30/07/2025
প্রতারক সাংবাদিক মনসুর মুন্নার কুকর্ম ফাঁস — ভুক্তভোগীদের মানববন্ধন
চকরিয়া ও কক্সবাজার অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতার পরিচয়ে চাঁদাবাজি, প্রতারণা ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে মনসুর মুন্না নামের এক ব্যক্তি। নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে, অভিযোগ উঠেছে এমন বহু ঘটনায়।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মনসুর মুন্না সুন্দরী নারীদের ব্যবহার করে ফাঁদ পাতেন। তিনি একাধিক নারীকে বিয়ে করে তাঁদেরকে মাদক ব্যবসা, বিশেষ করে ইয়াবা ও অস্ত্র চোরাচালানের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়িয়েছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ের অভিযোগ রয়েছে, যেখানে স্ত্রীদের ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইয়াবার চালান সরবরাহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও বিভিন্ন ফেইক আইডির মাধ্যমে তিনি নিরীহ ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে মানহানিকর পোস্ট দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করে আসছেন।
সম্প্রতি ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও তাঁর ভাই জয়নালের দোকানে গিয়ে ‘আপনারা মদ-গাঁজা বিক্রি করেন’—এই অভিযোগ তুলে মনসুর মুন্না চাঁদা দাবি করেন। ব্যবসায়ীরা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি ভয় দেখিয়ে বলেন, পত্রিকায় ও সামাজিক মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করবেন। পরবর্তীতে, মানসম্মানের কথা চিন্তা করে তাঁরা বিকাশের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই মনসুর মুন্না আবার ফোন করে আরও ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না পেয়ে, তিনি একাধিক ফেইক আইডি থেকে তাদের সম্মানহানিকর পোস্ট ছড়ান।
এই ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এলাকার চার-ছয়শ নারী-পুরুষ ও ভুক্তভোগীরা মিলে চকরিয়া পৌরসভার চিংড়ি চত্বরে মানববন্ধন করেন। বক্তৃতায় একাধিক ভুক্তভোগী সরাসরি মনসুর মুন্না ও তাঁর স্ত্রীর কুকর্মের বর্ণনা দেন।
মনসুর মুন্নার স্ত্রীও এই প্রতারণায় সক্রিয় ভূমিকা রাখেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি অন্তত চারজন পুরুষের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে, গোপনে ভিডিও ধারণ করে, পরবর্তীতে সেই ভিডিওর ভয় দেখিয়ে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এই চারজনের মধ্যে একজন অ্যাডভোকেট, একজন পুলিশ কর্মকর্তা, একজন ব্যবসায়ী এবং একজন হিন্দু যুবক রয়েছেন।
এছাড়া জানা গেছে, মনসুর মুন্না ও তাঁর স্ত্রী চকরিয়া সবুজবাগ এলাকার জালাল ম্যানশনের একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। তারা গত দেড় বছরের ভাড়া পর্যন্ত পরিশোধ করেননি। এমনকি বাসা মালিককেও ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে রেখেছেন।
তিন মাস আগে একজন ভুক্তভোগীকে চাঁদাবাজির মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ৪০,০০০ টাকা আদায় করেন মনসুর মুন্না। ভুক্তভোগীর মামা সেই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে সরাসরি এই ঘটনা তুলে ধরেন।
এখন সময় এসেছে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার, যাতে এই প্রতারকের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যায় এবং নিরীহ মানুষ প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পায়।