Mughal Sultanate

Mughal Sultanate Sultanate

প্রশ্ন : গরুর ভুড়ি (বট) খাওয়া কি হালাল??উত্তর : যে কোন হালাল পশুর ভুড়ি বা বট খাওয়া হালাল ও বৈধ। তবে খুব ভাল ভাবে পবিত্র-...
25/04/2024

প্রশ্ন : গরুর ভুড়ি (বট) খাওয়া কি হালাল??

উত্তর : যে কোন হালাল পশুর ভুড়ি বা বট খাওয়া হালাল ও বৈধ। তবে খুব ভাল ভাবে পবিত্র-পরিস্কার করে খাবে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

قل لا أحد في مَا أُوحِيَ إِلَيَّ مُحَرَّمًا عَلَى طَاعِمٍ يَطْعَمُهُ إِلَّا أَن يَكُونَ مَيتَةً أو دَمًا مَّسْفُوحًا أَوْ لَحْمَ خِنزِيرٍ فَإِنَّهُ رِجْسٌ

আপনি বলে দিন, যা কিছু বিধান ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে, তন্মধ্যে আমি কোন হারাম খাদ্য পাই না কোন ভক্ষণকারীর জন্যে, যা সে ভক্ষণ করে; কিন্তু মৃত অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের মাংস এটা অপবিত্র। - সূরা আল আনআ'ম- ১৪৫

আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,

وَيُحِلُّ لَهُمُ الطَّيِّبَاتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ الْخَبَائِثَ} [الأعراف: 157]

'তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষণা করেন ও নিষিদ্ধ করেন নোংরা বস্তুসমূহ'। - সূরা আল-আ'রাফ -১৫৭।

রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

'তোমাদের জন্য দু'টি রক্ত হালাল করা হয়েছে। তা হল কলিজা ও প্লীহা'। - সুনানে ইবনু মাজাহ, হা-৩৩১৪; মিশকাত, হা-৪২৩২।

বিশিষ্ট তাবিঈ কাতাদা রহিমাহুল্লাহ বলেন,

حرم من الدماء ما كان مسفوحا ، فأما لحم خالطه دم فلا بأس به

হারাম করা হয়েছে প্রবাহিত রক্ত; সুতরাং যে রক্ত গোশতের সঙ্গে লেগে থাকে তাতে কোন অসুবিধা নেই। (তাফসির ইবন কাছীর ৩/৩৫৩)

হালাল প্রাণীর প্রবাহিত রক্ত খাওয়া হারাম ও নিষিদ্ধ। এ ছাড়া ৬টি জিনিস খাওয়া মাকরূহ তাহরীমী।

১. পিত্ত, ২. মূত্রথলি, ৩. চামড়া ও গোশতের মাঝে সৃষ্ট জমাট মাংসগ্রন্থি, ৪. নর পশুর গুপ্তাঙ্গ, ৫. অণ্ডকোষ, ৬. মাদা পশুর গুপ্তাঙ্গ।

এছাড়া বাকি সবই খাওয়া জায়িয।

হাদিসে এসেছে-

وروي عن مجاهد أنه قال: «كره رسول الله صلى الله عليه وسلم من «الشاة الذكر والأنثيين والقبل والغدة، والمرارة، والمثانة والدم

বিখ্যাত তাবেয়ি হজরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বকরির সাত জিনিস (খাওয়াকে) অপছন্দ করেছেন। (তাহলো)- প্রবাহিত রক্ত, পিত্ত, মূত্রথলি, মাংসগ্রন্থি, নর-মাদা পশুর গুপ্তাঙ্গ এবং অণ্ডকোষ।' – সুনানে বায়হাকি, মাজমাউয যাওয়াইদ।

বাদায়িউস সানায়ি' গ্রন্থে এসেছে,

وَأَمَّا بَيَانُ مَا يَحْرُمُ أَكُلُهُ مِنْ أَجَزَاءِ الْحَيَوَانِ الْمَأكُولِ فَالَّذِي يَحْرُمُ أَكَلُهُ مِنْهُ سبعة وهي: الدم المسفوح، والذكر والأنثيان والقبل، والغدة، والمثانة والمرارة. لقوله عز شأنه : ويحل لهم الطيبات ويحرم عليهم الخبائث) [الأعراف: 7/157] وهذه الأشياء السبعة مما تستخبثه الطباع السليمة. وروي عن مجاهد أنه قال: «كره رسول الله صلى الله عليه وسلم من الشاة الذكر والأنثيين، والقبل والغدة، والمرارة والمثانة والدم والمراد منه كراهة التحريم، بدليل أنه جمع بين الأشياء الستة وبين الدم، في الكراهة، والدم المسفوح محرم. والمروي عن أبي حنيفة أنه قال: «الدم حرام، وأكره الستة أطلق اسم الحرام على الدم المسفوح، لأنه ثبت بدليل مقطوع به وهو المفسر من الكتاب قال الله تعالى - { أو دَمًا مسْفُوحًا . (بدائع الصنائع، كتاب التضحية، باب صفة التضحية، فضل في بَيَانُ مَا يَحْرُمُ أَكَلُهُ مِنْ أَجَزَاءِ الْحَيَوَانِ الْمَأكُول - 5/61، وكذا في الفتاوى الهندية - 5/290، وفى رد المحتار، كتاب الأضحية

'হালাল প্রাণীর সাতটি অংশ খাওয়া নিষেধ। তাহল, প্রবাহিত রক্ত, পুরুষ লিঙ্গ, অন্ডকোষ, স্ত্রী লিঙ্গ, চামড়ার নিচের টিউমারের মতো উঁচু গোশত, মুত্রথলি, পিত্ত। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন, তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষণা করেন ও নিষিদ্ধ করেন নোংরা বস্তুসমূহ।-সূরা আল-আ'রাফ ১৫৭। আর এই সাতটি বস্তু এমন যা মানুষ স্বভাবত ঘৃণা করে। আর মুজাহিদ রহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত, 'রসূলুল্লাহ বকরির পুরুষ লিঙ্গ, অন্ডকোষ, স্ত্রী লিঙ্গ, চামড়ার নিচের টিউমারের মতো উঁচু গোশত, পিত্ত, মুত্রথলি ও প্রবাহিত রক্ত অপছন্দ করেছেন।' এখানে মাকরুহ (অপছন্দ) দ্বারা উদ্দেশ্য, মাকরুহে তাহরিমি। কেননা, উক্ত ছয়টি বস্তুর উল্লেখ প্রবাহিত রক্তের সাথে করা হয়েছে। আর প্রবাহিত রক্ত হারাম। ইমাম আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত, রক্ত হারাম, ছয়টি বস্তু মাকরুহ। রক্ত হারাম; কেননা, তা অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত। আর তাহল, আল্লাহ তাআ'লার বাণী - أوْ دَمًا مُسْفُوحًا অথবা প্রবাহিত রক্ত।'- বাদায়িউস সানায়ি', ৫/৬১।

আরো দেখুন- ফাতাওয়া হিন্দিয়া, ৫/২৯০, রদ্দুল মুহতার, শামী।

উপরোক্ত পশুর যে সব অঙ্গ খাওয়া হারাম ও অবৈধ বলা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে ভুড়ি বা বটের কথা উল্লেখ নাই। সুতরাং অন্যান্য হালাল অঙ্গের ন্যায় ভুড়ি খাওয়াও হালাল ও বৈধ।

যদিও কেউ ভুড়ি খাওয়াকে মাকরূহ বলেছেন সেটা তাদের নিকট রুচিবিরূদ্ধ মনে হওয়ায়; কিন্তু সমাজে ভুড়ি বা বট খাওয়ার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে, যার দ্বারা বুঝা যায়, সবার রুচিবিরুদ্ধ নয়। والله تعالى أعلم

উত্তর প্রদান :
M***i Masum Billah হাফিজাহুল্লাহ
সিনিয়র মুহাদ্দিস ও মুফতি - জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম, ঢাকা।

