছয় হাজার জমি রেজিস্ট্রি হতো।
রামজীবন এখন রংপুর সদর উপজেলার সাবরেজিস্ট্রার। প্রতিদিন দলিল হতে লক্ষাধিক টাকা আয়ের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।এর আগে সাব-রেজিষ্টারের যোগসাজসে জাল দলিল করে জমি আত্মসাৎ করে দখলে নেয়ার চেষ্টায় লিপি খান ভরসা ও তার স্বামী সাইফুল উদ্দিন অরফ শিমুল ভরসা এবং সাব-রেজিষ্টার রামজীবন কুন্ডসহ ৬ জনকে আসামী করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন মৃত আলহাজ্ব করিম উদ্দিন ভরসার অপর পুত্র শফিকুল ইসলাম ভরসা।
রামজীবনের সীমাহীন দুর্নীতির ব্যাপারে অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে শিলিগুড়িতে আড়াই কোটি টাকা সমমূল্যের বাড়ি সহ রংপুরে বাড়ি , কোটি টাকার গাড়ি ও ঢাকায় ফ্ল্যাটের সন্ধান ।
অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে উত্তরার সাব-রেজিস্ট্রার লুৎফর রহমান মোল্লা, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার খোন্দকার গোলাম কবির, গাজীপুরের কালিয়াকৈরের নুরুল আমিন তালুকদার, টঙ্গীর আবু হেনা মোস্তফা কামাল, নরসিংদী সদরের সোহরাব হোসেন সরকার, চট্টগ্রামের রাউজানের আবু তাহের মো. মোস্তফা, সিরাজগঞ্জ সদরের আবদুর রশিদ মণ্ডল, বরিশাল সদরের সাব-রেজিস্ট্রার অসীম কল্লোল ও সাব-রেজিস্ট্রার ইফসুফ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের সবার বয়সই ছিল মাত্র ৫ থেকে ৬ বছর। কিন্তু তারপরও মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সেজে চাকরি নেওয়ার পর এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই দুদকে অভিযোগ আসার পর তদন্ত হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে সাব-রেজিস্ট্রার একেএম ফয়েজ উল্লাহ বলেছেন, সাব-রেজিস্ট্রার পদে চাকরি নেওয়ার পর তিনি কোনো সম্পদ অর্জন করেননি। তাদের আগের যেসব জমিজমা, প্লট ও ফ্ল্যাট ছিল, তা বিক্রি করে সেই টাকা তারা ব্যাংকে লেনদেন করেছেন। তাই তাদের কোনো অবৈধ সম্পদ নেই।
সাব-রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে কর্মরত থাকাকালীন দুর্নীতির অভিযোগে ২৩ নভেম্বর ২০২১ ইং তারিখে দলিল রেজিস্ট্রি বাবদ সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার বিরুদ্ধে দলিল রেজিস্ট্রি বাবদ সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, নোয়াখালী-এর সে সময়ের উপসহকারী পরিচালক আরিফ আহম্মেদের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করেছিল এনফোর্সমেন্ট টিম।
মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী পরিচয়ে চাকরি পাওয়া আরেক সাব-রেজিস্ট্রার মো. নূরুল আমিন তালুকদার ও তার স্ত্রী নূরুন্নাহার খানম এবং মেয়ে জিনাত তালুকদারের নামে থাকা স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তিসহ বিভিন্ন ব্যাংকে রাখা প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা জব্দ করেছে দুর্নীত দমন কমিশন (দুদক)। আদালতের নির্দেশে এসব সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।
৫ জুন ২০২৪ ইং তারিখে টাঙ্গাইলের সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নাজিমুদ্দৌলা সাব রেজিস্ট্রার নূরুল আমিন তালুকদারের সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ দেন।অভিযুক্ত নুরুল আমিন তালুকদার বর্তমানে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌর শহরের ঘাটান্দি এলাকায়।
