20/05/2024
ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যু নতুন এক রহস্যের জন্ম দিয়েছে। প্রথমত এই ''দুর্ঘটনায়'' ইরানী প্রেসিডেন্ট ছাড়াও আরও দু'জন গুরুত্বপূর্ণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজন হলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ও অন্যজন সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম।
তৃতীয় ব্যক্তি, অর্থাৎ আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম অন্য দুজনের থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ নন, বরং ভবিষ্যৎ চিন্তায় তিনি প্রথম দুইজনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেমকে মনে করা হতো ইরানের আগামীর সর্বোচ্চ নেতা। বর্তমান সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির মৃত্যুর পর এই পদে আলী আলে-হাশেম অধিষ্ঠিত হওয়ার খুব সম্ভাবনা ছিল।
ইরানের ক্ষমতা কাঠামোর ধরণে এক নাম্বার হলেন সর্বোচ্চ নেতা। দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট, তৃতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্রের অবস্থান এর পর পরেই। সে হিসেবে বলা যায় ইরানের প্রধান ৪ জন ক্ষমতাধরের ৩ জন মারা গেলেন।
প্রশ্ন হচ্ছে, এমন গুরুত্বপূর্ণ ৩ জন কেন একই হেলিকপ্টারে সফরে গেলেন? তাও আবার সেই হেলিকপ্টার প্রায় অর্ধশত বছর পুরনো!
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাকি হেলিকপ্টারগুলো ঠিকঠাক থাকলেও প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হলো কেন!
হোক না পাশের দেশ, তারপরেও কি প্রেসিডেন্টের বিদেশ সফর হেলিকপ্টারে করে যাওয়া যৌক্তিক?
ইরানের মতো আধুনিক বিজ্ঞানে অনেকটাই স্বনির্ভর একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থা, আবহাওয়া অধিদপ্তর কিভাবে এমন বিপদজনক স্থান দিয়ে প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারকে যাওয়ার ক্লিয়ারেন্স দিলো!
ইতরাইল-ইরান বিরোধ এখন প্রকাশ্য। ইবরাহীম রাইসি একমাত্র ইরানী প্রেসিডেন্ট যার আমলে ইতরাইলে সরাসরি হামলা হয়েছে। এমন একজন প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তায় এত এত ফাঁকফোকর!
এমন অনেক প্রশ্নের জবাব এখনো পাওয়া যায়নি। হয়তো কখনো পাওয়া যাবেও না।
ইরান নিয়ে আমাদের আলাদা বক্তব্য রয়েছে। আমরা ইরানের সিরিয়া ও ইরাকনীতিসহ অনেক বিষয়ে স্পষ্ট দ্বিমত রাখি। এসব দেশে তারা নরপশুর ভূমিকায় ছিলো ও আছে। তবে একসাথে এমন ৩ জন গুরুত্বপূর্ণ নেতার মৃত্যু বৃহৎ অর্থে মুসলিম বিশ্বের জন্য অশনিসংকেত।
-মাহফুজ খন্দকার