14/04/2024

প্রচলিত বিভিন্ন কুসংস্কারঃ

১. পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পূর্বে ডিম খাওয়া যাবে না। তাহলে পরীক্ষায় ডিম (গোল্লা) পাবে।
২. নতুন বউকে কোলে করে ঘরে আনতে হবে, আর কোলে নিবেন দুলা ভাই।
৩. দোকানের প্রথম কাস্টমার ফেরত দিতে নাই।
৪. নতুন বউকে শ্বশুর বাড়ীতে নরম স্থানে বসতে দিলে বউয়ের মেজাজ নরম থাকে।
৫. বিড়াল মারলে আড়াই কেজি লবণ ‘সদকা’ করতে হয়।
৬. ওষুধ খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বললে রোগ বেড়ে যায়।
৭. জোড়া কলা খেলে জমজ সন্তান জন্ম নেয়।
৮. রাতে নখ, চুল, দাঁড়ি-গোফ ইত্যাদি কাটতে নেই।
৯. প্রথম সন্তান মারা গেলে পরের সন্তানের কান ফুটো করে দিতে হয়, তাতে সে দীর্ঘ হায়াত পায়।
১০. ভাই-বোন মিলে মুরগি জবাই করা যায় না।
১১. ঘরের ময়লা পানি রাতে ঘরের বাইরে ফেলতে হয় না, তাতে সংসারে অমঙ্গল হয়।
১২. ঘর থেকে বের হওয়ার সময় পেছন থেকে ডাক দিলে তার যাত্রা অশুভ হয়।
১৩. ব্যাঙ ডাকলে বৃষ্টি হয়।
১৪. কোরআন শরীফ হাত থেকে পড়ে গেলে আড়াই কেজি চাল ‘সদকা’ করতে হয়, না হলে মাথার চুল উঠে যায়।
১৫. ছোট বাচ্চাদের দাঁত পড়লে তা ইঁদুরের গর্তে ফেলতে হয়, না হলে দাঁত আঁকাবাঁকা হয়।
১৬. মুরগির মাথা খেলে মা-বাবার মৃত্যুর সময় কাছে থাকার সুযোগ হয় না।
১৭. ঘর থেকে বের হওয়ার সময় পেছন দিকে ফিরে তাকানো নিষেধ; তাতে যাত্রা ভঙ্গ হয় বা যাত্রা অশুভ হয়।
১৮. ঘরের প্রবেশকৃত রোদে অর্ধেক শরীর রেখে বসা নিষেধ। তাহলে জ্বরে আক্রান্ত হতে হয়।
১৯. রাতে বাঁশ কাটা যাবে না।
২০. রাতে গাছের পাতা ছিঁড়া ও ফল তোলা নিষেধ।
২১. ঘর থেকে বের হয়ে বিধবা নারী চোখে পড়লে যাত্রা অশুভ হয়।
২২. ঘরের চৌকাঠে বসা, দারিদ্রতার লক্ষণ।
২৩. মহিলাদের বিশেষ দিনে সবুজ কাপড়ের কিছু একটা পড়তে হয় এবং তাদের হাতের কিছু খাওয়া যায় না।
২৪. বিধবা নারীকে অবশ্য অবশ্যই সাদা কাপড় পরিধান করতে হবে।
২৫. ভাঙা আয়না দিয়ে চেহারা দেখা যাবে না, তাতে অমঙ্গল হয়, চেহারার ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয়।
২৬. ডান হাতের তালু চুলকালে টাকা আসে, আর বাম হাতের তালু চুলকালে বিপদ আসে।
২৭. নতুন কাপড় পরিধান করার আগে তা আগুনে ছ্যাঁকা দিতে হয়।
২৮. নতুন কাপড় পরিধান করার পর পিছনে তাকাতে নাই।
২৯. ভাগিনাকে মারলে মৃত্যুর সময় মামার হাত কাঁপে।
৩০. আশ্বিন মাসে কোনো নারী বিধবা হলে তার আর কোনো দিন বিয়ে হয় না।
৩১. সোমবারের দিন কাউকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া নিষেধ।
৩২. রাতের কাউকে সুঁই-সূতা দিতে নেই।
৩৩. গেঞ্জি ও গামছা ছিঁড়ে গেলে তা সেলাই করে ব্যবহার করতে মানা।
৩৪. খালি ঘরে সন্ধ্যায় বাতি দিতে হয়, না হলে বিপদ অনিবার্য।
৩৫. নবী করিম (সা.)-এর নাম শুনলে হাতে চুম্বন খাওয়া, তদ্রুপ মক্কা-মদিনার ছবি দেখলে চুমো খাওয়া।
৩৬. গর্ভবতী মহিলার জন্য কোনো কিছু কাটা-কাটি কিংবা জবাই করা নিষিদ্ধ, তাতে বাচ্চা ঠোঁট কাটা জন্ম নেয়।
৩৭. পাতিলের মধ্যে খানা থাকা অবস্থায় তা খেলে পেট বড় হয়।
৩৮. বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সামনে দিয়ে খালি কলস নিয়ে কেউ গেলে বা খালি কলস পড়লে যাত্রা অশুভ হয়।
৩৯. ছোট বাচ্চাদের শরীরে লোহা জাতীয় কিছু বেঁধে দিতে হয়, তাতে সে দুষ্টু জ্বীন-শয়তানের প্রভাব থেকে রক্ষা পায়।
৪০. রুমাল, ছাতা, হাতঘড়ি ইত্যাদি কাউকে ধার দিতে হয় না।
৪১. হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে ভাগ্যে দুর্ভোগ আছে মনে করা হয়।
৪২. হাত থেকে প্লেট পড়ে গেলে মেহমান আসবে বলে মনে করা।
৪৩. নতুন বউ কোনো ভালো কাজ করলে তা শুভ লক্ষণ বলে মনে করা।
৪৪. ইষ্টি কুটুম পাখি ডাকলে বলা হয় আত্মীয় আসবে।
৪৫. কাঁচামরিচ হাতে দিতে নেই।
৪৬. তিন রাস্তার মোড়ে বসতে মানা, তাতে বংশ উজাড় হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৪৭. খাওয়ার সময় ঢেঁকুর আসলে অথবা খাবার আটকে গেলে কেউ তাকে স্মরণ করছে বা গালি দিচ্ছে মনে করা।
৪৮. কাকের ডাক বিপদের পূর্বাভাস মনে করা।
৪৯. শকূন ডাকলে বা দেখলে কেউ মারা যাবে, এটা মনে করা।
৫০. অনুরূপভাবে পেঁচার ডাককেও বিপদের কারণ মনে করা।
৫১. তিনজনের একসঙ্গে পথ চলা অকল্যাণজনক মনে করা।
৫২. দু’জনের কথার ফাঁকে টিকটিকির আওয়াজকে কথার সত্যায়ন মনে করা।
৫৩. কারো মাথায় টোকা খেলে দ্বিতীয় বার টোকা দেওয়া আবশ্যক মনে করা, না হলে মাথায় রোগ হয় ভাবা।
৫৪. ভাত প্লেটে নেওয়ার সময় একবার নিতে হয় না।
৫৫. নতুন জামাই বাজার না করা পর্যন্ত ৫৫. নতুন জামাই বাজার না করা পর্যন্ত এক পদ দিয়ে খাওয়ানো।
৫৬. নতুন বউকে শ্বশুরালয়ে কমপক্ষে আড়াই দিন অবস্থান করতে হয়।
৫৭. পাতিলে ভাত খেলে মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়।
৫৮. পোড়া ভাত ইত্যাদি খেলে পানিতে ডুবার আশঙ্কা থাকে।
৫৯. পিঁপড়া বা জল পোকা খেলে ফেললে শরীরে ঘা হয়।
৬০. দাঁত উঠতে বিলম্ব হলে সাত বাড়ি থেকে চাল উঠিয়ে তা রান্না করে কাককে খাওয়ানো ও নিজেও খাওয়া।
৬১. সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘর ঝাড়ু দেওয়ার আগ পর্যন্ত খাওয়ার জন্য কাউকে কোনো কিছু দেওয়া নিষেধ।
৬২. রাতে কোনো কিছুর লেন-দেন করা ভালো নয়।
৬৩. সকালে দোকান খোলে নগদ বিক্রি না করা পর্যন্ত কাউকে বাকি দেওয়া নিষেধ, তাহলে সারাদিন শুধু বাকিই বিক্রি করতে হয়।
৬৪. দাঁড়িপাল্লা কিংবা মাপার জিনিস পায়ে লাগলে বা হাত থেকে নিচে পড়ে গেলে সেটাকে সালাম করতে হয়, না হলে ঘরের লক্ষ্মী চলে যায়।
৬৫. শূকরের নাম মুখে নিলে ৪০ দিন পর্যন্ত মুখ নাপাক থাকে।
৬৬. রাতে কাউকে চুন দিতে হলে তখন চুনকে চুন না বলে দই বলতে হয়।
৬৭. রাস্তায় চলা সময় হোঁচট খেলে পিছিয়ে পুনরায় চলা শুরু করতে হয়।
৬৮. ফলবান বৃক্ষ বা বাগানে মানুষের বদ নজর এড়াতে মাটির পাতিলে সাদা-কালো রং মেখে তা ঝুলিয়ে রাখতে হয়।
৬৯. বিনা ওযুতে বড়পীর আবদুল কাদের জিলানীর নাম নিলে শরীরের পশম পড়ে যায়।
৭০. সূর্যগ্রহণের সময় গর্ভবতী নারীরা কিছু কাটলে গর্ভের সন্তান নাক-কান বা ঠোঁট কাটা অবস্থায় জন্ম নেয়।
৭২. মহিলাদের হাতে বালা বা চুড়ি না পড়লে স্বামীর অমঙ্গল হয়।
৭৩. স্ত্রীর নাকে নাক ফুল পরিধান স্বামীর জন্য মঙ্গলজনক মনে করা।
৭৪. দা, কাঁচি বা ছুরি ডিঙ্গিয়ে গেলে তা সেলাম করা। না হলে ক্ষতির আশঙ্কা আছে মনে করা।
৭৫. গলায় মাছের কাঁটা বিঁধলে বিড়ালের পা ধরে মাফ চাইতে হয়।
৭৬. বেচা-কেনা বা লেনদেনের সময় জোর সংখ্যা রাখা যাবে না। যেমন, এক লাখ টাকা হলে সেখানে এক লাখ এক টাকা দিতে হয়।
৭৭. নতুন ঘরের উল্টর-পশ্চিম পার্শ্বের খুটিঁতে লাল ফিতা বেঁধে রাখা।
৭৮. হঠাৎ বাম চোখ কাঁপলে দুঃখ আসবে মনে করা।
৭৯. কোরবানির ঈদের দিন দু’পা বিশিষ্ট প্রাণী (হাঁস, মুরগী) ইত্যাদি জবাই করা নিষেধ।
৮০. স্বামীর নাম মুখে বলা যাবে না এতে স্বামীর অমঙ্গল হয়।
৮১. গরুর বাছুরের গলায় জুতার টুকরা ঝুলিয়ে দিলে সেটা মানুষের কু- দৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকে।
৮২. নতুন বউকে বাপের বাড়ি থেকে ধান এনে স্বামীর বাড়ির গোলায় রাখা।
৮৩. পর পর কয়েক সন্তান মারা যাওয়ার পর ছেলে হলে বড়শি পুরে তার কপালে দাগ দেওয়া।
৮৪. মৃতের বাড়িতে ৩ দিন পযর্ন্ত মাছ-গোশত না খাওয়া, বাধ্যতামূলক নিরামিশ খাওয়া।
৮৫. কবরের খোদাইয়ের সময় প্রথম কোপের মাটি রেখে দেওয়া।
৮৬. ঢেকির ওপর বসে আহার করলে বউ মারা যায় বলে মনে করা।
৮৭. জুতা পরিধান করে মাচায় না উঠা, কিংবা গোলা ঘরে না যাওয়া।
৮৮. গর্ভবতী গাভী মেহেদি গাছের পাতা খেলে বা মেহেদি পাতায় পা দিলে গরুর গর্ভ নষ্ট হয়ে যায়।
৮৯. আঙ্গুলের ইশারায় কবর দেখালে সেই আঙ্গুল পঁচে যায়।
৯০. যে নারীর নাসিকাগ্র ঘামে সে স্বামীকে অধিক ভালোবাসে।
৯১. ভাঙ্গা কুলায় লাথি মারলে জমির ফসল কমে যায়।
৯২. পুরুষের বুকে লোম থাকা স্ত্রীকে ভালোবাসার পরিচয়াক মনে করা।
৯৩. কুকুরকে পা দিয়ে বাড়িতে গর্ত করতে দখেলে কারো মৃত্যুর সম্ভাবনা আছে, এটা মনে করা।
৯৪. মাটিতে আঁকাআঁকি করলে বা কিছু লেখলে মেধা কমে যায়।
৯৫. গর্ভবর্তী মহিলাকে এক কাতে শয়ন করতে নেই। এতে বাচ্চা প্রতিবন্ধী হয়।