এর আগে নূরুল আমিন তালুকদারের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ২৩ জুলাই টাঙ্গাইল জেলা দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের তথ্যমতে-নূরুল আমিন তালুকদারের ৪টি ব্যাংক হিসাব থেকে ১২ লাখ এক হাজার ১১১ টাকা, স্ত্রী নূরুন্নাহারের ১০টি ব্যাংক হিসাবে চার কোটি চার লাখ ৫৩ হাজার ৩৬৮ টাকা এবং কন্যা জিনাত তালুকদারের ৪টি ব্যাংক হিসাবে এক কোটি ২৪ লাখ ৮২ হাজার ১৩৩ টাকা, সর্বমোট ৫ কোটি ৪১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১২ টাকা জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া নূরুল আমিন তালুকদারের স্ত্রী নূরুন্নাহার খানমের তিন কোটি ৫৭ লাখ ৭০ হাজার ৯৪০ টাকা মূল্যের ৭৫ শতাংশ সম্পত্তি এবং কন্যা জিনাত
তালুকদারের ৭৭ লাখ টাকা মূল্যের ২টি ফ্ল্যাট, ও ২৯ লাখ টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেটকার জব্দের নির্দেশ দেন আদালত।
এ প্রসঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মো. নুর আলম জানান- এসবের বাহিরে তার কোনো সম্পদ আছে কিনা তা জানতে চাওয়া হবে। তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত সাবরেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলার প্রস্তুতি চলছে।
কালামপুরের সাব রেজিস্ট্রার মঞ্জুরুল ইসলাম নকল নবীশ পারুল আক্তারের মাধ্যমে সকল ঘুষের টাকা আদায় করে থাকেন বলে সরেজমিনে দেখা গেছে। হেবার ঘোষণা দলিলে ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নিয়ে থাকেন। সাফ কবলা দলিলে সকল কাজগপত্র সঠিক থাকার পরও দলিল মূল্যের ১% ও দলিল প্রতি ২ হাজার টাকা রেসেস্তা ফি ছাড়া দলিল করেন না বলেও জানা গেছে।
অবাধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ সহ ঘুষের রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন শ্রীপুরের সাব-রেজিস্ট্রার মোঃ ওসমান গণি মন্ডল । তার বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্য আর হয়রানি’তে দিশেহারা অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন সেবা নিতে আসা দাতা- গ্রহিতারা । এছাড়াও দুর্নীতির আখড়া হিসেবে পরিণত করেছেন শ্রীপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসকে। জানা যায়, মুজিবনগর কর্মচারী হিসেবে সাব রেজিস্ট্রার পদে ০৭-১২-২০০৯ সালে চাকুরিতে যোগদান করেন তিনি। অথচ তার জন্ম তারিখ দেওয়া হয়েছে ২৪-০৭-১৯৬৬ সাল। সে হিসেবে মাত্র ৭ বছর বয়সে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
মহাক্ষমতাধর সাব রেজিস্ট্রার ওসমান গণি মন্ডল বেপরোয়া হয়ে কাউকে তোয়াক্কা না করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন শ্রীপুর সাব রেজিষ্ট্রার অফিস। খোজ জানা যায়, সাব রেজিষ্ট্রার পদে চাকরিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন বি.এ পাশ ,কিন্তু সুত্রমতে তিনি এসএসসি পাশ । এইচ.এস.সি ও বি.এ পাশের শিক্ষা সনদ জাল করে এবং ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা দেখিয়ে সাব রেজিস্ট্রার পদে চাকরি বাগিয়ে নেন তিনি। সাব রেজিষ্ট্রার পদে চাকরিতে যোগদানের পর হতে বনে যান রাতারাতি কোটিপতি। রাজধানী উত্তরায় ১২নং সেক্টরে ১৩নং রোডে ৫ কাঠা জায়গার উপরে ছয়তলা বাড়ী নির্মাণ করেছেন কয়েক কোটি টাকা খরচ করে। এছাড়াও কুড়িগ্রামে দুই তলা ডুপ্লেক্স বাড়ী করেছেন কোটি টাকা খরচ করে। নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকা সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন সাব রেজিস্ট্রার ওসমান গণি।