এছাড়া এলাকাভেদে আরও অনেক কুসংস্কারের প্রচলন রয়েছে। আমাদের উচিত এসব কুসংস্কার থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে প্রচলিত এ সব কুসংস্কার থেকে বেঁচে থাকার তওফিক দান করুন। আমিন।

*উচ্চ শিক্ষিত অবিবাহিত নারী ভয়ংকর: ৭৫% উচ্চ শিক্ষিত মেয়ে ২৭ থেকে ৩০ বয়সেও বিয়েহীন। ক্যারিয়ার গড়তে গিয়ে এরা এমন এক সংকট ত...
30/03/2024

*উচ্চ শিক্ষিত অবিবাহিত নারী ভয়ংকর:

৭৫% উচ্চ শিক্ষিত মেয়ে ২৭ থেকে ৩০ বয়সেও বিয়েহীন। ক্যারিয়ার গড়তে গিয়ে এরা এমন এক সংকট তৈরী করেছে যে আগামী ৫ বছরে লাখ লাখ মেয়ে বিয়েহীন থাকবে৷

আর মানানসই পাত্রস্থ করতে না পেরে, ক্যারিয়ার গড়তে না পেরে এদের অধিকাংশ দাম্পত্য জীবনে বিষাক্ত থেকে যাবে।

তাদের যৌবনের চাহিদা, আবেগ,ভালোবাসা হারানোর ফলে স্বামীর মন জয় করার পরিবর্তে স্বামীর প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েই সংসারে দরকষাকষি করবে৷ আর স্বামীও তাদের মাঝে আনুগত্য, কোমলত্ব,নারীত্ব না পেয়ে অসহ্য হয়ে উঠবে। তখন এই সংসার টিকানো অসম্ভব। কারণ তার স্ত্রী টা ৩০ টা বছর পুরুষের ফিতরাতে টেক্কা দিয়ে সে নিজেই পুরুষে বিবর্তিত হয়ে গেছে। তার আস্ত দেহটাই নারীর বৈশিষ্ট্য হলেও সে মানসিক ভাবে পুরুষ।

স্বামী তাকে দৈহিক ভাবে নারী পেলেও সে মেন্টাল ভাবে পুরুষ। আর পুরুষের মতই তার স্ত্রী অনুভূতিহীন। সে স্বামীকে প্রেমের জগতে নয় ভোগবাদের জগতেই দেখতে চায়।

সামনে এমন একটা দিন আসতে যাচ্ছে যেখানে মেয়েরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে যৌবন থেকে যেমন বঞ্চিত হবে। বঞ্চিত হবে সংসার থেকেও। বঞ্চিত হবে আখিরাতের মুক্তি থেকেও।

এরা একটা পর্যায়ে কট্টর নারীবাদী হয়েই দুনিয়া ত্যাগ করবে। আর এই পুঁজিবাদী সমাজের আড়ালেই দা''জ্জা'''ল তার সিংহভাগ নারী অনুসারী তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে।

এই ভোগান্তি অভিভাবক দুনিয়াতে যেমন পাবে। আখিরাতেও লাঞ্চিত হয়ে জা''হা''ন্না''মে যাবে৷
এটাই শেষ জামানার ভয়াবহ অন্ধকারের ফি'''তনা৷

এটি হাদীস নয় : আঠারো হাজার মাখলুকাতউপরের কথাটি লোকমুখে এতই প্রসিদ্ধ যে, অনেকের কাছে তা কুরআন-হাদীসের বাণীর মতো স্বতঃসিদ...
29/03/2024

এটি হাদীস নয় : আঠারো হাজার মাখলুকাত

উপরের কথাটি লোকমুখে এতই প্রসিদ্ধ যে, অনেকের কাছে তা কুরআন-হাদীসের বাণীর মতো স্বতঃসিদ্ধ। কিন্তু মাখলুকাতের এই নির্দিষ্ট সংখ্যা না কুরআনে আছে, না কোনো সহীহ হাদীসে। বাস্তবতা হল, আল্লাহ তাআলা অগণিত মাখলুক পয়দা করেছেন। জলে ও স্থলে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির মাখলুক আল্লাহর অসীম কুদরতের প্রমাণ। মানুষের জানার বাইরেও রয়েছে অসংখ্য মাখলুক। আল্লাহ তাআলা কত ধরনের মাখলুক সৃষ্টি করেছেন তার নির্দিষ্ট সংখ্যা সহীহ হাদীসে বলা হয়নি। একটি ‘মুনকার’ বর্ণনায় এর সংখ্যা ‘এক হাজার’ বলা হয়েছে। কিন্তু অনেক মুহাদ্দিস বর্ণনাটিকে মাওযূ বা জাল বলে আখ্যা দিয়েছেন। (আলমাওযূআত, ইবনুল জাওযী ২/২১৬; আলফাওয়াইদুল মাজমুআ পৃ. ৪৫৮-৪৫৯)

এছাড়া এই সংখ্যা সম্পর্কে কিছু মনীষীর উক্তিও রয়েছে। যেমন মারওয়ান ইবনুল হাকামের কথামতে সতের হাজার জগত রয়েছে। আর আবুল আলিয়ার অনুমান অনুযায়ী চৌদ্দ হাজার কিংবা আঠারো হাজার মাখলুকাত আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। এই বিভিন্ন সংখ্যা কিছু মনীষীর উক্তিমাত্র, হাদীস নয়। দ্বিতীয়ত তাদের বক্তব্য থেকেও অনুমিত হয় যে, নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা বোঝাতে নয়; বরং আধিক্য বোঝাতেই তারা এ সব কথা বলেছেন। তাও আবার অনুমান করে। এই কারণে এর কোনোটিকেই প্রমাণিত সত্য মনে করার কোনো কারণ নেই। বরং এ বিষয়ে ইবনে কাসীর রহিমাহুল্লাহ-এর কথাটিই মূল কথা, যা তিনি আবুল আলিয়ার পূর্বোক্ত কথাটি পূর্ণভাবে উদ্ধৃত করার পর বলেছেন।

আর তা হল, هذا كلام غريب يحتاج مثل هذا إلى دليل صحيح অর্থাৎ এটি এমন একটি আজব কথা, যার জন্য বিশুদ্ধ দলীলের প্রয়োজন রয়েছে। (তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/২৬)

অতএব আঠারো হাজার নয়; বরং বলা উচিত যে, আল্লাহ তাআলা অসংখ্য অগণিত মাখলুক পয়দা করেছেন, যা আমরা গুণে ও হিসাব করে শেষ করতে পারব না।

[সূত্র - মাসিক আল কাউসার
বর্ষ : ৬, সংখ্যা : ৬
জুমাদাল উখরা ১৪৩১ || জুন ২০১০]

কাউকে দিয়ে রোযা রাখানো এবং এর বিনিময়ে পারিশ্রমিক হিসেবে কিছু দেয়া সবই নাজায়েয৮৯৭. প্রশ্নআমার দাদা দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থতা...
29/03/2024

কাউকে দিয়ে রোযা রাখানো এবং এর বিনিময়ে পারিশ্রমিক হিসেবে কিছু দেয়া সবই নাজায়েয
৮৯৭. প্রশ্ন
আমার দাদা দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থতায় ভুগছেন। সব সময় তাকে ওষুধ সেবন করতে হয় এবং তিনি একেবারেই দুর্বল। একাকী হাঁটতে পারেন না। কয়েক বছর যাবৎ আমরা তার পক্ষ থেকে রোযা রাখার জন্য একজন সাবালক, দরিদ্র ব্যক্তিকে নিয়োগ করেছি, যে পুরো রমজান আমাদের ঘরে থেকে রোযা রাখে। এখন কেউ কেউ বলছেন, দরিদ্র লোকটির রোযা কে রাখবে? এ অবস্থায় আমার দাদার রোযার বিধান কী? জানিয়ে চিন্ত-াম্ক্তু করবেন।

উত্তর
আপনার দাদার রোযার জন্য যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তা শরীয়তসম্মত হয়নি। এতে আপনার দাদার রোযা আদায় হয়নি। কাউকে দিয়ে রোযা রাখানো এবং এর বিনিমিয়ে তাকে পারিশ্রমিক হিসাবে কিছু দেওয়া সবই নাজায়েয। এতে যার পক্ষ থেকে রোযা রাখানো হয় তার ফরযও আদায় হয় না।

কেউ যদি রোযা রাখার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলে তাহলে শরীয়তের নির্দেশ হল, প্রতিটি রোযার পরিবর্তে একজন ব্যক্তির পরিমিত পরিমাণে পূর্ণ দু‘বেলার খাদ্য দান মিসকীনকে করা। এ সম্পর্কে কুরআন মাজীদে এসেছে:

وَ عَلَی الَّذِیْنَ یُطِیْقُوْنَهٗ فِدْیَةٌ طَعَامُ مِسْكِیْنٍ

অর্থ, আর যারা রোযা রাখতে সক্ষম নয় তারা রোযার পরিবর্তে ফিদইয়া দিবে। অর্থাৎ মিসকীনকে খাদ্য দান করবে। -সূরা বাকারা ১৮৪

অতএব ওইভাবে অন্যকে দিয়ে রোযা রাখানোর দ্বারা আপনার দাদার রোযা আদায় হয়নি এবং ফিদইয়া বা কাফফারাও হয়নি। তার রোযাগুলোর কাফফারা নতুন করে আদায় করে দিতে হবে। আর ওই লোকটি আপনার দাদার পক্ষ থেকে যেই রোযাগুলো রেখেছে সেগুলো দ্বারা কেবল তার নিজের রোযাই আদায় হয়েছে।

-আলবাহরুর রায়েক ২/২৮৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৬৫; রদ্দুল মুহতার ২/৪২৬
[ মাসিক আলকাউসার ]
#রমাযানুল_মুবারক_মাসিক_আলকাউসার
#আপনি_যা_জানতে_চেয়েছেন_মাসিক_আলকাউসার

ভাড়া নির্ধারণ না করে রিকশায় চড়ে নিজের মনমতো ভাড়া দেওয়া বৈধ নয় হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদুল মিল্লাত হযরত মাওলানা শাহ আশরাফ আ...
29/03/2024

ভাড়া নির্ধারণ না করে রিকশায় চড়ে নিজের মনমতো ভাড়া দেওয়া বৈধ নয়

হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদুল মিল্লাত হযরত মাওলানা শাহ আশরাফ আলী থানভী রহিমাহুল্লাহ বলেন, অনেকে রিকশায় উঠার সময় ভাড়া নির্ধারণ করে না। এরপর চালক যাত্রীর ধারণার চেয়ে কিছু বেশি টাকা চাইলে তার সঙ্গে লেগে পড়ে। তাকে ধমকানো, গালাগাল এমনকি মারধরও আরম্ভ করে দেয়। এসব নিতান্ত অন্যায়, জুলুম এবং নাজায়েয কাজ।

গাড়িতে আরোহন করার আগে ভাড়া ঠিক করে নেওয়া যাত্রীর কর্তব্য। ভাড়ার কথা জিজ্ঞাসা না করে লাফ দিয়ে রিকশায় চড়ে বসা যাত্রীরই ভুল। এখন তার জন্য চালকের সন্তুষ্টি ছাড়া নিজের মতো করে বিনিময় দেওয়ার অধিকার নেই।

সুতরাং রিকশা ভাড়া কিংবা শ্রমিকের পারিশ্রমিক নিয়ে কখনো তর্কে লিপ্ত হবে না। রিকশায় চড়ার আগেই ভাড়া ঠিক করে নিবে এবং শ্রমিক নিয়োগ দেয়ার সময়ই তার পারিশ্রমিক ধার্য করে দিবে, যাতে পরে ঝগড়া-বিবাদের সুযোগ সৃষ্টি না হয়।