অভিযোগ রয়েছে কেরানিগঞ্জ মডেল সাব রেজিষ্ট্রার দায়িত্বে থাকাকালীন বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানীর নিকট থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে শ্রেণি পরিবর্তন করে দলিল সম্পাদন করতেন। এছাড়াও মিনিয়াম সিটি হাউজিং কোম্পানীর মালিক তাজুল ইসলামের নিকট হইতেও দলিলের শ্রেণি পরিবর্তন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে। তার আর্থিক সুবিধার কারণে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার। সূত্রে আরোও জানা যায়, লোভনীয় জায়গায় পোস্টিং নেওয়ার জন্য সাবেক আইন মন্ত্রীর রাজনৈতিক এপিএস বাবু ও আইন মন্ত্রণালয়ের কর্তা ব্যক্তিদেরকে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে ২০২২ সালে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর সাব রেজিষ্ট্রার অফিসে সাব রেজিস্ট্রার পদে বদলি হয়ে আসেন তিনি। যোগদানের পর হতে বেপরোয়া হয়ে দলিলের ধরন বুঝে ঘুষ নির্ধারণ করে থাকেন তিনি। কোনো দাতা- গ্রহিতা কিংবা দলিল লেখকগণ তার দাবীকৃত ঘুষের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে নাল জমি হয়ে যায় ভিটা, আবাসিক অথবা খাস জমির দোহাই দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয় বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দলিল লেখকগণ অভিযোগ করেন । এছাড়াও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিরোধপূর্ণ জমি কিংবা বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলমান থাকা জমি রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার অভিযোগ আছে সাব রেজিস্ট্রার ওসমান গণির বিরুদ্ধে । হিন্দুদের পূজা মন্ডবের জায়গা সংক্রান্ত মামলা বিজ্ঞ আদালতে চলমান থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র তার আর্থিক লাভবানের কারণে পূজা মন্ডবের জমিও রেজিস্ট্রি করে দিতেও পিছপা হননি ওসমান গণি মন্ডল। টাকা পেলে সরকারী বন বিভাগের জমিও ব্যক্তি মালিকানা রেজিষ্ট্রি করে থাকেন ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে এক শ্রেণির অসাধু দলিল লেখকের সহযোগিতায়। বিগত আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের বড় নেতা বলে দাবী করতেন।
সাব রেজিস্ট্রার আবু তাহের মো: মোস্তফা বর্তমানে কর্মরত আছেন চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জে । এর আগে
সাভারের সাব রেজিস্টার হিসেবে কর্মরত থাকা আবু তাহের মোঃ মোস্তফার বিরুদ্ধে কমিশন দলিলের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি আদায়, দলিল দাখিল দেয়ার সময় অতিরিক্ত টাকা গ্রহনসহ ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছিল ।
এদিকে মন্ত্রী ও সচিবের নামে এখনো ‘উপরি’ তোলেন ফেনী সদর উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকার। জায়গা-জমি, বাড়ি ও ফ্ল্যাটসহ যেকোনো কিছু রেজিস্ট্রেশন করতে হলে সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়াও বাড়তি অর্থ দিতে হয় গ্রাহককে। তা না হলে জমি কেনাবেচায় সকলকে পোহাতে হয় দুর্ভোগ। রেজিস্ট্রেশনের জন্য মাসের পর মাস ঘুরতে হয়।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ফেনী সদর হাসপাতালের পেছনে সুলতানপুর মৌজায় সোয়া চার শতক জায়গায় হস্তান্তর করেন আহাছানুল। রিয়াজ উদ্দীন পাওয়ার গ্রহণ করেন নির্ধারিত ফির বাইরে আরও ২০ হাজার টাকা বেশি দিয়ে। কেন ২০ হাজার টাকা বেশি দিতে হবে প্রশ্ন করা হলে সাব রেজিস্টার বোরহান জানান, মন্ত্রী-সচিবদের উপরি দিতে হয়। এ সময় তার সহকারী দুই জন বলেন, মন্ত্রী-সচিবদের উপরি কি স্যারের পকেট থেকে দেবে। মন্ত্রী তো এখন নাই? এর উত্তরে সহকারী দুই জন বলেন, চেয়ার কি ফাঁকা!