এক্ষেত্রে একথা মনে করা যথেষ্ট নয় যে, এখানকার সচরাচর ও সাধারণ ভাড়া এবং পারিশ্রমিক তো এত টাকাই। তাই আলাদা করে ভাড়া কিংবা পারিশ্রমিক ঠিক করার দরকার নেই। কারণ, সাধারণ ভাড়া ও মজুরি জানা থাকা ‘তাসয়ীর’৷ (تسعير) (ভাড়া বা মজুরি নির্ধারণ) এর অন্তর্ভুক্ত, যা (বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার ছাড়া অন্যদের নির্ধারণ)-কে ফকীহগণ অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেছেন।

তবে কেউ যদি শুরুতেই একথা বলে দেয় যে, আমি আপনাকে এখানকার সাধারণ যে ভাড়া ও পারিশ্রমিক আছে তা-ই দিব। এরপর যদি শ্রমিক কাজ করা শুরু করে এবং চালক গাড়িতে যাত্রী উঠায় তাহলে তা সহীহ হবে। সেক্ষেত্রে তাকে সেখানকার প্রচলিত ন্যায্য বিনিময় পরিশোধ করা বৈধ হবে এবং তার জন্যও তা গ্রহণ করা জরুরি হবে।

- ইসলাহে ইনকিলাবে উম্মত, পৃ. ২৬১

~ মুফতি Muhammad Imdadullah হাফিজাহুল্লাহ
উস্তাযুল হাদীস ও মুশরিফ
ফতোয়া বিভাগ
জামেআ হাকীমুল উম্মত
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

যাকাত গ্রহণে অনুপযুক্ত দরিদ্র কে?সহজ কথা হলো—যার উপর কুরবানি আবশ্যক, সাদাকাতুল ফিতর আবশ্যক—সে মূলত যাকাত গ্রহণে অনুপযুক্...
29/03/2024

যাকাত গ্রহণে অনুপযুক্ত দরিদ্র কে?

সহজ কথা হলো—যার উপর কুরবানি আবশ্যক, সাদাকাতুল ফিতর আবশ্যক—সে মূলত যাকাত গ্রহণে অনুপযুক্ত। সে যাকাত গ্রহণের যোগ্য নয়। তাকে যাকাত দেওয়া যাবে না। যদিও এমন ব্যক্তির উপর যাকাত দেওয়া আবশ্যক নয়।

কুরবানি ও সাদাকাতুল ফিতরের নেসাব হলো—
যারা প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক, তাদের উপর তার উপর কুরবানী দেওয়া আবশ্যক।

টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

এগুলো সব মিলে যখন কারো সম্পদের পরিমাণ দাড়াবে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ
তাহলে সেই ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণ করা বৈধ হবে না। আর এরূপ না হলে যাকাত গ্রহণ করা যাবে।

(এমন সম্পদশালীকে দরিদ্র বললাম এ জন্যে যেহুতু তার উপর যাকাত আবশ্যক হচ্ছে না; তাই অনেকে মনে করতে পারে তাকে যাকাত দেওয়া যাবে। অতচ সে দেখতে দরিদ্র হলেও কুরবানির নেসাবের মালিক। যা তাকে যাকাত গ্রহণে অযোগ্য দরিদ্র বলে গণ্য করেছে।)

সারকথা—যার উপর কুরবানী, সাদাকাতুল ফিতর আবশ্যক হয় না—সেই আসল দরিদ্র। যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত। তাকে যাকাত দেয়া যাবে। ঢালাও ভাবে সব দরিদ্রকে না। যাকাত দেয়ার আগে একটু যাচাই করে নিন।

আল মুহিতুল বুরহানি ৮/৪৫৫,
ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫

 #প্রশ্নোত্তর কাকে এবং কোন আত্মীয়কে যাকাত দেয়া যাবে ও যাবে না?১-কত প্রকার ব্যক্তিকে যাকাত দেয়া যাবে? ২-কোন কোন আত্মীয়কে ...
26/03/2024

#প্রশ্নোত্তর কাকে এবং কোন আত্মীয়কে যাকাত দেয়া যাবে ও যাবে না?

১-কত প্রকার ব্যক্তিকে যাকাত দেয়া যাবে? ২-কোন কোন আত্মীয়কে যাকাত দেয়া যাবে আর কাকে দেয়া যাবে না?

#১নং প্রশ্নের জবাব

إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ ۖ فَرِيضَةً مِنَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ [٩:٦٠]

যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকীন, যাকাত আদায় কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদে হক এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে-ঋণ গ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। {সূরা তাওবা-৬০}

মোট ৮ ধরণের ব্যক্তিকে যাকাত দেয়ার কথা কুরআনে বর্ণিত। যথা-

১- গরীব। যার সম্পদ আছে কিন্তু নেসাব পরিমাণ মালের মালিক নয়।

২- মিসকিন। যার একদমই কোন সম্পদ নেই।

৩- ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য শরীয়ত নির্দিষ্ট যাকাত আদায়কারী আমেল। এটা ইসলামী রাষ্ট্রপ্রধান দ্বারা নিযুক্ত হতে হবে। নিজে নিজে মনে করে নিলে হবে না। {জাওয়াহিরুল ফিক্বহ-৬/৬৯}

৪- নব মুসলিমদের ইসলামের প্রতি মোহাব্বত বাড়ানোর জন্য উৎসাহমূলক যাকাত প্রদান।

এ বিধানটি রহিত হয়ে গেছে। তাই বর্তমানে কোন ধনী নওমুসলিমকে যাকাত প্রদান জায়েজ নয়। {হিদায়া-১/১৮৪, মাআরিফুল কুরআন-৪/১৭১, তাফসীরে মাযহারী-৪/২৩৫}

৫- দাসমুক্তির জন্য। যেহেতু বর্তমানে দাসপ্রথা নেই। তাই এ খাতটি বাকি নেই।

৬- ঋণগ্রস্তের জন্য।

৭- ফী সাবিলিল্লাহ। তথা আল্লাহর রাস্তায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য। এখন প্রশ্ন হল আল্লাহর রাস্তায় কারা আছে? ফুক্বাহায়ে কেরাম বলেন এতে রয়েছেন-

জিহাদরত মুজাহিদরা। তাদের জিহাদের অস্ত্র ও পাথেয় ক্রয় করার জন্য যাকাতের টাকা গ্রহণ করবে। হজ্বের সফরে থাকা দারিদ্র ব্যক্তির জন্য। ইলমে দ্বীন অর্জনকারী দারিদ্র ব্যক্তির জন্য। {আদ দুররুল মুখতার-৩৪৩, হিদায়া-১/১৮৫, রূহুল মাআনী-৬/৩১৩}

৮- সফররত ব্যক্তিকে। যার টাকা পয়সা আছে বাড়িতে। কোন সফর অবস্থায় অসহায়। তাকে যাকাতের টাকা দেয়া জায়েজ।

উপরোক্ত ক্যাটাগরিতে যাকাত আদায় করলেই কেবল যাকাত আদায় হবে। অন্য কাউকে যাকাত দিলে তা আদায় হবে না। ফুক্বাহায়ে কেরাম যাকাত আদায়ের জন্য একটি শর্তারোপ করেছেন এই যে, যাকাতের টাকার মালিক বানিয়ে দিতে হবে দানকৃত ব্যক্তিকে। যদি মালিক বানিয়ে দেয়া না হয়, তাহলে যাকাত আদায় হবে না।

যেমন কাউকে কোন বস্তু ভোগ দখলের অধিকার দিয়ে নিয়ত করল যাকাতের, তাহলে এর দ্বারা যাকাত আদায় হবে না। সেই হিসেবে কোন প্রতিষ্ঠান, মাদরাসা, মসজিদে যাকাতের টাকা দেয়া জায়েজ নয়, যদিও তাতে গরীব মানুষ থাকে, নামায পড়ে, পড়াশোনা করে। তবে প্রতিষ্ঠানের গরীবদের, মাদরাসা গরীব ছাত্রদের, মসজিদের গরীব মুসল্লিদের যাকাত দিলে তাতে মালিক বানিয়ে দেয়ার বিষয়টি থাকায় তা জায়েজ হবে। {ইনায়া আলা ফাতহিল কাদীর-২/২৬৭-২৬৮, আল হিদায়া-১/২০৫, তাবয়ীনুল হাকায়েক-১/২৯৯}

ولا يبنى بها مسجدا ولا يكفن بها ميت لإنعدام التمليك هو الركن، (الهداية-1/205

২য় প্রশ্নের জবাব

যার উপর যাকাত ওয়াজিব তিনি তার উসুল এবং ফুরু তার উপরের আত্মীয় যথা পিতা-দাদা, পর দাদা প্রমুখ, দাদি-দাদির দাদি প্রমুখ। মা-নানী প্রমুখ। সেই সাথে ফুরু তথা ছেলে-মেয়ে, নাতি প্রমুখ। এবং স্ত্রীকে যাকাত দেয়া যাবে না। এছাড়া বাকি আত্মীয় স্বজনকে যাকাত দেয়া জায়েজ আছে।

فى الهندية، ولا يدفع إلى أصله وإن علا وفرعه وإن سفل كذا فى الكافى، (الفتاوى الهندية-14/188)

وفى رد المحتار- (قوله وإلى من بينهما ولاد) اى بينه المدفوع إليه لأن منافع الاملاك بينهم متصلة فلا يتحقق التمليك على الكمال….. اى أصله وإن علا كأبويه وأجداده وجداته من قبلهما وفرعه وان سفل… كاولاد الاولاد، (رد المحتار-2/346)

وفى البحر الرائق- (قوله وزوجته وزوجها) اى لا يجوز الدفع لزوجته ولا دفع المرأة لزوجها… أطلق الزوجة فشمل الزوجة من وجه فلا فلا يجوز الدفع الى معتدة من بائن ولا بثلاث، (البحر الرائق-2/244)

যাকাত ও ফিতরা হকদার একই হয়ে থাকে। সেই হিসেবে দাদা ও নানী ও তাদের উপরের কাউকে ফিতরা দেয়া যাবে না। কিন্তু অন্যান্য আত্মীয়দের দেয়া যাবে। যেমন মামাকে, খালাকে এবং তাদের সন্তানাদীকে।

وقيد بالاولادة لجوازه لبقية الاقارب كالإخوة والاعمام والاخوال الفقراء بل هم اولى لانه صلاة وصدقة، وفى الظهيرة: ويبدأ فى الصدقات بالاقارب، ثم الموالى ثم الجيران…( رد المحتار-2/346

হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ হাটহাজারী চট্টগ্রাম HM Abdullah ফতওয়া বিভাগ: জেনে নিন আপনার দ্বীনি জিজ্ঞাসা ও মাসায়েল
والله اعلم بالصواب

প্রশ্ন: কত বছর বয়সে ছেলে-মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক (সাবালক) হয়? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব। জাযাকুমুল্লাহ। উত্তর: পনের বছর ব...
26/03/2024

প্রশ্ন: কত বছর বয়সে ছেলে-মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক (সাবালক) হয়? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব। জাযাকুমুল্লাহ।

উত্তর: পনের বছর বয়সে ছেলে-মেয়েকে সাবালক ধরা হবে। তবে এর পূর্বে সাবালক হওয়ার আলামত প্রকাশ পেলে সেক্ষেত্রেও সাবালক ধরা হবে।
উল্লেখ্য, সাবালক হওয়ার আলামত হলো, স্বপ্নদোষ, বীর্যপাত ও তার সহবাসে মহিলার গর্ভবতী হওয়া। আর মেয়েদের বেলায় সাবালিকা হওয়ার আলামত হলো, স্বপ্নদোষ, বীর্যপাত, গর্ভধারণ ও ঋতুস্রাব।

সহীহ বুখারী ২৬৬৪, ইবনে আবী শাইবা ১/৩০৬, মাজাল্লা ১৯০ পৃ., দুরারুল হুক্কাম ২/২৭৫।

মাসায়েলে যাকাত || স্বর্ণ ও রুপামিলিয়ে নেসাব নির্ধারণ প্রসঙ্গ—নেসাব হল যাকাতযোগ্য সম্পদের শরীয়ত নির্ধারিত পরিমাণ। সম্পদের...
26/03/2024

মাসায়েলে যাকাত || স্বর্ণ ও রুপা
মিলিয়ে নেসাব নির্ধারণ প্রসঙ্গ—

নেসাব হল যাকাতযোগ্য সম্পদের শরীয়ত নির্ধারিত পরিমাণ। সম্পদের ধরনভেদে নেসাবের পরিমাণও বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যেমন, স্বর্ণের ক্ষেত্রে যাকাতের নেসাব হল ২০ মিসকাল। বর্তমান সময়ের হিসাবে সাড়ে সাত ভরি বা ৮৭.৪৮ গ্রাম স্বর্ণ। [সুনানে আবু দাউদ ১/২২১, মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭০৭৭, ৭০৮২]

আর রুপার নেসাব হল ২০০ দিরহাম। বর্তমান সময়ের হিসাবে সাড়ে বায়ান্ন ভরি বা ৬১২.৩৬ গ্রাম রুপা। এ পরিমাণ রুপা থাকলে যাকাত ফরয হবে। [সহীহ বুখারী, হাদীস ১৪৪৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৭৯]

এখানে কয়েকটি বিষয় লক্ষনীয়

ক. কারো সোনা ও রুপা উভয়টিই আছে। এবং প্রত্যেকটিই আলাদা আলাদাভাবে নেসাব পূর্ণ হয়েছে। যেমন সোনা আছে সাড়ে সাত ভরি। রুপা আছে সাড়ে বায়ান্ন ভরি, তাহলে স্বতন্ত্রভাবে প্রত্যেকটির যাকাত আদায় করবে। একটিকে আরেকটির সাথে মিলানোর দরকার নেই।

খ. আর যদি শুধু সোনা থাকে এবং অন্য সম্পদ না থাকে তাহলে এক্ষেত্রে স্বর্ণের নেসাব ধরা হবে। অর্থাৎ সাড়ে সাত ভরি হলে যাকাত আবশ্যক হবে। এর কম হলে যাকাত আসবে না। কেননা স্বর্ণের সাথে যাকাতযোগ্য সম্পদ না থাকলে যাকাত ফরয হওয়ার জন্য সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ থাকা জরুরি। এছাড়া যাকাত ফরয হবে না। যেমন কারো কাছে শুধু চার ভরি স্বর্ণ আছে তাহলে যাকাত দিতে হবে না। এক্ষেত্রে চার ভরি স্বর্ণের মূল্য রূপার নেসাবের সমপরিমাণ হলেও যাকাত ফরয হবে না। মূল্য তখন ধর্তব্য হবে যখন স্বর্ণের সাথে রূপা বা নগদ টাকা অথবা ব্যবসার পণ্য থাকে।

সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৫৬৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১৫৪, ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৪৯, বাদায়েউস সানায়ে ২/১০৭; রদ্দুল মুহতার ২/২৯৭

গ. যদি শুধু রুপা থাকে এবং অন্য সম্পদ না থাকে তাহলে এক্ষেত্রে রুপার নেসাব ধরা হবে। অর্থাৎ সাড়ে বায়ান্ন ভরি হলে যাকাত আবশ্যক হবে। এর কম থাকলে যাকাত আসবে না।

ঘ. সোনা এবং রুপা দুটোই আছে, তবে কোনোটিই নিজস্ব নেসাবে পৌছেনি, এক্ষেত্রে একটিকে অপরটির সাথে মিলিয়ে নেসাব পূর্ণ করা হবে কি না এ বিষয়ে দুটি মত রয়েছে।

প্রথম মাযহাবঃ ইমাম ইবনে আবী লাইলা, শুরাইক, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম দাউদে যাহেরী, ইমাম শাওকানী, ইবনে উছাইমিন প্রমুখের মতে এক্ষেত্রে একটিকে অপরটির সাথে মিলানো হবে না। বরং প্রত্যেকটির স্বতন্ত্র নেসাব ধরা হবে। স্বতন্ত্র নেসাব পূর্ণ হলে যাকাত আবশ্যক হবে, অন্যথায় নয়।

দ্বিতীয় মাযহাবঃ অধিকাংশ সালাফ ও জুমহুর ফুকাহায়ে কেরাম—তথা হানাফী, মালেকী ও হাম্বলীদের মতে চতুর্থ সুরতে একটিকে অপরটির সাথে মিলানো হবে।