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দলিল লেখকরা আগে সাব রেজিস্ট্রারের উপরির ফয়সালা করেন। সেই ফয়সালা শেষ হলে তারপর জমি রেজিস্ট্রশন হয়। তা না হলে নানা অজুহাতে তাদের ঘোরানো হয়।
এ প্রসঙ্গে সাব রেজিস্ট্রার বোরহানকে মোবাইল ফোনে কল করে সাড়া পাওয়া যায়নি। ম্যাসেজ দিয়ে জানতে চাইলেও উত্তর পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, প্রতিটা রেজিস্ট্রিতে ১০ হাজার থেকে শুরু করে ২০-৫০ হাজার টাকাও উপরি নেন সাব রেজিস্টার বোরহান। এ ছাড়া মামলা মোকদ্দমা আছে এরকম জায়গাও রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ আছে বোরহানের বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক জায়গার মালিককে দিয়ে রেজিস্ট্রি অফিসে ধরে এনে রেজিস্ট্রি করানোর মতো অনিয়মও তার রয়েছে। সবগুলোতে তিন ও পাঁচ লাখ টাকাও উপরি নেন বোরহান।
এদিকে সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকার ও তার স্ত্রী নাসরিন হকের অঢেল সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। নামে-বেনামে এই দম্পতির রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট, বাড়ি এবং বিভিন্ন ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার এফডিআর। এ ছাড়া এই দম্পতির বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং তারিখে কালবেলায় ‘এক ভবনেই আট ফ্ল্যাট সাব-রেজিস্ট্রারের স্ত্রীর, স্বামীর দুর্নীতির টাকায় সম্পদ’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এর পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। রাষ্ট্রীয় একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত শুরু করে।
জানা গেছে, বিএফআইইউ গত ১ জানুয়ারি সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকার এবং তার স্ত্রী নাসরীন হকের সম্পদ বিবরণ চেয়ে ৩টি দপ্তরে একাধিক চিঠি দেয়। যার মধ্যে রয়েছে নিবন্ধন অধিদপ্তর, বাংলাদেশে কর্মরত সব তপশিলি ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার এবং বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ।
নিবন্ধন শাখার চিঠিতে বোরহান উদ্দিন সরকার ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা সব স্থাবর সম্পত্তি থাকলে তার তথ্যাদি চাওয়া হয়। তপশিলি ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বোরহান এবং তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে অতীতে কিংবা বর্তমানে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেসব হিসাব সংক্রান্ত তথ্যাদি ৩ কর্মদিবসের মধ্যে প্রেরণ করতে বলা হয়। এ ছাড়া পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে পাঠানো চিঠিতে বোরহান উদ্দিন সরকার, স্ত্রী নাসরিন হক এবং তাদের সন্তান নাজমুল আহসানের পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্যসহ আন্তর্জাতিক বহির্গমনবিষয়ক সব তথ্যাদি প্রেরণের অনুরোধ করা হয়। এর পরই মেলে এই দম্পতির অঢেল সম্পত্তির সন্ধান।
বিএফআইইউ সূত্রে জানা গেছে, অনুসন্ধানে এই দম্পতির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া এই দম্পতি দুটি ব্যাংক থেকে একাধিকবার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিলেও তা কয়েক মাস পরই এককালীন পরিশোধ করে দেন, যা অস্বাভাবিক এবং তাদের আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়। এ ছাড়া কয়েকটি ঋণ সমন্বয় করা হয় একাধিকবার।
সংশ্লিষ্ট নথিপত্র বলছে, আইডিএলসি ব্যাংক থেকে ২০১৮ সালের ১৫ জানুয়ারি ১ কোটি ২০ লাখ টাকার গৃহনির্মাণ ঋণ গ্রহণ করা হয়। এই টাকা ৩০৭ কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য। তবে মাত্র ৪টি কিস্তি প্রদানের পরই ২০১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা এককালীন পরিশোধের মাধ্যমে ঋণটি পুনরায় সমন্বয় করা হয়। সাউথইস্ট ব্যাংকে নাসরিন হকের নামে ১ কোটি টাকার একটি এফডিআর হিসাব লিয়েন রেখে ২০১৮ সালের ১৯ মার্চ ৮০ লাখ টাকার ১ বছরমেয়াদি ওভার ড্রাফট ঋণ (হি: নং ৭৩১-০৬) সুবিধা গ্রহণ করা হয়, যা প্রতি বছর নবায়নযোগ্য। ঋণটি ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এবং ওই বছরের ১১ জুলাইয়ে যথাক্রমে ৪৭ লাখ ও ৩০ লাখ টাকা প্রদানের মাধ্যমে সমন্বয় করা হয়। একই সময়ে ব্যাংকটিতে নাসরিন হকের নামে আরও একটি ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা মূল্যমানের এফডিআর হিসাব ছিল।
এ ছাড়া একই ব্যাংক থেকে ব্লিস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড কর্তৃক ব্লিস বাসেত ক্যাসেল নামীয় তৈরিকৃত বাড়ির জন্য ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা মূল্যমানের ৩টি ফ্ল্যাট ক্রয়ের এ ঋণটি গ্রহণের সময় গ্রাহক কর্তৃক ১০ কোটি টাকা মূল্যমানের জমি ও বিল্ডিং রয়েছে বলে জানানো হয়। ফ্ল্যাট ৩টি ক্রয়ের জন্য ২০২৮ সালের ১৫ নভেম্বর ব্যাংক থেকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ গ্রহণ করা হয়। ঋণ হিসাবটির বিপরীতে মাসিক কিস্তির পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা। এরপর ২০২১ সালের ২৮ জুন এককালীন নগদ ৬৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা দিয়ে ঋণ হিসাবটি সমন্বয় করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, বোরহান উদ্দিন সরকার ২০১৭-১৮ সালে রিটার্নে মাত্র ৬ লাখ ২৬ হাজার টাকা আয় এবং নিট সম্পদ ৪৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকা দেখিয়েছেন। এ ছাড়া তার স্ত্রী নাসরিন হক ২০১৭-১৮ সালে রিটার্নে মাত্র ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা আয় এবং নিট সম্পদ ২৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা দেখিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্যাংক ঋণ নিয়ে কোনো বাড়ি বা ফ্ল্যাট ক্রয় করলে সেসব সম্পত্তির ওপরে সরকারকে কোনো রাজস্ব দিতে হয় না। তবে নগদ টাকা দিয়ে বাড়ি বা ফ্ল্যাট ক্রয় করলে এসব সম্পত্তির ওপর রাজস্ব দিতে হয়। যে কারণে এই সাব-রেজিস্ট্রার দম্পতি নগদ টাকা থাকার পরও ব্যাংক ঋণে বাড়ি-ফ্ল্যাট ক্রয় করে মোটা অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন।
মুজিব নগর সরকারের কর্মচারী পরিচয়ে সাব রেজিস্টার পদে চাকরি পাওয়াদের একজন বরিশাল সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার অসীম কল্লোল নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। নানা উপায়ে কিনেছেন বিলাসবহুল দামি গাড়ি ও একাধিক বহুতল ভবন। ঢাকায় এবং বরিশালে ৩টি ফ্ল্যাটসহ সরকারি জমিতে করেছেন পাঁচতলা ভবন। নামে বেনামে কিনেছেন একরের পর একর জমি। স্ত্রীর নামেও কিনেছেন একাধিক জমি, করেছেন মাছের ঘেরসহ এগ্রো ফার্ম।
বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে তার জমি ও সম্পদের খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্র পোর্ট রোড এলাকায় সরকারি খাসজমিতে করেছেন পাঁচতলা ভবন। ঢাকায় কিনেছেন দুটি ফ্ল্যাট, বরিশাল নগরীর হাসপাতাল রোড এলাকার অগ্রণী হাউজিং লিমিটেডের ড্রিম প্যালেসে কিনেছেন কোটি টাকার ফ্ল্যাট। (ফ্ল্যাট নং- ৩-অ)। এছাড়া সদর উপজেলার সায়েস্তাবাদে ১ একর ২৫ শতাংশ জমিতে স্ত্রীর নামে করেছেন সোনার বাংলা মৎস্য খামার ও এগ্রো ফার্ম।শহরতলির কাগাসুরা মুকুন্দপট্টি রাস্তার দুই পাসে ৮০ শতাংশ জমি কিনে করেছেন সুগন্ধা এগ্রো অ্যান্ড ফিশারিজ। একই এলাকায় কাগাসুরা বাজারের পাশে একশ শতাংশ জমি কিনে তার ওপর করেছেন মালটা বাগান। নগরীর ৪নং ওয়ার্ডে কিনেছেন ১২ শতাংশ প্লট ও লাকুটিয়া বাজার এলাকায় ২০ শতাংশ জমির ওপর করেছেন সুগন্ধা পোল্ট্রি খামার। এছাড়া তালতলী বাজারে স্ত্রীর নামে রয়েছে ইট, বালু ও রড সিমেন্টের দোকান।এছাড়া নিজের, স্ত্রীর ও ছেলের নামে রয়েছে প্রচুর সম্পদ। চাকরির সুবাদে যখন যেখানে বদলি হয়েছেন সেখানেই কিনেছেন জমি ও ফ্ল্যাট। তার সব সম্পত্তির পরিমাণ কয়েকশ কোটির বেশি বলে জানান স্থানীয়রা। একজন সাব-রেজিস্ট্রারের এত সম্পত্তির উৎস খতিয়ে দেখার দাবিও জানান স্থানীয়রা।
অনুসন্ধানে মুজিবনগর সরকারের ভুয়া কর্মচারী পরিচয়ে চাকরিরত ১৪জন সাব রেজিস্টারের অবসরের সময় ১বছর করে বাড়ানোর ব্যাপারে জানা গেছে । (১)মো: মঞ্জুরুল ইসলাম- নিজ জেলা,বরগুনা। এক বছর বাড়িয়ে ১৫-০৬-২০২৬ অবসরে যাবেন। (২) মো: আবুল হোসেন, নিজ জেলা- মাদারীপুর , ১০-১১-২৬ ইং তারিখে অবসরে যাবেন।
(৩) আবু হেনা মোস্তফা কামাল, জেলা- দিনাজপুর । ১৬-০৭-২৫ইং তারিখে অবসরে যাবেন (৪) নুরুল আমিন তালুকদার, জেলা- টাংগাইল।
এক বছর বাড়ানোর পর ১১-১২-২০২৪ ইং তারিখে অবসরে যাবেন।
(৫) ওসমান গনি মন্ডল।(কুড়িগ্রাম)। ২৩-০৭-২৬ ইং তারিখে অবসরে যাবেন। (৬) ইউসুফ আলী মিয়া, নিজ জেলা বরিশাল। এক বছর বাড়িয়ে ২৭-০১-২০২৫ ইং তারিখে অবসরে যাবেন । (৭)আবু তাহের মো: মোস্তফা, লালমনিরহাট ।এক বছর বাড়িয়ে ১৮-০৮-২০২৫তে অবসরে যাবেন।
(৮). অসীম কল্লোল (ঝালকাঠি) । এক বছর বাড়িয়ে ১২-০৮-২৫ ইং তারিখে অবসরে যাবেন।
(৯) রামজীবন কুন্ডু(কুড়িগ্রাম) । রংপুর সদরে কর্মরত। এক বছর বাড়িয়ে ১০-০৯-২০২৫ ইং তারিখে অবসরে যাবেন। (১০)মিজানুর রহমান, (কুড়িগ্রাম)। এক বছর বাড়িয়ে ২৪-১২-২০২৫ ইং তারিখে অবসরে যাবেন,
(১১) আব্দুর রশিদ মন্ডল(রংপুর)। ৩০-১২-২৫ ইং তারিখে অবসরে যাবে্ (১২) রফিক উদ্দিন (চাঁদপুর)। ৩১-০১-২৫ ইং তারিখে অবসরে যাবেন,
(১৩) বোরহান উদ্দিন সরকার (মানিকগঞ্জ)৷ এক বছর বাড়ানোর পর ৩০-১২-২৫ ইং তারিখে অবসরে যাবেন ।
(১৪) ওমর ফারুক(বরিশাল)৷ । এক বছর বাড়ানোর পর ১৪-০৬-২৫ইং তারিখে অবসরে যাবেন।
আইন মন্ত্রণালয় ও নিবন্ধন অধিদফতরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এ সাব-রেজিস্ট্রাররা কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কত সালে পাস করেছেন, মুক্তিযুদ্ধকালে কোন সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, মুজিবনগর সরকারে তারা কোন পদে কর্মরত ছিলেন তার কোনো তথ্য মন্ত্রণালয় বা নিবন্ধন অধিদফতরের কাছে নেই। মন্ত্রণালয় শুধু উচ্চ আদালতের নির্দেশে একটি তালিকা পেয়ে তাদের আত্তীকরণ করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিবন্ধন অধিদফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক মো. আবদুস ছালাম আজাদ বলেন, মুজিবনগর কর্মচারী হিসেবে সাব-রেজিস্ট্রার পদে আত্তীকরণ হওয়া কর্মকর্তাদের শিক্ষাগত সহ অন্যান্য ব্যক্তিগত কোনো তথ্য অধিদফতরে থাকে না। এটা নিয়োগকারী মন্ত্রণালয়ের কাছে থাকার কথা। তবে তাদের উচ্চ আদালদের নির্দেশে মন্ত্রণালয় অধিদফতরে পদায়ন করেছে। তারা যোগদান করার পর তাদের জন্য ফাইল খোলা হয়েছে। তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারও বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।