এদের মধ্যে আবার ইমাম মালেক, ইমাম আহমদ, ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মাদ রহ. এর মতে মূল্যমান নয় বরং অংশের দিক থেকে মিলোনো হবে। যেমন কারো কাছে ১০ দিনার আছে। সাথে আছে ১০০ দিরহাম। ১০ দিনার সমান ১০০ দিরহাম হয়। ১০০ দিরহাম+১০০ দিরহাম মিলে ২০০ দিরহাম হচ্ছে। অর্থাৎ রুপার নেসাব পূর্ণ হচ্ছে। তাই যাকাত আসবে। ১০ দিনারের বাজার মূল্যমান কত আছে সেটা বিবেচনা জরুরি নয়।

যারা বলে মূল্যের দিক থেকে মিলানো হবে, তারা আবার দুই দলে বিভক্ত।

ক. ইমাম আওযায়ী, ইমাম শাবী, ইমাম সাওরির মতে সোনা ও রুপার মধ্যে যার পরিমাণ কম, সেটিকে, যার পরিমাণ বেশি, তার সাথে মূল্যের বিবেচনায় মিলানো হবে; এর বিপরীত নয়।

খ. ইমাম ইবনে কাসীর, ইমাম আবু হানিফা রহ. এর মতে মূল্যের দিক থেকে মিলানো হবে, যেভাবে মিলালে নেসাব পূর্ণ হয়, সেভাবেই মিলানো হবে। স্বর্ণের নেসাবে পৌছুক বা রুপার নেসাবে। যেভাবে মিলালে দরিদ্রদের জন্য উপকার হয়, সেভাবেই মিলানো হবে। এর উপরই হানাফি মাযহাবের ফতোয়া।

যেমন কারো কাছে ১০০ দিরহাম আছে, সাথে ৫ দিনার আছে, যার বাজার মূল্য ১০০ দিরহাম। তাহলে ১০০+১০০ মিলে ২০০ দিরহাম পূর্ণ হয়ে যাকাত আসবে।

মূল্যের মানদণ্ডে অধিক সাবধানতা ও সতর্কতার বিবেচনা রয়েছে। তেমনিভাবে এতে দরিদ্রের উপকার বেশি হয়। তাই সাধারণ অবস্থায় এ মানদণ্ডই অগ্রগণ্য ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বলে বিবেচিত হবে।

(অনেক তথ্যসুত্র শাইখ মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম হাফি. রচিত ‘যাকাতের আধুনিক প্রয়োগ’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।)

আল ইসতিযকার ৩/১৩৯, আল বায়ান ফি মাজহাবিল ইমাম আশ শাফেয়ী ৩/২৮৫, কিতাবুল আমওয়াল ৪২৫, আল ইসতিযকার ৩/১৩৮, শরহু মুখতাসারিত তাহাবি ২/৩০৯, রদ্দুল মুহতার ৩/২৩৫, মাবসুত সারাখসি ২/১৭৭, ফাতহুল কাদীর ২/২২১, বিদায়াতুল মুজতাহিদ ১/২৫৭, হিদায়া ১/১৯৬, বাদায়েউস সানায়ে ২/১০৮

Khairul Islam 24/3/24
ডিজাইন Sadik Hasan Safi

একটি বিশ্লেষণ : রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে কি রোজা ভেঙ্গে যায়?ইনজেকশনের শরয়ী হুকুম বুঝতে হলে প্রথমে দু’টি বিষয় বুঝতে হব...
26/03/2024

একটি বিশ্লেষণ : রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে কি রোজা ভেঙ্গে যায়?

ইনজেকশনের শরয়ী হুকুম বুঝতে হলে প্রথমে দু’টি বিষয় বুঝতে হবে। যথা-
১-ইনজেকশনের পদ্ধতিটি কি রোযায় কোন প্রকার প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে কি না?
২-কোন উদ্দেশ্যে ইনজেকশন দেয়া হচ্ছে? মাকসাদের ভিন্নতার কারণে ইনজেকশনের হুকুমে কোন ভিন্নতা আসবে কি না?

ইনজেকশনের পদ্ধতি

বিজ্ঞ ডাক্তারদের বক্তব্য ও বাস্তব অভিজ্ঞতার দ্বারা একথাই প্রমাণিত যে, ইনজেকশন কয়েকভাবে দেয়া হয়। যেমন-
ক-গোস্তে ইনজেকশন দেয়া।
খ-চামড়া ও গোস্তের মাঝামাঝি ইনজেকশন দেয়া।
গ-সরাসরি পেটে।
ঘ-অধিকাংশ সময় রগের মাঝে দেয়া হয়।

এবার ভাবার বিষয় হল-এ চার ধরণের ইনজেকশনের হুকুম কি?
এর সহজ জবাব হল-ইনজেকশন চাই রগে দেয়া হোক, যেমন সাধারণত রোগীদের দেয়া হয়, বা চামড়া বা গোস্তে দেয়া হোক, বা পেটে দেয়া হোক যেমন কুকুর কামড়ালে পেটে ইনজেকশন দেয়া হয়, এ সকল সুরতে হুকুম হল এসব কারণে রোযা ভঙ্গ হবে না।

ইনজেকশনের ব্যাপারে জমহুর ওলামাদের রায় এটাই যে, এর দ্বারা রোযা ভঙ্গ হয় না। যারা এ মতের উপর ফাতওয়া দিয়েছেন তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা
১-ইমদাদুল ফাতওয়া-২/১৪৪-১৪৭
২-ফাতওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ-৬/৪০-৪০৯
৩-ফাতওয়া রহিমিয়া-৭/২৫৭
৪-আহসানুল ফাতওয়া-৪/৪২২
৫-কিফায়াতুল মুফতী-৪/২৫৩
৬-ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-১৫/১৭৩-১৭৯
৭-ফাতওয়ায়ে হক্কানী-৪/১৬২-১৬৩
৮-আপকি মাসায়িল আওর উনকা হল্ল-৩/২১২
৯-জাদিদ ফিক্বহী মাসায়িল-১/১২২-১২৪
১০-ফাতওয়া মুফতী মাহমুদ-৩/৪৮৮-৪৮৯
১১-কিতাবুল ফাতওয়া-৩/৩৯১-৩৯২
১২-ফাতওয়া উসমানী-২/১৮১-১৮৬
১৩-ইমদাদুল ফাতওয়া-৩/১৩৩-১৩৪
১৪-খাইরুল ফাতওয়া-৪/৭৪

ইনজেকশন দ্বারা রোযা না ভাঙ্গার কারণ খানা খাওয়ার দ্বারা মূলত রোযা ভেঙ্গে যায়। কারণ কুরআনে পাকে খানা খাওয়াকে রোযা ভঙ্গের কারণ সাব্যস্ত করা হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে-

وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ۖ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ ۚ [٢:١٨٧]

আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। {সূরা বাকারা-১৮৭}
এ আয়াত থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, রোযা ভেঙ্গে যাবে খাদ্য গ্রহণ করলে। আর খাদ্য নালী দিয়ে পাকস্থলীতে খানা প্রবিষ্ট করালেই উক্ত বস্তুকে খাদ্য বলে। খাদ্য নালী ছাড়া অন্য স্থান দিয়ে পেটে বা শরীরের কোন অংশে কোন কিছু প্রবিষ্ট করালে এটাকে কেউ খাদ্য বলে না।
এ কারণে ফুক্বাহায়ে কেরাম খাদ্য নালী ছাড়া কোন কিছু পেটে বা শরীরে প্রবিষ্ট হলে এর দ্বারা রোযা ভাঙ্গবে না বলে ফাতওয়া দিয়েছেন।

শরীরে কোন কিছু ঢুকলেই যদি রোযা ভেঙ্গে যেত, তাহলে ভুলবশত পেট ভরে খানা খেলেও কেন রোযা ভাঙ্গে না?
এর দ্বারা বুঝা যায়, শুধুমাত্র কোন কিছু শরীরে ঢুকালেই রোযা ভেঙ্গে যায় না, বরং আল্লাহ তাআলার নির্দিষ্ট নিষিদ্ধ পদ্ধতি লংঘন করলে তার দ্বারা রোযা ভঙ্গ হয়। নতুবা রোযা ভঙ্গ হবে না।
আর আমরা জানি ইনজেকশন দ্বারা যেসব ওষুধ প্রবিষ্ট করানো হয়, এটা খাদ্য নালী দিয়ে প্রবিষ্ট করানো হয় না, ভিতরে ঢুকার পর খাদ্য নালী দিয়ে তা পেটেও যায় না, যদি পেটে যায়ও, তবে সেটা খাদ্য নালী দিয়ে নয়, বরং অন্য রগ দিয়ে তা ঢুকে থাকে। তাই ইনজেকশন দ্বারা রোযা ভাঙ্গা বলাটা রোযা ভঙ্গের কারণ সম্পর্কে অজ্ঞতারই পরিচায়ক।
শরীরে কোন কিছু ঢুকলেই রোযা ভেঙ্গে যায় একথাটি একটি ভুল কথা। এরকম অনেক উদাহরণ আছে, যাতে শরীরে বাহির থেকে কিছু প্রবেশ করানো হয়েছে, অথচ এ কারণে রোযা ভেঙ্গে গেছে বলে ফুক্বাহারা মত দেন নি। যেমন-
ফুক্বাহায়ে কেরাম চোখে সুরমা দেয়াকে রোযা অবস্থায় জায়েজ বলেছেন। সেই সাথে যদি সুরমার প্রতিক্রিয়া হলকে অনুভূত হয়, তবুও এটা রোযা ভঙ্গের কারণ নয় বলে ফুক্বাহায়ে কেরাম মত দিয়েছেন। কারণ চোখ থেকে সুরমাটি হলকে খাদ্য নালি দিয়ে পৌঁছেনি।

যুক্তি ও জবাব
১.
কেউ কেউ এ যুক্তি পেশ করে থাকেন যে, ইনজেকশন দ্বারা তো শরীরের মাঝে ওষুধ ঢুকার কারণে শরীরের মাঝে রোযার কষ্ট লাঘব হয়ে যায়, তাই এর দ্বারা রোযা ভঙ্গ হওয়াই উচিত।

জবাব :
একথাটিও ঠিক নয়। শরীর থেকে রোযার কষ্ট দূরীভূত হওয়া যদি রোযা ভঙ্গের কারণ হয়, তাহলে তো রোযাদার গোসল করলেও শরীর থেকে রোযার কষ্ট দূর হয়, অযু করলে প্রশান্তি আসে, শরীরে তেল মালিশ করলে কষ্ট লাঘব হয়, এসব কারণে কি রোযা ভাঙ্গে? এসব কারণেতো রোযা ভাঙ্গে না। {ফাতওয়ায়ে শামী-২/৩৯৬, আন রাহরুল ফায়েক-২/১৭, তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-৫৪৩}

প্রচন্ড গরমের কারণে রোযা অবস্থায় কাপড় ভিজিয়ে গায়ে দিয়ে ঠান্ডা অনুভূত করাটা রাসূল ﷺ ও হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে প্রমাণিত। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২৩৬৭}
অথচ গায়ে পানি দিলেতো এর সিক্ততা চামড়া ভিতর খানিক প্রবেশ করে থাকে, এর দ্বারা রোযা ভেঙ্গে গেলে রসূল ﷺ করলেন কিভাবে?

২.
ডাক্তারগণের মতামত এবং কতিপয় রোগীদের অভিজ্ঞতা হল রোযা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে শরীরের খাবারের চাহিদা পূর্ণ হয়ে যায়, তাই ইনজেকশনকে খানার স্থলাভিষিক্ত করে রোযা ভঙ্গের কারণ বলতে হবে।

জবাব :
যদি তাই হয়, তাহলে রসূল ﷺ ইরশাদ করেছেন যে, সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ খানার উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য উপকারী। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৭৫৭৯, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক হাদীস নং-২০৮২১, আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-৪০৪}

এর বাস্তবতাও অনেকের অভিজ্ঞতা দ্বারা প্রমাণিত। সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ বললে খানার চাহিদা পূর্ণ হয়, এ বিশ্বাস অনেক বেশি শক্তিশালী ইনজেশনের তুলনায়, যেহেতু এটা রসূল ﷺ এর কথা। তাই বলে কি এটা বলা হবে যে, রোযা অবস্থায় আলহামদুলিল্লাহ বা সুবহানাল্লাহ বললে রোযা ভেঙ্গে যাবে?
গীবত করাকে কুরআনে কারীম মৃত ভাইয়ের গোস্ত খাওয়া সাব্যস্ত করেছে {সূরা হুজুরাত-১১}। এখন কি এটা বলা যাবে যে, গীবত করলে রোযা ভেঙ্গে যায়, যেহেতু এর দ্বারা মৃত ভাইয়ের গোস্ত খাওয়া হয়?
এখানে যেমন বলা হয়, এটা মৌলিকভাবে খানা খাওয়া নয়, তাই এর দ্বারা রোযা ভাঙ্গে না, তেমনি ইনজেকশন দ্বারা খাদ্যনালী দিয়ে খাদ্য গ্রহণ হয় না, তাই এর দ্বারাও রোযা ভাঙ্গা বলাটা বোকামীসূলভ বক্তব্য।

৩.
রোযা ভঙ্গ হওয়ার মূল কারণ তো হল- আল্লাহর নির্দেশ ছিল ক্ষুধার্ত থেকে মোজাহাদা করা। অথচ ইনজেকশন দ্বারা সে উদ্দেশ্য থেকে সরে এসে ইনজেকশন নিয়ে খাদ্য গ্রহণের ফায়দা হাসিল হয়ে যায়, তাই এর দ্বারা রোযা ভঙ্গ হওয়াটাই যুক্তি সঙ্গত।

জবাব :
এ যুক্তিটিও কম বুঝের কারণে সৃষ্টি হয়েছে। মূল মাকসাদ অর্জিত হয়ে গেলেই আসল হুকুম সাব্যস্ত হয় না সর্বদা। যেমন-
রোযা অবস্থায় যদি কেউ স্বপ্নের মাঝে সহবাস করে তাহলে সহবাসের কাজ অর্জিত হয়ে বীর্যপাত হলেও রোযা ভঙ্গ হয় না, অথচ মূল কাজ তো হয়ে গেল।
কোন মহিলাকে দেখার কারণে বির্যপাত হয়ে গেলে রোযা ভঙ্গ হয় না {ফাতওয়ায়ে শামী-২/৩৯৭, আন নাহরুল ফায়েক-২/২৩}। অথচ উদ্দেশ্য হল আনন্দ করে বির্যপাত করা, সেটাতো হয়ে গেল, অথচ রোযা ভঙ্গ হয় না কেন?

কষ্টের কারণে ৮৮ কিলোমিটারের সফরের সময় ফরয নামাযকে ৪ রাকাতের স্থানে ২ রাকাত পড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এখন যদি কোন ব্যক্তি বিমানের মাধ্যমে খুব আরামের সাথে সফর করে, যার কোন কষ্ট না হয়, তাহলে কি লোকটি কসর নামায পড়বে না? অবশ্যই পড়বে, অথচ কসরের সুযোগ দেয়া হয়েছিল কষ্ট থেকে বাঁচার জন্য, সে উদ্দেশ্য অর্জিত হয়ে গেলেও তো বিধান পরিবর্তিত হচ্ছে না।
তাহলে খানার মাকসাদ আংশিক পূর্ণ হয়ে গেলেই এর দ্বারা রোযা ভঙ্গের ক্ষেত্রে কেন এত চাপাচাপি?
মৌলিক কথা হল-আল্লাহ তাআলার দেয়া বিধানাবলী যে চৌহদ্দীতে সীমাবদ্ধ করেছেন, সেটাকে সেভাবেই আমল করতে হবে, যেটার সুযোগ দিয়েছেন, সেটাকে নিজের পক্ষ থেকে যুক্তি তর্ক দিয়ে নাজায়েজ বলার কোন অধিকার কারো নেই।

والله اعلم بالصواب
লেখক : মুফতি লুৎফুর রহমান ফরায়েজী হাফিজাহুল্লাহ
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার, ঢাকা।

Address

Dhaka
1219

Telephone

+8801407893449

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Mughal Sultanate posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share